RIMADBHAGAVATA Ed BRAHMAS(U ভারতীয় মনীষার শ্রেষ্ঠতম বিকাশ বেদান্তদর্শন। সদর বোদক যুগ হতে বেদান্ত ভাবনা প্রাচীন ভারতীয় জীবনচর্যার প্রধান লক্ষ্য। গত তিন হাজার বছরের বেদাল্তদর্শন সাহত্য তার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। _ বৈদাল্তপ্রস্থানের মুল গ্রন্থ মহার্ধ বাদরারণের 'ন্ধ- “দত, যার লক্ষ্য দ.ঃখপারাবারের পারে “আনন্দরূপম- মহত ষদ্‌ বিভাঁত” সেই পরমতত্বের সন্ধান দেওয়া। জ্ঞানের পথেই সেই সং চিৎ আনন্দময় পুরুষকে উপলাব্ধ করা যায়। কল্তু বিচার বা জ্ঞানই শেষ কথা নয়, এর ওপারে আছে ভান্তর পথ, প্রেমময় ঈশ্বরে পরানূরক্তির পথ। সেই পথের পথিক হন লীলাময় ঈশ্বরের অসীম লালার আস্বাদন করা, সেই প্রেমানন্দে আপনাকে বিভোর করাই ভাগবতধর্শ্ম। ভন্তিবাদের শ্রেষ্গরন্থ শ্রীমদ্‌ভাগবতের ইহাই পরম লক্ষ্য। ভারত ইতিহাসের এক সংকটময় প্রচার করেন নদীয়ার প্রেমের ঠাকুর শ্রীকৃষ্চৈতন্য মহাপ্রভু ৷ [তান বলতেন, ব্রহ্গসূত্রের যথার্থতঃ ভাষ্য শ্রীমদ্‌ভাগবত। ভারতীয় দর্শনশাস্ত্রে নিষ্মত- সৃপাণ্ডত রামপদ চট্টোপাধ্যায়, বেদান্ত বিদ্যার্ণব, বর্তমান গ্রন্থে মহাপ্রভু নিদিষ্ট সেই তত্ুঁটিকেই প্রকাশ করেছেন। জ্ঞানমার্গ ও ভন্তিমার্গের মধ্যে যে অন্তঃসলিলা অদ্বৈতমন্দাঁকন? নিরন্তর বয়ে চলেছে, তারই অমৃতধারায় তান দর্শন- [পপাসু চিত্তকে সিন্ত করেছেন। শাস্ত্রের টীকাটিপ্পনীর গিচার বৈভবের মধ্যে এই সমন্বয় দ্ণ্টিটিকে আমরা হারয়ে ফোঁল, যুন্তিতকেরে বিচার সেখানে ব্যর্থ হয়ে Tফরে আসে, তা “যতো বাচো নিবততন্তে", মননের দ্বারা তা প্রাপননয় নয়। অন্ধকারের ওপারে সেই আঁদত্যবর্ণ মহান পুরুষকে জানার একমাত্র পথ অপরোক্ষানুভূতি। বর্তমান গ্রন্থকার এই মূল আদর্শটকে ব্রহ্ম, সৃষ্টি, মায়া, জনব, কৰ্ম্ম, উপাসনা প্রভাতি তত্ত্বের আলোচনার মাধ্যমে সরল ও সাবলীল ভাবায় প্রকাশ করেছেন। বর্তমানকালে ব্র্সূন্রের ভাগবতসম্মত ব্যাখ্যার এইটিই প্রথম প্রয়াস। জ্ঞান ও ভন্তিতত্বের এমন সহজ ও সরল তুলনামূলক আলোচনা, দার্শীনক সমন্বয়দাষ্টর এমন সুন্দরতম প্রকাশ অন্যত্র দুলভ। লেখকের গভীর শাস্তজ্ঞান ও অনন্য উপস্থাপন কৌশলের জন্য গ্রন্থাট বেদান্ত ও ভাগবতধন্স চর্চার ইতিহাসে এক স্মরণীয় সংযোজন- রূপে গণ্য হবে। ব্ৰহ্মসূক্ৰ ও শ্রীমদূভাগবত বা শ্রীমদ্ভাগবত সাহয্যে ব্রহধস্ত্রালোচন৷ BRAHMASUTRA-O-SRIMADBHAGAVATA A Treatise on Brahmasutra with the help of Srimad Bhagavata ওহ শখণ্ড/১-৪ পাদ রামপদ চট্টোপাধ্যায়, বেদাস্তাবদ্যার্ণব সম্পাদনাঃ শ্রীঅনিলহরি চট্টোপাধ্যায় ফার্ম কেএলএম প্রাইভেট লিমিটেড কলিকাতা * ০ ৪ ১৯৯৪ প্রকাশক £ ফার্মা কেএলএম প্রাইভেট লিাঁমটেড ২৫৭ ক, বাপন বিহারী গাঙ্গুলী স্ট্রীট কাঁলুকাতা-৭০০০১২ প্রথম সংস্করণ £ কাঁলকাতা ১৯৭৮ পুনমুদ্রণ ১৯৯৪ © অরুপ চট্টোপাধ্যায় মূল্য 9৮০০০ মুদ্রণ : ইউনিক কালার প্রপ্টারস ৯০এ, পটুয়াটোলা লেন কলিকাতা-৭০০ ০০৯ এই লেখকের অন্যান্য গ্রন্থ বেদান্ত প্রবেশ (্রহ্মসূত্র ও শ্রীমদূভাগবতের ভূমিকা ) গায়ত্রী রহস্য মাতৃপৃজা বা চতীরহসয ও স্তবমালা অপরোক্ষানুভূতি, শ্রীশ্রীরামগীতা, শ্রীপ্রীরামলীলাগীতি ওম্‌ শ্রীশ্রীশান্তগীতা অপ্রকাশিত :__ নাম মাহমা এরামপদ চট্টোপাধ্যায় ॥ জন্ম ॥ ॥ মৃত্যু ॥ ১ল। চৈত্র, বুধবার, ১২৭৯ ২১শে ভাদ্র, বৃহস্পতিবার, ১৩৬৩ ১৫ই মাচ, ১৮৭২ ৬ই সেপ্টেম্বর, ১৯৫৬ পিতৃতপণ পিত! হি, লোকে পুরুষঃ প্রধানো৷ হিতো মহাত্ম| পরমোহনুকুলঃ ৷ অহেতুক স্েহরহস্ত যৃ্তিঃ প্রজাপতি বাঁ স্বয়মেৰ মুত্তঃ ॥ সর্ববহুঃখানিহন্তী তং তুক্তি মুক্তি প্রদারিনী, তু বিশ্বেশ্বরী জগদ্ধাত্রী মাতৃদেবী নমস্ততে ॥ কচিৎ পিতা কচিন্মাতা ক্কচিচ্চপিতরৌ তথা, কচিদ্‌ বিধাতা! সংহর্ভা কচিদ্বা যুগ্মরূপধবক্‌ ৷ MS ld এছ tn চি শ্রীচরণ।শিত অনিলহরি চট্টোপাধ্যায় পারিচাল্িকা বেঘ্বান্ত দর্শন ও শ্রীমদ্ভাগবত, উভয়েরই লক্ষ্য এক, অদ্বৈত তত্ব। স্বতরাং উভয়ের মধ্যে তাত্বিক বিরোধ থাকিতে পারে না। প্রচলিত পরম্পরাস্থসারে অধৈত-বেদাস্ত দৰ্শন জ্ঞানেরই মহিমা কীর্তন করিয়াছেন। সম্পরদায়ক্রমে শ্রীমদ্ভাগবতের প্রতিষ্ঠা ভক্তিতে। স্থৃতরাং উভয়ের মধ্যে আপাতবিরোধ। কিন্ত হুন্ম বিচারে ইহাই প্রতীত হয় যে উভয়ের মধ্যে এক্যভাবই আছে, বিরোধ নাই। শ্রদ্ধেয় স্বৰ্গত রামপদ দেবশ্মা তাহার “বেদান্ত প্রবেশ* গ্রন্থের নিবেদ্বনে যে কথা লিখিয়াছেন, “পঞ্চবিংশ বর্ষের অধিক কাল বেদান্ত ও শ্রীমদ্‌ ৷ ভাগবত আলোচনা করিয়া আপিতেছিলাম; উক্ত আলোচনায় উভয়ের আশ্চর্য্য এক্যভাব দেখিয়া বিস্মিত হইয়াছিলাম...” তাহা! অক্ষরে অক্ষরে সত্য ! আনন্দের বিষয় এই যে তাহার রচিত “ব্রহ্মস্তত্র ও শ্রীমদ্ভাগবতের* পাণ্ডুলিপি তাহার দেহাবসানের বনুদ্দিন পরে তাহার একমাত্র পুত্র শ্রীঅনিলহরি চট্টোপাধ্যায়ের আগ্রহে ও প্রয়াসে মুদ্রিত হইল। কুরুক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শ্রাগোপিকা মোহন ভট্টাচার্য্য মহাশয় এ বিষয়ে ৷ যত্ব না লইলে প্রকাশ কাৰ্য্য স্ুকর হইত না । ্রন্থখানিতে যে অসাধারণ মনীষার পরিচয় আছে তাহাতে বিদ্ধ সমাজ | পরিতৃপ্ত হইবেন এই বিশ্বাস আমাদের আছে। জ্ঞানপিপান্থ গবেষকগণও ৷ গ্রন্থখানি পাঠ করিলে বিশেষভাবে উপকৃত হইবেন। মুদ্রণ ব্যয়ের কিয়দংশ ভারতীয় সরকার বহন করিয়াছেন ইহা সুখের কথা । আশা করা! যায় যে প্রার্দেশিক সরকারও অর্থসাহাধ্য দানে অগ্রণী হইবেন । আমরা গ্রন্থথানির বহুল প্রচার কামনা করি । ২২৪, শ্যামনগর রোড, _ শ্রীগৌরীনাথ শাস্ত্রী কলিকাতা-€৫ ৩০1৮1১৯৭৮ ব্রহ্মপুত্র ও শ্রীমভাগবত গ্রন্থের ১ম খণ্ডের দ্বিতীয় মুদ্রণ প্রসঙ্গে নিবেদন শরমারাধ্য পিতৃদেব রচিত ব্রহ্মসূত্র ও শ্রীমস্তাগবত ১ম, ২য় ও ওয় খণ্ড ১৯৫৮-১৯৮০-র মধ্যে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়োছিল। কিছুকাল যাবৎ ১ম খণ্ডট সম্পূর্ণ নিঃশোষত। ২য় ও ৩য় খণ্ডের অপ্প [কিছু কপ এখনো পাওয়া যাচ্ছে কম্তু যাঁরা সম্পূর্ণ সেট সংগ্রহে আগ্রহী তাদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কেবলমান্র ১ম খণ্ড সংগ্রহ করতে চান এমন পাঠকের সংখ্যাও কম নয়। এ কারণ ফার্মা কেএলএম প্রাইভেট িমিটেড-এর বর্তমান সন্তাধকারী শ্রীমান রথীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় গ্রন্থের ১ম খণ্ডটি ছাপার ভুল সংশোধন সহ গুনমুর্্রণ ও প্রকাশিত করার ব্যবস্থা করেছেন। {বিগত পনের বছরে গ্রন্থ প্রকাশনার . প্রত্যেক স্তরে খরচ অত্যধিক বৃদ্ধ পেয়েছে। অপর পক্ষে ১ম খণ্ডের প্রথম শুদ্রণের আধাশক ব্যয়ভার কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষামন্ত্রক বহন করায় গ্রন্থের যে মূল্য রাখা সম্ভব হয়োছিল বর্তমান মুদ্রণে সে সুবিধা অনুপস্থিত । তাই ব্যয় সংকোচের সর্বাবধ চেষ্টা সত্বেও মূল্যবাঁদ্ধ এড়ানো গেল না। এজন্য পাঠকবর্গের সহযোগিতা প্রার্থনীয় । মহালয়া, ১৪০০ বঙ্গাব্দ, শ্রাআানলহর চট্টোপাধ্যায় ২১ ডি, মহেন্দ্র রোড, কলকাতা-৭০০ ০২৫ সম্পাদকের সংবেদন আমার পরমীরাধ্য পিতৃদ্েব স্বগত রামপদ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় পঞ্চবিংশ বর্ষের অধিককাল বেদান্ত ও শ্রীমদ্ভাগবত আলোচন! করার পর ১৯৩২-৩৩ সালেন্ন মধ্যে “বৰহ্মন্থুত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত” গ্রন্থ লিখিয়াছিলেন। অর্থাভাবে মুলগ্রন্থ মুদ্রণ সম্পূর্ণ অসম্ভব বলিয়া, যূলগন্থের তৃমিকারূপে তিনি যাহা লিখিয়াছিলেন, তাহা গ্রন্থাকারে “বেদান্ত-প্রবেশ” নামে ১৯৩৬ সালে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয় । ইংরাজী ১৯৩৪ সাল হইতে ১৯৫৬ সালের মধ্যে তিনি *শাস্তিগীতা”, “রাষগীতা”, “অপরোক্ষান্ত্বৃতি*, “নামমহিমা*, “গায়ত্রী রহস্ত”, “মাতৃপূজ! ব! চণ্ডীরহস্ত” নামে পুস্তকগুলি রচনা! করেন। ইহার মধ্যে ১৯৩৭ সালে “গায়ত্রী রহস্ত”, ও ১১৪০ সালে. “মাতৃপূজা” মুদ্রিত হয় । অর্থাভাবে অন্যগুলি মুদ্রিত করা৷ সভব হয় নাই। “বেদান্ত-প্রবেশ” গ্রন্থ নিবেদন করিতে গিয়া আমার পিতৃদ্বেব লিবিয়াছেন £_“যদি বেদান্ত-প্রবেশ জিজ্ঞান্থ পাঠকগণের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয় এবং তাহা হইতে তীহাদ্দিগের মূলগ্রন্থ পাঠের আগ্রহ অনুধাবন করিতে সমর্থ হই, অধিকন্ত মুলগন্থ ছাপাইবার ব্যয়ভার বহন করিবার সামর্থ্য ভগবান পরদ্ধান করেন, তবে উহা! ভবিষ্যতে গ্রন্থাকারে মুদ্রিত করিয়া সাধারণ সমীপে উপস্থিত করিতে পারি, নতুবা উহ। পাণুলিপি অবস্থায় থাকিয়া সহশ্র কীটের আহার সংস্থানের কারণ হুইবে।” স্বগীয় পিতৃদেব এই পুস্তক রচনায় ষেকি অক্লান্ত, নিরলস পরিশ্রম ও নীরব একাগ্রসাধন! করিয়াছিলেন, তাহার সাক্ষী আমি। গ্রন্থটি মুদ্রিত করিবার আশ! পরিত্যাগ করিয়াই বখন তিনি দেহ্রক্ষা করিলেন, তখন হইতে নিজেকে পিতার অযোগ্য সন্তান বলিয়া মনে করিয়। আত্মমানি ও কষ্টভোগ করিয়াছি। কিন্তু অর্থাভাবে আমিও ইহ্‌! মুদ্রিত ও প্রকাশিত করিতে সম্পূর্ণ অসমর্থ হই। অবশেষে আমার শ্বগ্রামবাসী, স্বদেশের মুখোজ্জনকারী সন্তান, কুরুক্ষে্ বিশ্ববিষ্ঠালয়ের সংস্কৃত বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক গোপিকা৷ মোহন ভট্টাচার্যের প্রেরণা, উপদেশ, নির্দেশ, ও আগ্রহে আমি পিতৃদেবের শেষইচ্ছা পূর্ণ করিবার জন্ত অগ্রসর হইতে সমর্থ হই। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের নিকট হইতে অর্থ সাহায্য পাইতে হইলে কিভাবে অগ্রদর হইতে হয় সে সম্বন্ধে ডিঙি ( ছয় ) নানা উপদেশ দিয়! ও সক্রিয় সহযোগিতা করিয়া আমাকে লক্ষ্যপথে আলোক- বত্তিকা ঘেখাইয়াছেন। স্বনামধন্য পণ্ডিত পূজ্যপাদ অধ্যক্ষ ডঃ গৌরীনাথ শাস্ত্রী মহাশয় “বেদাস্ত- প্রবেশ” গ্রন্থ পাঠ করিয়া অভিভূত হন এবং মূল গ্রন্থটির প্রকাশনায় বকেঙ্্রীয় সরকারের অনুদান পাওয়ার জন্য যথেষ্ট সাহাধ্য করেন ও সুবিশাল এই মূল গ্রন্থটির মন্্গ্রহণ করিয়া যথার্থ যূল্যায়নের সঙ্কেতবাহী পরিচায়িকা রচনা করিয়া আমাকে অনুগৃহীত করেন। এই পুস্তকের প্রকাশনায় বর্ষায়ান দ্রেশনেতা শরীপ্রফুল্লচন্দ্র সেন, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডঃ প্রতাপচন্দ্র চন্দ্রের আন্তরিক উৎসাহদান রুতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। ইহার পর মুদ্রণ ও প্রকাশনের পর্বব। বহুবাজার স্্ীটের ফার্শ্মা কে এল এম প্রাইভেট লিমিটেডের অভিজ্ঞ, বিচক্ষণ ও স্দক্ষ প্রকাশক শ্রীকানাইলাল মুখোপাধ্যায় মহাশয় এই গ্রন্থ প্রকাশের দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে কৈলাস বন্ধ স্্রীটের রূপত্রী প্রেসের শরীক্ষিতীশ চন্দ্র রায় মহাশয়ের সযোগ্য হস্তে এই পুস্তক মুদ্রণের ভার দেন। পাওুলিপির সংস্কৃত অংশগুলি, তরুণ গবেষক ডঃ তারাপদ পাণ্ড। ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ডঃ মানবেন বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় সযত্নে ও সানন্দে ভ্রমপংশোধনাদি করিয়া দিয়াছেন | আমার পিতৃদেবের হস্তলিপি সহজপাঠ্য না হওয়ার, পিতৃদেবের জীবদ্দশায় তাহার চতুর্থ ভ্রাতা ৬রামতারণ চট্টোপাধ্যায় স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া তাহার মুক্তাক্ষরে এই পাওুলিপি নকল করেন। খুল্লতাত মহাশয়ের এই অক্লান্ত পরিশ্রম আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। কিন্তু পিতৃদেব পরে নিজ রচনায় বহু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করেন। এই সকল অংশ সংযোজন ও পুনলিখনের কাৰ্য্যে আমার পরিবারস্থ সকলের ছাড়াও অনেকের সক্রিয় সাহায্য লইতে হইয়াছে । রীপ্রকাশ চন্দ্র চক্রবর্তী, কাব্য ব্যাকরণতীর্থ প্রমূখ তাহাদের সকলকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। ৬/পিতৃদ্দেবের “বেদাস্ত-প্রবেশ” গ্রন্থের প্রকাশক, পরমশ্রদ্ধেয শ্রতিষুপ মুখোপাধ্যায় তাহার অসুস্থ শরীরেও উপদেশাি ছারা যে প্রকারে আমাকে সাহায্য ও অনুপ্রাণিত করিয়াছেন তাহার জন্ত তাহাকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞত| জানাই । (সাত) পিতৃদ্বেবের তৃতীয় ভ্রাতা ৬/রায়চরণ চট্টোপাধ্যায়ের জ্যোষ্টপুত্র, আমার সহোদর প্রতিম শ্রীগৌরহরি চট্টোপাধ্যায় পুস্তক প্রকাশনার কার্য্যে আমার সহিত একাত্ম হইয়া অগ্রজন্থুলভ মমতা ও আগ্রহ লইয়া আমাকে সর্ব সাহায্য করিয়া চলিয়াছেন। আমার পিতৃদ্বেব আমাদের একান্নবর্তী পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ও রক্ষক ছিলেন। সেই পরিবারের আরও অনেকের নিকট আমি অভুঠ সাহায্য পাইয়াছি। পিতৃদেবের একান্ত অন্থরাগী ও প্রিয় এই পরিবারস্থ অনেকেই এই পুস্তক প্রকাশের আনন্দ, আমার ও আমার পরিবারদ্থ সকলের সহিত সমভাবে পাইবার অধিকারী । ধন্যবাদ বা কৃতজ্ঞতা জানাইয়া তাহাদিগকে ছোট করিতে পারি না। অ।মার পরমারাধ্য ৬পিতার এই মহান্‌ কাধ্যের কল যাহাতে সুধী সমাজের উপকারে লাগে সেজন্য ইহার মুদ্রণ ও প্রকাশের জন্য আমার প্রয়াস। উল্লিখিত মহানুভব ব্যক্তিগণের প্রত্যেকের নিকট আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিরথণী ও চিরকুতজ্ঞ। তাহাদের নিঃস্বার্থ, পরোপকারের প্রেরণাযুক্ত হৃদয়বভার মূল্যায়ন করা! ভাষায় বাঁ কাধ্যে আমার পক্ষে সম্ভব নহে। এরূপ উদার ও পরোপকারী মানবসম্তানগণের সান্নিধ্লাভ আমার পরম সৌভাগ্য । ইহারা ছাড়াও, আরও যাহারা আমাকে নানাভাবে অনুপ্রাণিত ব! সাহায্য করিয়াছেন, যাহার! আমাকে সাহায্য করিতে প্রস্তুত থাকিয়াও শেষ পর্যন্ত পারেন নাই, ধাহাদের নাম এখানে প্রকাশিত হয় নাই, তাঁহাদের সকলের নিকটও আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিতেছি। ্রদ্বন্ত্র ও শ্রীম্ভাগবতের প্রথম খণ্ডে আজ কেবলমাত্র ব্রহ্মন্থত্রেয প্রথম অধ্যায় উপস্থাপিত করিতে সক্ষম হুইয়াছি। মূল গ্রন্থের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায় পরমেশ্বর সহায় থাকিলে ইহার পরেই প্রকাশিত হইতেছে । শ্রুতি, ্রীমদ্ভাগবত ও পুরাণাদি হইতে সে সকল উদ্ধৃতি এই তিনটি খণ্ডে সন্নিবেশিত হইয়াছে, পিতৃদেব কৃত তাহাদের একটি নির্ঘন্টও তৃতীয় খণ্ডের শেষে প্রকাশিত হুইবে। প্রসঙ্গত: উল্লেখযোগ্য যে শ্রীমন্ভাগবতের যে সকল উদ্ধৃতি এই মহাগ্রন্থে আছে তাহা বহরমপুর, মুগ্সিদাবাদ হইতে প্রকাশিত ৬রামনারায়ণ বি্যারত্র মহাশয়ের “ভ্রীমদ্‌ভাগবতম্‌* পুস্তকের তৃতীয় সংস্করণ ( ১৩৪-১৩২১ সন) হইতে গৃহীত বলিয়া গ্রন্থকার উতসনির্দেণ করিয়া গিয়াছেন। সর্বশেষে আমার নিবেদন, এই পুস্তক আমার পিতৃদেবের জীবদ্দশায় প্রকাশিত হইলে ভ্রমপ্রমাদের আশংকা! ছিল না। সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ আমরা», EA ( আট ) এক্ষণে ইহার নকল ও মুদ্রণ-সংশোধন কার্যে হয়ত বহু ভ্রমপ্রমাদ করিয়াছি! স্থতরাং এই গ্রন্থের মধ্যে যাহা কিছু ভুল-ভ্রান্তি থাকিবে, তাহার জন্য আমি ব! আমার অজ্ঞতাই দায়ী। পিতৃদেবের ও পাঠকবর্গের নিকট এজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী । এই পুস্তক প্রকাশনায় কেন্দ্রীয় সরকারের আংশিক ব্যয়ভার বহনের স্বীকৃতির জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই । ইতি” ভবানীপুর, কলিকাতা মহালয়া, ১৩৮৫ _অনিলহরি চট্টোপাধ্যায় ! ইং ১1১০1৭৮ সূচীপত্র পৃষ্ঠা পরিচায়িকা . তিনি সম্পাদকের সংবেদন পাচ গ্রস্থকারের নিবেদন ১ আভাষ ৪ সুত্র ও সুত্রে আলোচিত বিষয় প্রথম অধ্যায়--সমন্বয়-_প্রথম পাদ অধ্যায় পারদ স্থত্র পৃষ্ঠা ১। জিজ্ঞালাধিকরণ-__ ১। অথাভো ব্রহ্মজিজ্ঞাস। ॥ ১.১ ১ ৩০-৯১ কর্শামাত্রই নশ্বর ; কর্ণ দ্বারা পরম পুরুযার্থ প্রাপ্তি হয় না; ভগবান বাস্থদেবে ভক্তিই পরম পুরুষার্থ ; এক অয় জ্ঞানই পরম তত্ব, উহ! ব্ৰহ্ম, পরমাত্মা, ভগবান আখ্যায় আখ্যায়িত; উহা! বাক্যমনের অগোচর, ইন্দ্িয়াণের অলভ্য, উহাই কিন্তু বাক্‌, ইন্দিয়, প্রাণ প্রভৃতির নিয়ন্তা ; এই ব্রহ্ম, পরমাত্মা, বা ভগবানকে আত্মস্বরূপে জানাই পরম পুরুষার্থ ; উহ] জানিলে আর জ্ঞাতব্য কিছুই থাকে না । এই জিজ্ঞাসাই বুদ্ধিমানগণের বুদ্ধি, মনীষিগণের মনীষা) জ্ঞান-শাস্তজ্ঞান) বিজ্ঞান _অপরোক্ষজ্ঞান। ২। জগ্মাপ্যধিকরণ_ ২. জল্মাদত্য যত: ॥ ১০১ ২ ৯২-২০৯ তটস্ব লক্ষণ দ্বার! স্বরূপ নির্দেশ) শাখাচন্্র ন্যায়, অরুন্ধতী ন্যায়; ভাগবতের শ্লোকে একজে তটস্থ ও স্বরূপ লক্ষণ; ব্রহ্ধাই বিশ্বের নিমিত্ত ও উপাদানকারণ) প্রকৃতি- ব্রদ্শক্তি ; কাল ₹্রপ্মের চেষ্টারূপ ; পুরুষ = ব্রধাংশ) ; স্বগুণ ও নিপ্তণ উভয় শ্রুতিই ( দশ ) অধ্যায় পা স্তর পৃষ্ঠা সমান অর্থকরী; শক্তির অভিব্যক্তি সৃষ্টি ও অনভিব্যক্তি--প্রলয়; উভয়ে ব্রদ্মের ইচ্ছা বা! স্বভাববশতঃ হইয়। থাকে ; উহ! তাহার দ্বিব্য মায়াবিনোদ; নিগুপ ব্রদ্ধের দ্বারা স্য্টি তাহার অচিন্ত্যশক্তি প্রভাবে হইয়া থাকে; তিনি স্ষ্টিতে প্রকটিত হইলেও শ্বরূপবিচ্যুত হন না) সৃষ্টি প্রক্রিয়ার চিত্র; প্রকৃতির আপাতঃ দৃখ্ঠমান জড়োপকরণে অল্পবিস্তর চৈতন্তাংশ বর্তমান ; চৈতত্যময় হইতে দৃশ্যত: জড়া প্রকৃতির সৃষ্টি চৈতন্যময়ের অচিন্ত্যশক্তির নিদর্শন) ভগবানের সংহননী শক্তির ছার প্রাকৃতিক উপকরণ সকলের সংহত করণ; উক্ত উপকরণ সকলে ভগবানের অনুপ্রবেশ; অনুলোম গতিক্রমে সৃষ্টি, প্রতিলোম গতিব্রমে প্রলয় ; সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ে ব্র্ধ নিজ ন্বূপেই অবস্থান করেন) বিশ্ব মিথ্যা নহে, নশ্বর) মিথ্যা কি? অধ্যাস কি? সৎ ও অসতের লক্ষণ; বিশ্বের অভিব্যক্তি ও অন ভিব্যক্তির দৃষ্টান্ত; বিশ্বের স্্যাদিতে ব্রচ্দে বিকারাদি স্পর্শে না; ব্ৰহ্ম বা তগবান_-সজাতীয় বিজাতীয় স্বগত ভেদশৃন্ত ; একারণ তাহার কোনও কৰ্ম্ম নাই; অতএব তিনি সর্বত্র সম, উদ্াসীন। ৩। শান্্রযোনিত্বাধিকরণ_- ৩। শাস্যোনিত্বাৎ ॥ ১১ ৩ ২১০-৩৩২ “শাস্যোনি” পদ দুই প্রকারে সিদ্ধ; শান্তর” শব্দে বেদ, বেদের বোধক, ( এগার ) অর্থজ্ঞাপক সমুদায় শান্ত, শাস্জাতের চিত্র; ব্ৰহ্ম সমুদ্বায় শান্্ের উংপত্তিকারণ ; সৃষ্টিকর্তা ব্রদ্ধার চারিমুখ হইতে চতুর্বেদের উৎপত্তি; ভগবান বদ্ধার হৃদয় জ্ঞানালোকে উদ্ভাসিত করায় ব্রহ্মা সেই জ্ঞান ভাষায় শান্তরপে প্রকটিত করেন; অতএব ভগবানই মূল শাস্রযোনি; সমুদায় শাস্্ই বগ্মের বা ভগবানের প্রতিপাদক ; সমূদায় উপাসনামার্গ ব্রহ্মে বা ভগবানে পর্য্যবসিত; ভগবানই সমুদায় বাদের বিষয় $-সমুদ্ধায় বিরোধ-বিকল্পের পর্য্যবসান ভগবানেই ; প্রপঞ্চ জগৎ সম্বন্ধে মানবের জ্ঞান অতি অল্প সীমার মধ্যে নিবদ্ধ; এই জ্ঞান মানবের ইন্দ্রিয় সংখ্যার ও তাহাদের শক্তির উপর নির্ভর করে ; গণিতের ভাষায় ভগবান বা ব্ৰহ্ম এক দৃষ্টিতে “অমাত্র” অন্ত দৃষ্টিতে “অনন্তমাত্র” ; তাহাকে ধ্যান- ধারণার বিষয় করিতে হইলে অন্তঃকরণের স্তরে অবতরণ করা প্রয়োজন) জীবের কল্যাণের জন্য ভগবান অন্তঃকরণের সুরে অবতরণ করিয়া শাস্ত্রপে আপনাকে প্রকাশ করিয়াছেন ; পরা, পশ্টন্তি, মধামী, বৈথরী ভেদে বাক্‌ চারিপ্রকার ; মহাকবির কাব্য রচনার দৃষ্টান্তে উহ। বুঝিবার প্রয়াস; বেদ স্বতঃ প্রমাণ কেন? জড় বিজ্ঞানের দৃষ্টান্তে উহ| বুঝিবার প্রয়াস। মন্ত্র মহধিগণ বেদমন্ত্রের রচয়িতা নহেন-- আবিষ্কারক ; সগ্তণ শ্রুতিকল কি প্রকারে নিগুণ ত্রদ্ষকে প্রকাশ করিতে সমর্থ) শববৃত্তি চারিপ্রকার ;) শব্দবৃত্তি অধ্যায় পাদ সুত্র পৃষ্ঠা ( বার ) অধ্যায় পা স্তর পৃষ্ঠা ছার! ব্রহ্ম নির্দেশ্য নহেন; ব্রহ্ম সমকালে স্তণ-নিগু্ণ, সবিশেষ-নিব্বিশেষ বলিয়া শ্রুতিগণ তাহাকে প্রকাশ করিতে সমর্থ ; ব্ৰহ্ম শব্দের ব্যুৎপত্তি লভ্য অর্থ বৃহত্তম ; তিনি অনস্ত- সর্বব্যাপী) অনস্ত ও সর্বব্যাপী হইলেও সমকালে কৃটস্ব ; বেতার তড়িৎসংবাদ প্রচারের দষ্টাস্তে বুঝিবার প্রয়াস; বেতার তড়িৎসংবাদের গ্রাহক যন্ত্রের ন্যায় উপযুক্ত অধিকারী হইলেই সর্বত্র ব্র্মের উপলব্ধি হইয়া থাকে । ৪। জমন্বয়াধিকরণ £-_ ৪) তত্লমন্বয়া ॥ ১ ১ ৪ ৩৩৩-৩৭৭ বে ত্রিকাণডাত্মক ও বহু শাখায় বিভক্ত হইলেও ব্রহ্ষে পর্য্যবসান ; কর্মকাণ্ডের ফল- শ্রুতি রোচনার্থ; বিধি ও পরিসংখ্য!; কশ্মাহুষ্ঠানের ছারা নৈষশ্ম্য সিদ্ধিই বেদের কর্শকাশ্ডের লক্ষ্য; বেদের মন্ত্র বা দেবতা- কাণ্ড প্রত্যক্ষতাবেই ব্রচ্ষে পর্য্যবসান ; বিভিন্ন দেবতা “অনস্তমাত্র” ব্রহ্মের বিভিন্ন গুণময় ভাবের অভিব্যক্তি মাত্র ; বিভিন্ন দেবতারূপে অভিব্যক্তিতে স্বক্ধপের হানি হয় না) জগতের অতীত, বর্তমান, ভবিস্তৎ সমুদ্বায় ব্রচ্মই) কালের প্রভাব ্রন্গে বর্তমান না থাকায় অতীত, বর্তমান, ভবিষ্কতের প্রয়োগ তাহাতে হইতে পারে না; বেদের জ্ঞানকাণ্ড যে বন্বেই পর্য্য- বসান, তাহার কথা কি? £। ঈক্ষভ্যধিকরণ 2 €। ঈক্ষতের্নাশকম্‌॥ ১ ১ € ৩৭৮-৩১২, ব্রদ্বের ঈক্ষণে কা্ধযশীল! প্রকৃতি বিশ্ব ৬ । ৭ ( ডের ) করে; প্রকৃতি ও মায়া এক পৰ্য্যায়ভুক্ত ; ইহা বন্মের সংকল্লাত্মিকা শক্তি ; ব্রদ্মে বা ভগবানে দ্রেহ-দেহী ভেদ নাই) ব্রহ্ম বা ভগবান বিশ্বক্প ; জগত ব্র্দ হইতে পৃথক্‌ নহে, কিন্ত বর্ম জগৎ হুইতে পৃথক্‌ ; শ্রুতিতে কথিত মায়া ব! প্রকৃতি সাংখ্যোক্ত প্রকৃতি হইতে ভিন্ন; মায়ার স্বন্নপ ; ভগবানের বহু হইবার ইচ্ছা সৃষ্টি ও একাকী থাকিবার ইচ্ছা! প্রলয় ; ঈক্ষণ = ইচ্ছা; এই সুত্রে মধ্বাচাৰ্য্য ও বলদেব সম্মত ব্যাখ্যা; ব্ৰহ্ম শব্দবাচ্য বটে, প্রণবই ব্রশ্ষের বাচক ; ওঁকার তত্ব। গ্ৌণশ্চেম্নাত্ম শব্দাদ্‌ ॥ এই সৃত্রে মধ্ব ও বলদেবসম্মত ব্যাখ্যা ; জগৎ সৃষ্টিকর্তা ব্ৰহ্মে বা ভগবানে প্রাকৃতিক গুণের লেশমাত্র নাই; তিনি প্রাকৃতিক গুণাতীত বলিয়া নিগুণ। তঙ্রিষ্ঠস্ত মোক্ষোপদেশাৎ ॥ ভগবন্নাম মহিমী; জীবনযাপনের মুষ্টি- যোগ তগবন্নাম গ্রহণে স্থান, কাল, অবস্থার অপেক্ষ। নাই; নামের সহিত নামীর অভেদ জ্ঞান প্রয়োজন; নাম গ্রহণের বলে অনারব্ধ কর্মনাশ প্রাপ্ত হয়; মৃত্যুকালে সাধারণতঃ প্রারবনাশ প্রাপ্চ হয় বলিয়! মৃত্যুকালে নায়োচ্চারণে পরমপদ প্রাপ্তি হইয়া থাকে; মৃত্যুকালে নামো- চচারণ বিনা প্রযত্রে সম্ভব হইতে পারে বলিয়া চিরজীবন নামগ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অধ্যায় পা সুত্র পৃষ্টা ১ ১ ১ ১ ৬ ৩১৩-৩১৫ ৭ ৩১৬-৪০১ ( চৌদ্দ ) অধ্যায় পা সুত্র পৃষ্ঠা হেয় ত্বাবচন্নাচচ ॥ ১ ১ ৮ ৪০২-৪০৬- জগতস্বথ যত কিছু সবই আত্মার জন্য প্রিয়; শ্রীরুষ্ণ বা পরম তত্ব সেই আত্মার আত্মা - অতএব প্রিয়তম ; তিনিই জগৎ- কারণ ব্রহ্ম, পরমাত্মা, ভগবান) অতএব জগৎ-কারণ ব্রহ্ম পরম প্রিয়তম, এজন্য হেয় নহেন। >। প্রভিজ্ঞাবিরোধাৎ ॥ SEL STL ৪০৭ এক বিজ্ঞানে সর্বববিজ্ঞান প্রতিজ্ঞা; অমৃত পানকারীর আর পাতব্য কি থাকিতে পারে? ১০। স্বপ্যল্পাও ॥ ১ ১ ১০ ৪০৮-৪১০ সুযুণ্তিতে আত্মজ্ঞান বর্তমান থাকে । ১১। গ্ৰাতি সামান্যাৎ ৷ ১ ব্রহ্দ ও তৎসদ্বন্ধীয় জ্ঞান অভেদ ; কেহই সমগ্রভাবে ব্রদ্ষভাব ধারণ। করিতে পারেন না) বিদ্বানগণ নিজ নিজ সামধ্যান্থসারে বর্ণনা করেন মাত্র ৷ ১২। শ্রুতত্বাচ্চ ॥ ব্ৰ্ম নিগুণ হইলেও শ্বরূপগত অপ্রাকৃত গুণনকলের তিনি মহাসাগর । ৬। আনন্দময়াধিকরণ £ ১৩। জানন্দময়োহভ্যাসাৎ ॥ ১ ১ ১৩ ৪১৮-৪২২ তিনি সত্যজ্ঞানানস্তানন্দমাত্রেক রস- মু্তি; তিনি মায়াধীশ। ১৪। বিকারশব্দান্্নেতি চেন্ন প্রাচুর্য্যাৎ ] ১.১ ১৪ ৪২৩-৪২৪ ১৫ । তদ্বেতুব্যপদদেশাচ্চ ॥ ১ ১ ১৫ ৪২৫-৪২৬ বহ্মানন্দের কণামাত্রেই জীব, জগৎ আনন্দে বিভোর ৷ ১৬। মান্ত্রবর্ণিকমেব চ গীল্নতে। 8২7 ৮ uu ১১ 8১১-৪১৬ uu পা ১২ 8১৪-৪১৭ ১৭। ১৮ ( পনের ) লেতরোহুনুপপত্তে: ॥ জীব অংশ ) মুক জীব ব্রদ্মের সহিত সমুদায় ভোগ উপভোগ করিয়া থাকেন; ব্রহ্ম অংশী জীব অংশ/-_-্রহ্া পৰ্য্যন্ত প্ৰপঞ্চ জগতের সকলেই জীব পর্য্যায়তৃক্ত ; চিত্রমল গুণ- কশ্মজাত; ভগবচ্চরণে ভক্তি-হইলে উহ। অপসারিত হয়; তখন বিশুদ্ধ আত্মতত্ব স্বতঃ উদ্ভাসিত হইয়া! থাকে । ভেদ্বব্যপদ্দেশাচ্চ ॥ জীব ও বন্ধে ভেদ) দেহরলপ বৃক্ষে ছুই পক্ষী) দ্বিবিধ ক্ষেত্ৰজ্ঞ; অস্তঃকরণ উপলব্ধির যন্ত্র বা সাধন মাত্র; এক, নিত্য, সত্যবস্ত বা আত্মার অস্তিত্বের হেতু; আত্মতত্ববিক্পেষণে জ্ঞাতা “আমি” দ্বারা জ্ঞেয় “আমি”র উপলব্ধি) জ্ঞাতা আমি জীবাত্মা, জ্ঞেয় আমি পরমাত্মা; ছুইই এককালে দেহে বর্তমান থাকায় দুইই ক্ষেত্রজ্ঞ আখ্যায় আখ্যায়িত । কামাচ্চ নানুমানাপেক্ষা ॥ ভগবানের সংকল্পবশতঃ প্রকৃতি জড়া, একারণ উহার স্বতন্ত্র ইচ্ছ! সম্ভব নহে। অস্বিম্নস্ত চ ভদযোগং শাস্তি ॥ দ্বৈত পরমার্থতঃ অবনত; দ্বৈতাতিনিবেশ হইতেই ভয়; আনন্দময়কে আশ্রযু করিলেই অভয় প্রতিষ্ঠা লাভ হয়; একারণ ভগবদ ভক্তগণ বিপদ কিছুমাত্র ভয় করেন না, বিশ্বে বর্তমান যত কিছু ভাব সবই প্রমাত্মার ভাব; ভাবাদত, ক্রিয়াদৈত ভ্রব্যাঘেত। অধ্যায় পা হ্ত্র পৃষ্ঠা ১ ১ ১ ১ ১ ১ ১৭ ৪২৮-৪৩২ ১৮ ৪৩৩-৪৩১ ১৯ 8৪০ ২০ 9৪১-৪৪৫ ( ষোল ) শ। অস্তরীধিকরণ :_ ২১। ২২ । তান্তস্তদ্ধৰ্ম্মোপধেশাোৎ ৷ চক্ষুঃ প্রভৃতি জ্ঞানেজিয়,, হস্তপদাদি কর্শ্মেন্দিয়, উহাদের অধিষ্ঠাতা অধিদৈবগণ, সকলেই পরমাত্মার সতায় সত্তাবান ও শক্তিতে শক্তিমান ; সেই পরমাত্মাই জগৎ- কারণ; স্থতরাং তদ্ব্যতিরিক্ত কিছুই নাই । ভেদ্ব্যপদেশাচ্চান্তাঃ ॥ জাগতিক বস্তজাতে অন্তরে অবস্থিত অন্তৰ্য্যামী জাগতিক বন্তজাত হইতে ভিন্ন 3 জীবাত্মার অন্তরে অবস্থিত পরমাত্মা! জীবাত্মা হইতে ভিন্ন। ৮ আকাশাধিকরপ £_ ২৩। আকাশস্তল্লিঙ্গাৎ ॥ আকাশ ব্রহ্ষেত্ই বাচক; আকাশ জগৎ- কারণ নহে, ব্ৰহ্মই জগত্কারণ। ৯ প্রাণীধিকরণ £_ ২৪। অতএব প্রাণঃ ॥ প্রাণ ব্ৰহ্মেরই জ্ঞাপক ; প্রাণ-জগৎ-কারণ নহে, বহ্মই জগৎ-কারণ। ১০1 জ্যোতিরধিকরণ £_ ২৫। জ্যোতিশ্চরণাভিধানাও ৷ ২৬। জ্যোতি: পরব্রহ্মই | ছন্দোহভিধানান্সেভি চেল্প তথা! চেভোহর্পণ নিগমাৎ, তথাহি দর্শনম্‌ ৷ গায়ত্রী ছন্দোমাত্র নহে, উহ! ব্ৰহ্মবিষ্যা, ব্রহ্ম ও বিদ্যা অভেদদ বলিয়া? গায়ত্রী ব্ৰহ্মই । অধ্যায় পা সুত্ৰ পৃষ্ঠা ১ ২ > ২১ 889-8৫০ ২২ 8৫১-৪৫৪ ২৩ 8৫৫-8৫৭ ২৪ 8৫৮-৪৫০৯ ২৫ ৪৬০-৪৬২ ২৬ ৪৬৩-৪১৬৫ ( সতের ) অধ্যায় পাদ সুত্র পৃষ্টা ২৭। ভূভাদিপাদব্যপদেশোপপত্তেশ্চৈবমূ॥। ১ ১ র্ষবিদ্যা গায়ত্রীতেই অনুস্ত ; গায়ত্রী ্রদ্ষের ছন্দোময় মৃত্তি। ২৮। উপদ্েশভেদান্পেতি চেন্পোভয়ন্মিন্পপ্য- বিশ্োধাও ॥ টক ব্ৰহ্মই পরম জ্যোতি: । ১১। ইন্দ্রপ্রাণাধিকরণ £__ ২৯। প্রাণস্তথান্ুগ্রমাও ॥ ১ & প্রাণ ও অমুতন্বরূপ বলিয়া আপনাকে নিদ্দেশ ইন্দ্র ব্রদ্মভাবেই করিয়াছেন । ৩০। ন বক্ত,রাত্মোপদেশাদিতি চেৎ, অধ্যাত্মসম্বন্ধভূমাহাম্মিন ৷ টি ইন্দ্র ব্র্ষকেই উপাস্তরূপে নির্দেশ করিয়াছেন। ৩১। শানসদৃষ্্যা ভু পদ্দেশো। বামদ্বেবব॥ ১ ১ ইন্দ্র ভগবদ্ভাবে তন্ময় হইয়া এরূপ উপদেশ দিয়াছিলেন | ৩২। জীব-মুখ্যপ্রাণলিলাম্নেতি চেন্নঃ উপালা- ত্রৈবিধ্যাদাশ্রিতত্বাদিহভদৃযোগীৎ ৷ ১. ১ এক ব্রক্ষকেই ভিন্ন ভিন্ন উপাসক নিজ নিজ অধিকারাহ্ুসারে ভিন্ন ভিন্ন নামে ভজন! করেন; ফলতঃ উপাস্য, উপাসক, উপাসনা, এবং তদুপকয়ণ বু! সাধন সমুদায় বন্ধই । ২৭ ৪৬৬ ২৮ ৪৬৭-৪৬৮ ২৯ ৪৬৯ ৩০ ৪৭০-৪৭২ ৩১ ৪৭৩-৪৭৪ ৩২ ৪৭৫-৪৭৯ ( আঠার ) প্রথম অন্যান ছ্িতীক্ব পাদ অধ্যায় পাদ স্তর ১১২ জর্বন্র প্রসিদ্ধযধিকরণ 2 ১৩৩ ২।৩৪ ৩৩৫ ৪1৩৬ ৫1৩৭ ৬৩৮ ৭)৩৯ ৮71৪০ জব্বর প্রসিদ্ধোপদেশীৎ ॥ পুরুষ ক্রতুময়; জীব, ক্ষেত্রজ্ঞ প্রভৃতি ব্ৰহ্মকেই নির্দেশ করে । বিবক্ষিভগুণোপপত্তেষ্চ ৷ অন্ুপপত্তেস্ত ন শারীরঃ॥ কর্মম-কর্তৃব্যপদেশাচ্চ ॥ উপান্ত ও উপাসক অভেদ হইতে পারে না। শব্দবিশেষাৎ ৷ স্মৃতেন্চ ৷ অর্ভকৌকস্বাৎ ভদ্ব্যপদেশাচ্চ নেভি চেম্ন, লিচাষ্যত্বাদেশুং ; ব্যোমবচচ ॥ ব্ৰহ্ম এককালে একাধারে হক্ষুদ্র-বুহৎ, সুল- সুদ, অণু মহৎ, শূন্য-অনন্ত । জম্তোগপ্রাপ্তিরিভিচেৎ, ন, বৈশেষ্যাৎ ৷ পরমাত্মা জীবের অন্তরে বর্তমান থাকিলেও জীবের সুখ দুঃখে, পুণ্য-পাপে লিপ্ত হন না। ২১৩ অন্রধিকরণ £_ ৯1৪১ ১০1৪২ অন্ত। চরাচরগ্রহুণাৎ ॥ পরমাত্মা চরাচরের সত্তা । প্রকরণাচ্চ ৷ ১১1৪৩ গুহাং প্রবিষ্টাবাতানৌ হি ভদ্দৰ্শনাৎ ॥ ১২1৪৪ জীবাত্মা ও পরমাত্মা উভয়ে হৃদয়গুহায় অবস্থান করেন বটে । বিশেষণাচ্চ ৷ সাক্ষী ও নিয়ন্তরূপে পরমাত্মা হৃদয়গুহায় অবস্থিত বটে । uv 8 DD ST পৃষ্ঠা ৪8৮১-৪৮২ 8৮৩-৪৮৪ ৪৮৫-৪৮৬ 8৮৭-৪৮৮ ৪৮৯ ৪৯০-৪৯১ ৪৯২-৪৯৫ ৪৯৬-৪৯৭ ৪৯৮-৫ ০০ ৫০১ ৫০২-৫০৪ ৫০৫-৫০৬ ৩১৪ ১৩1৪৫ ১৪।৪৬ ১৫18৭ ১৬1৪৮ ১৭1৪৭ ১৮1৫০ 81১৫ ১৯৫১ ২৩1৫২ ( উনিশ ) অধ্যায় পাদ স্তর পৃষ্ঠা অন্তরাধিকরণ :__ অন্তর উপপন্তেঃ ॥ চক্ষুরাদি ইন্জিয়ের অভ্যন্তরে অবস্থিত পুরুষ পরমাত্মা বটে। স্থানাদ্িব্যপদেশীচচ ॥ নিয়স্ত, ও অন্তরধ্যামীরূপে পরমাত্মাই অন্তরে বর্তমান । সুখবিশিষ্টাভিধানাদেব চ ॥ অক্ষিপুরুষ স্থখস্বরূপ বিধায় ব্ৰহ্মই বটে। সেই আনন্দনিধিকে ভজন না করিলে আত্মপাত ঘটে । অভএব চ স ব্রহ্ম ৷ শ্রুভোপনিষৎক-গভ্যজ্িধানাচ্চ ॥ ব্ৰহ্বিদ্গণের যে গতি অক্গিপুরুষের উপাসকগণেরও সেই গতি । অনবস্থিতেরসম্তবাচ্চ নেতরঃ ॥ ইন্দ্িয়গণের অধিদেবতাগণ ক্ষেত্রজ্ঞ নহেন। ক্ষেত্ৰজ্ঞ বা বাসুদেব ব্ৰহ্মই বটে । অন্তর্য্যাম্যধিকরণ 8 আন্তর্ধ্যাম্যধিদৈবাধিলোকাদিষু ভন্ধর্ব্যপদেশাৎ ॥ পরমাত্মাই অন্তর্যযামী, অধিদৈব, অধিলোক-__ সমুদায়ই ৷ নচ ্মার্তমতদ্বর্মাভিলাপাচ্ছারীরঞ্চ ৷ মায়! বা প্রকৃতি ব্ৰহ্মের সদসদাত্মিক! শক্তি, মায়! বা জীব অন্তৰ্যামী নহে, পরমাত্মাই অন্তর্ধ্যামী। ১ ১ ১৩ ১৪- ১৫ ১৯ ৫০৭-৫০৯ ৫১০-৫১২ ৫১৩-৫১৪ ৫১৫-৫১৬ ৫১৭ ৫১৮-৫২১ ৫২২-৫২৫ ৫২৬-৫২৮ ( কুড়ি ) অধ্যায় পাদ সুত্র পৃষ্ঠা ২১৫৩ উভভয়েইপি ছি ভেদেনৈনমধীয়ভে ৷ ৯ কাথ ও মাধ্যন্দিন উড়য় শাখীয় পাঠে পরমাত্মাই জীবের নিয়ন্তা ও অন্তরধ্যামী ৷ ৫1১৬ অন্বশ্তত্বাধিকরণ £_ ২২।৫৪ অনৃস্থত্বাদিগুণকো ধর্ম্মেক্তেঃ ৷ ১ পরমাত্মা,জীব ও মায়া উভয়েরই নিয়ামক) তিনি ক্ষেত্ৰজ্ঞ, সর্ববাধ্যক্ষ, সর্ববসাক্ষী, সমুদায় ক্ষেত্রজ্জের যূল । ২৩।৫৫ বিশেষণ-ভেদব্যপদেশাভ্যাঞ্চ নেতরৌ ৷ তিনি প্রধান ও পুরুষের ঈশ্বর ; দৃশ্ঠমান কারণবর্গ বিকারশীল, তাহাতে বিকারের সংস্পর্শ না থাকায় তিনি “অদ্ভুতকারণ |” ১ ২৪৫৬ ক্ুপোপন্তাসাচ্চ ৷ ১ শ্রুতিতে উল্লিখিত যৃত্তি জীব বা! প্রধানে সম্ভব নহে । ৬১৭ বৈশ্বীনরীধিকরণ £_ ২৫1৫৭ বৈশ্বানরঃ সাধারণশব্দ-বিশেষাৎ ৷ ১ শ্রতিতে বৈশ্বানর শব্দ, এবং স্মৃতিতে সমপর্ধ্যায়ভূক্ত অগ্নি, হুতাশন শব পরমাত্মারই বোধক । ২৬৫৮ স্মর্ধ্যমাণমনুমানং ভ্যাদিতি ৷ ১ ২৭৫৯ শবাদিভ্যোইন্তঃপ্রতিষ্ঠানাচ্চ নেতি, চেন্স, তথাদৃ্্যুপদে শীদসম্ত বা, পুরুষমপি চৈন-মঞ্ধীয়তে ৷ ১ পরমাত্মা পুরুষরপে পুক্ষনুক্তে বর্ণিত আছেন, তাহা উপাসনার জন্য ; তিনি পুরুষরূপী হইলেও সর্বময় ৷ ২১ ৫২৪-৫৩০ ২২ ৫৩১-৫৩৩ ২৩ ৫৩৪-৫৩৫ ২৪ ৫৩৬-৫৩৭ ২৫ ৫৩৮-৫৩৯ ২৬ ৫৪০ ২৭ ৫8১-৫৪৪ ২৮1৬০ ২০৯৬১ ৩০।৬২ ৩১৬৩ ৩২।৬৪ ৩৩1৬৫ ১।৬৬ ২1৬৭ ( একুশ ) অধ্যায় পাদ মুত্র পৃষ্ঠা অতএব ন দেবতা ভূত্তঞ্চ ॥ ১ বর্ষ, পরমাত্মা, ভগবান যখন সর্বময় ; তখন বৈশ্বানর ত্রহ্মই বটে । সাক্ষাদপ্যবিরোধং জৈমিনিঃ॥ ১ অভিব্যক্তেরিভ্যা শ্বারখ্যঃ ॥ ১ ভগবান যখন উপাসকের ভাবনানুসারে বপুঃ ধারণ করেন, তখন তাহার “বৈশ্বানর* রূপে অভিব্যক্তিতে আশ্চর্য্য কি? অন্ুম্থৃতে্ব্বাদ্দরিঃ ॥ ১ সম্পন্তেরিভি জৈমিনিস্তথা হি দর্শয়তি ॥ ১ সম্প্ উপাসনা । আমনন্তি চ এনমন্মিন্‌ ৷ ১ ভগবান সর্বব্যাপী, অনন্ত, তিনি লোক- দৃষ্টিতে পরিচ্ছিননবৎ প্রতীয়মান হইলেও সমকালে সর্বব্যাপী ও অনস্ত | ২ ২৮ ৫৪৫-৫৪৬ ২ ২৯ ৫৪৭ ২ ৩০ ৫৪৮-৫৪৯ ২ ৩১ ৫৫০ ২ ৩২ ৫৫১-৫৫৩ ২ ৩৩ ৫৫৪8-৫৫৫ প্রথম অন্যাঁস্ম_তুতীস্ পাচ ১১৮ ছ্যুভ্যাদ্যধিকরণ £_ দ্যুজ্বান্যায়তনং স্বশব্দাৎ ৷ বিশ্ব পরমাত্মায় ওতপ্রোতভাবে অবস্থিত ; তিনি একাধারে এককালে কর্তৃকর্শ প্রভৃতি সমুদায় কারকব্যাপার ; তাহার আরাধনায় সমুদায় দেবতার আরাধন! করা হয় । মুক্তোপত্বপ্য-ব্যপদ্দেশীচ্চ ৷ আত্মারাম, নিগ্রন্থমুনিগণেরও তিনি উপাস্য ৷ > ১ ৩ ১ ৫৫৭-৫৫৯ ৩ ২ ৫৬০-৫৬১ (বাইশ ) ৩৬৮ নাম্গুমানমভচ্ছব্দাৎ ॥ ৪1৬৯ ৫1৭৩ ৬৭১ ৭1৭২ প্রাণভূচ্চ ॥ ভেদব্যপছে*গ ॥ জীব ব্রন্মে অচিস্ত্যভেদাভেদ, বহিরঙ্গা, তটস্থা ও অন্তরঙ্গ শক্তির লৌকিক দৃষ্টাস্ত ; ্রন্ষের বহিরঙ্গা শক্তি বিকাশে স্থষ্টি) ব্রন্গের অতি অল্লাংশেই প্ৰপঞ্চ; পাদ, অংশ প্রভৃতি অনন্ত ব্রন্ধে প্রযোজ্য নহে, ভাষায় ব্যক্ত করিবার জন্যই ব্যবহার ; অহংকারে বহিরঙ্গা ও তটস্থা উভয় শক্তির ক্রিয়া) জীব ব্রন্মের তটস্থা শক্তযংশ ; বহিরিঙ্গ শক্যংশ উপাধিতে অভিমানী জীববদ্ধ ; অহংকার তিন প্রকার) প্রথম প্রকার অহংকার শুদ্ধ জীবের) দ্বিতীয় প্রকার অহংকার জীবনুক্ত জীবের ; তৃতীয় প্রকার অহংকার সাধারণ বদ্ধ জীবের; কৈবল্যে অহংকার বা অহংজ্ঞান থাকে কিনা বলা যায় নাঃ মুক্তি পাচ প্রকার; ভক্তগণ ইহাদের কোনটিই চান না? মুক্ত দুই প্রকার__ নিত্যসিদ্ধ ও সাধনসিদ্ধ ; নিত্যসিদ্ব_ভগবানের অন্তরঙ্গ! স্বরূপ শক্তির বিভূতি; সাধনসিদ্ব--ভগবানের তটস্থা শক্তির বিভূতি । প্রকরণাচ্চ ॥ স্থিত্যদ্নাভ্যাং চ ॥ ২১৯ ভূমাধিকরণ £_ ৮৭৩ ভুমা সমপ্রসাদাদধুযুপদেশাৎ ॥ ৯1৭৪ ভূম! জীব নহে, পরমাত্মাই বটে। ধন্মোঁপপত্তেন্চ ৷ অধ্যায় পাদ সুত্র পৃষ্ঠা ১ ১ ৩ ৩ ৩ ৫৬২ 8 ৫৬৩ ৫ ৫৬৪-৫৭২ ৬ ৫৭৩ ৭ ৫৭৪ ৮ ৫৭৫-৫৭৭ a ৫৭৮-৫৮০. ৩২০ ১০৭৫ ১১|৭৬ ১২।৭৭ 81২১ ১৩। ৭৮ ৫1২২ ১৪1৭৯ ১৫৮০ ১৬৮১ ১৭1৮২ ১৮1৮৩ ১৯1৮৪ ( তেইশ ) ডি অধ্যায় পাদ সুত্র পৃষ্টা অক্ষরাধিকরণ $= অক্ষরমন্থরাস্তধূতেঃ ॥ সা চ প্রশাসনাৎ ॥ অগ্ভভাব-ব্যাবৃত্তেশ্চ ৷ অক্ষর পুরুষই পরমত্রক্ষ, তিনিই সকলের ভজনীয় | ঈক্ষতি কর্মাধিকরণ £- ঈক্ষতিকৰ্ম্ম ব্যপদেশা সঃ ৷ ওঁকার পরম আত্মারই বাচক এবং $ুঁকার উপাসক পরম ব্রহ্মেরই উপাসক ৷ দহরাধিকরণ £_ দহ উত্তরেভ্যঃ ৷ দহরাকাশ পরত্রক্মই ৷ গতি-শব্দাভ্যাং, তথাহি দৃষ্টং লিন্ংচ ৷ বযুপ্তিতে ব্ৰহ্মে বা পরমাত্মায় গমন উল্লেখে দহরাকাশ ব্ৰহ্মই বটে । প্বতেশ্চ মহিন্মোহস্তান্মিন্নপলন্ধেঃ ৷ দহরাকাশে প্রাদেশমাত্রপুরুষই জগদ্‌- বিধারক। প্রসিদ্বেন্চ ৷ ইভরপরামর্শাৎ স ইতি চেম্নাসম্তবাৎ ৷ সম্প্রদাদ (জীব) দহরাকাশ নহে, পরমাত্মাই দহরাকাশ। উত্তরাচ্চেদীবিভু তম্বরূপস্ত ॥ অপহত . পাপ্রত্বাদিগুণ জীবের স্বরূপা- uv ১১ ১২ ১ ০০ ১৫ ১৭ ১৮ ১৯ ৫৮১-৫৮২ ৫৮৩-৫৮৫ ৫৮৬-৫৮৭ ৫৮৮-৫৯১ ৫০২-৫০৩ ৫৯৪-৫2৫ ৫৯১৬-৫০৯৮ ৫৯৯ ৬০০-৬০১ ৬০২-৬০৫ ২০৮৫ ২১৮৬ ২২৮৭ ২৩1৮৮ - ৬২৩ ২৪1৮৯ ২৫।৯০ ৭২৪ ২৬।৯১ ( চব্বিশ ) অধ্যায় পাদ স্বত্র পৃষ্ঠা বির্ভাবের পরে লাভ হয়ঃ জীব সাধনা দ্বারা ব্রক্মগুণ পাইলেও, জীব ব্রহ্ম নহে । অন্ঠার্থম্চ পরা মর্শঃ ॥ ভগবান ও ভক্তের সম্বন্ধ যোগাত্মক ও ঝণাত্মক তড়িতের ন্যায়, অথবা দর্পণে প্রতিবিশ্বিত বালকের মুখের হ্যায় । অল্পশ্রুতেরিভি চেও, ভতুক্তম্‌ ॥ উপাসকের উপাসনার স্থবিধার জন্য ক্ষুদ্র যৃত্তি ধারণ । অন্ুুকৃতেস্তত্য চ ॥ উপাসক উপাস্তের সহিত তন্ময়ত্ব প্রাপ্ত হইলেও এক পদার্থ হইতে পারে না। অপি ন্মর্য্যতে ৷ ভগবছুপাসনায় মুক্তগণ তগবৎ সাধর্ম্য প্রাপ্ত হন। গ্রমিতাধিকরণ £_ শব্দাদেব প্রমিতঃ ৷ ভগবান পরিচ্ছিন্নরূপে প্রতীয়মান হইলেও তিনি সমকালে, একাধারে অপরিচ্ছিন্ন অনস্ত, ব্যাপক, স্বরূপতঃ আনন্দমাত্র ৷ হৃত্পেক্ষয়! তু মনুষ্থাধিকারত্বাৎ ৷ দেবভাধিকরণ £_ তদ্ুপর্য্যপি বাদরায়ণঃ সম্ভবাৎ ৷৷ দেবতাগণ জীবপর্ধ্যায়ের অন্তভুক্তি ; দেবগণও পরব্রহ্মের উপাসক; ব্ৰহ্মাদি দেবতার তপস্তা এবং তাহা হইতে ব্রহ্ষ- প্রাপ্তির অধিকার আছে। ১ ২০ ৬০৬-৬০ ৭ ২২ ৬০৯-৬১০ ২৩ ৬১১-৬১২ ২৪ ৬১৩-৬১৪ ২৫ ৬১৫-৬১৬ ২৬ ৬১৭-৬২০ ( পঁচিশ ) LL অধ্যায় পাদ স্থত্র পৃষ্টা ২৭৯২ বিরোধঃ কর্ম্মণীতি চে, নানেক- প্রতিপন্তেদর্শনা ॥ যোগসিদ্ধগণের ন্যায় দেবতাগণের এক- কালে ব্হুশরীর ধারণ সম্ভব। ২৮৯৩ শব ইতি চেৎ, নাতঃ প্রভবাৎ প্রভ্যক্ষান্ুমানাভ্যাম্‌ ৷ বেদ পরব্রহ্বের শবস্তরে অভিব্যক্তি; প্রলয়ে দেবতা ও ভূতগণ পরত্রন্দে সুক্মক্পে লীন থাকে? বিশ্ব প্রপঞ্চ পূর্ব- স্বষ্টতে যাহ! ছিল, বর্তমানে তাহাই এবং ভবিষ্যতেও অন্ত প্রকার হইবে না। ২৯১৪ অত এব চ নিভ্যত্বম্‌ ৷৷ ৩০৯৫ জমাননামক্সপত্বাচচাবৃত্তাবপ্যবিরোধে। দর্শলাৎ স্মৃতেশ্চ ৷৷ ভবিষ্যৎ জগৎ বর্তমান জগতের প্রতিচ্ছবি মাত্র; প্রলয়ে প্রপঞ্চ জগচ্চিত্র বায়স্কোপের ফিল্মের ন্যায় অতি স্বন্মাবস্থায় থাকে ৮২৫ মধ্বধিকরণ :_ ৩১৷৪৬ অধবাঁদিঘসন্তবাদনধিকারং জৈমিনিঃ।। ৩২৷৯৭ জ্যোভিষি ভাবাচ্চ ৷৷ ৩৩৯৮ ভাবন্ত বাদরায়ণোহস্তি হি ॥ বন প্রভৃতি দেবতাগণেরও মধুবিদ্যাদিতে অধিকার আছে। ৯২৬ অপশুদ্রীধিকরণ 2 ৩৪৯৯ শুগম্য তদনাদর-শ্রুবণাৎ তদদাদ্রেবণাৎ সূচ্যতে হি! জানশ্রুতি-হংস আখ্যায়িকা ) শ্রুতিতে ২৭ ৬২১ ২৮ ৬২২ ৬২৪ ২৯ ৬২৫-৬২৬ ৩০ ৬২৭-৬২৮" ৩১ ৬২৭ ৩২.৬৩০-৬৩১ ৩৩ ৬৩২-৬৩৩ ৩৪ ৬৩৪-৬৩৮ ৩৫১০০ ৩৬১০১ ৩৭১০২ ৩৮১০৩ ৩৭১০৪ ৪ ০1১০৫ ( ছাব্বিশ ) অধ্যায় পাদ স্থত্র পৃষ্ঠা “শূদ্র” শব্দের অর্থ শোকান্বিত, শূদ্রজাতি নহে; শূদ্রজাতির বেদে অনধিকারের কারণান্ুমান ; পরবর্তীকাল পুরাণাদিতে বেদতত্ব সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হইয়াছে। ক্ষত্রিয়ত্বাবগতেশ্চ ৷৷ উত্তরত্র চৈত্ররথেন লিজা ॥ সংস্কারপরামর্শাৎ ভদভাবাভিলাপাচ্চ॥ তর্দভাবনির্ধারণে চ প্রবৃত্ত; ৷৷ শৃদ্রের বেদাধ্যয়ন নিষিদ্ধ বটে, কিন্ত ভগবত্তত্ব শিক্ষাদান নিষিদ্ধ নহে। শ্রবণাধ্যয়নার্থ প্রতিষেধাৎ ৷ স্মৃতেম্চ ৷৷ ৬২৩ প্রমিভাধিকরণ £__ ৪১১০৬ কম্পনা ৷ ব্ৰহ্মের ভয়েই স্বর্য্য প্রভৃতি স্ব স্ব কার্ধ্যে অবস্থিত ; স্ত্রে “ভয়াৎ” না বলিয়। স্ত্র- কার “কম্পনাৎ” পদ ব্যবহার করিলেন কেন? জাগতিক প্রত্যেক ব্যাপারে ষড়- বিকাররূপ যে পরিবর্তন দৃষ্ট হয়, উহার যূলতত্ব কোথায়? একের বহু হইবার সংকল্পই মূল স্পন্দন, উহার অনুম্পন্দনে প্রপঞ্চে পরিবর্তনের নিদর্শন; কি স্থাবর কি জঙ্গম সমুদায়ে প্রাণশক্তি বিদ্যমান অভিব্যক্ত বা অনভিব্যক্ত ভাবে; শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা- স্থ্টি ও প্রলয়রূপ দোলনের প্রতীক ? ব্রহ্ম ভয়ঙ্কর নহেন, তিনি প্রিয় বস্তু সকলের মধ্যে প্রিয়তম; তিনি আশ্রিতগণের, uu ১ ১ ৩৫ ৬৩৯ ৩৬ ৬৪০-৬৪১ ৩৭ ৬৪২-৬৪৪ ৩৮ ৬৪৫-৬৪৬ ৩৯ ৬৪৭-৬৪৮ ৪০ ৬৪১৯ ৪১ ৬৫০-৬৬২ ৪২১০৭ ১০1২৭ ৪৩১০৮ 881১০৯ ৪৫১১০ সর্বার্থদান কারী, এমন কি আপনাকে পর্যাস্ত দান করিয়া থাকেন ; তিনি আনন্দ স্বরূপ রসরাজ ; নিত্যধামে আনন্দময়ের রাসনুত্যের অশ্কম্পনে প্রপঞ্চে গতি, ক্রিয়া, বৃদ্ধি প্রভৃতি ; ভগবানই তডিতের যোগাত্মক কেন্রত্বরূপ, আর সকলে খণাত্মক কেন্দ্রে অবস্থিত, অতএব ভগবানই তত্বতঃ একমাত্র পুরুষ আর সকলে প্রকৃতিধর্্ম- বিশিষ্ট; অনস্ত গতি ও স্থিতি একই ; কেন্দ্রের মৃদু গতি পরিধির অত্যধিক বেগের কারণ; রাসনৃত্য ভগবানের নিত্যধামের ব্যাপার ; সেখানে দেশকাল বস্তু পরিচ্ছেদ নাই ; অতএব “গতি” ও “স্থিতি” ভেদ সেখানে নাই । জ্যোতির্দর্শনাৎ॥ ব্ৰহ্মের জ্যোতিঃকণা পাইয়াই প্রপঞ্চের জ্যোতিম্মানগণের জ্যোতি: | অর্থান্তরত্বাদিব্যপদেশীধিকরণ $= আকাশোহরথান্তরত্বাদিব্যপদেশাহ ॥ নামরূপ তাহাতে অবস্থিত কিন্ত তিনি নামরূপ হইতে পৃথকৃ। সুযুণ্ত,গক্রান্ত্যোর্ভেদেন ॥ পত্যাদিশবেভ্যঃ ৷ ৪২ ৬৬৩-৬৬৪ ৪৩ ৬৬৫-৬৬৬ 8৪ ৬৬৭-৬৬৮ ৪৫ ৬৬৯ ১1২৮ ১১১১ ২১১২ ৩১১৩ ৪1১১৪ ৫1১১৫ ৬১১৬ ৭1১১৭ ( আঠাশ ) প্রথম ধ্যান চতুর্থ পাদ আনুমানিকাধিকরণ £_ আনুমানিক মপ্যেকেষামিতি চেৎ, ন, শরীররূপ কবিন্যাস্ত-গুহীতের্দ্শযিতি চ ॥ কঠোক্ত “অব্যক্ত” প্রধান নহে, ভাগবতেও “অব্যক্ত” পরব্রন্ম অর্থে ব্যবহৃত । সৃক্ষমন্ত তদহ ত্বাৎ ৷ কারণ শরীরই অব্যক্তশব্দে কঠ শ্রৃতিতে কথিত । তদধীনত্বাদর্থব ॥ আত্মা, শরীর, রথী, রথাদি সমুদায় পরমাত্মার অধীন । জ্ঞেয়ত্বাবচনাচ্চ ॥ শ্রুতিতে অব্যক্কের জ্ঞেয়ত্বের উল্লেখ নাই, কিন্তু প্রধানের জ্ঞেয়ত্ব ব্রিতাপজাল! নাশের জন্য প্রয়োজন, সাংখ্য বলেন। বদভীতি চেৎ, ন, প্রাজ্ঞ! হি প্রকরণা€ু॥ ১ ্ররাণামেৰ চৈবমূপন্ঠাসঃ প্রশ্নন্চ ৷ রর কঠশ্রতিতে নচিকেতার প্রশ্নে প্রধানের উল্লেখ নাই, স্থতরাং উহার উত্তরও প্রদত্ত হয় নাই। মহদ্বচ্চ ৷ কঠশ্রুতির “মহৎ” সাংখ্যোক্ত মহত্ত্ব নহে; উহা মায়াশক্তিতে ভগবানে অপিত চিদাভাস ৷." অধ্যায় পাদ সুত্র পৃষ্টা ১ ১ ৬৭১-৬৭৪ ৩ ৬৭৬-৬৭৮ ৪ ৬৭৯-৬৮০ ৫ ৬৮১-৬৮২ Ss ৬৮৩ ৭ ৬৮৪-৬৮৫ ( উনত্রিশ ) ও অধ্যায় পাদ স্থত্র পৃষ্ঠা ২২৯ চমসাধিকরণ ৫ ৮।১১৮ চমসব্দবিশেষাঁৎ ॥ ১:৪৮ ৬৮৬-৬৮৮ শ্বেতাশ্বতর শ্রুতির “অজা” সাংখ্যেক্ত প্রধান নহে; উহা ব্ৰহ্মশক্তি ; ব্ৰ্ম অজ, একারণ উহা অজা। ৯১১৯ জ্যোতিরুপত্রমা তু ভথা হ্থাধীয়ত একে৷ ১ ৪ ৯ ৬৮৯-৬৯১ “অজা” ব্রহ্ম হইতে উৎপন্ন একারণ ব্ৰহ্মশক্তি । ১০!১২০ কল্পনোপদেশাচ্চ মধবাদ্দিবদ্বিরোধঃ ৷ ১ ৪ ১০ ৬৪২-৬৪৩ ব্রহ্মের যেমন একপাদে প্রপঞ্চজগৎ, সেইরূপ ব্রহ্মশক্তি জার একপাদে প্রপঞ্চ, ত্রিপাদ ব্রহ্মে অবিনাভাবে শক্তিরূপে অবস্থিত। ৩৩০ জংখ্যোপসংগ্রহাধিকরণ $_ ১১১২১ ন সংখ্যোপসংগ্রহাদ্দপি নানাভাবাদ- তিরেকাচ্চ ॥ SE BASS EG ১২১২২ গ্রাণাদয়ো বাক্যশেষাৎ ॥ ১ ৪ ১২ ৬৪৫-৬৪৬ ১৩১২৩ জ্যোভিষৈকেষামসত্যন্নে ৷ ১.৪ ১৩ ৬৯৭ ৪৩১ কারণত্বাধ্ধিকরণ £ ১৪।১২৪ কারণত্বেন চাকাশাদিযু বথাব্য- পদিষ্টোক্তেঃ ৷ 7 ১ 8 ১৫ ৭০০-৭০১ ১৪ ৬৯৮-৬৯৯ ১৫১২৫ সমাকর্ষাৎ ৷ ৫1৩২ জগদ্‌বাচিত্বাধিকরণ £_ ১৬।১২৬ জগদ্বাচিত্বা ৷ ১ ৪ ১৬ ৭০২-৭০৩ ব্ৰহ্ম জগতের কর্তা, জগৎ তাহার কার্ধ্য। ( তিরিশ ) অধ্যায় পাদ স্থত্র পৃষ্টা ১৭১২৭ জীবযুখ্যপ্রাণলিজাম্মেভি চে, তদ্ব্যাখ্যাতম্‌ ॥ ১.৪. ১৭ ৭০৪-৭০৬ ব্রদ্মে অনস্ত মাত্রা বা পরিমাণ বিদ্যমান, এজন্য জীবলিঙ্গ, প্রাণলিঙ্গ, প্রধান লিঙ্গ সমুদায়ই তাহাতে থাকিবে; তিনি সকল ভূতের আত্মা, এজন্য তাহার উপাসনা বহবায়াস সাধ্য নহে। ১৮১২৮ অন্ার্থং তু জৈমিনি; প্রশ্ন- বাখ্যানাভ্যামপি চৈবমেকে ॥ ১. ৪ ১৮ ৭০৭-৭০৮ ও।৩৩ বাক্যাম্বয়াধিকরণ £_ ১৯৷১২৯ ৰাক্যান্বয়াৎ ৷ ১ ৪ ১৯ ৭০৯-৭১১ ২০।১৩০ প্রতিজ্ঞাসিদ্ধেলিল্মান্মর্থ্যঃ ॥ ১.৪. ২০ ৭১২-৭১৩ এক বিজ্ঞানে সর্ব বিজ্ঞান সিদ্ধির জন্য আত্মা পরমাত্মাই বটে । ২১১৩১ উৎক্রমিষ্যত এবং ্‌ ভাবাদিভ্যৌড্‌লোমিঃ॥ ১.৪ ২১ ৭১৪-৭১৫ ২২১৩২ অবস্থিতেরিতি কাশকৃওজঃ ॥ ১ ৪ ২২ ৭১৬-৭১৭ ৭৷৩৪ প্রকৃত্যধিকরণ £_ ২৩১৩৩ প্রকৃতিশ্চ প্রতিজ্ঞাদৃষ্টান্তানু- প্রোধাৎ ৷ ১ ৪ ২৩ ৭১৮-৭১৯ ব্ৰহ্ম শুধু নিমিত্ত কারণ নহেন, উপাদান কারথও বটেন। ২৪1১৩৪ অনিধ্যোপদেশাচচ ৷ ১ ৪ ২৪ ৭২০ ব্ৰহ্মের সংকল্প হইতে যখন জগৎ সৃষ্টি, তখন চিৎ্-অচিৎ সমুদ্ায়ই ব্রন্মের সংকল্প হইতে উৎপন্ন, অতএব ব্রহ্ম উপাদান কারণ। ( একত্রিশ ) অধ্যায় পাদ সুত্র পৃষ্টা ২৫১৩৫ সাক্ষাচ্চোভগ্লান্গানাৎ ॥ ব্ৰহ্ম নিমিত্ত ও উপাদান কারণ, ইহা শ্রতিতে সাক্ষাৎ্ভাবে কথিত হইয়াছে । ২৬১৩৬ আত্মকভে ॥ ব্রদ্দম আপনাকেই বহুরূপে প্রকটিত করিয়াছেন । ২৭১৩৭ পরিণামাৎ ॥ ব্রহ্ম জগদ্রূপে পরিণত হইলেও স্বরূপ হইতে বিচ্যুত হন না) ত্র্দে সমুদায় বিরোধের সমাধান, ব্রহ্মতত্ব ভাষায় প্রকাশ করিতে হইলে একাধারে পরস্পর" বিরোধী ধর্মের সমাবেশ করিতে হয়; সপুণ-নিগুণ, সবিশেষ-নিৰ্বিশেষ উভয় শ্রুতিই তাহাতে সার্থকতা লাভ করে । ২৮১৩৮ যোনিশ্চ হি গীয়ভে ৷ ৮1৩৫ জবর্বব্যাধ্যানাধিকরণ £__ ২৯১৩৯ এতেন সবের ব্যাখ্যাতা ব্যাথ্যাভাঃ॥ সমুদায় বেদান্ত ব্রহ্মপর | ১ ১ ১ ১ ৪8 ২৫ ৭২১-৭২৩. ৪ ২৬ ৭২৪-৭২৫' 3. ২৭ ৭২৬-৭৩২ ৪ ২৮ ৭৩৩ ৪ ২৯ ৭৩৪-৭৩৫ ৯৪৪৪৫ ও নমো ভগবতে বাস্ুদেৰায় । ক্ষ সূত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত বা সার্বজনীন সুখসাধ্য সাধন-শাল্ররূপে শ্রীমদৃভাগবতসাহায্যেব্র্ষসৃত্র লোচন!। ওঁ নিত্যানন্দং পরমন্ুখদং কেবলং জ্ঞানমূ্তিম্‌ বিশ্বাতীতং গগনসদৃশং তত্বমন্তাদিলক্ষ্যম্‌ ৷ একং নিত্যং বিমলমচলং সর্ববীসাক্ষিভূতম্‌, ভাবাতীতং ত্রিগুণরহিতং সদ্গুরুং তং নমামি ॥ নিন্রেদন ব্ৰ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত গ্রন্থের পাগুলিপি ১৩৪০ বঙ্গাব্দে শেষ হইয়াছিল। তাহার পর উহার একটি ভূমিকা লিখিতে আরম্ভ করি। উহাতে প্রাসঙ্গিক নানা বিষয় সন্নিবেশিত করায় উহার আকার বৃহৎ হইয়া পড়ে । আমার কয়েকজন বন্ধু, বিশেষতঃ স্বৰ্গত, অগ্রজপ্রতিম ভক্তিভাজন ৬রামদাস বন্দ্যোপাধ্যায় * মহাশয় উহা শুনিয়া মুগ্ধ হন এবং উহ! “বেদান্ত প্রবেশ’ নামে মুদ্রিত ও প্রকাশিত করিতে অনুরোধ করেন; তদনুসারে উহা ১৩৪৩ সালে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। মনে আকাজ্জা ছিল যে, যদি “বেদান্ত প্রবেশ” সাধারণ শিক্ষিত পাঠক সমাজে আদর পায়, তাহা হইলে যূল পুস্তক মুদ্রিত ও প্রচারিত করিতে চেষ্টা পাইব। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, উক্ত “বেদান্ত প্রবেশ” গ্রন্থ মনীষীগণের এবং দৈনিক, মাসিক পত্রিকা প্রভৃতির প্রশংসা লাভ *শান্তিপুর নিবাদী ৬ রামদাস' বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় প্রথম জীবনে A. 0. Bengal-এ ০০০৪০ ,01765৮ ছিলেন। কিন্তু ইংরাজ উপরওয়ালাদের সঙ্গে তার মনোমালিম্য হওয়ায় উদ্ত কাছে ইন্তফা দিয়া জয়নগর (২৪ পরগণা ) ইন্টিটিউননে প্রধান শিক্ষকরণো যোগদান করেন। জয়নগরেই রামদাম বাবু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইনি কলিকাতা! বিশ্ববিদ্ভালংয়র একজন কৃতি ছাত্র ছিলেন। রামদাস বাবু একজন শাস্তরজ্ঞ পরম ধাম্মিক এবং ত্যাগী পুরুষরূপে জয়নগর টিজিং বাজে 29527 নিকট. পরম শ্রদ্ধা ও ভক্তির পাত্র ছিলেন। ২ ব্রগঙ্থর ও শ্রীমদ্ভাগবত করিলে বর্তমান উপন্যাপাঁদি তরল সাহিতোর যুগে, উহার প্রতিচালাভ আশা করা ঢরাশ! ভিন্ন কিছু নয় । সম্প্রতি অন্তর্যামীর প্রেরণায় প্রণোদিত হইয়! বরঙ্গহ্থজের প্রথম চারিটি সুত্রের স্থবিস্তত আলোচনা করিলাম । প্রকৃতপক্ষে মোটামুটিভাবে বেদাস্তের জ্ঞাতব্য বিষয় সকল, উক্ত চারিটি স্থত্রের অন্তর্ভূক্ত, ইহা বেদান্তাভিজ্ঞ পণ্ডিতগণের অবিদিত নহে । মূল পুস্তকে মত্রুত আলোচনা অতিশয় দীর্ঘ হইয়াছে । ভূমিকা স্বরূপ লিখিত “বেদান্ত প্রবেশ’ বৃহৎ, গ্রন্থ হওয়ায়, উহা প্ররুতপক্ষে ভূমিকা পর্যায়ে পড়ে না। একারণ উক্ত চারিটি স্থত্রালোচন। আরম্ভ করিবার পূর্বে অবতরণিকা স্বরূপ, আলোচনার প্রকৃতি, আমার অক্ষমতা সত্বেও আলোচনা হইতে নিবুন্ত না হইবার কারণ প্রভৃতি জ্ঞাপন করিবার জন্য, একটি নাতিদীর্ঘ “আভাস” সংযোজিত করিয়াছি। প্রথম চারিটি স্থত্রের আলোচনা অতিশয় দীর্ঘ হইয়া পড়িয়াছে। ইচ্ছা করিয়াই উহার সঙ্কোচ সাধন করি নাই। অনেকে মনে করিতে পারেন, এত দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন কি? একারণ আমার বক্তব্যগুলি নীচে লিপিবদ্ধ করিতেছি । (১) ব্রক্ষসত্র অতি উপাদেয় গ্রন্থ। মানব মনীষার অতি গৌরবের বস্তু ৷ উহ! শুধু দর্শনশাস্ত্র নহে, অত্যুত্তম আনুষ্ঠানিক সাধনশান্্। মানব সাধারণের আধ্যাত্মিক চরম উন্নতি সাধন ইহার মহৎ উদ্দেশ্য। কিন্তু উহ! এতদিন ভারতবর্ষায় অতি টচ্চন্তরের সন্ন্যাসী সম্প্রদায় এবং কয়েকজন সর্বশান্ত্রে পারদর্শী সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতগণের মধ্যে নিবদ্ধ ছিল। সাধারণে উহা! বিভীষিকার চক্ষে দেখিয়া থাকেন । এই বিভীষিকা দুর করিবার জন্য এবং আমার ন্যায় আত সাধারণ স্তরের অগ্ধশিক্ষিত মানবগণকে বেদান্তালোচনায় উৎসাহিত করিয়া আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য, আমি ইহার আলোচন! দর্শনশাস্তের দৃষ্টিতে না করিয়া, সাধারণের সহজ বোধগম্য অতি সরল ভাষায় সাধনশাস্ত্রের দৃষ্টিতে করিয়াছি। ইহ “আভাপে”” সুস্পষ্টভাবে বলিয়াছি । (২) আমার বিশ্বাস যে, সংসারে ব্রিতাপ পীড়িত প্রত্যেক মানবের, উক্ত জ্বালা প্রশমনের জন্য সাধনশান্ত্র পাঠ করিয়া, উহার উপদেশ মত অনুষ্ঠান করিবার অধিকার বর্তমান আছে। (৩) ক্র্সথত্রের প্রত্যেক স্বত্রের ও প্রত্যেক অধিকরণের বিচার ও সিদ্ধান্ত শ্রুতির দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। ইহা বিশদভাবে প্রকাশের চেষ্টা করিয়াছি । | নিবেদন ৩ (৪) শ্রীমদ্ভাগবত ব্ৰহ্মস্থত্ৰের সুত্রকার প্রণীত ভান্য- ইহা যুগাবতাঁর ভগবান শ্রীকুষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু ম্পষ্টাক্ষরে তৎকালের অতি প্রসিদ্ধ নৈয়ায়িক ও দার্শনিক শ্রীমদ বাস্থদেব সার্বভৌম ও শ্রীমৎ প্রকাশানন্দ সরস্বতী প্রমুখ অছৈত- পদ্থান্থসারী পঙ্ডিতগণকে বুঝাইয়া ও তদন্থসারে ব্র্স্ত্রের ব্যাখ্যা করিয়া, তাহাদিগকে স্বমতে আনয়ন করিয়াছিলেন | ক্ষুদ্র আমি শ্রীমন্‌ মহাপ্রভুর পদধূলি সর্বাঞ্গে মাখিয়া, ভাগবতপাহায্যে বর্স্থত্র বুঝিবার প্রয়াস পাইয়াছি। (৫) শ্রীমদ্ভাগবত যে স্্চভাবে শ্রুতির অনুগামী ও অত্যুজ্জলভাবে স্বত্রের প্রকৃত অর্থ-প্রকাশক, তাহা বুঝিবার প্রয়াস পাইয়াছি। চেষ্টা অব্য আমার ভগবৎপ্রদত্ত জ্ঞান-বুদ্ধি অনুযায়ী__ইহা বলা বাহুল্য। আমার অক্ষমতার জন্য ভম-প্রমাদ প্রভৃতি ক্ষমার চক্ষে দেখিবার প্রার্থনা করি । (৬) যে সমুদায় আপত্তি আলোচন! করিতে করিতে, সাধারণ মানবের যনে উদয় হয়, তাহাদিগকে এড়াইয়া যাইবার চেষ্টা না করিয়া, পূর্বপক্ষের মুখে আপত্তি উঠাইয়া, তাহার মীমাংসা যুক্তি ও শান্তর অন্ুদারে করিবার যথাসাধ্য ‘চেষ্টা করিয়াছি । (৭) আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষিত মনন্বীগণের মধ্যে অনেকে, দুর্ভাগ্যবশত: আমাদের শাস্ত্রের গভীরতায় প্রবেশ না করিয়া, অনেক সময়ে অপ সিদ্ধান্ত করিয়া বসেন। যদিও কালচক্রের আবর্তনে, ইহা ক্রমশঃ তিরোহিত হইতে আরম্ভ করিয়াছে, তথাপি বর্তমানে তাহাদের সংখ্যা নগণ্য নহে। পাশ্চাত্য শিক্ষা পদ্ধতির ফলে, তাহাদের সংশয়প্রব্ণ মনোভাবের পটভূমিকায়, প্রাচীন কর্ম-জ্ঞান-ভক্তি সমন্বয়ের সুমহান চিত্রাঙ্কণের চেষ্টা যথাসাধ্য করিয়াছি! তবে অপটু হাতের অঙ্কণ। হয়ত দেবতা আঁকিতে ভূত আকা হইয়াছে । সে দোষ অবশ্তই আমার নিজের । fh যাহা করিয়াছি, সম্পূর্ণভাবে আত্ম-বিলোপ করিয়া, ৬ভগবানের হাতের যন্ত্ৰন্বরূপে করিয়াছি । সুতরাং আমার অশাস্তি উদ্বেগ প্রভৃতি নাই ' যেহেতু = যন্ত্রন্ত গুণদোষাশ্চ বর্তন্তে যন্ত্রিণি ঞ্বম্‌ । অহং যন্ত্রে ভবান্‌ যন্ত্রী ক দোষোইস্তি মম প্ৰভো ॥ গু নমো ভগবতে বাস্থদেবায়। মাভ্ভাভন ১) ‘ভ্ৰহ্মসূত্ৰ’ পদের ব্যুৎপত্তি । ১। ব্ৰহ্মস্থত্ৰ পদের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ_ ব্রহ্ম স্বত্রাতে - যাথাতথ্যেন নিরূপ্যতে- অর্থাৎ যে শাস্ত্রে সবত্রাকারে শান্্ঙ্গতভাবে ব্রহ্মতত্ব নিরপণের চেষ্টা করা হইয়াছে। ইহার অপর নাম “উত্তর মীমাংসা”_বেদ ও উপনিষদের জ্ঞানকাণ্ড পর্য্যালোচন! করিতে করিতে, মনে যে সমুদায় সংশয় অথবা আপাতঃ প্রতীয়মান বিরোধ উৎপন্ন হয়, তাহাদের সমাধান ও মীমাংসা করিয়া, সমন্বয় সাধন ও অবিরোধ প্রতিষ্ঠার কারণ, ইহার উক্ত নামের সার্থকত|। বেদের কম্মকাগ্ডালোচনায়ও উক্তরূপ সংশয় ও বিরোধ অবশ্যন্তাবী ও উহাদের সমাধান তুল্যরূপে প্রয়োজনীয় বলিয়া, স্থত্রকার ভগবান বাদরায়ণের শিষ্য মহামুনি জৈমিনি, সম্ভবতঃ নিজ গুরুর পরামর্শে,__পূর্বব মীমাংসা” শাস্ত্র স্থত্রাকারে রচনা করিয়াছেন । উভয়েই মীমাংসা শান্ত্র। পরস্পরের বিশেষত্ব স্থাপনের জন্য, জৈমিনি রচিত: গ্রন্থ “পূর্ধবমীমাংসা” নামে ও বর্তমান আলোচ্য গ্রন্থ “উত্তর মীমাংসা” - নামে পণ্ডিত সমাজে প্রপিদ্ধ। কর্্মকাণ্ড বেদের পূর্বভাগ ও জ্ঞানকাও উত্তর ভাগ বলিয়া, গ্রন্থদ্বয়ের নামকরণে পূর্বব ও উত্তর পদদ্ধয়ের ব্যবহার উপযোগী হইয়াছে, ইহা নিঃসন্দেহ বলিতে হইবে। ২) মহর্বি বাদরায়ণ ও ভগবান কৃষ্তদ্বৈপায়ন অভিন্ন । ২। আবহমান ম্মরণাতীত কাল হইতে অন্মদেশীয় পণ্ডিতগণের কব বিশ্বাস ও নিশ্চিত সিদ্ধান্ত যে, ক্রস্ষস্ত্রকার মহধি বাদরায়ণ ও মহাভারতকার ভগবান কৃষ্ঞদ্বৈপায়ন বেদব্যাস অভিন্ন ব্যক্তি। মহাভারত পাঠে আমরা জানি যে, ষুধিষ্ঠিরাদি পাওব ও ছুর্ধোধনাদি কৌরব-__উভয়েই কুরুবংশীয় ও ভগবান বেদব্যাসই উভয়ের বীজপ্রদ পিতামহ । স্থতরাং তিনি উহাদের জন্মের পূর্বে, মহাভারতোক্ত কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময়ে এবং তাহার পরেও জীবিত ছিলেন । মহাভারত তাহারই রচনা । উক্ত যুদ্ধ_দ্বাপর ও কলির সন্ধি সময়ে সংঘটিত হইয়াছিল। সেকারণ বর্তমান সময়ের ৫০৫৩ বৎসর পূর্বে উক্ত যুদ্ধ হইয়াছিল পঞ্জিকাতে প্রতি বৎসর “কলের্গতাব্বাঃ”- লিখিত হইয়া থাকে। উক্ত অব কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ বিজেতা ঘুধিষিরের সিংহাপনারোহণের সময় হইতে গণিত হইয়া আসিতেছে। পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ ও তাহাদের পন্থান্থগামী আমাদের দেশের আভাস ্ পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিতগণের যধয কেহ কেহ উক্ত যুদ্ধের সময় আরুও অর্ধাচীন কালে নির্দেশ করিয়াছেন। আমাদের সে বিতগার কোন প্রয়োজন নাই। ৩) ব্ৰহ্মধূত্ৰ রচনার বিশেষত্ব? ৩। ভগবান বেদবাস আলোচা ত্ৰহ্মন্থত্ৰ রচনায় যে, লোকাতীত প্রতিভা, অতু)জ্জল মেধ, সচাগ্র স্থতীক্ষ বুদ্ধ, দৃষ্টির প্রসার, চিন্তার গভীরতা, মনের স্বচ্ছতা, সরল! ও উদারতা, সাম্প্রদায়িক মনোভাবের একাস্তিক অভাব, বরং সমস্ত জগৎ ও জগতম্থ জীববুন্দকে আত্মভাবে বক্ষে ধারণ করিবার আকুল আগ্রহ প্রভূত ভাম্বরভাবে প্রকাশ করিয়াছেন, তাহা জগতে অতুলনীয়। রচনা একদিকে এমন সংক্ষিপ্ত যে, কোনও সুত্রে একটি মাত্র অক্ষরও বেশী নাই, যাহা পরিত্যাগ করা যাইতে পারে; আবার অন্যদিকে, উহা এমন অর্থগর্ভ যে, কি অদ্বৈতবাদী, কি বিশিষ্টাদ্বৈতবাদী, কি দ্বৈতাদ্বৈত বা ভেদাভেদধাদী, কি দ্বৈতবাদা, সমুদায় বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক মতের তর্ব-যুদ্ধ-কুশল, স্বচাগ্র-বুদ্ধি, আচার্য্যগণ ত্রহ্মসূত্রকে তাহাদের উপজীব্যরূপে গ্রহণ করিয়া, নিজ নিজ সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠার এবং প্রতি সম্প্রদায়ের ভিত্তির দৃঢ়তা সম্পাদনের প্রয়াস পাইয়াছেন। প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেক সাম্প্রদায়িক আচার্য্য ব্রহ্মস্থত্রের সমর্থন লাভ করিতে পারিলে, তাহার সম্প্রদায়ের ভিত্তি দৃঢপ্রতিষ্ঠ হইল, মনে করেন। সম্প্রতি স্বর্গধামগত, মহামহোপাধ্যায় ৬পঞ্চানন তর্করত্ব পণ্ডিত মহাশয় ত্রহ্গস্থত্রের শক্তিভাষ্য রচন। করিয়া প্রকাশিত করিয়াছেন । ৪। ভাগবত ভগবানকে “সর্ধবাদ বিষয় গ্রতিরূপশীল” (১২৮৪৩) বলিয়া পুজা করিয়াছেন । ব্রহ্মস্থত্র সম্বন্ধেও বলিতে পারা যায় যে, সাম্প্রদায়িক _ আচার্ধগণের চেষ্টায়, উহাও “সর্ববাদ বিষয় প্রতিরূপশীল” হইয়া দীড়াইয়াছে ' ইহা! রচয়িতা ভগবান স্থত্রকারের: কম গৌরবের কথা নহে। শুধু রচয়িতার কেন, ইহ! ভারতবর্ধের, হিন্দুজাতির, কলিষুগের, আর্ধাসভ্যতার, মানব-মণীষার অতুজ্জল গৌরবের বন্ত। কালের প্রভাব অতিক্রম করিয়া ইহ! বিশ্বের জ্ঞান ভাগারে অমূল্য রতু্বরূপে দেদীপামান রহিয়াছে; এবং ভবিষ্যতেও শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া, নিৰ্ম্মল, অতুযুজ্জল জ্ঞানরশ্ব বিতরণ করিতে থাকিবে, এরূপ ভরসা! করা যাইতে পারে। ৫॥ উপরে বলিয়াছি যে, ব্রহ্মসতত্র মীমাংসা দর্শনের অন্তভূক্তি। ইহার মুখ্য উদ্দেশ বেদের জ্ঞানকাণ্ড বা উপনিষদ আলোচনায় যে সমুদায় সংশয় মনে দেখা! দেয়, তাহাদের নিরসন । ভগবান হ্ত্রকার পে উদ্দেশ্য অতি নিপুণভাবে ঙ ্রহ্ষসথত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত সাধন করিবার সঙ্গে সঞ্গে--জীব ও জগতের পক্ষে কল্যাণতম, মুখ্যতম একটি মহৎ উদ্দেন্ত সংসাধন করিয়াছেন । সে উদ্দেশটি হইতেছে, ভাষায় যতদুর সম্ভব, এবং মানব চিন্তায় যতদূর সম্ভব, উভয়ের সাহচর্ধে, ব্রহ্ষ-পরমতত্ত বা ভগবানের পরিচয় দান__অন্য কথায় ব্রহ্ধবি্ার উপদেশ প্রদান। এ উপদেশ তিনি যথেচ্ছভাবে প্রদান করেন নাই। শ্রুতির সু ভিত্তির উপর, তীহাঁর প্রতি উপদেশ প্রতিষ্ঠিত । ব্রহ্ম ও ব্রদ্মবিদ্যা একান্ত অভেদ বলিয়া, একের পরিচয়ে অপরের পরিচয় আপনা-আপনি আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। শুধু পরিচয় দিয়াই যে কর্তব্য সমাধা করিয়াছেন, তাহা নয়। কি করিয়! উক্ত উপদেশ কাষ্যে পরিণত করা সম্ভব এবং কার্যে পরিণত করিলে, মানব জীবনের চরম সার্থকতা- পরম পুরুার্থ-প্রাপ্তি হয়, ইহাও স্থক্্ম বিচার দ্বারা নিঃসদ্িগ্ধ ভাবে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন। অন্য কথায়, সাধন ও সাধনের সিদ্ধিতে কি ফল পাওয়া যায়, তাহা বিশদ্ভাবে ব্যক্ত করিয়াছেন। ইহা লোকোত্তর অভিন্ন বুদ্ধির পটুতম ব্যায়ামে বা অতিমান্ুষিক অত্যুজ্জল প্রতিভার চাকচিক্য প্রদর্শনের প্রয়াসে হয় নাই। ইহা অন্তর্ধামীর প্রেরণায় ও তাহার স্বকীয়! বিশ্বপালনী মহাশক্তির পরিচালনে সম্ভব হইয়াছে । যাহা জানিলে সব কিছু জান! হইয়া যায়, আর কিছু জ্ঞাতব্য অবশিষ্ট থাকে না, ভগবান ্ত্রকার সেই চরম ও পরমতত্বের অপরোক্ষ জ্ঞান লাভ করায়, তাহার দিব্যদৃষ্টিতে কিছুই অপ্রকাশিত ছিল না । উন্মুক্ত, নির্সেঘ আকাশে মধ্যাতু স্বর্ধপ্রকাশের ন্যায়, সমুদায়ের আত্মদ্বরূপ তাঁহার সন্মুখে উদ্ঘাটিত হুইয়াছিল। নিজে পরমতত্বের অপরোক্ষান্গভূতি লাভ করিয়া, তাহাই তিনি স্বত্রবদ্ধ করিয়াছেন। সুতরাং ব্রহ্মস্থত্র আলোচনার সময় মনে রাখিতে হইবে যে, ইহা কেবল দর্শনশান্্র নহে। ইহা অত্যুত্তম আনুষ্ঠানিক- অধ্যাত্ম-সাধন শাস্্। একারণ যিনি ইহার আলোচন! করিতে চাহেন, সাধকের ভক্তিপৃত চিত্তে অগ্রসর হওয়া তাহার একান্ত কর্তব্য । ৪) ভাগবতই ব্রন্সূত্রের সৃত্রকার রচিত ভাষ্য ৷ ৬। ভাগবত পাঠে আমরা অবগত হই যে মহাভারত, পুরাণাদি শান্ত ' প্রণয়ন বেদবিভাগাদি এবং চতুরবর্ণের আচরণীয় ধর্শ্মের বিধান বিধিবদ্ধ করিয়া, ভগবান বেদব্যাস আত্মপ্রসাদ লাভ করিতে না পারায়, বিষণ্ন চিন্তে কারণানু- দন্ধানে অতি দুশ্চিন্তাম্বিত হইয়া পড়েন । তখন ৬ভগবানের মঙ্গল হচ্ছায় তাঁহার পার্ধদ পরমভক্ত দেবধি নারদ গুরুরূপে আসিয়া তাহাকে ভগবানের “এ ত্য-শুদ্ধ- সত্য-স্বরূপত্ত জীবের কল্যাণের জন্য তাহার নরবপুঃ ধারণ, নরলী এ] প্রকটন- নিত্য ও লীলা উভয়ে নরচক্ষে বিভিন্নকূপে প্রতীয়মান হইলেও, তত্বত: উভয়ের আভাস ৭ অভেদত্ব এবং সেকারণ, লীলা-শ্রবণে, কীর্ডনে, বিনা আয়াসে পরমপদপ্রান্ত প্রভৃতির উপদেশ দিয়া ও তাহা বিভ্ুতভাবে আলোচনা করিয়া মন্ভাগবত রচনায় প্রেরণা প্রদান করেন। তদনুসারে শ্রীমদ্ভাগবত রচিত হয় এবং তাহার পর মহষি বেদব্যাস আত্মপ্রসাদ লাভ করেন । ্ষস্থত আগেই রচিত হইয়াছিল । ভগবান বেদব্যাস ভাবিলেন যে, নারদের উপদেশ কায্যে পরিণত করিবার স্কত্ে্ পন্থা হইতেছে, ব্র্সত্রে যাহা হুত্রাকারে আছে তাহাই কবির ভাষায় ভক্তি রসায়নে মিশা ইয়। বিস্তৃত কর! । তাহা হইলেই গুরু নারদের উপদেশ কার্ধ্যকরী করিতে পারা যাইবে। বিশেষতঃ লোকোত্তর চরিত্র, পরযপুরুষের ূর্ণা বতার শ্রীরু্ণ ত তাহার সমকালেই ধরাধামে বর্তমান ছিলেন । ভগব্দগীতার মহান্‌ সঙ্গীত তখন ভারতের আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হইতেছিল-_ব্যাসদেবই ত সে সঙ্গীতের গায়ক । তাহার মহাভারতেই তিনিই ত শ্রীকৃষ্চকে আদর্শ কর্মযোগীরূপে পূজা করিয়াছেন । শ্রীমদ্ভাগবতে শ্রীকষ্ণলীলার মাধর্ধ্য অংশ ্রগন্ত্রের জ্ঞান প্রাধান্ের সহিত মিলাইয়া গীতার ১৮1৫৪-৫৫ শ্লোকে ভগবানের উপদিষ্ট জ্ঞান ও ভক্তির উপায়_উপেয়ভাব শিক্ষা দিবার পর, উপযুক্ত অধিকারীর জন্য পরাভক্তি ও তাহা লাভের উপায় নির্দেশ করিলে, উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইবে। ভগবান বেদব্যাস_-আমার মনে হয়, এরূপ চিন্তা করিয়া, তীব্র ভক্তিযোগে, আপনাকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করতঃ, ভগবানের উপর একান্ত নির্ভরতার সহিত, তাহার হাতে যন্ত্রের ন্যায় শ্রীমদ্ভাগবত রচনা করিয়াছিলেন যদিও বেদব্যাস স্পষ্ট করিয়া বলেন নাই, তথাপি মনে হয় বে, তাঁহার গুঢ় অভিপ্রায় ছিল যে শ্রীমদ্ভাগব্ত, তাহার অতি সংক্ষিপ্ত, স্থত্রাকারে রচিত ব্রক্মম্থত্রের ভাষ্যরপে গৃহীত ও ব্যবহৃত হইলে ত্রিতাপদগ্ধ, ভবরোগকাতর জীববৃন্দের-অমৃত প্রলেপ প্রদান করিয়া, ত্রিতাপ -জালা প্রশমন এবং ভবরোগ নাশের কারণ হইবে। যে কেহ মনে কোনও প্রকার সাম্প্রদায়িক রপ্রন না লাগাইয়া স্বচ্ছ, সরল, উদার মনে, প্রশান্ত চিত্তে, সত্য নির্ণয়ে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হইয়া ভাগবতের সাহায্যে ব্রহ্মস্থত্রালোচনায় অগ্রসর হইবেন, আমার নিশ্চিত বিশ্বাস, তিনি আমার উপরে কথিত উক্তির যাথার্থ্য সম্বন্ধে নিঃসন্দেহ হইবেন। ভাগবত থে ব্রহ্মম্বত্রের স্ত্রকার রচিত ভাষ্য, তাহার বিস্তৃত আলোচনা মৎপ্রণীত ‘বেদান্ত প্রবেশ’ গ্রন্থের দশম পরিচ্ছেদে করিয়াছি । এখানে আর বিস্তার করিব না। ৫) ব্ৰহ্মসূত্ৰ দর্শনশান্ত্র মাত্র নহে। ৭। আগেই বলিয়াছি যে, ক্রক্স্ত্র_-মীমাংসা দর্শনের অন্তভুক্ত। আমাদের মধ্যে অনেকে বেদাস্তালোচনা না করিয়া সিদ্ধান্ত করিয়া বসেন oo ব্ৰহক্মস্থুত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত যে, “ব্রহ্মহুত্র’ মীমাংসা দর্শনের অন্তর্ভুক্ত বলিয়া, ইহ! দর্শনশাস্র মাত্র_ঘটত্ব- পটত্ব লইয়া ইহার কারবার । তৈলাধার পাত্র, কি পাত্রাধার তৈল-__এই মহাসমস্তা সমাধানের জন্য মস্তিষ্ক আলোড়ন এবং দিনের পর দিন বিনিদ্র রজনী যাপন ইহার আলোচনায় অশ্ন্তাবী পরিণুতি। একারণ কোনও প্রকৃতিস্থ ব্যক্তি, বিশেষতঃ এই কঠোর জীবন সংগ্রামের দিনে, ইচ্ছা করিয়া ইহার আলোচনায় সময়ক্ষেপণ করিতে প্রস্তুত হইতে পারেন না। আমার দৃঢ় ধারণা! যে, ব্রক্মহ্থত্র নিরপেক্ষভাবে আলোচনা করিলে, এরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব হয় না। আমি আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা অনুসারে বলিতে পারি যে, ভাগবত সাহায্যে আমি বত্রহ্মন্থত্রের যে আলোচন! করিয়াছি তাহ! সুদীর্ঘ হইয়াছে বটে, কিন্তু আমি কোথাও তর্ক গ্রহণে প্রবেশ করি নাই। প্রবেশের বিন্দুমাত্র প্রয়োজন হয় নাই। ব্রহ্মস্থত্র এতদিন ষড়.- দর্শনে বিশেষতঃ ন্যায়দর্শনের বিশেষ অভিজ্ঞ পণ্ডিত সমাজে নিবদ্ধ ছিল। সাধারণে ইহার আলোচনার চিন্তা করিতেও ভীত হইতেন। ইহাযে কি উপাদেয়, প্রাণের পিপাসা মিটাইবার ইহার ক্ষমতা যে কত অপীম, ত্রিতাপদঞ্ধ জীবের ব্রিতাপজাল| প্রশমণের কি অমৃতব্বাদী মহোৌষধি, তাহা সাধারণের কিছুমাত্র বোধগম্য ছিল না। আজকাল গণতান্ত্রিকতার দিনে, জনসাধারণের চোখে ঠুলি দিয়া, ভারতের আর্ধ্যষিগণের সাধনালন্ধ, লোকাতীত মনীষার উজ্জল আলোক-রশ্মি দেখিতে বাধা সুজন কর] গহিত মনে করিয়া, অতি সরল সর্ধজনবোধ্য ভাষায় আলোচনা করিতে অগ্রসর হইয়াছি। আমার নায় অল্পবিন্য সাধারণ যে কোনও ব্যক্তি ধৈর্যের সহিত পাঠ করিলে, মুগ্ধ হহবেন, ইহ! আমি জোরের সহিত বলিতে পারি। যদিও আমার নিজের যূর্থ তা ও অক্ষমতা প্রযুক্ত ইহাতে অনেক দোষক্ৰটি থাকিতে পারে, তাহা হইলেও দ্রব্যগুণ নিশ্চয়ই আত্মপ্রকাশ করিবে। ৬) আলোচনার দুটি দিক, ৮1 কোনও বিষয় বিচার করিবার ছুটি দিক্‌ পণ্ডিত সমাজে প্রসিদ্ধ একটি তত্বের দিক্‌ হইতে, অপরটি বস্তু তান্ত্রিকতার দিক্‌ হইতে। ইংরাজীতে প্রথমটির না--981০০0%০ point 0f View এবং দ্বিতীয়টির নাম- Objective point 0f View, উভদ্ধ দিক হইতে বিচারে আমরা কি পাই, দেখা! যাউক্‌। প্রথমতঃ তত্বের দিক হইতে বিচার করিলে আমরা বুঝিতে পারি যে, ব্র্_পরমাআ্স।_ভগবান--পরতত্ব এমন একটি বস্তু, যেখানে মনের চিন্তা এবং উক্ত চিন্তা প্রকাশক বাক্য পৌহুছিতে পারে না। তর্ক কেবল বাক্য আভাস ৯, সমষ্টি মা। সুতরাং উহা সে তত পৌহুছিতে না৷ পারিয়া দূরে থাকিতে বাধ্য হয়। একারণ তত্বের দিক হইতে বিচারে বুঝিলাম যে তর্কের উপযোগিতা কিছুমাত্র নাই। ৯। বন্ততাপ্ত্রিকতার দিক হইতে বিচারে আমরা বুঝিতে পারি যে, তর্কের প্রয়োজনীয়তা সাম্প্রদায়িক মত প্রতিষ্ঠায়। কিন্তু উক্ত পরতত্ব বা ভগবান বা ব্ৰহ্ম “সর্ববাদ বিষয়-প্রতিরূপশীল” বলিয়া উহ! সমুদায়-সাম্প্রদায়ির্ক মতবাদ ক্রোড়ীকুত করিয়৷ তাহাদের বহু উর্দ্ধে নিজ শাশ্বত অপ্রচ্যুত স্বরূপে প্রতিষ্ঠিত উহা নিত্য, সত্য, স্বয়ম্রকাশ, আত্মপ্রকাশে জাজ্জল্যঘান। উহা প্রকাশের জন্য দ্বিতীয় প্রকাশকের কোনও প্রয়োজন নাই । উহা প্রপঞ্চাতীত বস্তু । প্রপঞ্চ-মায়ার' খেলা । যায়ার সহিত উক্ত পরমতত্বের সংস্পর্শমাত্র নাই । আমাদের চিন্তা করিবার যন্ত্র মন-বুদ্ধি দেশকালের দ্বারা প্রভাবিত। দেশ-কাল মায়া হইতে অভিব্যক্ত। স্থতরাং মনের চিন্তার সহিত উক্ত তত্বের সংস্পর্শ সম্ভব নহে। বাক্য মনের চিন্তাকে বৈখরী ভাবে প্রকাশ করে মাত্র_অতএব বাক্যই বা কি প্রকারে উক্ত তত্ব প্রকাশ করিবে? একারণ তর্ক নিরর্থক । ৭) ভাগবভপাহা্যে ব্রন্মসুত্রালোচনায় ভর্কের অবসর নাই। ১০। আরও একটি বিষয় বিশেষভাবে যনে রাখা প্রয়োজন । বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য্যগণ অতি উচ্চস্তরের সাধক। তাহার! নিজ নিজ সাধনার সিদ্ধিতে, তাঁহাদের নিজ নিজ সাধনার প্রকৃতি অনুসারে__অনস্ত ভাব ও শক্তির শাশ্বত ভাণ্ডার স্বরূপ পরযতত্বের বিশেষ বিশেষ ভাবের ও শক্তির অপরোক্ষান্ুভূতি লাভ করিয়া, তাহাই নিজ নিজ সম্প্রদায়ের মতবাদরপে গ্রহণ পূর্বক শিষ্য-প্রশিষ্য ক্রমে প্রচারিত করিয়াছেন। ব্রদ্ধে বা পরমতত্বে সমুদায় ভাব বর্তমান । যে সাধক যেভাবে তাহার উপাসনা করেন, তিনি সেইভাবেই উক্ত সাধকের সমক্ষে আত্মপ্রকাশ করেন। ভগবান গীতায় ৪1১১ শ্লোকে কুরু- ক্ষেত্র সখরপ্রাঙ্গনে ইহ! উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষণা করিয়াছেন। অতএব তর্কের অবসর কোথায়? ভাগবত কোনও তর্কে প্রবেশ না করিয়া ভক্তি-রসায়নে পরিমার্জিত ও বিশুদ্ধীকৃত সুমধুর ভাষায়-_উক্ত পরমতত্বের পরিচয় দিয়াছেন । উক্ত পরমতত্বের নরদেহে পূর্ণাবতার শরীকবষ্ণের লীলা বণনাব্পদেশে নিত্যধামের নিত্যলীলা অতি হৃদয়গ্রাহী ভাষায় লোকচক্ষে প্রকটিত করিয়াছেন! লীলার গভীরতা প্রবেশ করা সহজ নহে বটে, তাহা হইলেও বুঝিয়া হউক্‌, না বুঝিয়া৷ হউক, উহা আস্বাদন করিতে থাকিলে, উহার স্বাভাবিক ক্রিয়া__উহা! করিবেই করিবে, ইহাতে সন্দেহ নাই। ভাগবতসাহায্যে ্র্গস্থত্রালোচনায়, তের ১০ ্রহ্মম্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত অবসর না থাকায় ও মানবীয় চিন্তার ফল স্বরূপ তর্বশাস্তের প্রয়োজনাভাব হেতু, মস্তিষ্ক বিলোড়নের আবশ্যকতা নাই। ধীর ভাবে যত অগ্রসর হওয়া যাইবে, তত অপরিসীম সৌন্দর্য্য ও মাধুর্ধোর প্লাবনে হৃদয় পরিপ্লুত হইবে, মন প্রসন্ন হইবে, বুদ্ধির মলিনতা তিরোহিত হইবে, এবং সৌন্দর্ধ্য-মাধূর্ধ্য-সৌকুমারধ্য প্রভৃতির ললামভূত পরমতত্ব, নিজ স্বপ্রকাশ স্বরূপে হৃদয়, মন আলোকিত করিবে, তখন উক্ত আলোচনাকারীর “সর্বাঃ জুখময়া দিশ:” (ভাগবত ১১।১৪।১২ )-__সমুদায়, দিক স্থখময় হইবে। : ইহা কথার কথা নহে। ভাগবতকার অপরোক্ষ ভাবে অঙ্গুভব করিয়া পুস্তকবদ্ধ করিয়াছেন । ৮) ব্রন্মসূত্রালোচনার জন্য অর্ব্বভ্যাগী সন্ন্যাসী হইবার প্রয়োজন অত্যাবশ্যক নহে। ১১। জ্ঞানমার্গের পথিক, কেহ কেহ মনে করেন যে, পরমতত্ব স্বরূপের কথঞ্চিত ধারণার জন্য সংসার, স্্ী-পুত্র প্রভৃতি সমুদায় পরিত্যাগ করিয়া, সর্বত্যাগী হওত, বিজনে গভীর চিন্তায় তন্নয়তা প্রাপ্তি না হইলে, চেষ্টা বুথা মাত্র ।, ভাগবত বস্তুগত ভাবে শিক্ষা দিতেছেন যে, না, উহা! যে অপরিহার্য প্রয়োজনীয়, তাহা নয়। উক্ত তত্ব-জ্ঞানখাত্রগমা, কঠোর শুষ্ক, নীরস বস্তু নহে । উহা যে রসম্বরূপ, সে কারণ প্রত্যেকের অতি প্রিয়তম, জগতে সমুদায় প্রিয়ত্বের যূলে উহা, প্রত্যেকের পঞ্চেন্দিয় দ্বারা আস্বাদ্য । উহা ত দুরের বস্তু নহে। উহা “প্রত্যক্‌ চৈতন্য” প্রত্যেকের সঙ্গে সঙ্গে, তাহার চৈতন্য-রূপে ফিরিতেছেন। উহাই ত বিষয় জ্ঞানরূপে প্রত্যেক জীবের প্রতীতিগম্য হইতেছে । কিন্ত বিষয়জ্ঞানে নিবদ্ধ থাকিলেও, উহা বাহিরের বস্তু নহে। বিষয় হইতে ফিরাইয়া, বিষয়জ্ঞানের দ্বারম্বরূপ ইন্জিয়গণকে, অন্তমু্খীন করিতে পারিলেই, উহার স্বরূপ স্বতঃ প্রকাশ পাইবে। তখন বুঝিতে পারা যাইবে, উহা অন্তরের অস্তরতম, অতি প্রিয়তম বন্ত। উহারই প্রিয়তার জন্য, বিষয়, ধন, জন, দেহ, গেহ, দারা, অপত্য প্রভৃতি সমুদায় প্রিয়ত্ব লাভ করিয়া, আনন্দ বিচরণের কারণ হয়। ১২। উপরে বলা হইয়াছে, “তর্কের অবসর কোথায় ?__ইহাতে তর্ককুশল কোনও কোনও শিক্ষিত ব্যক্তি, আপত্তি করিতে পারেন, যদি তর্কের অবসর নাই, তাহা হইলে আচার্য্য শঙ্কর, তাহার শারীরক-ভাস্ত, কঠোর তর্ক বান্যায় শাস্ত্ের উপর ভিত্তি করিয়া রচনা করিয়াছেন কেন? ইহার উত্তর অতি স্ষ্পষ্ট।- ভগবান শঙ্করাচার্য শঙ্করের অবতার বলিয়া, প্রাচীন কাল হইতে, আজিও পূজিত হইয়া আগিতেছেন। বিশেষ কার্ধা সাধনোদেশে আভাস 33 ভগবানের নির্দেশে, তিনি মত্ত্যধামে শরীর পরিগ্রহ করিয়াছিলেন এই বিশেষ কাৰ্য্য তৎকাল প্রচলিত বৌদ্ধমত ও বৌদ্ধক্রিয়া কলাপের নিরসন | বৌদ্ধগণ ঘোরতর যুক্তি ও ্ায়ান্গ বিচারবাদী। তাহাদিগের নিজ অস্ত্রে তাহাদিগকে পরাজয় করিতে পারিলে, পরাজয় সর্ববাঙ্গহুন্মর হয়, ইহা সকলেই স্বীকার করিবেন । একারণ-_শহ্বরাচাধ্য, তাহার শারীরক ভাম্তে ও উপনিষদের ভাম্য সকলে, যুক্তি, বিচার, তর্ক ও ন্যায়ের প্রাধান্য দিয়াছিলেন। স্থতরাং আচাধদেব ন্যায়শান্্ বা বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষের গৃহীত তর্কশান্ত্রের নিয়মাদি মানিয়া চলিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। ইহাই শারীরক ভাষে তর্বশান্ত্র প্রাধান্যের কারণ। এই আচার্য্য শঙ্করই তাঁহার উক্ত ভান্তে ২।১।২৭ স্বত্র প্রসঙ্গে বলিয়াছেন £__ “অচিন্ত্যাঃ খলু যে ভাবা ন তাংস্তঞ্ণে যোজয়েৎ। _যে সমুদায় ভাব অচিন্ত্য সে সমুদায়ে তর্ক যোজনা করিও না। কোন্‌ সমুদায় ভাব অচিন্ত্য বলিয়া মনে করা যাইবে? উত্তরে বলিতেছেন: “প্রকৃতিভ্য: পরং যচ্চ তদচিন্ত্যস্ত লক্ষণম্‌ ৷” _ প্রকৃতির পর ( সম্পর্ক শূন্য ) যাহা, তাহাই অচিন্ত্যের লক্ষণ । ৯) আমার কৃভ আলোচনার প্রকৃতি নির্দ্দেশ। ১৩। এখন আমার নিজের সম্বন্ধে কয়েক কথা বলিয়া কর্তব্য সমাধা করিব। ভগবান গীতায় ১৮।৫৪-৫৫ প্লোকে জ্ঞান ও ভক্তির অতি ঘনিষ্ঠ উপায়- উপেয় সম্বন্ধ প্রকাশ করিয়াছেন । ভাগবতও সে সম্বন্ধ স্বীকার করয়া পরমতত্বের উপদেশ দিয়াছেন । ইহা ভাগবতের অনেক শ্লোক উদ্ধার করিয়া প্রমাণ করা যাইতে পারে। বাহুল্য ভয়ে বিরত হইলাম উক্ত উপায়-উপেয় সঙ্গন্ধের ভিত্তিতে ভাগবত অবলম্বনে জ্ঞান মি্রা-ভক্তিমার্গে ব্রহ্স্ত্র আলোচনার প্রয়াস পাইয়াছি। কতদূর কৃতকার্ধা হইয়াছি, তাহা যাহার তত্ব সঙ্গ্ধে আলোচনা তিনিই জানেন । যন্ত্র, ন্ত্রীর অভিপ্রায় ও ব্যবস্থা মত কাজ করিয়া যাইবে, তাহাতে যন্ত্রের চিন্তার বা উদ্বেগের কারণ নাই । ১৪ . আমার আলোচনায় আমি শ্রীমৎ শব্বরাচার্ধ্যের অদ্বৈতবাদ-ভাষ্য, প্রীমৎ রামানুজাচার্ধ্যের বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ ভাষ্য, শরীমনিশ্বার্বাচার্য্যের দ্ৈতাদৈতবাদ বা ভেদাভেদবাদ ভাষ, শ্রীমন্মধাচার্ধের দ্বৈতবাদ ভাষ্য, শ্রীমদ্‌ বলদেব বিদ্যাভূষণের অচিস্ত্যভেদাভেদবাদ ভাষ্য এবং শ্রীমদ্‌ বল্লভাচার্ধোর শুদ্ধাদ্বৈতবাদ ভাষ্য এই ছয়খানি আধুনিক কালে প্রচলিত ভায়ের যথাসম্ভব সাহায্য গ্রহণ করিয়াছি। উহাদের সকলের পদধূলি মস্তকে ধারণ করিয়া, উহাদের প্রজ্জলিত আলোক- ১২ ্র্মনুত্র ও শ্রীমদভাগবত বত্তিকা হস্তে গ্রহণ পূর্বক, নিজের গন্তব্য পথ সমুজ্জল করিতে প্রয়াস পাইয়া অগ্রসর হইয়াছি। সমগ্রভাবে কাহারও পদানুসরণ করি নাই। কাহারও: মতবাদ সম্বন্ধে কোনও তর্ক উত্থাপন করি নাই। শ্রদ্ধা ও ভক্তির সহিত প্রত্যেকের বক্তব্য মনোযোগের সহিত শুনিয়া, নিজের ভগবদ্ত্ত জ্ঞান ও বুদ্ধির যথাসম্তর পরিচালনায় যাহা! স্বত্রের সরল অর্থ বলিয়া প্রতীয়মান হইয়াছে, তাহাই সরল বাঙলা ভাষায় স্বজনের স্থখবোধ্য করিবার অভিপ্রায়ে লিপিবদ্ধ করিয়াছি। ভ্রম প্রমাদ হইয়া থাকিলে, দায়িত্ব একমাত্র আমারই । চেষ্টা আমার, ফল ৮ভগবানের হাতে ৷ ১৫। উপরোক্ত ভান্তকারগণ, স্বত্রকার মহত্বি বাদরার়ণের অনেক পরবর্তী কালে আবিভূর্ত হইয়াছিলেন। ইহা হইতে কেহ যেন মনে না করেন যে, উক্ত বিভন্ন সাম্প্রদায়িক মতবাদ, ব্রক্ষন্থত্র রচনার অনেক পরবর্তী কালে__ভান্তকারগণের সমকালে প্রচলিত হইয়াছিল । ভগবান স্ত্রক্ারের সত্ররচনার সমকালে ও তাহার পূর্ব হইতে উক্ত বিভিন্ন মতবাদ প্রচলিত ছিল। এ সকল মতবাদের ভিত্তি উপনিষদ্‌। উহার! স্থত্র রচনার বহু পূর্ব হইতে বর্তমান ছিল, ইহা নিঃসন্দেহে বলা যাঁয়। সে কারণ ব্র্ষস্থত্র রচনার পুর্ব হইতেই উক্ত মতগুলি প্রচলিত থাকায় বিস্ময়ের কোনও কারণ নাই৷ ১৬। ব্ৰ্মস্ুত্ৰেই সুত্রকার ছয়জন আচার্ধের নাম করিয়াছেন । তাহাদের মধ্যে আচার্য্য জৈমিনন স্বত্রকারের শিষ্য বলিয়া প্রপিদ্ধ, স্থতরাং উভয়ে সমকালে বর্তমান ছিলেন, ইহাতে সন্দেহ নাই। অন্যান্য আচার্গণের মধ্যে হয়ত, কেহ কেহ্‌ স্ুত্রকারের সম্কালে বর্তমান থাকা সম্ভব হইতে পারে এবং কেহ কেহ তাহার পূর্বে ছিলেন। তাহাদের নাম দেওয়া হইল, এবং তাহাদের মতবাদ নামের পার্শ্বে দেখান হইল। উক্ত মতবাদ সকলের ব্রহ্ষস্থত্র রচনার প্রাকৃকালীন গ্রন্থাদি তৎকালে বর্তমান থাকা সম্পূর্ণ সম্তব। শ্রীঘদ্‌ রামান্ুজাচার্ধ্ের শ্রীভাস্তে বিশিষ্টাদ্বৈত মতের বৌধায়ন প্রণীত ভাম্যের উল্লেখ আছে। উহা এখন পাওয়া যায় না। অন্তান্ত মতবাদের ভাষ্য প্রাচীনকালে থাকিলেও, বর্তমানে উহার! অপ্রাপ্য । (১) আত্রেয়-_মীমাংসক শ্রীযুক্ত আশুতোষ শান্ত্ীর মতানুসারে (২) আশ্মরথ্য-_বিশিষ্ট দ্বৈতবাদী রী ১ (৩) ওডুলোমি-_ভেদাভেদবাদী , (৪) কার্চাজিনি__অদ্বৈতবাদী (৫) বাদরি 5 5). 2. 2 2 ১ ৮ 51 ১৩ x স্বত্রকারের শিষ্য আমি বর্তমানকালে প্রচলিত উপরে কথিত ছয়খানি ভাস্তের যথাসম্ভব সাহায্য গ্রহণ করিয়াছি বটে, কিন্ত কোনও সাম্প্রদায়িক মতের অনুবস্তী হইয়া আলোচনা করি নাই। উহাদের মধ্যে যে আচার্ধোর অর্থস্থত্রের স্বাভাবিক সরল অর্থ পরিস্ুট করিয়া সর্বপ্রধান উপযোগী বলিয়া মনে হইয়াছে, তাহার সহিত ভাগবতে কথিত অর্থের সামগ্রস্ত রাখিয়া গ্রহণ করিয়াছি । যখন একাধিক আচার্ের অর্থ, পত্রের স্বাভাবিক অর্থের অন্থকৃল ব'লয়া মনে হইয়াছে, তখন উভয় অর্থ পৃথক্‌ পৃথক ভাবে আলোচনায় সন্নিবিষ্ট করিয়াছি । তবে শ্রীমদ্‌ বলদেব বিদ্যাভূষণের গোবিন্দ-ভাব্য ভাগবতের অধিকতর অনুগামী হওয়ায়, এবং অচিন্ত্য তেদাভেদবাদ, আমার ন্যায় স্ুলবুদ্ধি সাধারণ মানবের বুঝিবার পক্ষে অধিকতর স্থকর বলিয়া, বহস্থলে উহাই গ্রহণ করিয়াছি বটে, কিন্তু সে জন্য স্বাভাবিক সরল অর্থের কোনও ব্যতিক্রম সহ৷ করি নাই। অন্তর্ধামী ভগবানের হাতে যন্ত্র স্বরূপ হইয়া, যাহ! করাইয়াছেন, তাহাই কারয়াছি। দোষগুণ বিচারে যন্ত্রের কি অধিকার আছে? ১০) আঝে মাঝে আধিভৌতিক বিজ্ঞানের উল্লেখ করিয়াছি ১৭। কেন? ১৮। আলোচনার অনেক স্থলে, আবভৌতিক পাশ্চান্ত্য বিজ্ঞানের উল্লেখ করিয়াছি। উহা, আমার উক্ত বিজ্ঞানের যৎ্সামান্ত জ্ঞান থাকার পরিচয় দিবার জন্য নহে । আমাদের শাস্ত্র স্ুম্পষ্টভাবে শিক্ষা দেন যে, আধিভোতিক, আধ্যাত্মিক ও আধিদৈবিক জগৎ একই স্থত্রে গাথা; পরস্পর পরস্পরের সার্থকতা সম্পাদন করিয়া থাকে। আধিভৌতিক জগতে যে নিয়ম, ' অন্য উভগ্ধ জগতেও সেই নিয়ম তত্রত্য অবস্থানুসারে কার্ধ্যকারী__ইহা বস্তগত উপায়ে বুঝিবার চেষ্টা করিয়াছি। আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণ, বিশেষ প্রযত্ব ও অধ্যবপায়ে যে সমুদায় তথ্যে উপনীত হইয়াছেন, সে সমুদায়ের আলোচনা, আধ্যাত্মিক ও আবিদৈবিক জগতের পটভূমিতে না করিলে, আলোচনা সর্বাঙ্গীন হয় না। এজন্য উহার আলোচনা আমার স্বল্প জ্ঞান ও বুদ্ধি অনুসারে করিতে বাধ্য হইয়াছি। ১১) আমার নিজের অক্ষমতা । ১৯। আমি জানি যে ক্র্ষস্ত্রালোচনায় হস্তক্ষেপ করা আমার পর্বরত- প্রমাণ ধুষ্টতার পরিচায়ক । আমি আমার সর্বপ্রকার অক্ষমতার সম্বন্ধে সম্পূর্ণ ১৪ '_ ব্ৰহ্মম্থত্ৰ ও শ্রীঘদ্ভাগবত . সচেতন থাকিয়াই আলোচনায় অগ্রসর হইয়াছি। ইংরাজীতে একটা প্রবাদ, আছে 209০1 rushes in, where angels fear to tread” — অৰ্থাৎ পণ্ডিতের] যেথা যেতে ভয় পায়, দ্বিধা বিনা মূর্খ সেথা ছুটে যায়। এ-সব ভাল করিয়া জানিয়াও পশ্চাৎপদ হইতে পারি নাই । মহাকবি কালিদাস রঘুবংশ রচনা! করিতে বসিয়া নিজের প্রচেষ্টার সহিত “প্রাংশুলভ্যে ফলে লোভাছুদ্ধাহুরিব বামনঃ” __দীর্ঘকায় ব্/ক্তির লভ্য কল হস্তগত করিবার জন্য ক্ষুদ্রকায় মানবকের উদ্ধবাহু হইবার দৃষ্টান্তের উপমা দিয়াছিলেন এবং উক্ত বামনের ন্যায় লোকসমাজে উপহাসাম্পদ হইবার আশঙ্কা করিয়াছিলেন। আমার প্রচেষ্টার সহিত উক্ত উপমার কিছুমাত্র সামঞ্রস্ত নাই। আমার প্রয়াসের সঙ্গত উপমা (১) একটি ক্ষুদ্র চড়ুই পাখীর সমুদ্র শোষণের প্রচেষ্টার ন্যায়, (২) একটি ক্ষুদ্র কাঠবেড়ালীর মুখে কয়েকটি করিয়া বালুকাকণা আনিয়া সমুদ্র বন্ধনের প্রয়াসের ন্যায়, (৩) একটি ক্ষুদ্র ইন্দুরের গর্ত করিয়া পৃথিবীর পৃষ্ঠ হইতে কেন্দ্র ভেদ পূর্বক অপর পৃষ্ঠে যাইবার প্রচেষ্টার ন্যায়। সুতরাং আমার প্রচেষ্টা যে সর্বথা উপহাসাস্পদ, তাহাতে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। কিন্তু ইহা জানিয়াও নিজেকে নিরস্ত করিতে পারি নাই। কোনও অনৃষ্ত শক্তি যেন জোর করিয়৷ আমাকে গন্তব্য পথে অগ্রসর, হইতে বাধ্য করিতেছেন । স্থতরাং বন্ত্রীর হাতে যন্ত্রের ন্যায় নিজের স্বাতন্ত্য সম্পূর্ণভাবে বর্জন করিয়াই অগ্রসর হইতেছি। ১২) ক্রন্মসূত্র- অত্যুত্তম আনুষ্ঠানিক সাধন শান্ত । ২০। ব্ৰহ্মস্তত্ৰ দর্শনশাস্ত্র বলিয়া প্রথিত। ইহা আগেই বলিয়াছি। কিন্তু আমার আলোচনায় আমি ইহাকে দর্শন শাস্্ররপে গ্রহণ করি নাই। উহা অত্যুত্তম, আনুষ্ঠানিক সাধন-শান্ত্র মনে করিয়াই, আমি আমার ভগবৎপ্রদত্ত জ্ঞান বুদ্ধি সাহায্যে এবং ভগবানের কপার উপর দৃঢ় ভরসা রাখিয়া, যথাসাধ্য আলোচনায় প্রয়াস পাইয়াছি। দর্শনশাস্্ালোচনার ভাষা, বাগ বাহুল্য বৰ্জ্জিত, মাত্রা ও পরিমাণের প্রতি তীব্র দৃষ্টি রাখিয়া, বার্য-_বাক্যাংশ__শব্ষ- অক্ষর-প্রয়োগে চাতুরধ্যমণ্ডিত, প্রয়োজনমত বাক্য_ বাক্যাংশ-শব্দ এমন কি প্রতি অক্ষরের ব্যবহার দক্ষতা, ফলে উহাদের কোনও একটির বুখা ব্যবহাররাহিত্য, অল্পকথায় ভাবসম্পদরাশি প্রকাশে সমুজ্জল, কঠোর ন্যায়শাস্তান্সারী, পূর্বাপর সঙ্গতিরক্ষায় একান্ত তৎপর, সংক্ষিপ্ত, পরিমাজ্জিত, অর্থগর্ত হওয়া এক'ন্ত উচিত কিন্ত আমি সে মাঞ্জিত ভাষা গ্রহণ করি নাই। আনুষ্ঠানিক পাধন- শাস্ত্র আলোচনায় উহা! একাস্ত প্রয়োজনীয় বলিয়া মনে হয় না। অবশ্যই অল্প কথায় অধিক ভাবপ্রকাশ করিতে পারিলে, তাহা পাঁওঁতগণের, বিশেষত: দর্শন: / আভাস ১৫ শাঙ্্াভিজ্ঞগণের মনোজ্ঞ হয় বটে, কিন্তু তাহা অনেক পময়ে আম অদ্ধশিক্ষিত ব্যক্তির পক্ষে হৃদয়ঙ্গম করা আলোচনার নাম হইতেই স্বখবোধ্য করিবার চেষ্টা। হইলেই ত, কি শিক্ষিত, কি অ [র ন্যায় সুলবুদ্ধি, দুরহ হইয়া! পড়ে। আমার এই ইহা বুঝা যাইবে যে, ইহার উদ্দেশ সার্বজনীন বিস্তারিতভাবে, সমুদায় সংশরছেদী আলোচনা শিক্ষিত, কি অশিক্ষিত সকলের বোধগম্য হওয়া শব । তাছাড়া সংক্ষেপ, অর্থগর্ত আলোচনায় দৰ্শনশাস্তের মর্যাদা রক্ষা সম্ভব হইলেও সাধনশাস্ের মধাদাহানি সংঘটিত হয়। ২১। দৃষ্টান্ত স্বরূপ একটি স্থত্রের উল্লেখ করি। স্থত্রটি অতি ছোট। “ফলমত উপপত্তেঃ” ৩1২৩৮__সরল অর্থ ব্রহ্ম বা ভগবানই কর্ণের সহিত ফল যে)জনা করেন । ইহা বলিলেই দর্শন শাস্ত্রের প্রয়োজন গিটিয়৷ গেল । কিন্তু সাধন-শাস্ত্রালোচকের-চক্ষে নানা প্রকার বিরোধ, সংশয়, অসঙ্গতি দেখা দিল। কারণ, উক্ত প্রকার নগ্ন অর্থে, (১) কর্মফলের প্রাধান্য স্থাপনের সহিত, ভগবান বা ব্রহ্ষ_উহার পরিচালক বা পর্যবেক্ষক মাত্র বলা হইল । (২) তাহাতে চিরম্বতন্ত্র ভগবানের স্বাতশ্্যহানির সম্ভাবনা আপতিত হইল । (৩) তাহার-ভগবস্তা, মহিমা, ভক্তবৎসলতা প্রভৃতি হ্ষুগ্ন হইল। (৪) ভাগবত বলিয়াছেন যে, তিনি উপযুক্ত ভক্তকে আত্মদান পর্য্যন্ত করিয়া থাকেন, তাহা! প্রত্যাহার করিবার কারণ উৎপন্ন হইল। (৫) ভাগবত ভগবানের মুখ দিয়া বলাইয়াছেন “যমনুগৃহামি তদ্বিশো বিধূনোম্যহম্‌” (৮৷২২৷২৪ )__ আমি যাহাকে অনুগ্রহ করি, তাহার ধন হরণ করিয়া থাকি--ইহ! অত্যাচারীর যথেচ্ছাচার- রূপে প্রতীয়মান হইবার কারণ দেখা দিল। গীতায় ১৮৬৬ শ্লোকে ভগবানের নিজের উক্তি “অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষযিষ্যামি*”_-অতিশয়োক্তি বলিয়া মনে করিবার সম্ভাবনা দেখা দিল। সাধনশাস্ত্র ও তাহার আলোচক কি. ইহা সহ! করিতে পারেন? এ কারণ উক্ত আলোচক যদি পূর্বপক্ষের মুখ দিয়! আপত্তি উত্থাপন করাইয়া প্রকৃত তত্ব সংস্থাপনের প্রয়াসী হন, এবং সে কারণ অপ্রাসঙ্গিক না হউক্‌, আলোচ্য বিষয়ের সহিত, সাক্ষাৎভাবে অতি ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ ন! থাকা, কোনও দৃশ্ঠতঃ অপর-বিষয়ের অবতারণা ও আলোচনা দ্বারা ভগবন্মহিমা ক্ষাপনে যত্ববান হন, তাহাতে কি তাহাকে দোষ দেওয়া যায়? এই দৃষ্টিভঙ্গীতে আমি উক্ত স্থত্রের আলোচনা করিয়াছি। ইহাতে কিঞ্চিৎ বাগ বাহুল্য হইয়াছে, সন্দেহ নাই এবং কঠোর ন্যায়শাস্তান্যায়ী বিচারে, তর্ককূশল পণ্ডিতমণ্ডলী, হয়ত নাপিকা কুঞ্চিত করিবেন, এ সম্ভাবনা থাকা সত্বেও আমি নিরস্ত হই নাই । উক্ত ৩২1৩ সুত্র সম্বন্ধে যাহা বলিলাম, তাহা হইতেই আমার বক্তা বিশদভাবে বঝা যাইবে। ১৬ ব্ৰহ্মন্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত ২২। কিন্তু স্তায়শাস্ত্রম্মত ক্ষুদ্রদোষে দোষী হইলেও, আমি কিছুমাত্র দুঃখিত নহি। ভাগবত আমর অন্থকৃলে, ভাগবৎকার বলিতেছেন £- তব্বাগ.বিস্গো জনতাঘবিপ্লবো যন্মিন্‌ প্রতিশ্লোকমবদ্ধবত্যপি । নামান্তনন্তন্ত যশোকস্কিতানি যৎ শুণ্থান্ত গায়ন্তি গৃণন্তি সাধবঃ ॥ ভাগবত ১1%।১১, ১২।১২।৩৮ যে বাগাড়ম্বরের প্রতিবাক্য অবদ্ধ হইলেও অর্থাৎ বাক্য-নিরমলকারী শাস্রপকলের (যথা ব্যাকরণ, ছন্দ, অলঙ্কার, ন্যায়শাগ্তাদির ) নিয়ম লঙ্ঘন করিলেও, অনন্ত ভগবানের যশেস্কিত নাম সকল বিস্তা'রত ভাবে প্রকাশ করে বলিয়া, উহা জনসাধারণের পাপরাশ ধ্বংসের ক্ষমতা রাখে, সে কারণ সাধুগণ উহাদেরই শ্রবণ, গান ও গ্রহণ করিয়া থাকেন। ভাগ £ ১৫1১১, ১২।১২।৩০। সাধুগণের শ্রবণ, গান ও গ্রহণের দ্বারা ভাগবতকার ভগবানের অবণাদির প্রতি ইঙ্দিত করলেন । স্বত্তরাং আমার দুঃখিত হইবার কারণ মাত্র নাই। ১৩) প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত ৷ ২৩। বিশেষতঃ প্রতাক্ষতঃ দেখিতে পাই যে, উত্তর ভারতের হৃধীকেশ হইতে আরম্ভ করিয়া, অনেক বড় বড় শহর গঙ্গার উভয় তারে অবস্থিত । কাল বিপর্যয়ে ও সকল সহরের লক্ষ লক্ষ অধবাসীর গৃহের মল-দুষিত নর্দিমার জল, গঙ্গায় পড়িবার ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষগণের দ্বারা বিধিবদ্ধ হইয়াছে । কাশীতেই দেখি, স্নানের ঘাটের পাশেই ভূগর্ভস্থ পয়ঃপ্রণালী দিয়! পায়খানার মলসহ দূষিত, পুতিগন্ধময় জল গঙ্গায় আসিয়া পড়িতেছে। কিন্তু তাহাতে কি শঙ্গাজলের পবিত্রতা স্ষুন হয়? অথবা গঙ্গাজলে স্নান করিয়া কমণ্ডলুতে গঙ্গাজল লইয়া ৬বশ্বনাথের মস্তকে ভক্তির সহিত “নমঃ শিবায়” বলিয়া অর্পণ করিতে কি কোনও দ্বিধা হয়? বড় বড় দার্শনিক ও নৈয়ায়িক পণ্ডিতগণও কোন প্রকার দ্বিধা বা সংকোচ অনুভব করেন না । গঙ্গার. পবিভ্রতার সংস্পর্শে উহাদের অপবিভ্রতা দূরীভূত হইয়া উহার! গঙ্গাজলের সম পবিত্রতা লাভ করিয়াছে। গঙ্গাজলের জীবাণুনাশকতা, পবিত্রতা প্রভূত গুণ সম্বন্ধে বিশেষ বিশেষ (বিদগ্ধ পণ্ডিওগণের উক্তি সমন্বিত সংক্ষেপে আলোচনা গত ১৭ মে, ১৯৫৩, ৬রা জ্যা ১৩৮০ তারিখের “হিন্দুস্থান স্টাণডার্ড" নামক : ইংরাজী দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হুইয়াছিল। সেইরূপঞ্ভগবানের নাম “পাবনং পাবনানাং» বলিয়া উহার সংস্পর্শে আমার সানাপ্রকার দোষদুষ্ট, ভ্রমপ্রমাদ সম্বলিত, পণ্ডিত ও বিশেষজ্রগণের দৃষ্টিতে আভাস চী পুতিগন্ধময় আলোচন! যে, পবিত্রতা লাভে সমর্থ হইবে, তাহাতে সন্দেহ কি? ভ্রম কেহ ইচ্ছা করিয়া করেন না। ভগবান নিজ মুখেই বলিয়াছেন ২__“মন্ত: স্মৃতিজ্ঞানমপোহনঞ্চ” (গীতা ১৫১৫ )-__ আমা হইতেই স্মৃতি, জ্ঞান, উহাদের উভয়ের বিকাশ ও সঙ্কোচ হইয়া থাকে । স্থতরাং তিনি যদি আমার জ্ঞানের সঙ্কোচ সাধন করিয়! ভ্রম উৎপাদন করিয়! থাকেন, তাহাতে দুঃখ কারবার কি আছে? তাহার উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করিয়া এবং সমুদায় ফল তাহাকে অর্পণ করিয়া, তাহারই কাজ যথাশক্তি সম্পাদন করিতে অগ্রসর হইয়াছি। ১৪) নিজ নিজ সাধনার অন্গস্বরূপে ভ্রহ্মসূত্রালোচনা বিধেয় । ২৪। ব্রহ্ষসথত্রালোচনারূপ অতি দুরূহ ব্যাপার হইতে, আমার নিরস্ত থাকিতে না পারার আরেকটি অপরের অজ্ঞাত গৃঢ় কারণ আছে। ভাগবত- সাহায্যে ব্রহ্মস্ত্রালোচনা আমার সাধনার প্রধান অঙ্গ । উহ! হইতে নিরস্ত হইলে আমার সাধন। হইতেও নিরস্ত হইতে হয়। আমার স্থচিপ্তিত ও স্থনিশ্চিত সিদ্ধান্ত এবং সে কারণ দৃঢ় ধারণা ও বিশ্বাস যে, মানবদেহধারী জীব মাত্রেরই ভগবানের আরাধনা করিবার অধিকার আছে। ভক্তাবতার ভগবান শ্রীকুষ্ণ চৈতন্য মহাপ্ৰভু ভক্তদিগকে শিক্ষা দিয়া গিয়াছেন যে, নরদেহ্ধারী জীবমাত্রই ভগবানের নিত্যদাস। সে কারণ প্রত্যেক মানবই নিত্যপ্রভু ভগবানের সেবা করিতে বাধ্য। বেদান্তমতেও, তত্বৃষ্টিতে, ব্রঙ্গে ও জীবে, চৈতন্যাংশে সাম্যভাব হেতু, অভেদ তত্বতঃ হইলেও, যতদিন না৷ অবিদ্যা সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস হয়, অবিগ্ভার অতি ক্ষীণ আভাস মাত্র থাকিতেও উক্ত অভেদ চিন্তা, অনেক সময়ে অকল্যাণের পথ প্রশস্ত করে; পতনের সম্ভাবনা স্ষ্টি করে। সে কারণ আমাদিগের ন্যায় সাধারণ মানবের পক্ষে “দাস আমি” বলিয়া__ মনে প্রাণে ভগবানের চরণে লুটাইয়া পড়িলে, পতনের সম্ভাবনা ত থাকেই না; অধিকন্তু পরম আশ্রয়ে স্থান লাভ হেতু, শাশ্বত অভয় প্রতিষ্ঠা সংসাধিত “ হয়। একারণ, “আমি নিত্যদাস, তুমি শাশ্বত প্রভু’_এই চিন্তা করিয়া ভগবানের চরণে ভক্তির সহিত পুজা অর্পণ করা৷ প্রত্যেক সাধারণ মানবের উচিত । ২৫। আমি যখন মানবদেহ ধারণ করিয়া ভারতের অতি পবিত্র ব্রাহ্মণ বংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছি, তখন আমি যতই মূর্খ, অপদার্থ, শক্তিহীন হই না কেন, ভগবানের নাম লইবার ও তাহাকে পুজা করিবার জন্মগত অধিকার আমার আছে। পণ্ডিত, কৃতী, ধনী, এশবর্্যশালী কি কেবল তাহার পুজা করিবে? যে দরিদ্র, সে কি কেবল দুরে দাড়াইয়াই থাকিবে? তাহায় কি ২ ১2 বস্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত পূজার অধিকার নাই? কিন্তু ভগবান ত সকলের প্রতি সমান। তিনি ত পত্তিত-যূর্থ, ধনী-নির্ধন, কৃতী-অকৃতী-_ইহাদের মধ্যে কোনও বিভিন্নতা দর্শন করেন না। অতএব আমার হতাশ হইবার কারণ কি? শাস্ত্র বলেন যে, ভগবানের পূজায় বিত্তশাঠ্য করিতে নাই। পণ্ডিত তাহার পাণ্ডিত্য দিয়া, কৃতী তাহার কৃতিত্ব দিয়া, ধনী তাহার ধন দিয়া, এশব্য্যশালী এখর্ধ্য দিয়া, ভগবানের পুজা করুন, তাহাদিগকে ত কেহ নিবারণ করিতেছে নাঁ। আমি লোক সমারোহের মধ্যে প্রবেশ না করিয়া, উহাদের বাহিরে থাকিয়া, আমার যাহা সম্বল, তাহা দিয়া তাহার পূজ! করিব, সে জাতিগত ও জন্মগত অধিকার ত আমার আছে । আমি দরিদ্রব_সর্ববিষয়ে দরিদ্র । কি চিন্তায়, কি ভাষায়, কি ভাব্প্রকাশের শক্তিতে, কি ক্রিয়ায়, কি জ্ঞানে, কি ভক্তিতে, কি সাধনায়, সবদিকে আমি কাঙ্গাল । আমি আমার সর্ববতোগুখী দারিদ্রা ও অক্ষমতা দিয়া, তাহার পূজা করিব, এ ইচ্ছা ত অন্তর্্যামী ভগবানের প্রেরণাতেই হৃদয়ে জাগরিত হওয়ায়, আমার এই প্রয়াসের বিড়ম্বনা আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। অতএব বিত্তশাঠ্য না করিয়া আমার উক্ত সর্বগ্রাসী দারিদ্র্য ও অক্ষমতা উজাড় করিয়া তাহার চরণে সমর্পণ করিলাম ৷ শাস্ব বলেন ঃ_ তুলসীদলমাত্রেণ জলম্ত চুলুকেন বা বিক্রীণীতে স্বমাআ্মানং ভগবান্‌ ভক্তবৎসলঃ ॥ ইহা ত কথার কথা মাত্র নয়। ভক্ত বলিয়া অভিমান করিবার আমার কিছুই নাই । তবে তিনি কর্ম-জ্ঞান-ভক্তি প্রভৃতি সমুদায়ের শাশ্বতভাগার, এজন্য আমাদের মনের অতি স্বহ্মতম স্পন্দন তাহার কাছে অবিদিত থাকিতে পারে না। পৃথিবী সমুদায় তড়িৎ শক্তির শাশ্বত ভাণ্ডার বলিয়া যেমন অতি ক্ষুদ্র তড়িৎ স্পন্দন, ভূদেবীর নিকট অজ্ঞাত থাকে না, সেইরূপ. আমার উজ্জল! ভক্তি না থাকিলেও, যদি উহার যৎসামান্য, অতি ক্ষীণ আভাসের প্রতিভাসও থাকে, তাহা হইলে আমার পুজা ভগবানের নিকট অবজ্ঞাত হইতে পারে না । হৃদয়ের অন্তস্তলে এই বিশ্বাস ধারণ করিয়া তাহার চরণে সর্বম্ব অর্পন করতঃ, তাঁহার মহিমা খ্যাপনে ব্রতী হইয়াছি। তিনি, তাহার নাম, তাঁহার মহিমা সমুদায় অভেদ' বলিয়া,__তাহার নাম জপ করা, বা তাহার মহিমা সম্বন্ধে আলোচন! করা, তাঁহারই. সঙ্গে প্রত্যক্ষ কারবার বলিশ্বা জানি । ২৬। 'উপরে বলিয়াছি: যে, ব্রহ্ষস্ত্রের আলোচন! দর্শন শাস্ত্রের দৃষ্টিতে না করিয়া, . আনুষ্ঠানিক অধ্যাত্ম সাধনশাস্তরের দৃষ্টিতে, ভাগবতের আভাস ১৯ ভিত্তিতে করিয়াছি । আরও উদ যে, এ আলোচন। আমার সাধনার মুখ: অঙ্গ। ইহাতে হয়ত কাহারও মনে সন্দেহ উঠিতে পারে যে, সাধনা করিতে হইলে, অখণ্ড মনোযোগ প্রয়োগ করিতে হয়, নতুবা উহা ফলদায়ক হয় না; এজন্য সকলে কি গৃহস্থ ধর্ম পরিত্যাগ করিয়া সন্ন্যাস ব্রত ধারণ করিবে? এই সন্দেহের প্রথম অংশটি অর্থাৎ সাধনায় অখণ্ড মনোযোগ অর্পন-_সত্য বটে, কিন্তু শেষের অংশটি সত্য নহে। আমাদের শাস্ত্রের উপদেশে, ব্যবহারিক দৈনিক জীবনের কর্মাচরণের সঙ্গে, সাধনার কোন বিরোধ নাই। ব্যবহারিক কোনও কাজ করিতে হইলে, উহাতে অখণ্ড মনোযোগ লাগাইলে তবে ত উহা সর্বাঙ্গ সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়_ইহা প্রত্যেকের প্রত্যক্ষ দৃষ্ট সত্য । লোকে দৈনিক ব্যাবহারিক জীবনে বিভিন্ন প্রকারের কত কাজ প্রতিদিন করিয়া থাকে, আজকাল উদরান্নের সংস্থান করা যে মহা সমস্যার বিষয় হইয়াছে, তাহাতে উহার জন্য, নানাবিধ বিভিন্ন প্রকারের কর্াবর্তে প্রায় সকলকেই পড়িতে হয়। সেই কর্মাবর্ত হইতে উত্তরণের উপায়-_ প্রত্যেক কর্মের জন্য _ছোট হউক্‌ বা বড় হউক্‌__পরিমাণ মতে! সময় নির্দেশ এবং সেই নিদিষ্ট সময়ে অখণ্ড মনোযোগের সহিত উহার সম্পাদন। এইরূপ করিলে বিব্রত হইতে হয় না। অথচ সমস্ত কাজই করা হইয়া যায়। ব্যাবহারিক জীবনেয় উদরান্ন সংস্থানের জন্য দৈনিক সাধারণ কাজের ন্যায়, প্রতিদিন অধ্যাত্ম জীবনের তুষ্টি-পুষ্টিকর অননস্থানীয় সাধনার জন্য, পরিমাণ ও স্থবিধামতো অল্প কিছু সময় নির্দেশ ও সেই সময় অখণ্ড মনোযোগ অর্পণ করা কি অসম্ভব? ইচ্ছা থাকিলে, সকলেই ইহা সহজে করিতে পারেন। উপরে যাহা! লেখা! হইল, তাহা বৈধীভাবে সাধনার কথা । উহ! ছাড়া ভগবান গীতায় কর্মসম্পাদনের যে “কৌশল” (গীঃ .২৫০), জীবহিতের জন্য প্রকাশ করিয়া বলিয়াছেন, তাহা সম্ভবমতো ও সাধ্যমতো অবলম্বন করিয়া, কর্ম্মাচরণের অনুষ্ঠানে, সংসারের প্রত্যেক কর্ম-_-এমন কি উদরান্নসংস্থামের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন কর্দ__ভগবছুপাপনা রূপ-_চরম ও পরম কর্মে পরিণত করা যাইতে পারে । অথবা উহাকে চরম ও পরম কর্ম বলিই বা কেন? উহাইত নৈষ্ৰ্্য। প্রত্যেক কৰ্ম্মকে নৈশ পরিণত করিবার উপদেশই গীতার বিশেষত্ব। আমার বেদান্তালোচনা যদি উক্ত পর্যায়ে না পড়ে, উহ! আমারই দোষ । সে দোষ তাহারই চরণে সমর্পণ করিয়াই অগ্রসর হইয়াছি। এইভাবে বিভাবিত হইয়! সাধকপ্রবর রামপ্রসাদ অমর গীতি গাহিয়| গিয়াছেন : ২০ র্নত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত শয়নে প্রণাম জ্ঞান, নিদ্রায় করো মা'কে ধ্যান, (ওরে ) নগর ফির মনে কর প্রদক্ষিণ স্যাম! মা’রে। যত শোন কর্ণপুটে, সবই মায়ের মন্ত্র বটে, আহার কর মনে কর আহুতি দিই শ্যামা মা'রে। ২৭। শাস্ত্র ব্যক্তি বিশেষের পক্ষে সন্যাস গ্রহণের উপদেশ দেন বটে, সকলের পক্ষে নহে। বাহাদের পূর্বজন্মের স্থরুতীর ফলে তীব্র বৈরাগোদয় হইয়াছে, সন্্যাসের ব্যবস্থা তাহাদেরই জন্য ৷ বুদ্ধদেব, শঙ্করা চার্ধ্য বা শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য মহাপ্রভুর সন্ত্যাসের বাঁধা দিবে কে? কিন্তু শাস্ত্র পেট সর্বস্ব সন্নযাপের বিরোধী । সন্্যাসের বেশ পরিধান করিয়া সন্ন্যাসী সাজিলেই সন্যাসী হওয়া যায় না। কাল চক্রের আবর্তনে, বর্তমান জীবন সংগ্রামের দিনে, সংসারে পিতা-যাতা- ভার্য্যা-পুত্র-কন্তা প্রভৃতির প্রতি অবশ্য পালনীয় কর্তব্য এড়াইয়া, কোনও মঠাধীশের চেলা হইলেই সন্ন্যাসী হওয়া যায় না। আজকাল, এরূপ সন্ন্যাসী হওয়ার একটা রেয়াজ হইয়াছে । বলা বাহুল্য, শাস্ত্র উহার ঘোরতর 1দরোধী এবং উহ! অতি কদৰ্য্য আত্মপ্রবঞ্চনা। আধ্যাত্মিক জগতে উহার ফল অতি ভীষণ । ১৫) নরদেহ প্রাপ্তি কোন 85) ব্যাপার নহে, উন্থা গভীর উদ্দেশ্যমূলক ৷ ২৮। নরদেহ ধারণ করিয়া সংসারে জন্মগ্রহণ, কোনও উদ্দেশ্ঠহীন, আকস্মিক ব্যাপার নহে। উহার মূলে, পূর্ব পূর্ব কত শত শত জন্মের, কতবিধ- কর্ম, ফল প্রদানে উন্মুখী হইয়া, রহিয়াছে । সেই সমুদায়-ফলোন্মুখী কর্ম পিঠে বাধিয়া মানুষ জন্মগ্রহণ করে৷ উহাই তাহার ইহজীবনের অবশ্য কর্তব্য কর্ধ। উহ্‌! নানাবিধ,__পিতামাতার প্রতি কর্তব্য, ভাই ভগ্নী প্রভৃতির প্রতি, বন্ধু-বান্ধবের প্রতি যে, সংসারে জন্মিয়াছে সেই সমষ্টি সংসারের প্রতি ও তাহার অন্তর্ভুক্ত বাষ্ট সকলের”প্রতি, প্রতিবেশী, পরিজন, পরিকর প্রভৃতির প্রতি, সমাজের প্রতি, দেশের প্রতি ও দেশের সকলের প্রতি কর্তব্য। প্রকৃতপক্ষে এই সকলের প্রতি কর্তব্য স্মরণ করিয়া, ভগবানের ইচ্ছা পরিচালক কর্মদেবতাগণ, কোনও বিশেষ মানবের__বিশেষ দেশে, বিশেষ সমাজে, বিশেষ পরিবারে জন্মগ্রহণ করিবার ব্যবস্থা করেন। যে ব্যক্তি এই সমুদায় কর্তব্য যথাশক্কি সম্পাদনের চেষ্টা করে এবং যথাসাধ্য সম্পাদন করে, তাহার জীবন সার্থকতা লাভ করে । টি আভাস ২১ অপর পক্ষে, যে উহা এড়াইয়া চলে, তাহার জীবন শুধু ব্যর্থ নয়, অন্যান্য অশুভ কৰ্ম্ম সঞ্চিত হইয়া পিঠের বোঝা! আরও ভারী করিয়া থাকে। শাস্ত্র আমাদের এই শিক্ষাই দিয়া থাকেন। আলোচনায় অগ্রসর হইলে, ইহা ক্রমশঃ সুস্পষ্ট বুঝা যাইবে। স্বতরাং গাহ'স্থ ধর্মে থাকিয়া, সাংসারিক কার্ধ্য-_গীতার উপদেশ অন্গপারে, ভগবানের আরাধনার অঙ্গ স্বরূপ মনে করিয়। সম্পাদন করা এবং তাহার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ নির্দিষ্ট সময়ে, নিজের স্বাধীন ইচ্ছামত গৃহীত সাধনায় অখণ্ড মনোযোগ দিয়া যথাসাধ্য চেষ্টা করা কর্তব্য। উভয়ের মধ্যে কোনও বিরোধ নাই, তাহা বুঝা গেল। শাস্ত্রের উপদেশ, সাধনা সহ, সর্বপ্রকার কর্ণ- সম্পাদনের সুষ্ঠু উপায় জানায় বলিয়া, উহাদের পরিপোষক ও পরিবর্ধক। এ কারণ ভগবান গীতায় ১৬২৪ শ্রোকে, কুরুক্ষেত্র সমরে অজ্জ্নকে হিংসাত্মক কর্মাচরণে ও শাস্ত্রের প্রমাণের অন্ুবর্তী হইয়া চলিবার উপদেশ দিয়াছেন । ২৯। ভক্তি প্রবণ চিত্ত, ঈশ্বর বিশ্বাসী কেহ কেহ মনে করেন যে, মানুষ ঈশ্বরের হাতের খেলার পুতুল মাত্র। তাহার উপর সমুদায় নির্ভর করিয়া, নিশ্চেষ্ট হইয়া থাকাই তাহার উচিত। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত আমাদের শাস্তর- বিরোধী । সংসারে সমুদায় কর্মে কর্তৃতববুদ্ধি ও তজ্জনিত অভিমান পুরা- মাত্রায় বর্তমান থাকিবে, কেবল, একটু সময় সাধনায় নিয়োগ করার বেলায়, আমি তাহার হাতের পুতুল মাত্র বলিয়া নিশ্চেষ্ট হইয়া থাকা__দাকণ আত্ম- গ্রবঞ্চনা ভিন্ন অন্য কিছু নহে। অবশ্যই ঈশ্বরের উপর নির্ভরতা! খুবই ভাল সন্দেহ নাই, কিন্তু ঈশ্বর-নির্তরতা নিশ্টেষ্টতা নহে। নিশ্টেষ্টতা ও জড়তা সম-পর্ধ্যায় ভুক্ত । ইহা! অন্ধ তমসাচ্ছন্নতার পরিচায়ক । ভগবান গীতায় ১৪ অধ্যায়ে গুণত্রয়বিভাগ-যোগে ইহার আলোচন! করিয়াছেন। গীতায় ৮৭ শ্লোকে ভগবান উপদেশছলে অজ্জণকে বলিলেন :-- তস্মাৎ সর্বষু কালেষু মামনুন্মর যুদ্ধ চ ॥ গী_-৮৭ অতএব তুমি সর্ধকালে আমাকে চিন্তা কর। কিন্ত মনে রাখিও, তুমি রজোগুণ প্রধান ক্ষত্িয়। তোমার শুধু চিন্তাতে হইবে না, “যুদ্ধ চ’_তোমার বধর্ম পালন করিয়া যুদ্ধ কর। গী--৮।৭, অর্জনের প্রতি যুদ্ধ করিবার উপদেশ । কিন্ত সকলেই যে তদনুপারে অস্রশত্ত্ে সজ্জিত হইয়া মারণোম্মুখী হইবে, তাহা নহে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্বধর্ম অনুষ্ঠান করিবে। নিশ্েষ্ট হইয়া থাকিবে না, ইহাই ভগবানের অভিপ্রায় ইহা পাবে বুযাইবার জনত ভগবান বলিয়াছেন £_ ২২ ্র্স্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত তম্মাদসক্তঃ সততং কার্ধ্যং কৰ্ম্ম সমাচর । অসক্তো হ্যাচরন্‌ কর্ম্ম পরমাপ্পোতি পুরুষঃ ॥ গী ৩1১৯ কিরূপভাবে কর্মাচরণ করিতে হইবে? তাহার উত্তরে ভগবান বলিতেছেন । ফলকামনা শূন্য হইয়া কর্তব্য বোধে কর্ম্ম আচরণ করিবে, তাহা হইলে উক্ত আচরণকারী নিঃশ্রেয়স প্রাপ্ত হয় । ৩০ অতএব সংসারে ফলাকাঙ্ফা শৃন্ত হইয়া “আমার অবশ্য করণীয়” এই বোধে কর্ম করিয়া যাইলে পরমপদ প্রাপ্তি ঘটে । নিশ্টেষ্টতার প্রশ্রয় শাস্বে কোথাও নাই । জ্ঞানীগণের পক্ষে ন্চন্ন কথা। কিন্তু জ্ঞানী বা ্রশ্মঙ্ঞানপ্রাপ্ত জ্ঞানী সংসারে কয়টা আছে? ভগবানের উপদেশ অন্ুপারে আমাদের স্ায় সাধারণ সকলের কর্তব্য বোধে, আসক্তিশৃন্ত হইয়া কর্শ্মাচরণ কর্তব্য । এই উপদেশই অক্ষমতা সত্বেও আমাকে এই আলোচনায় প্রবন্তিত করিয়াছে । ১৬) ভাগবত সাহায্যে আলোচনার ভণ্যভম কারণ। ৩১। ভাগবতের ভিত্তিতে ব্রন্হত্রালোচনার যে কারণ উপরে বিবৃত করা হইয়াছে, তাহা ছাড়া আরও একটি কারণ আছে। উহার পরিচয় দিতেছি । শান্ত ভগবানকে “পচ্চিদানন্দ” স্বরূপ বলিয়া উক্তি করিয়াছেন। সৎ- চিৎআনন্দ এই তিনটি পৃথক্‌ পৃথক শব্দ লইয়া সচ্চিদানন্দ পদ গঠিত। উক্ত সৎ-চিৎ-আনন্দ তিনটি পৃথক পৃথক নামে কথিত হইলেও, উহারা পরম্পর পৃথক্‌ পৃথক্‌ বস্তু নহে। এক অদয় বস্ত রই আমাদের বিশ্লেষাত্মিক! দৃষ্টি ভঙ্গীতে পৃথক- ভাবে বুঝিবার প্রয়াস মাত্র। এ তিনটি গুণ বা ধর্ম নহে। পরমতত্বের স্বরূপ ভাষায় কথঞ্চিৎ প্রকাশ করিতে হইলে, উহাদের ব্যবহার ভিন্ন উপায় নাই বলিয়া, উপনিষদ্‌ ও তদনুসারী অন্ঠান্ত শান্ত, আমাদের বোধ সৌকর্ধ্যার্থে উহাদের ব্যবহার করিয়াছেন। পরমতদ্বের প্রপঞ্চগত প্রত্যেক বস্তুতে অনুপ্রবেশ হেতু ( ছান্দোগ্য_৬৷৩৷২ ), উক্ত তিন ভাব প্রত্যেক বস্তুতে অনুস্থাত। প্রত্যেক বন্তর নিজ নিজ আকারে বর্তমান থাকা “সৎ” ভাবের, উহার প্রকাশ এবং সেকারণ আমাদের প্রতীতি গোচর হওয়া “চিৎ” ভাবের এবং উহার প্রিয়, “আনন্দ” ভাবের পরিচয় দান করে। ৩২। এক খণ্ড কাষ্ঠ ব| প্রস্তর গ্রহণ কর--উহা জড়, অচেতন, অন্ধ তমসাচ্ছন্ন। কিন্ত প্রপঞ্চের সমুদায় বস্তুর ন্যায়, উহার “সত্তা সামান্য” আছে, হা বুঝাইতে হইবে না। কারণ উহা নিজের আকারে অবস্থান ও অপর আভাস ২৩ বস্তুর স্থানাবরোধকরূপে উহার কোনও বিশেষ স্থানে বর্তমানত|া--এই সত্তা সামান্তের জন্য । উহাতে “চিৎ” বা প্রকাশ ভাব থাকায়, উহ! আমার এবং সেকারণ জগতের সমুদায় সচেতন জীবের জ্ঞানের বিষয় হইতে পারিয়াছে। উহার আনন্দভাব থাকা হেতু, আমি বা৷ অন্য কেহ, উহা! প্রিয়রূপে গ্রহণ করিয়া, উহা হইতে গৃহনির্মাণের উপকরণ ও সাজসজ্জ| প্রস্তুত করিয়া আনন্দ লাভ করিতে পারি। এই দৃষ্টান্ত সমভাবে অগ্রান্য সমদায় বস্তুতে প্রযোজ্য, ইহা সহজে বুঝা যায়। ৩৩। ব্র্স্থত্র ব্র্মতত্ব নিরূপণ, এক্ষতত্বের জ্ঞান লাভের সাধন বা উপায় এবং সাধনের ফল-বিবৃতি হেতু, ক্রহ্মবিদ্ঠা। শিক্ষার অত্যন্ত সহায়ক ৷ ব্ৰহ্ম ও তাহার বিদ্যা-অভেদ বলিয়া, ব্রহ্ম যেমন '“সচ্চিদানন্দ” স্বরূপ, ব্রহ্মবিদ্যাও তাই, সেকারণ ব্রহ্মবিষ্ঠাও সচ্চিনানন্ন স্বরূপাত্মক। উহার সদ্ভাবাত্মক, সত্তা সামান্য বিচার-বিতর্কের বিষয় নহে । সংশয় হইলেই-_বিচার বিতর্কের প্রয়োজন হুইয়া থাকে। উহার “সত্তা সামান্য” সন্দেহ করিলে, সন্দেহকারীর সত্তা ও সন্দেহের বিষয় হইয়া পড়ে । তখন কেইবা সন্দেহ করে, কেইবা বিচার করে। এ কারণ উহার দার্শনিক আলোচনা সর্ধথা পরিত্যাজ্য । সুতরাং চিদ্ভাব ও আনন্দভাবই এই আলোচনার বিষয় হইয়া দরাড়ায়। ৩৪ ভগবান শঙ্করাচার্ধ্য তাহার শারীরক ভাম্যে, ব্রঙ্মের চিদ্ভাবের__ অন্য কথায় জ্ঞানের প্রাধান্য দিয়া আলোচন! করিয়াছেন। অন্তান্ত আচার্ষগণ, অল্পবিস্তর তীহারই অনুসরণ করিয়াছেন । কেবল শ্রীমদ্‌ বলদেব বিদ্যাভূষণ চিদ্ভাবের সহিত আনন্দভাবের সংমিশ্রণ করিলেও, মোটামুটি বলিতে গেলে, বলিতে হইবে, জ্ঞানের প্রাধান্য তাহার “গোবিন্দভাম্যে” ও বর্তমান। কেবল গ্ৰীমদ্ভাগবত উহাদের সকলের হইতে পৃথক ভাবে, আনন্দের প্রাধান্য দিয়া পরম- তত্ব ভগবানের স্বর্ূপের পরিচয় দিয়া, তিনি যে আমাদের কত আপনজন, প্রিয় হইতেও প্রিয়তম, তাহা স্থমধুর ভাষায় সুম্পষ্টভাবে বুঝাইয়াছেন। ভাগবত উহা শ্রুতির ভিত্তিতেই করিয়াছেন, বলা বাহুল্য । টৈত্তিরীয় শ্রুতির “রসো-বৈ-সঃ' নত্াংশ, মন্ত্ররপে নিবদ্ধ না রাখিয়া, রসকদনবূততি, সৌন্দ্ঘ-াধু্য-সৌকুমার্য প্রভৃতির পরাকাষ্ঠারপ বিগ্রহ প্রতিষ্টা করিয়াছেন এবং মানবদেহধারী আপামর সাধারণ জীবগণের পরমশ্রেয়ঃ প্রাপ্তির উপায়স্বরূপ উক্তরস স্বরূপ বিগ্রহের নিজ নিজ অধিকার অনুসারে রগাস্থাদনের জন্য আবাহন জানাইয়াছেন। ভাগবত-_ “নিগম কল্পতরোর্গলিতং ফলম্ (ভাগ ১/১/৩)_বেদরূপ কর্বৃক্ষ হইতে শ্বতঃপতিত, অমৃতরসপূর্ণ সুপক্ক ফল। উহার কগামাত্র রদসেবনে, আনন্দের ২৪ র্ষসত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত অমৃতধারায় হৃদয়মন প্রাবিত হয়। আমরা জানি যে, বৃক্ষের অন্তরে প্রবহমান রসতআ্রোতের সারাংশের কেন্দ্রীভূত অভিব্যক্তি তাহার ফল ও ফলের রস। একারণ ভাগবত সমুদায় বেদের যাহা সার, তাহার কেন্দ্রীভূত অভিব্যক্তি। স্থৃতরাঁং উহা! হইতে আনন্দধারা বহিবে তাহার কথা কি? ৩৫। আমরা! প্রত্যক্ষ দেখিতে পাই যে, বিশুদ্ধ স্ুবর্ণে অলঙ্কার প্রস্তুত হয় না ॥ উহার সহিত কোনও ইতর ধাতুর সংমিশ্রণ প্রয়োজন। ভাগবতকার এই দৃষ্টান্তের অনুসরণ করিয়া, বিশুদ্ধ আনন্দের সহিত স্থনিপুণভাবে, পরিমাণ মত জ্ঞানের সংমিশ্রণ করিয়াছেন। জ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে উহার সহিত পরম্পর ঘনিষ্ঠ উপায়-উপে় সম্বন্ধযুক্ত ভক্তিও আপিয়া সংমিশ্রণে যোগ দেওয়ায়, এমন সুন্দর নমনীয় অথচ ত্রিকাল স্থায়ী দৃঢ় মশলা প্রস্তুত হইয়াছে যে, ভাগবতকার উহা দিয়া, তাহার মহছুদ্দেশ্ত__“তাপত্রয়োন্মলনম্”_-( ভাগ ১।১।২) সাধনের জন্য আনন্দসৌধ নির্মাণ করিয়া, ত্রিতাপদগ্ধ জীবের দহন জালা প্রশমনের ও শাশ্বত বিশ্রাম লাভের ব্যবস্থা করিয়াছেন। শুধু বিশ্রামসৌধনির্মাণ করিয়াই তিনি ক্ষান্ত হন নাই । যে আনন্দের কণা পাইয়া বিশ্ব ও তদন্তর্গত যত কিছু আনন্দে আত্মহারা, যে আনন্দের অতি ক্ষীণ ছায়া আমরা মুক্ত আকাশের নিবিড় নীলিমায়, উষার রক্তিম রাগে, তরুণ অরুণের ক্িপ্ক, কোমল জ্যোতিঃতে, সান্ধ্য গগনের বর্ণবিন্তাসে, শারদ পুণিমার পূর্ণ শশধরে, ফুল কমলের অমল হাসিতে ও সৌরভ বিতরণে, মলয় পবনের শিহরণ-জাগরণে, বিহঙ্গের মধুর কাকলীতে, নীরব নিশীথে নিপুণ বাদকের দূর বাশীর গানে, মায়ের সেহে, সতীর প্রেমে, ভগ্নীর ভালবাসায়, সন্তান-বাৎ্সল্যে দেখিতে পাই, সেই আনন্দের ফোয়ারা ছুটাইয়া প্লাবন স্থষ্টি করিয়াছেন । যিনি উক্ত প্রাবনের তীরে বসিয়া, নিগম কল্প- তরুর সুপক্ক ফলের কণামাত্র রসাস্বাদন করিবার সৌভাগ্য লাভ করিয়াছেন, তিনি ইহা প্রাণে প্রাণে অনুভব করিবেন । ৩৬। মামি ভাগবতের পদান্সরণে ব্র্সুত্রালোচনার প্রয়াস পাইয়াছি বটে, কিন্ত আমি ত বলিয়াছি যে আমি সর্বতোভাবে অতি দরিদ্র । ভাবুক ব্যক্তি যে ভাগবত পাঠ করিয়া আত্মহারা হন, যে ভাগবতের একটি মাত্র শ্লোকার্দ পাঠ শুনিতে না শুনিতে ভগবান শ্রীরুষ্চচৈতন্য মহাপ্রভু--বাহজ্ঞান শূন্য হইয়া পড়িতেন এবং দরবিগলিত ভাব ও আনন্দাশ্রধারায় বক্ষঃ, পরিধেয়, বসিবার আসন ও ধরাতল ভাগিয়া যাইত, সেই ভাগবত আলোচন! করিয়! ত পাষাণ হৃদয় গলিল না, ভক্তি দেবীর দয়া হইল না, ভাবের উদয় হইল না, নয়নে শরবিনদু দেখা দিল না, শরীরে রোমাঞ্চ শিহরণ জাগিল না। সবই আমার আভাস ছুরদৃষ্ট ও অশুভ কর্মরাশির ফল । তবে তাহাতে দুঃখ করিয়া কোনও ফল নাই৷ মনে দৃঢ় বিশ্বাস ও বিশ্বাস জনিত সান্তনা আছে যে, জ্ব্যগুণ অপ্রকাশ থাকিবে শাঁ। কালে প্রকাশ পাইবেই পাইবে। না জানিয়! বিষ খাইলে বিষ কি তাহার কাজ করে ন1? উগ্রবীর্ধ্য, তিক্ত ওষধ অতি অনিচ্ছায় গলাধঃকরণ করিলে, কি তাহার গুণে রোগ প্রশমিত হয় না? অতি সুগন্ধ গোলাপ ফুল হাতে লইয়া ধাটাাটি করিলে, হাতে কি তাহার স্থগন্ধ আমোদিত করে ন1? বুঝি বা না বুঝি, পাষাণ হৃদয় গলিত হউক্‌ বা না হউক্‌, ভাগবত লইয়া নাড়াচাড়া করিলে বস্তগুণ নিশ্চয়ই প্রকাশ পাইবে। ভাগবত ত ভগবানেরই যৃত্তি-শাস্তরূপে প্রকটিত। ভাগবত লইয়া সময়ক্ষেপ করা__ভগবানের প্রসঙ্গ লইয়া থাকা । বিশেষতঃ ভগবানেরই নিজের উক্তি__“ন হি কল্যাণকুৎ কশ্চিদ্‌ দুর্গতিং তাত গচ্ছতি”। গীতা £ ৬।৪০। ৩৭। অনেক সময়ে প্রত্যক্ষতঃ এমন দেখা যায় যে, এক ব্যক্তি গীতি শাস্ত্রে সম্পূর্ণ অজ্ঞ । গানের তাল, মান, স্থর, লয়, যুচ্ছরনা, রাগ, রাগিণী প্রভৃতি বিষয়ে কিছুমাত্র জ্ঞান নাই, কণম্বরও অতিশয় কর্কশ, রাসভ বিনিন্দিত, গান গাহিবার কিছুমাত্র উপযোগী নহে, তথাপি তাহার মনে কখনও কোনও কারণে আনন্দের আতিশয্য হইলে, তিনি চেষ্ট! করিয়াও, চাপিয়া রাখিতে ন! পারিয়া গর্ঘভ রাগে তান ধরিয়া থাকেন। আমারও সেই প্রকার। হৃদয়ের আলোড়ন চাপিয়া রাখিতে অসমর্থ হইয়া, লঙ্জাসরম বিসৰ্জ্জন দিয়া, গর্দিভ কে আমার চিৎকার এই আলোচনা অভিব্যক্ত করিয়াছে । গর্দিভি রাগে চিৎকার, জীববিশেষের আনন্দের অভিব্যক্তি ত বটে। সে কারণ উহা যতই কর্কশ; যতই শ্রুতিকঠোর হউক্‌ না কেন, যতই ব্যাকরণ-অলঙ্কার-্যায়শাস্ত্রের মর্যাদা লঙ্ঘন করুক না কেন-_সচ্চিদানন্ন স্বরূপের শ্রীচরণগলিত আনন্দ প্রত্রবণের অতি ক্ষীণ ধারার কণামাত্রও উহাতে বর্তমান আছে। সচ্চিদীনন্দের চরণ গলিত ধারাই ত মর্ত্যে “গোমুখীর মুখ হইতে ঝরা পৃত বারিধারা” । কৰি 'উক্তধারা! “স্ুস্বনে” ঝরে বলিয়া উল্লেখ করিলেও, উহা! কি সত্যসত্যই তন্ত্ী-লয়- সমন্বিত মধুর বীণা নিন্ধনের ন্যায় ঝরিতে থাকে? উহাকি কান ফাটান শবে পর্বত হইতে পর্বতে লাফাইয়া পড়ে না? কোনও কৰি_উহাকে নৃত্যশীলা বালিকার চঞ্চল-আনন্-নর্তনছন্দে গতিশীলা বলিয়া উল্লেখ করিলেও উহ! ক যুলা প্রকৃতির উন্মাদ তাওব-নর্তনের চিত্র মনে জাগায় না? অন্তথা দেবাদিদেব মহারুদ্রকে বিচলিত করিবার স্পর্ধা উহাতে কোথা হইতে আসিল? মহাহস্তী এরাবতকে ওলটপালটে হাবুডুবু খাওয়াইয়া ভাসাইয়া লইয়া যাইবার শক্তি ২৬ ব্ৰহ্মম্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত কোথা হইতে পাইল { সর্বশক্তিমান ভগবানের চরণ সংস্পর্শ হেতু-ও স্পর্ধা এ শক্তি, ইহা সুষ্পষ্ট নহে কি? আমার গর্দভরাগও সেই ভগবচ্চরণ সংস্পর্শে শক্তিমান ত বটে। স্থতরাং ইহাতে আমার কুঠ্ঠিত হইলে চলিবে কেন? ৩৮৭ জ্যোতিঃ পদার্থের সাধারণ ধশ্ম এই যে ইহার প্রতি জ্যোতিঃকণা বহিমুখীন ৷ সেই জ্যোতিঃ কণার কোনও একটিকে অবলম্বন করিয়া প্রতি লোম ক্রমে অস্ত সুখে অগ্রসর হইলে পরিণামে সেই জ্যোতিঃর উৎস পদার্থ-প্রাপ্তি ঘটে। আমার আলোচনা যত দোষে দোষী হউক্‌ না কেন-__ইহা আনন্দ স্বরপের আনন্দ জ্যোতিঃর বহিমুখীন অভিব্যক্তি। মুণ্ডক ও বৃহদারণ্যক শ্রতিতে তিনিই “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ” বলিয়া উক্ত হইয়াছেন । ( মুণ্ডক ২।২৯, বৃহঃ ৪181১৬)। স্থতরাং যদি কেহ উহ] ধরিয়া অন্তরমুখে অগ্রসর হন, তিনি যে “জ্যোতিবাং জ্যোতিঃ” অন্য কথায় আনন্দ স্বরূপের চরণপ্রান্তে উপস্থিত হইয়া, শাশ্বত বিশ্রাম প্রাপ্ত হইবেন, তাহাতে সন্দেহ মাত্ৰ নাই। ১৭) উপসংহার ৷ ৩৯। ব্ৰহ্মম্থত্ৰ শ্রীমদ্ভাগবতের পাণ্ডুলিপি লেখা বাং ১৩৪০ সালে, ইংরাজী ১৯৩৩ সনে শেষ হইয়াছিল । আজ ১৩৬০ সালের অগ্রহায়ণ মাস। এই দীর্ঘ ২০ বৎসর ইহা মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয় নাই। আমি এখন অশীতিপর বৃদ্ধ। ইন্দ্রিয় বিকল। কৰ্মশক্তি লুপ্ত প্রায়। এ বয়সে এত বৃহৎ পুস্তক আমার দ্বারা মুদ্রণ ও প্রচার সম্ভব নহে। আমার কানফাটান গর্দভ রাগ আমিই শুনিতে থাকি, তাহাতে আমার দুঃখ নাই-_উহা! আমাকে আনন্দ দান করে। ভবিষ্যতে কখনও আমার কোনও উত্তর পুরুষ তাহার পূর্বপুরুষের বহু পরিশ্রম ও চিন্তার ফলস্বরূপ, এই আলোচনা, সংরক্ষণ করিবার ইচ্ছায় কখনও ইহা মুদ্রিত ও প্রকাশিত করিতে পারে । ৪০। উপসংহারে ৬পিতৃদেবের, ৬ভ্রীগুরুর, ৬ইষ্টদেবের, ৬হ্ত্রকারের ও তাহার ভাষ্যকারগণের চরণে, আমার জাতি-বংশ-শিক্ষা উপাধি প্রভৃতি সম্ভূত অভিমানক্ষীত মস্তক ধল্যবলুঠনে প্রণাম করিয়া, আমার ভাল মন্দ সমুদায় অর্পণ করিলাম। নাস্থা ধৰ্ম্মে ন বন্থুনিচয়ে, ন চ কামোপভোগে, যদ্‌ ভাব্যং তদ্‌ ভবতু ভগবন্‌ পূৰ্ব্বকৰ্ম্মানুরূপম্‌ । এতৎ প্রার্থ্যং মম বহুমতং জন্ম জন্মান্তরেইপি। ত্বং পাদান্তোরুহযুগগতা নিশ্চল! ভক্তিরস্ত ॥ আভাস ২৭ কিয়ে মানুষ পশুপথীমে জনমিয়ে, অথবা! কীট-পতঙ্গে। করম বিপাকে গতাগতি পুনঃ পুনঃ রতিরহুতুয়াপরসঙ্গে ॥ বিদ্াপতি। স্বকর্্মফলনি্দিষ্টং যাং যাং যোনিং ব্রজাম্যহম্‌। তন্তযাং তন্তাং হৃষীকেশ তৃয়ি ভ্তিদরঢাস্তমে ॥ পাগুবগীতা । 0৬7৫ — জয়নগর ২৮ অগ্রহায়ণ, শনিবার, ১৩৬০। ১২ ডিসেম্বর, ১৯৫৩ । RE রা ২ তি কিক ৮ OE 1 Ly te +1" বির চিট কন টু | ES! ০ সি ও নমো ভগবতে বাস্গুদেবায় ৷ - ব্ৰহ্মসূত্ৰ ও শ্রীমদভাগবত। হব শ্রীমদ্ভাগবত সাহায্যে ব্রহ্ষসুত্রালোচনা । প্রথম খণ্ড _ প্রথম অন্যাক্্র। প্ৰথম পাছ। আলোচক £_ ক্রীব্রামপদ চট্টোপাধ্যায়, বেদান্ত বিদ্তার্ণব। ৩০ ্র্গস্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগব্ত ্রন্মসৃত্র ও শ্রীমদ্ভাগবভ বা শ্রীমদূভাগবভ সাহায্যে বেদান্ত আলোচনা ॥ ও নমে! ভগবতে বাস্দেবায়। ও নমো গুরবে ॥ ব্ৰহ্মসূত্ৰ বা বেদান্তদর্শন প্রথম অন্যান্সেল্স প্রতিপাদ্য £_সমত্ৰহ্র । সমুদায় বেদান্ত বাক্যের তাত্পর্ধ্য কি, তাহা প্রথম অধ্যায়ে প্রতিপাদিত হুইয়াছে। ভাগবতে ইহা স্পষ্টত: বলা হইয়াছে “বেদ! ব্ৰহ্মাত্মবিষয়াস্ত্রিকাওবিষয়| ইমে ৷ পরোক্ষবাদ। ঝষয়ঃ পরোক্ষঞ্চ মম প্রিয়ম্‌ ॥” ১১২১৩৫ “কিং বিধত্তে কিমাচষ্টে কিমনৃ্য বিকল্পয়েৎ। ইত্যন্তাহৃদয়ং লোকে নান্তো মদ্বেদ কশ্চনঃ |” ১১1২১1৪০.. “মাং বিধত্তেহভিধত্তে মাং বিকল্প্যাপোহতে ত্বহম্‌॥৮ ১১1২১।৪১ “এতাবান্‌ সর্ধববেদার্থ শৰ্দঃ আস্থায় মাং ভিদাম্‌। মায়ামাত্রমন্গ্ান্তে প্রতিষিধ্ প্রসীদতি ॥ ১১৷২১৷৪২ প্রথন্ম অধ্যাক্রেন্র লাল্িডি পাদ প্রথম পাঁদে- স্পষ্ট ব্র্মলিঙ্গযুক্ত বাক্যবিচার ৷ দ্বিতীয় পাদে__অস্পষ্ট উপাস্য ব্রহ্মবোধক বাক্য বিচার । তৃতীয় পাদে_ জেয ব্রক্মবোধক অস্পষ্ট বাক্য বিচার । চতুর্থ পাঁদে-_ অব্যক্ত, অজ! প্রভৃতি সন্দিগ্ধ পদবিচার ৷ ্‌ বৈয়াসিকণ্যায়মালা ৷ ৫। ও নমো ভগবতে বাস্থদেবায়। ও নমো গুরবে পরহ্মসুত্র ও শ্রীমদ্ভাগব্ত ৰা সার্বজনীন সুখসাধ্য সাধন-শাঞ্ররূপে শ্রীমদ্ভাগবভ সাহায্যে ্রদ্ধসূত্রালোচন। প্রথম অধিকল্পপ। প্রথম স্ুল্র। ১। জিজ্ঞাসাধিকরণ । ১) ভিত্তি ঃ ভিত্ত--(১) যো বৈ ভূমা তৎ সুখম্‌ নাল্সে স্থখমন্তি । ভূমৈব সখম্‌। ভূমাত্বেৰ বিজিজ্ঞাসিতব্য ৷ ছান্দোগ্য ৭২৩১ _-ভূমাই স্থখ, অল্পে সুখ নাই, ভূমাই স্থখ, অতএব ভূমাকে জানা উচিত ৷ ছাঃ ৭২৩১ (২) আত্মা বা অরে দ্রগব্য: শ্রোতব্যো মন্তখ্যো নিদিধ্যাসিতব্যে! মৈত্েয্যান্মনে! না অরে দর্শনেন শ্রবণেন মত্যা বিজ্ঞানেনেদং সৰ্ব্বং বিদতম্‌। বুহদারণ্যক ২1৪1৫ __অয়ি মৈত্ৰেয়! আত্মাই দ্রষ্টব্য, আোতব্য, অবিচ্ছিন্ন তৈলধারার হ্যায় ধ্যানের যোগ্য। আত্মার দর্শনে, শ্রবণে, মননে ও ধ্যানের দ্বারা লব্ধ অপরোক্ষ জ্ঞানে, পরিদৃশ্ঠমান জগৎ ও তদস্তর্গত যত কিছু জানা হইয়া যায় । বৃহঃ ২1৪।৫ (৩) পরীক্ষ্য লোকান্‌ কর্ম্মচিতান্‌ ব্রা্গণো নির্বেদমায়ান্নান্তযকৃত: কৃতেন | তদ্‌ বিজ্ঞানার্থং স গুরুমেবাভিগচ্ছে সমিৎপানিঃ শ্রোত্রিয়ং ্রহ্মনিষ্ঠমূ ॥ (৪) তঠম্মৈ স বিদ্ধান্‌ উপসন্নায় সম্যক্‌,প্রশাস্তচিত্তায় শমান্বিতায়। যেনাক্ষরং পুরুষং বেদ সত্যং, প্রোবাচ তাং ততো ব্রহ্মরিদ্যাম্‌ ॥ | মুণ্ডক ১২।১২--১৩ _ ব্রাঙ্গণ কর্মাজিত লোকসকল পরীক্ষা করিয়া, পরীক্ষা দ্বারা অনিত্য, অসার বলিয়া অবধারণ পূর্বক, জগতে অকৃত (নিত্য) কোনও বস্তু নাই, এবং কৃত ব| অনিত্য বস্তুতে আমার কোনও প্রয়োজন নাই ( অথবা উৎপাগ্য-সংকার্ধ্য- ৩২ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত বিকার্ধ্য-আপ্য এই চতুব্বিধ কর্ম দ্বারা লভ্য, যাহা কিছু, সমুদায় অনিত্য, স্থতরাং কর্ম দ্বারা নিত্য বস্তু লাভ হয় না) বুঝিয়| বৈরাগ্যবান হইবার পর, গুরু সেবায়, প্রয়োজন হইলে সর্ববিধ, এমন কি নীচ কর্ম করিতে প্রস্তত-_কার্ধ্যতঃ ইহা জানাইবার অভিপ্রায়ে, হস্তে সমিধ ভার গ্রহণ করিয়া ( অর্থাৎ জাত্যাভিমান, বংশাভিমান, শিক্ষাভিমান, ধনাভিমান প্রভৃতি সকল প্রকার" অভিমান পরিত্যাগ করতঃ) প্রকৃত সত্য ব্রহ্মবিজ্ঞানের উদ্দেশ্যে, শ্রোত্রিয় (সমগ্র শ্রতিপাঠ ও অর্থবোধ সম্পন্ন) ব্রহ্মনিষ্ট গুরুকে সর্বতোভাবে আশ্রয় করিবেন । মুণ্ডক ১২১২ । সেই ব্রহ্ষজ্ঞ গুরু সমীপাগত, শাঙ্ান্থশীলনে দণ্তাদিদোষ রহিত, বাহোক্রিয় সংযমনশীল সেই ত্রাহ্মণকে শিষ্যর্ূপে গ্রহণ করিয়া, যে বিদ্যা দ্বারা অক্ষরং অক্রেশ্তং প্রভৃতি বিশেষণ দ্বারা লক্ষিত, পরিপূর্ণ স্বরূপ, প্রত্যেকের হৃদয়পুরে অবস্থিত পরমতত্বের উপদেশ যথাযথভাবে প্রদান করিবেন, যাহাতে উক্ত ব্রাহ্মণ উপদিষ্ট উক্ত তত্বের ধারণা করিতে পারেন৷ মুণ্ডক ১২১৩ (৫) জ্ঞাত্বা দেবং সর্ব পাশাপহানিঃ ক্ষীণৈঃ ক্লেশৈর্জন্নমৃত্যু প্রহাণিঃ। তন্তা ভিধ্যানাত্ৃতীয়ং দেহভেদে বিশশৈশব্ধ্ংং কেবল আপ্তকামঃ ॥ এ শ্বেতাঃ ১।১১ __সেই দেব ( দ্যোতনগীল অর্থাৎ জ্ঞান স্বরূপ ) পরমাত্মাকে জানিলে, জ্ঞান সাধকের সমস্ত বন্ধন-পাশ অর্থাৎ বন্ধনের হেতৃভৃত অবিস্যাদি দোষ ক্ষয়-প্রাঞ্ত হয়। অবিষ্ঠাজনিত ক্লেশ ক্ষয় প্রাপ্ত হইলে, জন্ম এবং মৃত্যুও নিবৃত্ত হয়। জন্ম-মৃত্যু প্রবাহে উন্মঙ্জন ও নিমজ্জন চিরতরে বিলোপ প্রাপ্ত হয়। সেই দেবের অভিধ্যান বা অনুচিন্তনের দ্বারা, সর্বপ্রকার এশর্য্যময় তৃতীয় ভাগবত পদ লাভ হয় এবং আঞ্তকাম হুইয়।, দেহত্যাগে কৈবল্য লাভ করিয়া! থাকে। শ্বেতা ১৷১১ (৬) তদ! বিদ্বান্‌ পুণ্যপাপে বিধূয় নিরঞ্রনঃ পরমং সাম্যমুপৈতি | মুণ্ড ৩১৩ _ তখন ব্রহ্মবিদ্যাপ্রাপ্ত পুরুষ পুণ্য-পাপ পরিত্যাগ করিয়া, নির্মল হয়তঃ নিরতিশয় ব্রহ্মলাম্য লাভ করেন । মুণ্ডক ৩।১।৩ (৭) ব্ৰহ্ম বেদ ব্ৰহ্মৈব ভবতি । মুণ্ডক ৩1২1৯ _ত্রস্নজ্ঞ ব্যক্তি ব্ৰহ্মই হইয়া যান। মুণ্ডক ৩২1৯ ২) সংশয় । ২। সংশয়। ছান্দোগ্য শ্রতির ৭৷১৩।১ ও বৃহদারণ্যক শ্রুতির ২।৪।৫ মন্ত্র সুস্পষ্ট উপদেশ দিতেছেন, ভূমাকে জানা উচিত। আত্মাই দ্রষ্টব্য, শ্রোতব্য, মন্তব্য ও নিদিধ্যাসিতব্য (অবিচ্ছিন্ন ভাবে ধ্যেয় )। উক্ত শ্রুতিমন্ত্র দুটি একসঙ্গে পাঠ করিলে বুঝা যায় যে, ভূমা যে বস্ত, আত্মাও সেই বস্ত। উভয়েই আমাদের ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধিঃ ১ সঃ ৩৩ পরিদষ্ঘমান বনতজাতের-অন্তভুক্তি নহে। কিন্তু জানা উচিত, শোনা উচিত, মনন করা উচিত, অবিচ্ছিন্ন ভাবে ধ্যান করা উচিত বলায় মনে হয় যে, শ্রুতির উপদেশ সর্ব-সাধারণ মানবের পক্ষে নিরঙ্কুশ ভাবে প্রযোজ্য ৷ ইহা! কি সম্ভব? যদি তাহা হর, তাহা হইলে, যে সকল মানব দেহধারী জীব, অতি নিষ্স্তরে অবস্থিত, সম্ভবতঃ ক্রমবিবর্তনের অমোঘ নিয়ম বলে, ইতর প্রাণী হইতে সবে মাত্র মানব দেহ প্রাপ্ত হইয়াছে, এখনও প্রায় পশুর ন্যায় জীবন বাপন করিয়া থাকে, অসভ্য, উলঙ্গ, সভ্যতার ও শিক্ষার আলোক কিছুমাত্র পায় নাই, তাহা'দগের সম্বন্ধে উক্ত উপদেশের সার্থকতা কি? অথবা উপদেশ পালনের জন্য অধিকারী ভেদ বর্তমান আছে? দ্বিতীয়তঃ, আমরা প্রত্যক্ষ দেখিতে পাই যে, বিন! উদ্দেশ্তে কেহ কোনও কাজে প্রবৃত্ত হয় না। ভূমা, আত্মা বা ব্রহ্মকে দর্শন, শ্রবণ, মনন ও অবিচ্ছিন্ন ধ্যান__সমুদায় ক্রি্ধা নাপেক্ষ ত বটে। এরূপ করিবার উদ্দেশ্যই বা কি? ৩) সুত্র । ৩। এই সংশয় অপনোদনের জন্য স্থত্রকার স্থত্র করিলেন £__ অথাতো। ব্রহ্মজিজ্ঞাসা । ১১১ অথ+অতঃ+-ব্র্দ+জিজ্ঞাসা । উক্ত স্ুত্রটি, তনিগ্নে প্রদর্শিত চারিটি পদে গঠিত। উক্ত চারিটি পদের গ্রত্যেকটির পৃথক্‌ পৃথক্‌ ভাবে অর্থের অনুধাবন করিলে সংশয় তিরোহিত হইবে। 8) অথ। ৪। অথ পদের দুইটি অর্থ প্রপিদ্ব__(১) মঙ্গলাচরণ স্চক ও (২) অনন্তর । সুত্রস্থ “অথ” পদ উক্ত উভয় অর্থে ব্যবহার করা ভগবান হ্থত্রকারের অভিপ্রায় । যদিও “রহ্সত্র” গ্রন্থের উপক্রমে, উপসংহারে, প্রত্যেক অধ্যায়ে, প্রত্যেক পাদে, পরম মঙ্গলময়, মঙ্গল স্বরূপ, পরম ব্রদ্দ আলোচিত হইয়াছেন । তথাপি গ্রন্থের প্রারন্তে মঙ্গলাচরণ শিষ্টাচার সঙ্গত বলিয়! লোক দৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় বিষয়ে, “অথ” পদের প্রয়োগে উক্ত প্রয়োজন সাধন করা হইয়াছে। ৫। উহা ছাড়া উক্ত পদের “অনস্তর” অর্থ গ্রহণও অতি প্রয়োজনীয়। 'অনস্তর” বলিলে, কাহার অনস্তর-ইহা জানিবার আকাজ্ষার উদয় হয়। শিরোদেশে উদ্ধৃত মুগুক শ্রুতির ১২১২ মন্ত্র প্রথমার্দে এই আকাঙ্ষার নিবৃত্তি সাধিত হইয়াছে। উহা! স্পষ্টই বলিয়াছেন যে, কর্মলত্য লোকমকল__যথ! র্গাদি ৩ ত৪ ্রহ্ষস্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত সুখ ভোগের স্থান হইলেও--শাস্ত ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণের উপদেশে পরীক্ষা করিলে, উহার! নশ্বর, অনিত্য প্রতিপন্ন হয় এবং অনিত্য কিছুর দ্বারা নিত্য বস্তুর লাভ সম্ভব নয়, এই জ্ঞান জন্মে। দৃঢ়ভাবে ইহার প্রতীতি হইলে উক্ত পরীক্ষক ব্রাহ্মণের নির্বেদ বা বৈরাগ্য জন্মে। বৈরাগ্য অন্মিবার পর ক্র জিজ্ঞাসার বা ্রক্মবিদ্ভালাভের প্রবৃত্তি দেখা দেয়। কারণ তখন মনে স্পষ্ট ভাবে না হউক্‌, অস্পষ্ট ছায়ার ন্যায় জ্ঞান জন্মে যে ব্রদ্ধই এবং সে কারণ তাহা হইতে অভিন্ন ব্রহ্ষবিদ্ভাই একমাত্র নিত্য ও শাশ্বত বন্ত। সুতরাং শ্রুতির উপদেশ সার্বজনীন হইলেও, উহা নিরম্কুশভাবে প্রযোজ্য নহে । ৬। মুণ্ডক শ্রুতির আলোচ্য ১২1১২ মন্ত্রে প্রথমার্ধে “ত্রাহ্মণঃ” পদ ব্যবহৃত হইয়াছে। ইহাতে আপত্তি উথাপিত হইতে পারে যে, যখন দ্বিজাতিমাত্রেরই অর্থাৎ ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়-বৈশ্ত এ তিন বর্ণের পুরুষগণের বেদে অধিকার আছে, তখন শ্রুতি কেবলমাত্র “ব্রাহ্মণ” পদ ব্যবহার করিলেন কেন? ক্ষত্রিয় ও বৈশ্তগণকে বাদ দিবার কি অভিপ্রায়? এই প্রকার আপত্তির সম্ভাবনা অনুমান করিয়া ভাস্তকার ভগবান শঙ্বরা চার্ধ্য-ব্রাঙ্গণ” পদ ব্যবহারের তাৎ্পর্ধ্য ব্যাখ্যায় বলিতেছেন :_ত্রাঙ্গণঃ ব্রাহ্মণশ্চৈৰ বিশেষতোহ্ধিকার: সর্ধত্যাগেন বরহ্ধ বিগ্যায়ামিতি ব্রাহ্মণ গ্রহণম্” _শ্রুতিতে ত্রাঙ্ষণপদ- ব্যবহারের তাৎপর্য্য এই যে, “ব্রাহ্মণ” জাতিগত ভিখারী সর্বস্বত্যাগ করিয়া, তিনি ত্রদ্মবিদ্ালাভে তৎপর হইতে পারেন। ক্ষত্রিয় রাজ্যপালন, দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন, সমুদায় প্রজার যথাযোগ্য মর্ধ্যাদা ও ধনপ্রাণ রক্ষা প্রভৃতি ব্যাবহারিক হিতকর কার্ধ্যে নিযুক্ত ও তৎপর ন! হইলে, সমাজে বিশৃঙ্খলতা! ঘটিবার আশঙ্কা ও পরিণামে সমাজ ধ্বংসের সম্ভাবনা হইয়া থাকে । বৈশ্তধন উপাজ্জনে তৎপর না হইলে, ক্ষত্রিয়ের রাজ্যরক্ষা, প্রজা পালন, তাহাদের মর্ধাদা-ধন-প্রাণ রক্ষা, জনসাধারণের উপদেষ্টাগণকে বৃত্তিদান প্রভৃতি দুষ্ধর, এমনকি অসম্ভব হইব'র আশঙ্কা আপতিত হয়। উক্ত উভয় বর্ণে ব্রহ্মবিগ্যা লাভের উপযুক্ত ব্যক্তি থাকিলেও, তাহার! ব্রাহ্মণের স্যায় সর্বত্যাগী হইয়া ব্রঙ্গবিষ্ঠায় ত২পর হইয়া থাকা, সমাজের পক্ষে মঙ্গলকর নয় বলিয়া, শ্রুতি বিশেষ করিয়া ব্রাহ্মণের উক্তি করিয়াছেন । ব্রাঙ্ষাণ লে'কশিক্ষক-_সর্বন্ব ত্যাগ করিয়া লোকশিক্ষাদান তাহার ধর্ম্ম। ডভিখারীর পন্বপ্বত্যাগে সমাজের ক্ষতি নাই। বিশেষতঃ ব্রহ্ম বিদ্যালাভের পর, উহার শিক্ষা সমাজস্থ উপযুক্ত আধকারাগণের মধ্যে বিতরণ স্থকর হয়। সর্বন্ব ত্যাগ হেতু চরিত্রগৌরবও সর্কদমক্ষে আত উচ্চ ও পবিত্র আদর্শ প্রকটিত করে৷ এবং উহা! সমগ্র সমাজের নৈতিক আদর্শের মান উন্নয়নের কারণ হয়। ১ খঃ। ১ পাহ। ১ অধি। ১ স্বঃ ৩৫ ৫) পুর্বপক্ষের প্রথম আপত্তি ও তাহার সমাধান। ৭1 পূৰ্বপক্ষ বলিতেছেন £_শান্তরে ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়-হৈশ্য এই তিন বর্ণের উপযুক্ত অধিকারীর ব্রক্ব্ত্য! লাভে অধিকার আছে, বলিলে, অথচ তুমি তোমার ব্মান আলোচনার নাম দিয়াছ_“সার্্জনীন স্থখসাধ্য সাধন-শান্্র রূপে এই আলোচনা--স্থতরাং এই আলোচনাগুলিতে এবং তদনুসারে-বিচার বিতর করিতে শুদ্রও এমনকি বিধম্ীগণেরও অপ্বকার আছে। স্থতরাং তোমার আলোচনা কি শান্্রবিরোধী হইল না? ইহার উত্তরে সিদ্ধাস্তবাদী বলিতেছেন :_তোমার আপত্তি শুনিয়া বড়ই আনন্দিত হইলাম। তুমি যে মনোযোগ দিয়া আলোচন! শুনিতেছ-তাহাতে সন্দেহ নাই। এখন আমার বক্তব্য অবধান কর। শাস্ত্রে শৃদ্রগণের এবং সে কারণ অন্য ধশ্মের লোকগণের বেদাধ্যয়ন ও ব্ৰক্মবিদ্যালাভের প্রয়াসের বিরুদ্ধে নিষেধবাণী আছে বটে, তাহা তথ্কালোপযোগী ছিল, ইতিহাস তাহার সাক্ষ্য দেয়। সে সময় শূদ্রগণ অতিশয় নিম্ন স্তরের ছিল-_দেহ মাত্র মানুষের মত ছিল, কিন্তু মানসিক শক্তির বিকাশ কিছুমাত্র ছিল না ও নীতিজ্ঞান অতিশয় ক্ষীণ ছিল। আজিও অস্ট্রেলিয়ার আদিম অধিবাসী, পাপুয়া বাসীগণের ও আরও অনেক অসভ্য মানব জাতির মধ্যে, ইহার নিদর্শন দেখিতে পাওয়া যায়। বেদের বা বেদান্তের সস্ম বিষয় তাহাদের বুদ্ধির অগম্য। বেদাত্তে উপদিষ্ট ব্রক্বিদ্থ লাভ তাহাদের অসম্ভব ছিল। তখন খৃষ্ট বা মুসলমান ধর্মের অভ্যুদয় হয় নাই। পরে কাল বিপ্লবে, নিযন্তরের শূদ্রনামধারী মানবৰগণ, আর্য্য খষি, তাহাদের শিষ্য-প্রশিষ্য, ক্ষত্রিয়, বৈশ্ত প্রভৃতির সংস্পর্শে আসিয়া, তাহাদের আচরণ, ক্রিয়া কলাপ দেখিতে দেখিতে ক্রমশঃ বুদ্ধির বিকাশ ও জ্ঞানের উল্লেষ লাভ করিতে থাকে। যখন তাহারা উপযোগী বলিয়া বিবেচিত হইল, তখন সকলের প্রতি সমদর্শী খষিগণ, তাহাদের পারমাধিক কল্যাণের জন্য ব্রক্াবিগ্ঠ'র উপদেশ পুরাণ, মহাভারত, গীতা, চণ্ডী, রামায়ণ প্রভৃতির মাধ্যমে অবুসঠিত ভাবে বিতরণ করিলেন। ইহা খৃষ্ট জন্মের বহু পূর্বে সংঘটিত হইয়াছিল। যদি ইতিহাস আলোচনা কর, ইহা স্পষ্ট বুঝিতে পারিবে। তারএর বৌনবধশ্খের অভ্যুদয় । উহ! ত হিন্দুধৰ্ম হইতে পৃথক কিছু নহে। উহা উনি উহাতে কাল বিপ্লবে অনেক গ্রানি প্রবেশ কারয়া ইল, কাৰ্য্য সমাধানের জন্য আবিভতি হই", ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ৷ একারণ ভগবান শঙ্করাচার্ধ্য বিশেষ ৬১ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত উহার উপনিষদিক ভিত্তি অটুট রাখিয়া, আগন্তক মালিন্য দূর করিলেন ও বৈদান্তিক হিন্দধন্ন প্রচার করিলেন । খৃষ্টধৰ্শ বৌদ্ধর্ম্মের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। সেণ্টজন, যিনি খৃষ্টের দীক্ষাগুরু তিনি একজন বৌদ্ধ শ্রষণ ছিলেন। দীক্ষার পর খৃষ্ট ভারতবর্ষে আসপিয়া-হিন্দুগুরুর নিকট ও পরে হিমালয়ে তিব্বতে গিয়া বৌদ্ধ শ্রমণের নিকট শিক্ষালাভ করেন। (দেখ গায়ত্রী রহস্ত পৃঃ-৪৭ ) মুললঘান ধৰ্ম্ম যে খৃষ্ট ধর্ণোর উপর প্রতিষ্ঠিত, তাহাতে সন্দেহ নাই । এখন এই উভয় ধর্ম্মের মানবগণই পৃথিবী ব্যাপিয়া অবস্থান করিতেছে। | উপরের সংক্ষেপ আলোচন! হইতে বুঝা গেল যে, ভারতের সনাতন ধর্ম অন্তান্ত সকল ধশ্মের মাতৃগ্থানীয়া। বেদান্তের উপদেশ খৃষ্ট ও মুসলমান ধর্শে- কোথাও প্রত্যক্ষভাবে, কোথাও বা পরোক্ষভাবে অনুশ্্যত। সে কারণ উক্ত উভয় ধর্শের মধ্যে বেদান্তের উপদেশে গঠিত উন্নত স্তরের সাধকগণের সংখ্যা বিরল নহে। স্থতরাং পূর্বে যে কারণে সমদশাঁ ঝধিগণ, বেদের সম্মান বজায় রাখিয়া পুরাণ, গীত! প্রভৃতির মাধ্যমে ক্রহ্গবি্ার উপদেশ আপামর সকলের মধ্যে প্রচার করিয্নাছিলেন, পে কারণ তুলাভাবে এখন বর্তমান। অতএব আমার এ আলোচনার নাম সার্বজনীন বলায় কি দোষ হইয়াছে! মুগুক শ্রুতি আগেই পরা ও অপর! বিদ্যার পরিচয়ে বলিয়াছেন__ ব্র্ষব্্যাই পরশ! । চারিবেদ, তাহাদের অঙ্গ, উপাদ সুতরাং বার্তা বা জীবিকোপায়ের : 1--এমুধায় অপরা বি্য'র অন্তভুক্তি। উভয়ের সাধনোপায় পৃথক । নির্বেদ, বেয়া, তা!গই পরাবিদ্ঠ/লাভের অপরিহার্য অঙ্গ । সমাজের তিন বর্ণের সকল এ/ক্তি যদি অর্ধ ত্যাগ মন্ত্রে দীক্ষিত হইয়া, পরাবি্যা অজ্জনে লাগিয়া! যায়, তাহা হইলে সমজের স্থায়িত্ব অসম্ভব হইয়া পড়ে। এ কারণ শ্রুতি সর্ধত্যাগী ব্রাহ্মণের পক্ষে উঠার বধান করিয়াছেন | ৮| উক্ত মুওক শ্রুতির ১২১২ মন্ত্রের প্রথগার্ধ সম্বন্ধে ভাগবত কি বলিতেছেন, দেখা যাটকৃ। ভাগবত বলিতেছেন £-- আগ্ন্তবন্ত এবৈষাং লোকাঃ কর্মবিনির্ষ্িতাঃ হুঃখোদর্কান্তমো নিষ্টাঃ ক্ষুদ্রানন্দাঃ শুচালিতাঃ। ১১1১81১০ এই সকল কম্মী পুরুষের কর্াঠরণ দ্বারা প্রাপ্য লোক সকল, অনিত্য, ছখেমিশ্রিত, মোহময়, ক্ষুদ্র, মন্দ ও শোক পরিব্যাপ্ত । ১১1১৪।১ কর্মপাং পরিণামিতাদা বিরিঞ্চ্াদমঙ্গলম্‌ । বিপশ্চিনশ্বরং পশ্যেদদৃষ্টমপি দৃষ্টবৎ ৷ ১১।১৯.১৭ ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ সুঃ কর্ম্মমাত্রের পরিণাম অব্গম্তাবী ৩৭ a বলিয়া দৃষ্ট কর্শ্মের ন্যায়, ব্র্মলোক পধন্ত অদৃষ্ট কর্মফল ও ছুংখকপ, নশ্বর বিবেচনা করিবে। ১১।১৯।১৭ দৃ্ট কর্ণ, ভূমি কর্ষণ, বীজ বপন প্রভৃতি ও তাহার ফল ভূমি র ফল ভূমি হইতে উৎপন্ন কলশশ্যাদি । উহার! যেমন নশ্বর প্রত্যক্ষ দৃষ্ট হয়, সেইরূপ যজ্ঞ, ইষ্ট, পূর্ত, দানাদি কর্ণের অনু ফলও নশ্বর । ৯। সীখাংসকগণ এই অদৃষ্ট ফলকে “অপূর্ব” আখ্যার আখ্যায়িত করেন। তাহাদের মতে এই “অপূর্ব” যজ্ঞাদি আচরণক্ারীর সঙ্গে সঙ্গে ইহলোক হইতে লোকান্তরে গমশ করিয়া শ্বর্গাদি লোক সকলে স্থখভোগের বিধান করে। ভাগবত বলিতেছেন যে, মীমাংসকগণের উক্ত মত স্বীকার করিলে, সব্গাদিতে উক্ত ভোগ যে নশ্বর, তাহাতে সন্দেহ নাই। শ্রেয়: কামীর উহা নশ্বর বলিয়া বুঝিয়া সাবধান হওয়া উচিত। এবং লোকং পরং বিদ্যান্‌ নশ্বরং কর্ম্মনির্ন্মিতম্‌। সতুল্যা তিশয়ধ্বংসং যথা মণ্ডলবত্তিনাম্‌ ৷ ভাঁঃ ১১৷৩৷২১ তম্মাদ্‌ গুরুং প্রপচ্ভেত জিজ্ঞান্থঃ শ্রেয় উত্তমম্‌। শান্দে পরে চ নিষ্ণাতং ত্রন্মগপশমাশ্রয়ম্‌॥ ভাঃ ১১৩২২ কর্মজন্য এই সমুদায় লোক নশ্বর বলিয়া জানিবে। এই লোক সকল উপভোগের সময়ও দুঃখজনক, কারণ খণমগুলবন্তী রাজাদিগের যেমন তুলোর প্রতি স্পর্ধা, অতিশয়ের (অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত উচ্চন্তরের ) প্রতি অন্বয়া এবং সর্ববদ] ধ্বংসের (অর্থাৎ উক্ত খও-মওলের রাজ্য হইতে বিচ্যুতির ) ভয় থাকে। সেইরূপ এ সকল লোক ভোগিগণের মধ্যে তুলোর প্রতি স্পর্ধা, অপেক্ষাকৃত উচ্চন্তরের লোক ভোগিগণের প্রতি অস্থুয়া এবং নিজেদের উক্ত লোক সকল হইতে পতনের ভয় সর্বদা! বর্তমান থাকে ॥ ভাঃ ১১।৩।২১ অতএব যে ব্যক্তি উত্তম শ্রেয়; অর্থাৎ নিত্য শাশ্বত বস্তু বা মোক্ষলাভে অভিলাষ করিবেন, তিনি বেদাখ্য শব্দ-ব্রহ্মের রহস্ত অর্থ ব্যাখ্যানে নিপুণ এবং পরক্রহ্ম ভগবানে পরিনিষিত ও তাহার অপরোক্ষান্ুভূতি হেতু ক্রোধ- লোভাদ্দির অবশীভূত গুরুদেবের আশ্রয় গ্রহণ করিবেন । ১১৩২২ লক্ষ্য করিম হইবে যে, শ্রীমদ্‌ ভাগবতের উদ্ধৃত১১/৩২১ ও ১১/৩২২ শ্লোকদয়ে শিরোদেশে উদ্ধৃত মুগকশুতির ১1২।১২ মন্ত্রের অর্থ স্পষ্টভাবে প্রকাশ করিতেছে। ১০। শ্রুতিমন্ত্রের যে আলোচনা, উপরে করা হইয়াছে, তাহা হইতে আমরা বুবিয়াছি যে, উক্ত উপদেশ অনুপারে, ব্রহ্ম বা ভূমা বা আত্ম-তত্ব SE ব্ৰহ্মদ্ূত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত জিজ্ঞাসার পূর্বে জিজ্ঞান্থর প্রাকৃকালীন কয়েকটি অপরিহাধ্য অঙ্গ সাধন একান্ত প্রয়োজন। ভাগবতও ইহা উদ্ধৃত কয়েকটি গ্লোকে সুস্পষ্ট ভাবে বুঝাইলেন। ভাগবতের উক্ত গ্রোকে কশ্মপদ ব্যাপক ভাবে গ্রহণ করায়, আপত্তি হইতে পারে যে, যখন ব্রহ্গবিষ্ভালাভে কর্স্মাচরণের অত্যধিক প্রয়োজনীয়তা নাই, তখন বেদের কর্মকাণ্ডে যজ্ঞাদি কম্মানুষ্ঠটানের বিধান কেন? এবং শাস্ত্রে প্রায়শ্চিত্ত চান্্রায়নাদির বিধি কেন ? ইহার বিস্তৃত আলোচনার স্থল ইহা নহে। পরে ইহ! করা যাইবে। মোটামুটি এককথায় বলিতে পারা যায় যে, যজ্ঞাদি কণ্মান্ুঠানের বিধান চিত্ত- ভদ্ধির জন্ত। পাপ স্থালনের জন্য প্রায়শ্চ্ত-চান্দ্রায়নের-বিধানের পশ্চাতে বৈজ্ঞানিক কারণ বর্তমান রহিষ্াছে। সংক্ষেপে বলা যায় যে, যাহা কর্ম-হইতে উৎপন্ন, বর্শদ্বারা তাহার আত্যন্তিক ধ্বংস না হউক্‌, অনেকটা! বিলোপ সাধিত হইতে পারে। যেমন কোন ধোৌত বস্তে কালী পড়িলে, উহাতে লেবুর রস বা অন্ত কোনও অম্ন পদার্থ মিশাইয়া পরে নির্মল জলে ধৌত করিলে, কালির দাগের প্রগাঢতা অনেক কম হয় বটে, কিন্তু সম্পূর্ণরূপে নিশ্মূক্ত হর না। বস্ত্র স্থতার মধ্যে কালির সংস্পর্শে যে রাসায়নিক পরিবর্তন সংঘটিত হয়, তাহা অল্নবিস্তর থাকিয়া যাইবেই। সেইরূপ প্রায়শ্চিত্তাদির দ্বারা পাপাচরণের গাঢ় কালিমা কতকটা! নিরাকৃত হইলেও, উহা অন্তরে যে সংঘ্কার জন্মাইবার কারণ হয়, তাহা সহজে লোপ পায় না । এ সম্বন্ধে ভাগবত বলিতেছেন £__ কৰ্ম্মণ! কর্ম্মনিহারো ন আত্যন্তিক ইয্যতে ৷ অবিদ্বদধিকারিত্বাৎ প্রায়শ্চিত্তং বিমর্শনম্‌ ॥ ভাঃ ৬!১!১০ কর্মমাত্রই অবিদ্যার অন্তর্ভুক্ত । প্রায়শ্চি্তচান্দরায়ণাদিও কর্ম্ম। স্থতরাং উহারাও অবিদ্যার অন্তর্ভুক্ত । উভয়েই অবিদ্যাভুক্ত হওয়ায় কম্মের দ্বারা কর্ম্মের আত্যন্তিক ধ্বংস হয় না। জ্ঞানই কর্শনাশের মুখ্য প্রায়শ্চিত্ত । ভাগঃ ৩৷১৷১ গীতায় ভগবানও এই কথাই বলিয়াছেন :__ অপি চেদসি পাপেভ্যঃ সর্ব্বেভ্যঃ পাপকৃত্তমঃ সৰ্ব্বং জ্ঞানগ্রবেনৈব বৃজিনং সন্তরিষাসি ॥ গীঃ ৪1৩৬ যখৈধাংসি সমিদ্ধোহন্নিৰ্ভস্মসাৎ কুরুতেইর্জুন। জ্ঞানাগ্নিঃ সর্ব্বকর্ম্মাণি ভন্মসাৎ কুরুতে তথা ॥ গীঃ ৪1৩৭ ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্ণঃ ৩৪ হে অন্ন! যদি তুমি পাপী সকল হইতেও অত্যধিক পাপাচরণকারী হও, তথাপি জ্ঞানপোতের সাহায্যে পাপ সাগর পার হইতে পারিবে। যেমন প্ৰদীপ্ত অগ্নি কাষ্ঠরাশি ভগ্ম করে, সেইরূপ আত্মজ্ঞানরূপ অগ্নি সকল কর্ণই ভম্মঘাৎ করিতে পারে। ৪।৩৬-৩৭। অতএব প্রতিপাদিত হইল বৈ কারি আত্যন্তিক ধ্বংস হয় না । কৰ্ম্মজনিত স্ব্গাদি লোক নশ্বর ও কিনা তা তজ্ঞান অন্য কথায় ত্রদ্মজদ্ঞাসাই নিংশ্রে়স লাভের একমাত্র উপায়। তবে মনে রাখা প্রয়োজন যে মুগুক শ্রুতির ১২1১২ মন্থে ও ভাগবতের উদ্ধত লোক সকলে এবং গীতার উদ্ধৃত ৪।৩৬-৩৭ গ্লোকে কথিত কর্দ-কাম্য কর্ম, উভয়েই বন্ধন শক্তি। উহা নিষ্ধাম কণ্ম নহে। সে সম্বন্ধে আলোচনা পরে বরা যাইবে । ৫) জন্তঃ। ১১। “অতঃ”_এই কারণে বা এই হেতুতে । স্ত্রের প্রথম “অথ” পদের সমালোচনায় এতদূরে আসিয়াছি। এই আলোচনাধ “অতঃ” পদ সম্বন্ধে বলিবার অনেক কথা বলা হইয়া গিয়াছে । তাহার পুমরুল্লেধ যথাসম্ভব পরিত্যাগ করিয়া, যাহা বলিবার তাহা বলিতে অগ্রগর হইতেছি। আলোচ্য প্রথম স্থত্রের পুতিপাগ্চ “ব্র্দজিজ্ঞাসা”। ব্রহ্মপদের ব্যুৎপত্তি লব্ধ অর্থ__“বুহত্বাৎ বৃংহ্ণত্থাদ্‌ ব্র্ম”-__বৃহন্তম বলিয়া ও সংবদ্ধনকারী বলিয়া ব্র্ধ- পদের তাৎপর্য্য। যত বৃহত আমরা কল্পনা করিতে পারি_-কি জ্ঞানে, শক্তিতে, নামে, রূপে, এখর্ধ্যে, বীর্যো, পরিমাণে, মাধুর্য, সৌনর্্য_সর্ববিষয়ে বৃহত্তম বলিয়া তিনি এক্রঙ্গ” নামে পণ্ডিত সমাজে পুজা । এই একই কারণে, তিনি তৈত্তিরীয় শ্রুতির ২।১ মন্ত্রে--“সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্ধ+__“অনন্ত” নামে ও ছান্দোগ্য শ্রুতির শিরোদেশে উদ্ধত ৭২৩1১ মন্ত্রে “ভূমা” নামে উক্ত হইয়াছেন । “অত» ধাতু হইতে উৎপন্ন_বৃহদারণ্যক শ্রুতির শিরোদেশে উদ্ধৃত ২৪1৫ মন্ত্র কথিত “আত্মা” ও এক পর্যায়ে ভুক্ত! বৃহত্বের দিক হইতে ব্রদ্গের কিঞ্চিৎ পরিচয় পাইলাম । ১২। অন্তপক্ষে, তিনি, নিজ সংকল্প হইতে অভিব্যক্ত জীব ও জগৎকে সর্ধবিষয়ে সমৃদ্ধ করেন, বিশেষতঃ উপাসনাকারিগণকে নিজের শাশ্বত পদ প্রদান করেন । এমন কি, উপযুক্ত অধিকারী ভক্তকে আত্মদান পর্যাস্ত করিতে কুষ্ঠিত হন না_-একারণ তিনি ব্রহ্ম নামে পুজ্য। ব্রত আলোচনায় যত অগ্রদর হওয়া যাইবে, ইহ! ততই বোধগম্য হইবে। তিনিই একমাত্র তত্ব ৪০ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত বলিয়া ভিন্ন ভিন্ন উপাসকগণ নিজ নিজ উপাসনার ভাবাঙ্ণুসারে কেহ পরব্র্ম, কেহ পরমাত্মা, কেহ পরমপুরুষ, কেহ ভগবান, কেহ কেহ বা রাম, কৃষ্ণ, শিব, দুর্গা, কালী প্রভৃতি নামে নিজ নিজ ইষ্টদেবরূপে আরাধনা করিয়া থাকেন । “তত্ব পদের অর্থ-তৎএর ভাব। ‘তৎ’ শব্দ ব্রঙ্গেরই নির্দেশক__ইহা ভগবান গীতার ১৭।২৩ শ্লোকে স্পষ্টই বলিয়াছেন । স্থতরাং কোন কিছুর তত্ব অনুসন্ধান করিতে হইলে, উহা! যতক্ষণ ন! ব্ৰহ্ষে পর্যযবপান হয়, ততক্ষণ পর্য্যন্ত উহার বিরাম নাই। ১৩। ইহা হইতে সিদ্ধান্ত স্বতঃই আসিয়া পড়ে যে, “ক্রক্মজিজ্ঞাসা” পদের অর্থ শুধু ব্রঙ্মের বা আত্মার প্রত্যক্ষভাবে শ্বর্ূপান্থভূতির ইচ্ছা মাত্র নহে, প্রপঞ্চ জগতের ও উহার অন্তভুক্তি দৃশ্ঠমান_-অপরিদৃষ্ঠমান সমুদায়ের মূল তত্বান- ধাবনের ইচ্ছা । ইহা হইতে অনুসিদ্ধান্ত আপনিই প্রকাশ পায় যে, ব্রহ্ম, বিদ্যা অধিগত করিতে পারিলে, সমুদায় জানা হইয়া যায়, সমুদায়ের তত্ব প্রত্যক্ষভাবে প্রকটিত হইয়া পড়ে। ইহাই ছান্দোগ্য শ্রুতির ৬১ ও মুণ্ডক শ্রুতির ১১ কথিত এক বিজ্ঞানে সর্ব বিজ্ঞান । পরে ইহার সহিত সাক্ষাৎকার হইবে। কিন্তু ইহা বড়ই দুরূহ ব্যাপার ; কঠ শ্রুতি ১1২1৭ মন্ত্রে বলিতেছেন :__ শ্রবণায়াপি বহুভির্ষে ন লভ্যঃ, শৃপ্নস্তোহপি বহবে! যং ন বিদ্যুঃ। আশ্চর্য্য! বক্তা কুশলোহস্ত লব্ধা আশ্চর্ষো জ্ঞাতা কুশলাহুশিষ্টঃ ॥ কঠ ১1২৭ অবণমাত্রের জন্যও তিনি বহুলোকের লভ্য নহেন-__ অর্থাৎ শ্রবগেচ্ছু বহু ব্যক্তি তাহার বিষয় শুনিবার স্থযোগ পান না। শুনিলেও বহু লোক তাহাকে জানিতে পারেন না অর্থাৎ অবণের ফল আত্মজ্ঞান লাভ সকলের পক্ষে সুলভ নয়। ইহার বক্তা বা উপদেই! আশ্চর্য্য এবং ষে ব্যক্তি তাহাকে লাভ করেন, তিনিও আশ্চ্য্য। অধিক কি বলিব, তাহার তত্ব বুঝাইতে পারেন এমন আচার্ধ্য ও আশ্চর্য্য (দুল) এবং তদ্বিষয়ক জ্ঞান লাভ করে, এরূপ শ্রোতা বা শিষাও আশ্চৰ্য্য বা দুল'ভ। কঠ ১1২।৭ সুতরাং যিনি উপদেশ দিবেন, তাহার তবালোকে অপরের অজ্ঞানাম্মকার দুর করিবার যেমন শক্তি থাকা! প্রয়োজন, সেইরূপ যিনি উপদেশ গ্রহণ করিবেন তাহার উহ! ধারণা করিয়া আত্মস্থ করিবার শক্তি থাকা তুল্যভাবে প্রয়োজনীয় । অন্ত কথার জিজ্ঞানুর উপযুক্ত অধিকার না থাকিলে ব্রহ্ষজিজ্ঞাসার ইচ্ছা গভীর- ভাবে হয় না। শুধু মুখে প্রকাশ করিয়া নিজের বাহাদুরি লাভের প্রয়াসমাত্রে পরিণত হয় । ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থুঃ ৪১ ১৪। শিরোদেশে উদ্ধৃত মুণ্ডক শ্রুতির ১২১২ ও ১1২১৩ মন্ত্র অতি বিশদ্ভাবে অধিকারী নির্দেশ করিতেছেন, উক্ত মন্ত্রদয়ের সরল বাঙ্গলা! অর্থগ্রহণে আমরা জানিতে পারি যে, ব্রহ্ম জিজ্ঞাসায় অগ্রসর হইবার পূর্বে- প্রাককালীন অপরিহার্ধ্য কয়েকটি প্রয়োজন সাধন করা অতি আবশ্যক। স্থত্রে ব্যবহৃত “অতঃ, পদের দ্বার! সেই প্রয়োজন কয়টির প্রতি লক্ষ্য কর! হইয়াছে। সেই গুলিই ত্রক্ষ- জিজ্ঞাসার ইচ্ছা জাগরণের প্রাকৃকালীন কারণ বা হেতু ' সেগুলি নীচে লিখিত হহল £-- (ক) কর্শলভ্য লোক সকলের পরীক্ষা-শাস্ সাহায্যে ও অভিজ্ঞ ব্যক্তির উপদেশান্থপারে করিতে হয়। খে) উক্ত পরীক্ষার ফলে, কর্ম্মমাত্রই অনিত্য এবং অনিত্য কর্দের দ্বার! নিত্য বস্তু লাভ অপন্তব,এই জ্ঞান জন্মে । (গ) এই জ্ঞান জন্মিবার সঙ্গে সঙ্গে, ব্যাবহারিক প্রপঞ্চ জগতে, ইন্দ্রিয় দ্বারা যাহা কিছু প্রতীতি গোচর হয়, সমুদায় নশ্বর বিষয়ে নির্ধেদ বা সমুদায়ে বৈরাগ্য ভাব উৎপন্ন হইয়া! থাকে। (ঘ) সমুদায়ে বৈরাগ্যভাব উদয় হইলে, সর্বপ্রকার অভিমান পরিত্যাগ করিয়া, শ্রোত্রিয়, ব্রক্মনিষ্ঠ গুরুর পদযুগে আশ্রয়. লওয়| প্রয়োজন । (ও) ব্ৰহ্মঙ্ঞ গুরু, সমীপাগত উক্ত বৈরাগ্যবান ব্যক্তিকে (তখন শিষ্য ) পরীক্ষা করিয়া যদি জানিতে পারেন, যে () উক্ত শিষ্য সরলান্তঃকরণে ব্রহ্মবিদ্যা শিক্ষাভিলাষে আসিয়াছেন, মনে কাপটা, আত্মস্তরিতা, লোকের চক্ষে মিথ্য! বিশিষ্টতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নাই, (ii) শান্জাদি অনুশীলনে এবং পূর্ব্বোক্ত পরীক্ষায় নির্বেদ প্রাপ্ত ও দস্ত- দর্পাদি দে'ষ বহিত, (111) বাহোন্দিয় সংযমনশীল-সেকারণ ক্রোধ, দ্বেষ, অস্থয়াদি বজ্জিত, তখনই তিনি তাঁকে শিশ্যরূপে গ্রহণ করিয়া ত্রহ্মবিদ্যোপদেশ দিবেন । উক্ত শিষ্যকে মুণ্ডক ১২।১২ শ্রতিমন্ত্র “ব্রাহ্মণ” আখ্যায় আখ্যায়িত করিয়াছেন অর্থাৎ তিনি ব্ৰহ্মব্ষ্যালাভের জন্য সর্ধস্বত্যাগ করিতে প্রস্তুত হইয়া গুরু সমীপে আগত ' হইয়াছেন বুঝিতে হইবে। শুধু জাতিগত ব্ৰাহ্মণ হইলে চলিবে না। ইহা বুঝাইবার জন্য ছান্দোগ্য শ্রতির ৪1৪ প্রপাঠকে জাবাল সত্যকামের উপাখ্যান কথিত হইয়াছে । উক্ত উপাখ্যান অন্ুসারে-সত্যকাম গুরুর প্রশ্নে নিজের গোত্র পরিচয় দিতে অসমর্থ হওয়ায়, স্বীয় মাতার উক্তি গুরুচরণে অসঙ্কোচে নিবেদন: করা হেতু, গুরু তাহার সত্য কথায় প্রীত হইয়া শিষ্যত্বে গ্রহণ করিয়াছিলেন । ৪২ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত ১৫। যাহা হউক্‌, অবান্তর কথা ছাড়িয়া আলোচ্য বিষয়ে অবতরণ করা যাউক্‌। যেমন ঘট প্রস্তুত করিতে হইলে, কারণ স্বরূপ (১) মৃত্তিকা, (২) জল, (৩) কুলাল চক্র, (৪) দণ্ড, (৫) কুম্তকার, (৬) কুস্তকারের দক্ষতা, (৭) কুন্তকারের ইচ্ছা প্রভৃতি সমুদায়ের সমবেত প্রয়োগে ঘট নিম্মাণ কারা সমাধা হয়, সেইরূপ ব্রহ্ষবিদ্ভালাভ করিতে হইলে, উপরে জিত (ক) হইতে (77) পর্যন্ত সমুদায় কারণ ব্যাপারের বিনিয়োগ সংসাধিত হইলে, গুরুর কৃপায় ব্রহ্নবিদ্ভালাভ হইয়া থাকে । স্থতরাং ব্রহ্গবিদ্ভা লাভ করিতে হইলে, অন্য কথায় ব্রদ্মজিজ্ঞান্থ হইতে হইলে, নিজেকে উপযুক্ত অধিকারী হইতে হইবে, ইহা! বুঝা গেল। অতএব উপরে লিখিত সংশয়ের প্রথম অংশের সমাধান হইল-_অর্থাৎ ব্রহ্ম বিষ্ঠা-মানবদেহধারী জীবমাত্রের জন্য অভিপ্রেত হইলেও, নিরস্কুণভাবে অনধিকারীকে, উহার উপদেশ দেওয়া বিধেয় নহে । উহাতে কল্যাণ অপেক্ষা অকল্যাণের সম্ভাবনা অতি বেশী। _ আরও বুঝা গেল যে, উপযুক্ত অধিকারী না হইলে ব্হ্মব্ছ্যার উপদেশ ফলপ্রদ হয়না। ৬) পুর্ব্বপক্ষের দ্বিতীয় আপত্তি ও তাহার সমাধান ৷ ১৬। পূর্ববপক্ষ আপত্তি করিতেছেন । উপরের আলোচনায়, শ্রুতিমন্ত্রের বলে, ত্রহ্মবিষ্ঠা লাভের জন্য গুরুচরণ আশ্রয়-অপরিহার্ধ বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছে । গুরু ত শাস্ত্রমতই উপদেশ দান করেন । আজকাল ব্রহ্মত্র গুরু যে অতি দুল্রাপ্য, তাহা বল! বাহুল্য । শাস্জ্ঞ পণ্ডিতও ছুল'ভ। অন্য পক্ষে, মুদ্রাযন্ত্রের কল্যাণে সমুদায় শাস্তগ্রন্থ, ভাম্ত-টাকা-টিগ্লনী, সমেত-_সহজপ্রাপ্য হইয়াছে । এখনও কি গুরুর আশ্রয় প্রয়োজন? প্রাচীনকালে শাত্ত সহজলভ্য ছিল না। শান্তর ও তাহার রহস্তজ্ঞান গুরুর মনে নিবদ্ধ ছিল, সুতরাং তখন গুরুকরণের প্রয়োজনীয়তা বুঝিতে পারি। কিন্ত বর্তমান পরস্থিতিতে মনে হয়, উহা অপরিহাধ্য নহে। ৯৭। ইহার উত্তরে সিদ্ধান্তবাঁদী বলিতেছেন_এ সম্বন্ধে তোমার ছান্দোগ্য শ্রুতির সপ্তম অধ্যায়ে বিস্তারিতভাবে কথিত “ভূমা” বিছ্যাপ্রসঙ্গে, নারদ-সন+রুমার সংবাদে মনোযোগ আকর্ষণ করি। নারদ ত সমুদায় শাস্ত্রে বুাৎপন্ন ছিলেন, অথচ ব্রদ্মবন্থালাভ করিতে পারেন নাই। এ কারণ তিনি ্রহ্ষজ্, সনৎকুমারের শিষ্যত্ব গ্রহণ করিবার পর, তাহার নিকট হইতে ব্রহ্ষবিদ্যার উপদেশ গ্রহণ করতঃ ব্হষজ্ঞ হইয়া ধন্য হইয়াছিলেন। ১৮ । তোমার উত্থাপিত আপত্তির সম্ভাবনা কল্পনা করিয়া শ্রীমচ্ছস্করাচাধ) রি ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ 3৩ শিরোদেশে উদ্ধৃত মুওকশ্রুতির ১1২১২ মন্ত্রের ভাসে বলিতেছেন :_“শাস্তজ্ঞেহপি স্বাতশ্রোণ ব্র্ষজ্ঞানন্বেষণং ন কুর্ধযাদিত্যেতৎ *গুরুমেব ইতি অবধারণ ফলমূ।” অর্থাৎ ১২১২ মন্ত্রে গুরুমেব, পদ আছে, উক্ত পদে ‘এব’ ব্যবহারের তাৎপর্ধ্য অবধারণ--গুরুকেই”__শান্তরজ্ঞ হইলেও শ্বতন্রভাবে ব্র্গবিদ্যা অন্বেষণ বিধেয় নহে। গীতায়ও শ্রীভগবান্‌ বলিতেছেন £__ তদ্‌ বিদ্ধি প্রণিপাতেন পরি প্রশ্নেন সেবয়া । উপদেক্ষ্যন্তি তে জ্ঞানং জ্ঞানিনস্তত্বদর্শিনঃ ॥ গীঃ ৪৩৪ প্রণিপাত, পরিপ্রশ্ন ও সেবার দ্বারা পরিতৃষ্ট তহ্দর্শী জ্ঞানিগণ তোমাকে উতজ্ঞান ( ব্ৰদমজ্ঞান ) উপদেশ দিবেন । গীঃ ৪1৩৪ বল! বাহুল্য এই তত্বদশী জ্ঞানীই গুরু। ১৯। ব্রচ্ধবিদ্যা-গুরুর নিকট হইতেই লাভ করিবার বিধান কেন, শান্ত জ্ঞানে লভ্য নহে__এ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচন! ১।১।৩ প্রসঙ্গে করা যাইবে । এখানে তাহাতে প্রবেশ ক'রব না। যথাকালে উহা বুঝিতে পারিবে। এখানে এইমাত্র শুনিয়া রাখ বে, ব্র্ধবিদ্যা বা বরহধজ্ঞন লাভ-প্রক্ৃতপক্ষে নিজের অন্তরে পরব্রঙ্গের-অপরোক্ষান্তভূ'ত প্রাপ্তি। ইহা অনুভূতির ব্যাপার, ভাষায় প্রকাশের ব্যাপার নহে। অথবা সমুদায় শান্তে সর্ধভ্ঞ হইলে ইহা লাভ করা যায় না। গুরু প্রথমে শিশ্তকে ভাষায় যতদূর সম্ভব, বাচনিক উপদেশ দেন, যখন তিনি দেখেন যে, শিষ্য উপদেশ মত অনুষ্টান যথাযথ করিয়া, উচ্চতর স্তরে আরোহণ করিবার উপযুক্ত হইয়াছে, তখন তিনি নিজে ক্রক্মজ্ঞ বলিয়া, স্বীয় বরহ্ান্ুভৃতি শিল্তের অন্তরে সংক্রামিত করিয়া দেন। এই সংক্রমণের জন্য ভাষার প্রয়োজন হয় না__অন্তরে অন্তরে নীরবে অথচ অতিশয় কার্ধ্যকারীভাবে, অনুভূতির আদান প্রদান চলে। ভগবান শঙ্বরাচারধ্য তাহার কৃত “দক্ষিণা ৃত্তি” গুরুত্তবে ইহার হুম্পষ্ট পরিচয় দিয়াছেন £__ গুরোস্ত মৌনব্যাখ্যানং শিশ্তান্ুচ্চিন্নসংশয়াঃ ॥ কোন কঠিন সংশয় হৃদয়ে পোষণ করিয়া, উহা! সমাধানের জন্য শিষ্য গুরুচরণে উপাস্থত হইয়া, নীরবে তাঁহার নিকটে বসিয়! থাকিলে; নীরব গুরু বাক্যমাত্র উচ্চারণ না করিয়া-মৌনব্যাখ্যানের” দ্বারা তাহার সংশয় অপনোদন করেন । স্থতরাঁং গুরুকরণ-অপরিহার্ধ/। ২০। এখন প্রকৃত “অধিকারী সম্বন্ধে ভাগবত কি বলিতেছেন, দেখা যাউক্‌। কর্মলভ্য লোক সকলের পরীক্ষার ছারা, উহারা নশ্বর__এই জ্ঞানলাভ 88 ব্ৰহ্মহ্থত্ৰ ও শ্ৰীমদ্ভাগবত সম্বন্ধে ভাগবতের উক্তি আগেই আলোচনা করা হইয়াছে। ব্রহ্মজিজ্ঞাসার অধিকারী সম্বন্ধে ভাগবতের উক্ত নীচে উদ্ধৃত করিতেছি ! অমান্তমৎসরো দক্ষে! নির্ম্মমো দুসৌ হাদঃ । অসত্বরোহর্থ জিজ্ঞান্তুরনন্ু্যু রমোঘবাক্‌॥ ১১।১০।৬ জায়াপত্য গৃহক্ষেত্ৰ-স্বজন-দ্ৰবিণাদিষু ৷ উদাসীনঃ সমংপশ্ঠন্‌ সর্ব্বেষর্থমিবাত্মনঃ ॥ ১১৷১০।৭ জিজ্ঞান্ ব্যক্তি অভিমানশৃন্ত, নিরহ্থত, অনলস, মমতারহিত, দৃঢ়সৌহাদ্দা- বিশিষ্ট, অসত্বর (অর্থাৎ সাধ্যবস্ত লাভের জন্য ত্ররারহিত-ঘথাসময়ে উহ! আসিবে, এই প্রত্যাশায় অপেক্ষাকারী ), অন্থয়াশৃন্ত ও বার্থালাপ শূন্য হইবেন । আরও, জায়া-অপত্য, গৃহ-ক্ষেত্র-আত্মীয় ও ধনজনাদি সমুদায়ে উদাসীন, সকল পদার্থকে নিজের ন্যায় সমভাবে দর্শন করিবেন। ভাগসত ১১৷১০৷৬-৭ উদ্ধত ১১1১০।৬ শ্লোকে “অসত্বর” একটি বিশেষণ আছে। উহার তাৎপৰ্য্য ইংরাজীতে যাহাকে 799 অথবা চলিত বাঙ্গালায় ষাহাকে “ব্যস্তবাগীশ” বলে, তাহা নয়। সর্বদা সর্ববিষয়ে-প্রশান্ত « দীরভাবে বিবেচনা করিয়া কার্ধ্যানুষ্ঠান- কারী। আজকাল উদরান্ন সংস্থানের মহাসমন্তার দিনে অনেককেই কষ্টাবর্তে পতিত হইয়া, অল্পঘময়ে অনেক কাজ বাধ্য হইয়া করিতে হয়। ইহাতে সব সময় কাৰ্য্য হয়ত ন্ুচারুরূপে সম্পাদিত হয় না। হইলেও পত্র” কাজ শেষ করিবার আগ্রহ, মনে বিক্ষোভ আনয়ন করে। ত্রহ্মবিদ্যালাভের প্রচেষ্টায় উক্ত বিক্ষোভ যথাসম্ভব পরিত্যাগ করিয়া মনোনিবেশ সর্কতোভাবে কর্তব্য । মন বিক্ষোভরহিত ও প্রশান্ত করিয়া ঘৈর্ধ্য সম্পাদন করা উক্ত ব্রহ্মনিদ্যা- লাভের মুখ্য অঙ্গ । জিজ্ঞাস ব্যক্তির গুরুচরণ আশ্রয় যে একান্ত কর্তব্য, তাহা ভাগবতের ১১৩২২ শ্লোক আলোচনায় আগেই বুঝিয়াছি। ৭) পুর্ব্বপক্ষের পুনরায় আপত্তি ও তাহার সমাধান। ২১। পুর্বপক্ষ পুনরার আপত্তি করিতেছেন £_তুমি তো অতি ও ভাগবত প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত করিলে যে, জিজ্ঞান্থ ব্যক্তির গুরুর শরণ গ্রহণ একান্ত কর্তব্য এবং উক্ত গুরু বেদবিৎ ও ব্রঙ্গা্ত হওয়া] প্রয়োজন। কিন্তু বত্তমানে বেদের আলোচনা, শুধু বঙ্গদেশে কেন, প্রায় সমগ্র ভারতবর্ষ হইতে উঠিয়া! গিয়াছে। সুতরাং বেদের রহস্তদ্ গুরু কোথায় মিলিবে ? ব্রহধজ্ঞ গুরুলাভ ত অতি দুরের কথা। সুতরাং বর্তমান কালে জিজ্ঞান্থ ব্যক্তির পরাবিদ্য! লাভের কি কোন উপায় নাই? ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ ৪৫ ২২। ইহার উত্তরে সিদ্ধান্তবাদী বলিতেছেন তুমি বেদের রহস্তজ্ঞ ও রা গুরু অতি দুর্লভ বলিলে, ইহাতে কোনও সন্দেহ নাই। কিন্তু সেজন্য রি চষ্ট হইয়া বসিয়া থাকা শ্রেধ্ঃকামীর পক্ষে উচিত নহে। শাস্ত্রবিধানমত, বি উপযুক্ত অধিকারাঁরূপে প্রস্তুত করিতে পারলে, গুরুর জন্য ভাবিতে হইবে না। ভগবানের মঙ্গল বিধানে গুরু আপনিই উপস্থিত হইবেন । ভগবান গীতায় হুম্প্ট অঙ্গীকার করয়াছেন ঃ= ঈশ্বরঃ সৰ্ব্বভুতানাং হৃদেশেইকুন ভিষ্ঠতি। ভ্রাময়ন্‌ সর্ব্বভূতানি যন্থারূঢান মায়য়া ॥ গীঃ ১৮1৬১ তমেব শরণং গচ্ছ সবর্ব ভাবেন ভারত । তত্প্রসাদাৎ পধাং শান্তংস্থানং প্রাপ্সাসি শাশ্বতম্‌। গীঃ ১৮৬২ হে অঞ্জন! অন্্যামী ঈশ্বর, সকল ভূতগণের হৃদয়ে বাস করিয়া, নিজের মায়াশক্তির দ্বারা সকল ভূতজাতকে অন্ত্ারঢের ন্যায় ভ্রমণ করাইতেছেন । তুমি সর্ধতোভাবে তীহারই শরণ গ্রহণ কর। তাহার প্রপাদে পরমা শাস্তি, নিত্যধাম স্বরূপ ভগবানকেই প্রাপ্ত হইবে। গীঃ ১৮/৬১-৬২ লক্ষ্য করিতে হইবে যে, ১৮৬২ শ্রোকে “তমেব” পদে ‘এব’ অব্যয়পদ ব্যবহারের দ্বারা ভগবান বুঝাইলেন যে, অন্তর্ধ্যামী ঈশ্বরেরই শরণ গ্রহণ করিলে পরমপদ প্রাপ্তি সম্বন্ধে সন্দেহ করিবার কিছু থাকে না। ২৩। ভাগবতও বলিতেছেন £__ বাস্থুদেবে ভগবতি ভক্তিযোগঃ প্রযোজিতঃ । জনয়ত্যান্ত্র বৈরাগাং জ্ঞানং যদ্‌ ব্রহ্মদর্শনম্‌ ॥ ৩]৩২।১৮ ভগবান বাস্থদেবে ভক্তিযোগ প্রযোজিত হইলে, তাহা আশু বৈরাগ্য ও ব্ৰহ্মের অপরোক্ষান্ভৃতি রূপ জ্ঞান জন্মাইয়া দেয়। ভাগঃ ৩৩২১৮ যাহার! সর্ব্তোভাবে ঈশ্বরের উপর নির্ভর করিতে অক্ষম, দেহধারী গুরুর দর্শন ও আশ্রয়-প্রার্থী, ভগবান তাহাদিগকে উপযুক্ত অধিকারী বলিয়া মনে করিলে নিজেই গুরু-প্রাপ্তির ব্যবস্থা করেন । ভাগবত বলিতেছেন £- যোহন্তবহিম্তন্বভৃতামশুভং বিধুধন্‌ আচাৰ্য্য-চেত্তাবপুষা স্বগতিং ব্যনক্তি। ১১২৯৬ ৪৬ ব্ৰহ্মস্থুত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত যিনি তাঁহার শরণাগত দেহধারীগণের অস্তরের ও বাহিরের সমুদায় অশুভ দুর করিয়া, বাহিরে আচার্ধমৃত্তিতে উপদেশদানে ও অন্তরে অন্তর্যামীরূপে, উক্ত ব্যক্তির ই্টমৃত্তি প্রকটনে নিজপদ প্রদান করেন। ভাগ £ ১১২৯৬ ভগবান ত জগদগুরু। সমষ্টি জগৎ সম্বন্ধে যেমন, বাষ্টি প্রত্যেক মানব সম্বন্ধেও তেমন। তাহারই মঙ্গল বিধানে, তাহার পার্ধদগণ বিশ্বের সর্ধত্র বিচরণ করিয়া তাঁহার ভক্তদিগের সমুদায় বিদ্ন দূর করত: পরমপুরুঘার্থ প্রাপ্তির বিধান করেন। নারদ উক্ত পার্দগণের মধ্যে একজন মুখ্য । তিনি গুরুরূপে পাঁচ বৎসরের শিশু বকে উপদেশ দিয়া, তাহার ভগবৎ প্রাপ্তিযোগ সাধনের হেতু হইয়াছিলেন। ভাগবৰতে ত ব্যাসদেব স্পষ্ট বলিয়াছেন যে, তিনি বেদব্ভাগ, মহাভারত ও অন্যান্য শাস্ত্র প্রণয়ন, বর্ণাশ্রম-ধর্মপ্রতিষ্টা প্রভৃতি সম্পাদন করিয়াও আত্মপ্রদাদ লাভ করিতে না৷ পারিয়া_চিন্তান্বিত থাকাকালে, নারদ গুরুর্ূপে তাহার সন্মুখে উপস্থিত হইয়া ভগবানের স্বরূপাত্মক সৌনর্ধ্য-মাধুর্ধ্য-আনন্দ প্রকাশক ভাগবত শাস্ত্র রচনা করিতে উপদেশ দেন, তদন্পারে ভাগবত রচিত হয় এবং ব্যাসদেবও আত্মপ্রসাদ লাভ ক্রেন। বাল্মীকির রামায়ণ রচনার যূলেও নারদের উপদেশ হহা রামায়ণ পাঠে জানা ষায়। অবশ্যই এ সমুদায় অতি প্রাচীনকালের কথা । ২৪ অতি আধুনিক কালের একটি সত্য ঘটনার উল্লেখ করিতেছি । ইহ! বেশীদিনের কথা নয়। ৬বিজয়রুষ্ণ গোস্বামী, অল্পদিন হইল, দেহত্যাগ করিয়াছেন ৷ প্রথম জীবনে তিনি ব্রাহ্মধর্শের প্রচারক ছিলেন। পরে উহা ছাড়িয়া, হিন্দুধর্মের বিধানানুসারে-_সন্্যাস গ্রহণান্তর ৬গয়ায় ব্রহক্মযোনি পাহাড়ের সম্নিকট আকাশগঙ্গা পাহাড়ে তপস্তা আরম্ভ করেন। তথায় তাহার গুরু সুক্ষ শরীরে আগমন করতঃ, স্থুল রক্ত-মাংসের দেহ প্রকট করিয়া তাহাকে মন্তদান পুরঃসর উক্ত মন্ত্রীধনের উপযুক্ত শিক্ষাদানান্তে অন্তদ্ধান করেন । এখনও হয়ত সে সময়কার লোক জীবিত আছেন। ২৫1. এ সধ্ধয় দৃষ্টান্ত হইতে বুঝা গেল যে, ভগবান মানুষকে যে শক্তিটুকু দিয়াছেন, মানুষ যদি তাহার সীমাবদ্ধ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির পরিচালনে উক্ত শক্তির যথাসম্ভব সদ্ব্যবহার করিয়া আপনাকে উপযুক্ত অধিকারী করিতে সমর্থ We য় i মানুষ ত অমৃতলোকের অধিবাসী । নু ঠার সাধক নিয়মের ভঙ্গাপরাধে মায়ার ধিক", 4 আপতিত হই দি A আগত হং ফন করিতেছে যে হতন্ততার গর্কে উদ ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ a) সাধক নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছিল, সেই ্বতস্তরতার পরিচালনে অনুতপ্ত হইয়। গতি ফিরাইয়া, যদি ভগবদভিমুখী করিতে পারে, তাহা হইলে, ভগবানই, তাহার বিনষ্ট গৌরবময় পথ পুনঃ প্রাপ্তির সমূনায় ব্যবস্থা করেন। তিনি ত খেলার সঙ্গীকে চিরকালের জন্য ছাড়িয়া থাকিতে পারেন নাঁ! অন্তর্ধ্যামীরূপে সঙ্গে সঙ্গে ফিরিতেছেন। অন্তরের কিছুই ত তাঁহার কাছে লুক্কায়িত থাকে না। জীব তাহার অতি প্রিয়। জীবকে বক্ষে ধারণ করিবার জন্য বিশাল বক্ষ বিস্তার করিয়াই আছেন। ভ্রান্ত জীবকে ইহা স্পষ্টভাবে বুঝাইবার জন্য সমগ্র জীবচৈতত্য-কৌন্তভরূপে__অলঙ্কার স্বরূপ বক্ষে ধারণ করিয়া আছেন। (ভাগবত ১২।১১।৮)। অজ্ঞানান্ধ জীব বিষয়ের চাকচিক্যে মুগ্ধ হইয়া, তাহার দিকে পশ্চাৎ ফিরিয়া! থাকায়, তিনি বিষগ্লচিত্তে ফিরিয়া যাইতে বাধ্য হন। কিন্ত অপার করুণাসাগর তিনি। তাহাতে কষ্ট বা অসন্তুষ্ট না হইয়া! জীবের স্বাতন্থ্য কণায় কোন হস্তক্ষেপ না করিয়া, জীবের নিজের দ্বারাই উহার অনুকূল পরিচালনের প্রত্যাশায় থাকেন । ৮) পুর্বপক্ষের চতুর্থ আপত্তি ও ভাহার সমাধান । ২৬ । পূর্বপক্ষ পুনরায়, আপত্তি করিতেছেন £_ তুমি যাহা বলিলে, সব ত শুনিলাম। ভগবানের উপর নির্ভর করিলে, তাহার অনুগ্রহে পরমপুরুষার্থসিদি হইয়া থাকে । ভগবান বাস্থদেবে ভক্তি হইতেই ব্রহ্ম বা পরমতত্বের-অপরোক্ষাু- ভূতি লাভ হয়। মানুষের ভগব্দন্ত শক্তির সদ্ব্যবহার করা উচিত-_ এসব ত খুব ভাল কথা। কিন্তু ইহাতে যে তোমার বেধান্তালোচনার মস্তকে কুঠারাঘাত হইতেছে, তাহা কি বুঝিতেছ না? বিশেষতঃ চৈতন্য- চরিতামতের আছ্যখণ্ডে ১৭শ অধ্যায়ে স্পষ্ট কথিত আছে যে, শ্রীশ্রীমন্মহা প্রভু, শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্যদেব বৃহন্নারদীয় পুরাণের শ্লোকের__ হরের্নাম হরের্নাম হরের্নামৈব কেবলম্‌। কলো নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব গতিরন্যথা ॥ ব্যাখ্যার হরিনাম গ্রহণের অত্যাবশ্তকতা শিক্ষা দিয়াছিলেন এবং শিক্ষা দিয়াই যে নিক্রিয ছিলেন, তাহা নহে। নিজে নামের CGS পাগল হইয়া সন্যাস গ্রহণপুর্বক, ন'মঞ্রঈঃরে সমগ্র ভার তব মাতাইয়া তুলয়াছিলেন। উক্ত শ্াকের শিক্ষাও প্রমন্মহা প্রভুর নিজের আর? AEA হীরা ঠরুহািলহলতজতীত 0 28727537255 কলিকালে যদি অন্য উপায় না থাকে, ত 2: ৪৮ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত গুরুকরণের প্রয়োজন কি? এই দারুণ সংশয় মনে জাগিতেছে। ইহার সমাধান করিতে পারিবে কি? ২৭। ইহার উত্তরে সিদ্ধান্তবাদী বলিতেছেন, তোমার সংশয় যে যুক্তিযুক্ত, তাহাতে সন্দেহ নাই। কিন্তু তোমার বক্রোক্তি অতি আপত্তিজনক ৷ অবশ্যই, আমি জানি যে, উহ! তোমার বেদান্ত সম্বন্ধে পাহাড়-প্রমাণ- অজ্ঞতার পরিচয়, এ কারণ আমি উহাতে কোনও গুরুত্ব আরোপ করি না। তবে ইহা সুস্পষ্টভাবে বুঝাইতে চাই যে, আমার বেদাস্তালোচনা এত উর্ধে নিজের শাশ্বত, স্বয়ম্রভ, প্রশান্তিময়, ন্গিগ্ক, জ্যোতির্মগুলে প্রতিষ্ঠিত যে, সেখানে সাম্প্রদায়িকতা বা সংকীর্ণতার কুঠার পৌহুছিবার কিছুমাত্র সম্ভাবনা নাই। ইহা তোমাকে বিশেষভাবে বুঝাইবার প্রয়োজন মনে করি। যদি আমাদের- শাস্ত্রের উক্তিতে অন্ধ বিশ্বাস করিতে দ্বিধা কর, সেজন্য অতি সংক্ষেপে আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণের বর্তমান বিংশ শতাবীর দ্বিতীয়পাদে একটি বিস্ময়কর আবিষ্কারের উল্লেখ করিতেছি । ইহা ৪1৩1৬ শ্যত্রে বিস্তারিতভাবে আলোচন! করিয়াছি । ২৮। আমাদের শাস্তান্ুসারে-এই পৃথিবীর বা ভূর্পোকের বাহিরে ইহার ঝেষ্টনীন্বরূপ ভূবঃ, স্বঃ, মহঃ, জনঃ, তপঃ ও সত্যলোক--প্রত্যেক পরেরটি পূর্বেরটি অপেক্ষা দশগুণ বিস্তারে ঘিরিয়া আছে ৷ আধিভ্োতিক বিজ্ঞানান্ুসারে স্থল কঠিন পৃথিবী বা ভূলেককে বেষ্টন করিয়া আছে অপ.-লোক বা জলের বেষ্টনী বা মেঘলোক। এইখানে মেঘ, বৃষ্টি, তুষার, করকা।, শিলা প্রভৃতির অস্তিত্বের পরিচয় আমরা প্রত্যক্ষতঃ উহাদের পৃথিবীর পৃষ্ঠে পতনে দেখিতে পাই। এখানে বায়ু প্রবহমান । বাঞ্চা, ঝটিকা, বিছ্যুৎ্ফুরণ, মেঘসঞ্চরণ, অশনি গঞ্জন ইহার প্রমাণ দেয়। ইহা জলের ঝেষ্টনী। ইহার বাহিরে তেজের বেষ্টনী । সেখানে যত উর্দ্ধে উঠা যাইবে, তত তাপের হ্রাস ও শৈত্যের বৃদ্ধি অনুভূত হইবে। এখানে মেঘবৃষ্টি নাই, কিন্তু বায়ু প্রবহমান ৷ ভূ-বায়ু সায় এই উভয় বেষ্টনীর অন্তর্ভুক্ত বাদু-উহার. উপাদানীতৃত-অগ্জান, উদজান, যবক্ষার জান, অঙ্গারক প্রভৃতি বাপ্পের সহিত ঘনিষ্ঠভাবে সংমিশ্রিত । প্রবহমান থানুই এই সংমিশ্রণের হেতু, ইহা সহজে বুঝ! যায়। তাহার বাহিরে বাবুর বেষ্টনী । এখানে প্রবাহ-আবহ প্রভৃতি বায়ুপ্রবাহ বর্তমান নাই৷ এ কারন “ধুর উপাদানীভূত উপরোক্ত অগ্রজানাদি বাম্পগণ পরস্পর সংমিশ্রিত না হইয়া, নিজ নিজ আপেক্ষিক গুরুত্বা়নারে উপরে-নীচে সঙ্ভিত। এই পিনতে তাপের হবাপহৃছি নাই। উক্ত ফেনীর নীচের জরে যে তাপ, ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্বঃ ৪৯ উপরে ১০০ বা ১৫০ মাইল উঠিলেও তাপের কোনও হ্রাস উপলব্ধ হয় না। ইংরাজীতে ইহার নাম 709০ 72198, বাংলায় “তাপস্থির” বলা যাইতে পারে। এখানে বিক্ষোভমাত্র নাই। নিবিড় প্রশান্তি চিরবিরাজিত। এই তিন বেষ্টনীর প্রথম দুইটি সমগ্র ও হতীয়টির আধাভাগ লইয়া আমাদের শান্রকথিত ভুবর্লোক। তৃতীয় ঝে্টনীর উপর স্তর ও তাহার বাহিরে আকাশ বেষ্টনীর অনেকাংশ লইয়া শাস্কথিত স্বর্লোক। সেখানে ও তাহার বাহিরে মহঃ, জনঃ, তপঃ লোকে যে চিরপ্রশান্তি নিবিড়ভাবে বিরাজ করিবে, তাহা বলা বাহুল্যমাত্র । ২৯। আমার বে্দাস্তালোচনার শিরোদেশ উহাদের সকলকে ভেদ করিয়া এবং উহাদের বাহিরে সত্যলোকও অতিক্রম করিয়া, নিজের ্বয়্্রকাশ, স্নিগ্ধ, নির্শল জ্যোতিঃতৈ সমুজ্জল, চৈতন্যময় তত্বলোক। সেখানে ব্ৰহ্ম বা পরমাত্মা বা পরমপুরুষ বা ভগবান যে পদার্থ তাঁহার ভাবস্বরপ তত্বলোকও সেই - পদার্থ। স্থতরাং সেখানে তোমার কুঠারের প্রবেশাধিকার নাই, ইহা বুঝা গেল নাকি? ৩০। অন্যপক্ষে দেখ, আমার উক্ত আলোচনার ভিত্তি সর্বপ্রকার বিক্ষেপ- বজিত, চিরপ্রশান্ত, চিরস্তন, সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত। একারণ পৃথিবীর পরিচিত, অতি কঠিন গ্র্যানিট প্রস্তরের-ভিত্তি অপেক্ষা উহা! যে কোটি কোটি গুন সুদৃঢ়, তাহা কি আর বলিতে হইবে? কাঠিন্ত-কোমলতা৷ ত আপেক্ষিকতার অস্তভূর্ত। নিরপেক্ষ সত্যন্বরূপে উহাদের স্থান কোথায়? স্বতরাং হঠকারিতা বশতঃ উক্ত ভিত্তিতে কুঠারাঘাতের কল্পনা করিলে কুঠার চুর্ণবিচ্ণ হইয়া ধূলিকণায় পরিণত হইবে। অতএব তোমার আস্ফালন বৃথা, সন্দেহ নাই। আরও একটি কথা স্মরণ করিতে অন্গরোধ করি। শ্রুতি এবং শ্রুতির দৃঢ় ভিত্তিতে সুপ্রতিষ্ঠিত ব্ৰহ্মস্থত্ৰ বা বেদান্ত সৰ্বদেশের, সর্বকালের, সর্ব অবস্থায় মানবদেহধারী জীববৃন্দের-আত্যপ্তিক কল্যাণকামী । এজন্য ইহার শিক্ষা অভি উদার, অতি সরল ও সর্কগ্রাহী। ইহা কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের মতবাদ নহে । উহা অপৌরুষের, ১1১৩ স্থত্রের আলোচনায় ইহা বুঝিতে চেষ্টা করিব। ভগবানের জগৎ ক্রীড়ার সঙ্গী জীব ভ্রান্ত হইয়া-_কুপথে গিয়া কষ্ট পাইতেছে। অপার করণায় ভগবান তাহাদিগকে স্থপথে আনয়ন করিবার জন্য তাহাদের স্বাডঙ্্ে হস্তক্ষেপ না করিয়া, উক্ত স্বাতহ্রোর ভিতর দিয়াই নিজ স্বরূপে ফিরাইয়া আনিবার জনক “বেদান্ত” রূপে (গীতা ১ জীবসমাজে অভিব্যক্ত করিয়া, জগৎ ক্রীড়ার বৈচিত্য বিধান করিয়াছেন। ৫, ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভা গবত ভন রোগ হইতে নিরাময় হইবার ইহা অমোঘ ওবধি, সকলের জন্য ইহা অভিপ্রেত। শুধু নিজের শক্তির সদ্ব্যবহারে, ওষধ গ্রহণের ও ধারণের-উপযোগী হইবার অধিকার লাভ করা মাত্র বিধেয়। বেদান্ত সার্বজনীন ও সার্বকালিক হওয়ায়, কোন বিশেষ ব্যক্তিকে দলে টানিবার প্রশ্নই উঠে না। ইহা কাহারও কোন প্রকার-_সাম্প্রদায়িক ধর্মানুষ্ঠানে হস্তক্ষেপ করে না। প্ররুত চি্রস্তন সত্য যাহা, তাহাই বেদান্ত উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন। ইচ্ছা হয় গ্রহণ কর, ইচ্ছা না হয় করিও না। কাহারও প্রতি কোনও উপরোধ-অনুরোধ নাই। ৩১। তুমি হয়ত মনে করিয়াছ, তোমার আম্কালন আমাকে নিরুৎসাহ করিবে। ইহা তোমার বড়ই ভ্রম। আমার পক্ষে তোমার সংশয় সমাধান অতি সহজ । হরিনাম গ্রহণের সহিত ভাগবত সাহায্যে বেদাস্তালোচনার কিছুমাত্র বিরোধ নাই। যদি হরিনাম করিয়া, তুমি মনে শান্তি পাও, তাহা! হইলে উহাই তোমার একমাত্র আলম্বন। তোমার বেদাস্তালোচন। শনিবার কোনও প্রয়োজন নাই । তোমার উহা! আলোচনার বা শুনিবার জন্য আমার কোনও উপরোধ-অন্থরোধ নাই । তবে একটা অতি প্রয়োজনীয় কথা স্মরণ রাখিও। আশ! করি, ইহা তোমার অবিদিত নয় যে, নাম গ্রহণের সময় নাম ও নামীর অভেদ চিস্তন-শাস্ত্রে উপদিষ্ট। এই অভেদ চিত্তনের-সহিত নাম গ্রহণ করিলে শুভ ফল শীঘ্র শীত্র প্রকটিত হয়। ভাগবত ১০৮৭২ শ্রোকে ( উহা ১১২ সুত্রালোচনায় উদ্ধৃত হইয়াছে) বলিয়াছেন যে, মানব, বুদ্ধি-ইক্জিয়-মন ও প্রাণসহযোগে জন্মগ্রহণ করিয়াছে । প্রাণ__মন্ুষ্য ও মন্থুষ্েতর সকলের আছে, স্থতরাং উহা ছাড়িয়া দিলেও, বুদ্ধি, ইন্দ্রিয় ও মন মানবের যেরূপ উন্নত স্তরের, অপর প্রাণীদিগের সেরূপ নহে। মানুষের এই বিশেষ ব্যবস্থা উদ্দেগ্যযুলক । মানব দেহধারী জীব যদি উহাদের যথাষথ পরিচালনের সহিত জীবনযাত্রা নিৰ্ব্বাহ করে, তাহ! হইলে, তাহার চতুবগফল লাভ হয়__অর্থাৎ বিষয় উপভোগ, তঙ্জনিত জন্মের পর জন্মলাভ, তাহা হইতে ক্রমশঃ ক্রমোন্নতি সোপানের, উচ্চ হইতে উচ্চতর স্তরে আরোহণ এবং পরিণতিতে মোক্ষ প্রাপ্তি বা নিজের শাশ্বত, কিন্তু অধুমালুপ্ত, নিত্যন্বরূপে অবস্থান লাভ করিয়া সংসারের উত্থান-পতন প্রবাহ হইতে মুক্তি পায়। একারণ জীবন ধারণের সার্থকতা সম্পাদনের জন্য, বুদ্ধি' ইন্দ্িয-মনের যথাযথ পরিচালন! অতি অবশ্য কর্তব্য। বুদ্ধি ও মন চিন্তনের য। এই হেতু, নামের সহিত নামীর অভেদ চিন্তনের উপদেশ শাস্ত্রে দেওয়া ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ ৫১ ৩২। আমি নিজে বিশ্বাস করি যে, নামের শক্তি অসীম । ন! জানিয়া উপ্রবীর্ধ্য গুষধ সেবন করিলে দ্রব্যগুণবশতঃ উহার কার্য্য উহা! যেমন করিবেই করিবে, সেরূপ হেলায় হউক্‌, শ্রদ্ধায় হউক্‌, নামগ্রহণে বস্তগুণ প্রকটিত হইবেই হইবে। তবে আধিভৌতিক ক্ষেত্রে যেমন মুযূ্ু ব্যক্তর জীবনী শক্তি অতি ক্ষীণ হইয়া পড়িলে, উক্ত উগ্রবীধ্য উষধ নিজগ্তণ প্রকাশ করিতে পারে না। আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রেও সেইরূপ মন ঝা বুদ্ধি সংযোগ ন! করিয়া নাম গ্রহণ করিলে, নামের শক্তি প্রকটিত হইতে অতিশয় দেরি হইয়া যায়। এমন কি জন্মের পর জন্ম, এইরূপে বহু জন্ম অতীত হইয়া! যায়। (গীঃ ৭১৯)। এজন্য মন ও বুদ্ধি সংযোগের সহিত নাম-নামীর অভেদ চিন্তনে নামগ্রহণ অতীব প্রয়েজদীয়। এই জন্যই ছান্দোগা শ্রুতি স্পষ্ট উপদেশ দিয়াছেন “যদেৰ বিদ্যা করোতি শ্রদ্ধয়োপনিষদা । তদেব বীর্ধ্যবস্তরং ভবতি।” (ছান্দোগ্য ১১১০ ) ৩৩। তারপর আরও দেখ । নাম ত আমাদের ইন্দিয়গ্রাহ! বস্ত। উহার পরিচয় আমাদের সকলেয় অল্পবিস্তর জানা আছে। কিন্তু নামী--এমন একটি বস্তু, যাহার পরিচয় অতি দুর্লভ। বাক্য-মন-বুদ্ধি সে বস্তুকে প্রকাশ বা ধারণা করিতে পারে না। অথচ উহার সম্ভবমত কিছু পরিচয় ন! জানিলে, উহার চিন্তন ও নামের সহিত উহার অভেদ-সম্বন্ধ-জ্ঞান কেমন করিয়া সম্ভব হইতে পারে? অতএব যুক্তিতে পাইতেছি যে, উহার সম্ভবত অল্প-বিস্তর পরিচয় জানা প্রয়োজন । এই পরিচয় কি প্রকারে পাওয়া যাইতে পারে? এই প্রশ্নের বিচারে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে বাধ্য হই যে, যাহার! উক্ত পরিচয় লাভ করিয়াছেন, তাহাদের সাহায্য গ্রহণ ব্যতীত উপায় নাই। ব্রমজ্ঞ গুরুই সেই পরিচয়জ্ঞ, একারণ গুরুচরণ আশ্রয় প্রয়োজনীয়, এই উপদেশ শ্রুতি দিয়াছেন এবং আমরা উপরে ইহার আলোচন! করিয়াছি। তবে ব্রহষজ্ঞ গুরু দুপ্রাপ্য এমন কি অপ্রাপ্য, তাহ! তুমিও বলিয়াছ। হ্বতরাং উপযুক্ত গুরু না পাইলে কি নিশ্চেষ্ট হইয়া বসিয়া থাকিবে? তাহা হইতে পারে না। শ্রুতি উক্ত পরিচয়দানে সম্পূর্ণ সমর্থ । উহা অপৌরুষেয়, তাহা পূর্বে বলিয়াছি। ব্যক্তিগত ভ্রম-প্রমাদ প্রভৃতি উহাতে নাই। উহা পরমেশ্বরের শব্ধ স্তরে অভিব্যক্তি_ইহ| যদি বিশ্বাস কর কথ! নাই। নতুবা, ভ্রতিমন্ত্র সকল, সাধন সিদ্ধ, ব্ৰম্ভাৰপ্ৰাপ্-মহাপুরুষগণের-প্রত্যক্ষানুতুতির ফল, ইহাতে সন্দেহ নাই। কির আদি হইতে, আমাদের দেশের সাধক, সিদ্ধ, পণ্ডিত সকলেই ইহা দৃঢ় বিশ্বাস করিয়া আসিতেছেন। স্থতরাং শ্রুতির সাহায্যগ্রহণ অত্যাবগুক বুঝা গেল। ৫২ ভ্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত ৩৪1 কিন্তু শ্রুতি বহুবিস্তুত। উহার বহু শাখা ও প্রশাখা। সমুদায়ের আলোচনা আজিকার দিনে অপভ্তব। ব্রহ্ধসত্র শ্রুতি সকলের সমন্বয় ও অবরোধ প্রায় ব্যবস্থিত। শ্রুতিই উহার ভিত্তি এই সকল কারণে, রক্তের সাহায্যে উক্ত পরম বস্তুর যথাসম্ভব পরিচয় লাভের চেষ্টা কি কর্তবা নহে? গঙ্গাস্নানেচ্ছু বাক্তি গঙ্গাক্জান করিবার জন্য কি গোমুখী হইতে সাগর- সঙ্গম পর্যান্ত গঙ্গার নে! তে গাপিয়া গিয়া ্ান-ক্রিয়া সমাধা করেন? তাহ] করা স৪1নহে। যদি কেহ চেষ্টা করেন, তবে অতি শীত্র যে তাহার ভবলীলা সাঙ্গ হইবে, তাহা কি আর বলিতে হইবে? উক্ত স্সানেচ্ছু বাক্তি যেমন গঙ্গা প্রবাহের গে কোনও স্থানে স্নান করিয়াই গঙ্গাস্সানের ফলপ্রাপ্ত হন। সেইরূপ ব্রহ্ম বা পরতুত্বের পরিচয় লাভেচ্ছু ব্যক্তি, বিশাল, বিস্তৃত সমুদায় শর্তে ন! ঘণাটিয়া যদি সমুদায়ের সমন্বয় ও অবিরোধ স্থাপনকারী ব্রদমস্থত্র আলোচনা করেন, , তাহাতে দোষের কি আছে ? এইজন্য আমার ব্রহ্মহ্তত্রালোচন!। শ্রীমদ্ভাগবত ইহার রহস্ত প্রকাশক ভাষ্য বলিয়! আমি বিশ্বাস করি । এজন্য ভাগবত সাহাযো আমার এই আলোচনা ৷ এখন জিজ্ঞাসা করি, তোমার সংশয় নিরসন হইল কি? ৩৫ । পূর্ববপক্ষ অস্ুৃতপ্ত হইয়া বলিতেছেন £_ তোমার অনুগ্রহে সংশয় অপনোদন হইল বটে, কিন্ত মনে শান্তি পাইতেছি কৈ? আমার মনে হইতেছে যে, চাপল্যবশতঃ অসংযত ভাষা ব্যবহার করিয়া, তোমায় কষ্ট দি? মহা অপরাধী হইয়া পড়িয়াছি। আমি অকপটভাবে ক্ষমা. চাহিতেছি। অনুগ্রহ করিয়া ক্ষমা করিবে কি? ৩৬। ইহার উত্তরে |সদ্ধান্তবাদী বলিতেছেন :_ আহা ! তুম তো বড়ই ঠুনকো দেখিতেছি। ভাষা একটু অসংযত হইয়াছে বটে, তাহার জন্য যেটুকু অনুযোগ করা! প্রয়োজন, তাহার কোন ত্রুটি করি নাই। আর কথা বাড়াইবার প্রয়োজন নাই। তুমি অপরাধ করার কথা বলিতেছ, আমার সম্বন্ধে কোনও অপরাধ হয় নাই। ইহা আমি নিঃসঙ্কোচে বলিতেছি। যদি কিছু অসম্মান কর! হইয়| থাকে, তাহা ভাগবত সাহায্যে বেদাস্ত-আলোচনা সম্থদ্ধে। এবং সেকারণ, পাকে প্রকারে শ্রীমন্মহাপ্রভূ শ্রীরুষ্ণ চৈতন্তদেবের সম্বদ্ধে। কি শীমদ্ভাগবত, কি বক্কর, কি শ্রীম্মহাপ্রভু- ইহারা তোমার আম'র মত বুদ্ধি, অজ্ঞান, মানবদেহধারীগণের মান-এসম্মানের অনেক উৰ্দ্ধে, নিজের- নিজের শ্বপ্'জ্যোতিঃ স্বপ্রকাশ স্বরূপে প্রতিষ্ঠিত। স্ৃতরাং তোমার মনে কোন প্রকার কুচিন্তা করিবার প্রয়োজন নাই। তোমার আমার ন্যায় সংসার- ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থুঃ ৫৩ পীড়িত প্রত্যেকের মনে রাখা প্রয়োজন যে, অজ্ঞানান্ধ মানবের অজ্ঞানান্ধকার দূর করিয়া, জ্ঞান-বিজ্ঞান-ভক্তি সমুজ্জল তত্বালোকে উদ্ভাসিত করিবার জন্য স্তর, শ্রীমদ্ভাগব্ত এবং শ্রীমন্মহাপ্রভুর মন্ত্যধামে আবির্ভাব। তিনিই এক মহদুদ্দেগ্যযূলক । স্থতরাং তোমার দুঃখ করিবার কিছুই নাই। ৩৭। তুমি বৃহম্নারদীয় পুরাণের “হরের্নাম....-” যে শ্লোক উল্লেখ করিয়াছ- শ্রীমন্মহা প্রভু উক্ত শ্লোক দ্বারা সর্ব্ধসাধারণকে শুধু বাচনিক উপদেশ দিয়া ক্ষান্ত হন নাই, উহা। সংঘব্দ্ধভাবে প্রচলনের জন্য, গৃহসংকীর্তন, নগর- সংকীর্তনের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন । কেহ কেহ মনে করেন যে, উক্ত ব্যবস্থা মুসলমানগণের সংঘবদ্ধ উপাসনার অনুকরণে প্রবর্তন করিয়াছিলেন । ইহার কারণস্বরূপ তাহার! বলিয়া থাকেন যে, তখন মুসলমানগণ দেশের রাজা, স্থতরাং মহাপ্রভুর পক্ষে রাজশক্তির অনুকরণে প্রবর্তন কর! সম্পূর্ণ সঙ্গত হুইয়াছিল। কিন্তু উহা! সম্পূৰ্ণ ভুল। যদি চৈতন্যভাগবতে কথিত নগর- সংকীর্ডনের বিবরণ আলোচনা করা যায়, তাহা হইলে স্পষ্ট প্রতীয়মান হইবে যে, উহা! তৎকালীন কাজীর গৃহসংকীর্তন বন্ধ করিবার হুকুমের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত হইয়াছিল এবং মহাপ্রভু নিজে কাজীর গৃহে গিয়া তাহাকে বুঝাইয়া উক্ত হুকুম প্রত্যাহার করাইয়াছিলেন। শ্রীমন্মহাপ্রভুর উক্ত অনুষ্ঠানের ভিত্তি আমরা গীতার ১০৯ শ্সোকে দেখিতে পাই। ভগবান উক্ত শ্লোকে বলিতেছেন £_ মচ্চিন্তা মদ্গতপ্রাণা৷ বোধয়ন্তঃ পরস্পরম্‌। কথয়ন্তশ্চ মাং নিত্যং তুত্যন্তি চ রমন্তি চ॥ গীঃ ১০।৯ মচ্চিত্ত, ও মদ্গতপ্রাণ সাধকগণ আমার বিষয় পরস্পরকে বুঝাইয়া ও কীর্তন করিয়া তুষ্টি ও নিবৃতি লাভ করেন । ১০৯ ৩৮। যে সমুদায় সাধক পূর্ব্কুতিবলে, দৃঢ়বিশ্বাসের সহিত উহার সাধন! করিবেন, তাহাদের যে পরম পুরুষার্থ লাভ হইবে, তাহাতে সন্দেহমাত্র নাই। তবে বিশেষভাবে মনে রাখিতে হইবে যে, দৃঢ় বিশ্বাস ও অরদধা অপরিহার্য । এজন্য আগেই বলিয়াছি “যদি তুমি হরিনাম করিয়! মনে শাস্তি পাও, তাহা হইলে উহাই তোমার একমাত্র আলম্বন । তোমার বেদাস্তা- লোচনার কোন প্রয়োজন নাই।” কিন্তু পাশ্চাত/দেশের শিক্ষানীতি, আমাদের দেশে প্রচলিত হইয়া, আমাদের মনে শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের মুলোৎপাটন- পূর্বক, তাহাদের স্থানে, নানাপ্রকার সংশয়, সন্দেহ, গুরু ও শাস্ত্রবাক্যে মা প্রভৃতি আগাছা রোপন করিয়াছে। ফলে আমরা কোনও কিছ বরের ৫৪ রহ্ষস্থত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত সহিত গ্রহণ করিতে পারি না। যুক্তি, বিচার প্রভৃতি বড় বড় কথার উল্লেখ করি। এমন কিযে অচিন্ত্য, সর্বজ্ঞ, অনস্ত শক্তিমান মহাসত্বা, বিশ্বের রচনা, পরিচালনা, পরিপোষণ, সংবর্ধন, ক্রমোন্নতি__সম্পাদন প্রভৃতি করিতেছেন এবং যাহার কাছে মানবীয় যুক্তি-বিচার প্রভৃতি পৌহুছিতে পারে না, তাহার সম্বন্ধেও সহজে বিশ্বাস করিতে পারি না । বাগ.-বিতগ্ায় প্রয়োজন উপলব্ধি করিয়া, উহাদের অবতারণা করিয়া আনন্দ পাই। পাছে বৃথা তর্ক করিয়া “ইতো নষ্ট স্ততো ত্র, হইয়া পড়ি, একারণ মানব-দেহধারী জীব মাত্রেরই পরম হিতৈষী শ্রতিগণের সারম্বরূপ ব্রহষঙ্ত্র ও তাহারই রহস্ত প্রকৃত অর্থজ্ঞাপক ভাগবত লইয়া আলোচনায় শেষজীবন যাপন করিতেছি । আমারও মন সংশয়প্রবণ । সমুদায় সংশয়ের চুড়ান্ত মীমাংসা ব্রক্মম্থত্রেই আছে। সে কারণ বিচার-বিতর্কের কত্য়নও উহার দ্বারা নিবারিত হয়। মানবদেহের সহিত বুদ্ধি- ইন্দিয়-মনঃ£সংযোজনের সার্থকতা সিদ্ধ হয়_উহারাই ত বিচার-বিতর্কের- মুখ্যতম অঙ্গ । ভগবান কর্তৃক গীতায় কথিত জ্ঞান ও ভক্তির পরস্পর উপায়- উপেয় সন্বন্ধ। (গীঃ ১৮1৫৪-৫৫) হৃদয়্ম করিবার প্রচেষ্টাও যথাসম্ভব সম্পাদিত হয়। যদ আমার এই অপটু আলোচনায় সত্যান্থপদ্িৎম্থগণের মধ্যে একজনেরও কিছু উপকার হয়, তাহা হইলে জীবন সার্থক মনে করিব। গাশ্চাত্য শিক্ষায় তথাকথিত শিক্ষিতগণের মনোভাবের পটভূমিকায় এই আলোচনা প্রধানতঃ করা হইতেছে। জানি না, ইহ! তাহাদের মনঃপুত হইবে কিনা? কিন্তু তাহার জন্য আমার উদ্বেগমাত্র নাই। ভগবানের অনুগ্রহে: ও পিতামাতার আশীর্বাদ যেটুকু শিক্ষালাভ করিয়াছি, তাহা যদি ভগবানের মহিমাচিন্তনে ও খ্যাপনে নিয়োগ করিতে পারি, তাহা হইলেই উহা সার্থক, এই মনে করিয়া, আমার নিজের জন্যই এই আলোচনা । সুতরাং তুমি নিজের ইচ্ছায় ইহা শোন ভাল, না শোন তাহাতেও কোনও ক্ষতি নাই। আমীর কোন উপরোধ-অহুরোধ নাই, ইহা আগেও বলিয়াছি। ৩৪। পুর্বপক্ষ পুনরায় বলিতেছেন £_তোমার উদ্ারতায় আমি নু হইয়াছি। তোমার স্ুন্ম যুক্তি-বিচারে, প্রাঞ্চল ব্যাখ্যায়, আমার বহুদিনের অনেক সংশয় মিটিয়া যাইতেছে। ইহাও বলি যে, আমি বরাবর তোমার চিন্তাধারায় এই প্রথম হত্রের ব্যাধ্যানেই অনেক ব্যাঘাত স্বজন করিয়াছি! ইহাতে আমি মং ঘুঃধিত। কিন্তু কি করিব? সংশয় নিরসনের জন্য আর কাহার মি তুমি বেদাস্তালোচনা কর, জানিয়া তোমার কাছে আসিয়াছি। 7 অনুমতি কর, আর একটি সংশয় নিবেদন করি । ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থুঃ ৫৫ ৪০। সিদ্ধাস্তবাদী বলিতেছেন :-_তোমার কুঠিত হইবার কোনও কারণ নাই। বেদাস্তলোচনায় আমি আনন্দ পাই বলিয়া উহা করিয়া থাকি। আপত্তি উত্থাপিত হইলে তাহার আলোচনায় ও বিচারে, যে সমুদায় বিষয় অল্পবিস্তর কুহেলিকাচ্ছন্ন ছিল, সে সকল পরিস্ফুটরূপে আলোকিত ও প্রকাশিত হইয়া আমারও উপকার সাধন করে। স্থতরাং তোমার সংশয়-অকুন্তিত চিত্তে বল। আমি যথাসাধ্য উহার সমাধানের চেষ্টা করিব এবং যদি সে চেষ্টায় তোমার সংশয় নিরসন করিতে পারি, তাহা হইলে ধন্য হইব। তবে যদি কিছু মনে না কর, একগি কথা বলিয়া রাখি যে, এই স্তরের শেষ- ভাগে ও পরবর্তী অনেক সুত্রে ব্র্ধতৰ আলোচিত হইবে। ব্রহ্ম ও তাহার তত্ব উভয়ে অভিন্ন। উহা! এমন একটি বস্তু, যেখানে বাক্য ও চিন্তা পৌহুছিতে পারে না। একারণ মানবের বাক্য-মনঃ-বৃদ্ধির পরিচালনায় উদ্ভুত তর্কশান্ত্ের যুক্তিিচার-প্রমাণ-প্রমেয় প্রভৃতি সে বস্তুতে প্রযোজ্য নহে। সেখানে শ্রুতিই একমাত্র প্রমাণ এবং শ্রুতির বিধানান্ুদারে সাধনাকারী লব্ধবিদ্য সাধকের অপরোক্ষান্থভূতিলন্ধ উপদেশ । আমার একান্ত অনুরোধ সে ক্ষেত্রে হঠকারিতার প্রশ্রয় দিয়া যথেচ্ছ আপত্তি উথাপন__আলোচনা চলাকালে করিও না। যদি আপত্তি করিতেই হয়, আলোচনার শেষে করিলে, আমি যথাসাধ্য উহা সমাধানের চেষ্টী করিব। যদি ইহ্‌! স্বীকার কর এবং শ্রুতি প্রমাণ-গ্রাহ্‌ কর, তবে এপ, উভয়ে একত্র অগ্রদর হই। অন্যথায় আমাদের ছাড়াছাড়িই ভাল। ৪১। পূর্বপক্ষ বলিতেছেন £_শ্রুতি আমার পূজার বস্ত। উহার প্রমাণ- আমি বিনা দ্বিধায় মস্তকে গ্রহণ করিব। এবং শ্রুতির ঘনিষ্ঠ অনুগামী শ্রীমদ্ভাগবত ্র্স্ত্রের স্থত্রকার রচিত, উহার প্রকৃত অর্থজ্ঞাপক ভাষ্য বলিয়া, ভক্তির সহিত গ্রহণ করিব, ইহাতে সন্দেহ করিও না। আমি আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, অতঃপর ব্রহ্ম ব| ব্রহ্মবিদ্যা বা অপর কোনও বিষয় সম্বন্ধে আপত্তি, আলোচন! চলাকালে উঠাইব না । তবে নিতান্ত প্রয়োজনে বাধ্য হইয়া যদি আপত্তি উঠাইতে হয়, তাহার অনুমতি দিও। ৯) পূর্ব্বপক্ষের পঞ্চম আপত্তি ও তাহার সমাধান) ৪২। পূর্ববপক্ষ বলিতেছেন £_এখন আমার মনের সংশয়টি নিবেদন করিতেছি। তুমি উপরে বলিয়াছ যে, মানুষের ভগবপ্রত্ত শক্তির যথাসম্ভব সদ্ব্যবহার করিয়া নিজেকে ব্রহ্ম বগ্ালাভের উপযুক্ত মধিকারী-রূপে গড়িয়৷ তোলা সকলের কর্তব্য। কিন্তু বর্তমানে আমাদের চতুদ্দিকে দেখিতে পাই যে, অনেক ব্যক্তি সারা জীবন ধরিয়া, চেষ্টা করিয়াও কোনও, দৃশ্য ফল লাভ ৫৬ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত করিতে পারেন নাই। অপরের কথা ছাড়িয়া দিলেও আমার নিজের ব্যক্তিগত চেষ্টা ত আমার কাছে অবিদিত নাই। অবস্যই নিজের কথা বলা অশোভন, তাহা জানি । তথাপি ইহা ধ্ৰবসত্য যে, চেষ্টা করিয়াও কোন ফল পাইয়াছি বলিয়৷ মনে হয় না। ইহাতে প্রাণে হতাশভাব জাগে যে, এ সমুদায় চেষ্টা কি বৃথা হইল? এ সম্বন্ধে কি কোনও আশার বাণী তোমার কাছে শুনিতে পাইব? ৪৩। উত্তরে সিদ্ধান্তবাদী বলিতেছেন £_তুমি মনে করিও না যে, এই অনন্ত, অগণ্য বিশ্বে এবং তাহাদের অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেক ব্যষ্টি বস্তুর প্রতি অগু- পরমাণুতে যে খেলা দিবারাত্র অবিচ্ছেদে চলিতেছে, তাহা অন্ধ নিয়তির উদ্দেশ্তহীন, খামখেয়ালী কল্পনা বিলাস মাত্র । হি উদ্দেশ্টমূলক-_ ইহা পূর্বেও বলিয়াছি। একজন সর্ধজ্ঞ, সর্বশক্তিমান, পরমকারুণিক, জীবব্সল, মহাসন্বা সৃষ্টির যূলে থাকিয়া সেই উদ্দেশ্য পরিচালনা করিতেছেন । ক্রমাভিব্যক্তিই সেই উদ্দেশ্ঠ। দৃশ্যতঃ জড়, অচেতন, একটি বালুকাকণা বা একথও প্রস্তরকে-সেঁতলা, ছত্ৰক, উদ্ভিদ প্রভৃতির মধ্য দিয়া, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র, ইতর জীবমণ্লীর নান! যোনির পর, অগণ্য যোনিতে জন্ম-মৃত্যুপ্রঝাহে-উন্মজ্জিত-নিমজ্জিত করণান্তে, ক্রমশঃ উন্নততর জীবে পরিণত করিতে করিতে পরিণতিতে মানবদেহধারী জীবে অভিব্যক্ত করে । মানবদেহধারণের পর, অভিব্যক্তির বিশিষ্ট সোপানে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইহার পূর্বের শুধু প্রাকৃতিক শক্তির অমোঘ নিয়মে ক্রমাভিব্যক্তি হইতেছিল। এখন হইতে মানবদেহধারী জীব, প্রাকৃতিক শক্তির সহিত নিজের বহিঃ ও অন্তরেক্দ্িয়গণের শক্তি সংযোজন করিবার স্বাধীন ইচ্ছা লাভ করে । এই স্বাধীন ইচ্ছা ভগবতপ্রদত্ত। ক্রমাভিব্যক্তির অনন্ত সম্ভাবনার প্রাপ্তি এই স্বাধীনতার লক্ষ্য । এই স্বাধীনতা দিয়াছেন, বলিয়া ভগবান, এই স্বাধীন ইচ্ছা পরিচালনে হস্তক্ষেপ করেন না॥ মানবদেহধারী জীব, যদি এই স্বাধীন ইচ্ছার যথোচিত পরিচালনায়, প্রাকৃতিক শক্তির সহিত আত্মশক্তি সংযোজিত করিয়া, একযোগে লক্ষ্যাভিমুখে অগ্রসর হয়, তখন উন্নতির অনন্ত সম্ভাবনার (শ্বেতাশ্বতর ৫1৯) সমুজ্জল দশ, তাহার সম্মুখে প্রকটিত হইয়া, তাহাকে ধীর পদে আরও - অগ্রসর হইতে আহ্বান করে। এমন কি পরিণতিতে ভগবানের-নিত্যধামে-শাশ্বত প্রশান্তি লাভ করিয়া থাকে। (ছান্দোগ্য ৭২৫)। কাল অনস্ত, আত্মাও নিত্য তা হতাশ হইবার কিছুই নাই। যে অচিন্ত্য শক্তিশালী মহাসত্বার উল্লেখ করিয়াছি, তিনি সমষ্টি ও বা বিশ্বের-স্থল সম সমূদায়ের অন্তরে ও বাহিরে প্রকাশমান ॥ বিশ্বের স্তর বৃহৎ সমুদায় ব্যাপার,.তীহার চিরজাগ্রত চক্র ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ ল্থুঃ ৫৭ উপরে সংসাধিত হইতেছে। জগতের কুত্রাপি স্থল হউক ব| পরমাণু অপেক্ষা স্বন্ম হউক, কোনও ব্যতিক্রম, ব্যভিচার বা৷ অন্যথা ভাব নাই। প্রকান্ডে বা অপ্রকাশ্তে যখন যাহা কিছু করা যায় বা ভাবা যায়, কিছুই বিফলে যায় না। সমস্তই প্রতি মানবদেহধারী জীবের কর্মস্ুপে সঞ্চিত থাকে । শামুক যেমন তাহার ঘর-বাড়ী নিজের পিঠে লইয়া চলা ফেরা করে, উক্ত দেহধারী জীবও সেইরূপ এই কর্ণসূপ সঙ্গে সঙ্গে লইয়া, জন্ম হইতে জন্মাস্তরে চলাফেরা! করিয়া থাকে। এই কর্ম্মন্তুপই জীবের আবরণ। ইহাই তাহার প্ররুত স্বরূপ আবরণ করিয়া রাখে । এ সব কথা পরে বিস্তারিতভাবে বলা হইবে, তোমার আগ্রহে, আগেই সংক্ষেপে বলিতে হইল। ৪৪। তুমি যে সংশয়ের উল্লেখ করিলে, ভগবানের নিজমুখে গীতার-তত্ শুনিতে শুনিতে, অজ্ছনের মনেও এই সংশয় উদিত হইয়াছিল। উক্ত সংশয় এবং ভগবান কর্তৃক উহার সমাধান গীতার ষষ্ঠ অধ্যায়ে ৩৫ হইতে ৪৫ গ্লোকে কথিত হইয়াছে । উহা যথাস্থানে মনোযোগের সহিত পড়িতে অনুরোধ করি। গ্রন্থবাহুল্য পরিহারের জন্য উহাদিগকে উদ্ধৃত করিলাম না । কুরুক্ষেত্র সমর প্রাঙ্গণে উভয় পক্ষের অষ্টাদশ অক্ষৌহিণী পরম্পর যুদ্ধোন্মুখ সৈন্যদযূহের সমক্ষে, ধীর, স্থির, অপর্গ, উদাপীন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জনের রথে সারথের সাজে সাজিয়া, উদাত্ত কণ্ঠে যে অভয় বাণী উচ্চারণ করিয়াছিলেন, তাহা আজিও ভারতের আকাশে বাতাসে প্রতিধ্বনিত হইতেছে, এবং নরদেহধারী জীবের হৃদয়ে পুলক-স্পন্দন জাগাইতেছে। উহাই তোমার সংশয়ের সমাধান । ভগবানের উক্ত বাণীর মর্মকথা এই যে, “হে জীব! হতাশ হইও না। এখানকার-কিছুই বিফলে যায় না। “কল্যাণকৎ” কেহ কি ইহকালে কি পরকালে দুর্গতি প্রাপ্ত হয় না। যে ব্যক্তি ইহকালে আত্মোন্নতির পথে যতদুর অগ্রসর হইয়াছেন, পরজন্মে উপযুক্ত পরিস্থিতির মধ্যে জন্মগ্রহণ করিয়া, সেই স্থান হইতে আরও অগ্রসর হইবার পথে-যাইবার স্থযোগ প্রাপ্ত হন। নূতন দেহে পূর্বজন্মের সেই বুদ্ধিসংযোগ লাভ করেন। এমন কি ইচ্ছা না করিলেও, বাধ্য হইয়া, অবশভাবে সেই পূর্বাভাস হেতু ব্রক্ষনিষ্ঠ হন৷” স্থতরাং হতাশ হইবার কিছুই নাই। ৪৫1 এ সম্বন্ধে আর একটি কথা বলি যে, তোমার চেষ্টার ফল কি হইতেছে বা না হইতেছে, তাহা বুঝিতে পারা যায় না। একটা অতি সাধারণ দৃষ্টাস্তে ইহা আমরা বুঝিতে পারি। আমরা জানি যে, কোনও উর্বর ভূমিখও-যদি টি হী পর্ণ উন্মুক্ত থাকে__তাহাতে কোনও বীজ লাগাইলে, 4 রহ্সথত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত তাহা হইতে অঙ্কুর, পত্র, শাখা, কাণ্ড প্রভৃতি উৎপন্ন হইয়া প্রকাণ্ড বৃক্ষ আকারে প্রকটিত হয়। তবে উহার জন্ত অপেক্ষা করা প্রয়োজন । যদি আমি বীজ লাগানর পর-হইতে সকাল-বিকাল ছুই বেলা, উহা উঠাইয়! অঙ্কুর হইল কিনা, দেখিতে থাকি, তাহা হইলে অঙ্কুর কোনও কালেই উৎপন্ন হইবে ন! । বীজটি নষ্ট হইয়া যাইবে, ইহা বলা বাহুল্য । ধীর ভাবে অগ্থুরোৎ্পত্তির জন্য অপেক্ষা করাই আমার কর্তব্য। সেইরূপ-আমি এত করিলাম, অত কারলাম, এরূপ চিন্তায় ও উৎকণঠায় বিচলিত না হইয়া ধীর ভাবে অপেক্ষা করাই কর্তব্য। ইহা বুঝাইবার জন্য, ভাগবত এই আলোচনায় ১৯ প্রকরণে উদ্ধৃত ১১।১০।৬ 4/৯ [জন্ঞস্থর একটি বিশেষণ “অসত্বরঃ” দিয়াছেন ৷ উহার অর্থ আশা করি, এএম স্প্টগাবে হৃদয়সম হইল । এখন এখানে খিনি যাহা করিতেছেন, উহার এল অল্পই হউক, আর বেশীই হউক, বথাকালে হইবেই হইবে, ইহাতে সন্দেহ নাই । বাগানে আম গাছ রহিয়াছে। পৌষমাসে উহাকে দেখিলে কে এলিবে যে, বৈশাখে উহা অমৃতময় কল প্রসব করিবে। উপাসনা ক্ষেত্রেও ঠেইরপ ॥ অতএব ভয় পাইবার বা হতাশ হইবার কিছুই নাই। ভগবানের অভয় ঝাণী কলবতী হইবেই হইবে। ভাগবত বলিতেছেন ৫ মন্যেইকুতশ্চিদ্ভয়মচ্যুতন্ত পাদান্থুজোপাসনমত্র নিত্যম্‌। উ্বিগ্নবুদ্ধেরসদাত্মভাবাদ বিশ্বীত্বনা যত্র নিবর্ভৃতে ভীঃ॥ ভাগঃ ১১২৩১ আমার নিশ্চিত সিদ্ধান্ত এই যে, ভগবান অচযুতের পাদপদ্ম উপাসনা করিলে আত্যন্তিক কল্যাণ হয়, কিছু হইতে ভয় পাইতে হয় না । এই সংসারে দেহ, গেহ, জায়া, অপত্য, কুটুম্থাদি অসৎ বস্তুতে আত্মভাব নিবন্ধন, সর্বদা উদ্বিগ্নচিত্ত ব্যক্তিগণের ভয়, উক্ত উপাসনা হেতু, বিশ্বাত্মা৷ ভগবান কর্তৃক সর্বতোভাবে দূরীকৃত হয়। ১১1২।৩১ বর্তমান কাল বিপর্ধ্য়েউপযুক্ত গুরু প্রাপ্তি সম্ভব না এ আগ্রহশীল, জিজ্ঞান্, ভগবান বান্থদেবের নাম, ভক্তিযোগ সহকারে সর্বদা গ্রহণ করিলে, স্বার্থ সিদ্ধি হইয়া থাকে। মগগ্রণীত “নাম মহিমা” পুস্তকে বিস্তারিতভাবে ইহা! আলোচিত হইয়াছে। ১০) ২ অনুচ্ছেদ্ধে প্রারস্তিক সংশয়ের দ্বিতীয়াংশের সমাধান । ৪৬। উপরে (২) চিহ্নিত অনুচ্ছেদে প্রারম্ভিক সংশয়ের প্রথমাংশের সমাধান পূর্বেই কর! হইয়াছে। অধুনা দ্বিতীয়াংশের সমাধানে অগ্রসর হইতেছি। ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ ব্যাবহারিক জগতে, বিনা কোনও প্রাপ্তির প্র করে না, সত্য। ব্র্ধকে দর্শন, শ্রবণ, ৪৭ | য়োজনে লোকে কোনও কাধ্য অতএব সংশয় উত্থাপন করা হইয়াছে, ভূমা বা আত্মা বা মনন ও নিদিধ্যাসন, লোকে কি প্রয়োজনে করিবে? শিরোদেশে উদ্ধৃত শ্বেতাশ্বতর শ্রুতির ১1১১, মুণ্ক শ্রুতির ৩১৩ ও ৩২৯ স্বম্পষ্ট ভাবে, এই প্রয়োজনের পরিচয় দিতেছে । ভূমা, আত্মা বা! বরকে দর্শন, শ্রবণ, মনন ও নিদিধ্যাসন করিলে, উহাদের অনুষ্ঠান কর্তা, পি স্তরে উন্নীত হইয়া থাকে, তখন তাহার সমুদায় বন্ধন পাশ- হইতে মুক্তিপ্রাপ্ত হেতু সমুদায় ক্লেশ ্ষয়প্রাপ্ত, জন্মমৃত্যু হইতে অব্যাহতি লাভে ভগবানের পরমপদ প্রাপ্তি হইয়া থাকে। ভগবানের সহিত পরম সাম্য- ভাব প্রাপ্ত হয়এমন কি তিনি নিজে ক্র্দই হইয়া যান। ইহাই ত পরম ও চরম লাভ। ইহার সম্বন্ধে ভগবান গীতার ৬২২ গ্লোকে বলিতেছেন: যং লব্ধ চাপরং লাভং মন্যতে নাধিকং ততঃ। গীঃ ৬:২২ by যাহা পাইলে, তাহার অধিক আর কিছু অধিক লব্বব্য থাকে ন! । গীঃ ৬২২ উহাই সমুদায় প্রাপ্তির পরাকা্ঠা। উহাই নরদেহ প্রাপ্তির সম্পূর্ন সার্থকতা । উহাই স্বষ্ট-বিস্তারের উদ্দেশ্যের পরম ও চরম সিদ্ধি। উহাই জীবের স্বাতন্ত্া- কণার-অযথা পরিচালনে অযৃতলোক হইতে পরিচ্যুত্তির পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত । এ কারণ__ প্রত্যেক শ্রেয়: কামীর নিজের স্বাতন্থ্যকণা যথাযথভাবে প্রয়োগে, স্বরূপে প্রত্যাবর্তন করিবার চেষ্টা অতি অবশ্য কর্তব্য । ইহা নৃতন কিছু নহে। হারানে! অমূল্য রত্বের পুনঃ প্রাপ্তি । সুতরাং কে ইহার জন্য যত্ব করিবে না? ৪৮। আলোচ্য সুত্রে ব্যবহৃত চাঁরিটি পদের মধ্যে “অথ” ও “অতঃ” এই প্রথম দুইটির আলোচনায় আমরা, “ব্রক্মজিজ্ঞাসায়”” পূর্বকালীন অপরিহার্ধ্য প্রয়োজনগুলি, বুৰিবার প্রয়াস পাইয়াছি। উক্ত প্রয়োজনগুলি সাধিত হইলেই, “ব্রন্ষজিজ্ঞাসার” অধিকার লাভ হয়, তাহাও বুঝিয়াছি। এখন “ব্রহ্ম” বস্তুটি - কি, তাহা যথাসম্ভব বুঝিবার চেষ্টায় অগ্রপর হইতেছি। ভাষার দ্বারা উহার প্রকাশ অসম্ভব হইলেও, উহার দিগদর্শন জন্য, বাক্য ব্যবহার ভিন্ন অন্ত কোনও উপায় নাই। বিশেষতঃ “ব্ৰহ্ম” শান্্রযোনি, ইহা সত্রকার ১১৩ সুত্রে প্রতিষ্ঠিত করিবেন। শান্ত বাক্যসম্টি_ইহা সর্ববাদি সম্মত। স্থতরাং আমাদের এই আলোচন! বাক্য সাহায্যে করা সঙ্গত বটে। ১১) ব্ৰহ্ম । C | ৪৯। তৈত্তিরীয় শ্রুতি ২১ মন্ত্রে ্র্মনির্দেশে বলিতেছেন ₹_ ৬৯ ্রক্ষস্থত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত “সত্যংজ্ঞানমনস্তং ব্ৰহ্ম” ব্রহ্ম সত্য-__জ্ঞান_-অনন্ত স্বরূপ । সঙ্গে সঙ্গে ২৪ মন্ত্রে বলিলেন-_ যতো! বাচো নিবর্তন্তে অপ্রাপ্য মনসা সহ। আনন্দং ব্রহ্মাণো বিদ্বান ন বিভেতি কুতশ্চন ॥ ৬ তেঃ ২1৪ বাক্য ও মন তাহাকে না পাইয়া ফিরিয়া আসে, সেই আননম্বরূপ-তরদ্ধকে জানিলে, কিছু হইতে ভয় হয় না । তৈঃ ২1৪ এই উভয় মন্ত্র একত্র পাঠে অর্থ হয়, যে ব্রহ্ম সত্য- জ্ঞান__ অনন্ত আনন্দস্বরপ । বাক্য দ্বারা তাহার নির্দেশ বা মন দ্বারা তাহার চিন্তা__সম্তব নহে। অথচ তাঁহাকে জানা যায় এবং জানিলে সম্পূর্ণ অভয় প্রতিষ্ঠা লাভ হুইয়া থাকে। ভাগবত-ও ১০1১৩1৪৯ শ্লোকে “সত্যজ্ঞানানস্তাননদ” স্বরূপ বলিয়া» তাহাকে নির্দেশ করিয়াছেন । ছান্দোগ্য ও বৃহদারণ্যক শ্রুতি শিরোদেশে উদ্ধৃত মন্ত্দ্য়ে যথাক্রমে “ভূমা” ও “আত্মা” বলিয়া তাহারই নির্দেশ করিয়াছেন । এ্রতরেয় শ্রুতি ২1৩ মন্ত্রে প্রজ্ঞানং ব্রন’ বলিয়া তাহারই নির্দেশ করিয়াছেন । এই প্রকারে সেই একই পরমতত্ব, আমাদের বোধ সৌকর্্যার্থে, নানাপ্রকারে বিভিন্ন উপনিষদে নির্দেশিত হ্ইয়াছেন। তাহার নির্দেশক নামের কি অন্ত আছে? ইহা বুঝাইবার জন্য ভগবান স্বত্রকার “চরাচর ব্যাপাশ্রয়স্ত স্তাত্তদ্ব্যপদেশেো| ভক্তি-্তদ্ভাবভাবিত্বাঘ” ২।৩।১৭স্মত্র প্রণয়ন করিয়া সিদ্ধান্ত স্থাপন করিলেন যে, চরাচরে সমুদায় শব্দ মুখ্যরপে ব্রহ্মেরই বাচক-__ গৌণভাবে ততৃৎ পদার্থের বাচক মাত্র। এইরূপ হওয়াই তো সঙ্গত। জগতের অগণ্য জীব,__অভিব্যক্তির বিভিন্ন স্তরে ঁমান থাকা হেতু, তাহাদের চিন্তায় ধার! বিভিন্ন, সে কারণ, তাহাদের উপাসনা৷ বিভিন্ন হইবে, সন্দেহ কি? এই জন্য উপাসনায় বিভিন্ন আলম্বনও অতি প্রয়োজনীয় । ৫*। ছান্দোগ্য শ্রাতিতে ব্যবহৃত “ভৃমা” নামের ব্যাখ্যায় ভাগবত বলিতেছেন £__ ন ত্বাং বয়ং জড়ধিয়োমু বিদাম ভূমন্‌ কুটস্থমাদি পুরুষং জগতামধীশম্‌ ॥ ৯।১০।১৩ হে ভূমন্‌! আমরা জড়মতি। আপনি কৃটস্থ ( নিধ্বিকার ), আদি পুরুষ, জগদীশ্বর, আমরা আপনাকে কি করিয়া জানিতে পারি? ভাগঃ ৯1১০1১৩ € > খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ ৬১ কারণ, ত্বং বায়ুরগ্নিরবনী বিয়দশ্বুমাত্রাঃ, প্রাণেন্দিয়ানি হৃদয়ং চিদনুগ্রহশ্চ । সবর তুমেব সগুণো বিগুণম্চ ভুমন্‌, মান্যতদস্তাপি মনো বচস৷ নিরুক্তম্‌ ॥ ভাগবত ৭৯।৪৭ ইহার অর্থ ১১২ স্ত্রে দেওয়া হইয়াছে ইহার তাৎপৰ্য্য এই £-- হে ভূমন্‌! তুমি যখন জগতের যা কিছু সবই, আমাদের বাক্যে যাহা কিছু প্রকাশ পায়, মনের চিন্তা যাহা কিছু মনন করে, সবই যখন তুম, তখন আমরা বিশাল বিশ্বে একটি নগণ্য অতি সুদ্মর পরমাণু হইতেও ক্ষুদ্র হইয়া, তোমায় কি প্রকাশ করিব? ৫১। বৃহদারণ্যক শ্রুতি মন্ত্রে “আত্মা” পদ সম্বন্ধে ভাগবত বলিতেছেন £__ আত্মাইব্যয়োইগুণঃ শুদ্ধঃ স্বয়ং জ্যোতিরপাবতঃ। ভাগ ই ১২৮১২ আত্মা অব্যয় ( নিধিকার ), নিরগুণ, শুদ্ধ, স্বয়ম্রকাশ এবং অপাবৃত স্বভাব অর্থাৎ সর্বব্যাপী । এক এব পরো স্াত্মা সর্বেষামেব দেহিনাম্‌। নানেব গৃহাতে মূটে ধথ জ্যোতি ধৰ্থা নভঃ ॥ ১০1৫৪২৮ সমুদায় দেহধারীগণে একমাত্র বিশুদ্ধ পরমাত্ম| বিরাজমান । যৃঢ় ব্যক্তিগণ, জলে প্রতিবিদ্ধিত কুর্ধ্যাদির ন্যায়, অথরা৷ ঘটাদির দ্বারা পরিচ্ছিন্ন আকাশের ন্যায়, তাহাকে নানার ন্যায় জ্ঞান করিয়া থাকে । ভাগঃ ১০।৫৪।২৮ ্র্ষপদের বুৎপত্তিলভ্য অর্থ আগেই দেওয়া হইয়াছে। উক্ত অর্থের সহিত উপরে বিবৃত “‘ভূম!” ও “আত্মা” পদের ভাগবত সম্মত ব্যাখ্যা তুলনা করিলে, তিনি যে একই পর্যায়ভুক্ত, ইহা সহজে বুঝা যাইবে। ৫২। কেনোপনিষদের ১৪ মন্ত্রে বলিতেছেন £ অন্যদেব তদ্বিদিতাদথে৷ অবিদিতীদধি ॥ কেন ১1৪ বিদিতাৎ অর্থাং বিদ্‌ ক্রিয়ায় কর্মভৃত সমুদায় ব্যাকৃত প্ৰপঞ্চ এবং অবিদিতাৎ- অর্থাৎ তাহার বিপরীত-অবাকৃত ( অবিদ্যা লক্ষণ বিশিষ্ট ব্যাকৃত বীজ) সমুদায়কে অতিক্রম করিয়া, তাহাদের উপরে অবস্থিত । [ এই ব্যাখ্যা ভগবান শঙ্করাচার্যয সম্মত। ইহার অন্য এক সুন্দর অর্থ হইতে পারে। যথা,_তিমি বাক্য মনের অগোচর বলিয়া, বিদিত হইতে পারেন ন! অন্তপক্ষে তিনি আত্মস্বরপ__একারণ তাহাকে অবিদিতও বলা চলে না, কারণ, “আমি আছি” এ জ্ঞান প্রত্যেকের প্রতাক্ষ সিদ্ব--ইহা শান্তর পড়িঃ ৬২ ব্ৰহ্মন্তত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত শিথিতে হয় না এবং “আমি আছি” ইহা আমার অজ্ঞাত নহে-_ইহাও. প্রত্যেকের প্রত্যক্ষ সিদ্ধ নতুবা জগদ্‌ ব্যাপার সম্পাদন অসম্ভব হইয়া পড়ে। অতএব তাহাকে একাস্ত অবিদিতও বলা যায় না। এই হেতু শ্রুতি বলিলেন যে, তিনি বিদিত ও অবিদিত উভয়কে অতিক্রম করিয়া, নিজস্বরূপে বর্তমান রহিয়াছেন | ] উহাই যদি প্রকৃত তত্ব, তাহা! হইলে, তাঁহাকে জানা কি একান্ত অসম্ভব? একান্ত অসম্ভব হইলে, ব্রক্সত্র প্রণয়নে বা তাহার আলোচনায় কি উদ্দেশ্ত সিদ্ধ হইবে। শ্রুতি বলিতেছেন, শাস্ত্র পাঠে, তীক্ষ বুদ্ধি বলে, বা তর্ক-বিতর্ক বলে, তাহাকে জানা যায় না। তিনি যাহাকে “আপন জন” বলিয়া অঙ্গীকার করেন তাহার নিকটই আত্মপ্রকাশ করেন । কঠঃ ১)২।২২ মন্ত্রট এই :_ নায়মাত্মা গ্রবচনেন লভ্যো, ন মেধয়া ন বহুনা শ্রুতেন। যমেবৈষ বৃণুতে তেন লভ্য-স্তস্তৈষ আত্মা বিবৃগুতে তনুংস্বাম্‌ ॥ কঠ ৪ ১২২২ উপাসনার দ্বারা, তাঁহার “নিজ জন” রূপে কৃত হওয়া সম্ভব, ইহা বুঝাইবার জন্য -এবং মানবদেহধারী জীবকে উপাসনায় প্রবর্তনের জন্য, ব্রহ্ম-সুত্রের প্রয়াস । তৃতীয় অধ্যায়ে বিস্তারিতভাবে ইহার আলোচনা! স্বত্রকার করিয়াছেন । ৫৩। শ্বেতাশ্বতর শ্রুতি ৬২৩ মন্ত্রে সুস্পষ্ট বলিয়াছেন যে, শ্রুতির অভিপ্রায় সহজে বুঝিতে পার! সম্ভব নহে। উহা! বুঝিবার জন্য পরদেবতার প্রতি পরাভক্তি যেমন প্রয়োজনীয়, নিজের গুরুর প্রতিও সেরূপ পরাভক্তি প্রয়োজন । ভাগবত ১১৷১৭৷২২ শ্লোকে বলিতেছেন :__-“আচার্ধ্যং মাং বিজানীয়াৎ”__ আচার্য্য ব! গুরুকে সচ্চিদানন্দ সংশ্বরূপই জানিবে। এখানেও গুরুর আবশ্যকতা বুঝা গেল। আমার মনে হয় যে, যদি প্রয়াস ও আগ্রহ সন্বেও উপযুক্ত গুরু লাভ ন! হয় তাহা হইলে নিশ্টে্ভাবে বসিয়| ন! থাকিয়া জগব্গুরু ভীবানকেই এবং তাহার শবাপ শ্রীমদ্ভাগবতকেই গুরুর আসনে বসাইয়া গন্তব্য পথে অগ্রসর হওয়া শেয়: কামীর পক্ষে কর্তব্য । মৃত্তিকা গঠিত গুরুমূতি যদি একলব্যের অস্তবিষ্য শিক্ষা দিতে পারিয়াছিলেন, তখন সর্বজন পূজা ও শ্রুতির একাত্ত অনুগামী ীমদ্ভাগবত পরম তত্বের জ্ঞান প্রদানে সমর্থ কেন ন! হইবেন? ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্ুঃ ত ৫৪। এখন ভাগবত “্রহ্ধ” সম্বন্ধে কি বলিতেছেন, দেখ! যাউক্‌ ৷ বদন্তি তৎ তত্ববিদস্তত্বং যজ জ্ঞানমদ্বয়ম্‌ ৷ ভ্ৰঙ্মেতি পরমাত্মেতি ভগবানিতি শব্দ্যতে ৷ ভাগ £ ১২১১ এক অব্যয় জ্ঞান তত্বকেই, তত্ববিদ্গণের মধ্যে কেহ ব্রব্ম, কেহ পরমাত্মা, কেহ বা ভগবান আখ্যায় আখ্যায়িত করেন। ভাগ £ ১২১১ ভাগবত বলিতেছেন যে, পরমতত্বের যে তিনটি নাম, জ্ঞানী, যোগী ও ভক্ত সাধক সমাজে প্রচলিত, তাহ! উদ্ধৃত শ্লোকে বলিলাম । কিন্তু তাহার যে উক্ত তিনটি মাত্র নাম, ততোধিক নহে, ইহা মনে করিও না। প্রকৃতপক্ষে “স সর্ধনামা, স চবিশ্বর্ূপঃ” (ভাগ £ ৪।২৩)। শ্রুতি তাহাকে “অশব্দমম্পর্শমরূপম্‌” (কঠ ১৩১৫ ) বলিয়া তাহার নির্দেশ দিয়াছেন বটে। স্বরূপতঃ তিনি তাহাই। কিন্ত সমকালে তিনি অরূপ হইলেও উরুত্ূপ বা বিশ্বরূপ। এজন্য ৮৩।৯ শ্লোকে “অরূপায়োরুরূপায়»” বলিয়া! তাহাকে নমস্কার করিয়াছি । উরুরূপ ধারণ করিবার কারণ কি শুনিবে? যোহনুগ্রহার্থং ভজতাং পাদমূলম্‌ নামরূপো ভগবাননন্তঃ ৷ নামানি রূপানি চ জন্ম কর্ম্মাভি ভেজে স মহাং পরমঃ প্রসীদতু ॥ উ৬.৪।২৮ সেই পরমতত্ব স্বরূপ অনস্তদেব, স্বরূপতঃ নামব্ূপ রহিত হইলেও তাহার পাদপক্জ ভজনকারী ভক্তগণের অঙ্ুগ্রহ করিবার জন্য বহু বহু নাম-রূপ ধারণে মর্ত্যধামে জন্মগ্রহণ করিয়া, বহু কম্ম আচরণ করেন। ৬।৪।২৮ রাম পূর্ব তাপনী শ্রুতি স্পষ্ট বলিতেছেন £_ চিন্তা দ্বিতীয়স্ত নিষলন্তাশরীরিণঃ । উপাসকানাং কাধযার্থং ব্রহ্মণো রূপকল্পনা ॥ রাম পূঃ ত! ১।৭ চিন্ময়, অদ্বিতীয়, স্বর্ণ অরূপ-_পরত্রদ্ষের রূপ কল্পনা উপাসকগণের হিতের জন্য । রাম পুঃ তা ১৭ ৫৫1 এরূপ .না করিলে ক্ষুদ্র জীবের উপায় কি? ভাগবত ১২৮৪৩ শ্লোকে বলিতেছেন “আত্মনি গৃঢ়বোধম্”। তীহার দেহ বা আত্মা তাহার স্বরূপ হইতে অভিন্ন বলিয়া, তাহার তত্ব তাহাতেই নিগুঢ় এবং উহা তাহার দেহ হইতে অভিন্ন। অতএব জীব হিতের জন্য উক্ত তব প্রকাশ করিতে হইলে, তাঁহার স্বরূপ অপ্রচ্যুত তাবে বজায় রাখিয়া তাঁহাকে নামরূপের জগতে ৬৪ ব্ৰহ্স্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত নামরূপ গ্রহণ করিয়া অভিব্যক্ত হইতে হয়। এই অভিব্যক্তি তৎকালীন জীবিত জীবগণের চক্ষের সম্মুখে হইলেও কি সকলে তাহাকে জানিতে পারে? তাহা নয়। তিনি যে সকল জীবকে নিজের “স্বজন বলিয়া বরণ করেন, তাহারাই তাঁহাকে চিনিয়া ইহ জীবনেই পরসপুরুঘার্থ লাভ করতে পারেন। ইহাই উপরে উদ্ধৃত কঠ শ্রুতির ১1২২২ মন্ত্রের অভপ্রায়। ৫৬1 তবে ইহা মনে রাখিতে হইবে যে, প্রত্যেক অধিকারী মানবের ভজন্ত কি ভগবানের মৃত্তি ধারণ করিয়া মর্তযধামে প্রকটিত হুইবার প্রয়োজন? তাহা নহে। সমষ্ট জীব কল্যাণের জন্য এবং গীতায় ৪1৭-৮ শ্লোকদ্বয়ে কথিত বিশ্বল্যাণ সাধনের প্রয়োজন হইলেই ভগবান আকার প্রকটিত করিয়া স্থুল দেহে আবিভূ্তি হন। বাটি জীবের জন্য পৃথক্‌ ব্যবস্থী_ইহা ভাগবত ৩1৯১১ শ্লোকে বিশদভাবে বলিয়াছেন । উক্ত শ্লোক ১1২৩০, স্ত্রের আলোচনায় উদ্ধত হইয়াছে । বাহুল্য পরিহারের জন্য এখানে উঠাইতে বিরত হইলাম। উহার সরল অর্থ এই £_যে সকল মানবের হ্ৃদয়পন্ম ভগবানের প্রতি ভক্তযোগ দ্বারা পরিশোধিত হইয়াছে, তাহারা ভগবানের যে মূত্তি নিজেদের ইষ্টযূত্তি রূপে দেখিতে চাহেন, ভগবান্‌ তাহাদের হৃদয়ে সেই মুদ্তিতেই প্রকটিত হুইয়া তাঁহাদের সর্বার্থ সিদ্ধি করেন। ইহাই কঠ শ্রুতির স্বজন রূপে বরণ। ইহা অহৈতুক বা যথেচ্ছাচারের দৃষ্টান্ত নহে। এই বরণের জন্য অনেক কিছু করিবার আছে, বুঝা গেল। আরও বুঝা গেল যে, ভগবত্তত্ অতি ছুক্ঞে্ বলিয়া, এবং মানবের বাক্য-_মনের অগোচর হইলেও, তাঁহার কৃপা তাহার তত্ব বা স্বরূপ অধিকারী ভক্তের নিকট প্রকাশিত করে । তখনই যিনি অজ্ঞ, তিনি জ্ঞেয় হইয়া পড়েন। উপাসনার প্রয়োজনীয়তা এইখানে । ৫৭। ভগবান ত আগ্চকাম, তিনি কি অজ্ঞানাচ্ছন্ন ক্ষুদ্ধ মানবের পুজার কাঙ্গাল? তাহা নয়। ভাগবত বলিতেছেন £-- নৈবাত্মনঃ প্রভূরয়ং নিজলাভগূর্ণো মীনং জনাদ'বিহষঃ করুণোবৃণীতে ৷ যদ্‌ জ্জনে। ভগবতে বিদধীত মানং তচ্চাত্মনে প্রতিমুখস্ত যথামুখঞ্রী ॥ ভাগ ৭৯1১০ ভগবান হরি সদ! নিজলাভে পূর্ন, তিনি আপনার নিমিত্ত অবিদ্বান শুর ব্যক্তিদিগের পূজা গ্রহণ করেন না। দয়! স্বভাব প্রযুক্ত এ সকল ব্যক্তির হিতাৰ্থে ই তাহা স্বীকার করিয়া থাকেন। যে হেতু আপনার মুখে তিলকাদি শী রচিত হইলেই প্রতিবিশ্বিত মুখের শোভা হইয়া থাকে রে প্রতিবিষ্বে ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ সঃ ৬৫ এ শ্রী করিতে পারা যায় না, তাহার ন্যায় লোকের! ভগবানের প্রতি ধনাদি থারা যে সম্মান বিধান করে, তাহা তাহাদের আপনার নিমিত্তই হয়। ৭1৯১০ ( ৬বামনারা সণ বিদ্যারত্ব মহাশয়ের অর্থ) [ আমি মতরুত “মাতৃপৃজা” পুস্তকে এই শ্লোক উদ্ধৃত করিয়া বিস্তারিত অর্থ করিয়াছি ] ১২) ভগ্গবদুপামন! কি মানবের ইচ্ছাীন? ৫৮। মনে সহজেই সন্দেহ হয় যে, ভগবদুপাসনা কি মানবের ইচ্ছাধীন ? আমার মনে হয় তাহা নহে। ইহা জগদ্বিধারণের অমোঘ নিয়মে ঘটিতে বাধ্য । আমরা জানি যে, মানব যত অসভ্য, বর্বর, অজ্ঞান হউক্‌ ন! কেন, সকলেই কোনও না কোনও প্রকারে কোনও অজ্ঞাত মহাঁশক্তির নিকট মস্তক অবনত করে। দৃষ্াস্তের উল্লেখ করিয়া! গ্রন্থ বাহুল্যের প্রয়োজন নাই। এরূপ হওয়াই সর্ধতোভাবে সঙ্গত। ভগবান হৃত্রকার ২1১৩৪ স্তরে বিশ্বহুষ্টি ভগবানের “লীলাকৈবল্যমাত্র” অন্য কথায় ক্রীড়ামাত্র__ইহা প্রতিপাদিত করিবেন। ভাগবতও ৮২২২০ শ্লোকে বলিতেছেন £__ ক্রীভার্থমাত্বন ইদং ত্রিজগৎ কৃতং তে। ৮২২২০ __ভূঃ, ভুবঃ, স্বঃ এই তিন জগত তুমি নিজের ক্রীড়ার্থে রচনা করিয়াছ। ৮২২২০ ক্রীড়া একা একা হয় না, এজন্য বহুত্বের প্রকটন। জীবগণ উক্ত খেলায় যোগদান করিয়া আনন্দে আপ্লুত হইবে__ইহাই খেলার উদ্দেশ্য । খেল! করিতে হইলে, খেলুড়েদিগকে, খেলার সাধক নিয়ম পরম্পরায় সীমার মধ্যে স্বান্ত্য দান প্রয়োজন । নতুবা খেলা জমে না। সেইজন্য জীবকে সীমাবদ্ধ স্বাতন্ত্য দান । জীব যদি নিজের উক্ত স্বাতত্ত্রাকণার অযথা! পরিচালনে নিজের ইচ্ছায় খেলার নিয়ম ভঙ্গ করে, তজ্ন্য উক্ত নিয়মান্ুসারেই জীবকে শান্তি ভোগ করিতে হইবে, তাহাতে সন্দেহ কি? যুক্তিতেও ইহা আমরা বুঝিতে পারি। জীব অমুতলোকের অধিবাসী । বিশ্বরঙ্গমঞ্চে, ভগবানের খেলার সঙ্গী। খেলার নিয়ম ভঙ্গ হেতু শাস্তি ভোগ ও উহার ভোগের পর, অন্তপ্ত হইয়া, পুনরায় নিয়মানুবর্তী হইবার চেষ্টা করিলে, পুনরায় খেলার সঙ্গীরপে গ্রহণ সঙ্গতই বটে । এই অনুতপ্ত জীবই সাধক বা উপাসক- ক্রমোদ্নতির যে কোনও স্তরেই অবস্থিত হউন না কেন, জগদ্বিধারণের অন্য কথায় বিশ্বরঙ্গমঞ্চে খেলার, ৫ ৬৬ বর্গন্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত অমোঘ নিয়মে, স্ব স্বরূপে অর্থাৎ অমৃতলোকের অধিবাসীরূপে প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা করিতে বাধ্য। উদ্ধত ভাগবতের ৭1৯১০ শ্লোক ইহারই পূজার কথা বলিয়াছেন । এই সংক্ষেপ আলোচনা হইতে বুঝা গেল, ভগবদুপাসনা__ জীবের নিজ কল্যাণ সাধনের জন্তই | ভগবান করুণাসাগর ৷ তিনি উপাসনা সিদ্ধির জন্য সর্ন্ববিধ স্থযোগ দান করিতে সর্বদাই প্রস্তত। ইহা ক্রমশঃ বিশদ হইবে। অধুনা এই স্বত্রের আলোচনায় ২৩ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ভাগবতের ১১।২৯।৬ শ্লোকে দুষ্টি আকর্ষণ করি। ১৩) স্বজনরূপে বরণের ভাৎপর্য্য। ৫৯। উপরে উদ্ধৃত কঠশ্রুততির ১।২।২২ মন্ত্রের স্বজন রূপে বরণ করিয়া লইবার যে অর্থ দেওয়া হইয়াছে, তাহার. তাতপর্ধ্য বিশেষভাবে বুঝা গেল। খেলার সঙ্গী স্বজন ত বটেই, ভগবানও তাহার-ম্ব'তন্ত্যকণায় হস্তক্ষেপ না করিয়া, উহারই মধ্য দিয়া, তাহার স্বইচ্ছার পরিচালনে; প্রত্যাবর্তনের পথে ভগবানের দিকে ফিরিলেই, তিনি তাহাকে বুকে করিয়া লইবার জন্য সর্বদাই প্রস্তুত, ইহা! বিশর্ভাবে বুঝা গেল! তবে এ প্রসঙ্গে, এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন মনে করি যে, উক্ত মন্ত্রের “যমেবৈষ বৃণুতে” বাক্যাংশে “যম” পদে সাধক ও “এষ” পদে আত্মা গ্রহণ না করিয়া, ভগবান শঙ্করাচার্ধ্য “যম্‌” পদে আত্মা ও “এষ” পদে সাধক গ্রহণ করিয়া, অর্থ করিয়াছেন, “যে সাধক এই আত্মাকে বরণ করেন” । এ প্রকার বিভিন্ন অর্থে কোনও বিশেষ অসঙ্গতি হয় নাই, কেবল জীবের বা সাধকের কর্তৃত্ব বুদ্ধির প্রাধান্য দেওয়া হইয়াছে মাত্র। ৬০। -কঠশ্রুতির উক্ত ১1২২২ মন্ত্রের প্রথম যে অর্থ দেওয়া হইয়াছে, তাহার বিরুদ্ধে আপত্তি উত্থাপিত হইতে পারে যে, ভগবানের কি “ন্ব”--্পর” মতি আছে? “স্বজন রূপে বরণ করেন” বলায়, কেহ স্বজন এবং অপর কেহ স্বজন নহে, এরূপ সন্দেহ ত মনে স্বভাবত:ই উদয় হইতে পারে৷ 'ইহা কি সঙ্গত? এপ্রকার আপত্তি নিরসনের জন্য ভগবান স্ত্রকার ২1১৩৫ কুত্র প্রণয়ন করিয়া প্রতিপাদিত করিয়াছেন, যে ভগবানে “বৈষম্য নৈর্ঘ প্য”-অর্থাৎ, বিষমতা, নিরদয়তা প্রভৃতি নাই । ইহার আলোচন! যথাস্থানে করা যাইবে। ভাগবত উক্ত আপত্তির উত্তরে বলিতেছেন :__ সংসেবয়া স্বরতরোরিব তে প্রসাদঃ সেবামুরূপমুদ্য়ো ন পরাবরত্বম্‌ ৷ ৭:৯!২৬ তোমার প্রসাদ পরারথনাহুসারে. ফলদাতা কল্পতরুর ্যায়। সেবাহুসারেই > খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ সঃ ৬৭ ফলদান করিয়া থাক। উহাতে উত্তম অধম বিচার কর না। ৭1৯২৬ অন্ত্রও ভাগবত বলিতেছেন £__ সর্বাত্মনঃ সমদৃশে! বিষমঃ স্বভাবে ক্তপ্রিয়ে যদি কল্পতরু স্বভাব ॥ ৮1২৩৬ তুমি সকলের আত্মস্বরূপ, সর্বত্র তোমার সমদৃষ্টি। তবে ভক্ত প্রিয় বলিয়া তোমার যে বিষম স্বভাব, দৃণ্ঠতঃ প্রতীত হয়, তাহার কারণ তুমি, কল্পতরু স্বভাব বশতঃ সমীপাগত প্রার্থনাকারিগণের প্রার্থনা পূরণ করিয়া থাক। এই সমীপাগতগণই ভক্ত বা সাধক নামে পরিচিত। ৮২৩৬ সল্পতরু সকলের প্রতি সমভাবাপন্ন। উত্তম-অধম .বা স্ব-পর-ভেদ- বিচার নাই। যেই হউক্‌ না কেন, কল্পতরুর সমীপে গিয়া, ফল প্রার্থনা করিলে, কল্পতরু তাহা নির্বিচারে দান করিয়া থাকে। সেইরূপ ভগবানের “উপ” সমীপে, “আসন” লইয়া গিয়া, তাহাতে বসিয়া তাহার নিকট যাহা প্রার্থনা করা যায়, তিনি তাহা দান করেন। কোনও প্রকার কার্পণ্য নাই। এমন কি, যদি উক্ত ব্যক্তি প্রার্থনা করেন, তিনি আত্মদান করিতেও কুণ্ঠিত হন না। এ প্রসঙ্গে আভাস শীর্ষক প্রস্তাবনায় ২৫ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত স্লোকে দৃষ্টি আকর্ষণ করি। ৬১। উপরে যে কল্পতরুর দৃষ্টান্ত দেওয়া হইল, তাহা কেবল সমীপে আগত বা উপাসনাকারিদিগের সম্বন্ধে প্রযোজ্য । যাহার! কল্পতরুর সমীপে না আসিয়া দূরে থাকেন, কল্পতরু তাহাদের সমন্ধে উদাসীন থাকেন। কিন্ত ভগবান কাহারও সম্বন্ধে উদাসীন থাকিতে পারেন না। তিনি ত দেশ-কাল- পরিচ্ছেদ শূন্ত--এফারণ তাঁহার কাছে দুর-নিকট নাই। তিনি প্রত্যেকের অন্তরে অন্তর্ধ্যামীৰপে অবস্থিত থাকিয়া জগদ্ব্যাপার সম্পাদন করিতেছেন । মানবদেহধারী যে সকল জীব, তাহার প্রসঙ্গ হইতে দূরে থাকে, তাহার সন্ধে কখনও কোনও চিন্তা করেন না, তিনি কি তাহাদিগকে পরিত্যাগ করিতে পারেন? সকলের অন্তধ্যামী ভগবান, সমস্ত ব্যষ্টি মানবের এবং সে কারণ তাঁহাদেরও সম্বন্ধে প্রত্যেকের উপযোগী ব্যবস্থার বিধান করিয়া প্রত্যেককে ক্রমোন্নতির উচ্চ হইতে উচ্চতর সোপানে উন্নীত করিতেছেন অথচ কেহই ইহা অনুভব করিতে পারিতেছে না, প্রত্যেকেই মনে বরে, যেন নিজ নিজ স্বাধীন ইচ্ছার ও চেষ্টার পরিচালনে ক্রমশঃ উন্নত স্তরে আরোহণ করিতেছে। ইহা প্রাকৃতিক নিয়মের-_অন্ত কথায় জগদ্‌ বিধারণের অমোঘ নিয়মের ক্রিয়া । ৮ ্রঙ্মস্থত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত ইহার" সহিত মানব যদি নিজের আত্মিক শক্তি, জ্ঞানপূরব্ক নিয়োগ করিতে পারে, তাহা হইলে উন্নতি শীঘ্র শীস্রই সংঘটিত হইবে, তাহাতে সন্দেহ কি? ছান্দ্যোগ' শ্রতি ১/১* যন্ত্রে ইহাই বলিয়াছেন_-“যদেব বিছ্যয়া করোতি শরদ্ধয়োপনিষদা তদেব বীর্ধ্যবত্তরং ভবতি |” ইহা আগেও বল! হইয়াছে! ১৪) ত্ৰহ্ম= অদ্বয়জ্ঞান- শগবান। ৬২। ভাগবত অনেক উপাদেয় শ্লোকে ভগবতত্ বা ব্রদ্ষতত্ব আলোচনা করিয়াছেন । উহাদের কাহাকে ছাড়িব, কাহাকে বা গ্রহণ করিব। অল্প কয়েকটি গ্রহণ করিয়া কর্তব্য সমাধা করিতেছি । উপরে উদ্ধৃত ১২।১১ শ্লোকে যে অন্বয় জ্ঞানের কথা বল! হইয়াছে, তাহার কিছু পরিচয় দিতেছেন £__ (বশুদ্ধং কেবলং জ্ঞানং প্রত্যক্‌ সম্যগবস্থিতম্‌ । সত্যং পূর্ণমনাদ্যন্তং নিগুণম্‌ নিত্যমদ্ধযম্‌ ॥ ভাগ ২,৬৩৮ তিনি বিশুদ্ধ, কেবল অর্থাৎ একমাত্র বা অয় জ্ঞান স্বরূপ, যে জ্ঞান অবিদ্াসম্পকক্ত নহে, জীবযাত্রের অস্তরে অনুভূতি স্বরূপে সম্যক্‌ অবস্থিত, অর্থাৎ সর্বত্র ব্যাপিয়া অবস্থান করিতেছেন। সেই জ্ঞানই একমাত্র সত্য, তাহার সত্যতার উপর, জীব 'ও জগতের সত্যতা! প্রতিষ্ঠিত, একারণ উহাই পরম সত্য, সেজন্য চিরপূর্ণ। উহা আগ্ঠন্তহীন-__স্ৃতরাং নিত্য । নিগুণ- একারণ গুণ-ক্ষোভ বশত: তাহাতে কোনও চাঞ্চল্য নাই-_-তিনি প্রাকৃত গুণের অতীত। তিনি অদয়-তিনি ভিন্ন পৃথক্‌ বস্তু কিছুই নাই । ২৷৬৷৩৮ উদ্ধৃত ঞ্জোকে “জ্ঞানং” পদের বিশেষণ কয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করি, আমাদের পরিচিত জ্ঞান-অজ্ঞানের অপেক্ষা রাখে, একারণ উহ! “সম্যক অবস্থিত” নহে। কিন্ত আলোচ্য ব্ৰহ্ম স্বরপাত্মক জ্ঞান__নিরপেক্ষ জ্ঞান-সে কারণ উহাই “সম্যক অবস্থিত” । সিনেমা গৃহে দৃশ্ুপটের পশ্চাতে অত্যুজ্জল আলোক-ইহার দৃষ্টাস্তরপে উল্লেখ করা যাইতে পারে। উক্ত আলোক সিনেমা গৃহে ব্যবহৃত ছবিগণের ধারাবাহিক অভিব্যক্তি দৃতপটের উপর প্রকটিত করিয়া দর্শকমণ্ডলীর আনন্দের কারণ হয়। কিন্তু উহা কি ছবি সকলের, কি দৃশ-পটের, কি দর্শক মণ্ডলীর কোনও অপেক্ষা রাখে না। অভিনয়ান্তে দর্শকগণ চলিয়া গেলেও দৃগপট সরাইয়া লইলেও উক্ত মালোক তুলা সমুজ্জল ভাগে বর্তমান থাকে-একারণ উহ| “সম্যক অবস্থিতির” ৃষ্টাস্ত। উহা “প্রত্যক্‌” (প্রতি+-অঞ্4-কিপ,) অর্থাৎ সর্ধান্তৃতি স্বরূপ বলিয়া কোনও বিশেষ গত অনুসতি ছারা বিচলিত হয় না। উহা-“অনাগ্ন্ ১খঃ। ১ পাঃ। ১ আধ। ১ স্থুং ৬৯ আদি-জন্ম ও অস্ত_নাশ-_উভয়শৃষ্_অর্থাৎ ষড়বিকারের আদি ও অস্ত বিকার শূন্য সেই হেতু উক্ত উভয় সীমার অন্তভুক্তি বিকার-_চতুষ্টয়-_অন্য কথায় অস্তিত্ব, বৃদ্ধি, বিপরিণাম, অপক্ষয়__উহাতে বর্তমান নাই। আমাদের পরিচিত অস্তিত্ব আপেক্ষিক, উহা অনস্তিত্ব বা নাশের অপেক্ষ| রাখে_-সে প্রকার আপেক্ষিক অস্তিত্ব উহাতে নাই। উহাই একমাত্র “সত্য” বা নিরপেক্ষ অস্তিত্ব বিশিষ্ট । উহারই অস্তিত্ব হেতু, প্রপঞ্চের অবভ্তাসনান অস্তিত্বের প্রতীতি হইয়া থাকে । নিজের স্বরপানবন্দী সংখ্যাতীত গুণে গুণবান্‌ হইলেও, আমাদের পরিচিত প্রা ণতিক গুণের সহিত সম্পর্ক নাই বলিয়া, আমাদের ভাষায় নিগুরণ। “নিত্যমদমম্”-_-আমাদের দ্বৈত প্রতীতির সময়েও পরমার্থতঃ-অদ্বয়। এই বিশেষণগুলির সার্থকতা ক্রমশঃ উপলব্ধ হুইবে। ৬৩। উপরে বলিয়াছি যে, যে সকল মানবদেহুধারী জীব; ভগবানের “উপ” সমীপে “আসন” গ্রহণ করে না_অন্য কথায় জ্ঞানতঃ উপাসনা করেন না, ভগবান্‌ তাহাদের প্রতিও উদাসীন থাকিতে পারেন না। বর্তমান আলোচ্য শ্লোক হইতে ইহার স্পষ্ট আভাস পাইতেছি। তিনি প্রত্যেকের অন্তরে অন্তর্ধামীরূপে অবস্থিত আছেন, অনুভূতি রূপে প্রতি জীবের আত্মায় আত্মা হইয়া সঙ্গে সঙ্গে ফিরিতেছেন। জীবের স্বাতন্র্য রক্ষা করিয়া, প্রতিক্ষণে, তাহার অনুভূতি, মনোরত্তি প্রভৃতি, উক্ত জীবের অজ্ঞাতসারে, তাহার দ্বারাই উন্নতির পথে পরিচালিত করিতেছেন। ইহাতে একসঙ্গে অনেকগুলি উদ্দেশ্য সাধিত হইল (১) সর্বশক্তিমান হইলেও, জীবের স্বাতন্ত্রের বিরোধী কিছুই করা হইল না। (২) স্বাতন্া রক্ষা কুরা হইল। (৩) ক্রমোন্নতির পথে অগ্রসর : হইবার স্থযোগ, জীবকে দেওয়া হইল। (৪) জীব বুঝিল যে, সে তাহার স্বাতন্তরোর ইচ্ছামত পরিচালনে নিজেই ইহা সম্পাদন করিল। (৫) ভগবানের জীব বংসলতা প্রকাশ পাইল। (৬) তিনি যে অপার করুণাময়, তাহাও প্রকটিত হইল। এবং জীব শত অপরাধে অপরাধী হইলেও, ভগবান, তাহার অপরাধ গ্রহণ করেন না, জানানো হইল। ৬৪। ভাগবতের উদ্ধৃত ২৬৩৮ শ্লোকে কথিত বিশুদ্ধ, অয় জ্ঞানই বাস্থদেব বা সগুণ ও সাকার ভগবান । জ্ঞানং বিশুদ্ধং পরমার্থমেকমনন্তরং ত্ববহিত্রহ্ম সত্যম্‌ ৷ প্রত্যক্‌ প্রশান্তং ভগবচ্ছব্দসংজ্ঞং যদ বাসুদেবং কবয়ো বন্তি ॥ ৫1১২১১ ৭০ রকষস্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত বিশুদ্ধ, বাহাত্যস্তরশৃণ্য__( অর্থাৎ স্থুল-হুন্ম সকলের অন্তরে, বাহিরে বর্তমান) অতএব পরিপূর্ণ, অপরিচ্ছিন্,, নির্বিকার যে জ্ঞান তাহাই পরমার্থ সত্য, তাহাই ্হ্ম। সেই জ্ঞানেরই ভগবৎ সংজ্ঞা । তাহাকেই পণ্ডিতগণ বাস্মদেব বলিয়া থাকেন । ৫১২১১ তিনি সুক্মাতিসুন্ম বলিয়া শূন্যবৎ কল্পিত হইলেও, অভাবাত্মক শূন্য নহেন। প্রকৃত পক্ষে তিনিই পরমভাব পদার্থ, এ কারণ অশূন্ত স্বর্ূপ। ভক্তগণ তাহাকেই ভগবান্‌ বাস্থদের বলিয়া কীর্তন করিয়া থাকেন। ভাগঃ ৯৯৪০ যত্তদ্‌ ব্ৰহ্ম পরং স্ুক্মমশূন্যং শুন্যকল্পিতম্‌ । ভগবান বাস্থুদেবেতি যং গৃণন্তি হি সাত্বতাঃ ৯.৯1৪০ _ জগতে যাহ! কিছু বর্তমান ; কিছুই তাহা হইতে পৃথক নহেন। জ্ঞানমাত্রং পরং ব্রহ্ম পরমাত্রেশ্বরঃ পুমান্‌। দৃশ্যাদিভিঃ পৃথগ ভাবৈৰ্ভগবানেক ঈয়তে ॥ ৩৩২২১ জ্ঞান মাত্র স্বরপ পরমততৃই, পরব্রহ্ধ, পরমাত্মা, পরয়েশ্বর, পরমপুরুষ নামে প্রসিদ্ধ। এক ভগবানই জ্ঞান মাত্র রূপে সকল পদার্থে সম হইলেও দৃশ্ঠাদি পৃথগ, ভাবে__অর্থাৎ দৃগ্ত-দুষ্টা-দর্শন, শ্রোতা-শ্রাব্য-শ্রব্ণ, প্রভৃতি পৃথগ, ভাবে প্রতীয়মান হইয়া থাকেন । ৩৩২২১ ১৫) বিধি-নিষেধ উন্তয়ই-ব্রন্মে বা ভগবাঁনে পর্যবসিভ। ৬৫) তাহা হইলেও কি তিনি ইন্দ্ৰিয় বা মনের দ্বারা গ্রাহা? ভাগবত বলিতেছেন £__নয়। নৈতন্মনো৷ বিশতি বাগুত চক্ষুরাত্মা, প্রাণেন্দ্রিয়াণি চ যথানলমচ্চিষঃ স্বাঃ। শব্দোহপি বোধকনিষেধতয়াত্বমূলমর্ধোক্তমাত যদতে ন নিষেধসিদ্ধিঃ ॥ ১১|৩,৩৭ যেমন স্বীয় অংশতৃত বিস্ফুলিক্গ সকল, অগ্নিরাশিকে দাহ বা- প্রকাশ করিতে পারে না, সেইরূপ মনঃ বাক্‌, চক্ষু, বুদ্ধি, প্রাণ, ইন্দিয় সকল (যাহারা তাহা হইতেই অভিব্যক্ত ও কাৰ্য্যশল ), তাহাতে প্রবেশ করিতে, অর্থাৎ তাহাকে প্রকাশ করিতে পারে না। অন্তপক্ষে, যিনি ভিন্ন নিষেধের সমাপ্তি নাই, বাক্য তাহাকে অর্থোক্তরূপে “তন্ন তন্ন” (তাহা নয়, তাহা নয়) বলিয়া ব্যক্ত করে শাত্র, সাক্ষাৎ সম্বন্ধে বলিতে সমর্থ হয় না| ১১1৩]৩৭ ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ সঃ এক কথায় বিধি-নিষেধ উভয়েই তাহাতে পর্যবসিত। বিধিমুখে যেমন তাহাকে প্রকাশ করা৷ অসম্ভব, নিষেধমুখেও সেইরপ-অর্থাৎ নিষেধমুখে “নেতি নেতি” বলিলে, ইহা নয়, ইহা নয় ত বটে__ইহার উপরে অনেক কিছু অকথিত রহিয়া গেল। ভগবান্‌ স্থত্রকার “প্রকতৈতারত্বং হি প্রতিষেধতি, ততোব্রবীতি চ ভৃয়””--৩।২২২ সুত্রে ইহা প্রতিপাদিত করিয়াছেন, যথাস্থানে ভষ্টব্য : ৬৬। মন+ প্রাণ, ইন্জিয়গণই বা কি করিয়া তাহাকে প্রকাশ করিবে? উহার ত তাহার দ্বারা পরিচালিত হুইয়াই কার্ধ্যশীল হইয়৷ থাকে। এবং স্বয়ং জ্যোতিরজো ই্রমেয়ো মহানুভূতিঃ সকলানুভূতিঃ ৷ একোইদ্বিতীয়ো৷ বচসাং বিরামে যেনেষিত| বাঁগসবশ্চরন্তি ॥ ভাঁঃ ১১২৮৩৬ এই পরমাআা স্বয়ং জ্যোতঃ--স্বপ্রকাশ (ইহাকে প্রকাশের জন্য অন্ত কোনও প্রকাশকের প্রয়োজন নাই), ইনি অজ, অগ্রমেয় ( সর্বববিধ প্রমাণের অগোচর ), মহানুভূতি (চিদ্ঘন) সকলাম্ভত্ি (সর্বভূতেশ অস্তভূতির মূলে তিনি, একারণ সর্বজ্ঞ ), অদ্বিতীয় ( বিজাতীয় ভেদ রহিত), বাক্যের অগোচর, কারণ তাহার ছারা প্রেরিত হইয়াই প্রাণ ও বাক্য ( সমুদায় জ্ঞানেন্দড্রিয় ও কর্্মেন্দ্রিয় ) স্ব স্ব ব্যাপারে বিচরণ করে । ১১।২৮।৩৬ মহানুভূতি ও সকলানুভূতি, এই দুই পদে ভাগবত কি বলিতে চাহিতেছেন, তাহা আমরা তড়িৎ্শক্তি উৎপাদনের কেন্দ্র ( Power House ) হইতে সমগ্র নগরে তড়িৎ শক্তি পরিচালনের দৃষ্টান্তে বিশদ্‌ ধারণা কারতে পারি। প্রত্যেক ব্যষ্টি জীবের বিভিন্ন ভাবের, বিভিন্ন চিন্তার, বিভিন্ন বস্তুর, বিভিন্ন অনুভূতির মূলে কেন্দ্রীভূত সমষ্টি অনুভূতি স্বরূপ, ব্রহ্মা বা ভগবান্‌ থাকিয়া, উহাদিগকে নিয়ন্ত্রণ করিতেছেন । যাহা হউক্‌, যখন বাক্য, মন, প্রাণ, ইন্দ্রিয় প্ভৃতির দ্বারা তাঁহাকে জনিবার উপায় নাই, তখন তীহার চরণে শরণ গ্রহণ করিয়া অজন্স প্রণতি নিবেদন ভিন্ন আর উপায় কি? তাই ভাগবত বলিতেছেন £_ নমস্তে সর্ব্বভীবায় ত্রন্মণেইনভ্তশক্রয়ে ॥ ১০.৬৪২০ তুমি আমাদের মনের সমুদায় ভাবের মূলে, তোমাকে নমস্কার | ১০1৬৪।২০ ব্রনের, পরমাত্মার বা ভগবানের সত্য-জ্ঞানঅনপ্ত রপ্ত বিনে পরিচয় দিয়া, ভাগবত ইদাণীং তাহার আনন্দ স্বরপত্তের পরিচয় দিতে অগ্রসর হুইতেছেন। ভাগবত বলিতেছেন £_তিনি, ৭১ ৭২ ব্র্গন্তত্র ও শ্ৰীমদ্ভাগবত কেবলামুভবানন্দ সন্দোহো নিরুপাধিক ॥ ১১৯১৮ তিনি কেবল অন্থুভবানন্দ রাশি স্বরূপ, নিকপাধিক। ১১।৯।১৮ **টবল্য নিবর্বাণনুখান্ৃভৃতিঃ ৷ ৭'১০'৩৮ **অববোধ রসৈকাত্মামানন্দমনুসন্ততম্‌ ॥ ৪1১৩,৭ -**কেবল নির্বাণ স্থথান্গভৃতি স্বন্ধপ ॥ ৭১০৩৮ _-অববোধ (স্বরূপ জ্ঞান) রসস্বরূপ পরব্রন্দের সহিত অভিন্ন হওয়ায় সর্বতোভাবে আনন্দে পরিপুত। ৪1১৩৭ : প্রপঞ্চং নি্প্রপঞ্চোইপি বিড়ুম্বয়সি ভূতলে । প্রপ্নজনতানন্দ সন্দোহং প্রথিতু প্রভো ॥ ১০৷১৪৷৩৫ হে প্রভো। আপনি. স্বর্পতঃ নিষ্পরপঞ্চ_-প্রপঞ্চের সহিত সম্পর্কমান্র গন, কেবল প্রপন্ন ভক্তগণের আনন্দ প্রাবনে পরিপুত করিবার জন্য মত্ত্যধামে অবতার গ্রহণের বিড়ম্বনা করিতেছেন ॥ ১০।১৪।৩৫ স এব নিত্যাত্বন্থখান্তভূত্য ভিব্যুদস্তমায়***১০।১২,৩৮ তিনি নিজ নিত্য হুখান্ুভৃতি স্বরূপে মায়াকে পরাভবপুর্ধবক স্বরূপে বর্তমান আছেন । ১০1১২1৩৮ ১৬) বিষয়ানন্দ ৷ আর বিস্তারের প্রয়োজন নাই। উপরে উদ্ধত কয়েকটি গ্লোকাংশ হইতে সুষ্পষ্ট বুঝা যাইবে যে, ভগবান্‌ আনন্দময় বা আনন্দ স্বরূপ । তীহার-.আননের কণামাত্র জীব ও জগৎকে আনন্দ প্নাবনে পরিধুত করে। তৈত্তিরীয় শ্রুতি ২৮ মন্ত্রে স্পষ্ট বলিয়াছেন “সৈষা আননাস্ত মীমাংসা ভবতি”__তিনি আনন্দের পরিসীমা । বৃহ্দারণ্যক শ্রুতি ৪1৩৩২ মন্ত “এতন্তৈবানন্দস্তান্যানি ভূতানি মাত্রামুপজীবনস্তি 1” এই আনন্দের কণা, বিষয়ের সহিত ইন্দ্রিয় সংযোগে অস্ত হওয়ায় ম্্যধামে জীবগণ বিষয় ভোগের জন্ত ছুটাছুটি করিয়া থাকে। এই ছুটাছুটিই কি জীবমাত্রের অপরিহার্য নিয়তি? শ্রুতি উক্ত মন্ত্রে বিষয়ানন্দে আনন্দ-্বরূপের আনন্দমকণার উপলব্ধির কথা বলিয়াছেন। ভাগবত বলিলেন যে, বিষয়ানন্দ আনন-স্বরূপের আনন্দের কণা তো বটেই। কিন্তু তাঁহার ভক্তগণ যে আনন্দ ভোগ করেন, তাহা ভগবতানন্দ। তাহারা বিষয়ানন্দের অন্য লালায়িত নয়। . ভগবানের শ্রবণ, কীর্তন, শরণ প্রভাত হইতে যে আনন্দ সই করেনঃ তাহাতে গরমেঠার পদ ষর্গাধিপতি, রসাতলাধিপতির পদ. ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ প্রভৃতি এমন কি অপূর্ণভব মোক্ষ তাহার! ঘ্বণার সহিত পরি 8 রত্যাগ করেন । বা ৬১১২৩, ১১1১৪।১৩)। বিষয়ানন্দ_আনন্দ-্বরূপের আনন্দের পা হইলেও, উহা উপভোগের সম ভোক্তা তাহ! ভুলিয়া গিয়া, বিষয়ের প্রাধান্য দেয় এবং সে কারণ বন্ধন গ্রহণ করে। “বিশেষে গিনোি ব্রাতি”__এই বুৎ্পন্তিতে বিষয়পদসিদ্ব_-এজন্য উহার ব্যুৎ্পভিগত বিশেষরূপে বন্ধন করে । বন্ধন করাই উহার স্বভাব উহার প্রাধান্য দিলে, উহা যে উহার স্ব করিবে, তাহার কথা কি? এজন্য করিয়াছেন। ৭্ত তব! অর্থ-যাভ! হৃতরাং ভোগের সময় ভাবগত শক্তি গ্রুকটন করিয়া বন্ধন ভগব।ন্‌ গীতায় ২১৪ শ্লোকে ইহার নিন্দা ৬৭। তৈত্তিরীয শ্রুতি ৬ মন্ত্রে বিশদভাবে বলিয়া [ছেন যে, আনন্দ হইতেই ইতসবল জাত, আনদ্দেই স্থিত এবং অনন্দেই লয় প্রাপ্ত হয়। জনন, পালন» রক্ষণ, নাশ করিতে হইলে ক্রিয়ার প্রয়োজন, এ কারণ শ্বেতাশ্বতর শ্রুতির ৬৮ মন্ত্রে পরব্রদ্দের স্বাভাবিকী পরাশক্তি বর্ণনায়_“জ্ঞান বল ক্রিয়া চ” বলিয়া নির্দেশ করিলেন। বল _শক্তি-বিশ্ববিধারিণী সৎ শক্তি, জ্ঞান শক্তি- চিৎ শক্তি ও আনন্দ শক্তি ক্রিয়া শক্তি। পরক্রহ্ধ প্রধানতঃ এই তিন মহাশক্তিতে শক্তিমান্‌ হইয়া বিশ্বের হুজন, পালন, রক্ষণ, নাশ প্রভৃতির বিধান করিতেছেন । গায়ক যেমন গাহিবার শক্তি কখনও প্রকাশ করিয়া গায়ক বলিয়া পরিচিত হন, কখনও শক্তি আপনাতে অপ্রকটিত রাখেন, সেইরূপ শক্তির বিকাশে সৃষ্টি ও স্থিতি, শক্তির অপ্রকাশে প্রলয়। ১৭) নিরীহতা ও নিক্ক্িয়তার সহিত সঙ্কল্প ও সক্রিয়ভার বিরোধ নাই। ৬৮। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণে ও ত্যাগে, চক্ষুর উদ্মীলনে__নিমীলনে, আমরা ক্রিয়ায় পরিচয় পাইয়া থাকি, সেই কারণে পরব্রহ্ম বা ভগবানের শক্তির উদ্বোধনে ও সংহরণে ক্রিয়ার পরিচয় ত সুম্পষ্ট। কিন্তু নিরীহ, নিক্রিয়, “অশব্মস্পর্শমরূপমব্যয়ম্” ব্রহ্মের সহিত ক্রিয়ার সামপ্রস্ত কোথায়? বিশেষতঃ তাহার নিক্ধিয়তার ও নিরীহত্বের উপর লক্ষ্য করিয়া ভাগবত উপরে উদ্ধত ৯1৯৪০ শ্লোকে স্পষ্ট বলিলেন যে, তিনি তন্বতঃ 'অভাবাত্মকশৃন্য না হইলেও যব কল্পিত হইয়া থাকেন। অতএব সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক .যে, উপরে উদ্ধত কয়েকটি শ্লোকে “আনন্দ সন্দোহ””, “আনন্দমনুসস্ততম্‌’” প্রভৃতি পদ প্রয়োগ দ্বারা জীব ও জগতে আনন্দের প্রব্তবণ ছুটাহবার কথা বলা হুইয়াছে, ৭8 ব্ৰহ্মন্কুত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত তাহা কি প্রকারে সম্ভব হয়। বরং তিনি প্রলয়ে আত্মস্থ থাকাকালে, ঝা সৃষ্টি ও স্থিতিকালেও, আত্মানন্দে মগ্ন ছিলেন, ইহা বুঝিতে পারি । ৬৯1. ইহার উত্তরে বলিতে হয় যে, শ্রুতির উপদেশ ম্পষ্টভাবে বুঝিতে না পারায় এই প্রকার সংশয় ত হইবেই। পরমার্থতঃ তিনি নিরীহ, নিক্কিয় বটে, তাহাতে সন্দেহ নাই। কিন্তু ব্যাবহারিক জগত ভুলিলে ত চলিবে না। শ্রুতি, স্বৃতি প্রভৃতি যত কিছু_সমুদায় ত ব্যাবহারিক জগতের ব্যবহার নিপ্পাদন সম্পন্ন করিবার উপদেশ দানের জন্য । এজন্ত যিনি “অক্ষর»-_ বলিয়া শ্রতিতে (বৃহদাঃ ৩৮ অধ্যায়) কথিত এবং অস্থুল, অনণু, অশ্ব, অদীর্ঘ.-....অচক্ুমূ, অশ্রোত্রম্ত অবাকৃ, অমনঃ প্রভৃতি বিশেষণ ব্যবহারে সমুদায় বিরোধের সমন্বয় স্থল বলিয়া পরিচয় দিবার প্রয়াস হইয়াছে, সেই সমুদায় নিষেধের পরিসমাপ্তি রূপ “অক্ষয়? তত্বের “প্রশাসনে ক্্্যাচন্্রমসৌ বিধুতৌ তিষ্তঃ-_দ্যাবাপৃথিব্যো বিধুতে তিষ্ঠতঃ?” ইত্যাদি। ইনি নিরীহ 'নিক্ষিয় বটে, কিন্তু “ভীষাস্মাদ্বাতঃ পবতে। ভীষোদেতি ক্ধ্ঃ। ভীষাস্মা- দগ়ি্চেন্দরশ্চ। মৃত্যু্ধাবতি পঞ্চমঃ। (তৈত্তিঃ ২৷৮৷১ )-_-ইহার ভয়েই বায়ু প্রবহমান, সুর্যের উদয়_আকাশ ভ্রমণ--অস্ত, পুনরায় সমভাবে দিনের পর দিন পরিভ্রমণ । অগ্নি ও ইন্দ্র নিজ নিজ নির্দিষ্ট কার্ধো নিযুক্ত, এবং পঞ্চম মৃত্যুও ধাবমান । স্থতরাং ভগবত্তত্বে সমুদায় বিরোধের পরিহার ও সামঞ্তন্ত বুঝান শ্রতির অভিপ্রায় বুঝিতে পার! গেল । ৭০। ভগবান্‌ গীতায় সুষ্পষ্ট বলিতেছেন £_ ন মে পার্থান্তি কর্তব্য, ত্রিষু লোকেষু কিঞ্চন ৷ নানবীপ্তমবাপ্তব্যং বর্ত এব চ কর্ম্মণি॥ গীঃ ৩1২২ যদি হাহং ন বর্তেয়ং জাতু কর্মণ্যতব্দ্রিতঃ | মম বর্মীনুবর্তপ্তে মনুয্যাঃ পার্থ ! সবর্বশঃ ॥ গীঃ ৩:২৩ উৎসীদেয়ুরিমে লোকাঃ ন কুর্য্যাং কর্মচেদহম্‌ ॥ গীঃ ৩২৪ হে অঞ্জন! আমার কোন কর্তব্য কিছুমাত্র নাই, যেহেতু [তিনলোকে আমার অপ্রাপ্__স্থতরাং প্রাপণীয় বলিয়। কোনও বস্তু নাই, তথাপি আমি কর্শে নিযুক্ত থাকি। যদি আমি আলন্তণৃন্ঠ হইয়া, কখনও কর্ধান্ঠান না করি, তাহা হইলে মন্স্বগগ আমারই পথ সর্বপ্রকারে অনুসরণ করিবে। ফলে লোক সকল উৎসন্ন হইয়া যাইবে। গীঃ ৩২২২৩২৪ ৷ উদ্ধত তিনটি ৬ ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্ুঃ ৭৫ লোকে ব্যবহৃত তিনটি বাক্যাংশের প্রতি দৃষ্টি আবর্ধণ করি। (0) “ত্রিযু লোকেয়ু’ (1) “মন্স্াঃ” (0) “ইমে লোকাঃ”_বল৷ বাহুল্য যে, ব্যাবহারিক জগৎ বুঝাইতে এই তিনটি বাক্যাংশ গ্রহণ করিয়াছেন। ব্যাবহারিক জগতের মানবদেহধারী জীবগণ নিজ নিজ কর্শফলানুসারে সাধারণতঃ ভূ--ভুূৰ্বঃ_স্বঃ এই তিন লোকের মধ্যে পরিভ্রমণ করে। উহাদিগের উপরিতন--মহঃ_-জনঃ, _তিপঃসত্য-লোক চতুষ্টয় ব্যাবহারিক জগতের বাহিরে । “মনুষ্যাঃ 'পদ ব্যবহারের সার্থকতা এই যে, মানবদেহধারী জীবের জন্তই শাস্ও তাহাদের সম্মুখে আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্যই ভগবানের মর্ত্যধামে অবতার গ্রহণ । “ইমে লোকাঃ” পদ ব্যবহারের উদ্দেশ্য? ভূ-_ভূর্ি:_-ন্গঃ এই তিন লোক লইয়া । উহাদের উৎসন্ন হইলে, ব্যাবহারিক জগতের বিলোপ সাধন হইবে, জগদ্‌ বিধারণের ও জীবের এবং উক্ত লোকত্রয়ের মর্ধ্যাদা রক্ষা প্রভৃতির নিয়ম- শৃঙ্খলা ভাঙ্গিয়া যাইবে। ৭১। খগবেদীয় পুরুষসূক্ত সুস্পষ্ট শিক্ষা দেন যে, পরমপুরুষ বা ব্রহ্ম বা ভগবান আপনাকেই জগদ্রপে অভিব্যক্ত করিয়াছেন। এই অভিব্যক্তি ক্রিয়াশক্তির পরিচয় প্রদান করে। ইহাই আদি ক্রিয়া বা সমুদায় কর্শের যুল উৎস । সেই উৎস হইতে কর্ণআোত কি সমষ্টি, কি ব্য, কি স্থল, কি ক্ক্ম, কি মহৎ, কি অণুপরমাণু সর্জত্রই প্রভাবিত হইতেছে ও হইতে থাকিবে। যে ক্রিয়াশক্তি, শ্র্য্য-তারকা-গহ-উপগ্রহ গ্রভৃতিকে অনবরত তীত্রবেগে ছুটাছুটি করিতে বাধ্য করিয়াছে, সেই মহাশক্তিই উদ্ভিদের অভ্যন্তরে কেশের চেয়েও অতিস্ক্ম নালিকার মধ্য দিয়া, রসপ্রবাহ উহার সর্বত্র সঞ্চীরণ করিতেছে । এবং এ একই মহাশক্তি একটি পরমাণুকে তাহার আকারে ধারণ করিয়া রহিয়াছে ও উহার বিশ্লেষণে অচিন্ত/ শক্তির বিকাশ করিয়া জীব ও জগৎকে স্তম্ভিত করিতেছে । ইহা কেন হইতেছে, ইহার উত্তর কে দিবে? ধাহার ক্রিয়া শক্তির অল্প ক্ষুরণে জীব ও জগতের অভিব্যক্তি, তিনি না বুঝাইলে উহ! বুঝবার উপায় নাই। আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণ উক্ত মহাশক্তির কথঞ্চিৎ পরিচয় পাইয়া আত্মহারা হইয়া বান এবং এইরূপ হইয়া থাকে বলিয়! হয়__এইমাত্র বলিয়া নিরস্ত হন । ৭২। যুক্তিতে আমরা কি পাই, দেখা যাউক্‌। অবশ্যই এ যুক্তির ভিত্তি শ্রুতি। বৃহদারণ্যক শ্রুতির অক্ষয় ব্রা্গণে অর্থাৎ ৩1৮ অধ্যায়ে অক্ষয়ের পরিচয়ে আমরা বুৰিবার চেষ্টা করিয়াছি যে, সমুদায় পরস্পর বিরোধী ভাবের সমন্বয় পরমতত্বে বা ভগবানে। তাঁহার ESI STA ৭৬ র্গসূত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত কাৰ্য্য নাই, কারণ নাই, স্থা্ট নাই, প্রলয়ও নাই। সবই যেমন থাকা উচিৎ, সেই ভাবেই সর্বদা বর্তমান ৷ নিরীহ, সংকল্প, নিক্ধিয়তা, সক্রিয়তা, পরমাথিক, ব্যাবহারিক-_সমুদায় আমাদের ভাষার কথা, আমাদের মনোভাবের ভূমিকার উপর গঠিত। আমরা এ সকল তাহাতে আরোপ করিয়া, আমাদের আত্মন্তরিতার পরিচয় দিয়া থাকি। উক্ত আত্মন্তরিতা সর্ধথা পরিত্যজ্য হইলেও আমরা উহার একটা মন গড়া, ‘মুখরোচক, শ্রুতি সুখকর নাম দিয়া চিন্তাশীল বলিয়া আত্মপ্রসাদ লাভ করি। আমরা বুঝি না যে, এ সকল তাহাতে আরোপিত হইলেই তিনি এ সকলে বদ্ধ হইয়া পড়িলেন, ইহা মনে কর! অতি দারুণ ভ্রম। আমাদের ভাষা, চিন্তা, তর্ক-বিতর্ক, বিচার-সিদ্ধান্ত- সমুদায় দেশ-কাল-বন্ত-পরিচ্ছেদের অন্তর্ভুক্ত, অন্ত কথায় মায়ার প্রভাবে প্রভাবিত। উহার! সমুদায় পরিচ্ছেদহীন, “মায়া-মৃগী-নর্তক” আমাদের প্রাণ-মনঃ-বুদ্ধিইন্দিয়াদির পরিচালক পরমতত্বে কি প্রকারে প্রযোজ্য হইতে পারে? সে কারণ ভগবানের স্থষ্টি সংকল্পের কারণ, জীব-জগৎ অভিব্যাক্তিতে তাহার দায়িত্ব, ব্রদ্দাও নির্শ্মাণে তাঁহার ভ্রম অনুসন্ধান, উহার পরিচালনে নিগুণতার অভাব প্রভৃতি বিষয়ে মস্তিফ আলোড়ন না করিয়া, শ্রুতির উপদেশ মস্তকে ধারণপূর্বাক, যাহাতে তাঁহার কৃপাকণা লাভ করিয়া ধণ্য হইতে ও মনুষ্য জীবন সার্থক করিতে পারা যায়, তাহার জন্য চেষ্টা প্রতি শ্রেয় কামীর কর্তব্য । ১৮) উপরের সমুদ্বায় আলোচনার উপসংহার স্বরূপ ভাঁগবভের' শ্লোক । ৭৩। উপরে যে সমুদায় আলোচনা করা হইল, তাহারই একপ্রকার উপসংহার স্বরূপ ভাগবতের একটি অতি উপাদেয় শ্লোক টদ্ধত হইল। উহা আলোচনার পূর্বের বলিয়া রাখি যে, যখন ব্রহ্ম বা ভগবান, জীব ও জগৎকে আত্মস্থ করিয়া! প্রলয়ে যোগনিদ্রায় অবস্থান করেন, তখন তাঁহার জ্ঞান অব্যভিচারী ভাবে বর্তমান থাকিলেও, কোন কিছু বর্তমান না থাকায়, প্রকাশের: অভাব হেতু জ্ঞানের প্রকাশ না হওয়ায়, তিনি যেন নিজেকে “অসম্তমিব”_ না থাকার মত, মনে করিয়াছিলেন। ইহা ভাগবত ৩৫২৪ গ্লোকে বলিয়াছেন। উক্ত শ্লোক ১১৫ স্থত্রের আলোচনায় উদ্ধত হইয়াছে। বাহুল্য পরিহারের জন্য এখানে উদ্ধৃত করিতে বিরত হইলাম। এই “না থাকার মত” থাকা আমাদের দৈনিক জীবনে যেন কিছু ফাকা ফাকা, কিছু অভাবগ্ৰস্থের: > খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ মত থাকা আমরা মাঝে মাঝে অনুভব করিয়] থাকি । ৭৭ দৃষ্টান্ত দিবার প্রয়োজন নাই। এই যে অভাবের মত কিছু প্রকুত অভাব নহে। তিনি তখন আত্মারাম, আপ্তকাম, আত্ক্রীড়, আত্মানন্দে বিভোর | কিন্ত লৌকিক ভাষায় উক্ত অবস্থা প্রকাশ করিতে হইলে, উত্তরূপ বলা ভিন্ন প্রকাশের উপায় নাই। বলা বাহুল্য, উক্ত বর্ণনা, আমাদের দৃষ্টান্তে করা হইয়াছে। আমাদের দৃষ্টিতে অভাবগ্রস্থের মত থাকা হেতু, সৃষ্টির প্রসার, আনন্দময়ের আনন্দের খেলা । তৈত্তিরীয় শ্রুতি ৩৬ মন্ত্রে ইহাই বলিয়াছেন, তাহ! বর্তমান সূত্রের আলোচনায় ৬৭ অনুচ্ছেদে বলা হুইয়াছে। এখানে লক্ষ্য করিতে হইবে যে, আত্মস্থ ভাব হইতে, অন্য কথার যোগনিজ্রা হইতে জাগরিত না হইলে, আনন্দ হইতে সৃষ্টির প্রসার এবং জীব ও জগতে আনন্দের গ্রশ্রবণ ছুটানো সম্ভব হইত না। এই সমুদায় মনে রাখিয়া, নিম্নে উদ্ধত ভাগবতের শ্লোকটির মর্ম বুঝিতে হইবে, উহার অর্থ__যথাশক্তি বিস্তারিত ভাবে দিতেছি । ৭৪। শ্লোকটি এই := শশ্বৎ প্রশান্তমভয়ং প্রতিবোধমাত্রং শুদ্ধং সমং সদসতঃ পরমা শুত্বস্‌। শব্দো নযন্তর পুরুকারকবান্‌ ক্রিয়ার্থো মায়া পরৈত্য ভিযুখে চ বিলজ্জমানা। তছৈ পদং ভগবতঃ পদমন্তয পুংসো ব্রন্মেতি যদ নিদসচত্রন্থখং বিশোকম্‌ ॥ ভাগবত ২1৭৪৬ শ্লোকে ব্যবহৃত পদগুলির প্রত্যেকটির অর্থ করিলে তাৎপর্ধ্য পরিস্ফুট হইবে। “শশ্বং”__ অব্যয় পদ হইলেও, ইহা শ্লোকের প্রথম ছত্রের (১) প্রশাস্তমূ (২) অভয়ং, (৩) প্রতিবোধমাত্রমূ, (৪) শুদ্ধ, (৫) সমং, (৬) সদসতঃ পরমূ, (৭) আজুতবম্‌_এই সাতটি পদের বিশেষণ রূপে ব্যবহৃত হইয়াছে বুঝিতে হইবে। “শখ” পদের আভিধানিক অর্থ বারবার, সর্বদা, তাহা হইতে নিত্য। অতএব যাহা নিত্য বা সত্য_-অন্য কথায় যাহা সৎ তাহাই শ্লোকের তৃতীয় ছত্রের “ত্র” ইহা বলা হইল। সঙ্গে সঙ্গে তিনি__ নিত্য প্রশান্ত, নিত্য অভয়, নিত্য প্রাতিবোধমাত্র নিত্য শুদ্ধ, নিত্য সম, নিত্য সদসৎকে অতিক্রম করিয়া নিজ স্বরূপে অবস্থিত এবং সকলের নিত্য স্বরূপ বলা হইল। টা রহিত বলিয়া স্বরপগত প্রকষ্ট শান্তভাবে নিত্য 'অবস্থিত। দ্বৈত সম্পর্ক বিবৰ্জিত বলিয়া বিক্ষোভ রহিত। ৭৮. ্রহ্গসত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত “অভয়ম”_ দ্বৈত হইতেই ভয়ের সন্তাবনা। অদ্বৈততত্বে_-দ্বৈতের' সংস্পর্শ সম্ভব নয় বলিয়া, নিত্য অভয় স্বরূপে প্রতিষ্ঠিত । “প্রতিবোধমাত্রম্”__প্রতিবোধ পদের আভিধানিক অর্থ জাগরণ । পরমতত্ব ভগবানে কি স্থপ্তিজাগরণ আছে? না, থাকিতে পারে না। যখন তিনি সমুদায় শক্তি সংহরণ পূর্বক, আত্মস্থ করিয়া নিক্ষেয়্ভাবে অবস্থান করেন, তখন আমাদের স্থযুপ্তির নিদর্শনে_ন্প্তি আমরাই তাহাতে আরোপ করি। আবার যখন শক্তি প্রকাশ করিয়া স্থষ্টর অভিবাক্তি করেন, তখনও আমাদের জাগরণের এবং জাগরিত অবস্থায় কার্ধা সম্পাদনের নিদর্শনে, জাগরণ ও আমরা তাহাতে আরোপ করিয়া থাকি। আরোপিত বলিয়া, উভয়ই গুপচারিক । কিন্প্ধি (বাযোগ নিদ্রা), কি জাগরণ--উভয়ই প্রপঞ্চের সম্পর্কে বুঝিতে হইবে। স্বরূপতঃ তাহার স্ুপ্তিজাগরণ নাই । তবে ভাগবত “প্রতিবোধমাত্রম্” পদ ব্যবহার করিলেন কেন? “নিজবৌধমাত্রম্” বলিলে ত চলিত, ছন্দের বা অর্থের কোনও দোষ হইত না। উক্ত পদ ব্যবহারের উদ্দেশ্য অনুসন্ধান করিলে, আমার মনে হয় যে, ভাগবত বিশেষ উদ্দেশ্যেই “প্রতিবোধমাত্রম্” পদ ব্যবহার করিয়াছেন । প্রথমতঃ ভাগবত বুঝাইতে চাহেন যে, ভগবান্‌ নিত্য জাগরিত। জাগরণের সহিত স্যর ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ থাকায়, সও অনাদি এবং অনন্ত। বিশাল বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত কোনও বিশেষ ব্রহ্মার ব্হ্মাও কালপ্রভাবে নাশপ্রাপ্ত হইলেও, আরও অগণ্য ব্রহ্মা অভিব্যক্তভাবে বর্তমান থাকিয়া স্থ্টির ধারা অক্ষুণ্ন রাখে । আমাদের শরীরের অগণ্য জীবকোষের বা রক্তকণিকার বর্তমানতার দৃষ্টান্তে আমর! ইহার ধারণা করিতে পারি। উহার! প্রত্যেকে সজীব, উহাদের পরমাযু আমাদের পরমাযুর তুলনায় অতি অল্পক্ষণ মাত্র। কোনও বিশেষ জীবকোষ বা! রক্তকণিক! নাশ প্রাপ্ত হইলে, অপর জীবকোষ বা রক্তকণিকা তাহার স্থান পুরণ করিয়া আমাদের জীবন ধারা অঙ্গপ্ন রাখে । সেইরূপ প্রত্যেক ব্ৰহ্মাণ্ড, অনস্ত বিশ্বে, অনন্তদেবের শরীরে অতিক্ষুদ্র জীবকোম মাত্র। উহাদের কোনটির নাশ হইলে বিশ্বের জীবনধারা অক্সগ্রই থাকে । দ্বিতীয়তঃ উদ্ধৃত গ্লোকের শেষ চরণে, “অজশরন্থখম্‌” বলিয়া ব্রহ্ম নির্দেশিত হইয়াছেন। উপরের আলোচনায় আমরা বুঝিয়াছি যে, আনন্দের অনুভূতি বা ক্রিয়াই সুখ । জাগরণ না হইলে ক্রিয়ার সহিত সম্বন্ধ সংঘটিত হয় ন1--ইহ্‌! প্রপঞ্চে প্রত্যক্ষ দৃষ্ট_-এই নিদর্শনে জাগরণের সমপর্য্যায়ভুক্ত *প্রতিবোধ” পদ ব্যবহৃত হইয়াছে তৈত্তিরীয় তির টা মন্ত্রে আনন্দ হইতেই স্থষ্টর অভিব্যক্তি স্থম্পষ্ট কথিত হইয়াছে। অভিব্যক্তি ক্রিয়া হইতেই সম্ভব এবং ক্রিয়া জাগরণের অপেক্ষা > খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ সুঃ রাখে। একারণও “প্রতিবোধমাত্রম্” পদ ব্যবহৃত হইয়াছে। শ্রীধরস্বামী উক্ত পদের “জ্ঞানৈকরস” অর্থ করিয়াছেন-_অর্থাৎ যখন ৭ বোধম্‌” তখন খেমন "জ্ঞানৈকরস”_.আবার যখন “প্রাতিবোধমাত্রম্” তখ তুল্যরূপে ‘জ্ঞানৈকরস”। তবে প্রথম ক্ষেত্রে আনি দ্বিতীয় ক্ষেত্রে সেই একই অয় জ্ঞান--বহিরভিব্যক্ত, সক্রিয়। অবশ্যই টি অন্তর-_বাহির বা স্ষ্টি প্রলয় নাই_-উহাদের ব্যবহার আমাদের বুদ্ধির ধারণা সৌকর্ধ্যার্থ করা হয় মাত্র। ৰ ৭৯ পূজ্যপাদ আত্মনিগুঢ ক্র “প্রাতিবোধমাত্রম” পদ ব্যবহারে ভাগবত | 4 আরও বুঝাইলেন--তিনি নিত্য, বুদ্ধ। "শুদ্ধং”__নিত্য শুদ্ধ, নিত্য নিৰ্মল ৷ কখনও মায়াজনিত মলের সংস্পর্শ নাই। “সমং৮__নিত্য সম। কখনও কোনও প্রকার হ্রাস_ৃদ্ধি বা স্ব_পর--ভেদ জ্ঞান নাই। জ্ঞান, ধর, বীর্য, সৌন্দর্য, মাধুর্য, শক্তি, ্রী, যশ প্রভৃতি যাহা কিছু ধরা যাউক্‌ না কেন, সমুদায় সমভাবে, তাহাতে পধ্যবসানরূপে নিত্য বর্তমান। ভেদ থাকা সম্ভব হইলেই সমতায় হ্রাস বৃদ্ধির সন্তাবনা আপতিত হয়। এই হেতু তিনি সজাতীয় _-বিজাতীয়__ম্গগত ভেদ বজ্জিত। সে কারণ তাঁহার “দেহ-দেহী” বা “তিনি ও তাহার” ভেদ নাই। তিনি যাহা, তাহার দেহ, বসন, ভূষণ, আয়ুধ, ধাম. পরিকর প্রভৃতিও তাই। অতএব নিগুণ__সগুণ, নিরাকার-_সাঁকার, নিরিবশেষ__সবিশেষ প্রভৃতি ভেদ তাহাতে বর্তমান থাকিতে পারে না। এই আলোচনায় ৫০ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ভাগবতের ৭1৯৪৭ গ্লোকে স্পষ্টাক্ষরে “ত্বমমেব সপ্তণো| বিগুণশ্চ ভূমন্” বলিয়া তাহার নির্দেশ দিয়াছেন। প্রকৃতপক্ষে ভেদের তত্ব আলোচনা করিলে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, উহ! বস্তুগত নহে, আমাদের বুদ্ধিত মাত্র। সুতরাং পরমতত্বে উহা নাই উহা নিত্য সম৷ “সদসতঃ পরম্”__নিত্য। কার্যা-কারণাত্মক প্রপঞ্চ অতিক্রম করিয়া নিজ শাশ্বত স্বরূপে সর্বদা অবস্থিত। পুরুষনুক্ত “অত্যতি্টদশাুলম্” মন্তরাংশে ইহাই প্রকাশ করিয়াছেন । অন্যকথায়-নিকপাধিক এজন্য নিত্যমুক্ত ৷ “আত্মতত্বম” জ্ঞাতা ব্যষ্টি আত্মার স্বরূপ। নিজের স্বরূপ এবং বাষ্ট" জীব ও জগংৎস্থ বস্তজাতের অন্তরাকাশে জ্ঞাত্রূপে অধিষ্ঠিত ব্যটি আত্মার স্বরূপ__ তত্বত অভিন্ন। এই অভিন্ন সম্বন্ধ নিত্য বর্তমান ৷ “শৰ্দোন যত্ৰ’’_বাক্য দ্বারা এবং সে কারণ বাকারাশি স্বরূপ বেদ দ্বারা সে তত্ব প্রকাশ করা যায় না। “শব” পদ ব্যবহার করিবার উদ্দেস্ত, আমার মনে হয় যে, পঞ্চ ভূতের মধ্যে শব্ধ সুক্মতম_উহা! আকাশের গুণ । সুতরাং [রে নাঃ তখন বক্্তম আকাশের গণ যখন তীহাকে প্রকাশ করিতে ৭ ৮০ ্রহ্মস্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত অপেক্ষাকৃত স্থূল ভূতগণের ও তাহাদের গুণ গণের কথা কি? অতএব সর্বপ্রকার প্রাকৃতিক গুণ- সম্বন্ধ বঙ্জিত। *পুরুকারকবান ক্রিয়ার্থোনে যত্র”_বহুকারক ব্যাপার (কর্তা, কর্ম করণ, অপাদান, সম্প্রদান, সম্বন্ধ, অধিকরণ প্রভৃতি কারক ব্যাপার ) ছার! সম্পাদিত যজ্ঞাদি ক্রিয়ার-_-উৎপাগ্ত-_আপ্য-সবস্কার্য__বিকাধ্য অর্থের বা ফলের সহিত তাহার কোনও সন্বন্ধ নাই। কেননা শব (আকাশের গুণ বশতঃ) এবং পুরুকারকবান ক্রিয়ার্থ সকল মায়ার অন্তর্ভুক্ত, মায়ার প্রভাবে প্রভাবিত। কিন্তু “অভিমুখে বিলজ্জমানা মায়া পরৈতি”__মায় তাহার অভিমুখে থাকিতে পারে না, বিশেষরূপে লজ্জিত! হইয়া দূরে পলায়ন করে। উক্ত তত্বের সহিত মায়ার কোনও সংশ্রব না থাকায়, মায়ার অধিকারে বর্তমান কি শব্ধ (বেদ শাস্তাদি ), পুরুকারকবান যজ্ঞাদি কর্দের ফলের সহিত তাহার সংশ্রব থাকিবে কি প্রকারে? যজ্ঞাদি কর্শের কল শ্বর্গাদি প্রাপ্তি “আত্রক্ভুবনালোকা” মায়ার অধিকারে বর্তমান থাকায় উক্ত প্রাপ্তি সঙ্গত বটে। ' কিন্তু ভগবলোক মায়ার পারে। তাহার প্রাপ্তি, মায়ার প্রভাবে প্রভাবিত শব্দ বা যজ্ঞাদি কণ্ম দ্বারা সম্ভব নহে। “তদ্‌বৈ পদং ভগবতঃ পরমস্ত পুংসঃ” উহাই পরমপুরুষ ভগবানের স্বরূপ । শশ্বৎ, প্রশান্ত প্রভৃতি যে আটটি পদের উল্লেখ করা হইয়াছে, উহার! পৃথক্‌ পৃথক্‌ গুণ বা বিশেষণ নহে। উহারা প্রত্যেকে ভগবানের স্বরূপ বলিয়া, এবং স্বরূপে বিভেদের সম্ভাবন! নাই বলিয়া, ভাগবত-বহুবচন ব্যবহার না করিয়া, একবচনের “তদ্‌” পদ ব্যবহার করিয়া, ইহা বুঝাইলেন। তবে, শশ্বৎ, প্রশান্ত প্রভৃতি বিভিন্ন পদের উল্লেখ করা কেন হইল? আমার মনে হয় যে, বিভিন্ন সাধকের দৃষ্টিভঙ্গী বিভিন্ন প্রকার বলিয়া ভগবানের একই স্বরূপকে বিভিন্ন ভাবে দর্শন করিয়। থাকে । ইহ! বুঝানও ভাগবতের অভিপ্রায় । “ত্রহ্মেতি”_ ব্রহ্ম +ইতি__ ভগবানের স্বরূপ যাহা, ব্রক্মও তাহাই। আলোচ্য শ্লোকে ভগবানের ও পরম পুরুষের স্বরণ “ব্রহ্ম” উল্লেখ করায়, এই শ্লোক পূর্বে উদ্ধত ভাগবতের ১২১১ শ্লোকের ব্যাথ্যা স্বরূপ, ইহা বুঝা গেল। আলোচ্য শ্লোকে ভাগবত আর বুঝাইলেন যে, পরমতন্ব ব| ভগবান, স্বরূপগত ভাবে, নিগুণ, নিরাকার ! নিকপাধিক ), নিষ্িয় হইলেও, সমকালে স্থ্টিগতভাবে সঙ, সাকার € সবি বটেন। শ্বরপগত ও হ্ষ্টগত ভাবের পার্থক্য ততৃতঃ বর্তমান নাই। উহা আমাদের বিশ্লেষিকা বুদ্ধিতে বর্তমান মাত্র, এজন্য উহ'তে আত্যন্তিক গুরুত্ব কিছুমাত্র আরোপ করিবার প্রয়োজন নাই। ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ সঃ ৮১ উক্ত আমাদের দৃষ্টিতে__উভয়ভাবে স্বরূপ_-“একমেবাদ্বিতীয়ম্” (ছান্দোগ্য ৬।২।১ ) ভাবে বর্তমান । প্রকাশ করেন। “অজন সুখম্”__এই স্বন্ূপই অজন বা অপরিমিত স্থখ-_অন্য কথায় সুখের পরিসীমা ! তৈত্তিরীয় শ্রুতির ২৮ মন্ত্রের আনন্দের পরিসীমার পরিচয় পাইয়াছি। এই ্লোকে ভাগবত স্থখের পরিসীমার পরিচয় দিলেন। আগে বলিয়াছি যে, স্খ--আনন্দের অনুভূতি বা ক্রিয়া_এবং এই ক্রিয়া হইতেই বিশ্বের অভিব্যক্তি_ইহা প্রকাশ করিবার জন্য “প্রতিবোধমাত্রম্‌” পদ ব্যবহৃত হইয়াছে। ভাগবত বুঝাইলেন যে, বিশ্বের অভিবাক্তি__আনন্বস্বরূপের ক্রিয়া শক্তির পরিচায়ক । যে ভাগ্যবান জীব-_বিশবের প্রকৃত দর্শনলাভ করিতে পারেন, তিনি বিশ্বের সর্বত্র আনন্দের খেলা দেখিয়া__আনন্দ সাগরে মগ্ন হন ৷ আমাদের চোখে যে দুঃখ-কষ্টের দৃণ্ত প্রকটিত হয়, তাহা আমাদের চোখের রোগের নিদর্শন ভিন্ন অন্য কিছু নহে। কারণ-__ “বিশোকম্”__ছুংখ, শোক ত মায়ার ব্যাপার, এ কারণ ভগবৎ স্বরূপে কি প্রকারে থাকিবে? ভগবৎ স্বরূপ হইতে উহারা বিশিষ্টভ|বে সম্বন্ধশবন্য ৷ অতএব উদ্ধৃত ২৭1৪৬ গ্লোকের সরল অর্থ হইতেছে_বাহাতে আনন্দের . পরিপীমা (তৈত্তিঃ ২৮), সেই আনন্দময়ের অপরিমেয় আনন্দের অনুভূতি জনিত অজন্র স্ুখই পরমপুরুষ ভগবানের পরমপদ বা নিজ স্বরূপ। তত্ববিৎ পণ্ডিতগণ উহাকেই “ব্রন” বলিয়া জানেন, জানিয়াই নিশ্চেষ্ট থাকেন না, জীব কল্যাণের জন্য প্রকাশ করিয়া থাকেন । উহা? নিত্য, দ্বৈত সম্পর্ক রহিত হওয়ায় কোন প্রকার বিক্ষোভের সম্ভাবনা ন! থাকা হেতু, নিত্যপ্রশাস্ত, নিত্য অভয়-প্রতি্, নিত্য বুদ্ধ, নিত্য শুদ্ধ, নিত্য সজাতীয়-বিজাতীয়- স্বগত ভেদ-রাহিত্য- নিবন্ধন, নিত্যসম, নিত্যমুক্ত। তাঁহার তত্বই সমষ্টি- বাষ্টিগত চরাচর বস্তজাতের আত্মতত্ব! উক্ত তত্ব কথঞ্চিৎ প্রকাশ করিতে হইলে, মানবের শবসমষ্টি গঠিত ভাষার প্রয়োজন বটে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শব তাহাকে প্রকাশ করিতে অসমর্থ, কারণ__উহা বহিরঙ্গা শক্তি মায়ার দ্বারা অভিব্যক্ত আকাশের গুণ_ উহা স্বরপের পরিচয় জানিবে কিরূপে? বহু আড়ম্বরের সহিত, সকল প্রকার-কারক-ব্যাপার দ্বারা সম্পাদিত যজ্ঞাদি ক্রিয়ার উৎপাদ্ঠ__আপ্য-সস্বার্্য-_বিকার্ধ্য ফলই বা. তাহাতে কি প্রকারে ১) ৮২ ব্ৰহ্মস্তত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত পৌহুছিবে? উহার! ত মায়ার ব্যাপার। মায়া তাহার অভিমুখে থাকিতে বিশেষরূপে লজ্জিত হইয়া দূরে পলাইয়া থাকে । স্তরে ব্যবহৃত তিনটি পদের আলোচন! নিজের জ্ঞানবুদ্ধির পরিমাপে কথঞ্চিৎ শেষ করিয়া, শেষপ্দ “জিজ্ঞাসার” আলোচনায় অগ্রসর হইতেছি। ১৯) জিজ্ঞাসা £_মনঃসংযমের প্রয়োজনীয়তা ৷ ৭৫। জিজ্ঞাসা পদের ব্যুংপত্তিগত অর্থ_জানিবার ইচ্ছ!-_বৰ্তমান ক্ষেত্রে- ইহা ব্রঙ্গতব জানিবার, অন্য কথায় ব্্বিদ্ঠাল’ভের ইচ্ছা । ইচ্ছা হইলেই উহার সম্পূরণের জন্য স্বাভাবিকভাবে চেষ্টা আলে, সেই চেষ্টাই সাধনা বা উপাসনা । ভগবান্‌ স্থত্রকার বর্ষস্ুত্রের তৃতীয় অধ্যায়ে ইহার আলোচন' করিবেন। উপাসনা পদের ব্যুৎপত্তি লভ্য অর্থ__সমীপে স্থিতি। তাহা হইতেই জ্ঞানের উৎপত্তি হইয়া থাকে । ইহা! প্রত্যেকের প্রত্যক্ষ দৃষ্ট বাপার যে, কোন কিছু বিশেষভাবে জানিতে হইলে, উহার সমীপে যাইতে হয়। দূর হইতে সম্যক্‌ জ্ঞান সম্ভব নয় । ব্ৰহ্ম বা ভগবান সম্বন্ধে নিকট-দুর নাই বটে__কারণ তিনি দেশ-কাল পরিচ্ছেদ শ্ত্য। কিন্ত ব্র্গে বাঁ ভগবনে মনোনিয়োগ বা চিন্তন্‌ ন| করিয়া, অবাস্তর বিষয় চিন্তায় মনোনিবেশ করিলে, ব্রহ্ম বা ভগবানকে দুরে রাখার মত হয় না কি? এই মনোনিবেশ করা বা না করা, আমাদের ইচ্ছাধীন, আমাদের স্বাতন্ত্যের কণা থাকা হেতু, ভগবান কোন বাধা দেন না! এই কারণে যোগ শাস্ত্রে মনঃসংযমের ভূয়ে| ভূযঃ উপদেশ প্রদত্ত হইয়াছে। ভগবান্‌ গীতায় ৬৷১২ শ্লোকে “তত্ৰৈকাগ্রং মনঃ কৃত্বা যত চিত্তেন্দিয়ক্রিয়ঃ' এই উপদেশই দিয়াছেন । ২০) গুরুর উপযোগিতা । ব্রহ্মন্ঞ গুরুর অভাবে অন্মুকল্প ৭৬। কোন নূতন দেশে ভ্রমণেচ্ছু ব্যক্তি যদি সেই দেশের পথ, ঘাট, দষ্টব্য প্রভৃতি বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞ কোন লোক সঙ্গে লইয়া ভ্রমণ করেন, তাহার ভ্রমণের অনেক ক্লেশ ও অস্থবিধা সহ করিতে হয় না, অথচ যাহা কিছু দেখিবার, শুনিবার, জানিবার থাকে, সমুদায় দেখা-শুনা_জানা সহজেই হইয়া যায়,_সেইরূপ ব্রক্মতত্ব জিজ্ঞান্সু ব্যক্তি__-অন্য কথায় ব্রক্গাবিষ্তার পথে ভ্রমণেচ্ছ ব্যক্তি যদি উক্ত পথের অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে সঙ্গে লইয়া, পথ অ:তবাহন করিতে অগ্রসর হন, তাহ! হইলে, অপেক্ষাকৃত অনেক সহজে তাহার আকাজ্জা পূরণ হইয়া থাকে। এই অভিজ্ঞ ব্যক্তিই গুরু। এই জন্য শিরোদেশে উদ্ধত মুণওক শ্রুতির ১/১৩ মনে বর্বজ্ঞ গুরুর আশ্রয় গ্রহণ করিবার উপদেশ প্রদত্ত > খঃ। ১ পাঃ। ১ আধি 1532 Vt হইয়াছে । ইনি ব্রহ্মজ্ঞ_সে কারণ ব্রহ্মবিদ্যার পথে ভ্রমণ করিয়া সম্যক অভিজ্ঞ হইয়াছেন । কাল বিপ্লবে, বর্তমানে ব্র্জ্ঞ গুরুর একাস্ত রতি জিজ্ঞান্ ব্যক্তি নিশ্চে্টভাঁবে বসিয়া না থাকিয়া, অন্তৰ্য্যামী ভগবানের" নি পর্র্বক, তাহার উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করতঃ-_উপনিষদ্‌ ব্রহ্মস্থত্র, টি গীতা প্রভৃতি ব্রহ্মোপদেশক শান্দ্যূহকে গুরুত্বে বরণ করিয়া সাধ্যমত টি কর! সম্ভব, তাহা কর! উচিত-_ইহা৷ পূর্বের আলোচনায় বুঝিয়াছি। ভগবান্‌ গীতায় ১৬১-৬২ গ্লোকে ইহ! বলিয়াছেন। উক্ত শ্লোক ছুটি ২২ অনুচ্ছেদে উদ্ধত কর! হইয়াছে। স্পট ১) জিজ্ঞাস! সম্বন্ধে ভাগবভের উক্তি। ৭৭। এখন ভাগবত কি বলিতেছেন দেখা যাউক-_ জীবস্য তত্বজিজ্ঞাস! নার্থে যশ্চেহ কর্ম্মভিঃ ॥ ১২1১০ ইহলোকে কর্মদ্ধারা পুরুতার্থ প্রাপ্তি হয় না। তত্বজিজ্ঞাসাই জীবের পরম- পুরুষার্থ ॥ ১1২।১০ তত্বজিজ্ঞাপাই ব্রচ্মজিজ্ঞাসা, ইহা! বলাই বাহুল্য । তবজিজ্ঞাসার জন্য কি জিজ্ঞাস্তকে খুজিয়া বেড়াইতে হইবে? ভাগবত বলিতেছেন, না, খুঁজিতে হইবে কেন? তিনি ত সঙ্গে সঙ্গেই ফিরিতেছেন। আমরা তাহার দিকে পশ্চাৎ ফিরিয়া থাকি বলিয়াই ত দেখিতে পাই না। তদ্‌ ব্ৰহ্ম পরমং স্মক্্ং চিন্মাত্রং সদনন্তকম্‌। বিজ্ঞায়া আ্বতয়া ধীরঃ সংসারাৎ পরিযুচ্যতে ॥ ১০৮৮1 সেই ব্ৰহ্ম পরম কুক্ম । তিনি “সত্যং জ্ঞানমনত্তম্‌” বলিয়া তৈত্তিরীয় ২।১ মন্ত্রে নির্দেশ করিয়াছেন । ধীর সাধক তাহাকে আত্মরপে জানিতে পারিলেই সংসার হইতে মুক্ত হয়। ১০৮৮৭ কিরূপে তাহাকে আত্মরূপে জানা সম্ভব হইতে পারে? ইহার উত্বরে ভাগবত বলিতেছেন £_ তস্মাজ্জিজ্ঞাসয়াআ্মানত্স্থং কেবলং পরম্‌ ! সঙ্গম্য নিরসেদেতদ্‌ বস্তবুদ্ধিং যথাক্রমমূ ॥ ১১১০।১১ অতএব জিজ্ঞাস! বাঁ বিচার ছারা জিজ্ঞার নিজের স্ুুল-সূক্্ম দেহের ই অন্তরেস্থিত, অসঙ্গ আত্মাকে জানিয়া, স্ুল- ক্রমে দেহাদিতে বস্তবুদ্ধি সাধন পথে অগ্রসরণের সহিত ক্রমে কমে পরিত্যাগ করিবে। ভাঃ ১১৷১০৷১১ হগবান্‌ স্ত্রকার পরে ৪1১৩ স্থত্রে “আত্মেতি তৃপগচ্ছস্তি গ্রাহয়স্তিচ”-_. ূ আত্মভাবে উপাসনার বিষয় প্রতিপাদিত করিবেন। এখানে বিস্তায়ের প্রয়োজন নাই। ৭৮7 স্বচ্ছ আদর্শের উপরে অনেকদিনের মল সঞ্চয় হইলে, উহা কোনও : বস্তু পরিষ্কার রূপে প্রতিবিশ্বিত করিতে পারে না। উক্ত মলিনত্ব অপসারণের জন্য, অতি সুক্ষ্ম বালুকাকণা বা তদ্রপ কোন স্থন্ম বস্তু দ্বার, উহ! ধীরে ধীরে ঘর্ষণ করিতে. হয়, লগুড়াঘাত রূপ উৎকট ক্রিয়ায় উহা সাধিত হয় না। সেইরূপ, আমাদের বুদ্ধিতে বহু জন্মান্তরের সঞ্চিত মল, জিজ্ঞাসা বা বিচারের ছারা ধীরে ধীরে অপসারিত করিতে পারিলেই, বুদ্ধি নির্মুলতা প্রাপ্ত হয়। তখন আমাদের হৃৎপন্মে অবস্থিত, স্বয়ম্রকাশ, আত্মন্বরূপ উজ্জ্রলভাবে আত্মপ্রকাশ করিয়। থাকে । ইহাই ব্রহ্ম স্বরুপোপলন্ধি বা অপরক্ষান্থুভৃতি । ৭৯। ভাগবত নিম্নোদ্বত শ্লোকে বিচারের পদ্ধতি বলিতেছেন £-- আচার্ধ্যোইরণিরাগ্ঃ স্তাদন্তেবান্থ্যত্তরারণিঃ। তৎ সন্ধানং প্রবচনং বিদ্যাসন্ধিঃ স্থখাবহঃ ॥ ১১।১০।১২ যেমন কাষ্ঠ মন্থন করিয়া অগ্নি উৎপাদন করিতে হইলে, নীচে ও উপরে ছুইখানি অরণি কাষ্ট, উভয়ের মধ্যে মন্থন দণ্ড এবং মন্থন দণ্ডের দ্বারা উতলা অরণিতে ধৈর্ধ্যের সহিত ঘর্ষণ প্রয়োজন ; সেইরূপ আচার্য্য বা গুরু নিয়ন্থ । অরণি, জিজ্ঞান্থ বা শিষ্য, উপরিস্থ অরণি, গুরু ও শিষ্বের প্রশ্নোত্তর উভয়ের : মধ্যস্থ মন্থন দণ্ড, এবং স্থুখাবহ বিদ্যা তদুখ অগ্নি স্বরূপ জানিবে । ১১।১০।১২ ইহ সহজে বুঝিতে পার! যায় যে, দু-একবার অরণিদ্বয়ের সহিত মন্থন-দণ্ডের ঘর্ষণে অগ্ুৎপত্তি হয় না ধীরভাবে বহুক্ষণ ঘর্ষণ করিয়া গেলে তবে অগ্নির উৎপত্তি হইয়! থাকে । সেইরূপ গুরুর সঙ্গে বচন ও প্রবচন-_অর্থাৎ গুরুর উপদেশ ও . তৎ সম্বন্ধে বিচার করিয়া যাইলে, পরিণামে বিদ্যোৎপত্তি হুইয়া থাকে । উহাও . লক্ষ্য করিতে হইবে-ে অগ্নি উৎপাদনের জন্য উভয় অরণির মধ্যে, নিয়ন অরণি, অধিকতর সুদৃঢ় ও কাধ্যক্ষম হওয়া প্রয্মোজনীয়_ সেইরূপ গুরু ও শিল্ত উভয়ের মধ্যে গুরুর কর্তব্য_-অধিকতর দুরূহ । ইহা বুঝাইবার জন্য আচার্য্যকে : আদ্য অরণি বল! হইয়াছে । ২২) জিজ্ঞাসাই_উপাসন।। উহার পুনঃ পুনঃ অনুষ্ঠানে বেদন। ৮০ আলোচনার ৭৫ অগ্চ্ছেদে আমরা! বুঝিয়াছি যে, জিজ্ঞাসারই অপর নাম উপাধনা-__ধাহাকে জিজ্ঞাসা করিতে হইবে, তাহার সমীপে আসন গ্রহণ ১খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ ্ করিয়া গীতার ৪1৩৪ গ্লোকে ভগবত প্রদত্ত উপদেশ অনুসারে, তাঁহাকে প্রণাম, পরিপ্রশ্ন ও সেবা ' দ্বারা সত্ষ্ট করিতে পারিলে, সেই ততদর্শী গুরু পরমতবের উপদেশ দিবেন । তাহার নিকট হইতে সংশয় নিরসন করিতে হইলে প্রশ্ন ও উত্তর পরম্পরা দ্বারাই তাহ! সম্ভব হয়। ইহা ভাগবত অরণিদ্বয়ের দৃষ্টান্ত দ্বারা বুঝাইয়াছেন ( দেখ অনুচ্ছেদ ৭৯ )। অতএব ইহা হইতে বুঝা গেল, তবজ্ঞান লাভ করিতে হইলে, আদর্শের মলাপসরণের জন্য পুনঃ পুনঃ ঘর্ধণের ন্যায়ও অরণিদ্ধয় হইতে অগ্নি উৎপাদনের জন্য, পুনঃ পুনঃ মন্থনের ন্যায় প্রশ্ন ও উত্তর অসকৃৎ-বহুবার করা প্রয়োজন ৷ ভগবান্‌ স্বত্রকার ৪।১।১ সুত্রে “আবুত্তে রসক্বদুপদেশাৎ”- শ্রুতি ও স্মৃতিতে উপদেশ হেতু অসক্বং--অর্থাৎ বহুবার আবৃত্তির পুনঃ পুনঃ অনুশীলনের প্রয়োজন । এই সূত্রের শিরোদেশে উদ্ধৃত বৃহদারণ্যক শ্রুতির ২1৪।৫ মন্ত্রে নিদিধ্যাসনের উপদেশ আছে। নিদিধ্যাসনের অর্থ অবিচ্ছিন্ন তৈল ধারার ন্যায় ধ্যান। যোগশাস্ত্রে বিভূতি পাদের দ্বিতীয় সুত্রে খষি পতঞ্ছল ধ্যানের সংজ্ঞা নির্দেশে বলিতেছেন_-“তত্র প্রত্যয়ৈকাতনতা। ধ্যানম্‌্”__ইহাই অবিচ্ছিন্ন তৈল ধারার ন্যায় প্রত্যয় প্রবাহ । ইহাই অন্য কথায় পুনঃ পুনঃ অনুশীলন । ৮১। ভাগবত নিষ্নোদ্ধত শ্লোকে ৪1১1১ সুত্রে ব্যবস্ৃত “অসকুৎ্” শব্দই ব্যবহার করিয়া বলিতেছেন £__ প্রোক্তেন ভক্তিযোগেন ভজতো মাসকুন্মুনেঃ । কামা হৃদধ্যানশ্যন্তি সবের্ব ময়ি হৃদি স্থিতে ॥ ১১/২০।২৯ পূর্বোক্ত ভক্তিযোগ দ্বারা যে মুনি আমাকে নিরস্তর ভজন! করেন, তাঁহার হৃদয়স্থিত সমুদায়৷ কাম বিনষ্ট হয়, এবং তিনি নিজ হৃদয়ে আমার অবস্থানের পরিচয় পান! ১১1২০1২৯ গরুড় পুরাণে বলিতেছেন £ স! হানিস্তৎ মহচ্ছিদ্রং সা চান্ধাং জড-মুকত| | যনর্তং ক্ষণং বাপি বান্থুদেবো ন চিন্তাতে ॥ যে মুহূর্ত বা ক্ষণ বান্থুদেবের চিন্তা ব্যতিরেকে ব্য়িত হয়, তাহা অতিশয় ক্ষতি এবং মহৎ ছিদ্র ঘটাইয়া থাকে। একথও শি কাষ্ট ব! একখণ্ড প্রস্তর বা ৫ ৃত্তিকা যেমন দৃষ্টিশক্তি, চৈতন্তশক্তি বা মননশক্তি ও বাকৃশক্তিহীনরূপে পাড়য়া থাকে, যে ক্ষণে বা মুহুর্তে ভগবান্‌ বাহ্থদেৰ চিন্তিত না হন, সেই সমুদায় ক্ষণে ব৷ ৮৬ ব্ৰহ্মস্থুত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগব্ত মুহূর্তে উক্ত অচিন্তক ব্যক্তি এপ শুদ্ধ কাষ্ট, প্রস্তর বা মৃত্তিকাখণ্ মাত্র গণ : হইয়া থাকে।, আর. অধিক বিস্তারের প্রয়োজন নাই। এই সংক্ষেপ আলোচনা হইতে বুঝা গেল যে, যতদিন না জিজ্ঞাসার পরিসমাপ্তি হয়, ততদিন নিরন্তর অনুশীলনের প্রয়োজন । এই জন্যই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য মহাপ্রভু নিয়য় করিয়াছিলেন যে, যদি কেহ নিমন্ত্রণ করিয়া, তাহাকে ভোজন করাইতে চাহে, তাহাকে লক্ষপতি হইতে হইবে- অর্থাৎ প্রতিদিন লক্ষ হরিনাম জপ করিতে হইবে। ৮২। বিস্ঠোৎপত্তি হইলে, অন্য কথায় যাহা জিজ্ঞাস্ত ছিল তাহা জান! হইয়া গেলে, আর কিছু জানিবার অবশেষ থাকে না । ভাগবত বলিতেছেন নৈতদ্‌ বিজ্ঞায় জিজ্ঞাসৌজ্ঞতব্যমবশিষ্যুতে ৷ গীত্বা গীযূষমমতং পাতব্যং নাবশিক্ততে ॥ ১১।২৯।৩০ ইহা অর্থাৎ এই পরমতত্ব জানিতে পারিলে, জিজ্ঞান্থুর আর কিছুমাত্র জ্ঞাতব্য অবশিষ্ট থাকে না-_-তাহার জ্ঞানের পরিসীমা প্রাপ্তি হুইয়া থাকে। ুম্বাদু অমৃত পানকারীর আর কিছু পান করিবার কি স্পৃহা থাকে? ইহাই শ্রুতি কথিত এক বিজ্ঞানে, সর্ধ বিজ্ঞান । ইহার সাক্ষাৎ পরেও পাইব । ১১/২৯।৩০ ২৩) জিজ্ঞাসার প্রবৃত্ত ব্যক্তির কি প্রকার আচরণ কর্তব্য ? ৮৩। জিজ্ঞাসায় প্রবৃত্ত জিজ্ঞান্থ ব্যক্তি কি প্রকার আচরণ কর্তব্য? এই প্রশ্ন কল্পনা করিয়া ভাগবত বলিতেছেন £__ নিবুভ্তং কম্ম সেবেত প্রবৃত্তং মপরস্ত্যজেৎ। জিজ্ঞাসায়াং সংপ্রবৃত্তো নাব্রিয়েৎ কর্ম্মচোদনাং ॥ ১১।১০1৪ জিজ্ঞাসায় সংপ্রবৃত্ত হইবার পূর্বে “মৎ্পর»” হইয়| অর্থাৎ আমার শরণ গ্রহণ পূর্বক আমাতে সম্পূর্ণ নির্ভরতা রাখিয়া কাম্য-কর্ম্ম পরিত্যাগ করিবে। “নিবৃত্ত, কৰ্ম্ম অর্থাৎ নিত্য-নৈমিত্তিক কর্মাল্ঠান করিতে পারিবে বটে, কিন্ত জিজ্ঞাসায় সম্যক ভাবে প্রবৃত্ত হইলে, নিত্য-নৈমিত্তিক কর্ম্ম বিধিতেও আদর করিবে না । ১১১০৪ তখন তাহার নিত্য-নৈমিত্তিকাদি কর্শা করিবার অবসর কোথায়? সব সময় ত তাহার জিজ্ঞাসায়, গুরুর বা শাস্ত্রের উপদেশ গ্রহণে, গৃহীত উপদেশের অনুশীলনে, বিচারে এরং মনে দর i ষ্ট hy ১ দৃঢ়ভাবে ধারণা করিবার. প্রচেষ্টায় ব্যয়িত হ্হয়| যাইবে | ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি॥ ১ স্বঃ ৮৭ ২৪) জিজ্ঞাসার ফলে কি নৃতল কিছুর প্রাপ্তি হয় ? ৮৪। এই প্রকারে জিজ্ঞাসায় সংপ্রবৃত্ত থাকিলে, তাহার ফলে কি নতন কিছু প্রাপ্তি ঘটে? এই প্রশ্নের উত্তরে ভাগবত বলিতেছেন £-_ ঘনে! যথাইর্ক প্রভবে! বিদীর্ধ্যতে, চক্ষুঃ স্বরূপং রবিমীক্ষতে তদা । যদাহাহঙ্কারঃ উপাধিরাত্মনো জিজ্ঞাঁসয়। নশ্ততি তর্ানন্মরেৎ ॥ ১২1৪।৩২ মেঘের জন্ম সূর্ধ্য হইতে হুহলেও, উহা যেমন স্থর্ধ্কেই আবৃত করিয়া লাখে ; উক্ত মেঘ বিদীর্ণ হইয়া গেলে, যেমন চক্ষুঃ তাহার স্বরূপভূত কুর্ধ্যকে দেখিতে পায়, সেইরূপ আত্মার উপাধির্প অহংকার আত্মা হইতেই জন্মগ্রহণ করতঃ আত্মারই আবরণ কারণ স্বরূপ হয়। উক্ত অহংকার যখন ব্রহ্মজিজ্ঞাসা দ্বারা নাশপ্রাপ্ত হয়, তখনই ত্রক্মত্রূপ বা আত্মম্বকূপ স্মরণ হয় অর্থাৎ উহ! উজ্জ্লভাবে অভিব্যক্ত হয় । ১২1৪।৩২ স্থুল দৃষ্টিতে মনে হয় যে, মরণ ধৰ্ম্মী দেহে আত্মবুদ্ধি থাকা হেতু অমৃত-স্বরূপ ভগবানকে লাভ করা একপ্রকার অসম্ভব, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাহা নয়। ভগবৎ প্রাপ্তি নৃতন কিছু প্রাপ্তি নয়। ভাগবত বলিতেছেন £_ যথা হি ভানোরুদয়ো। বৃচক্ষুষাং তমো! নিহন্যান্ন তু সদ্‌ বিধত্তে । এবং সমীক্ষা নিপুণ! সতী মে হন্যাত্তমিঅং পুরুষস্ত বুদ্ধেঃ ॥ ১৩1২৮।৩৫ র্ধ্যোদয় যেমন লোকের চক্ষুর আবরক অন্ধকার মাত্র নষ্ট করে, কোনও নুতন পদার্থ উৎপন্ন করে না; যে সকল পদার্থ অন্ধকারে আচ্ছন্ন থাকায় অবৃশ্ঠ ছিল, অন্ধকার নাশ করিয়া তাহাদিগকে প্রকাশিত করে মাত্র, সেইরূপ নিপুণ র্দর্শন-_পুুষের বুদ্ধির আবরক অজ্ঞানান্ধকার নাশ করে মাত্র_উহা! নাশপ্রাপ্ত হইলে, স্বতঃ প্রকাশ আতন্বরূপ-_যাহা পূর্ব হইতেই নিজ স্বপ্রকাশ স্বরূপে বওমান ছিল, উক্ত অজ্ঞানান্ধাকারে আবৃত থাকা হেতু প্রকাশ পাইতে পারে নাই, তাহাই স্বাভাবিকভাবে স্বতঃ প্রকাশিত হইয়| পড়ে । ১১৷২৮৷৩৫ স্বরূপ ত চিরবর্তমীন। উহার নাশ অদভব। সেকারণ উহার জন্মও নাই। আগন্তক কারণে উহায় প্রকাশ ব্যাহত থাকায়, নষ্টের ন্যায় না ছিল। উক্ত কারণ নাশে ডহার সমুজ্জল জ্যোতিঃ যে স্বতঃ প্রকাশিত তাহার কথা কি? টি ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত ৮৫। উপরে উদ্ধৃত ভাগবতের ১১/২৮।৩৫ শ্লোকে “সমীক্ষা” পদ আই উহা সম্+ঈক্ষা এই ছুই শব্দে গঠিত। সম্__অর্থ সম্যক, পরিপূর্ণ, এবং টা অর্থ দর্শন । অতএব উক্ত “সমীক্ষা” পদের অর্থ-সম্যক বা পরিপূর্ণ দর্শন । ইহা পরোক্ষ দর্শন নহে। কারণ পরোক্ষ দর্শন সম্যক দর্শন নহে। উহা মনঃ_ বুদ্ধ চক্ষুঃ প্রভৃতি অন্তঃ ও বহিরিক্রিয়াদির মাধ্যমে সংঘটিত হয় বলিয়া, উহা তাহাদিগের দোষে কলুষিত হইতে বাধ্য। কিন্ত আলোচ্য শ্লোকে “নিপুণা সমীক্ষা” বাক্যাংশ ব্যবহারে ভাগবত বুঝাইতে চাহেন-_উহা মনঃ বুদ্ধি প্রভৃতি মাধ্যমের সাহায্যে দর্শন নহে, উহা অপরোক্ষ দর্শন। আত্মায় আত্মায় মিলন। কবির ভাষায় “মিলন লহরী ছুটে আত্মায় আত্মায়।» উহাই প্রকৃত দর্শন__অথবা দর্শনই বা বলি কেন, উহা আত্মার দ্বারা আত্মা লাভ-আপনার দ্বারা আপনাকে প্রান্তি। উহা যে কত প্রগাঢ়, কত নিবিড়, কত ঘনিষ্ঠ, তাহা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। উহা মানব প্রচেষ্টায় লভ্য কোনও বস্তু নহে । ভগবত কৃপায়__ভাগবতকার উহার অপরোক্ষান্থভূতি লাভ করায়, নিত্যধামে আনন্দ স্বরূপে আনন্দান্তভাবের পদ্ধতি, তাহার মানসচক্ষে প্রকটিত হইয়াছিল । তদন্সারে তিনি অভেদাত্মক ভেদাভিব্যক্তি বা অভেদে বহুত্বের প্রকটন প্রত্যক্ষ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। এবং সেই অপাধ্ধিব অনুভূতি নিজের মনে নিবদ্ধ রাখিতে অসমর্থ হইয়া, ভগবানেরই ইচ্ছা দ্বারা পরিচালিত হুইয়া__ভাগবতের “রাসপঞ্চাধ্যায়ে” তাহার কিঞ্চিং পরিচয় দিতে প্রয়াস করিয়াছেন । উহা ভাবরাজ্যের কথা । উহাতে প্রবেশ না করাই শ্রেয়ঃ। ৮৬। ভাগবতকার জিজ্ঞাসার ফলে পরমপ্রাপ্তির পরিচয় দিয়া, জীক কল্যাণের জন্য উপদেশ দিতেছেন £__ এষা বুদ্ধিমতাং বৃদ্ধি্মনীষা চ মনীষিণাম্‌ ৷ যং সত/মনূতেনেহ মক্ত্েনাপ্রোতি মামৃতম্‌ ॥ ১১/২৯২২ ইহাই বুদ্ধিমানগণের বৃদ্ধি ও মনীষীগণের মনীষা _অর্থাৎ ইহাই মানব দেহধারিগণের পরমপুক্রযার্থ, যে নশ্বর মরণংন্্রী নরদেহ দ্বারা অমৃত স্বরূপ আমাকে (পরমতত্ব, ব্রক্ষ বা ভগবানকে ) প্রাপ্ত হয়। ১১২৯।২২ ২৫) আমাদের জ্ঞান দ্বিবিধ_ পরোক্ষ ও অপরোক্ষ। ৮৭।| উপরের আলোচনায় পরোক্ষ ও অপরোক্ষ উভয়বিধ জ্ঞানের কথ? বল হইয়াছে । ভাগবত নিয্নোদ্বত দুটি শ্লোকে বুঝাইতেছেন : > খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ ্থুঃ টাও নবৈকাদশ পঞ্চ ্রীন্‌ ভাবান্‌ ভূতেষু যেন বৈ। ঈক্ষেতাথৈকমপ্যেষু তজ জ্ঞানং মম নিশ্চিতম্‌ || ১১৷১৯৷১৩ এতদেব হি বিজ্ঞানং ন তথৈকেন যেন যৎ ॥ ১১১৯১৪ নে জান দ্বারা ব্রহ্মাদি স্থাবরাস্ত সর্বভৃতে, প্রকৃতি, পুরুষ, মহৎ, অহংকার, পঞ্চ তন্মাত্র-এই নয়; একাদশ ইন্জির (পঞ্চ জ্ঞানেন্দিয়+ পঞ্চ কৰ্ণ্মেন্ৰিয়4-মনঃ ), পঞ্চ মহাভূত, সত্ত_রজঃ_তমঃ' এই তিনপগুণ_এই মোট অষ্টাবিংশতি তত্র প্রত্যক্ষ হয় এবং যাহ! দ্বারা, এই সমুদায় পদার্থে এক আত্মতত্ব অনুমিত হয়, তাহাই মদ্বিষয়ক জ্ঞান । ১১১৯১৩ আর যে একমাত্র জ্ঞান দ্বারা, পূর্বের ন্যায় পৃগক্‌ দৃষ্টি না হইয়া, একমাত্র কারণ স্বরূপ ব্র্ষকেই জানা যায়, তাহাই বিজ্ঞান। ১১৷১৯!১৪ জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পন্ন সাধকই সংসারের ত্রিতাপ জালা৷ হইতে মুক্ত হইপর থাকেন । ভাগবত বলিতেছেন £__ সৰ্ব্বভূতন্ন্ধচ্ছান্তো জ্ঞান-বিজ্ঞান-নিশ্চয়ঃ। পশ্ঠন্‌ মদাত্মকং বিশ্বং ন বিপণ্ভেত বৈ পুনঃ ॥ ১১1৭।১০ সর্ধভূতের সুহ্ৃৎ অতএব শান্ত ও জ্ঞান-বিজ্ঞান নিশ্চয় ব্যক্তি ( অর্থ পরোক্ষ ও অপরোক্ষান্থুভূতির দ্বারা__ধাহার আত্মবিষয়ক নিশ্চয় বুদ্ধি হইয়াছে ), মদাত্মকরূপে এই বিশ্বকে দর্শন করিলে--আর বিপদাপন্ন হইতে হয় ন?, অর্থাৎ সংসার হইতে মুক্ত হইয়া থাকেন । ১১1৭।১০ জ্ঞানী ও বিজ্ঞানী সম্বন্ধে আলোচনা “বেদান্ত বেশ” গ্রন্থের ১১৮-১১৯ পৃষ্ঠায় করা হইয়াছে। অতএব বুঝা গেল যে, জিজ্ঞাসার চরম ফল, পরম পুরুষার্থ প্রাপ্তি ৷ সংসার প্রবাহে উন্মজ্জন-নিমজ্জন হইতে চিরমুক্তি, শাশ্বত শান্তি লাভ। ২৩) পূর্ব পক্ষের প্রশ্ন ও ভাহার উত্তর। ৮৮। পুর্ববপক্ষ শ্রশ্ন করিতেছেন £- আমি পূর্ব শী মৃত তোমার ল কোন প্রশ্ন উত্থাপন করিয়া তোমার (১ন্তাধারার বাধা. স্বজন করি নাই। তোমার অতি বিশদ আলোচনার ফলে আমার বহুদিনের অনেক সংশয় নিরসন হইয়াছে। আমি সুষ্পষ্ট বুঝিতে পারিতেছি ন! যে, ভগবানের নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনের সহিত জীবের স্বাতন্ত্য রক্ষা কি প্রকারে, জঙ্গত হয়? আলোচন! চলা কাং Be ্রহ্মহত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত ৮৯। ইহার উত্তরে সিদ্ধান্তবাদী বলিতেছেন £_ তুমি যে তোমার অঙ্গীকার ক্ষা করিয়াছ, ইহাতে আমি কৃতজ্ঞ । আরও, তুমি যে আমার আলোচনা মনোযোগের সহিত শুনিয়াছ, তোমার প্রশ্ন হইতে তাহা বুঝিতে পারিয়া আমি অতিশয় আনন্দিত হইয়াছি। তোমার উক্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে শাস্ত্রের দোহাই না দিয়া কয়েকটি প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত দিয়া আমার উক্তি বিশদ্‌ করিবার চেষ্টা করিব। (ক) আমরা জানি যে, নিঃশ্বাস গ্রহণে ও প্রশ্বাস ত্যাগে, কি জীব, কি উদ্ভিদ, প্রাণবান্‌ মাত্রই জীবিত থাকে__অন্ত কথায় বায়ুর পরিচালনা আমাদের জীবন ধারণের যূলে। এবং সমুদায় জীব ও উত্ভিদ্‌ সম্পর্কে একই বায়ু জীবন ধারণ নিয়ন্ত্রণ: করে, বায়ুর কোনও বিভিন্নতা নাই। কিন্ত তাই বলিয়া বায়ু কাহারও স্বাতান্ত্রো কি বাধা দেয়? তাহ! ত দেয় না। (খ) আমরা অনেকেই রাত্রিকালে রঙ্গালয়ে বা সিনেম! গৃহে অভিনয় দর্শন করিয়াছি। আমরা সকলে জানি যে, উজ্জল. আলোকের স্থপরিচালনে ও হুনিযনত্রণে, অভিনয় সুষ্ঠু সম্পাদিত হয়। উহার অভাব হইলে, অভিনেতা, অভিনেত্রী অথবা ছবির রোল প্রথম শ্রেণীর হইলেও অভিনয় স্থসম্পাদিত হয় না। আলোকের স্থুপরিচালন বা স্থনিয়ন্তণ কি অভিনেতা, অভিনেত্রী, দর্শকমণ্ডলী প্রভৃতির স্বাতন্ত্রের কি কোনও বাধা হুজন করে? তাহা ত করে না। (গ) রাত্রি গত হুইয়! স্র্যোদয়ে দশদিক প্রকাশিত হইলে, জগতে কর্ম- প্রবাহ চলিতে থাকে__ইহা৷ আমাদের প্রতিদিনের প্রত্যক্ষ দৃষ্ট। স্ু্ধ্যালোকের পরিচালনায়, কি জীব, কি উদ্জিদ্‌ প্রত্যেকের শক্তি কার্ধ্যশীল হইয়া থাকে। সে কারণ, প্রত্যেকে নিজের নিজের উপযোগী পৃথক্‌ পৃথক্‌ কর্মে প্রবৃত্ত হয়, ইহা সহজেই বুঝিতে পারা যায়। স্্যকিরণও তাহার পরিচালনা বা নিষস্ণ সকলের পক্ষে সমান। উহা! ত কাহারও স্বাতম্ত্রো হস্তক্ষেপ করে ন!। (ঘ) আমরা জানি যে, মৃত্তিকার রস ও কুর্ধ্যকিরণ-উদ্ভিদের জনন, পোষণ, বর্ধন, পু্পফলোৎপাদন প্রভৃতির হেতু । মতিকার রস প্রচুর থাকিলেও স্বর্য্যকিরণ. প্রাপ্তির উপযোগী নিয়ন্নণ ন! করিলে, গাছ বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইয়া পত্র-ুপ্প-ফলে সমৃদ্ধ হইতে পারে না । বাগানে একটি সুমিষ্ট আত্বৃক্ষ আছে। আগাছা দুর করিয়া, আশে পাশে অন্য গাছের ডাল কাটিয়া, স্্যকিরণ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনের পথ হুগম করিয়া: উ্ আমগাছের অন্তরে অবস্থিত রপবাহী নালিকাগুলিকে কামিল হইবার যোগ প্রদান করিলে তবে আম গাছটি ফল সম্ভারে সমৃদ্ধ হয়! এখন মনে কর যে, দুর্ভাগ্যক্রমে প্রবল ঝটিকায় আমগাছটি ভায়া পড়িয়া - > খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ স্থঃ সহ উহার জায়গায় নিমগাছ বা তেঁতুলগাছ জন্মাইলে, মৃত্তিকার রস ও আগের ন্যায় প্রচুর পরিমাণে পাইলেও নিমের তিক্ততা বা তেঁতুলের অগ্নত্ব দূর হইয়া ক উহ! উভয়ে পূর্বকার আম গাছের মিষ্টতার পরিচয় দিবে? তাহা ত দেয় না। ক্্যকিরণের পরিচালনা. বা'মৃত্তকার রস উহাদের স্বাতন্ত্র্য নষ্ট করে না। সেইরূপ সকলের অন্তরে, অন্তর্ধ্যামী বর্তমান থাকিয়া, প্রত্যেককে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করিলেও কাহারও স্বাতন্ত্রো হস্তক্ষেপ করেন না। প্রত্যেকে নিজ নিজ পৃথক্‌ পৃথক্‌ কর্শ স্বতন্ত্রভাবে সম্পাদন করে। আশা করি তোমার প্রশ্নের সস্তোষকর উত্তর পাইয়াছ। ূর্ববপক্ষ বলিতেছেন-_-তোমার প্রদত্ত দৃষ্টান্ত কয়টি সম্পূর্ণদ্ূপে আমার সংশয় 'অপনোদন করিয়াছে । ২৭) চাঞ্টি অপরিহার্ধ্য অন্ুবন্ধ। ৯*। প্রত্যেক গ্রন্থের চারিটি অনুবন্ধ অপরিহার্য্য। উহাদের কোনটির অভাব হইলে গ্রন্থ সর্কাঙ্গপূর্ণ হয় না। উহাদের নাম যথাক্রমে_অভিধা বা নাম, বিষয়, সম্বন্ধ ও প্রয়োজন । আলোচ্য ব্ৰহ্মহথত্ৰ গ্ৰন্থে ভগবান্‌ স্বত্রকার প্রথম স্থত্র রচনা করিয়া এবং তাহাতে “ব্রহ্ম” পদ সন্নিবেশিত করিয়া বুঝাইলেন যে, এই গ্রন্থের নাম “কিকষত্র” বিষ কুত্রাতে বা যথাতথ্যেন নিরপ্যতে” এই বুৎপত্তিতে “ব্রন্মস্ত্র” পদ নিষ্পন্ন। এই নামকরণে স্বত্রকার “ব্রহ্মতত্” যথাযথভাবে ভাষায় যতদুর সম্ভব, নিরূপণ করিবার প্রতিশু। করিলেন । ইহা হইতেই ইহার “বিষয়” বা প্রতিপাগ্ঘ-ব্র্মতত্ব নিরূপণ, অন্যকথায় ব্রহ্মবিদ্যার উপদেশ, তাহা সুম্পষ্ট বলা হইল। ““ব্গস্ত্র” মানবদেহধারী সমুদায় জীবের কল্যাণের জন্য অভিপ্রেত হইলেও, ইহার বিশেষ “সম্বদ্ধ'-উপযুক্ত অধিকারিগণের সহিত-_ইহা প্রথম স্বত্রের আলোচনায় আমর! বুঝিয়াছি। ইহার “প্রয়োজন”-পরম পুরুষার্থ প্রাপ্তি যাওয়ায়, -ক্ছর্য্যকিরণ __সংপার প্রবাহে উন্মজ্জন-নিমজ্জন হইতে চিরমুক্তি_শাশ্বত, শান্তিলাভ-মানব দেহধারণের পূর্ণ সার্থকতা সাধন। ইহা হইতে অধিক অন্য কি পুরুষার্থ হইতে পারে? অতএব ত্রিতাপতাপিত জীবের পক্ষে, ইহা যে অতি উপাদেয়, তাহার কথা কি? ২। জন্মাগভধিকরণ_ ১) ভিত্তি £ (১) “পৰ্ব্বং খন্বিদং ব্রহ্ম তজ্জলানিতি”। ছান্দোগ্য ৩১৪1১ এই প্রত্যক্ষ পরিৃষ্তমান প্রপর্চবিশ্ব ও তদন্তর্গত .যত কিছু সর্বববরক্ষই। ৯২ ্র্ষন্থত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত কারণ ইহ] “তজ্ঞ”_-তাহা হইতে জাত, - “তল্প”-_পরিণামে তাহাতেই তাদাত্মভাবে লীন ও “তদন্”__স্থিতিকালে তাহার দ্বারাই প্রাণবান্‌ ও চেষ্টা- শীল । ছাঃ ৩১৪1১ (২) যতো বা ইমানি ভুতানি জায়ন্তে। যেন জাতানি জীবস্তি। যৎ প্রয়ন্ত্যভিসংবিশত্তি। তদ্‌ বিজিজ্ঞাসম্ম | তদ্‌ ব্রন্দা। তৈত্তিঃ ৩১ যাহা হইতে ভূত সকল জাত হয়, ধাহার দ্বারা জাত ভূতসকল জীবিত থাকে এবং পরিণামে ধাহাতে ভূত সকল প্রবেশ করে, তাহাকে জানিবার চেষ্টা কর। তিনিই ব্রন্ধ। তৈত্তিঃ ৩।১ ২) সংশয়। ২। প্রথম সুত্রের আলোচনায় “ত্র্মজিজ্ঞাসার” প্রয়োজনত্ব সিদ্ধ হহয়াছে বটে, কিন্তু ব্রদ্ধকে' কি লক্ষণে জানা যায়? পূর্বেই উল্লিখিত হইয়াছে যে, ক্রচ্কতত্ব নির্ণয় অতি দুরহ ৷ তিনি বাক্য মনের অগোচর। একারণ আমাদের জানিবার ও বুঝিবার যন্ত্র মন:, বুদ্ধি তাহার কাছে পৌহুছিতে পারে: না, স্থৃতরাং ভাষাই বা! তাহাকে কি করিয়া প্রকাশ করিবে? ( তৈত্তিঃ ২৯) আমাদের যৎকিঞ্চিৎ পরিচয় এই পরিদৃশ্ঠমান জগতের সহিত । যদি জগৎ হহতে তাঁহার জ্ঞান আহরণ সম্ভব হয়, তবেই তাঁহাকে জানাও সম্ভব হইতে পারে । ৩) জুত্র। ৩। এই সংশয় সমাধানের জন্য স্ত্রকার দ্বিতীয় স্থত্র রচনা করিলেন £_- জন্মাস্তত্ত যতঃ॥ ১1১২২ জন্মাদি +-অন্ত + যতঃ। জন্মাদি £__জন্ম আদিতে যাহাদিগের_ অর্থাৎ জন্ম-স্থিতি-লয় । অস্ত £__এই পরিদৃশ্ঠমান প্রপঞ্চবিশ্বের ৷ যতঃ ₹_ ধাহা হইতে ; সরলার্থট_যাহা হইতে এই পরিদৃশমান প্রপঞ্চবিশ্বের জন্ম, স্থিতি ও লয় হইয়া থাকে তিনিই ব্রহ্ম ৰ 3০০১৭ যে ব্র্মই একমাত্র জগৎ কারণ, শুধ বনে ডি হইতেছে, * উধু জন্মের নহে, স্থিতির এবং নাশেরও বটে । > খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ তিনি নও নিমিত্ত, উপাদান, কণা, কা, বরণ, সং, অধিফযণ প্রভৃতি সম্মায়ই । ইহা আম্শঃ বিশদভাবে বুঝা যাইবে। ৪) উক্ত সূত্রের ভাগবত ভাষ্য ৪1 এই সুত্রের ভাগবত ভায়া বড়ই মধুর ও গভীর । জন্মাহাস্ত যতোহশ্বয়াদি তরঙশ্চার্থেম্বভিজ্ঞঃ স্বরাট। তেনে ভ্রশ্ম হৃদ! য'আদিকবয়ে যুহ্স্তি যৎ সুরয়ঃ ॥ তেজোবারিমৃদাং যথা বিনিময়ে! বর ত্রিসর্গোহযুষা। ধায়! স্বেন সদা নিরস্তকুহকং সত্যং পরং ধামাই ॥ ভাগঃ ১১১ এই প্রত্যক্ষ পরিদূখমান জগতের স্ষ্টি-স্থিতি-লয় ধাহা হইতে হইতেছে, যিনি জাগতিক সমুদায় বস্তু ও অবস্তুতে, অন্বয় ও ব্যতিরেক মুখে বর্তমান ( অর্থাৎ যাহার সত্বায় সমুদায়ের দৃণ্তমান সত্বা এবং যাহার অসন্বায় অবস্তর অসব্বা) যিনি সৰ্ব্বজ্ঞ, স্বতঃসিদ্ধ জ্ঞানস্বরূপ ; যে বেদে পরম জ্ঞানিগণও মুগ্ধ হন (অর্থাৎ বেদের রহস্ত অর্থ বুঝিতে অক্ষম হন), সেই বেদ যিনি আদিজ্ঞানী ব্রহ্মার হৃদয়ে প্রকাশ করিয়াছেন। যেমন তেজে বা রৌদ্রে জলঙ্ঞান, জলে পাষাণজ্ঞান, এবং স্বচ্ছ কাচে জলবুদ্ধি ইত্যাদি ভ্রম-_অধিষ্টানের আপোক্ষক সত্যতা হেতু সত্য বলিয়া প্রতীতি গোচর হয়, সেইরূপ যাহার নিরপেক্ষ, পরম সত্বায়, সত্ব- রজ:-তমঃ এই গুণ ত্রয়োৎপন্ন প্রপঞ্চ স্থষ্টি বস্তুতঃ অসত্য হইলেও সত্যরূপে প্রতীত হইতেছে; অথবা তেজে জলত্রম, জলে পাষাণত্রম, অথবা কাচে 'জলভ্রম__যেমন বাস্তবিক অলীক তজ্রপ যাহার অধিষ্ঠান ব্যাতরেকে, এহ্‌ গুণ- তয়োৎপন্ন স্ষ্টি_মিথ্যা ইন্দ্রজাল মাত্র; স্বীয় স্বপ্রকাশ জ্ঞান প্রভাবে যাহাতে কুহক অর্থাৎ মায়িক উপাধি সম্বন্ধ নিরস্ত হইয়াছে, সেই পরমসত্য স্বরূপকে ধ্যান করি । ভাগবত ১৷১৷১ নু ৫। এই পরম সত্য স্বর্ণ বস্তই বর্ন! ইহাকেই ভাগবত ১১২ শোকে 2৩ “ৰেন্যং বাস্তবং বস্তুশিবদং’” বলিয়া উল্লেখ করিয়া বুঝাইলেন যে, তিনি “আবাউ, মনসোগোচর” হইলেও সকালে “বেন্তা”ও বটে i যদিবেষ্ভ না হইতেন, তাহ! হইলে ্ রচনার অথবা তাহার হারার Se প্রয়োজন হইত ন!। কাহাদের বিকট এবং কি প্রকারে তিমি ‘বেগ্ত” হন, তাহাই প্রতিপাদনের অন্ত বরাত অবতারণা! দি), ই আলোচন| মনন শাক্ত সপ মাবদেহদারী জীবম্ণের পদ অপ্রয়োজনীয় ইহা আশ! করি ক্রমশঃ পরি হইংবে। ৯৪ ব্ৰহ্মন্থুত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত ৬। উপরে উদ্ধত ভাগবতের ১১।১ শ্লোকের ভাষ্য স্বরূপ ভাগবতের' কয়েকটি অতি উপাদেয় শ্লোক নীচে উদ্ধৃত করিতেছি । যন্মিন্‌ যতো যেন চ যন্ত যস্মৈ যদ্‌ যো যথা করুতে কাঁধ্যতে চ। পরাবরেষাং পরমং প্রাক্‌ স্বসিদ্ধং তদ্‌ ব্রহ্মা তদ্দেতুরনন্াদেকম্‌ ॥ ভাঁগঃ ৬1৪২৫ যে অধিষ্ঠানে, যাহা হইতে, যাহার দ্বারা, যাহার সম্বন্ধে, বণ সম্প্রদানক, যৎ কৰ্ম্মক, যৎ কর্তৃক, যে প্রকারে যে কোনও কর্ম কৃত বা ( দৃশ্যতঃ অপর কাহারও দ্বার! ) কারিত হয়--সকলই এক অদ্বিতীয় ব্রহ্ম-তিনিই সকলের কারণ, তিনি সকলের অগ্রে আপন হইতেই সিদ্ধ আছেন। তিনি পর ও অপর সকলের পরম কারণ এবং সজাতীয়-বিজাতীয় ভেদশূন্ত । ভাগঃ ১৬1৪)২৫ ভাগবতের এই গ্লোকের উক্তির বলে, ৩য় অনুচ্ছেদে, তিনি একাধারে নিমিত্ত, উপাদান, কর্তা, কর্ম, করণ, অপাদান, সম্বন্ধ, অধিকরণ প্রভৃতি সমুদায় কারক: ব্যাপারের মুলে বলা হইয়াছে । উদ্ধত গ্লোকটিতে “পরাবরেধাং প্রমং) “প্রাক্স্বসিদ্ধং”’, “অননস্তৎ”, «একম্” এই কয়েকটি বিশেষ অর্থগর্ত বিশেষণের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করি! বিশেষণ কয়টি আমাদের অন্থতৃতিগম্য আপেক্ষিক জগতের উপাদানে গঠিত । আমর! আপেক্ষিক জগতের অন্তভূর্ত। আমাদের-মনঃ বুদ্ধি প্রভৃতি চিন্তা ও. ধারণ৷ করিবার যন্ত্র ও আপেক্ষিক জগতের প্রভাবাধীন। একারণ পরমতত্বকে আমাদের চিন্তার ও ধারণার স্তরে আনয়ন করিতে হইলে, ওরূপ ভাষা ব্যবহার" করা ভিন্ন উপায় নাই । বর্তমানে উল্লেখমাত্র করিয়াই ক্ষান্ত হইলাম । ৭। উপরের গ্লোকটিতে সপ্ুণ ব্রদ্মের নির্দেশ দেওয়া হইল। কিন্তু উক্ত নির্দেশ, যে নিপুণ, নিরীহ পরম ব্রহ্ম স্বর্পেও প্রযোজ্য, তাহা নিষোদ্ধত শ্লোকে- ভাগবত বলিতেছেন £- যস্মিন্‌ যতে! যহি যেন চ যন্ত যন্মাৎ যস্মৈ যথা যদুত যস্তপরঃ পরে! বা। ভাঁবঃ করোতি বিকরোতি পৃথক্‌ স্বভাবঃ সঞ্চোদিতস্তদখিলং ভবতঃ স্বরূপম্‌।| ভাগঃ ৭1৯1১৯ পৃথক্‌ পৃথক্‌ স্বভাব বিশিষ্ট অপর কর্তা পিত্রাদি অথবা পরবর্তী ব্ৰহ্মাদি, হাহ! কুক প্রেরিত হইয়া যে অধিকরণে, যে নিমিত্ত হইতে, যে কালে, যে হেতুতে, > খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ৯৫ যাহার সম্বন্ধে, যে অপাদান হইতে, যাহার নিমিত যে প্রকীর কেনে অভীম্পিত বিষয় উৎপন্ন করেন, অথবা রূপাস্তর সংঘটন করেন, সে সকলই আপনার স্বরূপ । ভাগঃ ৭।৯11১৯ ly এ কারণ ব্রহ্ম বা বখন স্বস্বরূপে বর্তমান, তখন জগৎ প্রপঞ্চ তাহার অনন্তভাব ও ক্রিয়ার সহিত, অতি স্ুন্মভাবে তাহাতে বর্তমান আছে। স্থতরাং তাহাতে প্রপঞ্চের বর্তমানতা কখনও লোপ প্রাপ্ত হয় না। কখনও অভিব্যক্ত ভাবে এবং কখনও বা অনভিব্যক্তভাবে তাহাতে বর্তমান থাকে, ইহা ভাগবতের অভিপ্রায় বলিয়! মনে হয়। স্বরূপ বিচ্যুত হইয়া কোনও কিছুর থাকা সম্ভব নয়। পরমতত্ব, ৮। জগৎ প্রপঞ্চের অভিব্যক্তি কি প্রকারে হয়, সে সম্বন্ধে ভাগবত বলিতেছেন £__ পরাবরেশো! মনসৈব বিশ্বং স্থজত্যবত্যন্তি গুণৈরসঙ্গঃ ॥ ভাগঃ ১1৫৬ পর ও অপর সকলের নিয়ন্তা ঈশ্বর মনোবিলাস দ্বারাই বিশ্বের সৃষ্টি-স্বিতি- লয় সাধন করেন । কিন্তু গুণে লিপ্ত হন না। ভাগঃ ১1৫1৬ মনে সহজেই প্রশ্নের উদয় হয় যে, তিনি ত আত্মারাম, আপ্তকাম। তিনি জগতের স্থা্ট-স্থিতি-লয়ে আপনাকে ব্যাপৃত করেন কেন? ইহার উত্তরে ভাগবত বলিতেছেন-_-“আত্ম লীলয়া” ! য এক ঈশো জগদাত্মলীলয়া স্থজত্যবত্যত্তি ন তত্র সঙ্জতে ॥ ভাগ £ ১১০২৪ যিনি সজাতীয়-বিজাতীয় ভেদ শূন্য, এক অদ্বিতীয়, সকলের নিযস্তা ঈশ্বর, আপনার লীলার কারণ, এই জগতের স্ৃ্টি-স্থিতি-লয় করেন, কিন্তু তাহাতে স্পৃষ্ট হয়েন না। ভাগঃ ১১০২৪ ভগবান শঙ্করাচার্যের পরমগুরু পুঁজাপাদ আচার্য গৌড়পাদ, মাঙুক) কারিকার yt কারিকায় বলিয়াছেন, “দেবন্তৈব স্বভাবোহয়মাপ্তকামস্ত কা স্পৃহা” ।__পরম দেবের এই রূপই স্বভাব-নতুবা যিনি আগ্ুকাম, তাহার স্পৃহ! উদ্দ্েকের কোনও কারণ নাই। ভাগবত উপরে উদ্ধত ৭1১৯ শ্লোকে “ভৰতঃ স্বরপম্‌*, বলিয়া যাহা “দেৰস্তৈৰ স্বভাবোহয়ম্” বলিয়া তাহাই নির্দেশ করিলেন, আচার্য্য গৌড়পাদ “৫ ই প্রকাশ করিলেন । ভগবান কুত্রকার ২1১৩ সতে রা ৃ য়াছেন। ঃ বলিয়া স্থষট-স্থিতি-লয়ের কারণানুগন্ধান পরিহার করিয়াছে হার ৯৬ ব্ৰহ্মহবত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত আলোচনা যথাস্থানে প্রষব্য। এখানে এইমাত্র বলি যে, আমাদের দৃষ্টিতে কালের অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ ভেদ থাকায়-প্রপঞ্জাত বন্তগণের জন্ম- স্থিতি-মৃত্যু বা নাশের নিদর্শনে জগতের হুষ্ি-স্থিতি-লয় আছে বটে, কিন্ত যিনি দেশকালের খারা পরিচ্ছিন্ন নহেন, তাহার কাছে ভূত-বর্তমান- ভবিষ্তৎ ভেদ না| থাকায়, এবং. কি জন্ম, কি স্থিতি, কি লয়_-কোন অবস্থাতেই তাহার আধার ছাড়িয়া অন্য কোথাও অবস্থান করা সম্ভব নয় বলিয়া, পরম তত্র দৃষ্টিতে স্থা্ট-স্থিতি-লয়ই নাই। ইহা ক্রমশঃ বিশদ হইবে আশাকরি । এখানে এইমাত্র বলিয়া রাখি যে, যদি আমরা, মেঘ হইতে বধিত একবিন্দু জল পৃথিবী পৃষ্ঠে পতিত হইলে, তাহার জন্ম স্টিতি ও পরিণতি সম্বন্ধে বিচার করি, তাহা হইলে আমর! স্পষ্ট বুঝিতে পারি যে, উহা মহাসাগরের জলরাশির সহিত তাদাত্/ তাবে অবস্থান করিতেছিল। স্বর্য্যকিরণে বাপ্পাকারে আকাশে উত্থিত হইয়া মেঘে অন্যান্য জলবিনুর সহিত নিধ্রিশেষভাবে ছিল, তাহার পর পৃথিবী পৃষ্ঠে পতিত হইয়| আমাদের প্রতীতিগম্য হইল। উহা জড় বস্তু বলিয়া, উহা৷ একটু ন! একটু স্থান ব্যাপিয়া অবস্থান করে। স্থতরাং কি সাগর পৃষ্ঠে, কি মেঘে, কি পৃথিবী পৃষ্ঠে এবং তথা হইতে অন্যান্য অসংখ্য জল বিন্দুর সহিত পুনরায় সাগরে পতনে, উহ! দেশের (92৪০৪ এর ) কিছু না৷ কিছু স্থান ব্যাপিয়া অবস্থান করিয়া থাকে । আমাদের দৃষ্টিতে উহার মেঘে জন্ম, পৃথিবী পৃষ্ঠে স্থিতি এবং পুন।এ সাগরে পতনে মৃত বলিয়া প্রতীত হইলেও উহার আত্যন্তিক ধ্বংস নাই । উহা! 90৪০০ বা দেশে চর বর্তমান। এই দৃষ্টান্ত হইতে উপরে যাহা বলা হইয়াছে তাহা সুস্পষ্ট বোঝা গেল; ৯। উপরে উদ্ধৃত ১৫৬ শ্রোকে ভাগবত স্পষ্ট বলিলেন যে, ঈশ্বর মনোবিলাদ দ্বার! জগতেয় হুষ্ট-স্থিতি-লয়ের বিধান করেন। ইহা যে আমাদের বৃষ্টি অনুলারে বল! হইয়াছে, তাহা বলা বাহুল্য। তাহা হইলেও, ভাগবতের উক্ত উক্তিতে মনে সন্দেহ হইতে পারে যে, আমাদের মনঃ যেমন আমাদের স্বরূপ হইতে পৃথক, সেই নিদর্শনে পরম পুরুষের মনঃ ও কি তাহার স্বরূপ হইতে পৃথক? ইহার উন্ুরে ভাগবত বলিতেছেন, তাহা নয়। পরমতত্ ত অদ্বৈত স্বদ্প_‘তাহাতে তিনি ও তাঁহার” মধ্যে ভেদ মাত্র নাই। প্লে/কটি এই 2 বায়ু্িরবনিধিয়দুমাতা: প্রাণেন্দরিয়ানি হৃদয়ং চিদনুগ্রহশ্চ ৷ সর্ববং মের সগুণে| বিগুনশ্চ ভূমন্‌ নান্তস্তবদস্ত/পি মনো বচস। নিরুক্তমূ। ভাগবত ৭1৯৪৭ ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ 59) হে ভূমন্‌ ! বায়ু, অগ্নি, পৃথিবী, আকাশ, জল, পঞ্চতন্মাত্র, প্রাণ, ইন্জিয়গণ, মনঃ, চিত্ত, অহংকার, এ সকলই আপনি। স্থুল-সুন্ম 'ও আপনি ৷ মনঃ ও বাক্য দ্বারা প্রকাশিত কোনও বস্তুই আপনা হইতে ভিন্ন নহে। ৭1৯18৭ এই শ্লোকে বায়ু, অগ্নি, অবনী প্রভৃতি পরিদৃশ্ঠমান ও অপরিদৃশ্ঠমান সমুদায় গ্রপঞ্চ জাগতিক বস্তু জাতের উপলক্ষণে গৃহীত হইয়াছে ৷ উহার! যদি পরমতত স্বরূপ হইতে অপৃথক্‌ হয়, তবে পরমতত্ স্বরূপের স্বেচ্ছায় প্রকট ভাবে প্রকাশিত, দেহ ও রূপের কথা কি? তাহারাও ন্বরূপের সহিত সম্পূৰ্ণ অভেদ। ৫) ত্রিপাদ্দ বিভুতি মহানারায়ণোপনিষদের উক্তি। ১০। ত্ৰিপাদ বিভূতি মহানারাপ়ণোপনিষর্দের নিয্নোদ্ধবত উক্তি ও আলোচ্য স্থত্রের ব্যাখ্যা রূপে গ্রহণ করা যাইতে পারে। উক্ত শ্রুতিতে পরমতত্ব “নারায়ণ” নামে অভিহিত হইয়াছের্ন। নিব্বিশেষ, নিরীহ, নিপুণ, অনির্দে্ট, শুন্ধবুদ্মুক্ত পরমততব হইতে স্বষ্টির অভিব্যক্তি সম্বন্ধে, উক্ত শ্রুতি বলিতেছেন ৪ “্তস্মাৎ পরক্রদ্ষণঃ পরমার্থতঃ সাকার-নিরাকারেণ স্বভাবসিদ্ধৌ। তথা- বিধস্ত অদ্বৈত-পরমানন্দ-লক্ষণস্য আদি-নারায়ণস্ত উন্মেষ-নিমেষাভ্যাং মূলা ধিগ্যোদয়-স্থিতি-লয়া জায়ন্তে। কদাচিদ্‌ . আত্মারামস্ত--আখিল-পারিপৃণস্ত আদি নারায়ণস্ত স্বেচ্ছান্ুপারেণ উন্মেষো জায়তে। তম্মাৎ পরক্রশীণঃ অধস্তন- পাদে সর্বকারণে মূলকারণব্যেক্তাবির্ভীবো ভবতি। অব্যক্তাৎ যূলাবিরাবো যূলাবিগ্ঠাবির্ভাবশ্ঠ। তন্মাদেব সচ্ছ্ধ-বাচ্যং ্রহ্মবিদ্যাশবলং ভবতি। ততো মহৎ। মহতোহহংকারঃ। অহংকারাৎ পঞ্চ তন্মাত্রাণি। পঞ্চ তন্সাত্রেভ্যঃ পঞ্চ মহাভূতানি । পঞ্চ মহাভৃতেভ্যো ব্রদ্মেক-পাদব্যাপ্তমেকমবিদ্যাস্তং জায়তে | তত্র তত্বতো গুণাতীতঃ শুদ্ধ-সত্বময়ো লীলা-গৃহীত-নিরতিশয়ানন্দলক্ষণো মায়োপাধিকো নারায়ণ আলীৎ। স এব নিত্যঃ পরিপূর্ণ পাদবিভৃতিববৃ্ঠ নারায়ণঃ। স চ অনন্ত-কোটি-্দধাগানামূদয়স্থিতিলয়াদিঃ অখিল-কার্ধ্-কারণ- জাল-পরম-কারণ-কারণভূতো-মহামায়াতীত; তুরীয়ঃ পরমেশ্বরো ভবতি। তক্মাৎ সুল-বিরাট্‌-স্বরূপে! জায়তে ৷ স সর্বকারণ-যূলং বিরাট্‌ স্বরূপো ভবতি। সচ অনস্তসীর্ধা পুরুষ অনস্তাক্ষিপানি পাদো ভৰতি। অনন্তপৰবণঃ রবমান্ত্য তিষ্ঠতি । জানবলৈঙয-শিতেজঃরূপো AUC onal URN দিবা ৭ ৯৮ ্র্গন্থত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত তোজোরাশ্তাকারো ভবতি। সমস্তাবিদ্যান্তব্যাপকো ভবৃতি। সচ অনন্ত মহামায়াবিলাপানাম্‌ অধিষ্ঠান- বিশেষ নিরতিশয়াদ্বৈত-পরমানন্দ-লক্ষণ-পরত্রহ্ষ- বিলাস-বিগ্রহো ভবতি। অগ্তৈকরোমকৃপান্তরেব। অন্ত- -কোটি-ব্রক্মাণ্ডানি সাবরণানি চ জায়ন্তে। তেযু অন্তেযু সর্কেবু একৈক-নারায়ণাবতারে!| জায়তে ! নারারণাদ্‌ হিরণ্যগর্ভোজায়তে ৷ নারায়ণাদন্ত বিরাট্হ্বরূপে। জায়তে। নারায়ণাদ্‌ অখিল-লোকশষ্ট, প্রজাপতয়ো জায়ন্তে'- ইত্যাদি । শ্রুতির ভাষ! অতি সরল বলিম্না বাঞ্গলা অর্থ দিবার প্রয়োজন মনে করি না। ১১। শ্রিরোদেশে উদ্ধৃত ছান্দোগ্য ৩।১৪।১ ও তৈত্তিঃ ৩১ মন্ত্রের সহিত ত্রিপাদ বিভূতি মহানারায়ণোপনিষদের উদ্ধৃত অংশ একটু অনুধাবন সহকারে একত্র পাঠ করিলে, বুঝিতে পারা যা [ইবে যে, ছান্দোগ্য ও তৈত্তিরীয় শ্রুতিতে যাহা অতি সংক্ষেপে স্থত্রাকারে কথিত হইয়াছে, ত্রিপাদ বিভূতি মহানারায়ণো- পনিষদ্‌ তাহারই ব্যাখ্যা সংক্ষেপে বিকৃত করিয়াছেন । আমাদের বোধসৌ- কর্ধযার্থ আমাদের চঙ্ষুর উন্সিষণে জগতবৈচিত্র্ের দর্শন ও নিমিষণে উহার অনর্শনের, নিদর্শনে পরমতত্ স্বরূপ আদি নারায়ণের উন্মেষ ও নিমেষ কল্পিত হইয়াছে। শ্রুতি বুঝাইতে চাহিতেছেন যে, প্রপঞ্চ জগতে যত কিছু আমাদের বোধগম্য হয়, সে সকল পরমতত্ব স্বরূপে আছে বলিয়াই, তাহাদের প্রতিচ্ছায়া-বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়া আমাদের দৈর্ধয-পরস্থ-বেধ-কাল__এই চারি পরিমাণের স্তরে পতিত হইলেই, আমাদের প্রতীতি গোচর হইয়া থাকে। এ সম্বন্ধে বিস্তত আলোচনা পাগুলিপি আকারে রক্ষিত মদালোচিত “নামমহিমা” পুস্তকে করা হইয়াছে। গ্রন্থবাহুল্য ভয়ে এখানে উল্লেখ মাত্র করিয়াই ক্ষান্ত হইলাম ৷ ৬) ব্রিপাদবিভুতি মহানারায়ণৌপনিষদে কথিত “মূলাবির্ভাব” ও “মূলা বিদ্ভাবিরভাব” ৷ ১২। ত্রিপাদ বিভূতি মৃহানারায়ণোপনিষদের উদ্ধত অংশে “আদি নান্লায়ণের”’ স্রেচ্ছান্তসারে উন্মেষ হইলে “অধস্তন পাদে” অর্থাৎ পাদবিভূতিতে “অব্যক্তের” আবির্ভাব হয় । এবং “অব্যক্ত” হইতে “যুলাবিরভাব” ও “যুলা- বিদ্যাবির্ভাব” হইয়| থাকে। উক্ত উপনিষদে “অব্যক্ত” কে “মুল কারণ” বলা হইয়াছে । ভগবান্‌ গীতায় ৮১৮ গ্লোকে “অবাক” পদ সময় কার্ঘোর কারণাত্মক অর্থে ব্যবহার করিয়াছেন। “এই “অব্যক্ত” ই গীতায় ১৪1৩ ্সোকে কথিত > খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থুঃ ন “মহত” । ইহার সহ্ন্ধে আলোচনা বিস্তারিতভাবে কর! হইবে। এখানে উল্লেখ করিয়াই ক্ষান্ত হইলাম । ১৩। উক্ত উপনিষদ বলিতেছেন যে, “অব্যক্ত” হইতে সর্কপ্রথমে একসঙ্গে যুলাবির্ভাব” ও “মূলাবিদ্যাবিভাব’” হইল । ইহা সমষ্টগত aS _অন্য কথায় সমষ্টি ভোক্তৃতত্ব ও ভোগ্যতত্ব। ইহাই প্রশ্নোপনিষদের-প্রাণ ও রয়ি, ইহাই খগ.বেদের সত্য ও খত ( গায়ত্রী প্রবেশ দেখ ) হং বিতত ও মাতৃতত্ব। মহাকাল-মহাকালী, যোগাত্মক-খণাত্মক তড়িৎ, প্রতি পরমাণুতে প্রোটন-ইলেক্‌ট্রন । অধিক কি আমাদের দেহের-দক্ষিণাংশ পুরুষ ও বাম”শ স্তর বলিয়া উক্ত হইয়া থাকে । ১৪। ভাগবত উপনিষদের উক্তি স্মরণে রাখিয়া বলিতেছেন £__ তম্মায়াফলরূপেণ কেবলং নিবিবিকল্পিতমূ। বাজ্মনোগোচরং সত্যং দ্বিধা সমভবদ্‌ বৃহৎ ॥ ১১1২৪।৩ তয়োরেকতরো্যর্থঃ প্রকৃতিশ্চোভয়াত্মিকা । জ্ঞানং ত্বস্ততমো৷ ভাধঃ পুরুষঃ সোহভীধীয়তে ॥ ১১1২৪1৪ সেই বৃহৎ একমাত্র পরত্রক্গ, মায়াপ্রকাশরূপে বাক্য মনের গোচর ভাবে ও স্বরূপভাবে দুই প্রকার হইলেন। এই দ্বিধাভূত অংশের মধো এক অংশ অর্থ, অন্য অংশ জ্ঞানমাত্র, ধাহাকে পুরুষ বলিয়া ব্যক্ত করা হইয়া থাকে । ইহাদের মধ্যে কাৰ্য্যকারণ রূপিণী প্রকৃতি উভয়াত্মিকা। ভাগবত এই শ্লোকে বিঞুপুরাণের অনুপরণ করিয়াছেন, মনে হয়। বিষুরপুরাণ বলিতেছেন £-_ বিষ্কোঃ স্বরূপাৎ পরতো হিতেইন্তে রূপং প্রধানং পুরুষশ্চ বিপ্র। নিরুপাধি (নিধিবিকল) বিষ্ণুর স্বরূপ হইতে প্রধান ও পুরুষ দ্বিধা রূপ ধারণ করিয়া আবিভূর্তি হইলেন ॥ ১৫। আরও একটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ সঙ্গত মনে করি । খগবেদীয় ুরুষন্থক্তে আমর! “চতুর হ” তরে ইঙ্গিত পাই, ইহা মদালোচিত পুরুষকে বুঝিতে চেষ্টা করিয়াছি। উক্ত “চতুর্বংহ” তবে উল্লেখ, ঠিক চতুরবহের নামানুসারে না হউক্‌, আমরা উপরে উদ্ধৃত উপনিষদের অংশ হইতে পাইতেছি। দিগদর্শন স্বরূপ বলা যাইতে পারে যে, () আদি-নারায়ণ-তুরীয় তত্ব বা বাস্থদেব। (i) “্অব্যক্ত”-_অনস্তদেবের অপর নাম। চা? “অনন্ত”-তিনি যে “অব্যক্ত” হইবেন, তাহার কথা কি? অব্যক্ত কারণাণ বের অপ উদ রহ্মস্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত হয়। তিনি কারণার্ণবশায়ী_সহর্যণ। (i) তাহা হইতে “মূল” অর্থাৎ মহাবিরাট্‌ ( মহাপুরুষ ) ও “ুলাবিদ্ভা”-প্রকৃতি আবিভূতি হইলেন। এই “মূলাবিদ্তা” বা প্রন্কৃতিই গর্ভোদক এবং “যূল” বা মহাবিরাট্ই গর্ভোদকশায়ী। ইহারই প্রতি রোমকৃপে অনন্ত কোটি ব্রহ্মা নিজ নিজ মাবরণের সহিত পরম্পর অবিরোৌধে বিচরণ করিতেছে । এই অনন্ত কোটি ব্রদ্ধাণ্ডের প্রতি ্রন্ধাণ্ডে-নিয়ন্্ণকারী “নারায়ণ” প্রতি বিশেষ বিশেষ ব্রদ্দাণ্ডের কেন্্রস্থানীয় নিজ নিজ সবিতৃমগ্ুলে বিরাজমান থাকিয়া, প্রত্যেকের পালন, পোষণ, বদ্ধন বিধান করিতেছেন। এই বিশেষ বিশেষ ত্রহ্মাণ্ডের নিয়ন্ত্রকারী, তত্তৎ সবিতৃমগলে অবস্থিত নারায়ণই “অনিরুদ্ধ” । ইহা হইতে বুঝা গেল যে, সৃষ্টি ও স্থিতির মূলে পরব্রন্ধ স্বরূপ “আদি নারায়ণ” । বলা বাহুল্য যে, অনুলোম ক্রমে হ্ষ্টি, তাহার প্রতিলোমে প্রলয়। উক্ত উপনিষদের প্রলয় সম্বন্ধে উক্তি গ্রন্থ বাহুল্য ভয়ে উদ্ধার করিতে বিরত হইলাম ৷ ১৬। মহানারায়ণোপনিষদের উদ্ধৃত অংশের একটি বাক্যের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি আকর্ধণ করিতেছি। উক্ত বাক্যটি “স চ অনস্ত-মহামায়া-বিলাসানাম্‌ অধিষ্ঠান-বিশেষ-নিরতিশয়াদ্বৈত-পরমানন্দ-লক্ষণ-পরব্রন্ম-বিলাস-বিগ্রহো! ভবতি |” এই বাক্যাংশে লক্ষ্য করিবার বিষয় হইতেছে :- (ক) পরব্রন্মের মহামায়া বিলাস অনন্ত । (খ) উহাদের অধিষ্ঠান পরত্রদ্ধের বিলাস বিগ্রহ । (গ) উভয়ে অনন্ত হইলেও অদ্বৈত হানি নাই। ইহা আমরা প্রত্যেকে আমাদের নিজ নিজ দেহের হস্ত-পদ প্রভৃতি অবয়বের পার্থক্য দর্শনের অভাব হইতে বুঝিতে পারি । | (ঘ) উক্ত বিলাস-বিগ্রহ-পরমানন্দ-লক্ষণ-অন্ কথায় স্থ্ট-আনন্দের খেল! ৷ আনন্দময়ের আনন্দোপলব্ধির উপকরণ খেলার পুতুল গ্রভৃতি। একারণ ভাগবত ৮৷২২৷২০ শ্লোকে স্পষ্ট বলিয়াছেন যে, ভগবানের ক্রীড়ার জন্তই ত জগত রচনা। এই জনই ভগধান্‌ সরকার ২1১৩ সুত্রে “লোকবত্তু লীলা- 'কৈবল্যম্” বলিয়া কর্তব্য সমাপন করিয়াছেন । রঃ ১৭॥ এখন দেখা যাউক্‌, ত্রিপাদ বিভূতি মহানারায়ণোপনিষদের উদ্ধৃত অংশ হইতে আমরা কি পাইলাম । (ক) আমরা বুঝিলাম, পরত্রঙ্গের সাকার-নিরাকার স্বভাব সিদ্ধ। স্বভাব পরিত্যাগ করিয়া কোনও কিছুর থাকা অসম্ভব বলিয়া, পরব্রক্ষ-ষে সময়ে-পাকার, সেই সম সময়েই-নিরাকার। পার্থক্য তাহার স্বরূপে নহে, আমাদের অজ্ঞানাদ্ধ ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১০১ বুদ্ধিতে মাত্র। ভাগবত ৭1৯।১৯ শ্লোকে ইহাই বুঝাইবার চেষ্টা করিয়াছেন! উক্ত শ্লোক উপরে ৭ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত হইয়াছে । (খ) আমাদের উন্মিণ ও নিমিষণের-নিদর্শনে পরব্রঙ্গের-উন্মেষ-নিমেষ কাল্লিত হইয়াছে। উন্মেষের বা জাগ্রত হইবার পরে যেমন আমরা! মনন শক্তির ক্রিয়ায় নানা কার্ধয সম্পাদন করিয়া থাকি, সেই দৃষ্টান্তে পরক্রদ্ষের উন্মেষের পর কৃষ্টি সংকল্প ও স্ুষ্টর প্রসার কথিত হইয়াছে । ইহা আমাদের বোধ সৌকর্ষ্যার্থ মান্র। প্রকৃতপক্ষে চিরজাগ্রত পরত্রদ্মের জ্ঞানের ব্যভিচার কোনও কালে নাই। (গ) মূল ও মূলাবিগ্যা__পিতৃশক্তি ও মাতৃশক্তির পৃথক নাম মাত ইহা পূর্বে বলা হইয়াছে। (ঘ) বিশ্বে অনন্ত কোটি ব্ৰহ্মাণ্ড পরত্রন্গের পাদ বিভূতিতে বর্তমান । উহাদের প্রত্যেকের উপাদান-_ প্রকৃতির ভাণ্ডার হইতে গৃহীত বলিয়! পরস্পরের বস্তুগত বিভিন্নতা নাই। যদি কোনও বিভিন্নতা থাকে, তাহা 'পরিমাণগত মাত্র। এ সম্বন্ধে আলোচন! পরে অন্তভাবে করা৷ হইবে। অবশ্যই এ উপাদান- আধিভৌতিক উপাদান মাত্র। (ও) আধ্যাত্মিক ও আধিদৈবিক ক্ষেত্রেও বিশেষ বিশেষ ব্ৰন্মাণ্ডে বিশেষ বিশেষ ভোগের ব্যবস্থা থাকা সম্ভব হইলেও, উহাদের পালন, পোষণ, বন, নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতির নিয়মে বিশেষ বিভেদ নাই । (5) স্থ্ট ও স্থিতিতে যেমন্‌ নিয়ম একই, প্রলয়েও দেই একই নিয়ম কার্ধ্যকারী। অন্যভাবে ইহার আলোচনা পরে করা হইবে ' ৭ ৭) অনন্ত বৈচিত্র্য অদ্বৈত হানি হয় না । ১৮। ব্ৰক্মাওগণের ও তাহাদের অন্তভূক্ত বন্থজাতের অনস্ত বৈচিত্র্য অদ্বৈত হানি হয় ন! ৷ এতও প্রসঙ্গে ভাগবত বলিতেছেন * পরাবরেষু ভূতেষু ত্রহ্মান্তস্থাবরাদিষু। ভৌতিকেঘু বিকারেষু ভূতেষথ মহৎ চ॥ গুণেষু গুণসাম্যে চ গুণব্যতিকরে তথা । . এক এব পরো হ্যাত্মা ভগবানীশ্বরোহব্যয়ঃ॥ ভাগঃ 9৬২০-২৯ স্থাবরাদি ব্রহ্মা পর্য্যন্ত ক্ষুদ্র-মহৎ যত জীব এবং ভৌতিক বিকার ঘটা বত অজীব, আকাশাদি মহত্তৃত, সত্বাদি গুণ, গুণসাম্যবূপ প্রকৃতি, গুণক্ষোভে অভিব্যক্ত মহত্তত্বাদি, যত কিছু আছে, সকলেতেই র্স্বরূপ, ভগবান, ঈশ্বর ১০২ ত্রহ্গসূত্র ও শ্রীমদ্ভাগব্ত অদ্বিতীয় আত্মারূপে বর্তমান আছেন, অথচ তিনি অব্যয়, তাহার হ্বরূপচাতি নাই। ৭1৬২০-২১ পূর্বের আলোচনা হইতে (দেখ আভাস ৩১-৩২ অন্তচ্ছেদ ), আমর! বুঝিয়াছি যে, সচ্চিদানন্দ ভগবান্‌ জাগতিক প্রত্যেক বস্তুতে অন্ুস্থাত বলিয়া, উহাদের অস্তিত্ব-ভাতিত্ব-প্রিয়ত্ব আমাদের প্রতীতি গোচর হইয়া থাকে। ভগবানের সৎ শক্তি-সংহননী, সংবদ্ধিনী ও সংহরণী এই ত্রিবিধ আকারে প্রত্যেক বস্তুর জন্ম-বর্ঘন-স্থিতি-পরিণাম, অপক্ষর-নাশ বিধান করিয়া থাকে। আমার দেহ সপ্ত ধাতুতে গঠিত। -ধাতুগণের নিজের নিজের এমন কোনও শক্তি নাই, যাহাতে তাহারা সংহত ভাবে থাকিয়া আমার দেহের সংহতি রক্ষা করিতে পারে। ভগবানের সংহননী শক্তিই সংহতি রক্ষার কারণ। : প্রত্যেক বস্তুর স্ব-স্ব আকারে অবস্থিতি, স্থান ব্যাপকতা, স্থানা- বরোধকতা, কাঠিন্য, তারল্য, লঘুত্, গুরুত্ব প্রভৃতি এই শক্তির ক্রিয়া । আমার দেহের বাল্য হইতে কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢত্ব-ভগবানের সংবদ্ধিনী শক্তির ক্রিয়া। জীব-উদ্ভিদ এমন কি স্থাবরগণের বর্ধন ও রক্ষণ এই শক্তির ক্রিয়া। আমার দেহের প্রৌচ়ত্ব হইতে বৃদ্ধত্ব প্রান্তি এবং পরিণামে নাশ-_ভগবানের সংহরণী শক্তির পরিচয় প্রদান করে। অন্সানা বস্ত্র সকল সম্বন্ধে ওই একই কথা৷ ১৯। ইন্দ্রিয় দ্বারে আমরা জাগতিক বস্তজাতের যে প্রতীতি লাভ করি, তাহা ভগবানের চিৎ্শক্তির ক্রিয়া। উক্ত শক্তি সমুদায় বন্তজাতে বর্তমান এবং আমাদের ইন্দ্রিয়গণেও বর্তমান। এ কারণ- ইন্দ্িয়গণ, সমজাতীয় স্পন্দন গ্রহণ করিতে সক্ষম বলিয়া আমরা উহাদের ভাতিত্বের পরিচয় পাইয়া থাকি। প্রিয়ত্ব সম্বন্ধেও এ একই কথা উহার দৃষ্টান্ত আগে দেওয়া হইয়াছে। ২০। ইহা গেল ভগবানের বহিরঙ্গা শক্তির পরিচয়। ইহা ছাড়া, তিনি অন্তৰ্য্যামী রূপে নিজের অব্যয় স্বরূপে, প্রত্যেকের অন্তরে বর্তমান থাকিয়া, সকলকে নিয়ন্ত্রণ করিতেছেন; প্রত্যেকের যথাযোগ্য মর্ধ্যাদা রক্ষার ব্যবস্থা করিতেছেন। গীতার ভাষায় ধৰ্ম সংস্থাপন করিতেছেন, উপ্নিষদের ভাষায় জগদ্ববিধারক হুইয়া-পরম্পরের অবিরোধে জগদ্-ব্যাপার সম্পাদন করিতেছেন। এক কথার তিনি আপনাকে বহুত্বে প্রকটন করিয়া আপনাকে লইয়া আপনি খেলা করিতেছেন । এরূপ দৃষ্িভ্গীতে জগৎ আালন্দের অফুরন্ত ভাওার_। কোথাও দুঃখ, কষ্ট, নিরানন্দ__কিছুই নাই । সমুদায়ই গন তিনি, উহাদের অন্তত থাকিবে কোথা হইতে? ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১০৩ বেদাত্ত-আলোচনা ইহাই শিক্ষা দেয়। ইহা কঠোর কিছু নয়। অতি মধুময়, হৃদয়ে ধরিবার সামগ্রী। আশা করি, ইহা ক্রমশঃ পরিস্দুট হইবে। যদি না হত, সে দোষ বেদান্তের নহে । আমার নিজের । ২১। উপরে যে আলোচনা করা হইল, তাহা হইতে অন্ুসিদ্ধান্ত স্বতঃই আপতিত হয় যে, যখন অদ্বৈত একমাত্র তত, তত্বাস্তর বা বস্ন্তর বর্তমান নাই, তখন কর্ম যাহা দ্বৈতাপেক্ষা করে, তাহা অদ্বৈততত্রে থাকিতে পারে না। একটি অতি সাধারণ দৃষ্টান্ত দ্বারা আমার বক্তব্য বিশদ করিতেছি। আমি একজন মানব, দ্বৈত-প্রপঞ্চের অন্ততুক্ত। আমি যদি কোনও কারণে, আমার প্রতিবেশী শ্যামের গায়ে আঘাত করি, অথবা গালাগালি দিয়া তাহার মনে আঘাত করি, তাহা হইলে আমি একটি অশুভ কর্মের জনক হইলাম এবং এই কর্মের ফল আমি ভোগ করিতে বাধ্য হইয়া পড়িলাম । যতদিন না ভোগের দ্বার উহা ক্ষয়প্ৰাপ্ত হয়, ততদিন বিদ্ধ কণ্টকের হ্যায় উহা হৃদয়ে বেদনা দিতে থাকিবে। কিন্তু আমার ডান হাত যদি বাম হাতকে আঘাত করিয়া যন্ত্রণা দেয় ব! উহাকে ভাঙ্গিয়া ফেলে, তাহা হইলে, কি আমি শাস্তি স্ব্ূপ আমার ডান হাতকেও ভাঙ্গিয়া দিব বা যন্ত্রণা দিব? তাহা দিলে আমারই আন্মীয় পরিজন, আমার মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটিয়াছে বলিয়া উপযুক্ত চিকিৎ্পার ব্যবস্থা করিবে। ডান হাতও আমার, বাম হাতও আমার, উহাদের পরস্পর ঘ1ত-প্রতিঘাতে কোনও কর্ম সংঘটিত না হওয়ায়, আমাকে উদাসীনই থাকিতে হইবে। সেইরূপ পরমতভ-_ সর্বময়, বিশ্ররূপ বলিয়া জগৎ-হুষ্ট-লয়ে, তাঁহার কোনও কন্দ সংঘটিত হয় না, তিনি অগন্ত, উদাসীনই থাকেন । ভাগবত, উপরে উদ্ধত ১৫৬ শ্লোকে “গুণৈরসঙ্গঠ এবং ১১০।২৪ শ্লোকে “ন তত্র সজ্জতে” বাক্যাংশদ্ধয়ে ইহাই বলিয়াছেন। এরূপ বহু শ্লোক উদ্ধার কর! যাইতে পারে, গ্রন্থ বাহুলোর ভয়ে পরিত্যাগ করিলাম । ৮) ভগ্গবানে বৈষম্য_নৈর্ণ্য নাই। ২২। এখন প্রশ্ন উঠে_-জগৎ যদি আনন্দের খেলা এবং জীব বিশেষতঃ মানব দেহধারী জীব যদি পরমপুরুষের খেলার সঙ্গী, চলিত ভাষায় খেলুড়ে তবে সংসারে এত দুঃখ কষ্ট কেন? মানবগণের মধ্যে কেহ রাজা, কেহ (En কেন? ইহ! ত নিশ্চয়ই, ধাহার হুষ্ট_সেই হষ্ট কর্ড ভগবানের _“বৈষয্য- ৈঘ্ণ্যের” পরিচয় । উদাসীনত্বের পরিচয় 'কি করিয়া বলিব? এ টিউনার fl SRE NURS CTY হি ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত সুত্রে ইহার সমাধান করিয়াছেন । যথাস্থানে দেখিবার অনুরোধ করি। এখানে উহার আলোচনায় বসিলে, কার্যত: সমগ্র বেদান্ত শাস্থই আলোচনা! করিতে হয়, তাহা উচিত নয়। বিশেষতঃ ১1১।১।১ স্ত্রের আলোচনায় ৬০ অনুচ্ছেদে এ সম্বন্ধে সংক্ষেপে আলোচনা করা হইয়াছে। ২৩। 1১1১১ স্ত্রের আলোচনায় কেনোপনিষদের ১।৪ মন্ত্র ও কঠশ্রুতির ১1২২২ মন্ত্র হইতে আমর! বুঝিদ্ধাছি যে, বরহ্মতত্ব আমাদের বাক্য মনের অগোচর হইলেও, তাহার নিজ জনরূপে আদরে গৃহীত অধিকারিগণ» তাহার ক্ুপায়, তাহাকে জানিতে পারেন । ইহ! কি তাহারা নিজেদের বুদ্ধি-বৃত্তি পরিচালনায় কৃতকাৰ্য্য হন? তাহা নয়। তিনি অধিকার অনুসারে ধাহার নিকট যতটুকু আত্মপ্রকাশ করেন, তিনি তাহাকে ততটুকুই জানিতে পারেন। ভাগবতে ১১২ শ্লোকে তিনি “বেছ” বলিয়া উক্ত হইয়াছেন বটে, কিন্তু তাহাকে সম্পূর্ণভাবে জানা অসম্ভব। অনন্ত দেশ বর্তমান। অনন্ত আকাশে পক্ষিগণ নিজ নিজ উড্ডয়ণ শক্তির পরিমাপ অনুসারে অল্লাবিস্তর উড়িতে পারে । সেইরূপ সাধকগণের-_ধাহার যতটুকু অধিকার, তিনি তাহার ততট্কুর পরিচয় পান মাত্র । ২৪। এ সম্বন্ধে শ্রীমৎ পরমহংস দেবের উক্তি অতি সুস্পষ্ট । তার কথায় বলি, চিনির অনস্ত বিস্তার পাহাড় পড়িয়া রহিয়াছে, পী’পড়া তাহার কতটুকু সঞ্চয় করিতে পারে? অভির গুঁড়ি গী'পড়া এক কণা মুখে লইয়াই সন্ত তার চেয়ে বড় ডেয়ো পী'পড়া আর একটু বড় কণা লইয়া যথেষ্ট মনে করিয়া ফিরিয়া আসে । তার চেয়ে বড় ভোলা গী'পড়া অপেক্ষাকৃত বৃহৎ একটি কণা লইয়া পূর্ণ পরিতৃপ্তি লাভ করে। সাধক সমাজেও তাই। ক্ষুত্র সাধক অল্প প্রান্তিতেই আত্মহারা ৷ সনক-সনন্ব-সনাতন-সনৎকুমার-নারদ প্রভৃতি বড় বড় সাধক তাহাদের আকাঙ্ষার ও অতিরিক্ত পরিতৃপ্ত লাভ করিয়া নির্বৃত। কিন্ত সচ্চিদানন্দ পাহাড় ইহাতে কোনও ক্ষতি অনুভব করে না। পূর্বের ন্যায় অনস্ত বৈভবে চির বর্তমান। তড়িতের Storage battery র ন্যায় ক্ষুদ্র আধারে তড়িৎ শক্তির প্রবর্তন ও বিবদ্ঘন লক্ষ্য করা যায় বটে, কিন্তু তড়িতের অফুরন্ত ভাণ্ডার স্বরূপ পৃথিবী পৃষ্ঠে সমষ্টি তড়িতের কোনও ইতর বিশেষ নাই। অনন্ত বিস্তার সমুদ্রপৃষ্ট হইতে, জলকণা অহোরাত্র, বাম্পাকারে আকাশে উিত হইতে থাকিলেও এবং জোয়ারে সমুদ্রপৃষ্ঠে জলের ন্ফীতি অন্তভূত হইলেও. কি সমুদ্রের জলের পরিমাণের হাসবৃদ্ধি পরিমাপ কর! যায়? সেইরূপ সচ্চিদানন্দ সাগরে সমষ্টগতভাবে কোনও হবাসবৃদ্ধি না ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্তুঃ ১০৫. থাকিলেও, কখনও কখনও কোনও কোনও বিশেষ স্থানে কোনও বিশেষ অভিপ্রায় সিদ্ধির জন্য আনন্দের উন্মাদনা জাগিয়া উঠে। যেমন গত ছ্বাপরের শেষে বৃন্দাবনের রাসম্থলীতে সংঘটিত হইরাছিল। ইহা সাধারণ ঘটন! নহে। উহা সচ্চিদানন্দ স্বর্ূপের ইচ্ছায়, ব্যতিক্রমরূপে প্রকটিত হইয়াছিল। এ ব্যতিক্রমের কারণ কি, তাহার আলোচনা বিস্তারিতভাবে ৩৩৪২ স্থত্রে করিয়াছি । এখানে তাহাতে প্রবেশ ন! করিয়া, এইমাত্র বলি যে, বর্তমান কাল, স্বষ্টির ক্রমোন্নতির একটি সন্ধিক্ষণ। একারণ জীবব্দল, করুণাময় ভগবান্‌, নিজ পূর্ণ শক্তি বিকাশ করতঃ পরিপূর্ণরূপে শ্রীকুষ্ণ যৃত্তিতে অবতার গ্রহণ করিয়া নিত্যধামের আনন্দোপভোগের পদ্ধতির একটি প্রতিচ্ছবি, মানবদেহধারী জীবের পরম শ্রেরঃ প্রাপ্তির উপায় স্বরূপ রাখিয়। গিয়াছেন। ৯) আসাথক, সাধারণ মানবের কি কোনও উপায় নাই ? ২৫। উপরে যাহা লিখিত হইল, তাহা সাধকদিগের ও তাঁহাদের" অধিকার অন্থুপারে পরমতত্বের অপরোক্ষান্ুভৃতির-তর-তম ভাব সন্বন্ধে। কিন্তু করুণাময় ভগবান্‌ কি সাধারণ মানব দেহধারী জীবের জন্য, অন্য কোনও. সহজ, অথচ প্রশস্ত পথ প্রতিষ্ঠিত করেন নাই? ভাগবত বলিতেছেন যে. সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান, জীববৎসল করুণানিধান ভগবান্‌, সে ব্যবস্থাও করিয়াছেন । প্রত্যগাত্বস্বরপেণ দৃশ্তরূপেণ চ স্বয়ম্‌। ব্যাপ্য-ব্যাপক-নির্দেশ্টো হানির্দেস্টোহবিকল্লিতঃ ॥ কেবলান্ুভবানন্দস্বরূপঃ পরমেশ্বরঃ | মায়য়ান্তহিতৈশ্্ধ্য ঈয়তে গুণসর্গয়া ॥ ভাগঃ ৭৬ ২১-২২: যে মায়ার দ্বারা গুণস্থট জগৎ প্রপঞ্চের বিস্তার, সেই মায়ার দ্বারাই নিজের ব্য আবরণ করিয়া, ভগবান্‌ প্রত্যগাত্ম স্বরূপে (অর্থাৎ প্রত্যেকের অন্তরে অন্তৰ্য্যামী রূপে), দ্রষ্ট ও ভোভ্ৃরূপে ব্যাপকভাবে এবং দৃণ্ঠ ও ভোগ্যরপে ব্যাপ্ভাবে বর্তমান আছেন। যদিও তিনি স্বরূপতুঃ অনির্দেশ্ঠ, অবিকল্পিত, অনুভবানন্দ-স্বরূপ, মায়! দ্বারাই তিনি নির্দেশ হইয়া থাকেন । ৭1৬।২১-২২ (দেখ পরে প্রদত্ত ১০৮৭৷১০ প্লোকের আলোচনা )॥. ২৬ । এই গ্লোকে কয়েকটি বিশেষ করিয়া লক্ষ্য করিবার বিষয় :_ (১) তিনি “প্রত্যগাত্ম ্বরূপণ_ প্রত্যক্- প্রতি+অন্চ,+ ক্কিপ.(অন্ভ, ধাতুর অর্থ গমন:)_-তিনি প্রতি দেহেতেই অবস্থান করিয়া উহাকে কার্যযশীল, ০০৬ র্ন্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত করেন, স্থতরাং আমরা সাধন করি বা না করি তিনি সর্ধদাই আমাদের সঙ্গে সঙ্গে ফিরিতেছেন, এবং সমুদায়ের দ্রষ্টা ও ভোক্তা রূপে আমাদের অন্তরে রহিয়াছেন। (২) তবে আমরা তাঁহার অনুভব পাই না কেন? কারণ তিনি মায়ার ন্বারা আপনার অনন্ত এশবর্য্য আবরণ করিয়া আমাদের সঙ্গে বাস করিতেছেন । দৃশ্য ও ভোগ্যরপে আমরা যাহা যাহ! উপভোগ করি, সে সকলও তিনি । (৩) মায়ার দ্বারাই তিনি আপনাকে নির্দেশ্ত করিয়া আমাদের বুদ্ধির বিষয়ভূত হইয়াছেন, এবং মায়ার দ্বারাই আপনাকে আমাদের মনের বিকল্পের বস্তু করিয়াছেন__অর্থাৎ মন তাঁহাকে লইয়া তর্ক-বিতর্ক করিতে পারে । ২৭। জগতে এরপভাবে আপনাকে বিলাইয়া দিলেও যদি মূর্খ, অজ্ঞ, অজ্ঞানান্ধকারে নিমগ্ন জীব, তাঁহাকে চিনিতে না পারে, তাহাদের স্থযোগ দিতেও তিনি কার্পণ্য করেন নাই । ভাগবত বলিতেছেন :_ নৃণাং নিঃশ্রেয়সার্থায় ব্যক্তির্ভগবতো নৃপ। অব্যয়স্যা প্রমেয়ন্ত নিগুণন্ত গুণাত্মনঃ ॥ ভাগঃ ১০।২৯।১৩ ভগবান অব্যয়, কোনও প্রমাণের বিষয় নাহেন, প্রাকৃত গুণ সম্বন্ধ রহিত, অথচ নিজ ্বরূপানুবদ্ধি অনন্তগুণে গুণময়। তাঁহার নরবপুঃ ধারণ করিয়া মর্ত্যধামে অভিব্যক্তি মানবদেহধারী জীবগণের পরম মঙ্গল সাধনের জন্য ৷ খ ০1২৭৯।১৩ ২৮। কিরূপে এই পরম মঙ্গল সাধিত হয়? ইহার উত্তরে ভাগবত বলিতেছেন ৫ অন্থগ্রহায় ভক্তানাং মানুষং দেহমাশ্রিতঃ। ভজতে তারৃশীঃ ক্রীড়াঃ যা শ্রুত্বা তৎপরোভবেৎ ॥ ভাঁঃ ১০।৩৩।৩৬ ভক্তগণের প্রতি অনুগ্রহ করণার্থ, ভগবান আপ্তকাম ও আত্মারাম হইলেও, মানবদেহ আশ্রয় করিয়া তাদৃশী লীলা করেন, যাহ শুনিয়া লোকে তৎপর হয় _ অর্থাৎ, বহিমুখ কামিনী-কাঞ্চন ভোগী ব্যক্তিগণ মাৰ্ধ্য্যময় ভগবন্লীলা শ্রব্ণ করিয়া তৎপর হয় বা ভগবদভিমুখে আকৃষ্ট হয়। ১০।৩৩।৩৬ ভগবদভিমুখে আকুষ্ট হওয়াই জীবের পরম পুরুষার্থ প্রাপ্তির উপায়। তৎ ‘সম্বন্ধে ভাগবত বলিতেছেন £__ তাঁবদ্‌ রাগাদয়ঃ স্তেনাস্তাবৎ কারাগৃহং গৃহম্‌ । তাবন্মোহোইঙ্থি.নিগড়ো যাবৎ কৃষ্ণ ন তে জনাঃ ৷ ভাগঃ ১০1১৪।৩৪ ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১০৭ হে রুষ্ণ! রাগাদি (কামিণী-কাঞ্চন বিষয় প্রভৃতিতে অনুরাগ ) তাবৎ পর্যন্তই তক্কর ( তস্বরের ন্যায় তোমার প্রতি অনুরাগ হরণ করে) এবং গৃহ ও তাবৎ পর্য্যন্ত বন্ধনাগার, আর অনান্ধ বস্তুতে আত্মবোধরপ মোহ ও তাবৎ পর্য্যন্ত পাদবন্ধন শৃঙ্খল হুইয়া থাকে, যতদিন তোমার নিজজন বলিয়া পরিচয় দিবার অযোগ্য থাকে । কলতঃ তোমার ভক্তদিগের রাগাদি তোমাতে 'অপিত হওয়াতে, সে সকল বন্ধনের কারণ না হইয়া, বরং বন্ধন-মোচনের কারণ হইয়া! থাকে। ভাগঃ ১০।১৪।৩৪ ২৯। কঠশ্রুতির ১।২।২২ মন্ত্রেনিজ জনরূপে আদরে বরণ করিবার উল্লেখ আমরা পাইয়াছি। উপরে উদ্ধৃত ভাগবতের ১০।১৪।৩৪ গ্নোকে স্পষ্ট “তে জনাঃ” উল্লেখ পাইলাম । কোন বিশেষ ব্যক্তি যে ভগবানের নিজ জনরূপে পরিগণিত হইবার সৌভাগ্য লাভ করিয়াছে, ইহা কি লক্ষণে বুঝিতে পারা যায়? এ প্রশ্ন সহজেই হৃদয়ে জাগিয়া উঠে। এ একার প্রশ্নের সম্ভাবনা করিয়া ভাগবত বলিতেছেন £ খং বায়ুমগ্িং সলিলং মহীঞ্চ জ্যোতীংষি সত্বানি দিশো দ্রমাদীন্‌। সরিং-সমুদ্রাংস্চ হরেঃ শরীরং যৎ কিঞ্চ ভূতং প্রণমেদনন্তঃ ॥ ১১২৩৯ আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল, পৃথিবী, জ্যোতিঃ সন্ত, দিক্‌, বৃক্ষ, সরোবর, দমুদ্রাদি যে কিছু পদার্থ আছে, সদুদায়কে শ্রৃহরির শরীর মনে করিয়া-অনন্যভাবে প্রণাম করিবে। ১১২৩৯ ৩০1 উপরে ২৫ অঙ্চ্ছেদে উন্মত ভাগবতের ৭৬।২১ প্লোকে পরমতবর সর্বত্র অনুস্থাত বুঝা গিয়াছে। কিন্তু উহ! বুঝিলে বা উহার সহবন্ধে শুধু বুদ্ধির স্বীকৃতি লাভ করিলেই (যাহাকে ইংরাক্সীতে বলে intellectual consent ) চলিবে ন!। অনুষ্ঠান ছারা উহ] দৃঢ়ভাবে আত্মস্থ করা প্রয়োজন । এই অনুষ্ঠানের প্রকৃতি আলোচ্য ১১৷২৷৩৯ শ্লোক স্পষ্টভাবে বলিতেছেন । সর্বত্র, সত হরি দর্শন ( কারণ হরির শরীর ও স্বরূপে ভেদ নাই) এবং সেজন্য সঙ্কোচ, লজ্জা ভয় পরিত্যাগ করিয়া সর্বভূতকে ভক্তি ও প্রণতি নিবেদন করা, এই অনুষ্ঠানের অপরিহার্ধ্য অঙ্গ উক্ত শ্লোকে “অনন্ত: পদটি অতি গভীর অর্থের গ্োোতক। শ্রীজ্জীব গোস্বামী ভীহার ক্র সন্রর্ভে ইহার অর্থ করিয়াছেন “নৃতন্তর-রহিতঃ _ অর্থাৎ যখন যে বস্তুকে শ্রীহরির শরীর বলিয়া প্রণাম করিবে, তখন উক্ত শরীরে ঞ্রহরি, পূর্ণ স্বরূপে বর্তমান, ইহা মনে করিতে হইবে। আবায় যখন ১০৮ বরহ্মসত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত অন্ত বস্তুকে প্রণাম করিবে, তখন তাহাতেও শ্রীহরির পূর্ণ স্বরূপ বর্তমান ইহা যনে রাখিতে হইবে। উপাধির ভেদ আমাদের প্রতীতি গোচর হইতে পারে, কিন্তু প্রত্যেক উপাধির আধারে-_আধেয় যে বসন্ত, তাহাতে কোন ভেদ নাই। উহা সৰ্বত্ৰ, সর্ধকালে চিরপূর্ণ। পূর্ণের অংশ সম্ভব নয়, ইহা আগে বলা হইয়াছে ' কোন উজ্জল আলোক স্বচ্ছ আধারের ভিতরে রাখিলে, উক্ত আলোক আধারের বাহিরেও সমুজ্জলভাবে প্রকটিত হয়। কিন্তু আধারের স্বচ্ছতার ইতর বিশেষ হইলে, উক্ত আলোকের বাহঃ প্রকাশের সমুজ্জলতারও ইতর বিশেষ হইয়| থাকে। কিন্তু আলোক সকল ক্ষেত্রে নিজের সমুজ্জল স্বরূপে বর্তমানই থাকে। সেইরূপ জগৎস্থ ভূতজাতের অর্থাৎ শ্রীহরির শরীর স্থানীয় উপাধিগণের স্বচ্ছতার ইতর বিশেষ থাকিলে, বাহিরে অভিব্যক্তির ইতর বশেষ দৃগ্ঠমান ্ুইলেও, অন্তরস্থ আধেয় রপ শ্রীহরি নিজ পূর্ণ স্বরূপে সমুদায় শরীরে বর্তমান, ইহা! সর্বদা মনে রাখিতে হইবে । ১০) মায়! $= ৩১। উপরে ২৫ অনুচ্ছেদে উদ্ধত ভাগবতের ৭1৬২১ শ্লোকে এবং ১০ অনুচ্ছেদে ত্রিপাদ বিভূতি মহানারায়ণোপনিষদের উদ্ধৃত অংশে “মায়ো- পাধিকে! নারায়ণঃ” মায়ার উল্লেখ পাইয়াছি। এ কারণ বর্তমান আলোচনা স্বনিষ্ঠ করিবার জন্য মায়া সম্বন্ধে সংক্ষেপে আলোচনা প্রয়োজন মনে করি।, মৃৎ প্রণীত “বেদান্ত প্রবেশ” গ্রন্থে একটি সমগ্র পরিচ্ছেদে “মায়! তত্ব? যথাশক্তি আলোচনা করিয়াছি, এ কারণ এখানে সংক্ষেপে কর্তব্য সমাধা করিব । ৩২। ভাগবতের একাদশ স্কন্ধে তৃতীয় অধ্যায়ে মায়ার স্বরূপ সম্বন্ধে প্রশ্ন হইলে, উত্তরে ঝষি অস্তরীক্ষ বলিলেন :_ মায়ার স্বরূপ নিরূপণ অসম্ভব । সৃষ্যাদি কার্ধ্য দ্বারা যতটুকু নিরূপণ করা যায়, তাহাই বলিতেছি। ভূত সকলের কারণ স্বরূপ, আদ্য পুরুষ স্বীয় অংশভূত জীব সকলের-_বিষয় ভোগ, ক্রমোন্নতি সোপানে ক্রমশঃ আরোহন. ও পরিণামে মুক্তির নিমিত্ত, যে শক্তির দ্বারা, মহাভূতগণের সাহচর্ধ্যে উচ্চ-নীচ ভৃতগণের হষ্টি করিয়াছেন, তাহাই ক ভাগবত ১১।৩৩)। ইহার পর আরও ১৩টি শ্লোকে মায়ার পরিচয় দিয়াছেন! সে সকলে: বা রর a au CERT প্রয়োজন নাই । আমাদের স্মরণ. ভগবানের সৃষ্টি জাতী ভাগবতী রা সর “মম মায়!” বলিয়া ইহা তীহারই শক্তি 0:১5 শোনে বলিয়! পরিচয় দিয়াছেন। এ কারণ, ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ > ০০১ বি বি ইহা অজ্ঞান বিজভিত কিছু নহে, ইহাও মনে রাখিতে হইবে। জীবের অশেষ কল্যাণ সাধন উদ্দেশ্টে, তাহার ইচ্ছান্তপারেই ই ইহার অভিব্যক্তি । উক্ত ১১1৩৩ শ্লোকটি এই ৫ এভিভূভানি ভূতাত্বা মহাভূতৈমহাভুজঃ ৷ সসভ্ডোচ্চবচান্থা্ঠঃ স্বমাত্রাত্মপ্রসিদ্বষ়ে ॥ ভাঃ ১১1৩৩ ইহার ব্যাখায় শ্রীধর স্বামী বলিতেছেন £_মায়ায়াঃ স্বরূপতো নিরূপণ সম্ভবাৎ স্ষ্টাদি-কাৰ্য্য-ত্বারেণ কাল যা চতুর্দশভিঃ | eee ০০০ তত ০ -** স্বমাত্রাতপ্রসিদ্ধয়ে --- স্বাংশভূতানাং মাত্রা-প্রসিদ্ধয়ে বিষয়-ভোগায়। আত্ম-প্রসিদ্ধয়ে মোক্ষায় হা | বেদস্তৃতিতে ভাগবত বলিতেছেন :₹_ বুদ্ধীন্দ্িয়মনঃপ্রাণান্‌ জনানামস্থজৎ প্ৰভুঃ মাত্রার্থঝ, ভবার্থঞ, আত্মনেইকল্পনায় চ॥ ১০৮৭২ এপ্রভু”_অর্থাৎ। অর্ধবপমর্থ ঈশ্বর, জনানাং__মানবদেহধারী জীবগণের, “্মাত্রার্থ_ বিষয় ভোগের জন্য ( চতুর্বগ-ফলের প্রথম ফল অর্থ) “ভবার্থ»__ জন্মের পর জন্মলাভ, তদ্বার! ক্রমবিবর্তনে পর পর উচ্চতর স্তরে জন্মলাভ হেতু ধর্ানুষ্ঠান (চতুর্র্গের দ্বিতীয় ফল ধর্ম ) “আত্মনে”-ব্্ানুষ্টান হেতু, উপাধির স্বচ্ছতা ক্রমশঃ উজ্জলতর হওয়ায়, স্বপ্রকাশ আত্মার ক্রমশঃ, স্ব স্বরূপ প্রাপ্তির ইচ্ছার উদ্রেক (চতুর্ধর্গ ফলের তৃতীয় ফল কাম) ও “অকল্পনায়”_-মোক্ষলাভ _ যাহার সহিত স্থষ্টি কল্পনার কোনও সম্পর্ক নাই_স্ব স্বরূপ প্রাপ্তি (চতুধর্গের চতুর্থ ফল মোক্ষ )__এই চারি উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মানব দেহধারী জীব অভি- ব্যক্তির সহিত. তাহাদের বুদ্ধি, ইন্দ্রিয়, মন ও প্রাণ স্বজন করিয়াছেন । ৯৭৮৭২ অতএব স্বর উদ্দেশ্যে জীবের অশেষ কল্যান সাধন বুঝা গেল। সুতরাং স্থট-সংস্কর্ররপ! মায়া__অণুভ জ্রনয়িত্রী হইতে পারেন না । আমরা! নিজেদের দোষেই মোহে পতিত হইয়া মায়ার নিন্দা করিয়া থাকি। ১৩। আরও উপরের আলোচনা হইতে জগ সুষ্টিতে সষ্টিকর্তার করুণাময় স্বভাবের পরিচয় পাওয়া গেল। প্রাক্কৃতগুণের সহিত তাহার সম্বন্ধ না থাক! হেতু, [তিনি নিগুণ বলিয়া শাপ্তে কথিত হইলেও, তাহার স্বরূপপিদ্ধ অশেষ কল্যাণ গুণ তাহাতে বর্তমান! সুতরাং ২৭ অনুচ্ছেদে টু ১০২৪১৩, শোকে, ভাগবত পনি” বিশেষণের সহিত এক নিঃশ্বাসে গা কেন বলিলেন, তাহাও বুঝা গেল । ১১০ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত ৩৪ । বিষ্ণুপুরাণ এ সম্বন্ধে সন্দেহের লেশমাত্রও রাখেন নাই। ভগবানকে নিগুণ বলে কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বিষ্ণুপুরাণ বলিতেছেন £_ সত্বাদয়ে! ন সন্তীশে যত্ৰ চ প্রাকৃত! গুণাঃ । বিষ্ণু পুঃ ১৷৯৪৩ প্রাকৃতিক সত্বাদি গুণ ঈশ্বরে বর্তমান নাই। বিঃ পুঃ ১1৯৪৩ কিন্তু তাই বলিয়া কি তিনি নিজের স্বরূপানুবন্ধী গুণ-বজ্জিত? তাহা নয়। সমন্ত-কল্যাণ গুণাত্মকো হি স্বশক্তিলেশাবৃতভূতবর্গ; ৷ ইচ্ছা-গৃহীতাভিমতোরুদেহঃ সংসাধিতাশেষ-জগদ্ধিতোইসৌ ॥ বিঃ পুঃ ৬।৫৮৪ তিনি সমস্ত কল্যাণ গুণ৷ত্মক, তাহার নিজ শক্তির অতি অল্লাংশেই নিখিল ভূতবর্গ আবৃত। স্বেচ্ছাক্রমে নান! প্রকার অভিমত দেহ ধারণ করিয়া, তিনি অশেষ প্রকারে জগতের হিত সাধন করিয়া থাকেন । বিঃ পুঃ ৬।৫।৮৪ । ৩৫। মায়া এই নিগুণ-সগ্তণ, নিরীহ-ক্রিয়াশীল ভগবানেরই শক্তি। আমাদের বিগ্লেষিক! বুদ্ধি এই ভাগবতী শক্তিকে দুই প্রকারে আলোচনা করিয়া থাকে। নিত্যধামে এই শক্তি ভগবানের চিত্শভ্তি-যোগমায়া নামে আমরাই. ইহাকে অভিহিত করিয়াছি । সেখানে ইনি অন্তরঙ্গ! শক্তি । ইহারই সাহচর্য্যে নিরগুণ ভগবান্‌ গুণসাগররূপে বিগ্রহবান্‌ হন। নিরীহ ভগবান, ইহারই সাহচর্যে ক্রিয়াশীল হওত ধাম, পরিকর-পরিজন প্রভৃতি প্রকটিত করিয়া আনন্দের গ্রাবন ছুটাইয়া দেন। সেই আনন্দের কণা মাত্র পাইয়া বিশ্ব ও বিশ্বের অন্তর্গত যত কিছু আনন্দে আত্মহারা হইয়া যায়। ইহাকেই লক্ষ্য করিয়! ঠতৈত্তিরীয় শ্রুতি ২1৭ মন্ত্রে বলিয়াছেন := রসো বৈ সঃ রসং হোবায়ং লবধান্দীভবতি ॥ তৈত্তিঃ ২৭ তিনি রসম্বরূপ। এই রস পাইয়া বিশ্ব ও তদন্তর্গত যত কিছু আনন্দী হয়। ২৭ . আবার ইহারই বহিরঙ্গা শক্তি বিকাশে ১০ অনুচ্ছেদে ত্রিপাদ বিভূতি মহানারায়ণোপনিষদ কথিত “যূলাবিগ্যোদয়” প্রকটিত হ্ইয়া স্থষ্টি ব্যাপার সংসাধিত কবে। উক্ত উপনিষদন্ূসারে উহার নাম মূলা _অবিদ্যা। উহা বেদান্তে “মায়” নামে কথিত হইয়া থাকে এবং উহাকে ছুই ভাগে বিভক্ত করিয়া একভাগকে “গুন-মায়া” ও পর ভাগকে “জীব-মায়া” নামে অভিহিত করিয়া থাকি। এই “গুণমায়া” প্রধান নামেও উক্ত হইয়া থাকে-উহাই জগত সৃষ্টির উপাদান ভাগার। আর “জীব-মায়”ই “অবিদ্য।” নামে পরিচিত । উহা! জীবের বন্ধনের কারণ বলিয়া উহার অবিদ্যা নামের সার্থকতা ৷ ্‌ ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্ুঃ ১১১ ৩৬। স্থতরাং মায়া ভগবানের সংকল্লাত্মিক। শক্তি বুঝা গেল। শক্তি ও শক্তিমানে অভেদ বলিয়া উহ! ভগবান হইতে পৃথক্‌ কিছু নহেন।. এই মায়াকে অবলম্বন করিন্না নিত্যা-_শুদ্ব__বুদ্ধ_মুক্ত__নিরীহ-_ নিঞ্িশেষ__-ভগবান আপনা হইতেই জগৎ অভিব্যক্ত করেন । আপনা হইতে ভোগ্য স্থষ্টি করিয়া, নিজেই ভোক্তাবূপে আপনি আপনাকে উপভোগ করেন। পাছে' ভোক্তার অসঙ্গ__ উদাসীন স্বরূপ অনাবৃত রাখিয়া দিলে, ভোগে আনন্দের অল্পতা ঘটে, এজন্য মায়া দ্বার! স্বরূপ আব্রণের বিধান। উক্ত আবরণ অপসারণের জন্য ভগবানের শরণাগতি প্রয়োজন । (গীতা ৭১৪). শ্ররণাগতিতে জীবের ক্ষুদ্র শক্তির পরিমাপে ভগবন্তত্ু বুঝিতে পারিবার জন্য, মায়ার দ্বারাই ভগবান্‌ নিজের অনন্ত খরশব্ধ্য অন্তহিত করিয়া (ভাগবত ৭৬1২১), তাহার পিতা, মাতা, সখা, বন্ধু গুরু প্রভৃতি রূপে তাহার সহিত অতি মধুর সমন্ধ স্থাপন করিয়া আনন্দের প্লাবন ছুটাইয়া দেন। ইহাতে তিনি নিজেও আনন্দ পান ও জীবকে আনন্দ সমুদ্রে ভাসাইয় নিজের আনন্বস্বরূপে মিশাইয়া লন । ১০ ক) ভগবান আমাদের অভি নিজ জন । অতএব তিনি অতি আদরের নিজ জন । তাঁহাকে ভয় করিবার কিছু নাই ৷ তাহার পূজা করিতে উপকরণ সংগ্রহের জন্য কোনও আরাসের প্রয়োজন নাই। শান্তর ভক্তের মুখ দিয়া বলিতেছেন £_ তুলসীদলমাত্রেণ জলন্ত চুলুকেন বা। বিক্রীণিতে স্বমাত্খানং ভগবান্‌ ভক্তবৎসলঃ ॥ তিনি ভক্তব্সল। ভক্তের নিকট তাহার অদেয় কিছুই নাই। একটি তুলসী পাতা বা এক গণ্ধ জল, ভক্তির সহিত প্রদান করিলে, তিনি, এমন কি আপনাকেও বিক্রয় করিয়া থাকেন । ইহাই ত খেলা । বালক মুখে মুখোশ পরিয়া ভূত সাজে ও সঙ্গী বালককে ভয় দেখাইয়। আনন্দ পায়। যখন দেখে মে সঙ্গী বালক ভয়ে কাদিতেছে, 1শ খুলিয়া আত্মপ্রকাশ করে, এবং উভয়ে হাসিয় আকুল হয়। সেইরূপ জগত ক্রীড়নক পরমততব বা ভগবান, মায়ার মুখোশ পরিয়া নিজের স্বরূপ আবরণ করতঃ অধ দেখান মাত্র। যখন দেখেন যেঃ খেলার সঙ্গিগণ ভয় পাইয়া, কাদিয়া আর হইয়াছে, ও তাহাকে খুজিতেছে, তখন নিজে হাসিতে হাসিতে, মুখোশ খুলিয়া আত্মপ্রকাশ করেন ও উভয়ে গলাগনি হইয়া আনন্দে আজুহারা হইয়া যান । তখন হাসিতে হাসিতে মুখে ১১২ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত ৩৭। ভগবান্‌ মানব দেহধারী জীবের সঙ্গে এইরূপ খেলা খেলিয়া থাকেন । ক্ষণে আড়ি, ক্ষর্ণে ভাব। একক্ষণে ঝগড়া ঝাঁটি, পরক্ষণেই-গলাগলি, বুকে বুকে গাঢ় আলিঙ্গন । বালকের তরল, পিচ্ছিল স্বভাব বশতঃ ইহা সম্ভব হয়। ইহা সংসারে আমাদের প্রত্যক্ষ দুষ্ট । বিরাগ, ক্রোধ সাময়িক দেখা দেয় বটে, কিন্ত উহা স্থায়ী হয় না। পিচ্ছিল স্বভাব বশতঃ পিছলাইয়া যায়। ভগবান্‌ অসঙ্গ, উদাসীন ত বটেই, সে কারণ তিনিও বালক স্বভাব বিশিষ্ট। এ খেলার উদ্দেশ্ঠ, আনন্দদান ও আনন্দ উপভোগ | মায়ার সাহচর্য্যে এই খেলা অভিব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠালাভ করে । এ কারণ উপরে বলিয়াছি যে, মায়া স্বতঃ অশুভ জনয়িত্রী নহে। শাস্ত্রে মায়ার অনেক দৌষকীর্তন আছে বটে, কিন্তু সে সমুদায় দোষ আমরাই মায়াতে আরোপ করিয়া থাকি। আমরা নিজেদের স্বাতন্ত্যকণার গর্বে ইচ্ছা করিয়াই মায়ার কুহকে মুগ্ধ হইয়া আত্মবিস্বত হইয়া পড়ি। তাহারও প্রতিকারের উপায়, ধাহার মায়া সেই মায়ী ভগবানের শরণাগতি গ্রহণ । এই শরণাগতি গ্রহণ অতি সহজেই সম্পাদিত হইতে পারে । উপরে উদ্ধৃত শ্লোক স্পষ্টই শিক্ষা দিতেছে যে, সযত্বভ্য, একটি তুলপীপত্র বা এক গণ্্ষ জল, ভক্তিপূর্ব্বক অর্পণ করিলেই সব মিটিয়া যায়। মায়ার কুহক অন্তহিত হয়। ৩৮। সংশয়-প্রবণ-চিত্ত, কুটতর্ককুশল, ভগবদ্‌ বিশ্বাসী, শিক্ষিত কেহ কেহ সংশয় উত্থাপন করিতে পারেন যে, যদি ভগবান্‌ অপার করুণাময়, অসঙ্গ, উদাসীন, বালক স্বভাব বিশিষ্ট, তবে এরূপ বিনিময় ব্যাপারের প্রয়োজন কি? তুলপী পত্রও জলগত্ষ প্রদানের আকাজ্ষাই বা তিনি করেন কেন? ইহা কি বণিক্‌ ব্যাপার নয়? ইহার উত্তর অতি সহজ ও নিশ্চিত। ইহা বণিক্ব্যাপার ত নয়ই। বাজারে প্রচলিত মূল্যতালিকানুযায়ী তুল্য মূল্যের বস্তুর বিনিময়ে বণিক্‌ ব্যাপার সম্পাদিত হয়, ইহা সকলেই জানেন । এক কড়া! কানাকড়ির বদলে সাম্রাজ্য দান বণিক্‌ ব্যাপার নয়। ছত্রপতি শিবাজী তাহার গুরু শ্রীশ্রী এরামদাস স্বামীর সন্তোষ সম্পদানের বা. আপীর্বাদ প্রাপ্তির আকাঙ্ষায় তাহার সমগ্র রাজ্যের দানপত্র স্বামীজির ভিক্ষার ঝুলিতে অর্পণ করিয়াছিলেন, ইহ! ইতিহাস প্রসিদ্ধ ঘটনা। ইহা কি বণিক্‌ ব্যাপার? অতি বিরোধী সমালোচকও তাহা বলিবেন ন| | সুতরাং ভগবানের সন্তোষ কামনায় বা তাহার অনুগ্রহ প্রাপ্তির আকাজ্কায় তুলসী বা জলগণ্ষ অপণ এবং তাহার ফলে পরম পুকরুষার্থ লাভ বণিক্‌ ব্যাপার নহে। মানুষ ক্ুদ্র। তাহার প্রদানও ক্ষুদ্র হইতে বাধ্য। ভগবান্ত অস্থপক্ষে, অনন্ত শ্ব্বান্‌ ও অনন্ত জ্ঞানবান্‌। তাহার বিষয়ে-প্রদত্ত দ্রব্যের, তোমার আমার চক্ষে-বাজার যৃল্যান্গসারে নহে । ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১১৩ 'তিনি অন্তৰ্য্যামী, অন্তরের আসল ভাব লইয়া তিনি বিচার করেন । এবং সে বিচার প্রদান কর্তার অনুকূল হইলে; তিনি যথাসর্ধন্ব দান করিয়াও আপনাকে খণী মনে করেন এবং সে খণ পরিশোধের জন্য আত্মদান পর্য্যন্ত করিয়া থাকেন। এমন কি, তাহার বিচারে যদি প্রদান কর্তা উপযুক্ত অধিকারী বলিয়া সাব্যস্ত হন, তাহা হইলে, তিনি, নিজেকে এবং সঙ্গে সঙ্গে নিজের দেহভৃত সমুদায় বিশ্বকে পবিত্র করিবার জন্য তাঁহার পদধূলি প্রাপ্তির আশায়, তাহার পাশ্চাদনুসরণ করিয়া থাকেন। ভাগবত ভগবানের মুখ দিয়াই বলাইতেছেন :_ 'নিরপেক্ষং মুনিং শাস্তং নিবৈর্বরং সমদর্শনমূ। অনুত্ৰজাম্যহং নিত্যং পূয়েয়েত্যজ্বি রেণুভিঃ ॥ ১১1১৪1১৫ যে তিনি (ভগবান্‌), নিরপেক্ষ, শান্ত, নির্বৈর, সমদর্শন মুনিব্যক্তির অন্ুগমন- পূর্বক, তাহাদের চরণরেণু স্পর্শে, নিজের ও তাহার অস্তববর্তী ব্রহ্মাওগণেরও শুদ্ধি সম্পাদন করিয়া থাকেন । ১১।১৪।১৫ ৩৮। ইহা ত গেল ভাবরাজোর কথা। যুক্তি বিচারে আমরা কি পাই, দেখা যাউক্‌। মানব তাহার স্বাতন্্য কণার অযথা ব্যবহারে, শাস্তি স্বরূপ আত্মম্বরপ হইতে পরিভ্রষ্ট হইয়া, বহির্দ্থীন গতিতে সংসারে পতিত হইয়াছে। সে যদি তাহার স্বাতন্ত্রোর এই অপব্যবহার পরিত্যাগ পূর্বক অনুতাপের সহিত আবার অন্তরে ভগবানের অভিমুখে অগ্রসর হইবার প্রয্নাস করে, ভগবান্‌ তাঁহার অপার করুণাময় স্বভাববশতঃ, তাহাকে সে স্থযোগ প্রদান করিতে কিছুমাত্র দ্বিধা করেন না, বরং আগ্রহের সহিত তাহাকে বুকে জড়াইয়া ধরেন। ইছাতে (১ ভক্ত বংসলতার পরিচয় দেওয়া হইল । (২) কর্ম্ম সম্বন্ধে ভগবানের অমোঘ নিয়মের মর্ধযাদী রক্ষা করা হইল। (৩) পুত্রগত প্রাণা স্েহময়ী মাতার, বিপথে গমনকারী পুত্রের প্রতি ক্ষমার শাসন, দয়ার তাড়ন ও সেহের গীড়নের-নিদর্শন দেখান হইল। (৪) বিপথে গত খেলার সঙ্গীকে পুনরায় বিশ্বর্গমঞ্চে খেলিবার অধিকাঁর দেওয়া হইল। (৫) ভগবানের নিজের অঙ্গ, উদাসীন, বালক স্বভাবের প্রতিষ্ঠা স্থাপন করা হইল! (৬) অন্যান্য বিপথে গত খেলার নিয়ম ভঙ্গকারী শাস্তিপ্রাপ্ত মানবদেহধারিগণকে, ফিরিয়া আসিয়া খেলায় যোগ দিবার আহ্বান জানান হইল । (৭) জগদ্বিধারণের রীতি সর্ব-সমক্ষে প্রকটিত করা হইল! ৩৯" এই মায়াকে অবলম্বন করিয়া, ভগবানের টি প্রয়াসকে লক্ষ্য করিয়া, উপরে উদ্ধৃত মহানারায়ণোপনিষদের অংশে “তম্মাদেৰ সচ্ছববাচ্যং বন্ধ tr ১১৪ ব্ৰহ্মন্তত্ৰ ও শ্রমদ্ভাগবত বিদ্যাশবলং ভবতি” বল৷ হইয়াছে । অর্থাৎ ছান্দোগ্য শ্রুতির ৬২।১ মন্ত্রে (“সদেব সৌঘ্য, ইদমগ্র আসী” ) সচ্ছন্ বাচ্য ব্রহ্ম_“বিন্ঠাশবল” হইলেন-_অন্ত কথায়, স্থষ্টি সংকল্পের লেপ দ্বারা তিনি রঞ্জিত হইলেন । পূর্বে বলিয়াছি যে, সংকল্প বা বিদ্যা তাহার স্বরূপ হইতে পৃথক্‌ কিছু নহে। স্থতরাং প্রকৃত পক্ষে, সংকল্প ব| বিাজনিত কোনও লেপ বা রঞ্জন না থাকিলেও, তাহার নিরীহত্বের স্থলে কার্ধ্যশীলতার নিদর্শনে_-আমাদের ভাষায় প্রকাশের জন্য, এরূপ বলিতে হুয়। ইহারই অনুকরণে, আমি উপরে “ভগবানের সৃষ্টি প্রয়াস” বলিয়াছি। তাহার আবার প্রয়াস কি? শক্তিমানের কোনও বিশেষ শক্তির বিকাশ মাত্র। তাহার চেষ্টা ব! প্রয়াস, তাহা হইতে পৃথক্‌ কিছু নহে। তাহা হইলেও বোধ- সৌর্ধ্যার্থ এরপ ব্যবহার করিতে হয়। ১১) ভাগবত সাহায্যে বেদাস্তালোচনার বিশেষ কারণ । ৪০| উপরের আলোচনা হইতে আমরা বুঝিলাম যে, ভগবান্‌ করুণাসাগর, তিনি. মানবদেহধারী জীবগণের অতি প্রিয়, অতি ঘনিষ্ঠ নিজ জন, এবং তাঁহার অপরোক্ষান্ুভূতি লাভই মানবের পরম শ্রেয়ঃ প্রাপ্তি এবং ইহার জন্যই স্থষ্ির প্রসার । এই শ্রেয়োলাভ কি উপায়ে করা যায়? শান্তর ইহার জন্য তিনটি পন্থা নির্দেশ করিয়াছেন £(১) কর্ম, (২) জ্ঞান ও. (৩) ভক্তি। ইহার! পৃথক্‌ পৃথক্‌, পরস্পর স্বন্ধরহিত দৃঢ়বদ্ধ তিনটি প্রকোষ্ঠের অন্তর্ভুক্ত নহে। উহার! পরস্পর পরস্পরকে অপেক্ষা করে। কর্মপন্থা বেদের কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত । উহা! জৈমিনি প্রণীত কর্ম মীমাংসা দর্শনে বিশেষ ভাবে আলোচিত হইয়াছে, ব্র্মস্থত্রে উহার আলোচনা হয় নাই৷ এ কারণে উহার সম্বন্ধে আলোচনায় আমাদের প্রয়োজন নাই। জ্ঞান ও ভক্তি পরস্পর উপায়-উপেয় সম্বন্ধযুক্ত (গীতা ১৮৫৪ ও ৫৫ )। ৪১) ব্রমান্ত্র জ্ঞানমার্গে ও ভক্তিমার্গে আলোচিত হইয়াছে। ভগবান্‌ শনবরাচারধ্য, রামান্জ, নিষ্বার্ক প্রভৃতি আচার্য্যগণ জ্ঞানমার্গের প্রাধান্য দিয়া বিস্তৃত আলোচনা করিয়াছেন । জ্ঞানমার্গের সাধনার প্রাকৃকালীন অপরিহার্ধ্য অঙ্গ হইতেছে যে, সাধক বা উক্ত মার্গের আলোচক সাধন চতুষ্টয় সম্পন্ন হওয়া চাই-_অর্থাৎ বিবেক, বৈরাগ্য, যট্‌ সম্পত্তি ও ুমুক্ষতা__তাহার থাকা প্রয়োজন । বর্তমান যুগে উক্ত প্রকার অধিকারী অতি দুর্লভ । কিন্তু বেদাস্ত ত্রিতাপদগ্ধ আমার স্যায় সাধারণ মানবের অমৃত রসায়ণ। সাধারণ মানবের বোধগম্য. করিবার জন্য ভাগবত ইহা ভতিমার্গে, ভক্তিরসে পরম রসিক, মহাকবির মাধুর্যময়ী- সুললিত, অতি হৃদয়গ্রাহী ভাষায় আলোচন! করিয়াছেন ৷ ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সুঃ ১১৫ ইহা আভাসশীরষকপ্রত্তাবনায় ৪ অন্থচ্ছেদে বলা হইয়াছে। উহার পুনরুল্লেখ না করিয়া, পরিপূরক রূপে আমার বক্তব্য নিবেদন করিতেছি । উহা! নিশ্চয়ই অবান্তর নহে। ৪২। ভগবান্‌ গীতায় ১২।৫ শ্লোকে জ্ঞানমার্গে, নিৰ্গুণ ব্রন্মোপাসফগণের সম্বন্ধে বলিতেছেন ₹-- ক্রেশোহধিকতরস্তেষামব্যক্তাসক্তচেতসাম্‌। অব্যক্তা হি গতিদ্ঃখং দেহবন্তিরবাপ্যতে ॥ গীঃ ১২1৫ অব্যক্তে (নিগুণ ব্ৰহ্মে) আসক্ত চিত্ত ব্যক্তিগণের অধিকতর ক্লেশ হুইয়া! থাকে ।, কেননা, দেহাভিমানিগণ অব্যক্তে নিষ্ঠা ছুঃখেই প্রাপ্ত হইয়া থাকে। গীঃ ১২1৫ কারণ উক্ত উপাসকগণ মানবগণের স্বভাবসিদ্ধ প্রকৃতির প্রতিকূলে যাইতে বাধ্য হন। পঞ্চেন্দ্রিয় দ্বারা উপভোগ মানবের শ্বভাবসিদ্ধ। উক্ত উপাসকগণ ইন্জিয়ার্থ হইতে ইন্দ্িয়গণকে নিগৃহীত করিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু অধিকাংশ স্থলে, তাহারা দেহাভিমান হইতে নিষ্কৃতি লাভ না করার বিষয়ভোগ তৃষ্ণা থাকিয়াই যায় (গীঃ ২৷৫৯)। এইজন্য এরপ উপাসক ভগবৎ কথিত “মিথ্যাচারঃ” পর্য্যায়ে পড়ে (গীঃ এ৷৬)। অবশ্তই সকল উপাসক যে এরূপ, তাহা নহে। যাহার! নিঃশ্রেয়সের পথে অগ্রসর হন, তাহাদের সংখ্যা অতি কম। ইহার প্রতি লক্ষ্য করিয়াই__ভগবান্‌ বলিতেছেন “বহুনাং জন্মনামন্তে জ্ঞানবান মাংপ্রপঞ্থতে 1৮ ( গীঃ ৭৩৯) ৪৩। অন্য পক্ষে ভাক্তসাধন সম্পর্কে ভাগবত বলিতেছেন £_ ভক্তিঃ পরেশানুভবে বিক্তিরন্তত্র চৈষ ত্রিকঃ এককালঃ। প্রপন্যমানন্ত যথাশ্বতঃ স্যপ্ত্টিঃ পুষ্টিঃ ক্ষুদপায়োহনুঘাসম্‌ ॥ ১১২৪০ ইত্যচ্যুতাজ্বি ভজতোহনূৰৃত্তয৷ ভক্তিবিরক্রির্ভগবৎপ্রবোধঃ ৷ ভবন্তি বৈ ভাগবতন্ত রাঁজংস্ততঃ পরাং শান্তিমূপৈতি সাক্ষাৎ ॥ ১১২৪২ যেমন ক্ষুধার্ত ব্যক্তির অন্নগ্রহণের সময়ে গ্রাসে গ্রাসে অন্ন ভোজনের সঙ্গে সঙ্গে তুষ্টি, পুষ্টি ক্ষধানাশ হইতে থাকে, সেই প্রকার ভগবানের পাদ-পদ্ম- ভজনকারীর ভজনের সঙ্গে সঙ্গে, ভগবানে ভক্তি, ভগবান্‌ ভিন্ন অন্ত বসত হইতে ১১৬ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত বিরক্তি, ও ভগবত প্রবোধ, তিনই এককালে হইয়া থাকে, পোর্ধাপর্ধ্য রূপে নহে। এবং তারপর সাক্ষাৎ শাস্তিলাভ হইয়া থাকে । ১১২।৪০-৪১। ভগবানের পাদপন্ম ভজনকারী, ভজনে এত আনন্দ পান যে, তাহারা আর কিছুই আকাজ্ষা করেন না; মোক্ষফল পর্যন্তও তাহারা কৈতব বলিয়া মনে করেন । জনের দ্বারা কিছু লাভ, তাহারা বণিক্‌ বৃত্তি বলিয়া মনে করিয়া দ্ণার সহিত পরিত্যাগ করেন। ভাগবত বলিতেছেন £_ ন কিঞ্চিৎ সাঁধবো বীরা ভক্তা হোকান্তিনৌ মম। বাঞ্থান্তযপি ময়া দত্তং কৈবল্যমপুনৰ্ভবম্‌ ৷ ১১৷২০৷৩৪ সাধু, ধীর, আমার একান্ত ভক্তগণ, কিছুই বাঞ্ছা করেন না । এমন কি আমি মোক্ষ ও অপুনর্ভব (জন্ম রাহিত্য )দিতে চাহিলেও, তাহা গ্রহণ করেন না। ১১1২০।৩৪ অতএব আমার ন্যায় অজ্ঞ, মূর্খ, সাধনহীন, ত্রিতাপদঞ্ধ মানব দেহধারী জীবের সংসার তরণের উপায় কি? এ প্রকার প্রশ্ন কল্পনা করিয়া ভাগবত বলিতেছেন £__ জ্ঞানে প্রয়াসমুদপাস্ত নমন্ত এব জীবন্তি সন্মুখরিতাঁং ভবদীয়বার্তাম্‌। স্থানে স্থিতাঃ ক্রুতিগতাং তন্ুবাজ্মনৌভিঃ- যে প্রায়শোইজিতজিতোইপ্যসি তৈস্ত্রিলোক্যাম্‌ ॥ ১০৷১৪৷৩ হে অজিত! আপনি দুজ্ঞেয় হইলেও, অজ্ঞ, সাধনহীন, মানবদেহধারী জীবের সংসার নিম্তারের ভাবনা নাই। যে সকল ব্যক্তি জ্ঞানলাভে অত্যন্প প্রয়াস না করিয়া স্বস্থানেই অবস্থিতি করতঃ সাধুজন কর্তৃক নিত্য প্রকটিত ভবদীয় প্রসঙ্গ (যাহা সাধুজনের সঙ্গিধি মাত্রে আপনা হইতে শ্রতিপথে প্রবিষ্ট হয়) কায়মনোবাক্যে সৎকার পূর্বক অবলম্বন করিয়া থাকে; তাহারা, যদিও অন্য কোনও কর্ম্ম না করুক, তথাচ ত্রিলোকী মধ্যে, অন্যান্য সকলের দ্বার! অজিত হইলেও, আপনি তাহাদের দ্বারা প্রায় জিত হইয়া থাকেন অর্থাৎ আপনি অন্যের ছুশ্রাপ্য হইলেও, তাহারা আপনাকে প্রাপ্ত হইতে পারে। ১০১৪৩ বর্তমান যুগে ভগবদ্‌ ভক্ত সাধুপুরুষগণের সন্নিবিলাভ ও তাহাদের প্রকটিত ভগবান সমন্ধে আলোচনা শ্রবণ, সাধারণ মানবগণের পক্ষে এক প্রকার ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১১৭ অসম্ভব! সে কারণ পরম সাধু হইতে ও শ্রেষ্ঠতম সাধ্ত্রম শ্রীমদ্ভাগবতের সন্নিধিলাভ করিলে সংসার হইতে উত্তরণের জন্য ভাবিতে হইবে না। এইজন্য ভাগবত সাহায্যে আমার ব্রক্মহ্থত্রালোচনার প্রয়াস উদ্ভূত হইম্াছে। উক্ত আলোচনায় ভাগবত লইয়া অনেক ঘাটাঘণাটি করিতে হইয়াছে, তাহা! বলা বাহুল্য । ভাগবতের উপদেশ অনুসারে ইন্দ্রিয়নাশের বা কঠোর শরীর পীড়নের প্রয়োজন নাই। পঞ্চেন্দ্রিয় দ্বারা পরম তত্বের আস্বাদন ইহাতে সুস্পষ্ট উপদিষ্ট হইয়াছে । উহ! মানবের প্রকৃতির অনুকূলে বলিয়া বিশেষ কষ্টসাধ্য নহে। ইন্দিয়ণণকে তুচ্ছ বিষয় হইতে অল্পে অল্পে ফিরাইয়া চরম ও পরম বিষয়ে নিয়োগ শনৈঃ শনৈঃ হৃদয়গ্রাহী উপায়ে করিবার উপদেশ দেওয়া হইয়াছে । স্থতরাং কোন্‌ শ্রেয়ঃকামী ইহা পরিত্যাগ করিবে? ১২) জুত্রকার তটস্থ লক্ষণ দ্বারা নির্দেশ করিলেন কেন? ৪৪। বর্তমান আলোচ্য সুত্রে স্বত্রকার তটস্থ লক্ষণ দ্বারা ব্রদ্ধ নির্দেশ করিয়াছেন । তিনি স্বরূপ লক্ষণের দ্বারা ব্রহ্ম নির্দেশের প্রয়াস পান নাই। কারণ তাহা! কার্ধ্যতঃ সম্ভব নহে। বৃসিংহ-পূর্বতাপণী উপনিষদে “সচ্চিদানন্দময়ং পরং ব্রহ্ম তমেব বিদ্বানমূত ইহ ভবতি” মন্ত্রে পরব্রদ্ধকে স্বরূপ লক্ষণে “সচ্চিদানন্দময়” বলিয়া নির্দেশ করা হইয়াছে। গোপাল-পূর্বতাপণী উপনিষদের প্রারম্ভে ম্গলাচরণ মন্ত্রে পরক্রঙ্গরূপী শ্রীরুষ্ণকে “সচ্চিদানন্দরপায়” বলিয়া প্রণাম নিবেদন কর! হইয়াছে। তৈত্তিরীয় শ্রুতিতে “সত্যং জ্ঞাননস্তং ব্ৰহ্ম” বলিয়া স্বরূপলক্ষণে ব্রহ্ম নির্দেশ কর! হইয়াছে। উক্ত মন্ত্রাশগুলি ধীরভাবে অন্তধাবন করিলে আমরা বুঝিতে পারি যে, শ্রতিতে ব্যবহৃত সৎ-চিৎ-আনন্দ বা সত্য-জ্ঞান-অনস্ত, . আমাদের ব্যবহারিক জগতের আপেক্ষিক সব, আপেক্ষিক চিৎ, আপেক্ষিক আনন্দ, বা আপেক্ষিক অনন্ত নহে। উহারা নিরপেক্ষ পরত নিরপেক্ষ চিৎ, নিরপেক্ষ শি নিরপেক্ষ সত্য, নিরপেক্ষ জ্ঞান, নিরপেক্ষ অনস্ত। আমরা আপেক্ষিক জগতের অন্তর্ভুক্ত জীব। আমাদের অস্তঃকরণ চিত্ত মন-বুদ্ি-অহংকার, যাহা আমাদের চিন্তার, ধারণার ও সিদ্ধান্তের ন্ত্রউহা আপেক্ষিকতার প্রভাবে প্রভাবিত ৷ আমাদের জ্ঞানেন্দরিয়_কর্ম্মেন্সিয়গণ মনেরই পরিচায়ক ৷ উহারাও আপেক্ষিকতার অন্তর্ভুক্ত ।' বাগিন্দিয়-কর্ম্েন্দিয়গণের মধ্যে একটি । উহা হইতে আমাদের ভাষা অভিব্যক্ত। স্থতরাং প্রত্যেক শব্ধ, প্রতিপদ, প্রতিবাক্য-প্রতি বাক্যাংশ আপেক্ষিকতার প্রভাবে প্রভাবিত, ইহা বলাই বাহুল্য ৷ শঁতিতে ব্যবহৃত সত ১১৮ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্ৰীমদ্ভাগবত চিৎ-আনন্দ বা সত্য-জ্ঞান-অনস্ত শব্দ সকলও সে কারণ আপেক্ষিকতার প্রভাব. মুক্ত নহে । পরত্রদ্ষের স্বরূপে আপেক্ষিকতার কোনও সংস্পর্শ থাকা সম্ভব নহে। অতএব আমাদের ভাষায় উক্ত শব্দ সকল ব্যবহারে পরক্রঙ্গের স্বরূপ কি প্রকারে প্রকাশ করা যাইতে পারে? তাহা হইলেও ব্রহ্ম সম্বন্ধে উপদেশ অজ্ঞ শিল্তকে দিতে হইলে, ভাষার ব্যবহার ভিন্ন উপায় নাই বলিয়া, ভাষা ছাড়িতে পারা যায় না। তবে এ এসম্পর্কে বলিয়া রাখি যে, সৎ-চিং-আনন্দ বা সত্য-জ্ঞান-অনন্ত, ভাষায় উহার! পৃথক্‌ পৃথক শব্দে কথিত হইলেও, উহার! পৃথক্‌ পৃথক তত্ব নহে। যদি পৃথক্‌ হয় তাহা হইলে, আপেক্ষিকতা স্বতঃই আপতিত হয়। দুটি বস্ত হইলে, একটির সহিত অপরটির আপেক্ষিক সম্বন্ধ আপনা আপনিই সংঘটিত হয়। একারণ সৎ-চিৎ্আনন্দ বা সত্য-জ্ঞান-অনস্ত--উহারা একে তিন, তিনে এক। একই অদ্বৈত বস্তু নির্দেশে তিনেরই সার্থকতা । আমাদের বিপ্লেষিকা বুদ্ধির মরধ্যাদা রক্ষার জন্য এবং আমাদের বোধ পৌকর্ষ সাধনের জন্য তিন নামে নির্দেশ করা হইয়াছে মাত্র। শ্রুতির নির্দেশ ত মানবদেহধারী জীবের জন্য । স্থতরাং উক্ত জীবের ধারণার উপযোগী করিয়াই শ্রুতি নির্দেশ করিয়াছেন । ৪৫। বস্তু নির্দেশের ছুটি পস্থা আমাদের পরিচিত। একটি বিধিমুখে, অপরটি নিষেধমুখে । আলোচ্য শ্রুতির শিরোদেশে উদ্ধত ছান্দোগ্য শ্রুতির ৩।১৪।১ ও তৈত্তিরীয় শ্রুতির ৩।১ মন্ত্র বিধিুখে ব্রহ্ম নির্দেশ করিয়াছেন । এই বিধি- মুখে নির্দেশের অপর নাম তটস্থ লক্ষণ দ্বার! নির্দেশ। এরূপ নির্দেশে আপেক্ষিক জগতের সহিত পরব্রন্ধের সম্বন্ধ খ্যাপন অপরিহার্ধ্য হইয়া পড়িয়াছে। অবশ্যই মনে রাখিতে হইবে যে, আপেক্ষিক জগৎ পরব্রদ্ধ হইতে অত্যন্ত পৃথক্‌ বস্তু নহে। ইহা পরে বুঝা যাইবে। তবে আমাদের দৃষ্টিতে পৃথক প্রতীয়মান হয় বলিয়া, আমরা সাধারণ ব্যবহারে পৃথক বলিয়া মনে করিয়! থাকি । ৪৬| নিষেধমুখে নির্দেশের দৃষ্টান্ত আমরা বৃহদারণ্যক শ্রুতির তৃতীয় অধ্যায়ে অষ্টম ব্ৰাহ্মণে অক্ষর তত্ব নির্দেশে দেখিতে পাই । উহাতে উক্ত তত্ব, অস্থুলম্‌. অনগু, অন্ুম্বম, অদীর্ঘম, অলোহিতমূ. অন্পেহম্‌, অচ্ছায়ম্‌, অতম:, অবাচী, অনাকাশম্‌, অগঙ্গম্‌, অরসমূ অগন্বমূ, অচক্ষুষ্ম, অশ্রোত্রমূ, অবাক, অমন অতেজম্কম্‌ অগ্রকাশম্‌, অন্থখম্‌, অমাত্রমূ, অরাহ্ম্‌, অনস্তরমূ, প্রভৃতি নিষেধাত্মক পদ দারা নির্দেশিত হইয়াছেন । ইহাতে লক্ষ্য করিতে হইবে যে, আপেক্ষিক জগতের আমাদের পরিচিত স্থুল, অণু হৃম্ব, দীর্ঘ প্রভৃতিকে প্রাতিষেধ করা হইলেও, উহাদের সহিত সঙ্দ্ধযে, সপ্পূরণ্পে তিরোহিত হইয়াছে, তাহা নয়। নিষেধযূলক সম্বন্ধ বর্তমান রহিয়াছে। ইহা সুষ্পষ্ট। “নেতি নেতি” ১ খঃ.। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্ুঃ ১১৯ শ্রুতিতে সমুদায় নিষেধ করিয়া ব্রহ্মস্বরূপ স্থাপন করা হয় বটে, স্ুত্রকারও “নেতি নেতি” শ্রুতির তাৎপর্য্য বিশ্লেষণে “প্রকুতৈতাবত্বং হি প্রতিষেধতি, ততো ব্রবীতি চ ভূয়ঃ” ৩1২।২২ স্থত্রে সিদ্ধান্ত স্থাপন করিলেন যে, “নেতি নেতি” শ্রুতিতে প্রস্তাবিত কিছু প্রতিষিদ্ধ হইলেও অনেক কিছু অপ্রতিষিদ্ধ রহিল। স্থতরাং স্ত্রকারের অভিপ্রায় এই মনে হয় যে, শ্রুতি বলিতে চাহেন যে, ভাষার দ্বার! পরব্রদ্দোর স্বরূপ নির্দেশ সম্ভব নহে । অনেক কিছু অনির্দিষ্ট রহিয়া যাইতে বাধ্য । ৪৭। এই কারণে ভগবান্‌ স্থত্রকার তটস্থ লক্ষণ দ্বার! ত্রহ্মনির্দেশ করিয়াছেন । ইহা সমীচীন হইয়াছে, সন্দেহ নাই। তটস্থ লক্ষণ ছারা যাহাকে নির্দেশ কর! হইল, তিনি সগুণ ব্ৰহ্ম বটে। কিন্ত ব্ৰহ্মে, সগুণ-নিগুণ বা সবিশেষ-নিধ্বিশেষ ভেদ নাই। তিনি সমকালে “অপোরণীয়ান্‌ ও. মহতোমহীয়ান্” ( শ্বেতাশ্বতর ৩২০ )। যে কালে “সমাত্র” সেই সমকালেই “অনন্তমাত্র” ( মাঙুক্য কারিকা ), যে কালে সাকার সেই সমকালেই নিরাকার কারণ “পরত্র্মণঃ পরমার্থতঃ সাকার-নিরাকারেণ স্বভাব-সিদ্ধৌ” ( ত্রিপাদ বিভূতি মহানারায়ণোপনিষদ্‌)। ৪৮। ইহাতে মনে সন্দেহ উপস্থিত হয় যে, যদি মানবের ভাষা দ্বার! কি বিধিমুখে, কি নিষেধমুখে, পরব্দ্ষের স্বরূপ নির্দেশ সম্ভব.ন! হয়, তবে তৈত্তিরীয় শ্রুতি, নৃসিংহ-পূর্বতাপণী, গোপাল-পূর্বতাপণী প্রভৃতিতে শ্রুতি ভাষা ছারা ত্বরূপ-নির্দেশ করিলেন কেন ? ইহার উত্তর এই যে, শ্রুতি মানবদেহধারী জীবের পরম কল্যাণ সাধিকা । জীব কল্যাণের জন্য পরমতত্বের জ্ঞানলাভ অতি প্রয়োজনীয়। শ্রুতি উক্ত জ্ঞানের অফুরন্ত ভাওার। মানবকে শিক্ষা দিতে হইলে, মানবের ভাষা ব্যবহার না করিলে চলে না। সুতরাং ভাষার সতঃসিদ্ধ অক্ষমতা সত্বেও, উহাকে অবলম্বন করিতেই হয়। শ্রুতি জানেন যে, সাধারণ মানবের ?ক্ষে একেবারে ্রন্ধের স্বরূপ-জ্ঞানলাভ সম্ভব নহে । কিন্ত শ্রুতি তো শুধু সাধারণ মানবের জন্য নহে। যাহার! সাধনার উচ্চন্তরে অবস্থিত, তাহাদের পদ্থানির্দেশও শ্রুতির কর্তঁৰ্য। যোগিগণ নির্হিবকল্প সমাধিতে ব্র্্বরপের অপরোক্ষাহুভূুতি লাভ করেন বলিয়া শাস্ত্রের ঘোষণা ৷ উক্ত যোগিগণ শ্রুতির উপদেশ অবলম্বন করিয়াই সাধন পথে অগ্রসর হইয়াছিলেন। একারণ তাহাদের উপদেশের জন্য স্ব নির্দেশ অসম্পূর্ণ হইলেও, দিগ.দর্শন স্বরূপ দেওয়া প্রয়োজনীয়, ইহাতে কি সন্দেহ আছে? ৪৯। “তটস্থ-লক্ষণ” ছারা ব্রহ্ম নির্দেশে আরও একটি অতি প্রয়োজনীয় বিষয় সর্বদা মনে রাখিতে হইবে. যে, উক্ত লক্ষণ ছার! মে বন্ত নির্দিষ্ট হইলেন, ১২০ রঙ্গস্ত্র ও শ্ৰম (৩ গবত তিনি পরমতত্ব “সত্যং পরং” ভগবান হইতে পৃথক কিছু নহেন। )১1১1১1১ স্তরের আলোচনায় উদ্ধৃত ভাগবতের ১।২।১১ শ্লোরু হইতে আমরা বুঝিয়াছি যে, পরব্রহ্ধকে_ ব্রহ্ম, পরমাত্মা, ভগবান্‌ বা যে কোনগ নামে অভিহিত করা যাউক্‌ ন! কেন-_তিনি এক, অদ্বিতীয়, সজাতীয়-বিজাতীর-স্বগত-ভেদ বজ্জিত পরমতত্ব ৷ সগুণ বলি বা নিগুণ বলি, সাকার বলি বা নিরাকার বলি, সবিশেষ বলি বা নির্বিশেষ বলি__-তাহাতে কিছু আসে যায় না। ওরূপ বলা আমাদের বুদ্ধির ক্রিয়া। বিশ্লেষণ-বুদ্ধির স্বভাবগত ধর্ম। উহা! ভগবানকেই বা বিশ্লেষণ করিতে নিরস্ত হইবে কেন? তাহা হইলে ত ধর্মচ্যুত হইতে হয়, স্বভাব পরিত্যাগ করিতে হয়, তাহা ত সম্ভব নয়। কিন্তু বুদ্ধি তাহাতে উহার যতকিছু শক্তি প্রয়োগ করুক না কেন, তিনি তাহার নিত্য, সত্য, অব্যয়, অচ্যুত স্বরূপে প্ৰতিষ্ঠিত ৫০ পৃণিমার রাত্রে খণ্ড খণ্ড মেঘে আকাশ আচ্ছন্ন । মেঘের ফাকে ফাকে পূৰ্ণচন্দ্ৰ দেখা যাইতেছে । উদ্দ আকাশে বায়ু প্রবহমান হওয়ায় মেঘ সঞ্চরমান হইল। ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত ক্ষুদ্র বালক আকাশে চাহিয়া বলিল, চাদ ছুটিয়া যাইতেছে । তাহাকে ভ্রম বুঝাইবার জন্তা, একটি বৃক্ষ শাখার অন্তরালের ভিতর দিয়া, তাহার দৃষ্টি চন্দ্রের প্রতি নিবদ্ধ করাইলে, সে দেখিয়৷ বুঝিল, চাদ স্থির আছে, মেঘই ছুটিতেছে। ইহা! “শাখা-চনদরন্তায়” নামে বিদ্বৎ সমাজে পরিচিত । ইহা! এক প্রকার তটস্থ-লক্ষণ দ্বারা বস্তু নির্দেশ। এ নির্দেশে চাদের স্বরূপ পরিবর্তন হইল না, বরং মেঘের গতির সহিত চাদের সম্বন্ধ নাই, ইহা বুঝান গেল। ৫১। আকাশে সপ্তবিমগুলে, অরুদ্ধতী নামে একটি ক্ষুদ্র, অনুজ্জল তারা, অপেক্ষাকৃত উজ্জল ও নগ্নচক্ষে সহজে পরিদৃণ্তমান একটি বৃহত্তর বশিষ্ঠ নামে খ্যাত তারার সন্নিকটে বর্তমান আছে। উক্ত দ্র অরুদ্ধতী সহজে দৃষ্টিগোচর হয় না। উহাকে দৃষ্টিগোচর করাইতে হইলে, দর্শকের দৃষ্টি প্রথমে বশিষ্ঠের প্রতি আবর্ষণ' করিয়া (যাহা অতি সহজ সাধ্য), ক্রমশঃ অল্পে অল্পে সরাইয়া অরুন্ধতী দেখান: হয়। ইহা পণ্ডিত সমাজে “অরুদ্ধতী ন্যায়” নামে পরিচিত। এ প্রকার অরুদ্ধতী দর্শন তটস্কলক্ষণ দ্বারা করান হইল, ইহা ুম্পষ্ট। ইহাতে কি অবুদ্ধতীর স্বরপের কোনও হানি হইল? তাহা হয় না। ৫২ সেইরূপ তটস্থলক্ষণ দ্বার! সুত্রকার আমাদের পরিদৃশ্ঠমান জগৎ ও. আমাদের চতুঃপার্থহ বন্তজাতের সাহচর্য এবং আমাদের স্থপরিচিত জীব-উত্ভিদ ও অন্ত বস্ধসকলের জন্ম-স্থিতি-নাশের নিদর্শনে তীটস্থ-লক্ষণ দ্বারা যে বস্তর: ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১২২ নির্দেশ করিলেন, তিনিই চরম ও পরম সত্য স্বরূপ, একমাত্র বস্তু । ইহাকেই ভাগবতকার ১১২ শ্লোকে “বাস্তব বস্তু” বলিয়া পরিচয় দিয়াছেন, এবং ইহ! সকলের “বেন্ত” বলিয়া উপক্রম করিয়৷ তাহা প্রতিপাদনের জন্য মহাপুরাণ রচনা করিয়াছেন। ইহার জন্তই আমার এই আলোচনার বিড়দ্ননা, ইহ! বলাই বাহুল্য । ৫৩) ভগবান্‌ শঙ্করাচার্য্য সবত্রন্থ “অস্ত” পদের চারিটি বিশেষণ প্রয়োগ করিয়াছেন। তাহাদের মধ্যে একটি “মনপাহুপি অচিন্ত্য রচনারূপস্ত” ৷ ইহার দ্বারা জগত্তকারণ ব্রন্মের সর্ধজ্ঞতা, সর্বশক্তিমন্তা প্রতিষ্ঠিত হইল। পূর্বের আলোচনায় আমরা বুঝিয়াছি যে, বিশ্বহষ্টি-_জীবের অশেষ কল্যাণ সাধনের জন্য । অতএব জগৎ কারণ ব্রহ্ম, নিখিল কল্যাণ গুণের আকর, ভক্ত বৎসল, সর্বজ্ঞ, সর্ধশক্তিমান্, অধিকারী ভক্তের নিকট আত্মবিক্রর করিতে সর্বদা প্রস্তুত, সৰ্ব্বদাই জীবের সঙ্গে সঙ্গে ফিরিতেছেন, তাহার সমুদায় কর্শের, সমুদায় চিন্তার যূলে তিনি, আপনার অনন্ত এশ্র্ধ্য আবরণ করিয়া স্বেচ্ছায় মানুষ সা'জয়া, মানুষের মধ্যে তাহাদেরই একজন হইয়া, পিতা-মাতা -গুরু-সখা-বনধু প্রভৃতিরূপে, কাৰ্য্যে, আচরণে, উপদেশে ভ্রান্ত জীবকে নিঃশ্রেয়সের পথে অগ্রসর হইতে সাহায্য করেন । ১৩) ব্ৰহ্ম বিশ্বের উপাদান ও নিমিত্ত কারণ । ৫৪ পূর্বের আলোচনায় আমরা বুঝিয়াছি যে, জগৎ হি ব্যাপারে সমুদায় কারকব্যাপার ব্র্দই। তিনি আপনি, অন্ত নিরপেক্ষ হইয়া, আপনা হইতে, আপনাকে জগদ্রপে অভিব্যন্ত করিয়া, আপনি ভোক্তা _-ভোগা, কষেত্রজ্র__ক্ষেত্র সাজিয়া, আপনি আপনাকে উপভোগ করিতেছেন । অতএব তিনি জগতের উপাদান ও নিমিত্ত কারণ বটেন। প্রকৃতি ও কাল, দৃত: উপাদান ও নিমিত্ত কারণ বলিয়া প্রতীয়মান হইলেও উহারা উভয়ে ব্রহ্মশক্তি বিধায়, তাঁহার আত্মারামত্বের হানি হয় না। ব্রহ্ম বা ভগবান্‌ যখন সমস্ত কারক-ব্যাপারাত্মক, তখন উপাদান ও নিমিত্ত কারণের পৃথক ভাবে আলোচনা করিয়া গ্রন্বদ্ধির প্রয়োজন কি? এ সংশয় সহজেই মনে হয়। ইহার উত্তরে এইমাত্র বলি যে, সাংখ্য প্রক্কৃতিকেই স্বাধীন ভাবে “উপাদান” কারণ রূপে নির্দেশ করিয়া শাস্তর প্রণয়ন করিয়াছেন । ভগবান্‌ সত্রকারও পরে কয়েকটি সুত্রে এই সাংখ্য মত নিরাকরণ করিয়াছেন বেদাস্তমতে রি লা নহে- উহা] ভাগবতী শক্তি__ভগবান্‌ কর্তৃক পরিচালিতা৷ হইয়া-বিশ্বস্থ্টির. ১২২ ্র্ষন্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত উপাদান অভিব্যক্ত করেন। এ কারণ উপোদ্ঘাত স্বরূপ এই বিশেষ আলোচনা করা হইতেছে। ভাগবত বলিতেছেন £__- প্রকৃতিহ্যস্তোপাদানমাধারঃ পুরুয়ঃ পরঃ। সতোইভিব্যপ্রকঃ কালো ব্রহ্মাততত্রিয়ং তৃহম্‌ ॥ ভাঃ ১১।২৪।১৯ এই প্রপঞ্চ জগতের দৃশ্ঠতঃ প্রতীয়মান উপাদান রূপা প্রকৃতি, আধার রূপ পুরুষ .এবং নিমিত্ত কারণ_-কালরূপ অভিব্যগ্তক__তিনিই ক্র্ষ। আমি একাধারে সেই তিনই। ১১1২৪।১৯ ৫৫। স্্টি অভিব্যক্তির জন্য কাল যে অপরিহার্য এবং উহা! সুর্য, চন্দ, অন্তরীক্ষ, ভূঃ, ভুবঃ, স্বঃ প্রভৃতি সৃষ্টির পূর্বে অভিব্যক্ত হইয়াছিল, তাহা “গায়ত্রী রহস্য” পুস্তকের ৫২, ৫৩, ৫৪ পৃষ্ঠায় “খতঞ্চ সত্যঞ্চ--” মন্ত্রের আলোচনায়, বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করিয়াছি । স্থুল দৃষ্টিতে দেশ ও কাল তৃল্য্ূপে প্রয়োজনীয় । উক্ত “ঝতঞ্চ সত্যঞ্চ.....” মন্ত্র ও সমকালে দেশ ও কালের উৎপত্তির উল্লেখ করিয়াছেন। কিন্তু ভাগবতে দেশের উল্লেখ না থাকায়, শুধু কালের উল্লেখ থাকায়, মনে হয় যে, ভাগবতকারের মতে দেশ ও কাল পরম্পর বিভিন্ন বস্তু নহে। একই বস্তুর বা তত্বের বিভিন্ন ভাবে দর্শন মাত্র। একটি বস্তুর অবস্থান স্থান ও অপরটি পারম্পর্শ নির্দেশক । এ সন্বদ্ধে আরও আলোচন! পরে অন্ত প্রকারে করা হইবে। বর্তমান বিংশ শতাব্দীতে প্রসিদ্ধ গণিতজ্ঞ বৈজ্ঞানিক আইন্ষ্টাইন্‌ দেশ ও কাল উভয়কে একযোগে গ্রহণ করিয়া তাহার “আপেক্ষিকৃবাদ” প্রচার করিয়াছেন। এ সম্পর্কে “বেদান্ত প্রবেশ” গ্রন্থে পঞ্চম পরিচ্ছেদে মনোযোগ আকর্ষণ করি। ৫৬। ভাগবতের উদ্ধৃত শ্লোকটির তাৎপর্য বিশদ্রূপে হৃদয়ঙ্গম করিবার জন্য নিম্নে চিত্রাকারে দেখান হইল। রম | | ৰ | sz কৃতি (উপাদান পুরুষ (আধার বা অধিষ্ঠান কাল ( নিমিত্ত কারণ ) কারণ ) কারণ ) “প্রকৃতেঃ শক্রিত্বাৎ” ) (“পুরুষস্ত মদংশত্বাৎ” ) (“কালস্ত সঙ্চেষ্টারূপত্বাৎ”) গ্লাধর . স্'মিজীর ব্যাখ্যান্ুসারে প্রকৃতি ব্রদ্দের শ কি, পুরুষ-_ব্রন্মের অংশ ও শ-_ তাহার চেষ্টা রূপ বলিয়া-_ রি তিসই ব্্ম হইতে অভিন্ন তিনই ব্ৰহ্ম ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১২৩ নামের বিভিন্নতা, আমাদের বোধ লৌবর্্যার্থ। আমার বুদ্ধির বিশ্লেষিকা শক্তির পরিচয় মাত্র । শক্তির বিকাশে স্ষ্টি বুঝলাম, উপরে উদ্ধৃত ভাগবতের ১/১০২৪ শ্লোক হইতে বুঝিয়াছি যে, হুষ্টি ভগবানের “আত্মলীলয়া”। ইহাকেই স্থত্কার “লোকবত্তুলীলাকৈবল্যম্” (স্তর ২১৩৪) সুত্রে, শক্তি বিকাশের কারণাঙ্- সন্ধান হইতে নিবৃত্ত হইয়াছেন। এরূপ হওয়া অব্ম্তাবী। তাঁহার স্থি করিবার ইচ্ছার উদ্রেক হয় কেন, ইহাও অনুসন্ধান করিতে যাইলে “অনবস্থা” দোষ অপরিহার্য হইয়া পড়ে। তিনি তো সকল কারণের কারণ। তাহার ইচ্ছা উদ্রেকের কারণ, তারপর সে কারণের কারণ, তাহারও কারণ ইত্যাদি জানিতে যাওয়া বাতুলতা৷ নয় কি? অনুসন্ধান এক স্থানে শেষ করিতেই 'হুইবে। এজন্য “আত্মলীলয়া” বলা ভিন্ন উপায় কি? যখন আনন্দ উপভোগের ইচ্ছা করেন, তখনই স্থা্ট-সংকল্প-শক্তি মায়াকে বিকাশ করেন। ইহার দৃষ্টান্ত আমাদের দৈনিক জীবনে চতুর্দিকে দেখা যায়। ৫৭। একজনের গান গাহিবার শক্তি আছে, কিন্ত, তাই বলিয়া কি তিনি দিবারাত্র গান করেন? যখন গান গাহিবার ইচ্ছার উদ্রেক হয়, তখনই তিনি তান-মান-লয়-রূপ-রাগিনী-যৃচ্ছনাদির সহিত গান গাহিয়া আপনি আনন্দ উপভোগ করেন এবং নিকটস্থ সকলকে আনন্দ প্রদান করেন । পরে উক্ত শক্তি আপনাতে সংহত করিয়া গান হইতে বিরত হন। বিরত হইলেও উক্ত শক্তি তাহাতে অনভিব্যক্ত ভাবে থাকে। ভগবানেও তাই। যখন আত্মারামত্ব হইতে ব্যুখিত হইয়া, জীব জগৎ হইতে আনন্দের অনুভূতি পাইতে ইচ্ছা করেন, তখনই সৃষ্টির অভিনয় প্রকটিত করেন। আবার ইচ্ছা হইলে উহা! আপনাতে সংহত করিয়া নিঃশক্তিকের স্তায় অবস্থান করেন। তখনও স্থষ্টি অনভিব্যক্ত ভাবে তাহাতে বর্তমান থাকে । এই সংহরণ ক্রিয়া প্রলয় নামে আমাদের নিকট পরিচিত। শক্তির অপলাপ কোনও কালে নাই-_ একবার অভিব্যক্তি, একবার অনভিব্যক্তি এইমাত্র ৷ ইহা আমাদের জুবিদিত যে, গায়ক তাঁহার নিজের বা শ্রোত্বৰ্গের চিত্ত বিনোদনের জন্য নিজ গীতিশক্তি উদ্বোধন বরেন। ভগবানেরও নিজের স্বভাবসিদ্ধ মায়া শক্তি বিকাশে জগৎহষ্টি ও সেই প্রকার নিজের আনন্দ লাভের রত GARG মতন TNE ইহা তাহার দিবা বিনোদ” রিয়া বদনা করিয়াছে! ইহাই ভাগবতের ১১০২৪ শ্লোকে “আত্মলীলয়া” -বলিয়! এবং স্ত্রকার ২১1৩৪ সুত্রে “লীলাকৈবল্যম্‌ 9098 ১২৪ ্রহ্মসত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত ১৪) কটি শুদু «নিব্যমায়া বিনোদ” নহে-_ইহার উদ্দেশ্য জীব ও জগতের কল্যাণ বিধান । ৫৮। এই “দিবামায়! বিনোদ” ছাড়া আরও একটি অতি মহদুদ্দেশ্য স্পট প্রমারের যূলে। ভাগবত-কথা শুনিতে শুনিতে মহারাজ পরীক্ষিতের মনে সন্দেহ হইল যে, শ্রুতি ত সগ্ুণ কিন্ত ব্ৰহ্ম স্বরূপে নিরগুণ, নিব্বিশেষ। সগুণ শ্রুতি কি করিয়া নিগুণ, নির্ধিবশেষ বস্তুকে নির্দেশ করিতে পারে? একারণ প্রশ্ন করিলেন । ব্ৰহ্মন্‌ ব্ৰহ্মণযনি্দেশ্যে নিগুণে গুণবৃত্তয়ঃ ৷ কথং চরস্তি শ্রুতয়ঃ সাক্ষাৎ সদসতঃ পরে ॥ ভাগঃ ১০ ৮৭৷১ হে ব্ৰহ্মণ,! ..্রত্যক্ষরূপে নির্দেশের অযোগা, নিরগুণ, কাধ্য-কারণ দ্বার!" অস্পৃষ্ট পরত্রন্ষের স্বরূপ-কিরূপে সগুণ শ্রুতি সকল সাক্ষাৎ বর্ণন! করিতে: সক্ষম হয়েন, অর্থাৎ পরক্রন্ধ কি. প্রকারে সপ্ুণ শ্রতিগোচর হইতে পারেন। ভাগঃ ১০1৮৭।১। এই প্রশ্নটি অতি সাংঘাতিক প্রশ্ন । যদি শ্রুতিগণ গুণ বৃত্তিবিশিষ্ট বলিয়া, নিপুণ, অনির্দেষ্ঠ পরব্রহ্ধকে নির্দেশ করিতে না পারে, তাহা! হইলে, ত্রক্ষস্থ্রের: ভিত্তি ধুলিসাৎ হইল, শ্রুতির প্রমাণ ও ভাগবতের ব্যাখ্যা লোপাপত্তি পাইল। এই কারণে পৃজ্যপাদ শ্রীধর স্বামী এই শ্লোকের টাকায় বিস্তৃতভাবে শব্দ-বৃত্তির- আলোচন! করিয়াছেন । গ্রন্থ বাহুল্য ভয়ে উক্ত আলোচনায় প্রবেশ করিতে. বিরত হইলাম। ভাগবত এক কথায়, ভগবান্‌ শুকদেব গোস্বামীর মুখ দিয়া বে উত্তর দিয়াছেন, তাহারই উল্লেখ করিতেছি । উক্ত প্রশ্নের উত্তরে শুকদেব: গোস্বামী বলিতেছেন £__ ০০০০০ কুচিদজয়াত্মনা চ চরতোইনুচরেনিগমঃ | ১০।৮৭।১০ স্বামীজির টাকা :__কচিদিতি__কদাচিৎ, ক্ষ্ট্যাদি-সময়ে, অজয়া__মায়য়।, চরতঃ_ ক্রীড়তঃ, আত্মনা-_নিত্যালুপ্ত ভগতয়া সত্য-জ্ঞানানস্তানন্দ মাত্রৈক: রসেন আত্মনা চ, চরতো__বর্তমানস্ত তব, নিগমোহইন্ুচরেৎ__প্রতিপাদয়েৎ ৷৷ সরলার্থ :_যখন স্থষ্টি সময়ে তুমি নিজ সত্য-_জ্ঞানানস্তানন্দ মাত্রৈক রস-- স্বরূপ, সমগ্রভাবে অলুপ্ত রাবিয়াই, মায়ার সহিত ক্রীড়া কর, তখনই বেদ সকল, তোমাকে প্রতিপাদন করিয়া থাকে । ১০1৮৭।১০ ইহা হইতে আমরা পাইলাম যে, সৃষ্ট সময়ে-নিগুণ, নির্ধিবশেষ্ষ এবং সেঃ > খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্ুঃ ১২৫ কারণ অনির্দেশ্ পরব্রহ্ম, নিজের সৃষ্টি সংকল্পরূপা মায়া শক্তির উদ্বোধন করিয়া হুট করেন, তখনই শ্রতিগণ তাহাকে প্রতিপাদন করিতে সমর্থ হয়েন। শ্রতিগণ সগ্ডণ। পরব্রক্ম আপনাকে সগুণরূপে প্রকটিত না করিলে স্বষ্টি সংসাধিত হইতে পারে না। মায়া ত ত্রি-গণময়ী। তাঁহার সহিত ক্রীড়া৷ করিতে হইলে, ক্রীড়ককেও গুণাশ্রয় করিতে হয়। কিন্ত গুণাশ্রয় করিলেও তাহার সত্য- জ্ঞানানস্তানন্দ-মাত্রৈক-রন-স্বর্ূপতা মায়াগুণে কিছুমাত্র রঞ্জিত হয় না । অথচ গুণাশ্রয় কারণ হেতু, তিনি সগুণ শ্রুতির নির্দেশ্ত হইয়া পড়িলেন। আপন ইচ্ছাতেই ইহা সংঘটিত করিলেন, ইহা বলাই বাহুল্য। অন্তপক্ষে ব্রন্মে সগ্তণ- নিগুণ ভেদ ন! থাকায়, গুণাশ্রয় হেতু সগুণ শ্রুতির নির্দেখ্ঠ হইবার সঙ্গে সঙ্গে তাহার নিগুণ নিব্বিশেষ স্বরূপের পরিচয়ও বথাসস্তব পাওয়া গেল। একারণ যিনি অন্ত প্রমাণে “অপ্রমেয়” (ভাগঃ ১০।২৯।১৩), তাহার সম্বন্ধে শ্রুতি প্রমাণ মানিতেই হইবে। ইহা হইতে বুঝা গেল যে, স্থাষ্ট প্রসার শুধু তাহার আত্মলীলা বা দিব্যমায়া- বিনোদ মাত্র নহে। জীব ও জগতের নিকট আপনার স্বরূপ প্রকাশ ও তদ্বারা উচ্চ হইতে উচ্চতর সোপানে আরোহণ করাইয়া! সকলকে নিজ স্বব্ধপের আস্বাদন দান এবং তাঁহার পাদবিভূতি স্বরূপ মত্ত্যধাম হইতে লইয়া নিত্যধামে নিত্য আনন্দ ও নিত্য স্থখের উপভোগ বিধান। “সিদ্ধি” নামক চতুর্থ অধ্যায়ে ইহার সাক্ষাৎ পাইব। ১৫) জগদদর্শন_প্রকৃতু ও প্রান্ত ৫৯। ভগবান্‌ বিশ্বের নিমিত্ত ও উপাদান কারণ এবং সর্ধশক্তিমান্‌ বলিয়া, আপনিই আপনাকে বহুত্বে প্রফটিত করিলেন। ভাগবত বলিতেছেন ৫ সত্বং রজস্তম ইতি ব্রিবিদেকসাদৌ সুত্রং মহানহমিতি প্রবদন্তি জীবম্‌। জ্ঞানক্রিয়ার্থ ফলরূপতয়োরুশক্তি ব্রদ্মেব ভাতি সদসচ্চ তয়োঃ গ্রং যৎ | ১১৩৩৮ সথষটির পূর্বের যিনি একমাত্র ব্রহ্ম, অনন্ত শক্তিমান্‌ হেতু, তিনিই সৃষ্টিতে সত্ব- রজঃ-তমঃ এই ত্ৰিগুণাত্মক প্রধানরূপে, তিনিই. মহান্‌, সুত্র বা প্রাণতত্ব্ধপে, তিনিই অহংকারাত্মক জীবরূপে, কথিত হইয়া থাকেন। তিনিই ইন্দিয়াধিষ্ঠাতূ- দেবতা, ইন্দ্রিয়, বিষয়, এবং বিষয় ভোগ জনিত, অতএব বিষয় হইতে প্রকাশিত হুখদুঃখাদি ফলরূপে প্রকটিত হয়েন। তিনিই কার্ধয, তিনিই কারণ এবং তিনিই তদুভয়ের অতীত! ভাগঃ ১১৩৩৮ রহ | ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রমদ্ভাগবত উপসংহারে শ্রীধর ম্বামিজী বলিতেছেন £নহি সর্ধরূপেন স্বতো-- ভাসমানন্ত ব্র্মনঃ স্বসিদ্ধৌ প্রমানাপেক্ষা ইতিভাবঃ ৷”_ যিনি স্্টিতে সর্ধবরূপে প্ৰকাশমান, তিনি স্বতঃসিদ্ধ । তীঁহার_সিদ্ধির জন্য কোনও প্রমাণের অপেক্ষা মাই । কুর্ধ্যকে প্রকাশ করিবার জন্য, প্রদীপ বা অন্য কোনও প্রকাশকের কি আবশ্তকত| আছে? তথাপি যিনি শ্বেচ্ছার_আপনাকে মায়ার আবরণে আবৃত করিয়া রাখিয়াছেম, সে কারণ-_অজ্ঞ মানবদেহধারিগণের নিকট তাহার পরিচয় দিবার জন্য শ্রুতির প্রমাণ গৃহীত হইয়া থাকে। ইহা ঠিক যেন, বালক-বালিকাগণের চোখে কাপড় বাধিয়া “কানামাছি” খেলার মত 1 যদিও তিনি স্বতঃসিদ্ধ, তথাপি প্রাগুক্ত কারণে প্রতি স্থত্রের শিরোদেশে ভিততিম্বরূপ শ্রুতির প্রমাণ উদ্ধৃত হইয়াছে। ৬০। উপরের আলোচন! হইতে আমরা বুঝিয়াছি যে, মায়া ভগবানের" সঙ্বল্লাত্মিকা-স্বকীয়া ( গীঃ ৭।১৪) শক্তি। সে কারণ, ভগবান্‌ যেমন অনির্ব্বাচ্য,- মায়াও সেইরূপ । ভগবান্‌ যেমন সর্বশক্তিমান্‌ মায়াও সেইরূপ সর্ধশক্তিময়ী । ভগবান্‌ যেমন অথটন ঘটাইতে পটু, মায়াও সেইরূপ অঘটন-ঘটন-পটায়পী । মায়া মিথ্যা কিছু নয়। সত্য স্বরূপ ভগবানের শক্তি বলিয়া, ইহা মিথ্যা হইতে পারে না। তবে ভগবানের বিধানানুসারে, উচ্চতম স্তরের সাধকের বা সর্ধতোভাবে ভগবানের শরণ গ্রহণকারীর (গীঃ ৭1১৪) নিকট, মায়ার প্রভাব বা গতি অবরুদ্ধ। সাধারণ স্তরের মানবের উপর, ভগবানেরই বিধানান্ুপারে মায়া ভগবপ্রদত্ত আবরিকা ও বিক্ষেপিকা শক্তি প্রসার করিয়! জগদ্ব্যাপার সম্পাদন করিয়া থাকেন । ভগবানের শরণ-গ্রহনই মায়ার প্রভাব হইতে মুক্তিলাভের উপায়" ( গীঃ ৭১৪ )। ৬১। উপরে উদ্ধৃত ভাগবতের ১১৩৩৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ভাগবতের ১১২২৯ শ্লোক দুটি একত্রে পর্যালোচনা করিলে স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায় যে, জগতে সর্বত্র, সর্ধবস্তুতে ব্র্ধ বা ভগবদর্শনই প্রকৃত দর্শন । অন্ত' প্রকার দর্শন, যথা মানুষ, গরু, অশ্ব, বৃক্ষলতা, পর্বত, নদী,.সরোবর, সাগর প্রভৃতি দর্শন, যাহারা সর্বদা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়, তাহা ভ্রান্তদর্শন ৷ এমন কি ইন্জিয় দ্বারে, রপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ শব প্রভৃতির পৃথক্‌ পৃথক্‌ উপভোগ, মামাদের আনন্দের কারণ এবং প্রতিদিনের পৃথগন্তভৃতির বিষয় হইলেও, উহাদের তত্তৎ প্রকারে দর্শন ও উপভোগ ভ্রান্তি বশতঃ হইয়া বাকে। ভাগবত বলিতেছেন :__ | > খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ জ্ঞানমেকং পরাচীনৈরিক্ডিৈ ব্রহ্ম নিগুম্‌ অবভাত্যর্থরূপেণ ভ্রান্ত শব্দাদিধর্ম্মণা ॥ ৩/৩২।২৩ একমাত্র অয় জ্ঞানই নিগুণ রন্ধ। উহাই বহির্ু্ী ইন্দিয় দ্বারা ভ্রান্ত. বশতঃ শব্দাদি ধর্মাবিশিষ্ট বিষয়রূপে প্রতিভাত হয়। ৩৩২২৩ এই ভ্রান্তিও ভগবানের সংকল্পবশতঃ জীবে বর্তমান -শ্রীচ্ভী বলিতেছেন :__ যা দেবী সৰ্ব্বভুতেষু ্রান্তিরপেণ সংস্থিতা। এই দেবী__মহাশক্তি, মহামায়া । বলা বাহুল্য যে, শ্রীচতীই ইহাকে “বিষণুমায়া” নামে অভিহিত করিয়াছেন । ভগবামের ইচ্ছান্ুসারে তিনি মানবদেহধারী জীবগণের ভ্রান্তি বিধান করেন। কেন করেন প্রশ্ন হইলে, উত্তরে বলিতে হয়-ক্রীড়ায় আনন্দ বৃদ্ধির জন্য । ইহার প্রত্যক্ষ দৃ্টাস্ত-_বালক- বালিকাগণের “কানামাছি” খেলার উপরেই দেওয়া হইয়াছে । মানব দেহ্ধারী জীব ত ভগবানের জগতক্রীড়ার সঙ্গী। খেলার বৈচিত্র্য সম্পাদম, খেলার- আনন্দের উৎকর্ষ সাধন ও অধিকতর আনন্দের উপভোগের জন্য মায়ার আবরণ ও তাহার দ্বার! স্বরূপদর্শন আবৃত করিয়া ভ্রান্ত দর্শন বিধান । এই ভ্রান্ত দর্শন সুষ্ঠু সম্পাদনের জন্য মায়ার বিক্ষেপিকা শক্তি সাহচর্ধে একই অদ্ধয় পরম বস্ত আপনাকে বহুভাবে অভিব্যক্ত . করিয়া, বহুভাবে দর্শনের স্থযোগ প্রদান করিয়াছেন । অতএব বুঝা গেল যে, মায়ায় এই উভয় শক্তি, ভগবান্‌ কর্তৃক বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রদত্ত। লেই উদ্দেশ্য হইতেছে, (ক) বহু হইবার, সঙ্কল্প সাধন, (খ) বৈচিত্র্য বিহীন বহু হইলে, আনন্দামুভূতির বৈচিত্র থাকে না, এজন্য বৈচিত্র বিধান, (গ) মানবদেহ্ধারী জীবগণকে এই বৈচিত্রাময় আনন্দের ভিতর দিয়া ক্রমশঃ পরম নিঃশ্রেয়মের পথে অগ্রসরণে সাহায্য দান এবং (ঘ) পরিণতিতে নিত্যধামে নিজের অভয় পাদপদ্মে শাশ্বত আশ্রয় দান। ইহাই উপরে ৩২ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত তাগবতের ১০৮৭২ শ্লোকের অভিপ্রায় । ? বু দু-এক কথা উপরে বলা হইয়াছে বটে, বিশেষভাবে কিছু বলা হয় নাই। বিশেষভাবে আলোচনায় অগ্রসর হইবার পূর্বে মুখবন্ধন্বরূপ কিছ | 1১৬ শ্লোকে বলিতেছেন £- ১২৭- বলা প্রয়োজন মনে করি। ভাগবত ১১২৪ অণুরুহৎ কৃশঃ স্থুলো যো'যো ভাবঃ প্রসিদ্ধযতি। সর্ধবোহ্যভয় সংযুক্ত প্রকৃত্যা পুরুষে চ! ১১/২৪।১৬. ১২৮ ব্ৰহ্মন্তত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত সক্ম, বৃহৎ, কৃশ, স্থুল, প্রভৃতি যে যে পদার্থ জগতে আছে, প্রকৃতি ও পুরুষ সে সকলেতে সংযুক্ত । ১১/২৪।১৬ ইহার বস্তগত নিদর্শন আমরা আমাদের চতুর্দিকে দেখিতে পাই। আধুনিকতম আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণের মতে প্রত্যেক জাগতিক বস্তুর পরমাণু একই প্রকার প্রোটন ও ইলেকট্রন সহযোগে গঠিত। কেন্দ্র স্থানীয় প্রোটনকে ঘিরিয়া, এক বা একাধিক ইলেকট্রনের নর্তনে বিভিন্ন বস্তু অভিব্যক্ত হয়। ইহাদের মধ্যে প্রোটন পুরুষধণ্মী ও ইলেকট্রন প্রবৃতিধন্মী বলিয়া কথিত হইয়া থাকে। তড়িতের বিশ্লেষণে, যোগাত্মক ও খণাত্মক তড়িতের নিদর্শন পাওয়া যায়। বলা বাহুল্য যে, যোগাত্মক (4) তড়িৎ পুরুষ ধন্মী ও খণাত্মক ( _ ) তড়িৎ প্রকৃতি ধর্মী। উভয়ে উভয়ের বিবর্ধনের ও মিলনে সাম্যভাব প্রাপ্তির কারণ হইয়া থাকে-_ষেমন স্ত্ী-পুরুষের সহযোগে দৃষ্ট হইয়া থাকে। আমাদের শরীরে দক্ষিণাঙ্গ পুরুষ ও বামাঙ্গ প্রকৃতি ধন্মী কথিত হইয়া থাকে । আমাদের দেহের মেরুদণ্ডের ভিতরে অবস্থিত সুন্মম নালিকার ভিতর দিয়া তিনটি নাড়ী__মুলাধার হইতে উদ্ধদিকে প্রস্থত। ইহাদের মধ্যে ইড়া__দক্ষিণদিকে ও পিঙ্গলা__বামদিকে ৷ প্রথমটিকে পুরুষ স্থানীয় ও শেষেরটিকে প্রকৃতি স্থানীয়া বলা হইয়া থাকে । শ্রুতির “ঝতঞ্চ সত্যঞ্চ*-***” মন্ত্রা্সারে হৃষ্টির প্রথম অভিব্যক্তি-__সত্য ও খত স্থিতি ও গতি-_উভয়ের মধ্যে পুরুষরূপী-_সত্য বা! স্থিতি-_ভিত্তি ; এবং তাহার বক্ষে প্রকৃতিরপী খতের খেলা__নিশ্চল সমুদ্রের বুকে-_তরঙ্গের খেলার ন্যায়। শাস্তে ইহাই মহাকাল-মহাকালী, রাম-সীতা, কৃষ্ণ-রাধা প্রভৃতি । (গায়ত্রী রহস্ত পৃষ্ঠা ৫২ হইতে ৫৯) প্রশ্নোপনিষদনুসারে সৃষ্টিকর্তা প্রজাপতি তপস্তা করিয়া ( অর্থাৎ জ্ঞানপূর্ধিবকা আলোচনা করিয়া) মিথুন সৃষ্টি করিলেন__উহাদের নাম প্রাণ ও রয়ি_-আদিত্য প্রাণ, চন্দ্রা রয়ি। প্রথমটি পুরুষধর্্ী ও পরেরটি প্রকৃতিধন্্মী। প্রত্যক্ষে আমরা! দেখিতে পাই যে, আমের আটি, কাঠাল, জাম, লিচু, তেঁতুল ও অন্যান্য নানা ফলের বীচিতে দুটি অংশ আছে। অন্কুরোৎপত্তির সময় উভয়ে অঙ্কুরকে রক্ষা করে। উহাদের মধ এক অংশকে পুরুষ বলিলে, অপর অংশটিকে প্রকৃতি বলিতে হ্য় ৷ ৬৩। এরূপ অনেক নিদর্শন দেওয়| যাইতে পারে, প্রয়োজন নাই। উপরের দৃষ্টান্ত কয়টি হইতে সিদ্ধান্ত হয় যে, হু্টতে প্রত্যেক বন্ততে প্রকৃতি ও পুরুষ অভিন্নভাবে জড়িত। ইহা হইতে অনুসিদ্ধাপ্ত আপনিই হইয়া পড়ে যে, > খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১২৯ ৃল্াপ্রন্কৃতি জড়া, অচেতন, নহে। তাহার সহিত চৈতন্তর্বপী পুরুষ অভিন্নভাবে জড়িত। এই জন্যই ভগবান্‌ খলিয়াছেন “দ্বাবিমৌ পুরুষে লোকে ক্ষরশ্চাক্ষর এব চ।১, গীঃ ১৫1১৬ এই সংসারে ক্ষর পুরুষ ও অক্ষর পুরুষ বর্তমান । গীঃ ১৫1১৬ পুরুষ পদের সংজ্ঞা হইতে বুঝা যায় যে, যিনি পুরে শয়ন বা আঁধষান করেন। পু যে প্রকৃতি নিশ্মিত, তাহাতে সন্দেহ নাই। ভগবান্‌ গীতায় ৮1৪ প্লোকে বলিয়াছেন যে, অধিভূতই “ক্ষর” ভাব, একারণ ভূতের সহিতই ক্ষরভাব সংজড়িত। ভূত প্রক্কৃতি হইতেই উৎপন্ন, অতএব ক্ষরভাব প্রকৃতিরই। উহা ভাব পদার্থ বলিয়া পুরুষরূপী পরম-ভাব পদার্থের শক্তি উহাতে অনুস্থযত আছে। এই ক্ষরভাব- প্রকৃতিগত হইলেও, ইহাকে পুরুষ বলিয়া বর্ণনা করিবার কারণ মনে হয় যে, পুরুষই ইহাকে ‘ভাব'রূপে বর্তমান রাখিবার কারণ। আরও অভাবাত্মক “অ” ক্ষরের সহিত যুক্ত হইয়া ‘অক্ষর’ পদ রচনা করিলেও ‘অক্ষর? একেবারে-__ক্ষরের সহিত সম্বন্ধ রহিত নহে। নিষেধযূলক সম্বন্ধ উভয়ের মধ্যে বিদ্যমান । ৬। স্থষ্টি সম্বন্ধে ভাগবত বলিতেছেন £_ ভগবানেক আসেদমগ্র আঁত্মাত্মনাং বিভূঃ । আত্তেচ্ছান্ুগতাবাত্মা নানামত্যুপলক্ষণঃ ॥ ৩৫২৩ স বা এষ তদা ভ্রষ্টা নাপশ্যন্শ্টমেকরাট, | মেনে ইসন্তমিবাত্মানং সুপ্তশক্তিরসুপ্তদৃক্‌ ৷ ৩1৫২৪ সা বা এতন্ত সংদ্ৰুঃ শক্তিঃ সদসদাত্মিকা। মায়া নাম মহাভাগ যয়েদং নির্ন্মমে বিভুঃ | ৩৫1২৫ কালবৃত্তাতু মায়ায়াং গুণময্যামধোক্ষজঃ। পুরুষেণাত্মভুতেন বীর্যমত্ত বীর্ধ্যবান্‌ ॥ ৩ ৫1২৬ জীবগণের আত্মা স্বরূপ, সকলের স্বামী সেই ভগবান্‌, যিনি সুষ্টিকালে নানা বুদ্ধিতে উপলক্ষিত হয়েন, তাঁহার আত্মমায়া আপনাতে লীন হইলে, সৃষ্টির পূর্বে এই বিশ্ব একমাত্র ভগবৎ স্বরূপে ছিল অর্থাৎ তৎকালে ত্ষ্টা দৃগ্ঠ কিছুই ছিল না। ৩1৫২৩ | সে সময়ে একমাত্র তিনিই প্রকাশ পাইয়াছিলেন। নট দুষ্টা হইলেও দৃশ্যের 'অভাবহেতু, তাহার দ্রষ্ট ত্ব সিদ্ধ ন! হওয়ায়, আপনাকে অভাবগ্রস্তের ন্যায় =~ রঙ রন্স্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত অর্থাৎ যেন খালি খালি মনে করিয়াছিলেন । কিন্তু তৎকালে তাহার চিত্শক্তি দেদীপ্যমান ছিল। ৩৫২৪ দৃষ্ট স্বক্নপ পরম পুরুষের দুষ্ট দৃষ্ান্ুপন্ধানরূপা-শক্তি__কাধ্য ও কারণ উভয্ন স্বরূপ ইহার নাম মায়া ৷ ভগবান্‌ এই মায়ার সাহচর্ধ্যে এই প্রত্যক্ষ পরিদৃশ্ীমান, বিশ্ব নিৰ্ম্মাণ করেন। ৩1৫২৫ বীর্ষবান্‌ (চিদ্ঘন ) অধোক্ষজ ( ইন্দ্রিয় জ্ঞানের অতীত ) ভগবান্‌, নিজ চেষ্টা্প কালশক্তি-উদ্বোধনে গুণক্ষোভযুক্ত মায়াতে, আপনার আত্মভূত পুরুষের দ্বার! বীর্ঘ্য আধান করিলেন, অর্থাৎ চিদাভাস অর্পণ করিলেন । ৩৷৫৷২৬ মায়া কারণ__কার্ধ্যর্ূপাঁ ভাগবতী শক্তি। চৈতন্যময়ের শক্তি বলিয়া তিনি জড়া নহেন । চৈতন্য তাহাতে অনু্থযত ৷ শক্তিমান ভগবানের ন্যায় তিনি দেশ- কাল দ্বারা অপরিচ্ছিন্ন। এজন্য “মহৎ” এবং শক্তি__শক্তিমান হইতে অভেদ বলিয়া, ভগবান্‌ যেমন ব্রহ্মনাে কথিত হন, সেইরূপ তিনিও বর্ষ” । এই কারণে গীতায় ১৪1৩ গ্লোকে তাহাকে “মহদত্রক্ষ” আখ্যায় আখ্যায়িত করা হইয়াছে। তিনি যূল! প্রকৃতি _সমষ্টি স্ত্রীতত স্বরূপা। স্বীলোকেই গর্ভধারণ করেন বটে, কিন্তু সব সময় করেন ন! । বিশেষ সময গভধারণের যোগ্যা হইয়া থাকেন, ইহা সকলেই জানেন । যূল! প্রকূতি ও ভগবানের কালশক্তি দ্বারা সংক্ষোভিত হইলেই গর্ভধারণের অবস্থা, প্রাপ্ত হন। ভাগবত বলিতেছেন যে, ভগবান্‌ “আত্মভূতেন পুরুষেণ” গর্ভাধান করিলেন । নিজে করিলেন না। শ্রীধরস্বামী “আত্মভূতেন” পদের অর্থ করলেন, “প্রকৃত্যধিষ্ঠাত্রী রপেণ”_ প্রকৃতির অধিষ্টাতা পুরুষরূপে ৷ ভগবান্‌ ও তাহার আত্মভূত পুরুষ অভিন্ন_ইহাতে সন্দেহ নাই ৷ তবে ভগবান্‌ নিজে করিলেন ন! কেন? ইহার উত্তর মনে হয় যে, ভাগবতকার বলিতে চাহেন যে, ভগবান্‌ গীতার ১৫ অধ্যায় অনুসারে পুরুষোত্তম। সকলের সহিত তাহার তুল্য সম্বন্ধ । সর্ধকর্তা হইলেও অকর্তা। গীতার: ১৪।৩ শ্লোকে এই অতি হুন্ম্ম বিভেদটুকু রাখেন নাই, তাই স্পষ্ট বলিলেন, “তন্সিন্‌ গং দধাম্যহম্” ৷ গীতার শ্লোক নীচে উদ্ধৃত হইল । মম যোনি মহদ্ত্ৰহ্ম তস্মিন্‌ গর্ভং দধাম্যহম্‌ ৷ সম্তবঃ সর্ব্রভূতানাং ততো ভবতি ভারত | সৰ্ব্ব যোনিষু কৌন্তেয় ! মূর্তয়ঃ সম্ভবস্তি যাহ তাসাং ব্ৰহ্ম মহদ্‌ যোনিরহং বীজপ্রদঃ পিতা ॥ গী ১৪৪ [ এই শ্লোক ছুটি রহস্য অর্থে পরিপূর্ণ। সেই রসন্ত উদ্থাটনের চাবিকাঠি গী ১৪৩ ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৩১ প্রীমৎ বিজয়ক্কষ্ক চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের “উপনিষদ্‌ রহস্ত বা গীতার যৌগিক ব্যাখ্যা” নায়ক পুস্তক হইতে পাইয়াছি। একারণ তাহাকে কৃতজ্ঞতা নিবেদন করিতেছি ] উদ্ধত ১৪৩ গ্লোকে “অহং” মূল “অহং”_ গীতার পুকুষোত্ম, মহানারায়ণোপনিষদের-__আদি-নারায়ণ, ভাগবতের- শরীক, তাপনীশ্রতির__ সচ্চিদানন্দ-ভগবান । : ৬৫ মহদ্ত্রন্ধ সম্বন্ধে অতি সংক্ষেপে আলোচনা উপরে উদ্ধৃত ভাগবতের ৩৫২৬ প্লোকের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে করা হইয়াছে । এখানে তাহারই কিছু বিস্তার করিয়া বুঝিবার চেষ্টা করিতেছি। মহদ্ব্র্_মহৎ ও ব্রহ্ম এই উভয় শব্দের মিলনে উৎপন্ন । বলা বাহুল্য যে, এ মহৎ্"_প্ররূতি হইতে অভিবাক্ মৃহত্বত্ব নহে । ইহা যুলা প্রকৃতি । ইহার সহিত অক্ষর বা ব্রহ্ম ভিন্নভাবে মিলিত হইয়া ক্ষরকে : ভাব পদার্থরূপে ধারণ করিয়া থাকেন, ইহা আগে বলা হইয়াছে। স্থির পূর্ব পুরুষোত্তম ভগবান্‌ সমুদায় আপনাতে তাদাত্মাভাবে লীন করিয়া, নিরীহ, নিক্রিয়- ভাবে অবস্থান করেন; ইহাকেই যোগনিব্রায় অবস্থিতি বলা হয়। তখন ক্ষর-- অক্ষর-_অন্্য কথায় মহৎ ও ব্রহ্ম ( গীতা ৮৪ ), উভয়ে মিলিত হইয়া পরস্পরের স্বাতন্ত্য হারাইয়া তাদাআ্মাভাবে পুরুষোত্তম ভগবানে লীন থাকেন। তারপর যোগনিব্রা ভঙ্গে, উন্মেষে (মহানারায়ণ উপনিষদ উদ্ধৃত অংশ ), একাত্মভাবে মিলিত, মহৎ ও ব্ৰহ্ম উদ্বুদ্ধ হইয়া পরস্পরের সাতন্ত্য অনুভব করিতে উপযোগী-হন» কিন্তু তখনও অভিন্নভাবে মিলনের ব্যতিক্রম নাই । মহত ব্রহ্ধে উদ্বুদ্ধ হইবার পূর্বে নিজের নিজের স্বাতন্ত্য হারাইয়া তাদাত্মাভাবে পুরুষোত্যে অবস্থানের নাম “ভাববজ্জিত ভাবোরূপে” অবস্থান । ( শাস্তিগীত! ৮৩৫ )। ইহা বিস্তারিতভাবে মদালোচিত শান্তিগীতা গ্রন্থে করা৷ হইয়াছে। এই ভাববজ্জিত ভাবরূপে__ অবস্থানের দৃষ্টান্ত আমরা দেখিতে পাই, (ক) যোগাত্মক-বণাত্মক তড়িতের মিলনে সাম্যভাব প্রান্তিতে, খে) সমুদ্রের পৃষ্ঠে তালপ্রমাণ উচ্চ তরঙ্গের সহিত উহার উক্ত প্রমাণ নিগ্নতার মিলনে সাম্যভাব প্রাপ্তিতে, (গ) ক্ষর ও অক্ষর উভয়ের ক্ষর-_ক্ষরাতীত পরমপুরুষের অধিষ্টানে স্বাতন্তয হারাইয়া বর্তমানতায়, (ঘ) সত্বরজ:-তমোগুণের সাম্যাবস্থায় অব্যাকৃত প্রকৃতির পরিচয়ে, (উ) শক্তিমানে শক্তির তাদাত্যভাবে অবস্থিতিতে । ৬৬। লক্ষ্য করিতে হইবে যে, মহৎ ও ব্রহ্ম উভয়ের মধ্যে কাম পিয়ার বা অপ্রাধান্ত নাই, ইহা বুঝাইবার জন্য, ১৪৩ লোকে “মহ টি পরবর্তী ১৪1৪ গ্লোকে গীতা “ত্রহ্ম মহৎ” বালয়াছেন। আরও 15 যে, উভয়ের মধ্যে লিঙ্গ ভেদও নাই। কারণ গর্ভ ত স্ত্ীলোকেই ধারণ করে, কিন্ত ১৩২ ্রহ্মসত্র ও শ্রীমদূভাগবত ১৪৩ শ্লোকে ভগবান্‌ “তত্তাং” ন! বলিয়া “তস্মিন্” ব্যবহার করিয়াছেন, ইহাতে ভগবান্‌ বুঝাইলেন যে, পরমতবে লিঙ্গভেদ নাই। সে কারণ পরমতত্বের শক্তিবূপিণী মায়ারও লিঙ্গভেদ নাই । এই একই কারণে গীতায় ১৫।১৬ প্লোকে “ক্ষর পুরুষ” ও “অক্ষর পুরুষ” ব্যবহৃত হইয়াছে । ভগবানকে পুরুষোত্তম নামে পুংলিঙ্গ রূপে (ব্যাকরণানুপারে ) ব্যবহার করার জন্য, তাহার আত্মভূত অংশ ক্ষর ও অক্ষরকে যথাক্রমে ক্ষর পুরুষ ও অক্ষর পুরুষ আখ্যায় আখ্যায়িত করা হইয়াছে। এই পুরুষোত্তমই “দর্বস্তেশানঃ সর্বাধিপতি:”-_সকলের নিয়ন্তা ও প্রভু । ৬৭ পগর্জং দধামি”__চিদাভাস অর্পণ করি। পুকুষোত্তম ত চিতের শাশ্বত ভাগার। সেই ভাণ্ডার হইতে চিদংশ মহত্ত্রক্ষে নিক্ষেপ করিলেন । ভগবানের এই বর্ণনা, প্রপঞ্চ জগতে মাতার যোনিতে পিতার বীর্ধ্য নিক্ষেপের দৃষ্টাস্তে করিয়াছেন । এরূপ ব্যবহারের কয়েকটি উদ্দেশ্য আছে £-_-(ক) সর্বপাঁধারণের বৌধ সৌকর্য্য বিধান, (খ) অজ্ঞ বহি্দ্ধুখ মানবদেহধারী জীবকে অন্তসুবীন করিবার অভিপ্রায়ে, (গ) শাস্ত্র বিধি না মানিয়া সত্রীপুকুষের অপংঘতভাবে যৌন সংসর্গের সঙ্কোচ সাধন । এ সম্বন্ধে ব্যাখ্যা পরে কর! যাইবে । ১৭) গর্ভ পদের অন্তনিহিভ রহস্য £__ ৬৮। গীতার ১৪।৩ গ্লোকে ব্যবহৃত “গর্ভ” পদের ভিতর অতি গুঢ় রহস্ত নিহিত আছে। ‘উপরে কথিত শ্রীমৎ বিজয়কুষ্ণ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় ইহার উদ্ঘাটন করিয়াছেন । তাহারই পদানুসরণে আমার বক্তব্য নিবেদন করিতেছি । “গর্ভ? শবে তিনটি অক্ষর আছে গ, র, ভ। .এই তিনটি অক্ষর “ভর্গ” শব্দও আছে-_বিপরীতক্রমে সাজান-_-ভ, র, গ। মৎ, প্রণীত “গায়ত্রী রহস্ত” পুস্তকের ১৫৩ পৃঃ ভর্গ/ সম্বন্ধে আলোচনায় যোগী যাজ্জবক্যের নিমোদ্ধত প্লোকে ভির্গ শব্দের অর্থ দেওয়া হইয়াছে। শ্লোকটি এই :_ ভেতি ভাসয়তে লোকান. রেতি রঞ্জয়তি প্রঙ্গাঃ ৷ গ ইত্যাগচ্ছত্যজত্রং ভ-র-গা-ৎ ভর্গ উচ্যতে ॥ রগ শব্দের ভ অক্ষর পরিদৃশ্তমান বিশ্বপ্রপঞ্ককে উদ্ভাসন করণ হেতু, 'র? অক্ষর বিশ্বের ভূতজাতকে রঞরন বা আনন্দ দান হেতু এবং “গ’ ইহলোক- পরলোকে অজ গতাগতি সংগঠনের হেতু বলিয়া এই তিন অক্ষরাত্মক 'ভর্গ- শব্দ_স্বয়স্প্রকাশ পরব্রদ্ধকে নির্দেশ করে। “গর্ত শবেও উক্ত তিনটি অক্ষর। ইহার আদিতে 'গ’ অক্ষর উহার অর্থ ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৩৩ [চ্ছতি অর্থাৎ ভিতরে প্রবেশ করে_ চিদাভাস মহত ব্রহ্ধে সাক্ষাৎ্ভাবে সম্পক্ত হয়। “র” অক্ষর মধ্যে আছে-_উহার অর্থ মহদ্তরহ্ বা প্রকৃতিকে রঞ্জিত করে__ জগজ্জজননীরূপে মহামহীয়সী যৃত্তিতে প্রকৃতিকে লাবণ্যবতী ও পরমপূজ্যা করিয়া প্রকাশ করে-__এক কথায় মায়া-__মহামায়ারূপে দেব-নর সকলের পরম পূজনীয়! বরেণ্য! রূপে প্রকাশিতা হন । শেষ অক্ষর “ভ”-_উহার অর্থ উদ্‌ভাসন-_রঞ্চনের সঙ্গে সঙ্গে বৈচিত্রাপূর্ণ, অচিস্তযরচনারূপ বিশ্বরূপে উদ্ভাসিত হন, অর্থাৎ পুরুষোত্তমের চিদাভাস্‌, তাহ।গ স্বরূপ হইতে অভিন্ন হওয়ায়, নিত্য-_সত্য-_অব্যয়_ শাশ্বত । বিশ্ব সৃষ্টিতে ইহার কোনও প্রকার স্বন্নপচ্যুতি হয় না। প্রকৃতিতে অনুস্থত হইয়া, প্রপঞ্চ জগৎ, সমুদায় স্থাবর জঙ্গমাত্মক বৈচিত্রের সহিত উদ্ভাসিত করিয়া, নিজের অব্যয় স্বরূপে “ভর্গ’ রূপে, প্রতি বিশেষ বিশে ব্রহ্মাণ্ডের কেন্দ্রীভূত সবিতাকে অনুপ্রাণিত করিয়। তৎ কিরণ পথে স্থাবর_-জঙ্গমাত্মক অভিব্যক্ত সকলের সন্তীবন, পোষণ, সংবর্ধন, ধারণ, পরিণতি প্রভৃতি সংসাধন করেন । ইনিই গায়ত্রী মন্ত্রোক্ত পরমাত্মরূপী “তর্গ” । আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের কেক্ুস্থানীয় স্বর্ধো_ সবিতি-মগুল-মধ্যবর্তী নারায়ণরূপে অবস্থান করিয়া, আমাদের-_-জগৎকে সমষ্টিভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালন করিতেছেন এবং ব্যষ্টিভাবে আমাদের-- প্রত্যেকের বুদ্ধিবৃত্তির প্রেরণ! প্রদান করিয়া জগদ্‌ ব্যাপারে নিয়োজিত করিতেছেন। উপরের সংক্ষেপ আলোচনা হইতে আমরা বুঝিতে পারিলাম যে, অন্তমুখে যাহা “ভর্গ” বহিমুখে তাহাই স্ষ্ট জগৎ। ফলে ভর্গ বা (“্যোতিযাং জ্যোতিঃ” ) ভর্গেরই (বিষয়ের ) উপভোগ করিরা থাকেন। ইহাতে তাহার আত্মারামন্ব অনুপ্ন রহিয়া গেল। “গায়ত্রী রহস্ত” পুস্তকেও আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি। বর্তমান আলোচনায় ৬১ অনুচ্ছেদে উদ্ধত ভাগবতের ৩৩২২৩ শ্লোক কৰি স্থললিত ভাষায়_এই একই তন প্রকাশ করিয়াছেন। ইহা হইতে স্বতঃই সিদ্ধান্ত আসিয়া পড়ে থে, সর্বত্র ব্রহ্ম _দর্শনই প্রকৃত দর্শন । ্র্ধ হইতে পৃথক্‌ কিছু দর্শনই ভ্রম দর্শন । ৬৯। নিজে অবিকৃত থাকিয়া কাৰ্য্য সাধনের দৃষ্টান্ত আমরা প্রত্যক্ষ অগতেও দেখিতে পাই । আমরা জানি যে, স্বর্ন কোনও কোনও আয়ু্কেদীয় ওষধের অপরিহার্য উপাদান । অন্তান্ত উপাদানের সহিত বিহ বর্ণ পাকে চড়াইয়। গুষধ প্রস্তুত করিবার ব্যবস্থা আমুর্কেদ শাস্ত্রে আছে। ওুষধ প্রস্তুত কি ভা দেখা যায় যে, বর্ম অবিরুতভাবেই আছে__অথচ ওষধে প্রয়োজনীয় গুণ প্রদান করিয়াছে । উদ্ধৃত ১৪৩ ল্লোকের রহস্তার্থ বিস্তারিতভাবে দেওয়া হইল । ১৩৪ ্র্মস্ত্র ও শ্রাযদ্ভাগবত উক্ত শ্লোকের বাংলা সাধারণ সরল অর্থ হইতেছে :--ভগবান্‌ বলিলেন, হে অঙ্জুন। আমার গতাধান স্থান মহদ্ত্ক্। স্থষ্টির আদিতে আমি উহাতে চিদাভাস অর্পণ করি, তাহা হইতেই সর্ধভূতের উৎপত্তি হইয়া থাকে । গীঃ ১৪1৩ ১৮) শুধু সবষ্টিকালে নহে, স্থিভিকালেও ভগবান্‌ “বীভগ্রাদ পিভা”। ৭০। গীতায়, ১৪।৪ শ্লোকে তগবান্‌ বলিতেছেন যে, সুষ্টিকালেই যে কেবল আমা কর্তৃক অধিষ্টিত প্রকৃতি-পুরুষ দ্বারা ভূত সকলের উদ্ভব হয়, এরূপ নহে। স্থষ্টির পরে, স্থিতিকালেও সকল যোনিতে অহরহঃ যে সকল স্থাবর-জঙঈ্গমাত্মক মুক্তি সকলের উদ্ভব হইতেছে, তাহাদের মাতৃস্থানীয়৷ মহদ্ত্রক্ম প্রকৃতি এবং আমিই সকলের বীজপ্রদ পিতা । প্রকৃতি যে সকলের মাতৃস্থানীয়া, ইহা সহজেই বোধগম্য হয় । প্রত্যেকের দেহের অগুপরমাণু, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রকৃতির উপাদানে গঠিত_এ কারণ প্রকৃতিকে মাতৃস্থানীয়া বলা হইয়াছে। কিন্তু “অহংবীজপ্রদঃ পিতা”__ইহার মধ্যে গুঢ়রহস্ত প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে । পিতা-মাতার যৌন সম্মিলনে সন্তানের উৎপত্তি হইয়া থাকে বটে, কিন্তু প্রতি যৌন সম্মিলনে সন্তানোৎপত্তি হয়না । শুক্রশোনিতে সম্মিলন যদি সন্তানোৎ্পন্তির একমাত্র কারণ হইত, তাহা হইলে, প্রতি সঙ্গমে সম্তানোৎ্পত্তি না হইবার কোনও কারণ থাকা সম্ভব হইত না। কিন্ত তাহা না হওয়ার অন্য কারণ আছে, স্বীকার করিতে হয়। ভগবান্‌ ১৪৷৪ গ্লোকে সেই কারণ নির্দেশে বলিলেন যে, তিনিই বীজপ্রদ পিতা___অর্থাৎ প্রকৃতির গর্ভে_-ভগবৎ প্রদত্ত চিদাভাসের* কণা, যখন পিতার বীর্ধোর সহিত সম্প্ত হইয়া, মাতার গর্ভকোষে প্রবেশ করে, তখনই সন্তানের জন্ম হয়। এই সম্পক্ত হওয়া ভগবানের ইচ্ছায় সংঘটিত হয়। ভগবানের এই ইচ্ছা উদ্বোধনের জন্য শাপ বিধিমত অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়ত! শান্তেই বিধিবদ্ধ আছে। তাহা না যানিয়া প্রবৃত্তিমত অসংঘত সঙ্গমে ধাতুক্ষয়__ আত্মঘাতী হওয়ার মাম্তর যাত্র। ইহার প্রতি লক্ষ্য করিয়া উপরে বলিয়াছি যে, যৌন সন্মিলনের দৃষ্টান্তে ভগবানের বর্ণনার একটি উদ্দেশ্য_“অসংযতভাবে যৌন মিলনের সংকোচ সাধনের জন্য”) +১। জগৎ হি সম্বন্ধে ব্ৰহ্মা, যিনি স্থষ্টিকর্তা বলিয়| পরিচিত, বলিতেছেন £ তন্তাপি দ্ৰষুগ্রীশন্ত কটস্থম্তাখিলাত্মনঃ | স্জ7ং স্থজামি স্ষ্টোইহমীক্ষয়ৈবাভিচো দিত ॥ ভাঃ ২ ৫1১৭ ৯১ জব টি সেই ভুগবানই অষ্টা, সর্বসাক্ষী, ঈশ্বর, সর্ববকালব্যাপী ও সকলের অন্তর্ধামী ! ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১৩৫ তিনিই আমাকে স্থন্ট করিয়াছেন, এই সমুদায়ও তাহার স্থষ্ট। আমি মাত্র তাহার কটাক্ষে প্রেরিত হইয়া, তাহারই ক্জ্য সকল স্ষ্ট করিয়া থাকি। ভাঃ ২৫১৭ । অতএব বুঝিতে পারিলাম যে, পরকর্তা ব্রহ্মা বা অপয়কর্তা পিত্রাদি প্রকৃত পক্ষে কর্তা নহেন। আসল কর্তা পুরুষোত্তম ভগবান্। তিনি তত্বতঃ অবর্তী হইয়াও সমুদায়ের কর্তা । এ সম্পর্কে ৭ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ভাগবতের ৭৯1১৯ শ্লোক দ্রষ্টব্য । ৭২। মায়ার সহিত ভগবানের খেলার বা দিব্য মায়া বিনোদের কথা বলা হইয়াছে । তিনি ত আত্মারাম, আত্মানন্দে বিভোর । তাঁহার মায়ার সাহত খেলার প্রয়োজন কি? ভাগবত বলিতেছেন £__ স্বম্থখমুপগতে ক্কচিদ বিহর্তূং প্রকৃতিমুপেরুধি যদ্ভব প্রবাহঃ ॥ ভা? ১৯1২৯ স্বামিজী বলিতেছেন :_স্বন্থখং স্ববূপভূতং পরমানন্দং উপগতে প্রাপ্তবত্যেব । ক্কচিৎ-_কদাচিৎ, বিহৰ্তং-ক্রীড়িতুম, প্ররুতিং উপেঘুধি_স্বীকুতবতি, ন তু হ্রূপ-তিরোধানেন জীববৎ পারতন্ত্যমিতি ॥ যিনি সর্বদাই নিজ স্বরূপ পরমানন্দে প্রতিষ্ঠিত আছেন, কদাচিৎ বিহার বাসনায় প্রকৃতি স্বীকার করেন, তখনই স্বষ্ট-প্রবাহ উদ্ভূত হয়। তাহাতে তাহার স্বরূপ বিচ্যুতি হয় না। ১/৯২৯। রাজা তাহার নিজের রাজধানীতে, নিজের আরামপ্রদ রাজপ্রাসাদে সর্বদাই অত্যুত্তম রাজভোগে অশেষ স্থখ উপভোগ করেন । কিন্তু মাঝে মাঝে বৈচিত্রোর জন্য, শীকার, জলবিহার, দেশত্রমণ, রাজ্য পরিদর্শন প্রভৃতি করিবার জন্য, প্রাসাদ হইতে বহির্গত হইয়া, প্রাসাদলভ্য বৈচিত্র্যহীনতা! পরিহার করিয়া থাকেন । সেই দৃষ্টান্ত আমরা ভগবানেও আরোপ করিয়া থাকি। হুত্রকার তাহাই করিয়া “লোকবত্তলীলাকৈবলাম্‌” স্তর ২1১৩৪ প্রণয়ন করিয়াছেন । পর ৭৩। উপরের আলোচনায় বলা হইয়াছে যে, ভগবান্‌ প্রকৃতিতে “চিদাভাস* অর্পন করিলেন । তিনি ত চিদ্ঘণ__চিৎ অর্পণ করিলেন, না বলিয়া চিদাভাস অর্পণ করিলেন বলা হইল কেন? বিশেষতঃ ভাগবতের-১ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ৩৫২৬ শ্লোকে “ৰীৰ্ষ্যমাধত্ত? ও গীতায়-১৪৷৩ শ্লোকে “গর্ভ, দধামি” বলা হইয়াছে__কোথাও চিদীভাসের উল্লেখ নাই। অথচ শ্রীধরস্বামী অর্থ ১৩৬, রহ্ননথত্র ও শ্রীঘদ্ভাগবত করিয়াছেন চিদাভাস। ইহার কারণ অনুসন্ধানে আমরা মুণ্ডক শ্রতির ২২৯ মন্ত্রে ব্রহ্ম নির্দেশে “তচ্ছ,ভ্রং জ্যোতিষাং জ্যোতি” বলিয়া তাহার পরিচয় দেওয়া হইয়াছে এবং উক্ত শ্রুতির ২২1১০ মঙ্ছে, বলিয়াছেন যে __ ন তত্র সুধ্যো ভাতি ন চন্দ্রতারকম্‌ নেম! বিছ্যুতো ভাস্তি কুতোহয়মগ্থিঃ | তমেব ভান্তমন্ুভাতি সর্ব্বং তন্তু ভাসা সর্বমিদং বিভাতি ॥ মুণ্ড ২২1১০ সূর্য্য, চন্দ্র, তারকা, বিদ্যুৎ, অগ্নি প্রভৃতি যে সকল পদার্থকে আমরা জ্যোতি্মান্‌ বলিয়া জানি, তাহারা ব্রদ্ধকে প্রকাশিত করে না। অন্যপক্ষে সেই “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ” হইতে প্ৰস্তত জ্যোতি: এই বিশ্ব প্রকাশিত করে। যুগ ২২1১০ । গীতায় ১৫1১২ গ্লোকে ভগবান্‌ বলিতেছেন যে, কুর্ঘ, চন্দ্র, অগ্নিতে যে তেজের সহিত জগৎ পরিচিত, সে তেজঃ তাহাদের নিজের নয়। আমার ভগবানের তেজেই তাহারা তেজন্মান। ইহা ত গেল সমষ্টি ভাবের কথা। ব্যষ্টিভাবে প্রত্যেক প্রাণীর দেহা্যস্তরে আমিই (ভগবানই ) বৈন্বানর রূপে বর্তমান থাকিয়া, তাহাদের প্রাণ-অপান বায়ুর পরিচালন ও তাহাদের চর্ব, চোষা, লেহ, পেয়-_-চতুব্বিধ আহার পরিপাক করিয়া, তাহাদের দেহ ধারণ ও পোষণ করিয়া থাকি । গীঃ ১৫।১৪। অতএব আমরা বুঝিলাম যে, সমুদায় জ্যোতির যূলে “জ্যোতিষাং জ্যোতি?’ রূপে ভগবান্‌ । জ্যোতির স্বভাব এই, উহা সর্ববদিকে বিকীর্ণ হয়। ইহার দৃষ্টান্ত আমরা প্রতিদিন প্রত্যক্ষ দেখিতে পাই। আমাদের ঘরে সাক্ষাৎ ভাবে হ্ঘ্যকিরণ ( রৌন্দ্রূপে ) প্রবেশ করিতে না পারিলেও, সর্ধোর বিকীর্ণ কিরণ “আভাস” রূপে গৃহের অভ্যন্তর আলোকিত করে। সেই দৃষ্টান্ত হইতে আমরা বুঝিতে পারি যে, “জ্যোতিষাং জ্যোতি: হইতে সর্বদদিকে প্রস্থত জ্যোতি: প্রবাহ “আভাস” রূপে সর্বত্র অনুক্যত হইয়া সকলকে উদ্ভাসিত, ক্রিয়াশীল, ব্যাপারবান্‌ করিয়া থাকে। প্রকৃতি সম্বন্ধেও তাই। “জ্যোতিষাং জ্যোতি? চিদ্ঘন বলিয়া, তাহা হইতে প্রহ্থত জ্যোতি: ই চিদাভাস বলিয়া বৰ্ণন! করা সঙ্গতই হইয়াছে। হইবে, তাহা বলা বাহুল্য । এই জ্যোতিঃ ব্যাপকভাবে সর্দিকে গ্রস্ত হইয়া সমুদায় চিন্ময় জ্যোতিঃতে আলোকিত করে । আমরা পূর্বের আলোচনায় বুঝিয়াছি যে, মহদ্রক্ষ ব| প্রককতি__দেশ কাল দ্বারা অপরিচ্ছিন্ন, একারণ ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১৩৭ সর্বব্যাপী ও সৰ্ব্বকালে বর্তমান। প্রকৃতপক্ষে দেশকাল ত প্রকৃতি হইতে জাত। একারণ উহ! প্রকৃতির ব্যাপকত্বের অন্তরায় জন করিতে পারে না বলিয়া প্রকৃতির উপাদান বিশ্বের সর্বত্র, সর্বকালে বর্তমান । সুতরাং উক্ত জ্যোতিঃ বা তাহার আভাস অন্তকথায় ভর্গ, অনন্ত দেশে, অনন্তকাল ব্যাপিয়া, কার্ধ্যণীল হইবার পক্ষে কোনও বাধা হইতে পারে না। প্রত্যক্ষতঃ আমরা দেখিতে পাই যে, জ্যোতিঃর গতি স্বভাবত: কেন্তস্থানীয় জ্যোতিষ্মান্‌ প্রদীপাদি হইতে বহিপ্দুখে আলোকের গতির বেগে (সেকেণ্ডে ১৮৬০০০ মাইল বেগে) অগ্রসর হইয়া থাকে । ইহা হইতে আমর! ধরিয়া লইতে পারি যে, 'জ্যোতিষাং জ্যোতি হইতে জ্যোতিঃ প্রবাহ বা ভর্গ উক্ত বেগে সর্ধদিকে প্রন্থত হইয়া থাকে। ৭৫। আমরা আরও প্রত্যক্ষ দেখিতে পাই যে, নদীগর্ভে জলগ্রবাহ অগ্রসর হইতে, হইতে, আপনি আপনাতে আবর্ত স্থষ্টি করিয়া থাকে । এ আবর্ত সষ্টিতে উক্ত প্রবাহের গতির কোনও অংশ ব্যয়িত হয় না। সেইরূপ “জ্যোতিষাং জ্যোতি, হইতে গ্হ্ত জ্যোতি: বা ভর্গ প্রবাহ অন্ত দেশে, অনন্ত কাল ধরিয়া আবর্ত স্থানীয় অনন্ত ব্রহ্ধাও সুজন করিতে করিতে অগ্রসর হইতে থাকে । আমাদের ব্রক্মাও উক্ত অসংখ্য ব্রহ্মাওগণের একটি_-উহা ভর্গ প্রবাহের একটি আবর্ত। জলাবর্তে যেমন মুখ্য আবর্তের সঙ্গে অসংখ্য বুদবুদও আত্মপ্রকাশ করে, সেইরূপ আমাদের ব্রহ্মাণ্ডেও মুখ্যাংশ সবিতৃ দেবের, সহিত, গ্রহ, উপগ্রহ, ছোট বড় উদ্ধা প্রভৃতি স্থ হইয়া আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। উহাদের সকলের স্বাভাবিক গতি অগ্রসরণে। কিন্তু ভগবানের জগৎ বিধারিণী- শক্তি কেন্দস্থানীয় সুর্যের সহিত উহাদের সকলের এবং উহাদের পরম্পরের : মধ্যে আকর্ধণী শক্তি বিধান করিয়া, উহাদের অগ্রগতি নিয়মিত করিয়াছেন । কেন্দস্থানীয় কূরধ্যমগুলে নারায়ণ অবস্থান করিয়া, এই নিয়ন্ত্রণ পরিচালনা করিতেছেন । মহানারায়ণোপনিষদের উদ্ধৃত অংশও ইহার প্রমাণ ৷ ১৯) নিখিল বিশ্ব চিন্মাত্ৰই । ৭৬। পূর্বে বলিয়াছি যে, ভর্গ প্রবাহ চিন্ময়! প্রবাহাকারে ও চিন্ময় এবং আবর্তীকারেও চিন্ময় । স্থতরাং ব্রক্াগ্ড সকল চিন্নয়। তেজোবিন্দু উপনিষৎ ইহ! স্পষ্ট বলিতেছেন £_ আকাশো ভূর্জলং বায়ুরয়িত্র নমা হরিঃ শিবঃ । যৎ কিঞ্চিষক্ন কিঞ্চিচ্চ সৰ্বং চিন্সয়মেবহি ॥ তেজোবিন্দু ২৷২৭ ১৩৮ ব্ৰক্মস্থুত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগ বত অখটুকরসং সর্ব্বং যদ্‌ যচ্চিন্মাত্রমেব হি। ভুতং ভব্যং ভবিষ্যচ্চ সৰ্বং চিন্মাত্রমেবহি ॥ তেঞ্জোবিন্দু ২২৮ দ্রবাং কালঞ্চ চিন্মাত্রং জ্ঞানং জ্ঞেয়ং চিদেবহি । জ্ঞাতা চিন্মাত্ররূপশ্চ সর্ববং চিন্ময়মেব হি ॥ 2 RS [শ্রুতির ভাষা অতি সরল বলিরা বাঙ্গালা অর্থ দিবার প্রয়োজন নাই ।] যদি পরিদৃশ্যমান যত কিছু, সমুদায় চিন্াত্র, তবে আমরা অন্য প্রকার দর্শন করি কেন? ইহার উত্তর ইহাই মায়ার খেলা । উপরে ৬১ অনুচ্ছেদের আলোচনায় আমরা বুঝিয়াছি যে, সমুদায়ে ্রহ্মদর্শনই প্রকৃত দর্শন, অন্য প্রকার দর্শন ভ্রমমাত্র, বিষ্ণুমায়া ছারা প্রকটিত ; এখানেও তাহাই পাইলাম । ণ৭। ভগবান্‌ বশিষ্ঠদেব যোগবাশিষ্ট রামায়ণে বলিতেছেন £_ চিদ্‌ ইহাস্তি চিন্মান্রমিদং চিন্ময়মেব চ। চিৎ তুং চিদহমেতে চ লোকাশ্চিদিতি সংগ্রহঃ ॥ যো. বাঃ, উপঃ ৫1২৬।১১ অতি সংক্ষেপে বলিতে হইলে, বলিতে হয়, জগতে একমাত্র চিতই আছেন । জগৎ চিন্মাত্র ও চিন্ময় । তুমি চিৎ আমি চিৎ, এই যে সব লোক, ইহারা সকলই চিন্ময় । যোঃ বাঃ উপশম !২৬৷১১। এরূপ বলিবার যুক্তি ও কারণ নির্দেশে বলিতেছেন £_ বোধাববুদ্ধং যদ্বস্ত বোধ এব তদুচ্যতে । নাবোধং বৃধ্যতে বোধে| বৈরূপ্যাৎ তেন নান্ততা ৷ যোঃ বাঃ নিঃ উঃ ২৫৷১২ বে বস্তু বোধ ব! অন্তুভূতি (00905010030699) দ্বারা উপলব্ধ হয়, তাহা বোধ নামেই অভিহিত হইয়া থাকে । কেন না যদি বোধ ও যাহা উপলব্ধ হয়, সেই জড় বস্তু পরস্পর অত্যন্ত ভিন্ন হইত, তাহা হইলে উহা বোধ দ্বারা উপলব্ধ হইতে পারিত না। যোঃ বাঃ নিঃ উঃ ২৫১২ জগৎ স্পন্দনাত্মক । একের স্পন্দন অপরে গ্রহণ করিতে পারিলে, তবে তাহাদের পরস্পর পরিচয় আদান প্রদান হইয়া থাকে। ইহাই উপলব্ধি বস্তুর “ভাতিত্ব” ইহা হইতেই প্রকটিত হইয়া থাকে এবং এই “ভাতিত্ব_ সচ্চিদানন্দময়ের চিদংশের ক্রিয়া হইতেই ক্ফুরিত হয়, ইহ! পূর্বে বলা হইয়াছে । ৭৮। উপরের আলোচনায় বলা হইয়াছে যে, মায়া__ভগবানের সংকল্লান্সিকাশ্রক্তি এবং ভগবানের “দিব্য মায়া বিনোদ” হইতে বিশ্বের ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১৩৯ অভিব্যক্তি। অগ্বৈতবাদিগণ জ্ঞানস্ব্প পরমতত্বে অজ্ঞানের আরোপ করিয়া! থাকেন। এ সম্পর্কে ভগরান্‌. বশিষ্ঠদেব বলিতেছেন £_ জ্ঞান স্বরূপে অজ্ঞানের বা অবিদ্যার আরোপ করিয়৷ ভাষায় চিদ্‌ ব্রহ্মর্প সুধাংশু মণ্ডলে যে সংকল্পরূপ কালিমার স্কুরণ ব্লা হয়, উহা প্ররুতপক্ষে কলঙ্ক কালিমা নহে । জ্ঞান স্বরূপ চিদ্ঘন ব্রদ্ধ__উহা তাঁহার ঘন দেহ। যোঃ বাঃ লিং পূঃ ২৭।৩২ চিচ্চন্দ্র বিশ্বে সংকল্প-কলম্কঃ স্ফুরতীব চ। নাসৌ কলঙ্কস্তদ্‌ বিদ্ধি চিদ্ঘনম্ত ঘনং বপুঃ ॥ যৌগঃ বাঃ নঃ পৃঃ ২৭।৩২ উদ্ধৃত গ্লোকে “স্ফুরতীব পদে “ইব” শব্দের অর্থ স্বুরণের ন্যায়_অর্থাৎ প্রকৃত পক্ষে স্বুরণ নহে । আমাদের দৃষ্টিতে স্কুরণের মত মনে হইয়া থাকে। উহা সত্য সত্য স্ষুরণ নয়, উহা এরূপই । উহার কারণ নির্দেশ বা ভাষায় উহার বর্ণনা সম্ভব নয়। ৭৯। উপরে ৭৫ অনুচ্ছেদে বল্য হইয়াছে যে, “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ” হইতে নিঃস্থত জ্যোতিঃ-প্রবাহের আবর্তই বিশ্বের বিভিন্ন ব্রহ্মাও। ভগবান্‌ বৃশিষ্ঠদেব বলিতেছেন £__ সর্ব্বং হি মনএবেদমিথং স্ফুরতি ভূতিমৎ। জলং জলাশয় ক্ফারৈ বিচিত্রৈশ্ক্রকৈরিব ॥ যোঃ বাঃ উৎঃ ৮৫1৪ যেমন একই জল, জলাশয়ের মধ্যে বিচিত্র বিচিত্র বহু আবর্তাকারে স্ম'রত হয়, সেইরূপ একমাত্র মনঃই বিভূতি যুক্ত হইয়া, এই নিখিল জগদাকারে প্রকাশিত হুইয়াছে। যোঃ বাঃ উৎঃ ৮৫18 এই শ্লোকে কয়েকটি বিশেষ লক্ষ্য করিবার বিষয় হইতেছে £_(ক) মনঃ= উপরে ৭৫ অনুচ্ছেদে “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ” হইতে প্রস্থত জ্যোতিঃ বল! হইয়াছে । মনঃ ই এই জ্যোতিঃর আমাদের পরিচিত নাম। পরমতত্বই “জ্যোতিষাং জ্যোতি:”__তিনি নিজে যা তাঁহার মনও তাই । বিশেষতঃ মনের সংকল্প হইতেই স্থা্ বলা হইয়া থাকে_-একারণ বশিষ্টদেব শ্লোক “মনঃ পদ ব্যবহার করিলেন । (থ) “বিচিত্রৈ চত্রকৈ:__বহু বহু বিভিন্ন বৈচিত্রের সমাবেশে সমুজ্জল বহু বহু চক্ৰক বা আবর্ভ। ইহারা যে বিভিন্ন ব্রদ্মাওকেও তাহাদের পরস্পরের মধ্যে বিভিন্ন বৈচিত্রোর নির্দেশ করিতেছে, তাহাতে Ee নাই । (গণ) চক্রক অর্থাৎ আবর্ত মুখ্য বলিয়া উহা! মাত্ৰ বলা হইয়াছে। উহার সঙ্গে ১৪০ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগব্ত সঙ্গে ছোট বড় অগণ্য বুদ্বুদ ও বুদ্বদ্‌চূর্ন অসংখ্য প্রকটিত হয়, তাহা স্পষ্ট কথিত না হইলেও, উহাদের প্রকটন ব! ক্ষুরণ বুঝিতে হইবে। ইহা হইতে আমর! পাইলাম যে, (i) বৃহৎ বৃহৎ ব্ৰহ্মাণ্ডের কেন্দ্স্থানীয় তত্তৎ সুর্ধ্যমগল, (1) প্রত্যেক স্র্য্যমণ্ডলের চতুদ্দিকে গ্রহ-উপগ্রহ-উন্ধা প্রভৃতি বুদ্বুদ স্থানীয়, (i) প্রত্যেক ব্রক্মাণ্ডের ও তাহাদের অস্ততুক্তি গ্রহ-উপগ্রহ প্রভৃতিতে বুদবুদ্্ণ স্থানীয় স্থাবর-জঙ্গম সমুদায় প্রকটিত হইল । ৮০। উপরে উদ্ধৃত যোগবাশিষ্ঠ উৎপত্তি ৮৫৷৪ শ্লোকে ব্যবহৃত মনঃ যে “জ্যোতিষাং জ্যোতি, হইতে অভিন্ন, তাহা ভগবান্‌ বশিষ্টদেব স্পষ্টতঃ. বলিতেছেন £_ বিদ্ধি রশ্মিময়াকারমিব ব্রহ্ম জগৎস্থিতম্‌ ॥ যোঃ বাঃ নিঃ পূঃ ৯৯৷১৯ এই জগৎকে জ্যোতিঃ স্বরূপ পরমত্রক্মের রশ্মিরাজি বলিয়৷ জানিবে। যোঃ বাঃ নিঃ পৃঃ ৯৯১৯ বশিষ্ঠদেব অন্যত্র বলিতেছেন :__ যথা বিসরণং ভাসস্তথা জগদিদং পরে ॥ যোঃ বাঃ নিঃ উঃ ৪২৩ ূ্্যাদির প্রভা যেমন স্বতঃ বিকীর্ণ হইয়া ভুবন আলোকিত করে, সেইরূপ “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ” স্বরূপ ব্রহ্মের জ্যোতিঃ বিকাশে বিশ্ব স্বতঃ অভিব্যক্ত হইয়াছে । যোঃ বাঃ নিঃ উঃ ৪২1৩ ভাগবত ১২।১১।৮ শ্লোকে জীবচৈতন্যকে “স্বাত্ম-জ্যোতিঃ” আখ্যায় আখ্যায়িত করিয়াছেন । স্থতরাং স্পষ্ট বুঝা গেল যে, জীব ও জগৎ উভয়েই “জ্যাতিষাং জ্যোতিঃ” স্বরূপের রশ্মি স্থানীয়, একারণ পরস্পর অভেদ। ইহা বশিষ্ঠদেব স্পষ্টতঃ উল্লেখ করিয়া বলিতেছেন £__ আত্মীনমিতরচ্চৈব দৃষ্ট্যা নিত্যাবিভিন্নয়া | | সর্ববং চিজ্জ্যোতিরেবেতি যঃ পশ্যতি সঃ পশ্ঠতি ॥ যোঃ বাঃ স্থিঃ ২২২৭ যিনি আপনাকে ও অপর সকলকেই অভেদ জ্ঞানে, সমস্তই চিদ্জ্র্যোতি:». চিদ্জ্জেযোতিঃ ভিন্ন অন্য কিছু নহে, এরূপ জানেন, তিনিই প্রকৃত দর্শক । যোঃ বাঃ স্থিঃ ২২।২৭- ভগবান্‌ ন্ুত্রকারও ৪11১৮ “রশ্স্মারী”-_স্ত্রে দেবযান পথের নির্দেশ করিয়াছেন। ইহার আলোচনা যথাস্থানে করা হইয়াছে। ৮১। মে আলোচনা করা হইল, তাহা হইতে আমরা, পরক্রন্ধ বা. ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৪১ ভগবানের সহিত জীবের, জগতের, জগতে অন্তভূর্ত যত কিছুর, যে অতি ঘনিষ্ঠ, অভেদাত্মক, নিবিড় সম্বন্ধ বর্তমান, তাহা বুঝিতে পারিলাম। এ প্রকার ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ বর্তমান বলিয়া, সংসারে আবদ্ধ, মানবদেহ্ধারী জীব, যতই ত্রিতাপ জালায় দগ্ধ হউক্‌ না কেন, যতই দুঃখ, কষ্ট, শোক, তাপ, দারিদ্র্য, অভাব সহ করিতে বাধ্য হউক্‌ না কেন, তাহার সহিত ভগবানের সংস্পর্শ__কিরণের সহিত হুর্ধোর ন্যায় চিরবর্তমান। মেঘ দ্বারা স্থর্ধ্যের আবরণের ন্যায়, সাময়িক কারণে উক্ত সংস্পর্শের প্রত্যক্ষজ্ঞান আবরিত হইয়াছে বটে, কিন্তু তাহাও সেই পরম কল্যাণময়, করুণানিধান, জীববৎসল ভগবানের মঙ্গল ইচ্ছায় সংঘটিত। ভগবান্‌ স্থত্রকার তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায়ে ইহাও উক্ত সাময়িক আবরণ হইতে মুক্তি লাভের উপায় নির্দেশ করিবেন । ৮২। এই আলোচনা হইতে আমরা আরও বুঝিলাম যে, “জ্যোতিযাং জ্যোতিঃ» যেমন অনাদি, অনন্ত, সত্য--তীহার জ্যোতিঃ হইতে অভিব্যক্ত জীব ও জগৎ অনাদি। তীাহারই মঙ্গলময় সংকল্লানুসারে-_অন্তবান, নশ্বর বলিয়া প্রতীয়মান হইলেও জীবের--অনস্ত উন্নতির সন্তাবনা, এমনকি ব্রহ্মম্বরূপ প্রাপ্তি প্রভৃতি বর্তমান রহিয়াছে এবং বিশেষ বিশেষ জগৎ বিশেষ বিশেষ কারণে, বিশেষ বিশেষ কালে-_প্রলয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হইলেও, ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে পুনরভিব্যক্তির সম্ভাবনা বর্তমান রহিয়াছে। বিশ্বের অভিব্যক্তির উদ্দেই, জীবের কল্যাণ সাধন । ইহা আগে উদ্ধৃত ভাগবতের ১০৮৭২ ল্লৌোকের আলোচনায় বুঝিবার চেষ্টা করিয়াছি।- এখানে অপ্রাসঙ্গিক হইবে না বলিয়া উল্লেখ করি যে, “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ” _ সমষ্টি আত্মটৈতন্য জ্যোতি: । ইহার জাতিভেদ বা প্রকারভেদ নাই। একারণ আমাদের ব্রন্মাণ্ডের অন্তর্গত, আমাদের পরিচিত পৃথিবীর ন্যায়, অনন্তের ক্রোড়ে অবস্থিত অগণ্য ব্রস্মাণ্ডে ও তাহাদের--নিজের নিজের গ্রহ- উপগ্রহ প্রভৃতিতে মূল কাঠামো পৃথক হইতে পারে না। অবশ্ঠই বাশ, দড়ি, খড় প্রভৃতি একই উপাদানে গঠিত বিভিন্ন কাঠামোতে যেমন বিভিন্ন রং, সাজ, সজ্জা, হাত, পা, প্রভৃতি বসাইয়! বিভিন ৃন্তি প্রকটিত হয়, সেইরূপ বিভিন্ন ব্রহ্ধাণেও তাহাদের বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহ গ্রভৃতিতে বিভিন্ন সাজ-সজ্জায় সঙ্দিত বিজি তি প্রকটিত হইয়া, লেখানকার পরিস্থিতি সারে জগ রানার জেরার তি 'বস্থিত। তবে অনস্ত বৈচিন্তাময়-জগৎ-কর্তার-_মনমংকল্লাহসারে উহাদের টি পুবিবীর সমতুল্য ন! হইতে পরে) সে অগণ্য ১৪২ ্রহ্স্ব্ধ ও শ্রীমদ্ভাগবত ্রন্ধাণ্ডেও তথাকার পরিস্থিতির সামঞ্শ্তে সেখানকার উপযোগী জীবও বর্তমান থাকা সম্পূর্ণ সম্ভব। তাহারা কেহ কেহ যে আমাদের পৃথিবীর পরিচিত মনুয্যদেহধারী জীবগণ অপেক্ষা অধিক উন্নত বা নিয় স্তরের হইতে পারে, তাহাতে সন্দেহ কি? একারণ যে সমুদায় মানবদেহধারী জীব ব্রন্মার-_-একদিনে বা চতুদ্িশ মন্বন্তরে উন্নতির শিখরে পৌহুছিতে না পারে এবং ব্রহ্মার পরদিনে, পৃথিবীর তখনকার : পরিস্থিতি অনুসারে স্থান পাইবার উপযোগী না হয়, তাহা হইলে, উপরিউক্ত অগণ্য ব্রদ্ধাণ্ডের মধ্যে যেটি তাহার পক্ষে উপযোগী, তাহাতেই সে স্থান লাভ করিবে, তাহাতে অসম্ভব কি আছে? ব্রন্ধ বা ভগবান্‌ অনস্ত, জীবও অনন্ত, কালও অনস্ত এবং দেশ বা বন্ধাণ্ডের সংখ্যাও অনস্ত। স্থতরাং জীবের উন্নতির সম্ভাবনাও অনস্ত। এই কারণে শ্বেতাশ্বতর তি স্পষ্ট বলিয়াছেন যে, জীবচৈতন্ত জ্যোতি:-কণার একটি অতি ক্ষুদ্র অংশ হইলেও “স চানস্তায় কল্পতে” । শ্বেতাশ্বতর | ২০) আধুনিকভম আধিতোৌতিক বৈজ্ঞানিকগণের সিদ্ধান্ত । ৮৩। এখন বিশ্বহ্থষ্টি সন্ধে আথুনিকতম আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণের পরীক্ষা ও গবেষণালন সিদ্ধান্ত কি, তাহার সম্বন্ধে সংক্ষেপ আলোচনায় অগ্রসর হইতেছি। স্যার জেম্‌স্‌ জিন্স_ইংল্যাণ্ডের একজন খ্যাতনামা আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিক, অতি অল্পদিন হইল, দেহত্যাগ করিয়াছেন। তিনি তাঁহার প্রসিদ্ধ গন্ব “The Mysterious Universe”—“রহস্তময় বিশ্ব’ নামক পুস্তকে বলিতেছেন 2,70০ sum up the main results of this and of the preceeding chapter, the tendency of moderp. physics is to resolve the whole material Universe into waves. These waves are of two kinds—bottled up waves, which we call matter and unbottled waves which we call radiation 07 li8ht”—“বঙমান ও তৎপূর্বব পরিচ্ছেদে যাহ! বণিত হইল, তাহ| সংক্ষেপে এক কথায় বলিতে গেলে বলিতে হয় যে, বর্তমান যুগে আধিভৌতিক পদার্থ বিদ্যার প্রগতি হইতেছে, এই পরিদৃগুমান প্রপঞ্চ জগৎকে শক্তিপ্রবাহ রূপে গ্রহণ করা ৷ এই শক্তি প্রবাহ ছুই প্রকার_বোতলে অবরুদ্ধ প্রবাহ, যাহাকে আমরা জড় দ্রব্য বলি ও অনবরুদ্ধ প্রবাহ_যাহাকে আমরা আলোক ও তাহার বিকীরণ বলিয়া থাকি 1” 2 Le উপরে “আবৰ সৃষ্টি করে” বলিয়া যাহ! আমরা বলিয়াছি রে জিন্স্‌ সাহেহ_“বোতলে অবরুদ্ধ প্রবাহ-বলিষা ব্যষ্টি জড় দ্রব্যের ১খৎ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৪৩ পরিচয় দিলেন । জড় দ্রব্য বলিয়া Matter-এর পরিচয় দেওয়। হইল বটে, কিন্ত বিশ্বে জড় বলিয়া কিছুই নাই। সমুদায়ে শক্তির খেলা এবং এই শক্তি_চিৎ- শক্তি। ভগবানের সং চিৎ” প্রচ্ছন্ন থাকায়, জড় বলিয়া কথিত হয় মাত্র। জিন্স সাহেব উক্ত গ্রন্থে আরও বলিতেছেন £__ড/10) a nearer approach to actuality, we may think of the electrons as objects of thought and time as the process of thinking”— “আসল ব্যাপারের সুষ্ঠ পরিচয় দিতে হইলে বলিতে হয় যে, ইলেকট্রণগুলি ঘনীভূত চিন্তা কণিকা এবং কাল-চিন্তার ধার! নির্দেশক মাত্র ৷” ৮৫ | ইলেকট্রন ও প্রোটন-_বস্তুর অণু গঠন করে এবং জগৎ বস্তুর সমবায়ে সংগঠিত । স্থতরাং বস্তুর অণু যখন ঘণীভূত চিন্তা, কণিকা, তখন সমগ্র জগৎ যে চিন্তারই অভিব্যক্তি তাহাতে সন্দেহ কি? জিন্স্‌ সাহেব এ সিদ্ধান্তে অনুমানের অপেক্ষা রাখেন নাই। তিনি স্পষ্ট বলিতেছেন £_“The Universe cannot: admit of material representation and the reason is, I think, that it has become a more mental concept”—“এই পরিদ্ৃশ্ুমান জগৎ জড় গঠিত বলিয়া স্বীকার করা যায় ন! । ইহার কারণ, আমার মনে হয় যে, ইহা মনের চিন্তার বিকাশ মাত্র 1? ভগবান্‌ বশিষ্ঠদেব_কে জানে কত সহস্র বৎসর পূর্বে তাহার যোগসিদ্ধি লব্ধ প্রাতিভ জ্ঞান বিকাশে ঘোষণা করিলেন :-- মনোমণিমহারন্তঃ সংসার ইতি লক্ষ্যতে। আত্মানাতআনমা শ্রিত্য ক্ষুরত্যন্তযথাস্তসা ॥ যোঃ বাঃ উৎঃ ১০২৬ মনি যেমন তাহার দশদিকে আলোকের আড়ম্বর বিস্তার করে, সেইরূপ এই প্রপঞ্চ জগৎ মনোরূপ মহামণির মহাড়ম্বর পূর্ণ অভিব্যক্তি। জল যেমন নিজে নিজেকেই আশ্রয় করিয়া আবর্তাকারে প্রকাশ পায়, সেইরূপ মনঃই আপনি আপনাকে আশ্রয় করিয়া সংসাররূপে স্কুরিত হয়। যোঃ বাঃ উৎঃ ১০২1৬ ইহার সহিত উপরে ৭৪ অন্তচ্ছেদের আলোচনা তুলনীয়। মনই যে “জ্যোতিযাং জ্যোতি” স্বরূপের জ্যোতি:কণা তাহা আগেও বুঝিয়াছি। . ৮৬। চিন্তার বিকাশ বলিলে, কার চিন্ত| এ প্রশ্ন মনে উদয় হয়। জিন্স সাহেব উত্তরে বলিতেছেন :— “The thought of........- a Mathematical {hinker”_ “একজন গণিতজ্ঞ চিন্তকের চিন্তা” | TUE উপসংহারে জিন্স্‌ সাহেব বলিতেছেন 2 “Today there is a wide measure of ১৪৪ র্্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত agreement সর almost to [00280177115 that ...... the Universe begins to look more like a great thought than like a great machine”—“আধুনিকতম আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণের, বর্তমানে প্রায় সর্ব- সম্মত অভিমত এই যে, এই বিশ্ব একটি বিরাট যন্ত্র নয়, বিরাট, চিন্তার বাহ্যাভিব্যক্তি স্থতরাং আধুনিকতম আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এই যে, বিশ্ব জড় প্রকৃতির খেল! নয়। চৈত্ন্তময়অচিন্তশক্তিমান ইহার কল্পম! করিয়াছেন ও পরিচালনা করিতেছেন। জিন্স্‌ সাহেব বলিতেছেন £_"We discover that the Universe shows evidence of a designing and Controlling Power, that has something in common with our own individual minds—not so far we have discovered emotion, morality or aesthetic appreciation, but the tendency to think in the way, which, for want of a better word—we describe as athematical”—“বিশ্ব ব্যাপার পর্ধ্যালোচনায়, আমরা স্পষ্ট বুঝিতে পারিয়াছি যে, ইহার স্থষ্টি কল্পনা ও পরিচালনার পশ্চাতে এমন এক মহাশক্তি আছে, যাহাতে আমাদের ব্যষ্টিমনের গণিতধর্ম্মী চিন্তার সাদৃগ্ঠ বর্তমান । অবস্ঠ ইহাও বল! প্রয়োজন যে, এ পর্য্যন্ত আমরা, আমাদের বাষ্টি মনের ভাব প্রবণতা, নীতিনিষ্ঠা বা চিত্তরপ্জিনী বৃত্তির পরিচয় আবিষ্কার করিতে সমর্থ হই নাই ৷” জিন্স্‌ সাহেব আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকের দৃষ্টান্তে সৃষ্টিকর্তার পরিচয়, তাহার নিজের ভাবানুসারে দিয়াছেন। বলা বাহুল্য ইহা একদেশীয় পরিচয় মাত্র! বিশেষতঃ তিনি আধিভৌতিক ক্ষেত্রের উপরি স্তর যৎকিঞ্চিৎ কর্ষণ করিয়াছেন মাত্র। গভীর অন্তঃস্তরের পরিচয়ের চেষ্টা করেন নাই, অন্য কোনও আধি- ভৌতিক বৈজ্ঞানিক করিতে সমর্থ হন নাই। আধ্যাত্মিক ক্ষেত্র, অকুষ্ট রাখিতেই বাধ্য হইয়াছেন। সুতরাং তাঁহাদের কাছে তৎকথিত মহাশক্তির সমগ্র পরিচয় আশা! করা দুরাশা মাত্র । ৮৬(ক)-__আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিক জিন্স্‌ সাহেব নিজের বিজ্ঞান ও গণিত ইন টা পিন দক্ষ ইনজিনিয়র, বিরাট গণিতজ্ঞ তে পারেন, বলা বাহুল্য সমুদায় বর্ণনা-_ একদেশী মাত্র এবং সে দেশটি অতি সংকীর্ণ ৯. || পর সভা ইহাতে পরমতত্বের পরিচয় ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৪৫ মহুধি বশিষ্ঠদেব, ব্রহ্ধতত্বালোচনায় জীবন যাপন করিয়া নিজের অপরোক্ষা্গ ভূতি-লভ্য বিজ্ঞানে সিদ্ধ হইয়া নিজের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করিয় বলিতেছেন £₹₹_ ভি অত ্রন্মণি যথ| তখৈবেতদ্‌ জগৎ স্থিতম্‌ । যোঃ বাঃ ৬।৪৭।২০ ব্ৰহ্ম কঃ স্বভাবোহকাচিতি বক্তং ন যুজ)তে। অনন্তে। পরমে তত্বে স্বতীইসত্বাহসম্তবাৎ।। যৌঃ বাঃ ৭১০।১৪ র্গ ব্ৰহ্মত্ব যেমন স্বভাবসিদ্ধ, তাহাতে জগৎ স্থিতিও সেইরূপ স্বভাবসিদ্ধ। যোঃ বাঃ ৬।৪৭।২০ । ব্ৰহ্মের স্বভাবের কথা বল! হইল বটে, কিন্ত ব্রক্ষের স্বভাব কি, তাহ! কি আানবচিন্তার__মানববুদ্ধির-অধিগম্য? এরূপ সন্দেহ কল্পনা করিয়া বন্ষিদেব বলিতেছেন £ অনন্ত পরমতনত্বে তাহার স্বত্ব (নিজত্ব) ও অস্বত্ব (অনিজতু বা পরত্ব ) অতি অসম্ভব বলিয়া, ব্রহ্মের এ প্রকার স্বভাব ইহা বল! অযৌক্তিক ৷ যোঃ বাঃ ৭1১০।১৪ | অর্থাৎ ব্রন্ষে ব্রহ্মত্ব যেমন আমরা আমাদের ভাব ও বিচারের ধারা অনুসারে আরোপ করিয়া থাকি, এবং তাহা আরোপ নহে, প্রকৃত তব বলিয়৷ মনে করি, “জগত্ব” ও সেইরূপ তাহাতে আরোপ করিয়া, তিনি নিত্য-_সে কারণ উহা নিত্য মনে করিয়া বিতর্ক করিয়া থাকি। এ আরোপ আমাদের বুদ্ধির বা'পার মাত্র। এমন কি, চরম ও পরম তত্বকে ভাষায় প্রকাশ ও আলোচনার জন্য “্রক্ষ” পদ ব্যবহারও বুদ্ধির ক্রিয়া ভিন্ন কিছু নহে ৷ [ মদালোচিত “নাম মহিমা” হইতে উদ্ধৃত ] কিন্তু এরূপ হইলেও মানবের আর একটি অতি উচ্চতর দিক্‌ আছে। ইহা বদ্ধিকে অতিক্রম করিয়া_নিজ শাশ্বত আত্ম্বরপে প্রতিষ্ঠিত। ইহার উদ্বোধনে পরমতত্ব নিজের স্বরূপ প্রকাশ করিতে বাধ্য হন। ইহ! তাহার মঙ্গল বিধানে | টিত, হইয়া থাকে৷ এই উদ্বোধনই উপযুক্ত সাধননযাগোন, নি ইহারই পরিচয় দিয়াছেন। এই সাধনার সিদ্ধিতে সমুদায় রহস্ত সাধকের { ত ত হুইয়া থাকে । চু জি ত্রিকাল ভরা ঝবিগণের আত্মশক্তি উদ্বোধক বিশিষ্ট সাধনমার্সে সিদ্ধি প্রান্তি হইতে উদ্ভূত দিব্যৃষ্টিতে, পরমতত্বের আরও ডি ক্রস, অতিমধুর, অতি ঘনিষ্ঠ পরিচন্_সমুজ্জলভাবে প্রকাশিত হইয়াছিল ১০ ১৪৬ ব্ৰহ্মহ্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত তীহ্থারা অনুমান, যুক্তি, বিচার, সিদ্ধান্তের ধার ধারিতেন না। তাহারা পরমতত্বের অন্তস্থলে প্রবেশ করিয়া, আত্মায়_-পরমাত্মায় মিলন-লহরী ছুটাইয়া দিলেন। তাঁহারা শ্রতিতে উদাত্তক্ঠে ঘোষণা! করিয়াছেন £ অনুভূতিং বিনা মূঢো, বৃথা ব্ৰহ্মণি মোদতে ৷ প্রতিবিশ্বিত-শাখা গ্র-ফলাম্বাদন-মোদবৎ ॥ মৈত্রেযপনিষৎ ২২২ একটি বৃহৎ বৃক্ষের উচ্চ শাখাগ্রে একটি অতি হুন্দর, স্থপক্ক, সুমিষ্ট ফল লম্ববান রহয়াছে। নীচে হইতে উহার দর্শনও মিলিতেছে না। উক্ত শাখার প্রতিবিষ্ব জলে পড়ায়, সেই প্রতিবিষ্বিত শাখাগ্রে ল্বমান উক্ত ফলটির দর্শন করিয়া কি উহার আস্বাদন লাভ করা যায়? তথাপি উক্ত প্রতিবিদ্ব দর্শন করিয়া ফলের মিষ্টতার আস্বাদন পাইলাম বলিয়া আনন্দ প্রকাশ যেমন হাস্াম্পদ, সেইরূপ ব্রদ্দের অপরোক্ষানুভূতি লাভ না করিয়া, ব্রহ্ম সম্বন্ধে তর্ক বিচার পিদ্ধান্ত করা এবং তাহা হইতে আনন্দান্ুভব করা ও সেইরূপ হান্তাস্পদ__ যে করে তাহ! তাহার মৃঢ়তার পরিচায়ক মাত্র । তাহারাই শ্রুতিতে উচ্চকগে প্রচারিত করিয়াছেন :-_- শৃথন্ত বিশ্বে অমৃতম্ত পুত্রাঃ, ০:০৩ »**। শ্বেভাঃ ২1৫ হে বিশ্বস্থ মানবদেহধারী জীবগণ শুন, তোমরা সকলের অমুতের পুত্র। বেদাহমেতং পুরুষং মহান্তম্‌ আদিত্যবর্ণং তমসঃ পরস্তাৎ ॥ শ্বেতাঃ ৩৮ আমি তমঃ পারে, সবর্ধ্যের শ্যায় স্বয়ম্রকাশ মহাপুরুষকে জানিয়াছি। ৮৮। এ বিষয়ে বাহুল্য ভাবে আলোচনায় বিরত হইয়া--অতি সংক্ষেপে দিগদর্শন রূপে বলি ভগবান্‌ জীববৎসল। তিনি “গাণিতিক মনোবৃত্তি” লইয়! বিশ্বস্থ্টি করিয়া কর্তব্য সমাধা হইল-_এই ধারণায় নিজের হ্বর্গাসনে বসিয়া থাকেন না। অজ্ঞ জীবকে কল্যাণের পগে চালিত করিবার জন্য, নিজের অনস্ত এশ্বরধ্য, আবরণ করিয়া, তাহাদেরই করিয়া থাকেন। গত ত্রেতায় এই করিয়া, আদর্শ পুত্র, আদর্শ ভ্রাতা, একজন হইয়া মত্যধামে অবতার গ্রহণ ভারতে পূর্ণন্বরূপে শ্রীরামচন্দ্র রূপ ধারণ আদর্শ স্বামী, আদর্শ কন্মযোগী, আদর্শ কর্তব্যনিষ্ঠ সেনাপতি ও রাজা প্রভৃতি মানব সমাজের সর্বস্তরের সর্বোচ্চ আদর্শ প্রতিষ্ঠা করিয়া! গিয়াছেন। উহার তুলনা মানবের ইতিহাসে নাই। আজও "রামরণ্ডা” প্রবাদের মত মূখে মুখে চলিতেছে এবং আমাদের দেশের, নিতাগপের সমগ্র প্রচেষ্টা, ভারতে পুনরায় “রামরাজ্য” প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত। ১ খং। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ কঃ ১৪৭ দ্বাপরের শেষের পাদে পরমপুরুষ শ্রীকু্ণ মুন্তিতে পুণরূপে এই ভারতেই প্রকটিত হইয়। রাজনীতি, সমাজনীতি, যুদ্ধনীতি প্রভূত গন্ধে যে পরিচ দিয়া গিয়াছেন, তাহা মহাভারতের উদ্টোগপর্বে এ+ আরও বহুস্থলে জলন্ত অক্ষরে লিখিত আছে। ধর্্নীতি, কর্তবানীতির উপদেশ ভগবদগীতায় অমর সঙ্গীতে ধ্বনিত হইয়া আজ পর্যন্তও পৃথিবীর সকল সত্য দেশের আদর্শস্থল হইয়া রহিয়াছে । চিত্তরঞ্জিনী বা সৌন্দর্ধ্যান্তভবিকা বু্ির পরিচয়ে, বৃন্দাবনে রাসলীলায় ভগবান্‌ যে আনন্দের প্লাবন ছুটাইয়াছেন, তাহার হিল্লোল আজিও ভারতের আকাশে বাতাসে এবং নর-নারীগণের হৃদয়ে শিহরণ জাগাইতেছে । শ্রীমদ্ভাগবত পাঠে ইহার কথঞ্চিৎ পরিচয় আমরা পাইয়| থাকি। ভাব প্রবণতা সম্বন্ধে পরিচয় বৈষ্ণবাচার্যাগণ অফুরন্তভাবে দিয়াছেন। তবে সে ভাব আধিভৌতিক ক্ষেত্রের নিয়স্তরের কলুষতা হইতে বচ্জিত__আবিভৌতিক দৃষ্টান্ত গ্রহণ করিয়া, জীবাত্মা-পরমাজ্মার ঘনিষ্ট সম্বন্ধ প্রকটনে বিনিযুক্ত। পরম পুরুষে এ সমুদায় পূর্ণমাত্রায় বর্তমান আছে বলিয়া এবং উহার প্রতিচ্ছায়া ও মানবের অশেষ কল্যাণ সাঁধিকা বলিয়াই ত ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মর্তধামে নিত্যলীষ্যার পরিচয় প্রকটিত করিয়াছিলেন । ২১) পরমতন্্ বা ভগবানের অপরোক্ষানুভূতি ব৷ প্রত্যক্ষদর্ণন। ৮৯। উপরে বর্গের প্রত্যক্ষানৃভূতির কথা বলা হইয়াছে। উহা ক কেবল কথার কথ|? ব্রহ্ম বা ভগবন্তত্ব অধিগত হইলে ব্রহ্ম প্রাপ্তি হয়, ইহা শ্রতির ঘোষণা । মুওঃ ৩২।৯। সে অবস্থা হইতে ব্যৎথানে, জাগাতক ব্যাপারে উদ্ব দ্ধ হইলে, উক্ত প্রত্যক্ষদর্শী--নিজের পরমানন্দের যৎকিঞ্চিৎ স্থৃতির সহিত, রপ্ জগতে নিজ নিজ কর্মফল ভোগকারী মানবগণের দুঃখ, জালা, যন্ত্রণা, শোক, তাপভোগের দৃশ্যের তুলনায় করুণায় বিগলিত হইয়া, সকলকেই পরমানন্দে প্রতিষ্ঠিত করিবার ইচ্ছায় কাতর হইয়া পড়েন ( অন্ুঃ ৮৭)। তিনিও ত'মানবদেহধারী, তাহার যখন এরূপ হয়, তখন করুণাময়, জীব্ব্ৎসল, ভগবানের কথা কি? তিনি জীবগণকে নিজবক্ষে ধারণ করিবার জন্য বক্ষ বিস্তার করিয়াই আছেন। জীব নিজের স্বল্প সীমাবদ্ধ স্বাধীনতার মোহে ও গর্বের তাঁহার দিকে পশ্চাৎ ফিরিয়া__বিষয়ে ধাবিত হয়। তিমি হইলেও, জীবে প্রদত্ত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন না। অঙ্গীম ধৈর্ধ্যের সহিত তাহার মতি পরিবর্তনের অপেক্ষায় থাকেন । প্রাণে প্রাণে ইহা অঙগুভৰ করিয়| আধুনিক কবি গাহিয়াছেন রা ১৪৮ ৃ ্র্সথত্র ও ভ্রীমদ্ভাগবত “আমিত তোমারে চাহিনি জীবনে, তুমি অভাগারে চেয়েছ। আমি না ডাকিতে, হৃদয় মাঝারে, তুমি এসে দেখা দিয়েছ ॥ ১ কত আদরের বিনিময়ে সখা, শত অবহেলা পেয়েছ । (আমি ) দুরে চলে যেতে দুহাত পশারি, বুকে করে ধরে রেখেছ ॥ ২ ও পথে যেওনা ফিরে এস বলে, কাণে কাণে কত কয়েছ। (আমি ) তবু চলে গেছি, ফিরায়ে আনিতে, পাছে পাছে ছুটে গিয়েছ ॥ ৩ এই শত অপরাধী পাতকীর বোঝা, হাসিমুখে সখা বয়েছ। (আমার ) নিজ হাতে গড়া বিপদের মাঝে, কোলে তুলে নিয়ে রয়েছ ॥৮ ৪ ৯০) পরমতত্ব বা ভগবানের প্রত্যক্ষদর্শন_ অতীত কালের বস্তু নয়। অতি আধুনিক কালে, বর্তমান সভ্যতার ও পাশ্চান্ত শিক্ষার কেন্দ্রস্থল কলিকাতার সম্নিকটেই ইহা সংঘটিত হইয়াছিল । স্বামী বিবেকানন্দ ( তখন পিতৃদত্ত নরেন্দ্র নাথ নামে পরিচিত ) ভগবান রামকৃষ্ণ দেবের নিকট উপস্থিত হইয়া, গ্রদঙ্গক্রমে অনেকটা অবিশ্বাসের সহিত জিজ্ঞাসা করিলেন_ আপনার কি ভগবনর্শন হইয়াছে? আপনি কি ভগবানের সহিত আমার সাক্ষাৎ করাইয়া দিতে পারেন? উত্তরে পরমহংসদেব ঈষৎ হাসিয়া, তখনই বলিলেন, দেখাইয়া দিতে পারে বৈ কি, ও পরে ৬ভবতারিণী মায়ের মন্দিরে যাইতে বলেন। মন্দির হইতে ফিরিয়া -আসিয়া নরেন্দ্রে আমূল পরিবর্তন হইল। তিনি পরমহংস দেবের চরণে পতিত হইয়া, চোখের জলে সিক্ত করিলেন, এবং তাহার শিষ্যত্ব গ্রহণ পূর্বক সন্ন্যাসী হইয়| সমগ্র জীবন শ্রীগুরুর উপদেশান্সারে কাৰ্য্য করিয়৷ জগতে আদর্শ প্রতিষ্ঠা করিলেন ৷ ২২) বিশ্বে প্রতি পরমাণুতে অচিন্ত শক্তি নিহিভ । ৯১। উপরে ৭৫ ও ৭৯ অনুচ্ছেদে জলপ্রবাহের আবর্ত স্ষ্টর নিদর্শনে, “জ্যোতিষাং জোতিঃ” হইতে প্রহ্থত জ্যোতিঃ প্রবাহ বা ভৰ্গ, আপনি, আপনা ছারা, আপনাতেই স্থানে স্থানে আব্ত সাষ্ট করা হেতু, বিভিন্ন ব্ৰক্মাণ্ডের অভিব্যক্তি ঝা সৃষ্টি হইয়া থাকে, বলা হইয়াছে। লক্ষ্য করিতে হুইবে যে, জলপ্রবাহ আবর্ত সৃষ্টি করিলেও, ইহার শক্তি কিছুমাত্র ক্ষয়প্রা্ত হয় না, বরং আবর্ত সকলে শক্তি কেন্দ্রীভূত ভাবে বর্তমান রাখিয়া উহ! তুলযবেগে অগ্রসর হইতে থাকে আবর্ত সকলে কেন্দ্রীভূত শক্তি, সময়ে সময়ে বড় বড় নৌকা, ্রামার,জাহাজ প্রভৃতিকে ।বিপন্ন করিয়া থাকে, ইহ! আমাদের প্রত্যক্ষ দৃষ্। সেইরূপ ভর্গ-_-অগণ্য আবর্ত সৃষ্ট করিলেও, উহার শক্তির ক্ষয় মাত্র হয় না । উহ! অনন্ত দেশপথে অপ্রতিহত গতিতে তুল্যবেগে চলিতে থাকে, অথচ প্রত্যেক ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৪৪ আবর্তে ও তদাহুসঙ্গিক বৃদ্বুদ, বুদ্বুদ্‌ চূর্ণ প্রভৃতিতে অচিন্ত শক্তি কেন্দ্রীভূত ভাবে সঞ্চিত রাখিয়া যায়। সমষ্টিতে যে নিয়ম, বাষ্টতেও সেই একই নিয়ম । আব্ত হইতে যেমন সমষ্টি ব্ৰহ্মাণ্ড অভিব্যক্ত হইল, সঙ্গে সঙ্গে আবর্তের আনুষঙ্গিক বুদ্বুদ্‌ চুৰ্ণ হইতে বাষ্ট স্থাবর জঙ্গমও অভিব্যক্ত হইল। জিন্স্‌ সাহেব এই বাষ্ট অভিব্যক্তর মূলে “bottled 0] 19০3” বলিয়াছেন । অগণ্য ব্ৰহ্মাণ্ড ও তাহাদের প্রতেকের অন্তর্ভুক্ত স্থাবর-জঙ্গম অভিব্যক্ত করিয়া “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ হইতে শক্তিন্পা, জ্যোতিঃ প্রবাহ অনবরত “পরব্যোম রশ্মি” {cosmic rays) নামে বিচ্ছুরিত হইতেছে এবং অনন্তকাল ধরিয়া এরূপ চলিতে থাকিবে। ৯২। এই আবর্ত হুষ্টিতে কি অচিন্ত্য শক্তি বর্তমান, তাহা একটি পরমাণু গঠনে শক্তির অচিন্ত্যতরি দৃষ্টান্তে ধারণা করিতে গিয়া, আমরা. আপনাকে হারাইয়! ফেলি। একটি অণু ধ্বসে, উহাতে রুদ্ধ শক্তি, মুক্তিপ্রাপ্ত হইয়া গত বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকি শহরে যে প্রলয়ন্কর ধ্বংসলীলা বিস্তার করিয়াছিল, তাহা সকলেই অবগত আছেন । উক্ত ধ্বংস- লীলার অভিনয়ের জন্য এক একটি শহরে এক একটি মাত্র “আণবিক বোমা” ব্যবহার করা হইয়াছিল। বর্তমানে শুনিতেছি যে, হাইড্রোজেন অণু হইতে “হাইড্রোজেন বোমা» নামে অধিকতর ধ্বংসশক্তি বিশিষ্ট বোমা আবিষ্কৃত হইয়াছে। দুঃখের বিষয় যে, মানবের ভগবৎ প্রদত্ত বুদ্ধি ধ্রংসযূলক কার্ধ্যেই নিযোজিত হইল । | ৯৩। হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উভয়ে জলের উপাদান আমরা জানি৷ জল আমাদের জীবন স্বরূপ । উহার শৈত্য, নিগ্ধতা প্রভৃতি গুণ আমাদের স্থপরিচিত। বাপ্রূপে উহার প্রসারণী শক্তিতে এঞ্রিন কার্যকরী হইয়া, রেল ও জাহাজ যোগে লক্ষ লক্ষ মণ মাল ও লক্ষ লক্ষ পথিকগণকে দেশ হইতে দেশাস্তরে বহন করে, ইহা আমরা এতদিন জানিতাম। কিন্ত অণু গরিমাণ জলের উপাদানে যে হাইড্রোজেন আছে, তাহার একটি অপুর মধ্যেই প্রলয়ন্করী শক্তি নিহিত, ইহা কে জানিত? আধিভৌতিক বিজ্ঞান এ রহস্ত প্রকাশ করিয়াছে। ইহাতে আমাদের আশ্স্য হইবার কিছু নাই। উপরের "আলোচনা হইতে আমরা বুঝিয়াছি যে, বিশাল ত্রক্মাও হইতে একটি অতি ক্ষুদ্র পরমাণু পর্যন্ত সমুদায়, অচিন্ত শক্তিমান হইতে নিত, তাঁহারই আস্ত ভর্গ হইতে . অভিবা্ত। সুতরাং অনন্ত শক্তি থে একটি অতি কর পরমা নিহিত থাকিবে, তাহাতে আম্চধ্যাক? এরূপ হওয়া ও সঙ্গতই ! অগতের প্রতি I. Eee ব্রহ্মস্থত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত দ্বোর-প্রতি পরযাণুতে অচিন্তা শক্তি নিহিত, এ সিদ্ধান্ত ম্বতঃই আপতিত হয় ৷ ২৩) দেশ ও কাল। ৯৪। স্থষ্টির সহিত দেশ-__কাল অপরিহার্যাভাবে সংজড়িত, স্থতরাং স্থির আলোচনায় দেশ-কালের আলোচনা অবাস্তর নহে। বর্তমানে আধুনিকতয, স্থপ্রসিদ্ধ গণিতজ্ঞ ও আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিক আইন্ট্টাইন্‌, দেশ ও কাল সমবায়ে গ্রহণ করিয়া, তাঁহার “আপেক্ষিকবাদ” (Relativity ) স্থাপিত করিয়াছেন, এবং তাহা পৃথিবীর সমুদায় আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণ গ্রহণ করিয়াছেন। তাঁহার উক্ত আপেক্ষিকবাদ ও তাহার সহিত দেশকালের অপরিহার্ধ্য সম্বন্ধ বিশদ্ভাবে বুঝিতে হইলে, অতি ছুরূহ উচ্চগণিতের আলোচনায় . প্রবেশ করিতে হয়। উহা আমার দ্বারা সম্ভব নহে, এবং আমার মনে হয় যে, তাহার প্ররোজনীয়তাও নাই। আমি আমাদের অতি প্রাচীন বঝষিগণ যোগবলে, প্রাতিভ জ্ঞান লাভে যে তত্বের অপরোক্ষ দর্শন লাভ করিয়া প্রচার করিয়াছেন, তাহারই অতি ক্ষীণ প্রতিচ্ছায়ার পরিচয় দিবার চেষ্টা করিব। মদালেচিত “গায়ত্রী রহস্য পুস্তকে” (৫২ হইতে কয়েক পৃষ্ঠায় ) “ঝতঞ্চ সতাঞচ, --মন্ত্ের ব্যাখ্যায়, দেশ-কাল- তত্ব বুঝিবার প্রয়াস পাইয়াছি। মত্প্রণীত, “বেদাস্ত প্রবেশ” গ্রন্থের একটি সমগ্র পরিচ্ছেদেও ইহার আলোচনা করিয়াছি। এখানে উহার পুনরুল্লেখ করিব না। এই স্থত্রের আলোচনার পূর্বে উদ্ধৃত ভাগবতের ১১।২৪।১৯ শ্লোকের যে চিত্র অঙ্কিত করা হইয়াছে, তাহাতে কালকে “মচ্টেষ্টাবূপ” বল! হইয়াছে । এরূপ বলায় “কাল” যে জড়, অচেতন কিছু নহে, ইহা! বলা হইল॥ এরূপ বলায়, বর্তমান বিংশ শতাব্দীর আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণের সহিত যে মতবিরোধ ঘটিল, তাহা বলা বাহুল্য । আমাদের শাপ্জান্ুসারে জগতে সমুদায় চিতেরই খেলা, ইহা! পূর্ব্বে বলা হইয়াছে। ॥ অনুচ্ছেদ ৭৬ )। সুতরাং কালও চিন্ময় বলা সঙ্গতই বটে । ৯৫। ভাগবত ২1৫১৪ শ্লোকে বলিতেছেন ২ ্রব্যং কৰ্ম্ম চ কালশ্চ স্বভাবো জীব এব চ। বাহ্দেবাৎ পরো! ব্রহ্মন্‌ ! চান্টার্থোইস্তি ততৃতঃ ॥ ২1৫১৪ ব্ৰহ্মা নারদকে বলিতেছেন, দ্রব্য, কম্ম » কাল, স্বভাব ও জীব ইহাদের মধ্যে কোনটিই ৰান্থদে হইতে ভিন্ন নহে। ২1৫ 1১৪ ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি | ২ স্থং ১৫১ কেননা, শ্রীধরস্বামী বলিতেছেন,__“নান্তি কারপ-_ব্যতিরেকাৎ কার্যত” ক্কারণ ব্যতিরেকে কার্ধ্যের অস্তিত্ব নাই। স্বামিজী বলিলেন যে. তগবান্‌ বাহ্ুদেব (ভাগবত মতে পরমতত্ব ব! ব্রহ্ম ) সমুদায়ের একমাত্র কারণ । এখন 'ভগবাঁন্‌ বশিষ্ঠদেব দেশ, কাল, দ্রব্য দর্শন সম্বন্ধে কি বলিতেছেন, তাহ! বুঝিবার চেষ্টা করা যাউক্‌। চিদনুর্যত্র ভাতোইমৌ দেশো। মিতিমুপাগতঃ । যদ! ভাতস্তদা কালো যদ্‌ ভানং তৎ ক্রিয়াস্মতম্‌ ॥ যোঃ বাঃ নিঃ উঃ ৭৩।৬৯। উপলন্ধং বিছুর্্ব্যং দ্রস্টংতাপ্যুপলন্বতা। আলোকনং দৰ্শনত দৃশালোকন কারণম্‌ ॥ যোঃ বাঃ নিঃ উঃ. ৭৩1২০ চিদণুর প্রকাশ স্থানই “দেশ” আখ্যায় অভিহিত। দেশই “মিতি” বা পরিমাণ বিশিষ্ট । ওই দেশ যে ক্ষণে প্রকাশ পায়, সেই ক্ষণের নাম “কাল” । ও প্রকাশের নাম ক্রিয়া (ইহাই ভাগবতের ২1৫১৪ গ্লোকে কাত “কৰ্ম্ম? ), এ প্রকাশ-ক্রিয়ার দ্বারা যাহার উপলব্ধি হয়, তাহার নাম “্দব্য”_ও উপলব্ধিই “দৰ্শন”, উপলব্ধিকারী “দ্রষ্টা” এবং দৃক উপলব্ধির কারণ । যোঃ বাঃ নিঃ উঃ ৭৩।১৯।২০ ভগ বান্‌ বশিষ্টদেব, পরতবব, পুরুষোত্তম, বা ভগবানকে “চিদণু? আখ্যায় আখ্যায়িত করিয়াছেন। ইহার যতদূর সম্ভব, বিশদ ধারণার জন্য এক গোলক কল্পনা করি, যাহার ব্যাপাদ্ধ সঙ্কোচন ও প্রপরণশীল। এই গোলকের পৃঠদেশে ও ভিতরে, পর্বত, সাগর, নদী, বন, মক, নগর, দেশ, বিদেশ, স্থাবর, জঙ্গম প্রভৃতির চিত্র অঙ্কিত আছে, মনে করা যাইতে পারে । গোলকের ব্যাসাদ্ধ যখন উহার স্বভাবগত পরিমাণে থাকে, তখন চিত্রগুলি সুপরিস্ফুট ৷ ব্যাসাঞ্ধ সঙ্কোচ করিলে, চিত্রগুলিও সঙ্গে সঙ্গে সংকুচিত হইবে। সংকোচের শেষ সীমায় পৌহুছিলে গোলক-_তাহার পৃষ্ঠের ও ভিতরের চিত্রগণের সহিত কেন্দ্রে তাদাত্মাভাবে লীন হইবে__আবার ব্যাসার্ছ প্রসরণ করিলে. চিত্রগুলিও পরিস্ফুট হইবে! ইহাই চিত্রে প্রদশিত স্থষ্টর, স্থিতির ও প্রলয়ের নিদর্শন ৷ এ সম্পর্কে বলিয়া রাখি যে আধুনিকতম জ্যোতিষ শাস্তুজ্ঞ আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকগণের সিদ্ধান্তামুসারে, আমাদের জগৎ প্রসরণশীল ( Expanding AUNIVErS€ )1 বলা বাহুল্য যে, অনুমান করা যাইতে পারে যে, প্রসরণের ১৫২ ব্ৰহ্মন্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত একটা সীমা! আছে, দোলকের দৃষ্টান্তে ইহা আমরা সহজে বুঝিভে পারি। স্থতরাং যুক্তি সঙ্গত ভাবে বলা যাইতে পারে যে, আমাদের জগৎ প্রসরণের সীমায় পৌহুছিলে, ক্রমশঃ সংকুচিত হইতে থাকিবে এবং সংকোচনের সীমায় পৌহুছিলে কেন্দ্রে তাদাত্মাভাবে মিলিত হইয়া অবস্থান করিবে, ইহাই প্রলয় এই কেন্দ্ৰই “চিদণু৮ । পূর্বের আলোচনায় বুঝিয়াছি যে, সমুদায় চিতেরই খেলা । স্থতরাং যনি চিত্র খেলা বা বিস্তার আত্মস্থ করিয়া, অন্ুরূপে কেন্দ্রে অবস্থান করেন, তাহাকে “চিদণু” বলা খুবই সমীচীন__তাহাতে সন্দেহ কি? তখন দেশ-কাল ও স্্টির সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রে লীন হইয়া গিয়াছে, সে কারণ “অণু” ও “মহৎ” উভয়ের বিভেদও অস্তহিত হইয়াছে। দেশ ন। থাকায় মহতের ধারণা আমাদের বুদ্ধিতে অসম্ভব বিধায়_-“চিদণু” বলাই সঙ্গত। ৯৬। এই “চিদণু’ই “জ্যোতিষাং জ্যোতি,” অধুন৷ কেন্দ্রীভূত বলিয়া, “অপু” । ইহাতে প্রশ্ন উঠিতে পারে যে, পরমতত্বের বা ভগবানের-_তবে কি সঙ্কোচন-প্রসারণরূপ অবস্থাস্তর আছে? ইহার উত্তর_ কখনই নয়। পরমতত্বের দৃষ্টিতে স্ব্ট-প্রলয় নাই, দেশ-কাল নাই, অতীত-ভবিঘ্যৎ নাই, অনুমহৎ্ নাই। তিনি যখন সর্বাধার-সর্ধাশ্রয়, তাহার আশ্রয় ছাড়িয়া কোনও কিছুর থাকা অসম্ভব। স্থতরাং সমুদায়ই বর্তমান আকারে তাহার আশুয়ে বিদ্যমান । স্ষ্ট-প্রলয়, অতীত-ভবিত্যৎ প্রভৃতি আমাদের বুদ্ধির ব্যাপার মাত্র। আমাদের দৃষ্টিতে যাহা প্রতিভাত হয়, তাহারই একটা মনগড়া, এবং মনগড়া বলিয়া আমাদের বুদ্ধির পরিমাপে যুক্তি সঙ্গত বর্ণনা মাত্র। স্মরণ রাখিতে হুইবে যে, আমাদের মনগড়া এবং আমাদের আপেক্ষিক জগতের দ্বারা প্রভাবিত বুদ্ধির যুক্তিসঙ্গত হইলেই, উহ! যে সর্ধতোভাবে, অবাঙমনসোগোচর পরমতত্বে প্রযোজ্য হইবে; তাহা মনে করিবার কারণ কি? শাপ্ত, যুক্তির প্রাধান্য দিয়াছেন বটে, তাহ! মানবদেহধারী জীবগণের বুদ্ধির উৎকর্ষ সাধন পূর্বক, শান্তর মানিয়া তৎপ্রদরশিত পথে অগ্রসরণে অশেষ কল্যাণ প্রাপ্তির সম্ভাবনা জাগাইবার জন্ত। শা্রবিধি অনুসারে অগ্রসর হইলেই” উক্ত মানবের দৃষ্টি ক্রমশঃ খুলিয়া যাইবে, তখন সে নিজে পরমতত্বের স্বরূপ সম্বন্ধে অল্পবিস্তর পরিচয় পাইয়া স্তম্ভিত হইবে, কৃতার্থ হইবে, জীবন সার্থক বলিয়া মানিবে, শাস্ত্রের প্রকৃত তত্ব স্বচ্ছ দৃষ্টিতে ক্রমশঃ প্রতিভাত হইবে, ফলে অধিক উৎসাহের ও তৎপরতার সহিত শাঙ্দোপদেশ পালন করিতে থাকিবে। ৃ 2 ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৫৩ ৯৭। উপরে উদ্ধৃত ভাগবতের ২।৫।১৪ প্লোকে “দ্রব্য, কর্ম, কাল, স্বভাব ও জীব” এই পঞ্চ পদার্থের উল্লেখ আছে। ভগবান্‌ বশিষ্টদেব উপরে উদ্ধৃত শ্লোক ছুটিতে দ্রব্য, ক্রিয়া (কর্ম) ও কালের পরিচয় দিলেন। জীবের পরিচয় ভগবান্‌ স্বত্রকার পরে বিস্তারিত ভাবে দিবেন । স্বভারের আলোচনা এই স্থত্রের আলোচনার “অনুপ্রবেশ” শীর্বক অংশে দিবার চেষ্টা করিব । পণ্ডিতবর স্থপ্রসিদ্ধ আইনস্টাইনের আপেক্ষিকবাদে প্রতিপাদিত হইয়াছে যে, জগতে দৃষ্ট অদৃষ্ট, সম্তাব্যমান মুদ্রায় ঘটন! সম্পাদনের জন্য দেশ ও কালের অপেক্ষা আছে। কিন্তু দেশ-কাল কাহার অপেক্ষা রাখে ঠাহ! তিনি বলেন নাই। আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিকের চিন্তায় উহার কোনও স্থান আছে বলিয়। মনে হয় না। তীহার আপেক্ষিকবাদ অপেক্ষা অধিকতর ব্যাপকভাবে, ভগবান্‌ বশিষ্টদেব জগতস্থ সমুদায়ের আপেক্ষিকত্ব ও সেই আপেক্ষিকতার মূল কোথায়, তাহা তাঁহার নিজের অপরোক্ষান্ভাতর ফল স্বরূপ নির্দেশ করিয়াছেন। অবশ্যই ইহাতে আইন্ড্টাইনের অমান্য করিতেছি না বা তাহার আপেক্ষিকবাদের খর্ধতা জ্ঞাপন করিতেছি না। তিনি প্রতোক সত্যান্ুসদ্ধিৎস্ুর বিশেষ সম্মানের পাত্র, তাহা আমি মুক্ত কণে স্বীকার করিতে ও আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করিতেছি । ৯৮ । বশিষ্ঠদেব বলিলেন, চিদণুর প্রকাশ স্থানই দেশ, ইহ! বুঝিবার চেষ্টা করিব। চিদণুই “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ” জ্যোত্িম্মান পদার্থ মাত্রেরই স্বভাব এই যে জ্যোতি কেন্দ্র হইতে জ্যোতিঃ রশ্মি দশদিকে সর্বত্র প্রস্থত হইয়া থাকে । “গর্ভ” ও “ভর্গ” উভয়ের রহস্য আলোচনার বুঝিয়াছি যে, উভয় পদে ব্যবস্ৃত “গ” অক্ষরের অর্থ হইতেছে গমন-_“গর্ভ” সম্বন্ধে অন্তরে প্রবেশ ও “ভর্গ” সম্বন্ধে বহির্গমন-_অর্থাৎ উভয় ক্ষেত্রেই কেন্দ্র হইতে দশদিকে প্রধাবন। স্থষ্টর পূর্বে দেশের অভিব্যক্তি না থাকায়, “চিদণু’ কেন্দ্রে নিজের স্বরূপে অবস্থান করা হেতু, বহিরন্তরের কোনও প্রশ্নই উঠে নাই৷ চিদণুর স্কুরণ হইতেই হুট । উক্ত স্কুরণ হইলেই, রশ্মির প্রসরণের হেতু, কেন্দ্র হইতে বহিঃ সংঘটনের জন্য এদেশের” অভিব্যক্তি হইল। ক্ফুরণের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সহিত সম দময়ে কালেরও অভিবাক্তি হইল। উদ্ধত শ্লোকে বশিষ্টদেব বলিলেন, যে ক্ষণে স্ফুরণ (ভাতি '- সেই ক্ষনই “কাল/। আমাদের দেশ-কালের প্রভাবে প্রভাবিত বুদ্ধিতে বুঝিতে হইবে ন! যে, উক্ত ক্ষণ, নিমেষ বা তৎপরিমিত অল্প সময় মাত্র। শ্লোকে ব্যবহৃত “যদ! ১৫৪ 'ন্ধস্থুত্ৰ ও শ্রীম্দভাগবত করিতেছে। একারণ বুঝিতে হইবে যে, যতদিন স্থষ্ট বর্তমান, ততদিন «চিদণুর” স্কুরণ বর্তমান, স্থতরাং কালও বর্তমান । “্যদ্ভানং তৎক্রিয়ামতম্‌’_এই ভানই জগদ্ভান-_অর্থাৎ জগতের প্রকাশ বা অভিব্যক্তি। এই অভিব্যক্তিই যূল ক্রিয়া বা কৰ্ম্ম । ইহা যনে রাখিয়া ভগবান্‌ -প্লীতায় কর্ম সংজ্ঞা নির্দেশে বলিলেন £- ভূতভাবোদ্ভবকরো৷ বিসর্গঃ কর্ম্মসংজ্ঞিতঃ। গীঃ ৮৩ “বিসর্গ” পদের আভিধানিক অর্থ ত্যাগ। যাহা অন্তরে আত্মস্থ ছিল, তাহা বাহিরে পরিত্যাগ: ইহাই স্থ্টি। বিশ্ব চিদণুর অন্তরে তাদাত্ম্ভাবে ছিল, তাহার বাহিরে অভিব্যক্তি__ইহাই ভূতভাবের উদ্ভবকর বিসর্গ_ইহাই কর্ম। এই কারণে ভগবান্‌ বশিষ্ঠদেব, জগদ্ভানকে ক্রিয়া সংজ্ঞায় সংজ্ঞিত করিলেন । এই কারণেই বুহদারণ্যক শ্রুতির ১/৬।১-২-৩ মন্ত্রে সমুদায় নাম, সমুদায় রূপ, সমুদায় কৰ্মই বঙ্গের বলা হইয়াছে । এই একই কারণে ঝগ,বেদীয় পুরুষস্থক্তে__ পুরুষেরই মহাত্যাগের নিদর্শনে, পুরুষ-যজ্ঞের বিবরণ দেওয়া হ্ইয়াছে। পুরুষ-_যজ্ঞ হইতেই সৃষ্টর অভিব্যক্তি ইহ! বলা বাহুল/। কিন্ত শুধু সৃষ্টি করিলেই ত কর্তব্য সমাধা হইল না। উহার স্থিতির ব্যবস্থাও তুল্য প্রয়োজনীয় । প্রকৃতি যজ্ঞে এই ব্যবস্থার বিধান করা হইয়াছে । পুরুষ-_হ্ষ্টির জন্মদাতা- পিতা । প্রকৃতি_স্থিতি বা পালনকত্রী মাতা । যিনি একাধারে পিতা- মাতা-ধাতা (গীঃ ৯১৭ )-_-তিনি আপনাকে পুরুষ-প্রকৃতি ও বিধানকর্তারূপে- '্ষ্টি-স্থিতি ও জগদ্বিধারণের ব্যবস্থা করিতেছেন। প্ররুতি-যজ্ঞ সম্বন্ধে আলোচনা বিস্তারিতভাবে “গায়ত্রী রহস্ত” পুস্তকে করিয়াছি । বাহুল্য পরিহারের জন্য উহার উল্লেখমাত্র করিয়াই ক্ষান্ত হইলাম । ৯৯। দ্রব্যের সংজ্ঞা নির্দেশে বশিষ্টদেব বলিলেন :_-“উপলব্ষং বিদুদ্র ব্যম’_ এ প্রকাশ ছ্বারা যাহার উপলব্ধি হয়, তাহার নাম “দ্রব্য” অন্য কথায় জগতস্থ স্থাবর-জঙ্গমাত্মক সমুদায় । ইহার মধ্যে যে রহন্তটুহু আছে, তাহার উদ্ঘাটন প্রয়োজন মনে করি। প্রকাশ্য থাকিলেই প্রকাশের সার্থকতা । যেখানে প্রকাশ নাই, সেখানে প্রকাশ উজ্জলভাবে বর্তমান থাকিলেও, উহার উপলব্ধি হয় না| দৃষ্টান্ত স্বরপ বলা যাইতে পারে যে, ধাহারা ব্যোমযানারোহণে উদ্ধাকাণে বিচরণ করিয়া থাকেন, তাহার! জানেন যে, উর্দে বায়ুমওলের নিশ্লাংশের কতকদুর পর্য্যন্ত, পৃথিবীর ধূলিকণা বিচরণ করিতে পারে, সে পর্য্যন্ত প্রকাশ স্বরূপ সর্য্যালোকের বিকীরণে আকাশ নীলবর্ণ দেখায়। কিন্তু তাহার 2. ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১৫৫ উপরে যেখানে ধূলিকণার গতি নাই, পেখানে স্থর্ধাালোক অপ্রতিহত ভাবে সঞ্চরমান হইলেও, প্রকাশের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়না । সেখানকার ও তাহার উপরের আকাশ নিবিড় অন্ধকারময় কষ্ণবর্ণ দেখায়। অবশ্যই তাহাদের আকাশ বিমানের উপর পতিত কৃর্ধ্যালোক, উহাকে, তাহাদিগকে ও বিমানস্থ বগুজাতকে প্রকাশ করে বটে, কিন্ত, তাহাদের চতুপ্দিকে ও উপরাকাশে আলোক প্রকাশের কোনও নিদর্শন পাওয়া যায় না। প্রকাশে প্রকাশ্য যাহ] কিছু, তাহাই দ্রব্য । অতএব জ্যোতিঃ ভাগবত উদ্ধৃত ২৫1১৪ শ্লোকে “‘দ্ৰব্য”শব্দ বাবহার করিয়াছেন । উহা ঠিক যোগবাশিষ্ঠে ব্যবহৃত অর্থে নহে বলিয়া মনে হয়। যোগবাশিষ্টের “দ্রব্য” দ্রব্যসাধারণ ; ভাগবতের “দ্রব্য”_ দ্রব্যের উপাদান । স্ুত্তরাং বিভেদ-স্থুল ও সল্প নির্দেশে ; তত্বতঃ নহে । ২৪) ভগব্দ্‌রুহস্য । ১০০1 ব্রহ্ধনির্দেশে “তেজোবিন্দু” উপনিষৎ বলিতেছেন: ুক্তামুক্ত শরূপাত্মা মূক্তামুক্তবিবভ্জিতঃ | তেজোবিন্দু_ ৪,৬৫ বন্ধমোক্ষস্বরূপাত্মা বন্ধমোক্ষবিবভিজিতঃ ৷ দৈতাৈতন্বরূপাত্মা দ্বৈতাদ্বৈতবিবঞ্জিতঃ ॥ এ. ৪৬৬ সর্ব্বাসর্ববস্বরূপাত্মা সবর্বাসবর্ববিবজিজিতঃ | মোদপ্রমোদরূপাত্বা মোদাদিবিনিবভিজিতঃ ॥ ড় ৪.৬৭ আনন্দাদি বিহীনাত্মা অমৃতাত্মামৃতাত্মকঃ। কালত্রয়স্বরূপাত্ম। কালব্রয়বিবঞ্জিতঃ ॥ টী 51৬৪ [ আর কত উদ্ধার করিব? শ্রুতির ভাষ! অতি সরল বলিয়া বাঙ্গলা অর্থ দিবার প্রয়োজন নাই ] উপরে উদ্ধৃত শ্রুতির মন্ত্র কয়টিতে লক্ষ্য করিবার বিষয় এই যে, ব্ৰহ্ম, পরমতত্ব বা ভগবান্‌ সমন্ধে তত্বতঃ “তিনি ইহা ও ইহা নয়” বল! চলে না। যদি তাঁহার নির্দেশের জন্য, “তিনি ইহ!” বলা হয়, তাহা হইলে, তিনি বাক্যের দ্বারা প্রকাশ্য হইয়া পড়িলেন, তাহা সম্পূর্ণ অন্তৰ । আবার অন্ত পক্ষে যদি বলা হয়, “তিনি ইহ! নয়”_ তাহ! হইলে, তাহার সর্ব্বাত্মকতার অপলাপ করা হয়, অদ্ৈতহানি সংঘটিত হয়। অর্থাৎ তিনি ছাড়া অন্য কিছু “ইহা” থাকার সম্ভাবনা উপস্থিত হয়। কিন্ত সমুদায় বিরোধের সমন্বয় তাহাতে-_ইহা। সর্বদা মনে রাখিতে হুইবে। ১৫৬ ব্ৰহক্মস্থত্ৰ ও শ্রীযমদ্ভাগবত ১০১ গীতায় ভগবান্‌ ইহা ম্পষ্টতঃ বলিয়াছেন :_ মতস্থানি সর্ববভূতানি ন চাহং তেবস্থিতঃ॥ গীঃ ৯৪ ন চ মংস্থানি ভূতানি পশ্য মে যোগমৈশ্বরম্‌। ভূতভৃম্ন চ ভূতস্থো মমাত্মা ভূতভাবনঃ ॥ » ৯1৫ যথ। কাশস্থিতো নিত্যং বায়ুঃ সব্ববতুগো মহান্‌। তথা সৰ্ব্বাণি ভূতানি মংস্থানীত্যুপধারয় ॥ ৮» ৯৬ সমন্তভৃতই আমাতে অবস্থিত বটে, কিন্তু আমি ভূতে অবস্থিত নহি। ৯।৪- প্রীমৎ শ্রীধর স্বামী “মতস্থানি” পদের অর্থ করিতেছেন_-“কারণভূতে ময়ি তিষ্ঠন্তি”__কারণরূপ আমাতে স্বিত। ইহাতে মনে সন্দেহ হইতে পারে যে, যুদ্ঘটের কারণ ত মুত্তিকা_-উহা৷ ঘটের সর্বত্র ব্যাপিয়া অবস্থান করে, প্রত্যক্ষ দেখা যায়। তবে কি ভগবান্‌ প্রত্যেক ভূতের অস্তরে-বাহিরে অবস্থান করেন । এই সন্দেহ নিরসনের জন্য ভগবান্‌ সঙ্গে সঙ্গে বলিতেছেন, না, আমি ভূতে অবস্থিত নহি। আরও বলিতেছেন যে, আমার আত্ম! ( পরমন্রূপ ) ভূতগণের ধারক ও পালক হইলেও আমি ভূতস্থ' নহি। আমি নিরহস্কার, অসঙ্গ ও উদাসীন বলিয়া! কাহারও সহিত আমার সংশ্লেষ মাত্র নাই। দৃষ্টান্ত স্বরূপ দেখ, যেমন গমনশীল বায়ু নিত্যই আকাশে স্থিত, সেইপ ভূতসকল আমাতে স্থিত অবগত হও । ৯৫-৬। ভগবান্‌ বুঝাইলেন যে, তিনি সমুদায়ের কারণ হইলেও নিধারণ__-আমাদের দৃষ্টিতে আমর কারণ ও কার্ধ্যের বিভিন্নত্ব দেখিয়া থাকি কিন্তু তাহা প্ররুত দর্শন নহে। পরমতত্ব বা ভগবানে তাহ! প্রযোজ্য নহে। তিনি সর্ধাধার বলিয়া, জগতন্থ সমুদায় তাহার আধারে বর্তমান থাকিলেও, আধেয়ের সহিত তাহার সংশ্লেষ মাত্র নাই। স্থতরাং বর্তমান আলোচ্য সুত্রে ব্রহ্ম বা৷ ভগবান্‌ জগতের ও তদন্ততুক্তি সমুদায়ের উপাদান ও নিমিত্ত কারণ বলিয়া কথিত হইলেও এবং ভাগবত উপরে উদ্ধৃত ৩৪।২৫ প্লোকে সমুদায় কারক ব্যাপার তাহাতে স্পষ্টতঃ বলিলেও, ইহা সব্রনা মনে রাখিতে হইবে, আপেক্ষিক-. তার প্রভাবে প্রভাবিত আমাদের মনের ভাব বা ভাষা, পরমতত্বে বা ভগবানে সর্ববতোভাবে প্রযোজ্য নহে । ইহ! তন্বতঃ সত্য নহে। অজ্ঞ শিষ্তের বোধ সৌবর্্যার্থ বলা হইয়াছে খাত্র। এই প্রশ্ন “নাম মহিমা” পুস্তকে উত্থাপন করিয়া যাহ! বলিয়াছি, তাহাই উদ্ধৃত করিতেছি। ১০২। “প্রত্রঙ্গ দৃষ্টিতে আমরা স্পঃ্জাবে জানি যে, কারণ__কার্য্যের পূর্ববর্তী ও কা্য_কারণের পররর্তী; কিন্তু রম বা পরতত্ব, এমন একটি বস্তু > খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১৫৭ যাহাতে পূর্বত্বপরত্ব বর্তমান নাই'। স্থতরাং তিনি কারণ হইবেন কিরূপে ! ভগবান্‌ বশিষ্ঠদেব বলিতেছেন £__ হেতুত্বাভাবতে ব্ৰহ্ম কাৰ্ধ্যত্বাভাবতস্তুথা । অদ্বৈতেনাতিগন্তাত্বা ন চ কার্ধ্যং ন কারণম্‌ ॥ যোঃ বাঃ নিঃ পৃঃ ৯৫৷১২ অকর্তৃকম্মকরণম্‌ কারণম্‌ বীজকম্‌। অপ্রতর্ক/মবিজ্ঞেয়ং ব্রহ্ম কর্তু কথং ভবে ॥ যোঃ বাঃ নিঃ পৃঃ ৯৫১৩ যাহা পূ্ববগত, তাহা কারণ, যাহা পরগত তাহা কার্ধ্য। ব্রন্গে পূরবত্ব- পরত্ব বর্তমান ন! থাকায়, তাঁহাকে কারণ বা কার্ধ্য বলা চলে না। তিনি সর্ববাতীত। তীাহার-কর্তৃত্ব-কর্মত্বকরণত্বকারণত্ব নাই। উপাদান বা নিমিত্ব কারণত্বও নাই। তিনি বিচারাতীত, জ্ঞানাতীত। তাহাতে কর্তৃত্বারোপ হইবে কিরূপে ? যোঃ রাঃ নিঃ পূঃ ৯৫1১২-১৩। তবে ষে ব্রক্মকে জগতের__উপাদান ও নিমিত্ত কারণ বল! হয়, তাহা! “অরুন্ধতী ন্যায়ে” প্রত্যক্ষ দৃষ্ট বাহ্‌ বিষয়ের দৃষ্টাস্তে, মানবের ভাষায় স্বভাবগত অক্ষমতা! স্বত্বেও, ভাষায় প্রদত্ত বাচনিক উপদেশের মধ্য দিয়া অজ্ঞ শিন্যের বুদ্ধিকে স্থল দৃগ্যপ্রপঞ্চ হইতে ক্রমশঃ পরম স্থন্ম তব্্বরূপে_-উপনীত করিবার জন্য । স্মরণ রাখিতে হইবে যে, পারমাথিক দৃষ্টিতে একমাত্র পরমতত্বই বর্তমান । জগতের পৃথক্‌ অস্তিত্ব নাই ৷ তিনি “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ”। কিরণ বিক্ষুরণ জ্যোতিঃর বিশেষত্ব। এই কিরণ-বিস্ফুরণ হইতেই জগতের অভিব্যক্তি । কিরণ যেমন “জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ” হইতে পৃথক্‌ নহে, সেইরূপ জগৎ ব্রহধ হইতে পৃথক্‌ নহে । ১০৩। *পারমাধিক দৃষ্টিতে এর হইলেও, ব্যাবহারিক জগতের 'অপলাপ করা যায়না । যে কারণেই হউক, যখন আমর! ব্যাবহারিক জগতের অন্তু হ্‌ইয়া পড়িয়াছি ও ব্যবহার সম্পাদন করা এবং ব্যাবহারিক জগৎ হুইতে ক্রমশঃ আমাদিগের নিজ স্বরূপে প্রত্যাবর্তন করিবার জন্য প্রচেষ্টা প্রয়োগ, আমাদের নিয়তি, তখন ব্যাবহারিক জগতের-_আপেক্ষিকসতাতা অস্বীকার করা যায় না। যতদিন আমাদিগের সম্বন্ধে ব্যাবহারিক জগৎ URES ডে ব্যবহার সম্পাদন চলিতে থাকিবে, ততদিন জগৎ হি সৃষ্টিকর্তা, শাস্ত্রের উপদেশ প্রভৃতি ১৫৮ ব্রহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত সমুদায় মানিয়া পরমপুরুঘার্থ পথে অগ্রসর হইতে হইবে । ততদিন হৃদয়ের, অন্তস্থলে দৃঢ় বিশ্বাস করিতে হইবে যে__ ঈশ্বরঃ সব্বভূতানাং হ্দ্েশেহজ্জুন তিষ্ঠতি ৷ ভ্রাময়ন্‌ সৰ্ব্বভুতানি ন্ত্রারটানি মায়য়া ॥ গীঃ ১৮৬১ তমেব শরণং গচ্ছ সব্বভাবেন ভারত ! তৎপ্রসাদাৎ পরাং শান্তিং স্থানং প্রাপাস্তসি শাশ্বতম্‌॥ গীঃ ১৮৬২ ততদিন পর্য্যন্ত আমাদিগকে বুঝিতে হইবে যে, সমুদায় ধশ্মাধশ্ম পরিত্যাগ করিয়। ভগবানে শরণাগতি প্রয়োজন ৷ শরণ গ্রহণ করিলেই ভগবান্‌ সমুদায় সুসম্পন্ন করিয়া দিবেন। ইহা যে তাঁহার নিজের অঙ্গীকার। কুরুক্ষেত্র রণাঙ্গণে সম্মিলিত জীবগণের সমক্ষে উদাত্ত কণ্ঠে বলিয়াছেন £-_ সব্ববধর্ম্মান্‌ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ | অহং ত্বাং সর্ববপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ ॥ গীঃ ১৮:৬৬ ১০৪। “ভগবান্‌ যে সর্বাত্মক, তাহ! পূর্বের বলা হইয়াছে। কঠ শ্রুতি একটি মন্ত্রে ইহ! অতি সুন্দরভাবে বিবৃত করিয়াছেন। উহ! ভগবদ্রহস্ত ». অতি সংক্ষেপে জ্ঞাপনে অত্যন্ত উপযোগী বলিয়া উহা উদ্ধৃত করিবার প্রলোভন ত্যাগ করিতে পারিলাম না। মন্ত্রট এই £__ হংসঃ শুচিষদ্‌ বন্তরন্তরিক্ষসদ্ধোতা, বেদিষদতিথিছুরোণসৎ। নুষদ্‌ বরসদ্‌ ঝতসদ্‌ ব্যোমসদ্‌ অজ্ঞ! গোজ! খতজা অদ্রিজা খতং বৃহৎ ॥ কঠ-২৷২৷২৷ পরত্রহ্ম, পরমাত্মা বা ভগবান্‌ স্ব্পুরে বাস করেন বলিয়__“হংসঃ” নামে প্রসিদ্ধ ৷ রব গমন করেন বলিয়া__উক্ত নামের সার্থকতা ৷ “শুচি” বা দ্যুলোকে স্থ্যরূপে অবস্থান করেন বলিয়া__“শুচিষৎ”, সমস্ত তকে বাসস্থান প্রদান করেন বলিয়া__“বহু”, অন্তরিক্ষে (আকাশে) বাযুবূপে অবস্থান করেন বলিয়া__“অস্তরিক্ষস», স্বয়ং অগ্নি (জ্ঞান) স্বরূপ বলিয়া__-অথব! যে আত্মারূপে শব্দাদি বিষয় সকল ভোগ করেন বলিয়া-_ “হোতা”, পৃথিবীরূপ বেদিতে উক্তরূপ হোতার আয়ে বাস করেন বলিয়া__“বেদিষং,. তিনিই সোমরূপী “অতিথি” এবং সোম বা ভোগ্যবূপে দুরোণে বা কলসে অবস্থান করেন বলিয়া-_্দুরোণসৎ ! ১ খ১। ১পাঃ। ২ অধি। ২ স্ুঃ যাহ স্ব! মনুষ্য সমূহে অবস্থান করেন বলিয়া__“নৃষৎ»*দেবতা। প্রভৃতি শ্রেষ্ঠ ভূতে অবস্থান করেন বলিয়া-_-“বরসৎ্চ। খত যজ্ঞ বা যজ্ঞফল-_কর্মফল-__অথব৷ জগঙ্চক্র পরিচালনের নিয়মপরম্পরা প্রভৃতিতে অবস্থান করেন বলিয়া__এখতসৎ” । আকাশে প্রাণ-শক্তির কারণীভূত তেজঃরূপে অবস্থান করেন বলিয়া__“ব্যোমসৎ”। জলে পদ্ম, কুঘুদ, কহলার, শঙ্খ, শঙ্ক, মুক্তা, মকর, তিমি, মত প্রভৃতি রূপে অবস্থান করেন বলিয়া_-“অক্জা”, পৃথিবীতে ধান্ত, গোধৃয, যব, ওষধি প্রভৃতি ও ৃক্ষ-লতাদিরূপে উৎপন্ন হন বলিয়া__“গোজা”, যজ্ঞাঙ্গে দ্রব্যাদিরূপে প্রকটিত হন বলিয়া-_-“খঝতজা”, পর্বত হইতে নদী, প্রবণ, ধাতু প্রভৃতি আকারে প্রকাশ পান বলিয়া-_-“অদ্রিজা”, তিনি সত্যন্বরপ, সর্ধাত্মা। হইয়াও অবিতথ স্বভাব বলিয়া--“খত” এবং সর্ব জগতের কারণ বলিয়া__দবুহৎ্চ) । [উপরে “হংসঃ”পদের অর্থ শ্রীমচ্ছ্করাচার্ধ্যের ভাম্যানুসারে দেওয়! হইয়াছে আমার মনে হয় যে, উহার আর একটি সুন্দর অর্থ হইতে পারে । *“হংস:*- “অহং4-সঃ”= আমিই সেই__'অহংএর “ম” কারের লোপ। ইহার অর্থ হইতেছে- ত্রঙ্গা হইতে স্থাবর পর্য্যন্ত অহং-_ প্রত্যয় বেছ্য যতকিছু “হংস” পদের ব্যাপক অর্থ। একখও প্রস্তর বা একতাল মৃত্তিকা ও তাহার আকার, পরিমাণ, গুরুত্ব, ভার প্রভৃতি অপর হইতে পৃথক হওয়া হেতু, “অহং”? প্রত্যয়ের পর্ধ্যায়ে কেন না পড়িবে? বিশেষতঃ যখন সমুদায়ই চিতের প্রকাশ- ভাব, তখন উক্তরূপ অর্থও সঙ্গত কেন না হইবে? পরস্থিত শুচিষৎ হইতে - খতং-বৃহৎ প্রভৃতি সমুদরায়গুলি--“হংস” পদের দৃষ্টান্ত স্বরূপ মনে কেন না করা যাইবে? স্থাবরেও অহং প্রত্যয়ভাব বর্তমান, তাহা বশিষ্ঠদেব যোগবাশিষ্টে নিৰ্ব্বাণ উত্তরভাগে-১৭৩ অধ্যায়ে-__৩-৪-৫ শ্লোকে নুম্পষ্ট বলিয়াছেন । গ্রস্ বাহুল্য পরিহারের জন্য উদ্ধৃত করিলাম না। ] এই মন্ত্ৰটি হইতে আমরা বুঝিলাম যে, ব্যবহারিক জগতের যত কিছু সমুদায় ভগবানের প্রকাশমৃত্তি। আমাদের ব্যবহার সম্পাদনের জন্য উহাদের প্রকটন। ছান্দোগ্য শ্রুতিতে ৪1৫1২-৩ মন্ত্রে ব্রহ্মের এক পাদের নাম “প্রকাশবান” উক্ত হইয়াছে । ২৫) ব্যাবহারিক জগৎ । টু ১০৫ । উপরের আলোচনায় আমরা ব্যাবহারিক জগতের উল্লেখ পাইয়াছি। ব্যাবহারিক জগতের পৃথক্‌ নাম শুনিয়া মনে সন্দেহ উতে পারে যে তবে পারমাধিক জগৎ বলিয়া কি অন্য একটি হ্গৎ আছে। ইহার উত্তর এই যে নিত্যধামকে পারমাধিক জগণ বলা হইয়া থাকে, তাহা হইতে FS 5 ১৬০ রহ্বস্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত পৃ্ধকত্ব বুঝাইবার জন্য “মায়াপ্রপঞ্চ”_কে “ব্যাবহারিক জগৎ” বলা হয়। ত্রিপাদ বিঙুঁতি মহানারায়ণোপনিষদে উক্ত হইয়াছে যে, বহ্ম-পরমতত্ব ভগবানের এক পাদে এই প্রপঞ্চ জগৎ-_ইহ| অবিদ্ভাপাদ নামে কথিত, অন্ত ত্রিপাদ অমৃত লোকে অবস্থিত। পুরুষস্থক্তও বলিয়াছেন “পাদোহম্ত বিশ্বাতৃতানি, ত্রিপাদস্তাহমৃতং দিবি”_এক পাদে এই প্রপঞ্চ জগৎ ও তদস্তভূক্তি ভৃতজাত, অন্ত ত্রিপাদ অম্বতলোকে ৷ এই এক পাদ__“অবিদ্যাপাদ” বলিয়। কথিত হইবার কারণ এই যে, এই পাদে অবিগ্য! বা ভগবানের বহিরঙ্গা-শক্কি-বূপ! মায়ার প্রভাব, ভগবানেরই সংকরে ক্রিয়াশীল। ইহারই অপর নাম “মায়াপ্রপঞ্চ”। ১১৭ অনুচ্ছেদে যে কৃষ্টি চিত্র দেওয়া হইয়াছে, উহাতে ত্রিপাদ বিভূতি মহানারায়ণোপনিষদে কথিত অবিদ্যা বা মায়াকে বিশ্লেষণ করিয়া, প্রধান বা গুণমারা, অবিদ্তা বা জ্রীবমায়| এবং বি্ভা__এই'তন নামে দেখান হইয়াছে। মনে রাখিতে হইবে যে, এই বিগ্ভা__নিরপেক্ষ ব্রহ্ষবিদ্যা নহে-_ইহা৷ অবিষ্ঠার সহিত আপেক্ষিক সম্বন্ধে সম্বপ্ধ__ইহার দ্বার! অবিদ্ভার শক্তি প্রতিহত ও পরাভূত হইয়া থাকে । প্রধান বা গুণযায়। হইতে বিশ্বের অভিব্যক্তি, উক্ত চিত্র অনুধাবন করিলে বুঝা যাইবে। ইহা! “প্রাধানিক হুষ্ট” বলিয়া বৈষ্ণবাচাৰ্য্যগণের দ্বারা কথিত। তাহারা বলেন, ইহা৷ একান্তিক মিথ্যা নহে, নশ্বর মাত্র। ইহার সাক্ষাৎ পরে পাইব। এই প্রাধানিক স্থ্ট_বিদ্বান্‌ ও অবিদ্ধান্‌ উভয়ের তুল্যরূপে প্রত্যক্ষসিদ্ধ। বিদ্বান্‌ অর্থাৎ ব্ৰহ্মজ্ঞান বিশিষ্ট জনগণ ইহাকে কিরূপ ভাবে দর্শন করেন, তাহার পরিচয় ভাগবত ২৯ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ১১।২।৩৯ প্লোকে দিয়াছেন । : তাহারা যত কিছু দেখেন, সমুদায় শ্রহরির শরীর মনে করিয়া ভক্তিভরে অনন্তচিত্তে প্রণাম নিবেদন করেন। কিন্ত অবিদ্বান্‌, সাধারণ মানব কি তাহা করিতে পারেন? আমর] সাধারণ, মানব, অবিদ্যার অন্ধকারে নিমজ্জিত। আমাদের শরীর গ্রাধানিক স্বর উপাদানীভৃত, পঞ্চমহাভূত, মনঃ, বুদ্ধি, “অহংকার প্রভৃতির দ্বারা গঠিত হইলেও এবং উহ! আমাদের আত্ম] হইতে পৃথক, ইহ! মুখে আওুড়াইয়া৷ গেলেও, উক্ত অসৎ শরীরের-_আত্মভাব আরোপ করিয়া “আমি কুশ, আমি রুগ্ন, আমি দুঃখী, আমি দরিদ্র, আমার পুত্র কন্যা, আমার স্ত্রী আমার গৃহ, আমার সম্পন্তি”_ প্রভৃতি অবিদ্যা প্রচোদিত এবং সেকারণ মিথ্যা সম্বন্ধ পাতাইয়া দুঃখ, ক্লেশ, যন্ত্রণা ভোগ করিয়া থাকি। ইহাই আমাদের ধ্যাবহারিক জগ২। আমাদের জীবিত কালে, আমরা আমাদের চতুর্দিকে স্থাবর-জঙ্গম যাহা কিছু আমরা আমাদের ইন্দরিযদবারে দর্শন, শ্রবণ, ভ্রাণ গ্রহণ, আস্বাদন, শীতোষ্কাদি অনুভব করিয়া থাকি, সমুদায় লয় আমাদের ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৬১ ব্যাবহারিক জগৎ্। আমাদের আত্মীয়, শত্রু, বন্ধু, প্রতিবেশী, উদাসীন প্রত্ৃতি সর্বপ্রকার মানবের সহিত, পশু, পক্ষী, কীট, পতঙ্গ প্রভৃতি সর্বপ্রকার জীবের সহিত, পাথর-কাঠ-_-জল-ফুল-ফল-শস্ত প্রভৃতির সহিত ব্যবহার-_ইহার অস্তভূক্তি বলিয়া ইহার নাম ব্যাবহারিক জগৎ। ১০৬। ভগবান্‌ শঙ্কর[চার্ধ্য ও তাহার পদানুসারী অদ্বৈতপন্থিগণ, জগৎ প্রপঞ্চকে অর্থাৎ প্রাধানিক ও ব্যাবহারিক উভয়কে, রজ্জু_সর্পের ন্যায় মিথ্যা বলিয়া থাকেন । বৈষ্ণবাচার্ধ্গণ বলেন যে,_রজ্জু ও সর্প উভয়েরই আপেক্ষিক সত্যতা বর্তমান, কিন্তু উহাদের পরম্পর সম্বন্ধ মাত্রই মিথ্যা_উক্ত সম্বন্ধ ভ্রান্তি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, সুতরাং মিথ্যা ভিন্ন আর কি হইবে? কিন্তু উক্ত সম্বন্ধ মিথ্যা বলিয়া, যেমন রজ্জব ও সর্পকে মিথ্যা বল। যুক্তি ও বিচার বহিভূত, সেইরূপ প্রাধানিক স্থটি_জগৎ প্রপঞ্চ, দেহ, গেহ, ধন, জন প্রভূতিতে “আমি ও আমার’ জ্ঞানই মিথ্যা । এই সম্বন্ধ আমরা অবিদ্যা বশত: পাতাইয়া থাকি। এ সম্বন্ধ মিথ্যা হইলেই জগৎ প্ৰপঞ্চ, দেহ, গেহ প্রভৃতি মিথ্যা হইবে কেন? উহার! ত আমাদের কৃত নহে। উহারা ত ভগবানেরই বিভূতি বিকাশ । খগ.বেদের-_ পুরুষস্ক্তে স্পষ্ট কথিত আছে “পুরুষ এবেদং সর্ব যদ্ভূতং যচ্চ ভাব্যম্”__পরিদৃশ্ঠমান ও তাহার অন্তর্ভুক্ত যা- কিছু, ভূত ও ভবিষ্যৎ বিশ্বের জীবগণ ও তাহাদের অন্তর্ভুক্ত যা কিছু-সমুদায় পুরুষই। ছান্দোগ্য শ্রতিও স্পট বলিয়াছেন, “পর্বং খবিদং ত্্ন”_পরিদৃগ্ঠমান সর্ব ব্রদ্সই। অদ্ৈতপন্থিগণ বলেন, উহ! আমরা তত্বতঃ স্বীকার করি। উত্তরে বৈষ্ণবাচার্ধ্যগণ বলেন, শুধু তত্বতঃ কেন? জীবসথ্ সম্বন্ধ মিথ্যা বল, তাহাতে আপত্তি নাই, ঈশস্থষট যাহা কিছু, তাহাকে “সর্বকাল-সত্তাক” সত্য না বল, তাহাতেও আপত্তি নাই, কিন্তু উহা একান্তিক মিথ্যা হইবে কেন? ভগবানের সংকল্প বশতঃ নব্বরত্ব উহার সহিত জড়িত। উহার আপেক্ষিক সত্যতা স্বীকার করিবে না কেন? সাধারণ ভাবে উভয়ের মতবাদ কথিত হইল। প্রণিধান পূর্বক অনুধাবন করিলে প্রতীয়মান হইবে যে, বিরোধ শুধু তর্ক শাস্ত্রের বিতর্ক মাত্র_ বুদ্ধির ক্রিয়া ভিন, আর কিছু নহে। ভগবান্‌ শঙ্করাচার্ 27580015105, সত্য বলিয়াছেন, সে কারণ যাহা৷ অসর্বকাল-সত্তাক_অন্ত কথায় নশ্বর, তাহ! তাহার উক্ত পরিভাবান্থারে মিথ্য। পর্যায়ে পড়িতে বাধ্য। অতএব বিরোধ শুধু পরিভাষায় মাত্র। অন্য পক্ষে ভগবান্‌ শঙ্করাচারধ্য ব্যারহারির আক অপলাপ করেন নাই, তিনি ইহা স্বীকার করিয়াছেন । চে ১৬২ দ্ধ ও গ্রমদ্ভাগব্ত ১০৭। স্থপ্রসিদ্ধ বৈষ্কবাচাধ্য জীবগোস্বামী বৈষ্ণবাচার্ধ্যগণের উপরে কথিত যুক্তি বিচার গ্রহণ করিয়া পূর্বে ৫৯ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ভাগবতের ১১৩৩ শ্লোকের তাহার ক্রমসন্দর্ত টাকায় বলিতেছেন যে, ব্রহ্ম বা ভগবান্‌ (১) তাহার. স্বরূপে, (২) তন্রপ বৈভবে, (৩) জীব, (৪) প্রকৃতি বা প্রধান এই চারিরূপে চির বিদ্যমান৷ দৃষ্টান্ত স্বরূপ, তিনি স্র্ধ্যের নাম উল্লেখ করিয়াছেম। সূর্য্য বলিলে, যেমন আমরা! মণ্ডলের অন্তরস্থ (১) জ্যোতির্ময় সবিতৃ মণ্ডল মধাবর্তী নারায়ণ, (২) মণ্ডলের বাহিরে তেজোমণ্ডল, (ইংরাজী নাম Photosphere ), (৩) তেজোমওল হইতে সর্বদিকে প্রস্থত রশ্মি প্রবাহ, (৪) প্ৰতিচ্ছায়া বা আভাস ( Radiated ব| diffused rays), এই চারিভাব একত্রে ধারণ! করিয়া থাকি, ব্রহ্ম বা ভগবান্‌ সম্বন্ধেও সেই প্রকার। কেন্স্থ তিনি--ভগবান্‌ বশিষ্ঠদেব কথিত (১) “চিদণু? রূপে, (২) তাহার রূপ বৈভবে-__অর্থাৎ পুরুষন্থক্তের ভাষায় পাদবিভূতি ও ত্রিপাদ বিভ্ৃতিরূপে (৩) জীবন্ূপে ও (৪) প্রধান বা! প্রকৃতি রূপে চির বিদ্যমান । স্থৃতরাং সৃষ্টি চির- বিদ্যমান৷ স্ষ্টির অন্ততুক্তি__অসংখ্য ব্রহ্ধাগুগণের মধ্যে, কোনও বিশেষ কারণে কোনও বিশেষ ব্রহ্মা প্রলয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হইলেও সমগ্র স্থষ্টর বিনাশ নাই। প্রবাহূপে চির বিদ্যমান । ইহাই সঙ্গত। চিদথুর স্ফুরণ ত চির বিদ্যমান এইজন্য মাওক্য কারিকায় ও অধ্যাত্মরামায়ণে উহ! “সরুদ্‌ বিভাতম্” বল! হইয়াছে । “সকৃৎ” শব্দের অর্থ_-একবার মাত্র বটে। কিন্তু উক্ত “সকুৎ বিভাতম্” পদে “সক্ৃৎ্” সংখ্যাব্চক “এক” অর্থে ব্যবহৃত হয় নাই। দীর্চি কখনও বৃদ্ধি বা ক্ষয় প্রাপ্ত হয় না, সমাস ওজ্জল্যে চিরবর্তমান, ইহা প্রকাশ করাই অভিপ্রায় । ১*৮। স্থষ্টি প্রবাহরূপে চির বিদ্যমান বল! হইয়াছে। . ইহার প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত আমাদের শরীরা্যন্তরস্থ রক্ত কণিকায় দেখিতে পাই। উহার! এত ক্ষুদ্র যে স্চ্যগ্র পরিম্ততি এক বিন্দু রক্তে, উহাদের লক্ষ লক্ষ বর্তমান থাকে। শক্তিশালী অগুবীক্ষণের সাহায্যে, উহার! আমাদের প্রত্যক্ষের বিষয়ীভূত হইয়াছে। উহার! জীবাণু--উহাদের জন্ম, বৃদ্ধি, সন্তানোৎপত্তি, নাশ__সাধারণ জীবের স্তায় বর্তমান আছে। উহাদের প্রত্যেকের জীবিত কাল অতি অল্প! উহার! আমাদের দেহের বর্ধন, পোষণ, রক্ষণ করিয়া থাকে। উহাদের কাহারও কাহারও মৃত্যুতে আমাদের দেহের কোনও ক্ষতি হয় না । অন্য রর্জ- টা ক জাল ব্ৰহ্মাণ্ড প্রলয়ে ধ্বংসপ্রা্থ হইলে, অন্ত ব্রদ্ধাও ১খহ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থুঃ ১৬৩ অভিব্যক্ত হইয়া উহার স্থান পূরণ করিয়া থাকে । সৃতরাং স্থাষ্ট অনাদি ও প্রবাহরূপে যে চির বিদ্যমান ইহা বুঝা গেল৷ ' আচার্য্য জীবগোস্বামীর উপরে উদ্ধত উক্তির উপর ভিত্তি করিয়া, ভাগবতের টাকাকার মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত ৬ বিশ্বনাথ চক্রবর্তী মহাশয় লিখিতেছেন £__ কার্ধ্যং প্রাধানিকং সত্যং কাযমারিগ্ঠকং মৃষা । নিত্যং তদ্ভক্তিসন্বন্ধমিদং তৎ ত্ৰিতয়াত্মকম্‌ ॥১ প্রাধানিকাঃ স্থর্দেহাস্তদ্ধর্শ্মা আবিগকাঃ পুনঃ ! জীবেষু তত্তুৎ সম্বন্ধো ভক্তিশ্চেন্নিগুণাশ্চক ॥২ চিজ্জীবমায়৷ নিত্যাঃ স্থ্যস্তিত্রঃ কৃষ্ণস্য শক্তয়ঃ ৷ তদ্বৃত্তয়শ্চ তাভিঃ স ভাত্যেকঃ পরমেশ্বরঃ ॥৩ কার্ধ্যকারণয়োরৈক্যাচ্ছক্তিঃ শক্তিমতোরপি। একমেবাছয়ং ব্ৰহ্ম নেহ নানান্তি কিঞ্চন? ॥৪ ভাগবতের ২৯1৩৫ শ্লোকের বিশ্বনাথ চক্রবত্তার টীকা । প্রাধানিক কাৰ্য্য (স্থষ্টি) সত্য, আবিদ্যক সৃষ্টি মিথ্যা । ভগবানে জীবের ভক্তি সম্বন্ধ নিত্য । স্থ্ট জগৎ এই ত্রিতয়াত্মক1১। দেহ সকল প্রাধানিক কার্ধ্য, দেহ ধর্ম সকল যথা ক্ষুৎ-পিপাসা-রোগ-শোক-মোহ ইত্যাদি অবিদ্যা সভুত ৷ জীব সকল এই সকলের সহিত সম্বন্ধে বন্ধ হয়। ভগবানে ভক্তি থাকিলে, উহার! নিগুণ হইয়া থাকে, বদ্ধ করিতে পারে না 1২ চিৎ, জীব ও মায়! তিনই নিত্য, তিন-ই কৃষ্ণের শক্তি। উহাদের ও উহাদের বৃত্তিগণের সহিত, তিনি এক অধ্বিতীয় পরমেস্বররূপে প্রকটিত হন ॥৩৷ কারণ কার্য, শক্তিমান__শক্তি, অভেদ হেতু, একমাত্র অন্বয় ব্র্ই তত্ব । জগতে নানা কিছুই নাই 1৪। অতএব ব্যাবহারিক জগৎ সত্য বলিতে হয় বল, মিথ্যা বলিতে হয় বল, তাহাতে কিছুই আসে যায় না। ভাগৰত ১*1১০/১২ স্নোকে উহা “অস্তি_ নান্তি--ব্যপদ্বেশতৃষিতম্‌’ বলিয়াছেন। তত: যাহাই হউক, কন মুখে তোতা পরীর রায় ই গেলেই কি আমর! মনে প্রাণে অনুভব করিতে পারি যে ব্যাবহারিক জগ মিথ্যা? সংলারের দারুণ পেষণে সংশিষ্ট হইয়া “পরিআহি” ডাক ছাড়িতেছি, শ্রিতাপ দহনে দঞ্চবিদ্ধ হইয়া আলায় ছইফই করিতেছি, EY ১৬৪ বন্ষস্ত্র ও শ্রমদ্ভাগবত তখন কি হৃদয়ে ধারণা করিতে পারি যে, দহন জালা মিথ্যা? যিনি ইহা পারেন, তিনি ত আমার প্রণম্য, তিনি জ্ঞানের অতি উচ্চ ভূমিকায় প্রতিঠিত। তাহার জন্য এ আলোচনা নহে। এ আলোচনা আমার ন্যায় অজ্ঞ, যূর্থ, সাধনহীনের জন্ত। আমার কাছে ব্যাবহারিক জগৎ মিথ্যা নহে, জলস্ত সত্য। ইহার পেষণ ও দহন জালা হইতে অব্যাহতি লাভের জন্য, আমার সমগ্র চেষ্টা সমগ্র শক্তি প্রয়োগ কর! কর্তব্য । সেজন্য পরম দয়াল, জীববত্সল ভগবানের শরণাগতি গ্রহণ আমার সর্বতোভাবে করণীয়। ২৩) ব্ৰহ্ম বা ভগবান যদ্ধি অকর্তাঃ ভবে জগতের কোনও ষ্টিকর্তী আছেন কিনা? ১০৯1 উপরে ৯৫ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ভাগবতের ২1৫১৪ লোক হুইতে আমরা বুঝিয়াছি যে, ভগবান্‌ বাস্থদেবই সমূদায়ের_-একমাত্র কারপ। আবার যোগবাশিষ্ঠের নির্বাণ পূর্ববভাগের ১৫।১২-১৩ জৌক (১০২ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ) হইতে বুবিয়াছি যে, ত্রদ্ধ বা ভগবানের কর্তা হওয়া সম্ভব নহে। ভাগবত ভগবান্‌ বাস্থদেবকেই পরমতত্ব, ব্র্, ভগবান বলিয়া প্ৰতিপাদন করেন। সুতরাং উভয়ের মধ্যে সুম্পষ্ট বিরোধ, দেখা যাইতেছে। এই বিরোধের সমাধান কি? এই বিরোধ সমাধানের জন্য একটু সংক্ষেপ আলোচনা প্রয়োজনীয় মনে করি । ১১০। আমর! ছুই প্রকার দৃষ্টি ভঙ্গীতে ব্রহ্মতত্বের আলোচন! করিয়া থাকি । একটি_ ব্রন্ধ বা ভগবানের স্বরূপনিষ্ট ভাবের দিক হইতে, অপরটি-_তাহার ৃষ্টিগত ভাবের দিক হইতে। স্ষ্টিগতভাব__ব্যাবহারিক জগৎ্ভাব বুঝিতে হইবে, কেননা, আমরা ব্যাবহারিক জীব__উহার সহিতই আমাদের কারবার । পূর্বের বলিয়াছি যে, ভগবান্‌ শঙকরাচা্্য ব্যাবহারিক জগৎ অন্বীকার করেন নাই। সে কারণ, সেদিক হইতে আলোচনা শঙ্করপন্থী অদ্বৈতবাদিগণের পক্ষ হইতে কোনও প্রকার আপত্তিকর হইতে পারে না। ১১১। শ্বরূপনিষ্ঠ ভাবের দিক হইতে আলোচনায় আমরা নিজ নিজ বোধে বুঝিতে পারি যে, ব্রন্ধ বা ভগবান্‌_অবাউমনসোগোচর, নিপু, নিরিবশেষ, অরূপ-_মনে ধারনার বা ভাষায় প্রকাশের বিষয় মর । (ভাগবত ১০৮৭১)। একারণ যখন তিনি মায়ার (তাহার স্বকীয়া সংকল্পশক্তির ) স্লাহচর্য্যে, স্থষ্টি অভিব্যক্ত করেন, তখনই তিনি স্বেচ্ছাবশতঃ, আপনাকে আমাদের ্যান-ধারণার যোগ্য করিয়া প্রকটিত করেন, তখনই ভাষা তাহাকে যথাশক্তি প্রকাশের প্রয়াস পায়, তখনই বেদ নিখিল জীব কল্যাণের জন্য অন্ত টিতে > খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৬৫ সমল ভাবে প্রকাশিত, 'তাহার-_স্বন্ধপ, ভাষার অক্ষমতা সম্বদ্ধে সচেতন থাকিয়াই,_বাধ্য হইয়া উহারই মাধ্যমে, মানবদেহধারী জীব সমাজে, নির্দেশ করিবার চেষ্ট। করেন (ভাগবত ১৮৭১০, অনুচ্ছেদ ৫৮)। এই একই কারণে ভগবান্‌ স্ত্রকার-_তটস্থ লক্ষণে ব্রহ্ম নির্দেশ করিয়াছেন । স্বীয় স্বরূপনিষ্ঠভাবে থাকা কালে, পরমতত্ব বা ভগবান্‌, যে কালে “অমাত পরিমাণ হীন বা শূন্ত পরিমাণ (০100 dimension ), সেই সমকালেই তিনি অনস্তমাত্র ( of infinite dimension )। তখন তিনি “চিদণু’ রূপে বিশ্বের কেন্ত শুধু ভাব পদার্থরূপে বিরাজিত। কিন্তু অনস্তের কেন্দ্র যে কোনও বিন্দু হইতে পারে বলিয়া, অনস্ত দেশে, সর্বত্র “চিদণু’ রূপে বিরাজিত থাকেন । তখন উক্ত সর্বব্যাপী চিদণুতে, ভাবী বিশ্বন্থ অগণ্য ব্রহ্মাওগণের সমুদায় ভাব ও শক্তি তাদাত্ম্য ভাবে, সেই পরমভাব ও অনস্ত শক্তিমান চিদণুতে অতিস্স্মভাবে বর্ত্তমান থাকে, ইহা আমরা গোলকের দৃষ্টান্তে বুঝিবার চেষ্টা করিয়াছি। স্বরূপনিষ্ঠভাবে, সর্বব্যাপী চিদণুতে অবস্থান কালে, তাহার জ্ঞানের ব্যভিচার নাই; ইহা ৬৪ অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ভাগবতের ৩৷৫৷২৪ শ্লোক হইতে বুঝিয়াছি। সে জ্ঞান-_নিরপেক্ষ জ্ঞান_উহ!| কাহারই বী অপেক্ষা রাখিবে। তিনি সর্ধাধার। স্ষ্টি ও স্থিতিকালে বিশ্ব যেমন তাহার আধারে থাকে, প্রলয়ে-সমগ্র বিশ্বের ধ্বংস কল্পনা করিলেও, তখনও নাশপ্রাপ্চ-বিশ্ব তাহার-__আধায়ে বর্তমান থাকে। ভাহার--দৃষ্টিতে অতীত-_ভবিষ্তৎ কাল বিভাগ নাই। সমুদ্বায়ই বন্তমান কাল। একটি দৃষ্টান্ত দ্বারা ইহ! সহজে বুঝিতে পারি। ৯৫-৯৬ পৃষ্ঠায় ৮ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করিলেও বোধ সৌকর্ধযার্থ পুনরায় বলি। একটি জল- কণিকা সাগর হইতে বাষ্পাকারে মেঘরূপে আকাশে কিছুকাল অবস্থানের পর, ুষ্টিরপে পৃথিবী-পৃষ্ঠে পড়িয়া, অন্য অসংখ্য জল -কণার সঙ্গে মিলিয়া সাগরে পুনরায় পড়িল । ইহাতে, প্রথমে সাগরে থাকা, আকাশে অবস্থান ও পৃথিবী পৃষ্ঠে পতন সম্বন্ধে আমাদের দৃষ্টিতে অতীতের-_ঘটনা ও সাগরে পুনঃ অবস্থান__ বর্তমান কালের ঘটনা বলিয়! প্রতীত হয় বটে, কিন্তু আকাশ-কি সাগর, কি মেঘ, কি পৃথিবী পৃষ্ঠ সমুদায়ের আধার বলিয়া-_আকাশে উহা সর্বদাই বর্তমান, আকাশ সম্বন্ধে উহার অতীত বা৷ ভবিষ্যৎ নাই। সেইরূপ ধিনি ভূমা, সর্ধাধার__ তাহার আধারে কি কটি, কি স্থিতি, কি প্রলয়ে, সমগ্র বিশ্ব_তাহার সবকিছুর সহিত চিরবর্তমান। স্থতরাং তাহার-্রপনি্ভাবে অবস্থান কালে, তাঁহার দৃষ্টিতে, হু্ট-স্থিতি-প্রলয় নাই ক্ষ্টিকর্তা কোথা হইতে থাকিবে? ১১২। যখন সেই ভূমা বা সর্কাধার ব! চিদণু বা ভগবান্‌, নিজের ঘ্বরূণ_ ক ১৬৬ ব্রত ও শ্রীমদ্ভাগবত অপ্রচ্যুত ভাবে বর্তমান রাবিয়াই, থেচ্ছাবশতঃ মায়ার আবরণে উহা! সাময়িক ভাবে আবৃত করিয়া, মায়ার সহিত ক্রীড়ার অভিনয়ে স্থষ্টি অভিব্যক্ত করেন, তখন তিনি সৃষ্টিকর্তা, সগ্ডণ, সবিশেষ, সাকার-_ ব্রন্দ। আমরা ব্যবহারিক জীব, তাহার সুই দেশকালের অন্ততুক্ত ব্যাবহারিক জগৎ আমাদের কর্মক্ষত্র। সাক্ষাৎ ৷ সম্বন্ধে ভাহার সহিতই আমাদের সম্পর্ক । নিপুণ, নিব্বিশেষ, স্বর্ূপনিষ্ঠভাবে | অবস্থিত ব্র্বকে প্রগাঢ় ভক্তির সহিত দুরে রাবিয়া, আমর! তাহারই সুষ্টিগতভাবে প্রকটিত, সপ্তণ, সবিশেষ, সাকার ভগবানকে লইয়া কি আধিভৌতিক, কি আধ্যাত্মিক, কি আধিদৈবিক সমুদায় ব্যবহার নির্বাহ করিয়া থাকি। “দুরে রাখিয়া”__বলায়, কেহ যেন বুঝিবেন না যে, স্বরূপনিষ্ট ও স্ষ্টিশত ভাব__-উভয়ের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ অভিপ্রেত, বল! বাহুল্য যে পার্থক্য মাত্র নাই। ভগবান্‌ হৃত্রকার-__“উভয়ব্যপদেশাৎ তু অহিকুণলব”_-৩।২।২৭ সুত্রে প্ৰতিপাদন করিয়াছেন যে, অহি (সর্প) যেমন কখনও কুণ্ডলাকারে এবং কখনও সরলাকারে__থাকে, তাহাতে তাহার স্বরূপের কোনও ব্যত্যয় হয় না, সেইরূপ ব্রহ্ম বা ভগবানের-__সবিশেষ-নির্িশেষ, যূর্ত-অযূর্ত ভাব, তাহার-স্বরূপ হইতে অভেদ, ইহা সর্বদাই মনে রাখিতে হইবে। হতরাং আমরা বুঝিলাম যে, যিনি চিদণু, তিনিই ব্রক্ম_পরমাত্ম/--ভগবান্‌, তিনিই নারায়ণ__বাহ্থদেব৮ রাম-_কুষ্চ__শিব- দূর্গ-_কাঁলী ইত্যাদি । স্থতরাং স্বরূপনিষ্টভাবে সষ্টি ন! থাকায় সুষ্টিকর্তাও নাই। ্ৃষ্টিগত বা ব্যাবহারিক ভাবে স্থ্ট জগৎ বর্তমান থাকায়, সৃপ্টিকর্তাও বর্তমান আছেন । বল! বাহুল্য যে, ব্যাবহারিক ভাব হইতে মুক্তি লাভই মোক্ষ, ইহার জন্যই বেদাস্তালোচনা । ব্যাবছারিক জগতে ভগবান ও জীব । ১১৩। তিনি জীবকে কত ভালোবাসেন, তাহা মানবদেহ্ধারী জীবগণকে বুঝাইবার জন্য কৌন্ততব্যপদেশে সমষ্টি জীবচৈতন্য, অলঙ্কার-স্বরূপ নিজ বক্ষে ধারণ করিয়া আছেন। (ভাগবত ১২।১১/৮)। তিনি তাঁহার ভক্তের নিকট অপরাধী দুর্বাসা৷ খষিকে নিজ ভক্ত বংসলত! বুঝাইবার জন্য বলিয়াছিলেন £_ “অহং ভক্ত পরাধীনহ্‌ স্বতন্ত্র ইব দ্বিজ” (ভাগবত ৯181৪৬)।. তিনিই নিজের ও নিজের অন্তরস্থ জগতের প্রবিত্রতা৷ সম্পাদনের জন্য নিরপেক্ষ ভক্তগণের পদধুলিতে নান করিতে কুষ্ঠিত হয়েন না। ( অনুচ্ছেদ ৩৭। ভাগবত ১১।১৪। ১৫ )। তিনিই জীব কল্যানের জন্ত আদর্শ মানব যৃত্তি ধারণ পূর্বক, আমাদেরই একজন হইয়া আমাদেরই স্থধ দুঃখের ভাগী হওতঃ সমুদ্রতীরে-_লক্কাপষুরের প্রাক্কালে সমবেত অগণ্য সৈন্তগণের সমক্ষে বলিয়াছিলেনঃ__বিভীষণ পরম ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থং ১৬৭ শক্ৰ রাবণের সহোদর ভ্রাতা বটে, কিন্ত আমার শরণ গ্রহণ করিয়াছেন, সে কারণ তিনি সর্ব্বতোভাবে রক্ষনীয়, কারণ,__ সকৃদেব প্রপন্নায় তবান্মীতি যাচতে অভয়ং সব্ববভতেভ্যো দদাম্যেতদ্‌ ব্রতং মম ॥ অধ্যাত্বরামায়ণ ৬১২ একবার মাত্র “আমি তোমার” বলিয়া যে ব্যক্তি, আমার প্রপন্ন হয়, আমি সর্ধভূত হইতে অভয় তাহাকে দান করি। ইহা আমার ব্রত। অঃ রা ৬১২ তিনিই কুরুক্ষেত্র সমরাঙ্গনে উভয় পক্ষের অষ্টাদশ অক্ষৌহিণী পরম্পরকে আক্রমণ করিতে সমুতস্থক, সৈন্যগণের সমক্ষে, অর্জ্জুনকে উপলক্ষ্য করিয়া মানবদেহধারী জীবগণের অভয় দানের জন্য বলিয়াছিলেন ₹__ মন্মনা ভব মদ্ভক্তো মদ, যাজী মাং নমস্কুরু। মামেবৈষ্যসি সত্যং তে প্রতিজানে প্রিয়োইসি মে ॥ গীঃ ১৮৬৫ তুমি মদ্গত চিত্ত, মদ্ভক্ত, আমার পুঁজনশীল হও ও আমাকে নমস্কার কর, তাহা হইলে আমার প্রপাদলন্ধ জ্ঞানে আমাকেই পাইবে। তোমাকে আমি ইহা সত্য প্রতিজ্ঞা করিয়া বলিতেছি, কেননা তুমি আমার প্রিয়। গীঃ ১৮1৬৫ তাহার নিজের বাক্যান্সারে তিনিই জীব্রে “গতির্ভর্তা প্রভুঃ সাক্ষী নিবাসঃ শরণং নুহৃৎ। প্রভবঃ প্রলয়ঃ স্থানং নিধানং বীজমব্যয়ম ॥ গীঃ ৯1১৮ তিনি নিজের পরিচয়ে সুস্পষ্ট ভাবে বলিয়াছেন £_ ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতিঃ স্থুয়তে সচরাচরম্‌ গীঃ ৯1১০ অর্থাৎ তিনিই সৃষ্টিকর্তা এরূপ পরিচয় দিবার কারণ কি? তাহাও নিজে বা ব্যক্ত করিয়াছেন: অহং সর্ববস্ত প্রভবে। মত্তঃ সর্ববং প্রবর্তৃতে । ইতি মত! ভজন্তে মাং বুধা ভাবসমন্থিতাঃ॥ গীঃ ১০৮ আমিই সকলের উৎপত্তির হেতু। আমা হইতেই বুদ্ধিজ্ঞানাদি সমদায় প্রবর্তিত হয়, ইহা জানিয়া বুধগণ (যাহারা নিজ নিজ নিঃশরেমদ প্রাপ্তির উপায় অবধারণ করিতে কুশল ) তাঁহার! প্রীতিযু্ত হয় আমা গীঃ ১০৮ । এরূপ ভজনার ফল কি? তাহাও নিজমূখে বলিতেছেন :_ ১৬৮ বরহ্ষম্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত তেষাং সততযুক্তানাং ভজতাং শ্রীতিপূবর্ধ কম্‌। দদামি বুদ্ধিযোগং তং যেন মামুপযান্তি তে ॥ গীঃ ১০১০ এইরূপ আমাতে সতত যুক্ত চিত্ত, প্রীতিপূর্বক ভজনকারিগণকে সেই বুদ্ধি- রূপ উপায় প্রদান করি, যে উপায়ে তাহারা আমাকে লাভ করে । গীঃ ১০১০। এরূপ ভজনা! কি সকলের পক্ষে সম্ভব? অথবা কেবল বুধগণই অধিকারী? এ প্রশ্নের উত্তর সুম্পষ্টভাবে নিজমুখে বলিতেছেন *- সমোইহং সব্ব'ভূতেষু ন মে দেষ্যোহত্তি ন প্রিয়ঃ। যে ভজস্তি তু মাং ভক্ত্যা ময়ি তে তেষু চাপাহম্‌ ৷ গীঃ ৯২৯ অপি চেৎ সুছুরাচারো৷ ভজতে মামনন্তভাক্‌। সাধুরেব স মন্তব্যঃ সমগ, ব্যবসিতো হি সঃ ॥ গীঃ ৯৩০ ক্ষিপ্রং ভ্বতি ধৰ্ম্মাত্ম| শশ্বচ্ছান্তিং নিগচ্ছতি। কৌস্তেয় ! প্রতিজানীহি ন মে ভক্তঃ প্ৰণশ্যতি ॥ গীঃ ৯৷৩১ অর্চ্জনকে উপলক্ষ্য করিয়া আপামর সাধারণ সকল জীবের উদ্দেশে বলিতেছেন £__আমি সর্বভূতে সমান (নিরপেক্ষ )। আমার দ্বেষ্য বা প্রিয় কেহ নাই, তাহা। হইলেও, যাহার! আমাকে ভক্তিপূর্বক ভজন! করে, তাহারা আমাতে অবস্থান করে, আমিও অনুগ্রাহকরূপে__তাহাদিগের__অস্তরে বর্তমান থাকি। গীঃ ৯২৯ অতি দুরাচার ব্যক্তিও যদি অনপ্যচিত্তে আমাকে (অন্য দেবতা হইতে অপৃথকৃভাবে ) ভজন] করে, তাহা! হইলে, তাহাকে সাধু বলিয়া জানিবে, যেহেতু পে, পরমেশ্বরের ভজনেই জীবন সার্থক করিব, এ প্রকার নিশ্চয়াত্মিকা! বুদ্ধিতে বর্তমান। গীঃ ৯৩০ সেই আগেকার-_ছুরাচার-ব্যক্তি শীঘ্রই ধরশাত্মা হয় এবং পরমেশ্বর__নিষ্টারূপ- নিত্যশাস্তি লাভ করে। যদি কেহ ইহা অবিশ্বাস করে, মনে কর, হে অঞ্জন! তুমি নিঃশঙ্কচিত্তে সর্ববসমক্ষে প্রতিজ্ঞা ( শপথ ) করিয়া বলিতে পার ঘে, ছুরাচারী ব্যক্তি আমার ভক্ত হইলে বিনষ্ট হয় না। গীঃ ৯৩১ ১১৪। আপত্তি উত্থাপিত হইতে পারে যে, উপরে উদ্ধৃত উক্তি যিনি করিলেন, তিনি ত সগুণ ব্র্ব__সবিশেষ ও সাকারও বটে। তিনিও নিগুণ, নির্বিবশেষ, নিরাকার, স্বরূপ-নিষ্ঠ_উভয়ে পৃথুক্‌ কিঁ_এক ? ইহার উত্তর ১১২ অনুচ্ছেদে দেওয়া হইয়াছে। তাহা হইলেও ভগবানের নিজের কথাতেই বলি, ১খ:। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৬৯ গীতায় ১৪২৭ শ্লোকে বলিতেছেন £_“ব্রক্মণো হি প্রতিষ্ঠাহহম্৮__-আমি (সগুণ, সবিশেষ, সাকার ব্রহ্ম )__উক্ত নিপুণ, নিব্বিশেষ-নিরাকার ব্রদ্ষের প্রতিষ্ঠা বা প্রতিমা__অর্থাৎ ঘনীভূত যূর্তবূপ। ঘনীভূত প্রকাশ যেমন সূর্ঘম্ডল, আমিও সেইরূপ স্বরূপনিষ্ঠ, নির্ধিবশেষ ব্রন্মের ঘনীভূত রূপ-_উভয়ের মধ্যে ভেদ দূরে থাকুক--উভয়ত্বই বর্ত্তমান নাই । কূর্যমণ্ল ও তাহার প্রকাশ-_ইহাদের মধ্যে কি ভেদ আছে? t ১১৫। ভগবান্‌ গীতায় ৮৷৩ শ্লোকে বলিলেন, “অক্ষরং ব্রহ্ম পরম ”? পরে ১৫৷১৮ শ্লোকে বলিলেন :__ যস্মাৎ ক্ষরমতীতোহহমক্ষরাদপি চোত্তমঃ। অতোহস্মি লোকে বেদে চ প্রথিতঃ পুরুষোত্তমঃ ॥ গীঃ ১৫৷১৮ যেহেতু আমি নিত্যমুক্ত বলিয়! ক্ষর( জড়বর্গ) সমূহকে অতিক্রম করিয়া থাকি এবং নিয়ন্তা বলিয়| অক্ষর (পরব্রহ্ধ) হইতেও উত্তম । একারণ লোকমধ্যে ও বেদে আমি পুরুষোত্তম বলিয়া খ্যাত৷ গীঃ ১৫৷১৮ এই পুক্ষোত্তমই মূল অহম্‌ ৷ ইহারই উক্তি সকল উপরে উদ্ধত হইয়াছে স্থতরাং নির্ধিবশেষ-সবিশেষ, নিগ্ুণ-সগ্ুণ প্রভৃতিতে কোন ভেদ নাই। ভেদ আমাদিগের বুদ্ধির বিশ্লেষিকা শক্তির ক্রিয়া মাত্র। এ শক্তি অবশ্ঠই অন্ত শক্তিমান ভগবানের প্রদত্ত, তাহ! বলাই বাহুল্য । ১১৬। এই প্রসঙ্গে একটি পৌরাণিক কাহিনী মনে পড়িল। সংক্ষেপে উহার উল্লেখের প্রলোভন ত্যাগ করিতে পারিলাম না । একজন মহাবলবান্‌ দৈত্য বুকাস্থর, আপনাকে জগতে অপ্রতিদ্বন্দী করিবার সংকল্পে ভগবান্‌ শিবের আরাধনায় প্রবৃত্ত হইল। শিব ত আশুতোষ। কিছুকালের তপস্থায় তিনি পরিতুষ্ট হইয়া বর দিতে আসিলে, উক্ত দৈত্য অতি আনন্দে প্রণাম করিয়া, বর চাহিল যে, হে দেব! যদি পরিতুষ্ট হইয়া থাকেন, এই বর দিন যে, আমি যাহার মাথায় হস্তাপ্পণ করিব, সে ততক্ষা২ ভন্মীভূত হইবে । শিৰও তথাস্ত বলিলেন. তারপর শিব প্রত্যাবৃত্ত হইবার জন্য পশ্চাৎ ফিরিলেই, দৈত্য উচ্চৈঃস্বরে বলিল, ঠাকুর ! দাড়ান দাড়ান! আপনার বর আপনার মাথায় হাত দিয়াই পরীক্ষা করিয়া লইব। ইহাতে শিব বড়ই সঙ্কটে পড়িয়া দৈতাকে কতই বুঝাইতে চেষ্টা করিলেন, দৈত্য কিছুই না বুৰিয়া ক্ৰমশঃ অগ্রসর হইতে থাকিলে, শিব বেগতিক দেখিয়া, উর্শ্বাসে, ভগবান্‌ পুরুষোত্তম বিষ্ণুর আশ্রয় গ্রহণের অন্ত ধাবিত: হইলেন, দৈত্যও পল্চাৎ পাগ ছুটিল। উভয়েই মি. ১৭০ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্ৰীমদ্ভাগবত প্রায় একই সময়ে পুরুষোত্তম সকাশে উপস্থিত হুইয়া হাপাইতে লাগিলেন। বিষ্ণু, শিবের গায়ে হাত বুলাইয়া আস্ত করতঃ ব্যাপার কি, জিজ্ঞাসা করিলে, উভয়ের মুখ হইতে সমুদায় শ্রবণ পূর্বক ঈষৎ হাসিয়া, দৈত্যকে সম্বোধন করিয়| বলিলেন, তুমি ত পরম শিবভক্ত, কিন্তু এমন বোকা কেন? শিবের প্রদত্ত বর সত্য কিনা, ইহ! পরীক্ষার জন্য এত ছুটাছুটির প্রয়োজন কি? | নিজের মাথ| ত সঙ্গেই রহিয়াছে। উহাতে হাত দিয়া দেখ না। দৈত্য শুনিয়| বলিল, ঠিকই ত। এই বলিয়া, যেমন মাথায় হাত দিল, অমনি নিজে ভম্মীভূত হইয়া গেল। শিব তখন বিপন্ুক্ত হইলেন। ভাগঃ_১০৷৮৮ ও দৈত্যের ন্যায় আমাদেরও বুদ্ধি, ভগবত প্রদত্ত বিশেষিকা শক্তি লাভ করিয়া ভগবানকেই সবিশেষ-_নিব্বিশেষ, সগুণ_নিগুণ ভাবে বিশ্লেষণ করিতে সাহসী হয়। পুরুষোত্তম যখন গুরুরূপে আসিয়া বুদ্ধিকে সম্বোধন কারয়া বলেন, তুমি ত বড় বোকা মেয়ে_-নিজেকেই বিশ্লেষণ করিয়া দেখনা, কি পাও, কোথায় গিয়া পৌছাও। তাহা শুনিয়া বুদ্ধি বলে, তাই ত। বলিয়া নিজেকে বিশ্লেষণ করিতে গিয়া দেখে যে, সে ত মহত্ত্ব হইতে জাত। মহত্ত্ব প্রকৃতি হইতে উৎপন্ন। প্রক্ৃতি-_-ভগবানেরই সংকল্পপাত্মিক শক্তি__শক্তি বলিয়া শক্তিমান হইতে অভিন্ন। বিশ্লেষণে এই তত্বে উপণীত হইলেই, বুদ্ধির আর পৃথক্‌ অস্তিত্ব থাকে না, পুরুষোত্তম ভগবানে লীন হইয়া যায়। তখন কে কার বিশ্লেষণ করে? স্থতরাং বুঝা! গেল যে, সুত্রকার তটস্থ লক্ষণ দিয়া যাহার নির্দেশ করিলেন, তিনি আমাদের বুদ্ধির বিশ্লেষণ অন্থপারে সগ্ুণ-সবিশেষ হইলেও, তিনিই নিধিবশেষ, নিপুণ । ভেদমাত্র নাই । ২৭) জগত সৃষ্টির গ্রকৃতি ও ক্রম চিত্রাকারে দেখান হইল । ১১৭ । বিশ্বস্্টির প্রকৃতি ও ক্রম চিত্রাকারে প্রদশিত । চিদণু-পরমাত্মা -ভগবান্-্রক্মস্রীকৃষ্*সশ্রীরামবাহৃদেব--ণিবুছুগা ইত্যাদি উল === EEE -+৮ স্নন্ত শক্তিমান এ ইত ১... f : ক EE চি্থাশক্তি ডি মি টি ডি রা সি আনন্দ ] নর - I | তু ্‌ রড টিক কও রি হাসি) ১ খঃ। ১ পাহ। ২ অধি। ২ স্যঃ ১৭১ সত্ব-রজঃ-তমোগুণাত্মিক। তি ভাতি প্রি রে 27৯ প্রধান বা প্রকৃতি অবিদ্যা বিদ্ধ ত্রিপাদবিভূতি রুজঃ প্রধান! তমঃ প্রধান সন্থ প্রধান! f Ee = 1 (গুপমায়া ) ( জ্ৰীবমায়! ) এ ক আধ্যাত্মিক আধিদৈবিক Taz এ রা I | আবরিকা! বিক্ষেপিকা নিত্যধাম নিত্যধামবাসী- ভগবানের পার্ষদ | ! (ত্রিপাদ বিভূতি) গণের উপবুক্ত নিতাধাম বামী- তমঃ অজ্ঞান ___ | [ ইন্জিয় গ্রাম ইচ্ছাপূরক [ | | | নি টা মোহ মহামোহ তাদিশ্র অঞ্চতামিন্র | ৪] বাবারা বা 1 ন aol আস্মিতা রাগ দ্বেষ অভিনিবেশ ভক্তিমিশ্র জ্ঞান ও | নির্বাণ মুক্তিক'মী উরস জ্ঞানমিশ্রাভভি সার্গের | সিদ্ধ সাধকগণের মহৎ তদীয়তা-ময় সিদ্ধ সাধক- | কৈবলাধাম I গণের ধাম | [RS SER. | রাগানুগীভক্তি সব্প্রধান বজঃপ্রধান তমঃপ্রধান মার্গের নিন্ধিঞ্চন বা বা বা মদীয়তাময় সিদ্ধ জ্ঞানপ্রধান ক্রিয়া! প্রধান অজ্ঞান প্রধান সাধকগণের ঘাম _ ES AH! 1 | | প্রাণ বা অহংকার 1 ছি চিত্ত মনঃ বুদ্ধি অহংকার স্বত্রতম্ব | Lz 2 বৈকারিক বা মাত্বিক তৈজস বা রাজসিক তামসিক (অতএব) অধিদৈৰ ৰা অধিটাত! | শব্দ স্পর্ণ রূপ রস ভ্রাণ কখন আদান গতি নি 55 উর পঞ্চতন্মাত্র কৰ্ব্বেক্সিয্ণণের ক্রিয়া বা কর্ম্ম। (পঞ্চমহাভুতের সুন্মাংশ ইহ! হইতে মহাভুত ) ১৭২ ব্ৰহ্মহথত্ৰ ও শ্রীঘদ্ভাগবত ২৮) চিত্র পরিচয় ১১৮। উপরে ১১৭ অনুচ্ছেদে যে চিত্রটি দেওয়া হইল, উহ! বিশদরূপে বুঝিবার জন্য উহ! হইতে স্বতঃপ্রকটিত অনুসিদ্ধান্ত উহার পরিচয়রূপে দেওয়া যাইতেছে । (ক) অনন্ত শক্তিমানের অন্তরঙ্গা শক্তি বিকাশে ত্রিপাদবিভূতি, তটস্থ| শরক্তি- বিকাশে-_-জীব ও বহিরঙ্গা শক্তি বিকাশে-পাদবিভূতি অভিব্যক্ত, তত্বৃতঃ পরম- তত্বে অন্তর্-_বহিঃ বা তটস্থভেদ নাই বটে, তাহা হইলে আপেক্ষিকতার অন্তর্ভূক্ত আমাদিগের বোধ সৌকর্ঘযার্থ শাস্ত্র উহাদের কল্পনা করিয়াছেন । প্রকৃতপক্ষে. একই ভাগবতী শক্তি, আমাদের দৃষ্টিতে বিভিন্নরূপে প্রতীয়মান মাত্র । (খ) চিদণুর স্ষুরণ যেমন নিত্য, শাশ্বত, ত্রিপাদবিভূতির অন্তর্ভুক্ত ধাম” সকলও সেইরূপ নিত্য, শাশ্বত। সিদ্ধ সাধকগণের সাধনার বিভিন্ন প্রকৃতি: অনুসারে বিভিন্ন প্রকারের সাধনার সিদ্ধিতে পূর্ন পরিতৃষ্থি দানের জন্য অসংখ্য: নিত্যধাম ভগবানের চিচ্ছক্তিনূপা যোগমায়ার দ্বারা অভিব্যক্ত । (গ) পাদবিভূতির অন্তর্ভুক্ত অগণ্য ব্রহ্মা সকল ভগবানের সংকল্প বশতঃই' নশ্বর । (ঘ) জীব_পাদবিভূতি ও ত্রিপাদ বিভূতি উভয়ের সহিত সম্দ্যুক্ত। কারণ মর্ত্যধামে যাহার যেরূপ সাধনা--নিত্যধামে তাহার সেরূপ প্রাপ্তি । (উ) মন্ত্যধাম ব! পাদবিভূতির সহিত জীবের সম্বন্ধ সাময়িক, আগস্তক- ওনশ্বর। কিন্তু নিত্যধামের সহিত সম্বন্ধ নিত্য, শাশ্বত । (চ) মত্ত্যধামে জ্ঞানমার্গের যে সমুদায় সাধক নির্ব্াণমুক্তি কামনা করেন, সিদ্ধিলাভে তাহারা ত্রিপাদবিভূতির অন্তর্ভুক্ত তুরীয়পাদে অবস্থান করেন । (ছ) ত্রিপাদবিভূতিতে বিষ্াপাদের সাক্ষাৎ পাই। পাদবিভূতিতেও বিগ্ভার অস্তিত্ব দেখিতে পাই। প্রথমোক্ত “বিদ্যা”__নিরপেক্ষ বিছা বা ্ষবি্ঠা_ ত্রান । শেষোক্ত বিদ্যা .আপেক্ষিকতার অস্তভূক্তি-_অবিদ্যানাশ ইহার ক্রিয়া। (জ) মত্যধামে যাহাদের সাধন! ভগবানের দাস, সখা, পরিজন, পিতা, মাতা, কাস্তা প্রভৃতি রূপে অনষ্টিত হয়, সিদ্ধিতে তাহার! ত্রিপাদ বিভূতির: বিদ্যা ও আনন্দপাদের নিজ নিজ যথাযোগ্য C হ্যা] লাক সকলে ৃ প্রতিষ্ঠিত হ্ইয়! পুর্ন ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৭৩ (ঝ) আমাদের পঞ্চভূত নিশ্মিত দেহ, প্রাণ, পঞ্চ জ্ঞানেন্দরিয় পঞ্চ কর্শ্ণেন্সিয়, অস্তরেন্দরিয়_চিত্ত-মনঃ-বুদ্ধি-অহস্কার ও উহাদের সকলের ক্রিয়া গুণ হইতে উৎপন্ন । (এ) চিত্রে “অহংকার” দুই স্থানে দেখান হইয়াছে। একবার চারিটি অস্তরিন্দিয়ের মধ্যে একটি রূপে ও অপরটি মহতত্বের তমঃ প্রধান অংশের অভি- ব্যক্তিরূপে। অন্তরিন্দিয়ণণের একতম -অহংকারকে কোন কোন দার্শনিক বুদ্ধির অভিমানাত্মক কর্তৃগ্রণ বলিয়া মনে করেন। তাঁহাদের মতে বুদ্ধির দুটি বৃত্তি _একটি কর্তৃপ্রাত্বিকা ও অপরটি করণগুণাত্মিকা। প্রথমটিকে তাহারা “অহংকার” নামে ও শেষোক্তটিকে “বুদ্ধি” নামে অভিহিত করেন। চিত্রে ভাগবত মতানুসারে বুদ্ধি হইতে পৃথক্‌ চতুর্থ অস্তরিন্দরিয় রূপে “অহংকারকে” দেখান হইয়াছে। (ট) অন্তরিন্দ্রিয় চতুষ্টয়ের বৃত্তি যথাক্রমে_-চিত্তের অন্ুসন্ধানাত্মিকা মনের সংকল্প__বিকল্পাত্মিকা, বুদ্ধির__নিশ্চয়াত্মিকা ও অহংকারের__অভিমানাত্মিক! ($) অহংকারকে “চিদচিন্ময়-হৃদয়-গ্রন্থি” বলা হইয়া থাকে। চিত্রটি পর্য্যালোচন! করিলে__ইহা পরিস্ফুট হইবে । একদিকে অহংকার-_চিদাভাসে সমুজ্ঞল মহত্তত্বের__সাত্বিক অংশ হইতে অভিব্যক্ত বলিয়া, ইহাতে চিদাভাস উজ্জবলভাবে বর্তমান । অন্যদিকে মহত্তত্বের__তমঃপ্রধান অভিব্যক্তি-অহংকার, উক্ত অভিমানাত্মক কর্তৃত্ব গুণ বিশিষ্ট চিদাভাসে উজ্জল অহংকারের ভোগায়তন দেহ, ইন্দ্রিয়াদি ও তাহাদের কার্ধের উপাদান কারণ হওয়ায় অচিৎ ভাবও ( অবশ্তই তুলনাযূলক ভাবে ) বর্তমান । এ কারণ চিদচিন্সয়। (ড) বিশ্বে সত্বরজঃ-তম:-প্রকৃতির এই তিনগুণ পরস্পর তর-তম্ভাবে মিশ্রিত হইয়া প্রত্যেক পদার্থে অবস্থান করিয়া থাকে। কেবল কোনও গুণের প্রাধান্ত কোনও বস্তুতে পরিলক্ষিত হইলে, তাহাকে সেই গুণ বিশিষ্ট বলিয়া অভিহিত করা হয় মাত্র। গ্রত্রয় অবিমিশ্রভাবে বর্তমান থাকে না। 6) অহংকারেও সেকারণ উক্ত তিনগুণ বর্তমান। উহার সাত্বিকাংশে, অর্থাৎ সতগুণ-প্রধান অংশে জ্ঞান ও কর্ণেন্রিয় পরিচালক দেবতাগণ, রজং-. প্রধান অংশে উক্ত উভয় কোটার ইন্জিয়গণ এবং তমঃপ্রধান অংশে উহাদের ক্রিয়া (যাহা পঞ্চতন্মাত্ৰ নামে, কথিত) এবং তাহা হইতে পঞ্চ মহাভৃত অভিব্যক্ত হয়। চিত্র হইতৈ স্পষ্ট বুঝা যাইতেছে যে, গুগসকল-_-আধিভৌতিক, আধ্যাত্মিক ও আধিদৈবিক এই ত্ৰিবিধ ক্ষেত্রে ক্ৰিয়ালিল হইয়া জগদ্তযাপার সম্পাদন করিয়| থাকে । আরও বুঝা যাইতেছে যে, পঞ্চ মহাভুত--যাহাদিগ্‌কে ১৭৪ ্রন্মহথত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত আমর! জড় বলিয়া মনে করি, তাহা প্রকৃত জড় নহে__চিদাভাসেরই অভিব্যক্তি। প্রত্যেকে চিদাভাস অল্প বিস্তর বর্তমান। ভগবানের সংকল্পবশতঃ জড়বং প্রতীয়মান হয় মাত্র ৷ (৭) ত্রিপাদ বিভূতিপাদেও তুল্যরূপে আদিভৌতিক, আধ্যাত্মিক ও আঁধিদৈবিক- ত্ৰিবিধ ক্ষেত্ৰ চিত্রে দেখান হইয়াছে । বলা বাহুল্য যে, অবিদ্থা পাদে _ উত্ত তিন আধিভৌতিকাদি নামে কথিত ক্ষেত্ৰত্ৰয়ের সহিত উহাদের কোনও সম্পর্ক নাই। তুলনামূলক আলোচনার সুবিধার জন্য, সাদৃ্ দৃষ্টে_উক্ত ভিন নাম ব্যবহার করা হইয়াছে মাত্র । ত্রিপাদ বিভূতিপাদ ত মায় সংস্পর্শের বাইরে, সুতরাং মায়িক আধিভৌতিকাদির সহিত সম্বন্ধ কোথা হইতে থাকিবে? (ত) আধিভৌতিক, আধ্যাত্মিক ও আধিদৈবিক পরস্পর__অতি ঘনিষ্ট সম্বন্ধে সম্বন্ধ । উহার! পরস্পরকে পরম্পর-__অপেক্ষা করিয়া সার্থকতা লাভ করে__ইহা৷ চিত্র হইতে সুস্পষ্ট বুঝ! যাইবে। ১1২1১৪ ত্ত্রের আলোচনায় উদ্ধত ভাগবতের ১১)২২৩০ ল্লৌক ইহা স্পষ্ট বলিয়াছেন। উক্ত স্থত্রের আলোচনা দ্রষ্টব্য । (থ) চিত্র হইতে স্পষ্ট বুঝা গেল যে, আমাদের অস্তরিন্দ্রিয়, জ্ঞানেন্ডরিয়, কর্শ্বেন্সিয় সকলই প্রক্ৃতিজাত শুণত্রয় হইতে উৎপন্ন ৷ উহারাই আমাদের সমুদায় চিন্তা, কল্পনা, বাসন! প্রভৃতি মানসিক ক্রিয়ার, দর্শন-্পর্শন-শ্রবণ প্রভৃতি শারীরিক ক্রিয়ার জনয়িত| ৷ স্থতরাং কর্মের সহিত গুণত্রয়ের এবং সে কারণ বিশ্বের অভিব্যক্তি কারিণী শক্তি_ তরিগুণময়ী মায়ায় অতি ঘনিষ্ট সম্বন্ধ কর্মের সহিত তাহার ফল ভগবান্‌ কর্তৃক সংজড়িত এবং তিনিই জীবের সহিত তৎকৃত কর্মফল যোজন! করিয়াছেন। ্ত্রকারও “ফলমত উপপত্তে+” এ২।৩৮ সুত্রে ইহা! প্ৰতিপাদন করিয়াছেন। ইহা হইতেই সহজেই বুঝিতে পারা যায় যে, গুণসভূত কর্মের ফল ভোগের জন্য, গুণসভূত উপাধির বা দেহের প্রয়োজন ৷ নিরুপাধিক আত্মার কর্ম্মও নাই, ভোগও নাই। এই প্রকারে জগচ্চক্র আবস্তিত হইতেছে। (দ) উপরের যে আলোচনা চিত্র সাহায্যে করা হইল, তাহা হইতে এই সিদ্ধান্ত অপরিহার্্ভাবে আপতিত. হইতেছে যে, কর্ম, তাহার ফল, ফলভোগ সাধন উপাধি, ভোগের স্থান, সমূদায়_ প্রকৃতি হইতে জাত, তখন কর্ণের ছারা, সকলের সহিত কোনও প্রকারের সম্পর্ক শূণ্য, অঙ্গ, উদাসীন, পরমতত্বের.পরিচয় লাভ সম্ভব নহে। ইহাই ১১।১)১ হুত্রের আলোচনায় ন্পষ্ট- ভাবে বল! হইয়াছে । ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৭৫- (ধ) চিত্রে, সৃষ্টির যে প্রকৃতি ও ক্রমের পরিচয় দেওয়া হইল, বল! বাহুল্য, তাহা আমাদের ব্রহ্ষাণ্ডের নিদর্শনে । আমাদের ত্রহ্মাণ্ডে__বিশ্বের অগণ্য ব্রক্মাও- গণের তুলনায়, সমুদ্রবেলায় একটি বালুকণার ন্যায় ক্ষুদ্র নগণ্য হইলেও, ইহার ৃষ্টান্তে আমরা অনুমান করিতে পারি যে, অন্যান্য ব্রদ্মাণ্ডও-_তাহাদের বিশেষ বিশেষ প্রকৃতি ও পরিস্থিতির সহিত যথাযোগ্য সামঞ্তস্ত রক্ষা করিয্না, তাহাদের নিজ নিজ প্রলয়ের পর স্্টিও একই নিয়মে অভিব্যক্ত হয়। (ন) আলোচ্য স্থত্রে “অস্ত” পদের পরিদৃশ্ঠমান প্রপঞ্চ বলিয়া অর্থ কর! হুইয়াছে। ইহ! হইতে বুঝিলে চলিবেন। যে, পরিৃশ্ঠমান প্রপঞ্চ শুধু ভূলেক ও তদন্তর্গত বস্তজাতের মধ্যে নিবদ্ধ। আমাদের ব্রহ্মীও-_চতুরদিশ লোকে গঠিত-__ উহাদের মধ্যে সপ্তলোক__তল, অতল প্রভৃতি ও ত্ান্তভুক্ত ভূতজাত, ভূতলের উপাদান অপেক্ষা অধিকতর স্থূল উপাদানে গঠিত । অন্য সপ্তলোক-__ ভূব-স্বঃ__মহঃ__জনঃ-_তপঃ__সত্য- ক্রমশঃ ক, সুন্মতর, সুন্মতম, পাঞ্চ- ভৌতিক উপাদানে গঠিত। এমনকি ব্ৰহ্মা--যিনি সত্যলোকের অধিবাসী, তাহার শরীরও অপঞ্ষীকৃত পাঞ্চতৌতিক উপাদানের অতি বুন্মতম অংশ লইয়া অভিব্যক্ত। ভাগবত ম্পষ্টাক্ষরে বলিতেছেন ৫__ ভম্যসবগ্ল্যনিলাকাশা ভূতানাং পঞ্চ ধাতবঃ। আব্রন্ম স্থাবরাদীনাং শারীরা আত্মসংযুতাঃ ॥ ১১২১৫ পৃথিবী, জল, তেজঃ, বায়ু, আকাশ এই পাঁচটি আত্ৰহ্ম স্থাবর পর্য্যন্ত সকলের শরীরের ধাতু অর্থাৎ আরম্ভক । উহাদের সহিত আত্মা সংযুক্ত। ১১২১৫ । (প) পাঞ্চভৌতিক শরীর-_জন্-ৃত্যুর অধীন__ইহা বলা বাহুল্য মাত্র। এ কারণ ব্রহ্মাও জন্ম-মৃত্যুর অধীন । আয়ুর পরিমাণ বেশী কম, এইমাত্র প্রভেদ। উপরে আমরা রক্ত কণিকার দৃষ্টান্ত (১৭৮ অনুচ্ছেদে) গ্রহণ করিয়াছি । উহাদের প্রত্যেকের আযুফ্জাল কয়েক সেকেণ্ড বা কয়েক মিনিট মাত্র । উহাদের তুলনায় আমাদের আয়ুড্াল অতি দীর্ঘ। আমাদের তুলনায়_ দেবতাগণের অর্থাৎ শ্বলেকস্থ জীবগণের আয়ুন্কাল অত্যধিক দীর্ঘ । তাহাদের তুলনায় মহ-জন-তপঃ-সত্যলোক বাসী জীবগণের আয়ুক্কাল ব্রহ্মার আয়ুন্ালের সমান-_অর্থাৎ দ্বিপরার্ছজীবী । সকলেই জন্ম-মরণ চক্রের উপর প্রতিষ্ঠিত । ইহার! সকলেই আমাদের যার, অস্তভুক্ত। একারণ ১৭৬ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের প্রলয়ে, ধ্বংস হইলে, উহার! নাশ প্রাপ্ত হইয়া! অতি হুন বীজভাবে পরমতত্বে অবস্থান করে । (ফ) নিত্যধাম__উহাদের সকলের বাহিরে । উহ! জন্ম-মৃত্যু চক্রের বাহিরে । উহা নিত্য-শাশ্বত-স্বরূপে প্রতিষ্ঠিত । উহার জন্মাদি নাই । ১১৯। একারণ, সহজেই আপত্তি উত্থাপিত হইতে পারে যে ১১২২ স্থত্র রচনায় স্থত্রকার “জন্মাদি” পদ ব্যবহার করিয়াছেন । সুতরাং যাহার জন্মাদি নাই, সেই নিত্যধামের উল্লেখ এবং স্্টি-চিত্রে উহার প্রদর্শন কি অপ্রাসঙ্লিক হইল না? স্ুত্রকার ১1১1২)২ স্ুত্রে ত্রিপাদ বিভৃতির বা নিত্যধামের কোনও ইঙ্গিত মাত্র করেন নাই। ইহার উত্তর এই যে, পাঁদবিভূতি ও ত্রিপাদবিভূতি-_উভয়ে পরম্পর সম্পর্কহীন, দৃঢ়বদ্ধ, স্বতন্ত্র প্টিকার মধ্যে নিবদ্ধ নহে। তটস্থা শক্তি বিকাশে অভিত্যক্ত জীব-_উভয়ের মধ্যে সংযোগ সেতু। জীব-_পাদ বিভূতিতে অবস্থান কালে, পাদ বিভূতির দাবীসকল সম্পূর্ণ- ব্ূপে মিটাইতে পারিলে, ত্রিপাদ বিভূতিতে অবস্থান করিবার অধিকার প্রাপ্ত হয়। এই অধিকার প্রাপ্তির উপায়_“সংরাধন” (সঃ ৩২২৪) বা ভগবদুপাসনা ৷ স্থত্রকার তৃতীয় অধ্যায়ে সংরাধন সম্বন্ধে বিচার করিবেন এবং চতুর্থ অধ্যায়ে, সংরাধনে সিদ্ধ হইলে প্রাপ্তি সম্বন্ধেও সিদ্ধান্ত স্থাপন করিবেন । এ কারণ__চিত্ে ত্রিপাদবিভূতির অতি সংক্ষেপে প্রদর্শন সমীচীন হইয়াছে, সন্দেহ নাই। আরও এক কথা, স্থত্রকার ১১২২ স্থত্রে তটস্থ লক্ষণ দ্বারা ব্রহ্ম নির্দেশ করিয়াছেন, ইহা! আগে বল! হইয়াছে । ইহার কারণ, অজ্ঞ শিষ্ুকে প্রতক্ষ পরিদৃশ্ঠমান জগত ও জাগতিক বন্ত জাতের জন্ম-স্থিতি-নাশের দৃষ্টান্ত হইতে শিষ্যের বুদ্ধি ক্রমশঃ জন্মাদিবিহীন নিত্যবস্ত ধারণার উপযোগী করা। সে উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য জন্মাদিবিহীন নিত্যধাম_দৃষ্াস্তের উপযোগী না৷ হওয়ায়, সুত্রকারের পক্ষে উহার উল্লেখ বা ইঙ্গিত__অসঙ্গতই হইত, সন্দেহ নাই । ১২০। উক্ত চিত্র ধীরভাবে পর্ধ্যালোচন1 করিয়া, আমর! আরও কি পাই, তাহ! বুঝিবার চেষ্টা করি। জিন্স্‌ সাহেব, তাহার জীবনব্যাপী আধিভৌতিক বিজ্ঞান সাধনার ফল স্বরূপ, যাহ! পাইলেন, তাহা প্রকাশ করিয়া বলিলেন, যে, স্থষ্টির অভিব্যক্তি ও পরিচালনার পশ্চাতে বিশুদ্ধ গণিতের মনোবৃত্তি সম্পন্ন এক মহাশক্তি বর্তমান আছেন (অনুচ্ছেদ ৮৫ )। চিত্র পর্যালোচনায় আমরা কি শুধু তাহাই পাই? অন্ত কিছু কি পাই না? উচ্চ বিশুদ্ধ গণিতের কঠোর ্ায়াইগামী যুক্তিবিচার ও সিদ্ধান্তের দর্শন ত পাইই, সঙ্গে ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অরধি । ২ স্থঃ ১৭৭ সঙ্গে সর্বাপলোপী এককেন্দরিক, চিন্তাপ্রণালীর, কারণ-কার্ধ্যের অবস্ঠস্তাবী ' পরিণতির, আত্মবিলোগী মহাত্যাগের “উর্দ্ধযূলমধঃ শাখম্” (গীঃ ১৫।১) বিশ্ব- মহীকহের যূল ও প্রধান প্রধান স্বদ্বশাখাদির দর্শন পাইয়া স্তম্ভিত হই এবং উক্ত মহীরুহের অনস্ত প্রসারের একপ্রাস্তে অতি ক্ষীণ ছায়ার সহিত পরিচিত হুইয়া আত্মহারা হইয়া যাই। কিন্তু ইহা ত বাহিরের ব্যাপার মাত্র। ইহাই কি সব? না, তাহা নয়। ইহা ত বিশুদ্ধ গণিতের নিদর্শন, শক্তিশালী, স্বচ্ছ, ্চ্যগ্র বুদ্ধি ও তীক্ষ মেধা-সম্পনন মন্তিষ্ের ব্যাপার মাত্র । ইহাতে হৃদয়ের সংজ্রব নাই। ভাল করিয়৷ চিত্রটির উভয় দিক (পাদবিভূতি ও ত্রিপাদবিভূতি ),' ধৈরঘয, শ্রন্ধ।, ভক্তির সহিত আলোচনা করিলে, আমাদের হৃদয়ের পট ভূমিতে একটি মূর্তি ভাগিয়া উঠে। তিনি আমাদের অতি নিজ জন__আপন হইতেও আপন । আমার অস্তিত্বের, আমার ব্যক্তিত্বের, আমার আমিত্বের মূলে তিনি । আমার পরম শ্ররেক্ঃ প্রাপ্তির উপায় নির্দেশের জন্য সৃষ্টির প্রসার করিয়াছেন (অনুচ্ছেদ ২৪-২৫ ইত্যাদি )। মাতার ন্যায় অহৈতৃকী ভালবাসায় পাগল, পিতার ন্যায় কল্যাণকামী, গুরুর ন্যায় ইহ-পরকালের নিঃস্বার্থ পথপ্রদর্শক, ভ্রাতার স্তায় হিতকারী, সখার ন্যায় নর সহচর, স্ত্রীর ন্যায় আত্মদানকারী-- নিজের সর্ব্ব এমন কি আপনাকেও পর্যন্ত দান করিতে প্রস্তুত হইয়া করুণা সজল চোখে আমার অবসর প্রতীক্ষায় আছেন। তিনি কত মধুময়, তাহার কি ইয়ত্তা আছে? জীবে তাঁহার অতি প্রিয-নিজের তটস্থ_ অতি নিকটস্থ। পাদবিভূতিতে ব্ষয়ানন্দে বিভোর জীবকে ভজনাননের b ভিতর দিয়া, ত্রিপাদ বিভূতিতে শাশ্বতধামে, নিজের স্বরপানন্দ ভোগ করিবার,সমুদায় ব্যবস্থা সমাপন করিয়া অপেক্ষা করিতেছেন । আমার অবসর হইলেই নিবিড় আলিঙ্গনে বুকে ধরিবার জন্য বিশাল বন্ষঃ প্রসারিত করিয়া রাখিয়াছেন। প্রেমে ঢল্‌ ঢল্‌ চোখে, হাসিমুখে, ত্রিভুবন মোহন ভঙ্গিমাতে, হাতছানিতে, অগ্রসর হইবার জন্য ইঙ্গিত করিতেছেন । এদৃশ্তের সহিত আরও কত কি যে অন্তশ্ক্ষে ছায়ার স্যাম প্রকটিত' হইয়া মিলাইয়া যাইতেছে, তাহা প্রকাশ করিতে ভাষা মূক, চিন্তা পদ্ধু। সাধে কি ভক্তাবতার ভগবান প্রীপ্ীকু্চ চৈতন্য মহাপ্রভুর ভগবন্নাম স্মরণ করিবামাত্র_-“নয়নং গলদ- ধারক, বদনং গদ্‌ গদ্‌ কয়| গিরা, পুলর্কে নিবিতং বপু$? হইত ও আনন্দে আগ্হার] হইয়া যাইতেন | সাথে কি সাধু বিমল _ভাবালের ডি বররন করিতে গিয়া, ভাষার অক্ষমতা হৃদয়ে অহুভর করিয়া বারংবার ' মধুরং মধুর ১২ মধুরং মধুরম্” বলিয়া বাক্যহারা হইয়া গেলেন। এক্ষেত্রে নয়ন জলই অবভ্থ স্নানের পবিত্র গঙ্গাজল, অঙ্গে পুলক-_রোমাঞ্চ_উদ্‌গমই পুণ্য পূজোপকরণ, ক্রিয়ার অনুষ্ঠানই প্রকৃত পূজা, যুকতাই উপযুক্ত স্তুতি, উদ্দেশ্যে ধূল্যবলুঠনই উপযুক্ত আত্মনিবেদন ৷ ভগবান্‌ আচার্য্য শঙ্করদেব নিয়োদ্বত শ্লোকে ইহার পরিচয় দিতে চাহিয়াছেন :_ অনিচ্ছৈব পরং পদম্‌, অক্রিয়ৈব পরা পূজা । অচিস্তৈব পরং ধ্যানম্‌ মৌনমেব পরং তপঃ ॥ ১২১। পূর্বের বলিয়াছি, আবার উল্লেখ করি যে, ভাগবত সাহায্যে আমার ব্ৰহ্মস্থতালোচনা, কঠোর মস্তি আলোড়ন ও ন্যায় শাস্ত্রের কচকচি নয়। ইহা পঞ্চেন্দিয় দ্বার! রসম্বরূপের রসাম্বাদন। ইহ! সাধনা_-ভক্তি শাস্ত্রের সাঁধনা- হৃদয়ের অন্তস্তলের ব্যাপার। যদিও ইহাতে যুক্তি-বিচারের অপদ্ভাব নাই, সে যুক্তি-বিচার হৃদয়ের অমৃত রসায়নে সিক্ত, এ কারণ অতি সিগ্ধ, অতি মধুর ৷ তাহা হইলেও যুক্তি বিচার গৌণ মাত্র। হয়ত, স্ায়ান্ুদারী কঠোর সমালোচকের চক্ষে, আমার উপরে লিখিত অংশ দর্শন শান্ত্রের পক্ষে অসঙ্গত বা অপ্রাসঙ্গিক মনে হইতে পারে। কিন্তু নিরপেক্ষভাবে বিচার করিলেও ভগবান্‌ স্যত্রকারের প্রকৃত অভিপ্রায় অনুধাবন করিলে, প্রতীয়মান হইবে যে, স্থত্রকার যখন সাধন! ও সিদ্ধিঁব্রক্মস্তত্রের অন্তর্ভুক্ত করিয়াছেন, তখন ভগবানের প্রপ্গ--অসঙ্গত বা অপ্রাসঙ্গিক হইতে পারে না। আধিভৌতিক বৈজ্ঞানিক যখন অধিভৌতিক প্রক্রিয়াতে, জগৎ স্থষ্টিতে মৃহাশক্তিমান মননশীল মহাসত্বার পরিচয় পাইয়াছেন, তখন সেই মহাসত্বাকে যদি আমি পুরুষোত্তম, ভগবান্ঃ ্ররুষ্ণ ব| শ্রীরাম বলি, তাহাতে আমি এমন কি অপরাধে অপরাধী হইয়া পড়ি । সুতরাং সাময়িক ভাবে ভাবরাজ্যের বহিঃ-প্রাচীরের সংম্পর্শ হয়ত কোন দোষাবহ নহে। তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায়ে আরও ঘনিষ্টতর পরিচয় : পাওয়া, যাইবে। তখন বুঝ! যাইবে যে, মানবদেহধারী জীব, বর্তমানে যতই নিয়ন্তরে অবস্থিত হউক্‌ না কেন, আমার ন্যায় অজ্ঞান, মূর্খ, সাধনভীন হউক্‌ না কেন, দুঃখ করিবার বা হতাশ হইবার কিছু নাই। বুঝি বা না বুঝি, যে কোন প্রকারে ভগবগপ্রসঙ্গ লইয়া! জীবন যাপন করা, বিশেষতঃ এ বুদ্ধ বয়সে_ বৃথ| বাকী কয়েকট! দিন নষ্ট না করিয়া, যদি ভগব্দালোচনায় কাটান যায়, তাহা সমূহ কল্যাণ সাধন করিবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। ভান নিজমুখেই বলিয়াছেন £_ ্‌ নহি কল্যানকৃৎ কশ্চিদ্‌ দুৰ্গতিং তাত গচ্ছতি ॥ গীঃ ৬৪০ ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৭৯ ২৯) অন্কুগ্রবেশ। ১২২। স্থষ্টির অভিব্যক্তির জন্য, উপকরণ- শ্যষ্টির ক্রম চিত্রীকারে দেখান হইল। আমরা লৌকিক দৃষ্টান্তে দেখিতে পাই, যে, উপকরণ সংগ্রহের ব্যবস্থা হইলেই অট্টালিকা নিশ্মীণ হয় না । উপাদান সকলের-_বিভিন্ন প্রকৃতি অনুসারে, উহাদের প্রয়োজন মত সন্নিবেশের জন্য, অভিজ্ঞ, কাৰ্য্যক্ষম, বুদ্ধিমান, কার্য্য- কারকের প্রয়োজন । তার উপর যদি উপকরণ সকল, আমাঁদিগের অট্রালিকার উপকরণের ন্যায় জড়, নিশ্চেষ্ট না হইয়া, চৈতন্যবিশিষ্ট হয় এবং প্রয়োজন মত উপরে-নীচে বসিতে অহ্বীকার করে, তাহ! হইলে ত নির্মাণ কার্ধ্য অনম্ভব হইয়া পড়ে । কাধ্যতঃ বিশ্বহ্থ্ট সম্বন্ধে তাহাই হইল। উপকরণ সকল মহৎ তত্ব হইতে অভিব্যক্ত। মহৎ তত্ব জড় নহে। প্রকৃতিতে ভগবান্‌ কর্তৃক অপিত চিদাভাস হইতে উহা! অভিব্যক্ত--এ কারণ উহাতে চৈতন্য সমুজ্জল ভাবে বর্তমান এবং উহা হইতে জাত ও অভিব্যক্ত এবং চিত্রে প্রদর্শিত সমুদ্ায়ে চৈতন্ত অল্প-বিস্তর বর্তঘান। বিশেষতঃ তাহারা ভগবানের , শক্তি বিকাশে এবং ভগবানের সঙ্্লান্ুসারে চিদাভাসের অংশ্‌ লইয়া অভিব্যক্ত হওয়ায়, পরস্পর আপন আপনাকে সমজাতীয় স্বতন্ত্র সত্বা মনে করিয়া কেহ কাহারও বন্ততা স্বীকার না করায় বিশুস্থষ্টি সহজসাধ্য হইল না। ভাগবত বলিতেছেন £_- এতে দেবাঃ কলাঃ বিষ্ণেঃ কালমায়াং 2 নানাত্বাৎ স্বক্রিয়ানীশাঃ প্রোচুঃ প্রাঞ্জলয়ো বিভুং ॥ ভাগঃ ৩1৫৩৬ এতে দেবা মহদাগ্ভভিমানিনঃ বিষ্কোঃ কলা অংশাঃ। কাল-লিঙ্কং বিকৃতি ৷ মায়া-লিঙ্গং বিক্ষেপঃ॥ অংশ-লিঙ্গং চেতন! ৷ তানি বিদ্যপ্তি যেযু। অতঃ সমত্বেন নানাত্বাৎ পরম্পরা-সম্বন্ধাৎ স্বক্রিয়ায়াং ব্রহ্মাও-রচনায়াং অনীশাঃ অসক্তাঃ সম্ভঃ বিভুং পরমেশ্বরং প্রোচুঃ॥ শ্রীধর । কাল-লিঙ্গ বিকৃতি, মায়া-লিঙ্গ বিক্ষেপ ও অংশ-লিঙ্গ চেতনা, এই তিন চিহধারী মহদাদির অভিমানী দেবতাগণ, প্রত্যেকে বিষ্ণুর অংশ হওয়ায় তাহারা সকলে পরস্পরের শম এবং সেজন্য পরস্পরের মধ্যে উচ্চ-নীচ সহন্ধশৃত্ত বলিয়া_ ব্রক্মাও রচনায়_অক্ষম হয়ত, প্রাঞ্ুলিপূর্বক সর্ববসমর্থ পরমেশ্বরের স্তব করিতে লাগিলেন! ভাগঃ ৩৫৩৬ ইহার পর ৩৫1৩৭ হইতে ৩৫৪৯ লোক পর্য্যন্ত স্তবের বর্ণনা আছে । তাহাতে আমাদের প্রয়োজন নাই । | ১২৩। লৌকিক দৃষ্টান্তে আমরা দেখিতে পাই যে, কোনও বৃহ কাৰ্য্য ১৮০ বস্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত সম্পাদনের জন্য নানাপ্রকারের বহু সংখ্যক ব্যক্তির সমবেত, একই উদ্দেশুযূলক সাহায্যের প্রয়োজন হইয়া থাকে। যদি তাহারা একই উদ্দেশ্টে পরিচালিত হইয়া পরস্পরের সহযোগে কাৰ্য্য সম্পাদন না করে, নিজ নিজ স্বাতন্থয রক্ষা করিয়া চলে, তাহা হইলে কার্ধ্য সম্পাদন অসম্ভব হইয়া পড়ে। কোনও বৃহ অট্টালিকা নির্মাণ করিতে হইলে, সুদক্ষ ইঞ্জিনিয়ার, স্থপতি, রাজমিন্ত্ী, সাধারণ মিশ্থী, মজুর, উপকরণ সংগ্রাহক ও পরিপূরক (contractor ) প্রভৃতির সমবেত সাহায্য প্রয়োজন হইয়া থাকে। উহারা যদি প্রত্যেকে নিজের নিজের ইচ্ছামত চলে, তাহা হইলে, অট্টালিকা নিৰ্শ্মাণ হয় ন! । অন্তপক্ষে সকলে যদি প্রধান কারুকের (ইন্জিনিয়ারের) অধীনে, তাহার পরামর্শ, নিদ্দেশ ও ব্যবস্থামত একযোগে কার্ধ্য করে, তাহা হইলে নির্শ্মাণকার্য্য সহজে সম্পাদিত হয়। প্রকৃতপক্ষে ইন্জিনিয়ারের কৃতিত্ব-_সকলকে এক উদ্দেস্তে একযোগে পরিচালিত করায় ও প্রত্যেকের অন্তরে নিজের শক্তি সঞ্চারে এবং কার্ধ্য সু সম্পাদনের আগ্রহ জাগানয়। বিশবসথট্টিতেও সেই প্রকার, অবশ্যই অনন্ত গুণে বৃহৎ পরিমাণে । ১২৪। মহদাদি সকলে স্ব স্ব প্রধান হওয়ায় ও একত্র মিলিত হইয়া, বিশ্বহ্থষ্টক্প কার্য সম্পাদন করিতে না পারায়, ভগবানের শরণাপন্ন হইল। তখন পরমেশ্বর তাহার সংহননী শক্তি-সঞ্চারে, উহাদিগকে সংহত, মিলিত করিয়। এবং পরম্পরের মুধ্যত্বগৌণত্বে প্রতিষ্ঠিত করিয়া জগদ্হষ্টর উপযোগী করিলেন । ভাগবত বলিতেছেন ঃ_ যদৈতেইসঙ্গতা৷ ভাবা ভূতেব্দ্রিয়মনোগুণাঃ। যদায়তননিন্্মাণে ন শেকুর্রক্গবিত্তম ॥ ২ ৫1৩২ তদ! সংহত্য চান্তোহন্যং ভগবচ্ছক্তিচোদিতাঃ। সদসত্বমুপাদায় চোভয়ং সম্থজুহা দঃ ॥ ২1৫৩৩ হে ব্রহ্মবিত্তম নারদ! এই সকল ভূত, ইন্দিয়, মন:গুণ পূর্বে অমিলিত থাকায় ব্রহ্মাও শরীর নির্ধাণে সমর্থ হয় নাই, তখন ভগবানের সংহননকারিণী শক্তি দবারায় প্রচোদিত হইয়া, উহারা পরস্পর মিলিত ও মুখ্যত্বগৌণথ অঙ্গীকারপূর্ববক সমষ্টি ও বাষ্টিরপ শরীর সৃষ্টি করিল । ২1৫৩২-৩৩ উপরে উদ্ধৃত ২1৫।৩৩ শ্লোকে একটি অংশ হইতেছে “ভগবচ্ছক্তি-যোজিতা£' ভগবানের সংহননকারিণী শক্তির দ্বারা প্রচোদিত হইয়া-_-অর্থাৎ ভগবানের উক্ত শক্তি তাহাদিগের অন্তরে অনুপ্রবিষ্ট হইয়, উহাদিগকে বিশ্থা্টর উপযোগী ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি 1 ২ স্থঃ ১৮১ করিল। ইহাই “অস্থপ্রবেশ”-_ইছারই ব্যাখ্যা ভাগবত নিয়বোদ্ধত ৩)৬।১-২ প্লোকে বলিতেছেন £__ ইতি তাসাং ন্বশক্তীনাং সতীনামসমেত্য সঃ। প্রন্থৃপ্তলোকতন্ত্রাণাং নিশাম্য গতিমীশ্বরঃ ॥ ভাঃ ৩৬।১ কালসংজ্ঞাং তদা দেবীং বিভ্রচ্ছক্তিমুরুক্রমঃ ৷ ত্রয়োবিংশতিতত্বানাং গণং যুগপদাবিশৎ ॥ ভাঃ ৩৬২ মহদাদি নিজ শক্তিগণ পরস্পর অমিলিত হওয়াতে বিশ্বরচনায় অশক্ত হইয়াছে, তাহাদের এই দশা অবগত হইয়া, উকুক্রম ( সর্ব্বকন্মা ) জগদীশ্বর, কাল দ্বারা উদ্‌বোধ্য নিজ সংহননকারিণী দৈবী শক্তি প্রকট করিয়া যুগপৎ মহদ্‌-অহঙ্কার-পঞ্চতন্মাত্র-পঞ্চমহাভূত-__একাদশ ইন্জিয়াত্মক ত্রয়োবিংশতিগণে প্রবিষ্ট হইলেন । ৩৬১-২ তৎপরে__ সোহন্ুপ্রবিষ্টো৷ ভগবাংশ্চেষ্টারূপেণ তং গণম্‌। ভিন্নং সংযোজয়ামাস ্ুপ্তং কর্ম প্রবোধয়ন্‌ ॥ ভাগঃ ৩৬1৩ ভগবান্‌ উক্ত ভ্রয়োবিংশতি তত্থে প্রবেশান্তর চেষ্টারূপে তাহাদের ক্রিয়া প্রবুদ্ধ করতঃ, সে সকল ভিন্ন ভিন্ন তত্কে একত্র সংযুক্ত করিলেন? ভাগবত ৩৬,৩ ১২৫। উপরে উদ্ধৃত কয়েকটি শ্লোকে ভাগবত “অনুপ্রবেশের” যে পরিচয় দিলেন, তাহার ভিত্তি, আমরা “ছান্্যোগ্য” উপনিষদে দেখিতে পাই। শ্ৰুতি বলিতেছেন £_ সেয়ং দেবতৈক্ষত হস্তাহমিমাস্তিত্রো দেবতা অনেন জীবেনাত্মনাহস্ুপ্রবি্য নামরূপে ব্যাকরবাণীতি ॥ ছাঃ ৬৩২ পূর্বোক্ত সেই সতম্বরূপ দেবতা ঈক্ষণ (আলোচনা ) করিলেন, অধুনা আমি প্রাণধারক আত্মরূপে, এই তিন দেবতার মধ্যে অনুস্রবিষট হইয়া নাম ও রূপ অভিব্যক্ত করি । ছাঃ ৬৩২ তাসাং ত্রিৰৃতং ত্রিবৃতমেকৈকাং করবানীতি সেয়ং দেবতেমান্তিআ। দেবতা অনেনৈব জীবেনাত্মনাইনুপ্ৰবিশ্য নামরূপে ব্যাকরোৎ ॥ ছাঃ ৬:৩৩ ১৮২ ্রহ্বসথত্র ও শ্ৰীমদ্ভাগবত উক্ত তিন দেবতার প্রত্যেককে, ত্রিবৃত ত্রিবৃৎ করিব চিন্ত! করিয়া, উক্ত সেই দেবতা (সৎস্বর্ূপ), এই তিনটি দেবতার মধ্যে প্রাণধারক আত্মন্ধপে অন্ুপ্রবিষ্ট হইয়া-_নাম ও রূপ অভিব্যক্ত করিলেন । ছাঃ ৬1৩৩ উপরে উদ্ধৃত ছান্দোগ্য শ্রুতির ৬৩২ ও ৬1৩৩ মন্ত্রবয়ে “ইমাস্তিম্নে। দেবতাঃ” ধাহাদের উল্লেখ করা হইয়াছে, তাহার! যথাক্রমে তেজঃ। অপও অন্ন বা ক্ষিতি; উহাদের অভিব্যক্তি উক্ত শ্রুতির ৬1২1৩-৪ মন্ত্রে পূর্বেই কথিত হইয়াছে ৷ মহাভূত পঞ্চকের মধ্যে ছান্দোগ্যস্রুতি বায়ু ও আকাশের উল্লেখ করেন নাই। একারণ পঞ্ীকরণের পরিবর্তে ৬৩1৩ মন্ত্রে “ত্রিবৃৎ করণ” বলা হইয়াছে। ১২৬। এখন লক্ষ্য করিতে হইবে, ছান্দোশ্য তেজঃ, অপ অন্ন (ক্ষিতি)কে “দেবতা” বলিয়া! উল্লেখ করিলেন কেন? ইহার কারণ এই যে, ভগবান্‌ প্রকৃতিতে যে “চিদাভাস” অর্পন করিয়াছিলেন, তাহ! প্রকৃতি হইতে অভিব্যক্ত সমুদায়ে অল্পবিস্তর বর্তমান থাকিবেই থাকিবে । সে কারণ, তেজঃ, অপ, অন্ন ' ' (ক্ষিতি)-_প্রকৃতি হইতে অভিব্যক্ত হওয়ায়, চৈতণ্য উক্ত তিনে বর্তমান । দিব, ধাতুর অর্থ ক্রীড়া করা । চেতনই ক্রীড়া করিতে সমর্থ। এজন্য উহাদিগকে “দেবতা” বলিয়| উল্লেখ করা হইয়াছে । আরও ইঙ্গিত করা হইল যে, উহারা ভগবানের জগৎ ক্রীড়ার উপকরণ। এই একই কারণে ভাগবত উপরে উদ্ধত ৩1৫৩৬ শ্লোকে তাহার! ভগবানের স্তব করিলেন, ম্পষ্টতঃ বলিয়াছেন, চেতন ন! হইলে স্তব কর! সঙ্গত হয় না। এই একই কারণে ভগবান্‌ গীতায় ১৫১৬ শ্লোকে সমষ্টি ভৃতাত্মক ক্ষরকে “পুরুষ” বলিয়া__উল্লেখ করিয়াছেন। প্রকৃতি গঠিত বিভিন্ন পুরে অবস্থান করেন বলিয়া-_“পুরুষ” পদের নিরুক্তি। ব্লা বাহুল্য যে পুরুষ চেতন। ১২৭। ছান্দোগ্য শ্রুতি সমষ্টিভাবে অনুপ্রবেশের উল্লেখ করিলেন। ভাগবত ব্যষ্টিতেও অনুপ্রবেশের নিদর্শন দিলেন। গীতায় ভগবান্‌ অনুপ্রবেশের অতি বিষদ পরিচয় প্রদান করিলেন। গীতায় ভগবান্‌ বলিতেছেন £- অধিভূতং ক্ষরো! ভাব; পুরুষশ্চাধিদৈবতম্। অধিষজ্ঞোইহমেবাত্র দেহে দেহভৃতাং বর ॥ গীঃ ৮18 ক্ষর অর্থাৎ বিনশ্বরতাব_-অধিভূত। পুরুষ-_অধিদৈবত এবং দেহে অন্তৰ্য্যামী রূপে স্থিত আমিই-_অধিষজ্ঞ। গীঃ ৮1৪. এখানে ণ্অধ্যাত্ম” পদের ও তাহার অধিষ্টাতা পুরুষের- সাক্ষাৎ পাই ন|। ইহার ঠিক পূর্ববর্তী ৩ গ্লোকে “শ্বিভাবই অধ্যাত্ম”_ইহা ভগবান বলিয়াছেন । ১খঃ। ১ পাঃং। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৮৩ উপরে উদ্ধৃত ছান্দোগ্যক্রতির ৬৩1২ ও ৬1৩৩ মন্ত্রের সহিত গীতার ৮1৩ ও ৮1৪ শ্লোক একত্র পর্ধ্যালোচনা করিলে, আমরা বুঝিতে পারি যে, ভগবান্‌ চাপ্রিভাবে জাগতিক স্থাবর-জঙ্গম সমুদায়ে অনুপ্রবিঃট_( ক) অধিভূত ভাবে, (খু) অধ্যাত্মভাবে, (গ) অধিদৈব ভাবে ও (ঘ) অধিযজ্ঞ ভাবে। ইহাদের প্রত্যেকের সম্বন্ধে সংক্ষেপ আলোচন! নিয়ে দেওয়া হইল। ১২৮। (ক) অধিভূত ভাবে অনুপ্রবেশ হেতু, জগতের স্থাবর-জঙ্গম সমুদায়_নিজ নিজ আকারে, নিজের নিজের দেহের অঙ্গ-প্রত্যা্গের সহিত সহযোগে বর্তমান থাকে। ক্ষরভাব-_বিনশ্বরভাব__ধ্বংশ বা নাশ ইহার ধর্ম, পরম্পর হইতে বিচ্ছিন্ন হওয়া বা বিচ্ছিন্ন করা-__ইহার ক্রিয়া, সংহতি ভাব নষ্ট করা ইহার বিশেষত্ব। ভগবান আধিভৌতিক পুরুষরপে__ ক্ষরাত্বক অধিভূত ভাবে অনুপ্রবেশ পূর্বক, সমুদায় অধুপরমাধুকে নিজ সংহননী শক্তিদ্বারা সংহত করিয়া, প্রত্যেককে নিজ নিজ আকারে _-বর্তমান থাঁকিবার ব্যবস্থা করিয়াছেন । স্থাবর-জঙ্গমের প্রত্যেকের আকার, স্থানীবরকতা, কাঠিন্য, তারল্য, বায়বীয়ত্ গুরুত্ব, লঘুত্ব প্রভৃতি সমুদায় ভগবানের অধিভূতভাবে অনুপ্রবেশ হেতু__ইহা এক কথায় সদ্ভাব। আমার দেহে, অস্থি-মাংস-মজ্জা-ত্বক্‌ প্রভৃতির সংহতভাবে বর্তমানতা ও তাহার হেতু আমার দেহের বিশিষ্ট আকারে অবস্থান_-ভগবানের সংহননী শক্তির ক্রিয়া । (খ) অধ্যাত্মভাবে অনুপ্রবেশ £_ভগবান্‌ গীতায় ৮1৩ শ্লোকে স্বভাবকেই “অধ্যাত্ম” বলিয়াছেন । শ্রীধর স্বামিপাদ স্বভাব পদের অর্থে বলিতেছেন £_ “সঙাবঃ_স্বস্তৈব ব্ৰহক্মন এব অংশতয়া জীবরূপেণ ভবনং স্বভাব । অধ্যাত্মম্‌ - আত্মানম্‌-_দেহমধিরৃত্য ভোভৃতেন বর্তমানঃ অধ্যাত্ম_শাবেন উচ্যতে” ।_-এক কথায় ইহার অর্থ হইতেছে স্বভাব অর্থাৎ জীবই অধ্যাত্ম বলিয়া কথিত হন । উপরে উদ্ধৃত স্বামিজীর অর্থই ভাগবতের ২১০৮ শ্লোকের টাকায় স্বামিজী ব্যবহার করিয়াছেন উক্ত শ্লোক সম্বন্ধে আলোচনা পরে করা যাইবে। কিন্ত আমার মনে হয় যে, উক্ত অর্থছাড়া আরও একটি" অতি সুন্দর ও ব্যাপক অর্থ করা যাইতে পারে । ভগবান্‌ বহু হইবার সংকল্প করিয়া, আপনাকেই বহুত্বে অভিব্যক্ত করিলেন__ইহা! শ্রুতির ঘোষণা । এই বহুত্ব স্থাবর-জঙ্গমাত্মক ব্যষ্টিকে লই । সুতরাং স্বামিজী যে অর্থ করিয়াছেন, তাহা হইতে “জীবরূপেণ” অংশটুকু বাদ দিলেই__অর্থটি পরিস্দুট হুইবে। “স্বভাব” শব্দের অর্থ নিজের ভাব ১৮৪ র্স্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত অর্থাৎ ভাবাত্মক স্থায়ী ধর্__যাহাকে পরিত্যাগ করিয়া নিজত্ব বজায় থাকিতে পারে না। জীবের স্বভাব জীবত্ে, বিশেষ ব্যক্তির স্বভাব তাহার ব্যক্তিত্বে_ইহা লক্ষ্য করিয়া ভগবান্‌ গীতায় ১৮1৫৯ প্লোকে অজ্ভ্নকে বলিলেন-_অহংকারকে আশ্রয় করিয়| __“আমি যুদ্ধ করিব না” এইরূপ যে মনে ভাবিতেছ, তাহা বৃথাই হইবে, কেননা তোমার ক্ষত্রিয় প্রকৃতিই তোমাকে যুদ্ধে নিযোজিত করিবে। অঞ্জুন ক্ষত্রিয়_ সুতরাং ক্ষত্রিয় প্রকৃতিই তাহার “ম্বভাব”__ইহা গীতায় ১৮৷৪৩,১৮৷৬০ প্রভৃতি গ্লোকে নুষ্প্ট কথিত হইয়াছে। ভগবান্‌ গীতায় ১৮1৪২১১০1৪৪ প্লোকদয়েও ব্রাহ্মণ ও বৈশ্তগণের “স্বভাব” বিহিত কর্মের পরিচয় দিয়াছেন । শুধু মানব- দেহধারী জীব সম্বন্ধেই বা কেন? উদ্ভিদের স্বভাব__উদ্ভিদত্ব, ও ক্ষেত্রের স্বভাব __উৎপাদিকা শক্তি ইত্যাদি । লৌহের স্বভাব তাহার কৃষ্ণবর্ণে, আপেক্ষিক গুরুত্ব, বিশেষ তাপ প্রয়োগে নমনীয়ত্ে, বিশেষ প্রক্রিয়া সাহায্যে অতি দৃঢ় ইম্পাতে পরিণতিতে, চৌন্ুকার্ধনের-প্রভাবে সঞ্চলনে, অতি তীক্ষ ধার গ্রহণের সামর্থ্য প্রভৃতিতে আমাদের প্রতীতি গোচর হইয়| থাকে। অধিক উদাহরণ দিয়া গ্রন্থ বাহুল্যের প্রয়োজন নাই । অধ্যাত্ম বা আধ্যাত্মিক পুরুষ-_ভগবানের আধ্যাত্মিক নামধেয় শক্তিবস্তর এই “স্বভাব” কে “ভাব” পদার্থরপে স্থায়ীভাবে ধারণ করিয়া, তাহার বিশেষত্ব প্রকটিত করে। এই বিশেষত্ব_-অন্য বস্ত হইতে বিভেদের হেতু । একত্ব হইতে বহুত্ব সংঘটনের ইহ! অপরিহার্য ফল। ইহা আমাদের বুদ্ধির ক্রিয়া, তাহার বিশ্লেষিক! শক্তির পরিচয় । (গ) অধিদৈব ভাবে অনুপ্রবেশ :_ চিত্রে আধিভৌতিক, আধ্যাত্মিক ও আধিদৈবিক এই তিন ও তাহাদের পরস্পর সম্বন্ধ দেখান হইয়াছে। আধিভৌতিক উপকরণে__দেহের উপাধি। আধ্যাত্মিক উপকরণে_ পঞ্চ জ্ঞানেন্দরিয় ও পঞ্চ কর্শোন্দিয় অভিব্যক্ত হইয়া থাকে। ইন্দ্রিয়গণের পরিচালনা ও তাহাদের নিজ নিজ ক্রিয়া বিধান মত সম্পাদনের জন্য পরিচালকের প্রয়োজন । আধিদৈবিক পুরুষ ভগবানের সংকল্লান্থসারে ভগবচ্ছক্তিতে শক্তিমান হইয়া পরিচালকের কার্ধ্য সম্পাদন করেন৷ পুজ্যপাদ-স্বামিজী গীতায় ৮৪ স্লোকে “অধিদৈবত পুরুষ” পদের ব্যাখ্যায় বলিতেছেন £__ “পুকৃষ-_বৈরাজঃ সূর্য্যমও্ডল মধ্যবর্তী স্বাংশতৃত-_সর্্দেবতানামধিপতিঃ” _ব্রন্ষের বা ভগবানের নিজ অংশতৃত সর্বদেবতার অধিপতি বিরাট্‌ পুরুষ = অর্থাৎ নারায়ণ। তিনি নূ্বমগলে অধিষ্টিত থাকিয়া কিরণ পথে, অধিভূত পুরুষরূপে স্থাবর-জঙ্গমের উৎপত্তি_স্থিতি-বদ্ধির বিধান করিতেছেন। সেইরূপ ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৮৫ কিরণপথে অধ্যাত্ম পুকুষরপে স্থাবর-জন্গমাত্বক ব্যষ্টি সকলের নিজ নিজ বিশেষত, (স্বভাব ) ধারণ করিয়া স্থির মর্ধ্যদা রক্ষা করিতেছেন। তিনিই আবার নিজের শক্তি প্রয়োজন মত বিভিন্নরূপে প্রকটিত করিয়া, কিরণপথে জ্ঞান__ কর্শ্ণেন্দরিয়গণের ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালন করিতেছেন । তিনি এক, অদ্বিতীয়, আপনাকেই বহুত্বে প্রকটন করিয়া আপনি আপনাকে লইয়াই ক্রীড়া, করিতেছেন। সমর! বহুত্ব দেখিয়া মুগ্ধ হই, তাহা ইহারই সংকল্প বশতঃ । ভাগবত ৩৷২৬৷৫৭ শ্লোকে চিত্রে প্রদর্শিত অধিদৈবত দেবতাগণের পরিচয় দিয়া বলিলেন যে, বিরাটের আয়তন (সমষ্টি দেহ) অভিব্যক্ত হইল, কিন্ত তিনি নিশ্চেষ্ট হইয়া পড়িয়া রহিলেন। তখন অধিদৈবতগণ নিজ নিজ ইন্জিয়ে অধিঠিত হইলেন, কিন্তু তাহাতেও বিরাট্‌ চেষ্টাঈীল হইলেন না। তখন ক্ষেত্রজ্ঞ (সমষ্টি জীব), সেই সমষ্টি দেহে যখন প্রবেশ করিলেন, তখনই বিরাট উিত হইয়া! ক্রিয়াশীল হইলেন। শ্লৌোকটি ১/২।১৮ সুত্রে উদ্ধৃত হুইয়াছে। এই ক্ষেত্রজ্ঞের পরিচয় মুগুক শ্রুতি ৩১ মন্ত্রে দেহরূপ বৃক্ষে_ফলাম্বাদনকারী পক্ষীরূপে দিয়াছেন। ইহার সহিত ফল অনাস্বাদনকারী__অপর একটি পক্ষীরও উল্লেখ করিয়াছেন । প্রথমটি জীবাত্মা__পরেরটি পরমা । এই পরেরটি “অধিযজ্ঞ” | (গীঃ৮1৪)। (ঘ) অধিযজ্ঞ ভাবে অনুপ্রবেশ এই বিশ্ব একটি বিরাট্‌ যজ্ঞক্ষেত্র । রমন, পরমপুরুষ বা ভগবানই-_আদি যজ্ঞকর্তা । তীহার আত্মবিলোপাত্মক ত্যাগ হইতে এই বিশ্বের অভিব্যক্তি। খগ.বেদীয় পুরুষ-স্কক্ত ইহার পরিচয় দিয়াছেন। কর্মের উৎস তীঁহা হইতে উৎসারিত হইয়া__বিশ্বকে ও বিশ্বস্থ সকলকে 'ওতপ্রোত ভাবে প্লাবিত করিতেছে । এক মুহ্র্তও কর্ম না করিয়া, রেহ থাকিতে পারে: না। (গীতা ৩৫)) মানব দেহধারী জীব মোহে পতিত হইয়া, আপনাকেই কর্ের কর্তা মনে করিয়া, অভিমান বশতঃ কর্মের বন্ধন দশা! প্রা্ হয় এবং ফল, ভোগের জন্য জন্ম হইতে জক্ান্তরে পরিভ্রমণ করিতে থাকে। যদি মানব মনে প্রাণে দৃঢ় ধারণা করিতে পারে, যে, গে যখন যেখানে ছোট বড় যে কোন কর্ম করুক,মনে স্থ বা কু যে কোনও চিন্তা, ভাবনা করুক্‌, সমুদায়ের মূলে ভগবান্‌, তখন তাহার সমুদ্বায় কর্ণ, সমুদায় চিন্তা যজ্ঞ হইয়া যায় এবং যজ্ঞেশ্বর ভগবান্‌, অধিষজ্ঞর্ূপে তাহাদিগকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালন করিয়া থাকেন। তখন কর্ম নিৰ্মম হইয়া যায় ও কর্্মযজ্ঞের যজমানকে নিঃশ্রেয়সের পথে অগ্রসরণ করাইবার উপায় স্বরূপ হইয়া যায়। তখন তাহার কর্তৃত্বুদ্ধি লোপ পায়। তখন তাহার: সমুদায় ক্রিয়া, চিন্তা, ব্যবহার “বর্ষ” গীঃ (৪1২২) পর্ধ্যায়ে পড়ে । তখন- ১৮৬ ্্স্ত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত কশ্-ব্হ্ধ, উহার আচরণ ব্রচ্ম,আচরণকারী ব্রহ্ম, যাহার উদ্দেশ্যে আচরিত হয় তাহা বহ্ধ, যে উদ্দেশ্যে আচরিত হয়, তাহাও ব্রহ্ম হইয়া! যায়। তখন গীতার উক্ত ৪২২ খোক-__অর্থসহ পরিস্ফুট হইয়া উঠে। তখন কর্ধাত্মক বা যজ্ঞাত্সক ত্রচ্দে চিত্তের একাগ্রতা প্রান্তি হয়, গীতার ভাষায় এই “ব্রহ্মকর্ম-সমাধীনা” সেই একাগ্রতা হইতে কশ্মাচরণকারীর ব্র্মভাব প্রাপ্তি হইয়া থাকে। তখন দেহ রক্ষণে কত সতত ক্রিয়মান কর্সসকলও- শ্বাসপপ্রশ্বাস, চক্ষুর উদ্মীলন-নিমীলন, দর্শন, শ্রবণ, গমন, ভোজন, নিদ্রা প্রভৃতিও অকর্ণ হইয়া যায় ( গীঃ ৫1৮-৯)। তখন ইহারা আত্মার সহিত সম্বন্ধ শূন্য ইন্রিয়গণের ক্রিয়া মাত্র হইয়া যায়। S গীতার প্রদত্ত ভগবানের এই উপদেশ শুধু পুস্তকগত উপদেশ স্বরূপে না রাখিয়া কার্ধ্যতং জীবনের দৈনিক আচারণে-__মানবদেহধারী জীবগণকে সাহায্য করিবার জন্য ভগবান্‌ অধিযজ্ঞ ( অন্তর্য্যামি) রূপে সকলের সঙ্গে সঙ্গে ফিরিতেছেন। জীব তাহার নিজের অংশ (গীঃ ১৫।৭)। তিনি যেমন স্বতন্ত্র_জীবও সেইরূপ স্বতন্ত। তিনি সর্বশক্তিমান হইলেও, এই শ্বাতন্ত্র্ে হস্তক্ষেপ করা অসঙ্গত বলিয়া, সর্ধদ সঙ্গে সঙ্গে থাকিয়া জীবের অবসর প্রতীক্ষা করেন। তাহার দিকে ফিরিয়া, “জয় ভগবন্‌ ! আমি তোমার” বলিয়া একবার তাঁহার শরণ গ্রহণ করিলেই, তিনি নিবিড় ভাবে বক্ষে আলিঙ্গন করিয়া আপনাতে মিলাইয়। লন ৷ যে স্বাতন্ত্রোর গর্বে মানব তাহাকে ছাড়িয়া! কুপথে গিয়াছিল, সেই স্বাতত্ত্ের পরিচালনায় স্ুপথে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষামাত্র করিয়া থাকেন৷ ইহা আগেও বল! হইয়াছে, আর বিস্তারের আবশ্যক নাই । উপরের আলোচনা হইতে আমরা বুঝিলাম যে, স্বষ্টিতে ভগবানের “অনুপ্রবেশ” চারি যৃত্তিতে। প্রতিযৃত্তি “পুরুষ”, আখ্যায় আখ্যায়িত । প্রত্যেকই অক্ষর_ব্রক্ষপ্বরূপ। তবে আমাদের বিশ্লেষিকা বুদ্ধি উক্ত চারি অক্ষর স্বরূপের মধ্যে সুক্ম বিশ্লেষণে কিঞ্চিৎ বিভেদ সৃষ্টি করিম্বাছে। তাহা প্রকাশ করিয়! বলা কর্তব্য বলিয়া মনে করি। প্রথমে লক্ষ করা! প্রয়োজন যে, চারি প্রকারের “অন্ধপ্রবেশে” যদি “অক্ষর” নামধেয়--পরব্রহ্ষই করিলেন, তবে তাহাকে আবার “পুরুষ” আখ্যায় আখ্যায়িত করিবার তাৎ্পর্ধ্য কি? ইহার সমাধান এই যে, আধিভৌতিক, আধ্যাত্মিক, আধিদৈবিক-_সমুদায় ক্ষেত্রে সর্বত্র, তত্তৎ ক্ষেত্রের উপাদানে গঠিত “পুর” বর্তমান । অক্ষর-_পরতর্ষ প্রত্যেক পুরই নিজের শক্তির দঞ্কারে অনুপ্রাণিত, সঞ্ীবিত, ক্রিয়াশীল করেন বলিয়া, পুরে অবস্থানহেতু, পুর»* আখ্যায় কথিত হইয়া থাকেন | *ধভূত পুরুষ অক্ষর ব্রদ্দের যূর্ত প্রকাশ বটে। কিন্তু তিনি স্বরূপতঃ ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ সঃ ১৮৭ অক্ষর হইলেও ক্ষরের সহিত সংজড়িত হইয়া, আপনার অক্ষর ভাব ভুলিয়া গিয়া, আপনাকে ক্ষরভাবে বিভাবিত করিয়া বসেন। ইহার বস্তগত দৃষ্টান্ত আমাদের নিজের জীবনেই দেখিতে পাই। জীবের স্বরূপ পরত্রন্ের স্বরূপ হইতে অভিন্ন, হইলেও আমরা, ক্ষর হইতে উদ্ভূত বিষয়ের সংস্পর্শে জড়িত হইয়া, নিজেদের স্বরূপ ভুলিয়া গিয়া, ক্ষরের প্রভাবে প্রভাবিত হওত: আপনাদ্দিগকে, দুঃখী, নির্ধন, গরীব, রুগ্ন, কিউ, তাপদগ্ধ ইত্যাদি মনে করিয়া থাকি। এই কারণে ভগবান্‌ গীতার ১৫১৬ শ্লোকে সাধারণ ভাবে ক্ষর ও অক্ষর এই দুই পুরুষের উল্লেখ করিয়াছেন। অধ্যাত্ম ও অধিদৈব পুরুষ, উল্লিখিত আত্মবিস্থৃতি হইতে মুক্ত বলিয়৷ উক্ত শ্রোকে “অক্ষর” পর্যায়ের অন্তূক্ত রূপে কথিত হইয়াছেন। এই তিন পুকুষ__অক্ষর পুরুষেরই ত্রিবিধ প্রকাশ । কিন্তু অধিযজ্ঞ উহাদের হইতে স্বতত্র। ইহ! বুঝাইবার জন্য, ভগবান্‌ গীতায় ৮৪ স্লোকে পুরুষের উল্লেখ না করিয়া! “অহম্‌ অধিয'জ্ঞ?” ইহা স্পষ্টতঃ বলিলেন। এই ‘অহুম্‌’_যূল “অহম্ | ইনি পুরুষোত্তম । আমাদের বুদ্ধি তাহার বিল্লেষনী শত্তি এরূপ চাকচিক্য ভাবে দিলেও__ভগবান্‌ স্থত্রকার__ অন্তরধ্যাম্যবিদৈবাধিলোকাদিষু তদধন্্যব্যপদেশাৎ ॥ ১/২।১৯ ১২1১৮ স্থত্রে সিদ্ধান্ত স্থাপন করিলেন যে, অন্তর্য্যামি, অধিদৈব, অধিলোক প্রভৃতিতে পরমাত্মাই বা ব্রদ্ধই বর্তমান থাকিয়৷ তত্তৎ নামে কথিত হন। আমরা উপরের আলোচনা হইতেও সেই একই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি। ১২৯। নি্নোদ্ধৃত শ্লোকে ভাগবত আধিভৌতিকাদি তিন পুরুষের পরিচয় দিতেছেন £_ যোহধ্যাত্মিকোহয়ং পুরুষঃ সোহসাবেবাধিদৈবিকঃ। বন্তত্রোভয়বিচ্ছেদঃ পুরুষে! হাঁধিভৌতিকঃ ॥ ২১০1৮ যিনি আধ্যাত্মিক পুরুষ, তিনিই আধিদৈবিক। তবে এই উভয় নাম ও তক্জনিত বিভেদের হেতু_আধিভৌতিক পুরুষ। ২১৭৮ ইহাই উক্ত শ্লোকের আক্ষরিক সরল অর্থ। শ্রীমৎ প্রীধরস্বামী আধ্যাত্মিক পুরুষকে ভুষ্টা! জীব এবং আধিভৌতিক পুরুষকে দৃহ্ঠ এবং সে কারণ দ্ৰষ্টা জীবের উপাধি স্বরূপ বলিয়া অর্থ করিয়াছেন। তাহার এই অর্থগীতার ৮৩ প্লোকের ততক্কত অর্থের . সহিত সামন্তন্তপূৰ্ণ, তাহাতে সন্দেহ নাই। তাহার পদান্থদরণে ৬রামনারায়ণ বিষ্ভারত্ব মহাশয় উক্ত শ্লোকের বাঞ্গল! অর্থ বলিতেছেন £_“যিনি চক্্রাদি করণাভিমানী ব্রষ্ট। জীবস্বরূপ আধ্যাতিক পুুষ--ভিনিই আধিদৈবিক অর্থাৎ ১৮৮ ্র্স্থত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত চক্ষুরাদি ইন্জ্িযগণের স্র্য্যাদিরপ অধিষ্ঠাতা। এই উভয় ভিন্ন চক্ষুঃ গোলকাদি বিশিষ্ট যে দৃণ্ঠ__দেহ, পুরুষ অর্থাৎ পুরুষরূপ দেহের উপাধি জানিবে।” ২1১০৮ উপরে ১২৮ অনুচ্ছেদে গীতায় ৮৪৩ শ্লোকে ব্যবহৃত “স্বভাব” শব্দের যে দ্বিতীয় অর্থ প্রস্তাব করিয়াছি__অর্থাৎ স্থাবর-জঙ্গমাত্মক সমুদায়ের নিজের নিজের। পৃথক্‌ “নিজত্ব”__তাহা গ্রহণ করিলে, ভাগবতের ২১০1৮ গ্লোকের অর্থ হইবে ঃ -_ আধিদৈবিক ও আধ্যাত্মিক পুরুষ অভিন্ন হইলেও, উহাদের উভয়ত্ব কথনের হেতু এই যে, আধ্যাত্মিক পুরুষ__আধিভৌতিক ক্ষরভাবে বিভাবিত পুরুষ হইতে প্রকটিত স্থাবর-জঙ্গমাত্মক সমুদায় বস্তর-স্ব স্ব “স্বভাবে” রক্ষণ করিবার জন্য তত্তৎ বন্তজাতের সহিত সংশ্লিষ্ট হওয়ায়, যদিও স্বরূপতঃ নিজের অক্ষর ভাব হইতে পরিভ্রষ্ট হন নাই, তথাপি পৃথগ.রূপে নির্দেশিত হইবার যোগ্য বটে। অবশ্তই এ প্রকার নির্দেশ আমাদের বুদ্ধির ক্রিয়া ১৩০। আধ্যাত্মিক ও আধিদৈবিক পুরুষের অভিন্নতা সম্বন্ধে ঈশাবাস্তো- পণিষৎ ১৬ মন্ত্রে বলিতেছেন :__ পুষন্নেকর্ষে বমস্থ্ধ্য প্রাজাপত্য বৃহ রশ্মীন সমূহ। তেজো যত তে রূপং কল্যাণতমং তত্তে পশ্যামি, যোইসাবসৌ পুরুষঃ সোইহমন্মি ॥ ১৬ হে জগৎপোষক স্ঘ্য, হে একাকী গমনশীল- অর্থাৎ অন্য নিরপেক্ষ হইয়া জগৎস্থ সকলের স্ব স্ব ব্যাপারে প্রবর্তক, হে সকলের নিয়ন্তা, হে প্রজাপতির সংকল্প হইতে অভিব্যক্ত! তোমার রশ্মিগযৃহের ও তাহা হইতে প্রস্থত তেজের সঙ্ষোচসাধন কর। তোমার যাহা অতি কল্যাণতম রূপ, অর্থাৎ যে ব্ূপ পরিগ্রহ করিয়া, তুমি বিশ্বে কল্যাণ বিতরণ কর, আমি তোমার সেই রূপ দর্শন করি। তোমার প্রবর্তক ও সঞ্জীবয়িত| যিনি, আমারও তিনি । ১৬ ৩০) এক বিজ্ঞানে সর্বববিজ্ঞান। ১৩১। মুণ্ডক শ্রুতির ১১/৩ মন্ত্রে শিষ্য গুরুকে জিজ্ঞাসা করিলেন : কস্মিন্ণনভগবে বিজ্ঞাতে সবর্বমিদং বিজ্ঞাতং ভবতি ৷ মুণ্ডক ১৷১৷৩ হে ভগবন্‌ ! কি জানিলে এই পরিদৃমান সমুদায় জান! হইয়া যায়? এই প্রশ্নের উত্তরে গুরু ব্রশববিদ্তার, উপদেশ দিলেন ইহাতে গুরু বুঝাইলেন যে, ব্র্ষকে জানিলে সমুদায় জান! হইয়া! যায়। ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৮৯ ছান্দ্যোগ্য শ্রুতিতে এ একই উপদেশ, একটু অধিকতর বিস্তারিতভাবে এবং সহজে বোধগম্য করিবার জন্য দৃষ্টান্তের সাহায্যে দেওয়া! হইয়াছে । বালু ঘ্বেতকেতুর বয়স যখন ১২ বৎসর, তখন তাঁহার পিতা, তাহাকে বিদ্যোপার্জ্জনের জন্য গুরুগৃহে পাঠাইলেন। শ্বেতকেতু গুরুগৃহে ১২ বৎসর কাল ধরিয়া. সমগ্র বেদাধ্যয়ন সমাপন করতঃ, গম্ভীর চিত্ত, বেদজ্ঞানাভিমানী ও অবিনীত স্বভাব হইয়া_-২৪ বৎসর বয়সে পিতৃগৃহে ফিরিয়া আসিলে, পিতা তাঁহাকে বেদজ্ঞানাভিমানী ও অবিনীত স্বভাব দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “বৎস ! তুমি তোমার গুরুকে সে আদেশটির ( উপদেশটির ) কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছিলে কি? যে উপদেশের জ্ঞানে (সহায়ে) অশ্রুত বিষয় শ্রুত হয়, অচিস্তিত বিষয় স্থচিস্তিত হয় ও অনিশ্চিত বিষয় স্থনিশ্চিত হয়।” উত্তরে শ্বেতকেতু বলিলেন, সে আদেশ কিরপ?. তখন তাহার পিতা বলিলেন £-_ যথা সোম্যৈকেন মৃত্পিণ্ডেন সর্ববংমুন্ময়ং বিজ্ঞাতং স্তাদ্‌ বাচারন্তণং বিকারো নামধেয়ং মৃত্তিকেত্যেব সত্যম্‌॥ ছাঃ ৬১1৪ যথা সোম্যৈকেন লোহমণিনা সৰ্ব্বং লোহময়ং বিজ্ঞাতং স্যাদ্‌ বাচারন্তণং বিকারে! নামধেয়ং লোহমিত্যেব সত্যম্‌ ॥ ছাঃ ৬1১৫ যথ! সোম্যৈকেন নখনিকৃন্তনেন সর্ববং কাঞ্চণয়সং বিজ্ঞাতং স্যাদ্‌ বাচারস্তণং বিকারে। নামধেয়ং কৃষ্তায়সমিত্যেব সত্যমেবং সোম্য স আদেশে ভবতীতি। ছাঃ ৬১৬ হে সৌম্য ! যেমন একটি মৃত্তিকা পিণ্ডের জ্ঞান হইতে মৃত্তিকার পরিণামভূত সমস্তই জান! যায়_কারণ-_মৃত্তিকার__সমস্ত বিকারই বাগাড়স্বর নামমাত্র কেবল মৃত্তিকাই সত্য । যেমন একটি স্বর্ণ পিণ্ডের জ্ঞানে, স্বর্ণের পরিণামভূত সমস্তই জানা যায়, কারণ সুবর্ণ দ্বারা গঠিত যত কিছু, বাগাড়ম্বর নামমাত্র, কেবল সুবর্ণই সত্য। যেমন একটি লৌহ নির্ণ্মিত নরুণের জ্ঞানে, লৌহ হইতে অভিব্যক্ত সমুদায় জানা যায়, কারণ লৌহ গঠিত যত কিছু শুধু বাগাড়ম্বর নামমাত্র, কেবল লৌহই সত্য। হে সৌম্য, এইরূপে উক্ত উপদেশ হুইয়া থাকে । ছাঃ ৬।১।৪-৫-৬ পিতা উপদেশ দিলেন যে, কার্য্য ও কারণ-_অভিন্ন। এক কারণের__ ভিন্ন ভিন্ন কাৰ্য্য হইয়া থাকে, ইহা আমাদের চতুদ্দিকে দেখিতে পাওয়া যায়। মাটি হইতে ঘট, কলন, সরা, জালা, ইট প্রভৃতি গঠিত হইয়া থাকে। ১৯০ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত সকলের মধ্যে কারণরূপে মাটি আছে-_কার্ধ্যগুলি পৃথক্‌ পৃথক্‌ নামমাত্র । মাটি সবগুলিতে কারণরূপে অনুস্যত থাকায়_-উহাদের সম্পর্কে মাটিই সত্য এবং ঘট, কলস প্রভৃতি নামগুলি প্রত্যেক স্থলে বিভিন্ন হওয়ায় শুধু শব্দাড়ম্বর মাত্র। রণ, লৌহ প্রভৃতি যত কিছু উপাদান কারণরূপে আছে; সকলের সম্বন্ধে উক্ত- বিচার প্রযোজ্য । পিতার উপদেশ শুনিয়া শ্বেতকেতু বলিলেন, এমন উপদেশ গুরুর নিকট পাই নাই। পিতা তখন সতশ্বরূপ ব্রন্মই যে প্রপঞ্চ জগতের ও তাহার অন্তর্ভুক্ত স্থাবর-জঙ্গম সমুদায়ের একমাত্র কারণ, তাহার উপদেশ দিলেন। ১১৭ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত চিত্র দৃষ্টে সুস্পষ্ট প্রতীতি হইবে যে, শ্রীকৃষ্ণ ব| পরমপুরুষ, পরব, ভগবানই বিশ্ব প্রপঞ্চের ও তদস্তভূক্তি সমুদায়ের একমাত্র কারণ। একারণ তীহাকে জানিলেই সমুদায় জান! হইয়া যায়। আর কিছু জ্ঞাতব্য থাকে না। পুস্তক পাঠের বা শান্বালোচনার একাস্তিক প্রয়োজনীয়তা নাই । ভগবান্‌ রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ইহার জাজ্জল্যমান প্রমাণ । তাহার পু'থিগত বিদ্যা গ্রামের পাঠশালাতেই শেষ হইয়াছিল, কিন্তু যে সর্ববসংশয়চ্ছেদী পরম জ্ঞানের পরিচয় তিনি তাহার দৈনিক কথাবার্তায় প্রকাশ করিয়াছেন, তাহা অলৌকিক, অত্যার্স্্য। উচ্চশিক্ষিত পণ্ডিতমণ্ডলী, বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, ডাক্তার প্রভৃতি আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, মাজ্জিত বুদ্ধি, বন্ততান্ত্রিক মহামহারধিগণ, তাঁহার দৈনিক আলাপনে স্তম্ভিত হইয়া, তাঁহার চরণে আত্মবিক্রয় করিয়াছেন, ইহা প্রত্যক্ষ ভর গণের নিজ নিজ প্রত্যক্ষদর্শনের লিখিত, মুদ্রিত, প্রকাশিত বিবরণ হইতে জানা যায়। স্থতরাং বিস্তারের প্রয়োজন নাই । | ৩১) প্রলয় । ১৩২1 প্রলয় সম্বন্ধে আলোচনা আরম্ভ করিবার পূর্বে ১০৭ ও ১০৮ অনুচ্ছেদে দৃষ্টি আকর্ষন করি। উহা! হইতে আমর! বুঝিয়াছি যে, চিদণুর স্ফুরণই স্থষ্টি। উক্ত স্ফুরণ অনাদ্দিকাল হইতে একইভাবে বর্তমান আছে বলিয়৷ সৃষ্টি অনাদিকাল হইতে বর্তমান আছে। অন্য পক্ষে যাহার উৎপত্তি আছে, নাশও তাহার অপরিহার্য নিয়তি। এ কারণ সমাধান এই যে, সমগ্র স্থষ্টির অন্তর্ভুক্ত অগণ্য ব্রন্থাগুগণের, নিজের নিজের বিশেষ বিশেষ হেতুবশতঃ, কাহারও প্রলয়ে নাশ হইলেও সমগ্রহ স্থির নাশ এককালে সংঘটিত হয় না। শাস্ত্রে যে প্রলয়ের কথা বলা হইয়| থাকে, তাহ! আমাদের ব্রহ্মা বা. সৌর-জগৎ সন্বন্ধে। উহা ১ খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থঃ ১৯১ ধ্বংস হইলেও অন্যান্য অগণ্য ব্ৰহ্মাণ্ড বর্তমান থাকিয়৷__চিদণুর অনস্তকাল ব্যাপী” স্ষুরণের পরিচয় দেয়। ১৩৩। ইহা সহজেই অনুমেয় যে, এন্গলোম ক্রমে সৃষ্টির প্রসার অভিব্যক্ত হয়, তাহার প্রতিলোম ক্রমে গ্রলয়ে নাশ সংঘটিত হয়। ভাগবত বলিতেছেন ₹__ অন্নে প্রলীয়তে মন্ত্যমন্্ং ধানাস্থু লীয়তে। ধানা ভূমৌ প্রলীয়ন্তে ভূমির্গন্ধে প্রলীয়তে ॥ ১১৷২৪৷২২ অপন্থু প্রলীয়তে গন্ধ আপন্চ স্বগুণে রসে । লীয়তে জ্যোতিষি রসে! জ্যোতিরূপে প্রলীয়তে ॥ ১১/২৪.২৩ রূপং বায়ে সচ স্পর্শে লীয়তে সোহপি চাহ্বরে ৷ অস্বরং শব্দতন্মাত্রে ইন্দিয়াণি স্বযোনিষু ॥ ১১৷২৪৷২৪ যোনির্বৈকারিকে সৌম্য লীয়তে মনসীশ্বরে শব্দো ভূতাদিমপ্যেতি ভূতাির্মহতি প্ৰভুঃ ॥ ১১/২৪২৫ স লীয়তে মহান্‌ স্বেষু গুণেষু গুণবত্তমঃ। তেইব্যক্তে সংপ্রলীয়ন্তে তৎকালে লীয়তেহব্যয়ে ॥ ১১২৪২৬ কালো মায়াময়ে জীবে জীব আমনি ময্যজে ৷ আত্মা কেবল আত্মস্থো বিকল্পাপায়লক্ষণঃ ॥ ১১২৪।২৭ মর্ত্যশরীর-_অরে, অন্ন ওষবি-বীজে, ওধি-বীজ পৃথিবীতে, পৃথিবী গন্ধে লীন হয়। গন্ধ-জলে, জল-রসে, রস-জ্যোতিতে ( তেজে ), জ্যোতি রূপেতে লীন হইয়| থাকে । ১১1২৪।২২-২৩। রূপ-বামুতে, বাযুস্পর্শে, স্পর্শআকাশে, আকাশ-শবতনাতে ইন্ডিয়গণ- নিজ নিজ যোনিতে-_অর্থাৎ নিজ নিজ প্রবর্তক দেবতাগণে লীন হয়। (ইন্দরিয়- গণের প্রবৃত্তি স্বভাব বশতঃ এবং প্রবৃত্তি_দেবতাগণের অধীনত্ব হেতু, শ্লোকে দেবতাগণে লীন বল! হইয়াছে, প্রকৃতপক্ষে, অভিপ্রায় এই যে, ইন্জিয়গণ রাজস অহংকারে লীন হয়) ৷ ১১/২৪।২৪ যোনি__অধিষ্ঠাতী বৈকারিক দেবতাগণে লীন হইয়া থাকে, দেবতাগণ _ মনে লীন হয়, মনঃ দেবতাঁগণের সহিত, বৈকারিক অহংকারে লীন হয়। ( উপরে” ১১।২৪।২২-২৩-২৪ ্লোকত্রয়ে-_তামস নি কাৰ্যসকলে” লয় শবতন্াত্রে কথিত হইয়াছে) । তামস অহংকারের অস্তভুক্ত শব্দতন্মাত্র- ১৯২ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত তামস অহংকারে লীন হয়। তৃতাদি অর্থাৎ ত্রিবিধ অহংকার--বৈকারিক- -রাজস-তামস-মহতত্বে লীন হইয়া থাকে । ১১।২৪।২৫ জ্ঞান ও ক্রিয়াশক্তি মত্ব! হেতু গুনবন্তম মহান্‌ ( মহত্তত্ব ) নিজ জ্ঞান ও ক্রিয়া- শক্তি পরিত্যাগ করিয়া গুণমাত্রে লীন হয়, গুণসকল অব্যক্ত প্রকৃতিতে লীন হইয়! সাম্যাবস্থা প্রাপ্ত হয়। সেই সাম্যাবস্থা প্রাপ্ত অব্যক্তকালে লীন হইয়া থাকে। (ত্থট্টিতে কাল দ্বারা অব্যক্ত প্রকৃতির গুণক্ষোভ সংঘটিত হইয়াছিল, এখন সেই সাম্যাবস্থা প্রাপ্ত হইয়া কালে লীন্/হইল।) ১১/২৪।২৬ কাল, মায়াময় (মায়া প্রবর্তক), জ্ঞানময়, জীবের জীবত্ব সংঘটনকারী মহাপুরুষে, উক্ত মহাপুরুষ__অজ, আত্মরূপী পরমাত্মায় লয় প্রাপ্ত হয়েন। শেষে পরমাত্মা কেবল, আত্মস্থ থাকেন। তিনিই বিশ্বের উৎপত্তি ও লয় দ্বারা লক্ষিত হুইয়াথাকেন। ১১1২৪1২৭ ১৩৪ । প্রলয়ের প্রক্রিয়া বর্ণিত হইল । সমগ্র স্থষ্টির অন্তর্ভুক্ত অগণ্য ব্রহ্মাওগণের মধ্যে যখন যেটির প্রলয় সংঘটিত হয়, তখন উপরে কয়েকটি শ্লোকে কথিত পন্থা ক্রমে সেই ব্রহ্মাণ্ডের ধ্বংস সম্পাদিত হ্য়। পরে আবার তাহার স্থষ্ট, পূর্বের কথিত স্থাষট প্রক্রিয়া! অনুসারে ঘটিয়া থাকে। স্থাষ্ট ও প্রলয়ের অন্তরালে _স্থিতি_ইহা ব্ৰহ্ম-পরমাত্ম/া-ভগবানের আধারে প্রকটভাবে অবস্থান । 'পুরুষোত্তম ভগবানের সংকল্পানুসারে ব্রদ্জাওগণের এই স্বষ্টি _-স্থিতি-লয় সংঘটিত হইতেছে । অনাদিকাল হইতে এই খেলা চলিতেছে এবং অনন্ত কাল ব্যাপিয়া এ খেল! চলিতে থাকিবে। অগণ্য ব্ৰহ্মাওগণের মধ্যে যখন যেটির মৃত্যুকাল উপস্থিত হয়, তখন সেইটি ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে যে চূর্ণ কিচুর্ণ হইয়া সুক্ম রেণুতে পরিণত হয়, তাহা নহে। মৃত্যুতে আমাদের স্থল দেহের নাশ হইলেও, উহার অস্থি প্রভৃতি যদি অগ্নি সংস্কারে ভস্মে পরিণত ন! করা হয়, তাহা হইলে অনেক দিন পর্যন্ত বর্তমান থাকে। জ্যোতিব্বিদগণ অনন্ত আকাশে, আলোকহীন অনেক ্রদ্মাও আবিষ্কার করিতে সমর্থ হইয়াছেন, উহাদের প্রলয় সংঘটিত হইয়াছে বটে, তথাপি উহারা মৃত অবস্থায় বর্তমান থাকিয়া প্রকৃতির উপাদান ভাগারে সুম্্ রেণুকণ| রূপে অবস্থান করিবার প্রতীক্ষায় রহিয়াছে । ১৩৫। আমাদের দেশের শান্ত্কারগণ, তাহাদের যোগ-সাধনলনধ প্রাতীভ জ্ঞানে ও পরমতত্বের অপরোক্ষ দর্শন হেতু, সমগ্র জগদরহস্ত অপরোক্ষভাবে দর্শন করিয়া প্রলয়কে চারিভাবে আলোচনা করিয়াছেন। উহাদের নাম :_ ১খঃ। ১ পাঃ। ২ অধি।২ স্থঃ ১৯৩ (ক) নিত্য প্রলয়, (খ) নৈমিত্তিক বা দৈনন্দিন প্রলয়, (গ) প্ৰাকৃতিক প্রলয়, ও (ঘ) আত্যন্তিক প্রলয়। (ক) নিত্য প্রলয় ঃব্রদ্ধাদি স্থাবর পর্যন্ত প্রত্যেকের প্রতিক্ষণে কালন্রোতে যে অবস্থান্তর হইতেছে, তাহার নাম নিত্য প্রলয়। ইহ! আমাদের অজ্ঞাতসারে প্রতিক্ষণ সংঘটিত হইতেছে । আমার শরীর-__এ মুহূর্তে যে অবস্থায় আছে, ইহার পূর্বের মুহূর্তে ঠিক সেরূপ ছিল না এবং পর মুহূর্তেও থাকিবে না। অথচ আমরা এ পরিবর্তন লক্ষ্য করিতে পারি না । ঘড়ির কাটা দিনরাত যেমন অবিশ্রান্ত চলিতেছে, আমরা দেখিতে পাই, এই পরিবর্তন অবিশ্রান্ত চলিতেছে । আমাদের “জন্ম-বৃদ্ধি প্রভৃতি যড়বিকার এই নিত্য প্রলয়ের দ্বারাই ঘটিয়া থাকে । আমাদের প্রত্যেকের বাযষ্টিদেহে যে নিয়ম__সমষ্টি ব্ৰহ্মাণ্ড দেহেও (অর্থাৎ আমাদের জগতের ব্রহ্মার দেহেও ), সেই একই নিয়মের কার্য সৰ্ব্বক্ষণ অবিশ্রীস্ত ভাবে চলিতেছে । (ভাগবত ১২।৪-৩৪-৩৫-৩৬ )। (খ) নৈমিত্তিক বা দৈনন্দিন প্রলয় £_ইহা ব্ৰহ্মার পরিমাণের ১ দিবার অবসানে রাত্রি__সমাঁগম মাত্রেই সংঘটিত হয়। মানব যেমন দিনের বেলায় সংসারের যাবতীয় কর্ম সমাপন করিয়া, রাত্রি সমাগমে বিশ্রাম ও নিদ্রা উপভোগ করে, সেই নিদর্শনে, ব্র্ধাও তাহার পরিমাণে দিবাভাগে তাঁহার নিজ ব্রঙ্গাণ্ডের সমুদায় করণীয় কর্ম সমাপন করিয়া, তাহার রাত্রি সমাগমে বিশ্রাম ও নিদ্রা উপভোগ করেন । ব্রহ্মার নি! হইলে সঙ্গে সঙ্গে ব্রহধাওহ স্থাবর-জঙ্গম সমুদায় ব্রহ্মার দেহে লয়প্রাপ্ত হইয়া ক্স্্রভাবে বর্তমান থাকে। পরে রাত্রি গতে উষার উদয়ে ব্রহ্মার জাগরণের সঙ্গে সঙ্গে উহার! জাগরিত হয়। ঠিক যেমন উন্মুক্ত ক্ষেত্রে বৃহৎ বটগাছ বিনষ্ট হইয়া গেলে, উহার অসংখ্য বীজ ভূমির মৃত্তিকায় মিশিয় যায়, বাছিয়| বাহির করা সম্ভব হয় না। বর্ষাগমে জলধারায় মৃত্তিকা ভিজিলে, অস্ুরোদগমে উহারা আত্মপ্রকাশ করে, ইহাও সেইবপ। এই প্রলয় ব্র্মার পরিমাণের প্রতিদিন ঘটে বলিয়া, ইহার নাম দৈনন্দিন প্রলয় ইহাতে ব্ৰহ্মা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় না। ব্রহ্মার দিবাভাগ যে পরিমাণ কালে, রাত্রি সেই পরিমাণ কালে। উহা কল্প নামে পরিচিত॥ ১ কল্প=ব্ৰদ্মার ১ দিন ১৪ মন্বন্তর= ১০০০দৈব চতুৰযুগ = ৪৩২০০০০০০০ মানব বৎসর । রাত্রির পরিমাণ ওঁ পরিমিত কাল। বাহুল্য পরিহারের অন্য হিসাব দেওয়া হইল না। (ভাগবত ১২1৪।২-৩-৪) ৃ (গ) পরারতিক গরনয়£- কার আয় ও হান রি পরিগণনায় বৎসরে, কোনও মতে ১ বর, কোনও মতে ১০৮ বদর । ১৯৪ ব্ৰহ্মস্থত্ৰ ও শ্রীমদ্ভাগবত উক্ত পরিমাণ বংসর অস্তে, তাঁহার আযুদ্তাল পূর্ণ হওয়ায়, তাহারও নাশ হইয়া থাকে। আমাদের মৃত্যুতে যেমন আমাদের দেহ বিনাশ প্রাপ্ত হয়, ব্হ্ধার মৃত্যুতেও তাহার_ব্রদ্ধাও দেহ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং দেহের উপাদানভূত মহৎ, অহংকার ও পঞ্চতন্মাত্রাত্মক সপ্ত প্রকৃতি লয় প্রাপ্ত হয়। একারণ উহার নাম প্রাকৃতিক প্রলয়। ভাগবতের ১২৪1৫ হইতে ১২৪২১ পর্যান্ত ১৭টি শ্লোকে . ইহা বৰ্ণিত হইয়াছে। (ঘ) আত্যস্তিক প্রলয় :_-ভাগবত ১২1৪।২২ শ্লোকে বলিতেছেন যে কালে গ্রাহক বুদ্ধি, করণ-ইন্দ্রিয় ও গ্রাহ্‌ বিষয়ের পৃথক্‌ ব্যাপার থাকে না, কেবল উহাদের আশ্রয়-জ্ঞান মাত্র প্রকাশ পায়, তখন তাহাকে আত্যত্তিক প্রলয় বা মুক্তি বল! হইয়া থাকে । অন্ত কথায়, যখন ব্রিপুটার লয়ে, উহাদের আশয়-জ্ঞান স্বরূপ-মাত্র বর্তমান থাকে, তখনই আত্যন্তিক প্রলয় ঘটিয়া থাকে । ইহা হইতে বুঝা যাইতেছে যে, ইহা মানবদেহধারী জীবের ব্যক্তিগত ব্যাপার । ইহা আমরা অন্য প্রকারে বুঝিতে পারি, আমাদের জগৎ__ আমাদের জীব ভাবে অস্তিত্বের উপর নির্ভর করে। আমি না থাকিলে, আমার জগৎও নাই। স্থতরাং সংসার হইতে আমার অব্যাহতি লাভে, অর্থাৎ জন্ম-মৃত্যু প্রবাহে উন্মজ্জন-নিমজ্জন, চিরতরে বিলোপপ্রাপ্ত হইলে, আমার জগৎও চিরতরে নাশপ্রাপ্ত হইবে, তাহার কথা কি? এই কথা আরও একটু বিস্তার করিয়া বলি। উপরে যে অন্য তিন প্রকার প্রলয়ের কথা বলা হইয়াছে, তাহা আগ্ন্ত বিশিষ্ট বা অবয়ব বিশিষ্ট_অবস্ত সম্বন্ধে । যাহা বস্তু আখ্যায় আখ্যায়িত (ভাগবত ১1১২ ), তাহা নিত্য, সত্য, তাহার লয় সম্ভব নহে। সেই নিত্য-সত্য বস্তু অবয়বগণের আশ্রয় _উহাদিগকে সঞ্ীবিত ও ক্রিয়াশীল রাখা ইহার কার্য্য। ইহাই সর্বাশ্য়, অন, জ্ঞান-স্বরপ ব্রহ্ধ। ইহার স্ফুরণ সমূদায়_-অবয়বকে প্রকাশ করিয়া থাকে । ইহাই প্রত্যেক পৃথক্‌ পৃথক্‌ ব্যষ্টি অবয়বীর পৃথক্‌ পৃথক জগৎ গঠন করে। আমার জগৎ আমার নিজন্ব। আমার প্রতিবেশীর বা বন্ধুর অথবা৷ শত্রুর জগৎও তাহাদের নিজন্ব। ব্যষ্টি মানবের গঠিত জগৎই তাহার গ্রাহ্য বিষয়। উহ! ব্যষ্টি মানবের করণ সাহায্যে তাহার-_বুদ্ধির দ্বারা গ্রাহ্য হইয়া! থাকে । উক্ত বুদ্ধি ও করণ প্রভৃতি বাটি মানবের উপাধি । যখন বুদ্ধিকরণ-বিষয় পৃথকৃত্ব হারাইয়া কে বত রূপে জ্ঞানমাত্রে লয় প্রাপ্ত হয়, তখনই উক্ত সৌভাগ্যবান বাটি মানবের জগতের আত্যস্তিক প্রলয় । অব্যাহতি উহাই মোক্ষ__নিজের হুকূপ তখনই তাহার জগচ্চক্র হইতে সম্পূর্ণ প্রাপ্তি ও নিজ ম্বরূপের প্রত্যক্ষ অস্থভূতি ১ খঃ। ১ পাঃ। ১ অধি। ১ সং ১৯৫ অস্ত কথায় ব্রন্ম_পরমাত্মা_-ভগবানের অপরোক্ষান্ভৃতি। আত্যস্তিক প্রলয়ে নিজের শ্বরূপভূত অন্বয় জ্ঞান বর্তমান থাকে বুঝা গেল। ৩২) প্রনয্নাবশেষ 2 ১৩৬। প্রলয়ে কোনও বিশেষ ব্রদ্ধাও ধ্বংসপ্রাপ্ত হইলে, অবশেষ কূপে, উহাতে ওতপ্রোত ভাবে অনুস্থাত, উহার অভিব্যক্তির__উপাদান ও নিমিত্ত কারণ স্বরূপ, উহার সন্তীবক, সংধারক ও পরিচালক, ভাগবতের ১1২১১ গ্লোকে কথিত অন্বয় জ্ঞান বর্তমান থাকেন। ভাগবত ইহা! পরমতত্ব বা ভগবানের মুখ দিয়া বলাইতেছেন :_ অহমেবাঁসমেবাগ্র নান্যৎ যৎ সদসৎ পরম্‌। পশ্চাদহং যদেতচ্চ যোহবশিষ্যেত সোহস্ম্যহম্‌ ॥ ২৯৩২ স্থাষ্টর পুর্বে আমিই ছিলাম, অন্য কিছু ছিলনা। স্থূল ও স্ন্জ জগতের কারণ, _ প্রকৃতিও ছিলনা । স্থা্টর পরেও আমিই আছি। দৃমান প্রপঞ্চ জগৎ আমিই এবং প্রলয়ের পর যাহা অবশেষ থাকিবে; তাহা আমিই । (ফলতঃ আমি, অনাদি, অনন্ত, অদ্বিতীয় ও পূর্ণ স্বরূপ ) ২৯৩২ এই শ্লোকে যে “অহম্” এর সাক্ষাৎকার লাভ হইল, তাহা যূল, নিরপেক্ষ “অহম্৮। ইহাই ব্ৰহ্ম, পরমাত্মা, ভগবান, ভূম! প্রভৃতি মানবীয় ভাষায় কথিত পরমতত্ব। আমাদের পরিচিত “অহম্‌” “ত্বং? এর অপেক্ষা রাখে। কিন্তু শ্লোকোক্ত “অহম্‌’_স্থষ্ট অভিব্যক্কির পূর্ব হইতে বর্তমান, তখন “এর অভিব্যক্তিই হয় না। উহা মূল “অহম্”-এর সহিত তাদাত্মভাবে মিলিত। গীতায় অনেক স্থলে ভগবান্‌ শ্রীকৃষ্ণ আপনাকে এই যূল “অহং” রূপে নির্দেশ করিয়াছেন এবং এই যূল “অহং” জীবের আপন হইতেও আপনার জন, তাহার ‘ভূয়োভৃয়ঃ’ পরিচয় দিয়াছেন তিনিই আলোচ্য ব্রহ্মহবত্রের প্রতিপান্ত। তটস্থ লক্ষণ ছারা নির্দেশ অপরিহারধ্য হইলেও তিনি একাধারে, সমকালে নিগুণ-সগুণ, নির্ধিবশেষ-দবিশেষ, সকল কার্য্যের একমাত্র কারণ অথচ নিষ্কারণ, সর্ব্বকর্শের উৎস হইলেও নিন্ধিয়, বিরূপ হইলেও অরূপ, সর্বনামা হইলেও অনামী, সর্বব্যাপী হইলেও চিদণু , “অচক্ষুঃ সর্বত্র চান, অকর্ণ শুনিতে পান, অপদ সর্ব গতাগতি”__ইহাই ভগবদ্‌ রহস্ত। এই রহস্যের যথাশক্তি উদ্বাটনেই ভগবান্‌ বাদরায়ণের রস প্রণয়ণের উদ্দেশ্য এবং আমার হিমালয় প্রমাণ সতা ও বাতুলতা। ১০৬ ্রষস্থত্র ও শ্রীমদ্ভাগবত তিনিই একমাত্র সত্যবস্ত। তিনিই ছান্দোগ্য শ্রুতির ৬1২১ মন্ত্র “একমেবাদ্বিতীয়ম্‌ সং” । ভাগবত নিক্রোদ্ধত শ্লোকে ইহার পরিচয় দিতেছেন £__ স্থিত্যুৎপত্তপ্যয়ান্‌ পশ্যেন্তাবানাং ত্রিগুনাত্মনীম্‌। আদাবস্তে চ মধ্যে চ স্যজ্যাৎ স্থজ্যং যদস্বিয়াৎ। পুনস্তৎ প্রতিসংক্রামে যচ্ছিৎয্যেত তদেব সৎ ॥ ১১১৯১৫ ত্ৰিগুণাত্মক (সাবয়ব) পদার্থমাত্রের, উৎপত্তি-স্থিতি-বিনাশ আলোচনা করিয়া, উৎপত্তিতে কারণরূপে, স্থিতিতে আশ্রয়ন্ূপে এবং বিনাশে পরিণামরূপে যাহার সহিত নিত্য সম্বন্ধ বর্তমান থাকে। এই রূপে কার্ধ্য হইতে কার্ধ্যান্তরের প্রতি যাহা সতত অনুগত থাকে এবং তাহাদিগের প্রলয়েতেও যাহা অবশিষ্ট থাকে, তাহাই “সৎ”_ পদাৰ্থ । ১১1১৯১৫ উপরে ১০৬ অনুচ্ছেদের আলোচনায় আমর! বুঝিয়াছি যে, ভগবান্‌ শঙ্করাচার্ধ্য ঘাহাকে “সর্বকাল সত্তাক” বন্ত বলিয়াছেন, তাহ! এই "সৎ”_ ইহাই একমাত্র পরম সত্য বস্ত_ভাগবত ১।১।১ শ্লোকে ইহাকেই-__“সত্যং পরং» বলিয়াছেন। কিন্তু উহা বলিলেও, যে সমুদায় বস্তু নশ্বর বলিয়া প্রতীয়মান হয়, তাহাদিগের আপেক্ষিক সত্যতা অশ্বীকার করেন নাই। ইহার আলোচন! পূর্বে করা হইয়াছে, এখানে বিস্তারের প্রয়োজন নাই । ১৩৭। উপরে উদ্ধত ভাগবতের ২৯৩২ শ্লোকেও ছান্দোগ্য শ্রুতির ৬1২)১ মন্ত্রাংশে আমরা “অগ্র” (অগ্রে) পদের সাক্ষাৎ পাই। ইহার অর্থ সৃষ্টি_অভিব্যক্তির পূর্বে। এরূপ উক্তি শিল্বের বুদ্ধির প্রকৃতি অনুসারে, তাহার সহজে বোধগম্য করাইবার জন্য করা হইয়াছে। শিষ্য জগদ্‌ ব্যাপারে অল্প বিস্তর পরিচিত। এজন্য অতীত-বর্তমান-ভবিত্যৎ কালের পরিচয় তাহার অল্পবিস্তর জানা আছে। একারণ পরিদৃহমান প্রপঞ্চ জগতের স্ষ্টির পূর্কে প্রলয় অবস্থা ছিল, এ ধারণা শিষ্য সহজেই করিতে পারে । শ্রুতিতে ও ভাগবতের শ্লোকে “অগ্র” ( অগ্রে) পদ ব্যবহার এই উদ্দেশ্তেই করা হইয়াছে । নতুবা কি শ্রঁতির, কি ভাগবতকারের ইহ! অজ্ঞাত নহে যে, “সৎ?” বা “অহং” নামধেয় পরমতন্বে কালের পৌর্ধাপর্ধ্য ভাব__অর্ধাৎ অতীত -বর্তমান-ভবিষ্ত বর্তমান নাই! আমরা বুঝিয়াছি, চিদণুর ক্ষুরণই কাঁল। উক্ত স্ফুরণ চিরকাল-__সমান ভাবে বর্তমান! হল তোর কিচ পরমত্যত্র পাল আনা িসস্পাললী ৯৯ ১৪ টনিনিতরলর় লা লারা “বর্তমান” চিনি অনি বি পারে না। ইহা আগে সর্পকে শয্যারূপে গ্রহণ করিয়া যোগনিন্রায় অবস্থান করেন ১খং। ১ পাঃ। ২ অধি। ২ স্থুঃ ১ ৯৬ অনুচ্ছেদে সংক্ষেপে আলোচিত হইয়াছে। সংক্ষেপে এই মাত্র বলি যে, রহ্বপরমাত্মা-ভগবান্-ভূমা__সর্বাশ্রয় বলিয়া, কোনও কিছুর উৎপত্তিস্থিতি-_ নাশ হইলেও, সর্ব অবস্থায় উহা, তাহার আশ্রয়ে থাকে বলিয়া,__াহার সম্পর্কে উক্ত কোনও কিছুর অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ নাই। তাহার নিকট সকলই চিরবর্তমান__কখনও প্রকটিত ভাবে, কখনও অপ্রকটিত ভাবে। এই জন্য ছান্দোগ্য ৭২৩১ মন্ত্রাংশে বলিয়াছেন “ভূমৈব স্থখং নাল্পে স্থখমস্তি”_ ভূমাতত্বে যখন সমুদায় চিরবর্তমান, তখন আমাদের অনুভূতি ভূমাতত্বে উন্নীত করিতে পারিলে, দুঃখ বলিয়া কিছু থাকে না। ভূমায় চিরমিলন, নিবিড় আনন্দ । ভগবান্‌ সুত্রকার “ব্যাপ্ডেশ্চ সমগ্তসম্” ৩৩৯ সুত্রে ইহার উল্লেখ করিবেন । ইহা হইতে অন্থসিদ্ধান্ত স্বত:ঃই আপতিত হয় যে, জীব যখন যে অবস্থাতেই থা